হৃদপিন্ড_২ পার্ট_৩
#জান্নাতুল_নাঈমা
____________________
রাত এগোটার দিকে দিহান আর ইমন বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হলো। মরিয়ম আক্তার পিছন পিছন বের হলেন ওরা চলে গেলেই সে গেটে তালা লাগিয়ে দেবেন। গেট অবদি গিয়ে থেমে গেলো ইমন। পিছন ঘুরে মরিয়ম আক্তার কে হেসে হেসে কি যেনো বলছে। মুসকান তখন তাঁর রুমের জানালা থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে ইমন কে। রাতের আঁধারে অল্প আলোতে ইমনের মুখটা ঝাপসা দেখতে পায় সে। ইমনের হাসিতে তাঁর ঠোঁটের কোনায়ও হাসির রেখা ফুটে ওঠে। কতোগুলো দিন পর মানুষ টাকে দেখছে সে৷ নিজের অনুভূতি তে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছে। যদিও তিনবছর আগের অনুভূতি তে বুকের ভিতর হৃদস্পন্দন এমন এলোমেলো স্পন্দিত হতো না। তবে আজ হচ্ছে তাঁর ঐ মানুষ টাকে দেখে ঐ মানুষ টার আশে পাশে থেকে তাঁর স্পন্দন এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে। চোখ সরিয়ে নিয়ে দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে বুকের উপর হাত চেপে ধরে কয়েকবার শ্বাস ছাড়লো আর নিলো। এক ঢোক গিলে নিয়ে নিজেই নিজেকে শাসালো,’মুসু কখনোই না তুই কিন্তু ঐ মানুষ টার সামনে একদম নিজের দূর্বলতা প্রকাশ করবি না। ভুলে যাস না সেদিনের কথা যেদিন টায় বাইরের একটা বেহায়া মহিলার সামনে তোকে মারাত্মক ভয়ংকর ভাবে ধমকেছিলো। ঐ বেহায়া, নির্লজ্জ মহিলার সামনে তোকে অপমান করেছিলো কি লজ্জাটাই না সেদিন তুই পেয়েছিলি। সেদিনের কথা যদি মনে না রাখিস তাহলে তুই এক ভাইয়ের একমাএ আদরের রাগি,জেদী, ত্যাড়ি বোন না’
চোখ খুলল মুসকান৷ তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তাই আবারো জানালায় ওকি দিতেই দেখতে পেলো গেটে তালা ঝুলছে। বুকের ভিতরটা হঠাৎই কেমন ধক করে ওঠলো৷ মনটাও খারাপ হয়ে গেলো ভীষণ। পরোক্ষনেই ভাবলো ‘আমি মন খারাপ করছি কেনো? বয়েই গেছে তাঁর জন্য আমার মন খারাপ করতে। তিনবছর যখন থাকতে পেরেছি সারাজীবনও পারবো’ ভেবেই এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জানালা লাগিয়ে দিলো। বিছানায় শুয়ে চোখ দুটো বুঝতেই ইমনের মুখটা ভেসে ওঠলো। বুঝলো ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিয়ে চলে গেছে মানুষ টা৷ তাই মায়ের রুমে গিয়ে মায়ের ফোন নিয়ে এলো। ফোনটা নামেই মায়ের কাজে শুধুই মুসুর৷ পড়ার টেবিলের একপাশে ছোট সাউন্ড বক্স ছিলো ব্লুটুথ অন করে দিয়ে নিজের পছন্দ অনুযায়ী গান খুঁজে বের করলো। গান দিয়ে আবারো চোখ বুজে শুয়ে পড়লো সে।
“এই ভালোবাসা তোমাকেই পেতে চায় ঐ দুটো চোখ যেনো কিছু বলে যায়।
কবে তুমি নাম ধরে ডাকবে কবে তুমি হাতে হাত রাখবে
হো.কবে তুমি নাম ধরে ডাকবে কবে তুমি হাতে হাত রাখবে”
গানের প্রতিটা কথা যেনো তাঁর হৃদয়ে কম্পন তুলে দেয় আর বলে “বাস্তব কেনো সিনেমার মতোন হয়না? বাস্তবে কি কখনো কোন মেয়ের জীবনে হিরোর আগমন ঘটে? আগমন ঘটে কোন প্রেমিক পুরুষের? আর সেই প্রেমিক পুরুষ কি তাঁর প্রিয়তমাকে এভাবেই মনের কথা জানায়”?
প্রচন্ড মন খারাপ হয়ে গেলো মুসকানের। এই প্রশ্নগুলো কাকে করবে সে? কে দেবে তাঁর এই প্রশ্নের উত্তর? হঠাৎই মনে পড়লো রিমির কথা। রিমিকে কল করতেই ঘুমু ঘুমু কন্ঠে বললো,
— এতো রাতে ফোন দিছিস ক্যান তুই? ঘুমা যতো দরকারই থাকুক সকালে বলবি যা বলার। রাখছি।
ফোন কাটতেই রেগে গেলো মুসকান। ‘এতো বড় সাহস আমাকে কিছু বলতে না দিয়েই ফোন কেটে দিলি। দাঁড়া তোর ঘুম ছুটাচ্ছি বলেই আবারো ফোন করলো। রিমি ঘুমের তালে যতোই কাটে মুসকান ততোই কল করে। রিমি কাটতেই মুসকান হেসে গড়াগড়ি খায় বিছানায় ওভাবে প্রায় ৩০মিনিট জ্বালানোর পর রিমি ফোন অফ করে আবার ঘুমিয়ে যায়৷ মুসকান ও দুষ্টুমি করতে করতে হাঁপিয়ে যায়। এবং একসময় ঘুমিয়েও পড়ে।
.
___________________
কোর্টে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে এলো ইমন। ইরাবতী আকরাম চৌধুরী কে খাবার দিয়ে ইমনের জন্য খাবার বাড়ছে আর কথা বলছে। ইমন গিয়ে বসলো তবুও তাঁর বাবা,মায়ের কথা বন্ধ হলো না। বুঝলো তাঁরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে৷ তাই সে আলোচনায় মনোযোগ দিলো আর খেতে শুরু করলো।
—- এতোদিন আফসোস হতো একটা মেয়ে নেই বলে। আজ মনে হচ্ছে আল্লাহ যা করে মঙ্গলের জন্যই করে৷ আল্লাহ না করুক আমাদের সাথে এমনটা ঘটলে সহ্য করতে পারতাম না৷ অন্যের সাথে ঘটেছে তাই বুকের ভিতর কেমন কামড়ে ধরেছে। বললো ইরাবতী।
আকরাম চৌধুরী সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললেন,
—- তুমি যে কি বলোনা ইরা। সবার সাথেই কি এমন টা ঘটে নাকি? দূর্ভাগ্যবশত ঘটে যায় আর একটু খেয়াল করলে দেখবে এসব দারিদ্র্য পরিবারের মেয়েদের সাথেই বেশী ঘটে। তবে কেসটা যখন আমার হাতে পড়েছে তখন অন্যায়কারীরা তাঁদের শাস্তি পাবেই। আর হ্যা তুমি কিন্তু পারুল কে বলে রাখবা কাজ করলে এ বাড়ি থেকেই যেনো করে রোজ রোজ যাওয়া আসা না করতে। সপ্তাহে একদিন ছুটি পাবে বাড়ির লোকদের সাথে থাকার জন্য। আইনের লোক আমি আমার বাড়ির কাজের লোক থেকে শুরু করে সকলের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে। সবাইকে প্রটেক্ট করার দায়িত্বও আমার।
—- হ্যাঁ বলে দিয়েছি তাছাড়া নিউজটা ওকেও পড়িয়েছি আমি। মেয়েটা তো ওর বয়সীই। আহারে চৌদ্দ বছর বয়সেই জীবনটা অন্ধকারে ঠেলে দিলো কিছু মানুষ রূপী জানোয়াররা। এদের প্রত্যেককেরই কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে ইমনের বাবা বলে দিলাম।
ইমন এতোক্ষণে বুঝলো তাঁর বাবা,মা কি নিয়ে কথা বলছে। দুসপ্তাহ আগেই দিহানদের গ্রামের এক ভ্যানচালকের মেয়েকে ধর্ষণ করেছে কয়েকজন যুবক। খাওয়ার মাঝেই হঠাৎ গলায় খাবার আটকে গেলো ইমনের যখন মনে পড়লো মুসকানও তো ঐ বয়সি৷ তাছারা মুসকানও গ্রামের দিকে থাকে। তাঁরা এক উপজেলার হলেও মুরাদ, দিহান এদের বাড়ি গ্রামের দিকে ইউনিয়নে। আর ইমনের বাড়ি পড়ে পৌরসভার মধ্যে। ইমনের মাথায় আরেকটা কথা নাড়া দিলো মুরাদ এখন অসুস্থ। তাঁর বাড়িতে সে আর বড় চাচা ছাড়া সকলেই মেয়ে। ‘তাহলে তো মুসুকেও সাবধানে রাখতে হবে। তাছাড়া মুসু এখন বড় হয়েছে। আচ্ছা ও যে স্কুলে যায় কোন ছেলে ওকে ডিস্টার্ব করে’? চোখ বন্ধ করলো ইমন ভাবতে লাগলো মুরাদের পুরো বাড়ির বাইরের দিকটা। পুরনো একতলা বাড়ি চারদিকে অর্ধেক দেয়াল করা যে কেউ সেই দেয়াল খুব সহজে টপকাতে পারবে। গেট বেয়েও ভিতরে যেতে পারবে কিন্তু ঘরের ভিতরে যেতে পারবেনা। তারপর ভাবলো মুসকানের রুম কোনদিকে। তখনি মনে পড়লো জানালার কথা। জানালায় অবশ্যই গ্রিল লাগানো আছে? সত্যি আছে তো? আজি গিয়ে দেখতে হবে না থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা করতে হবে’।
—- কিরে হা করে বসে আছিস কেনো খাবিনা? তোর না আজকে কোর্টে যেতে হবে।
চমকে মায়ের দিকে তাকালো ইমন। কিন্তু মন তাঁর ঠিক এখানে নেই মাথা ঝাঁকিয়ে মায়ের কথায় সায় দিয়ে পানি খেয়েই ওঠে পড়লো। বললো,
—- আসছি আমি।
—- আরে বাবা কিছু তো খেলিই না আর অল্প খেয়ে যা বাবা,দাঁড়া বাবা।
মায়ের কথার তোয়াক্কা না করে বেরিয়ে গেলো ইমন।
আকরাম চৌধুরী বললেন,
—- পিছু ডেকোনা তো, ছেলে কাজে বের হচ্ছে। কাজ নিয়েই হয়তো ভীষণ চিন্তিত। তুমি চিন্তা করো না। ছেলে কার দেখতে হবে না আমারই মতোন ভীষণ কাজ পাগল। বলেই হোহো করে হাসতে লাগলেন।
ইরাবতী মুখটা ভাড় করে বললেন,
—- তুমি বুঝবে কি করে মায়ের মন। সন্তান রা ঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া না করলে মায়ের মনে কতো অশান্তি হয় জানো? তবুও আমার একটা মাএ সন্তান সেই যদি ঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া না করে তাহলে এগুলো আর কে খাবে শুনি?
_______________________
—- আপু খুব মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে একটু মাথা টিপে দাও না। রিমির কোলে মাথা রেখে আল্হাদী গলায় বললো মুসকান।
রিমি বিরক্তি নিয়ে ফোন থেকে চোখ সরালো। বললো,
—- ফোন টিপছি আমি আর মাথা ব্যাথা তোর? পারিসও বটে।
—- অতো ক্যাচ ক্যাচ না করে মাথা টিপে দাও নয়তো দাদাভাইকে বলে দিবো তুমি সারাক্ষণ ফোন টিপো।
—- ওওও আচ্ছা এই ব্যাপার তা আমি কি বলবো দাদাভাইকে যে তোমার বন্ধু দ্যা গ্রেট ইমন চৌধুরী কে দেখে তোমার আদরের দুলালি, ন্যাকা ষষ্ঠীর বুকের ভিতর উথাল-পাতাল ঢেউ শুরু হয়েছে। তিনি যাকে অবুঝ শিশু, ভোলাভালা শিশু মনে করে সেই বদের হাড্ডি শিশুরানী সেই ক্লাস ফোর, ফাইভ থেকেই তোমার বন্ধুকে নানাভাই নানাভাই করে মুখে ফেনা তুলে ঠিকি অথচ মনে মনে জামাইভাই জামাইভাই করে। কানমলা দিতে দিতে বললো রিমি৷
মুসকান ন্যাকা কান্না শুরু করলো আর বললো,
—- সব মিথ্যা কথা, সব মিথ্যা কলঙ্ক দাদাভাই জানে ছোটরা মিথ্যা বলে না। মিথ্যা বললে তুমি বলবে আমি না।
রিমি হেসে ফেললো দুহাতে মুসকানের গলা জরিয়ে ধরে বললো,
—- তাহলে সত্যি কলঙ্ক কি বইনা?
মুসকান খিল খিল করে হেসে ওঠলো এই হাসির মানে হলো এ বাড়ির প্রতিটা মানুষই তাঁকে ভীষণ রকমের ভালোবাসে। প্রতিটা মানুষেরই ভীষণ আদরের সে।
—- সত্যি হচ্ছে আমি নানাভাইকে এখন দুচোখে সহ্য করতে পারিনা। ঐ বজ্জাত মহিলার সামনে আমাকে কি পরিমাণ ঝেড়েছিলো মনে আছে তোমার?
—- আহারে সোনা আমার তুমি যে ঐ বয়সে এতো জেলাসী তা কি আর সে জানতো নাকি?
—- ধ্যাত একদম রাগাবানা ছাড়ো তো। মাথা ধরেছে আমার তেল দিবো থাকো তুমি যাচ্ছি আমি। যাও যাও ফোন টিপো প্রেম করো কাউকে বলবো না। স্বাধীনতা দিলাম। বিছানা থেকে নেমে মুখ ভেঙচি দিয়ে রুম ত্যাগ করলো মুসকান। মুসকানের কথা শুনে রিমি হাসতে হাসতে বললো,’পাগলী একটা’।
.
রাত আটটা বাজে। মরিয়ম আক্তারের শরীরটা খারাপ তাই শুয়ে পড়েছেন তিনি। মুসকান তেল নিয়ে রুমে যেয়ে তেল দিয়ে দিতে বললে তিনি বলেন মুরাদের কাছে যেতে। আর খাবার বেড়ে রেখেছেন দু’ভাইবোন যেনো খেয়ে শুয়ে পড়ে। মায়ের কথা শুনে মুসকান তেল নিয়ে চলে গেলো মুরাদের রুমে।
মুসকানের হাতে তেল চিরুনি আর ব্যান্ড দেখে মুচকি হাসলো মুরাদ। ফোন রেখে বললো,
—- কিরে মাথা ব্যাথা করছে নাকি?
—- হুম খুব,,,আম্মুর শরীর ভালো নেই শুয়ে পড়েছে। তাই তোমার কাছে এলাম দিয়ে দাও। ঠোঁট ফুলিয়ে বললো মুসকান।
—- হুম আয় বোস ফ্যানের পাওয়ার কমিয়ে দে বা বন্ধ করে দে নয়তো চুল ওড়বে।
মুসকান ফ্যান অফ করে মুরাদের সামনে বসলো। মুরাদ সবেই বোতলের মুখা খুলতে যাবে তখনি ফোন বেজে ওঠলো। মুরাদ ফোন নিয়ে দেখলো ইমন ফোন দিয়েছে৷ রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ইমন বললো,
—- গেট খোলার ব্যবস্থা কর নয়তো সারারাত এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো।
—- আরে শালা কস কি তুমি! তাহলে আজ আর গেট খোলা হলো না রে।
—- ফাইজলামি বাদ দিয়ে খোল আমি অফিস থেকে ডিরেক্ট এসেছি। মাথা কিন্তু খুব গরম আছে।
—- আহারে বেচারা তোর দুঃখে আমার কান্না এসে গেছে।
—- খুলবি কি না???
—- আরে আরে সিরিয়াস হচ্ছিস কেনো খুলছি ওয়েট কর।
ফোন কেটে মুসকান কে বললো চাবি নিয়ে গিয়ে গেট খুলতে ইমন এসেছে। ইমন এসেছে শুনামাএই বুকের ভিতর খুশিতে লাফিয়ে ওঠলো। মানে তাঁর হৃদস্পন্দন লাফাতে শুরু করে দিয়েছে। ইচ্ছে করছে এক ছুটে গিয়ে গেট টা খুলে দিতে। ইশ যদি এক সেকেন্ডের ভিতরে সব করা যেতো কতোই না ভালো হতো। পরোক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলো আর শাসালো ‘কুল মুসু কুল। জাষ্ট কন্ট্রোল করে রাখ নিজেকে। এমন ভাব কর যেনো কেউ আসেনি। না মানে কেউ এসেছে কিন্তু তোর কেউ না। নাহ তোর কেউ কিন্তু স্পেশাল কেউ না ওকে ডান এবার চল’।
স্বাভাবিক ভাবে ওঠে দাঁড়ালো মুসকান। ধীরপায়ে চলে গেলো মায়ের রুমে চাবি আনতে। চাবি নিয়ে ধীরপায়ে চললো গেটের দিকে। পা চলছে তাঁর ধীর গতিতে কিন্তু বুকের ভিতর কি যে অসহ্য জিনিস থাকে না? সেটা চলছে প্রচন্ড স্পীডে।
.
চলবে।
আমি জানি পর্বটা খুব ছোট হয়েছে তাই কেউ মনে করিয়ে কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিবেন না কিন্তু। শুধু ছোট করে অনুভূতি বলে যান সবাই।