হৃদপিন্ড পর্ব-৯
#জান্নাতুল নাঈমা
মুসকান কাঁপা গলায় বললো দরজা বন্ধ করলেন কেনো?
ইভান এগুতে এগুতে বললো আরে ইয়ার দরজা খোলা অবস্থায় কেউ তোমাকে আমার রুমে দেখলে তোমারই বদনাম হবে,,,
মুসকান কয়েক পা পিছিয়ে গিয়ে ঢোক গিললো ভয়ে।
ইভান যতো এগুচ্ছে মুসকান ততো পিছুচ্ছে।
পিছুতে পিছুতে যেই দেয়ালে ঠেকেছে অমনি মুসকান ভয়ে ভয়ে বললো আপনি কি খুঁজে পাচ্ছেন না বলুন আমি খুঁজে দেই।
ইভান দেয়ালে এক হাত রেখে আরেক হাতের আঙুল দিয়ে মুসকানের গালে আলিঙ্গন করতে করতে বললো এমন কি আছে তোমার মাঝে যে ইমন চৌধুরীর মতো মানুষ সারাক্ষন তোমাকে নিয়ে পড়ে থাকে,সব কিছুতে তোমাকে প্রটেক্ট করে,কি নেশা ধরিয়েছো বেবী, শুধু বড় ভাই কে তোমার নেশায় মাতাল করলে চলবে আমরাও তো আছি।
ওর থেকে বেশী সুখ দিবো, ওর হলো এিশ আমার হলো তেইশ বলেই চোখ মারলো।
মুসকান কেঁপে ওঠলো, কথাগুলো কানের মাঝে বিষের মতো লাগলো, এতো বিশ্রি শুনালো কথা গুলো যে রাগ হলো ভীষণ এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে সামনে থেকে সরে দরজার দিকে এগুতেই ইভান ওড়না টা টেনে নিজের কাছে নিয়ে নিলো।
মুসকান ভয়ে ইভানের লোভাতুর চোখ মুখের দিকে একবার চেয়ে নিজের ওড়নার দিকে একবার চেয়ে লজ্জায় ঘৃনায় ছুটে দরজার সিটকেরী খুলতে গেলো।
ইভান সাথে সাথেই মুসকান কে টেনে বিছানার কাছে নিয়ে ছুঁড়ে ফেললো।
মুসকান ভয়ে ভয়ে পিছুতে লাগলো।
আমাকে যেতে দিন, দয়া করুন আমাকে আমার সাথে এমন করবেন না বলেই অনেক আকুতি মিনতি করতে লাগলো।
ইভান চোখ বুজে ঠোঁট দুটো জিহ্বা দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে এগুতে লাগলো।
ইভানের নজরে পড়েছো বাবু তোমাকে টেষ্ট না করেই ছেড়ে দিবো। বলেই মুসকানকে টেনে জোর করে বিছানায় চেপে ধরতেই মুসকান জোরে এক চিৎকার দিলো,,,
ইভান মুসকানের ঘাড়ে বিশ্রিভাবে ঠোঁট দিয়ে, আলিঙ্গন করতেই মুসকান তাঁর সর্বশক্তি দিয়ে ধাক্কা দিতে লাগলো, তবু কোন লাভ হলো না।
মুসকানের কাঁধের জামার অংশ এক হাতে ছিঁড়ে ফেললো।
মুসকান চিৎকার করতে শুরু করলো। তাঁর চিৎকার চার দেওয়ালেই সীমাবদ্ধ রইলো।
অবশেষে হুহু করে কেঁদে ওঠলো।
আমার সাথে কেনো এমন হয়।কেনো আমি বার বার এমন পরিস্থিতির স্বীকার হই আল্লাহ।
ইয়াশফা,ইয়ানা আপুরাও তো আমার মতো মেয়ে ওরা তো আমার থেকে বড় কই ওদের দিকে কেউ তো খারাপ দৃষ্টি ফেলে না বা ওদের জীবনে তো এমন খারাপ পরিস্থিতি আসেনা।
কি পাপ করেছি আমি,,,
ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো মুসকান।
ইভান নিজের শার্ট খুলতে শুরু করলো।
মুসকান ইভানকে এক ধাক্কা দিয়ে সরাতেই ইভান আবার বিছানায় চেপে ধরলো তাঁকে,একহাতে পেটে খামচে ধরে, ঘাড়ে কামড় বসালো,,,
,
দরজায় তিন-চারবার কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেলো। বিছানায় তাকাতেই ইমনের মাথায় রক্ত ওঠে গেলো৷ হাতটা শক্ত মুঠ করে রক্ত বর্ন চোখে তাকালো ইমন,,,
ইভানের ভয়ে গলা শুকিয়ে গেলো।
মুসকান বিছানা থেকে ওঠে দৌড়ে গিয়ে ইমন কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। এতোটা শক্ত করে জরিয়ে ধরেছে যে কখনোই ছারবেনা, সে যেনো তাঁর সবথেকে নিরাপদ জায়গাটা পেয়ে গেছে। প্রানপনে সেই জায়গাটা ধরে রাখতে চাইছে সে কোনভাবেই হারাতে চাইছে না।
ভয়ের মাঝে, কঠিন পরিস্থিতি তে মুসকান নিজের অজান্তেই ইমনকে বুঝিয়ে দিয়েছে সে তাঁকে কতোটা আপন ভাবে, কতোটা ভরসা করে।
কাজের লোকগুলো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
ইমন স্ট্রেট হয়ে পুরো শরীর শক্ত কাঠের মতো করে দাঁড়িয়ে আছে।
ইভান বললো দাদাভাই এই মেয়েটা আমার ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। জোর করে আমার সাথে,,,
তুই বিশ্বাস করসিস না,,,
মুসকানের কান্নায় ইমন বেশ বুঝতে পারলো মেয়েটা প্রচন্ড ভয় পেয়েছে। ইভানের কথা তাঁর কানে গেলো না। সে মুসকানকে দুহাতে দুকাধে ধরতেই থমকে গেলো। রক্ত বর্ন চোখে ইভানের দিকে তাকালো।
মুসকান কে ছাড়িয়ে নিজের কোর্ট টা খুলে পড়িয়ে দিলো।মুসকান ভয়ে সমান তালে কেঁপে চলেছে ডুঁকরে কেঁদে ওঠছে ফিরোজা মুসকান কে জাবটে ধরলো।
ইভান ইমনকে বুঝাতে একটু এগুতেই ইমন হাত মুঠ করে নাক বরাবর এক ঘুষি দিলো। নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়তে শুরু করলো।
বাজে ভাষায় গালি দিয়ে ইভানকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না একের পর ঘুষি দিয়েই যাচ্ছে। মুসকান আরো দ্বিগুন ভয় পেয়ে যাচ্ছে এসব দেখে।
তোর সাহস কি করে হয় ওর গায়ে হাত তোলার,,,
ওর দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস কোথায় পেলি তুই,,,নিজের কুকর্মের দোষ ওর ওপর চাপাচ্ছিস।
তুই আমাকে এখনো চিনতে পারিসনি।
তুই কি ভেবেছিস এই পুরো বাড়িতে এতোগুলো অপরিচিত মানুষের মাঝে ওকে আমি রেখে যাই কোন প্রকার সেফটি ছাড়াই,,,
ইমন চৌধুরী এতো কাঁচা কাজ করে না।
তুই যখন ওকে তোর রুমে নিয়ে গেছিস বাহানা দিয়ে আমি তখন রাস্তায়,,, তোর মতলব বুঝতে পেরেই ড্রাইভার কে দিয়ে ড্রাইভ না করিয়ে নিজে ড্রাইভ করে এসেছি। মুসকানের আশে পাশে একটা পিঁপড়ের উপস্থিতি ও আমি শত মাইল দূর থেকে টের পাই বুঝেছিস,,,
বলেই ঘারে চেপে ধরলো একহাতে টেনে হিচড়ে নিচে নেমে চিৎকার করে সকলকে ডাকতে লাগলো।
নাজমা চৌধুরী রুম ছেড়ে বেরিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো কি হচ্ছে,,,
ইভানকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে বললো একি ইভান দাদু ভাইয়ের কি হয়েছে,,,
উপর থেকে ইয়ানা, ইয়াশফা সহ সাজিয়া বেগম নেমে এলেন। ছেলের অবস্থা দেখে সাজিয়া বেগম এক চিৎকার দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ইমনের হাত থেকে ছাড়িয়ে ছেলেকে জরিয়ে কাঁদতে লাগলো।
আমার ছেলেকে খুন করে ফেলেছে গো,,,আমার কলিজাকে আঘাত করেছে গো,,,ইমনের দিকে রাগি চোখে চেয়ে বললো খুনি,,,তুই আমার ছেলেকে খুন করতে গিয়েছিস যাতে এই পুরো সম্পত্তির মালিকানা শুধু তুই পাশ।
এদিকে নাজমা বেগম সহ ইয়ানা, ইয়াশফাও সবটা বুঝে গেছে মুসকান কে দেখে।
ইমন হাত তুলে থামিয়ে বললো ব্যাস,,,
আপনি আর একটা কথাও বলবেন না।
আপনার গুনোধর পুএ কি করেছে জানতে চান,,,
মুসকান কে এক হাতে টেনে কোর্ট টা সরিয়ে জামার ছেড়া অংশ দেখিয়ে আবার কোর্ট টা পড়িয়ে দিয়ে বললো এইটুকুন একটা মেয়ে কে আপনার ছেলে ছাড়তে চায়নি,আমি যদি ঠিক সময় না আসতাম কি হতো ভাবতে পারছেন। এমন জঘন্য, ছেলের জন্য চোখের জল না থুথু আসা উচিত।
এবার সাজিয়া চৌধুরী ক্ষেপে গেলো। মুসকানের সামনে গিয়ে মুসকানকে থাপ্পড় দেওয়ার জন্য হাত তুলতেই ইমন হাত ধরে ফেললো।
সাজিয়া বেগম বললেন ওওও এই মেয়ের জন্যই এসব।
ইমন সাজিয়া বেগমের হাত ছেড়ে বললেন এমন ভুল করার সাহস ও দেখাবেন না।
সাজিয়া বেগম বললেন এই বাইরের মেয়ের জন্য তুমি আমার ছেলেকে আঘাত করেছো।
আমার ছেলের দোষটা কোথায়,,, যেখানে এ বাড়ির বড় ছেলে পতিতালয় থেকে ওঠে আসা একটা মেয়ে কে নিয়ে দিনরাত ফূর্তি করছে। বড় রা যা করবে ছোট রা তো তাই শিখবে।
ইমনের মাথায় রক্ত যেনো জমাট বেঁধে গেলো।
আপনি যদি আমার বড় না হতেন ঠাশিয়ে কয়টা থাপ্পড় লাগাতাম।
সাজিয়া বেগম চুপসে গেলেন। দেওয়া আর বলা একি হলো।
ইমন বললো অন্যের গায়ে দোষ চাপানোর আগে নিজেকে শুধরান। বড় বাড়ির ছেলে বলে আপনার ছেলে পার পেয়ে যাচ্ছে, বাইরে কি করে বেড়ায় খোঁজ রাখেন???জিগ্যাস করবেন একরামুল চৌধুরী কে?
তাঁর ছোট ছেলের জন্য কতোজনের কাছে মুখ লুকিয়ে চলতে হয়,কতোজন পুলিশ অফিসারকে ঘুষ খাওয়িয়ে চুপ রাখতে হয়৷ কতজন মেয়েকে টাকার বিনিময়ে মুখ না খুলতে বাধ্য করা হয়।
সাজিয়া বেগম লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো। তাঁর ছেলের কুকীর্তি সবটাই তাঁর জানা,,,
এবার নাজমা চৌধুরী বললেন দাদুভাই,,,
অনেক হয়েছে আর না এবার তুমি ঘরের লক্ষীকে যথার্থ মর্যাদা দাও।
ইমন ইয়ানা,ইয়াশফার দিকে চেয়ে ধমকে বললো তোমরা এখানে কি করছো যাও উপরে যাও।
দুজনই মাথা নিচু করে উপরে চলে গেলো।
এবার ইমন মুসকানের দিকে চেয়ে বললো ফিরোজা ওকে রুমে নিয়ে যাও। পোশাক পালটাতে বলো।
সবাইকে পাঠিয়ে এবার ড্রয়িং রুমে শুধু ইমন,সাজিয়া বেগম, নাজমা চৌধুরী,আর ইভান ফ্লোরেই ঝিম মেরে পড়ে আছে।
ইমন বললো মুসকান এর বয়স সবে পনেরো, আমি চাইছিলাম না এখনি কিছু করতে, সামাজিক নিয়মে যতোটা করা যায় করবো। আর এই কুলাঙ্গার কে যেনো আমার চোখের সামনে বা মুসকানের আশে পাশে না দেখি। মুসকানের আশে পাশে ওকে যদি কখনো দেখি তো জানে মেরে দিবো।
সজিয়া বেগম এক ঢোক গিললেন।
নাজমা চৌধুরী বললেন মুসকান কোন পতিতালয় থেকে আসেনি,সময় হলে সবটা সবাই জানবে।
আর দাদু ভাই আমার যখন নয় বছর বয়স তখন তোমার দাদা আমাকে বিয়ে করে এ বাড়িতে নিয়ে এসেছে,,,সেই তুলনায় তোমার ঘরনী ঢেড় বড়,,,
ইমন গম্ভীর গলায় বললো হুম।
সাজিয়া বেগম কাঁদতে কাঁদতে ইভান কে ওঠাতে যেতেই ইমন বললো আপনি নিজের ভালো চাইলে ওকে ছাড়ুন আর চুপচাপ নিজের ঘরে যান।
সাজিয়া বেগম বললেন আমার ছেলেটা মরে যাবে,,, কতো রক্ত ঝড়ছে এভাবে কেউ মারে বলেই অভিযোগ ছুঁড়লেন।
ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো পনেরো বছর বয়সী এক কিশোরী কে ধর্ষন করার চেষ্টা করেছে তেইশ বছর বয়সি এক যুবক,,,
এর শাস্তি কি হতে পারে মিসেস সাজিয়া চৌধুরী???
সাজিয়া এবার হাউমাউ করে কেঁদে ওঠলো।
দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে এখন সকলেই এক জোট হয়ে লড়াই করছে। ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যু দন্ড দেওয়ার কথাও সাজিয়া বেগম জানেন। তাঁর ছেলেও তো এই জঘন্য কাজে লিপ্ত হতে যাচ্ছিলো। ভয়ে এক ঢোক গিলে ইমনকে দু হাত জোর করে অনুরুধ করলো।
ইমন বললো আমার দেওয়া শাস্তি তো ওকে ভোগ করতেই হবে। নয়তো আবারো একি ভুল করতে ওর দ্বিধা হবেনা। তাই ইমন চৌধুরীর দেওয়া শাস্তি ওকে ভোগ করতেই হবে। বিনা চিকিৎসায় সারারাত ও এখানে ছটফট করবে একটা পিঁপড়াও যেনো ওর ধারে কাছে আসতে না পারে।
সাজিয়া বেগম বললেন ইমন ও তোমার ছোট ভাই,,,
ইমন বাঁকা হাসলো অন্যায়ের শাস্তি সকলকেই পেতে হবে হোক সে আমার ভাই,আমার বাবা,আমার মা বা আমার স্ত্রী। অন্যায় কারীকে শাস্তি দিতে এই ইমন চৌধুরী কখনো পিছুপা হয়নি আর হবেওনা।
,
মুসকান বিছানায় দুহাটুর ওপর মুখ রেখে কেঁপে চলেছে,,,
ইমন রুমে ঢুকতেই ফিরোজা বললো বড় ভাই, আপা তো অনেক ভয় পাইছে,কেমন কাঁপতাছে।
ইমন গম্ভীর ভাবে বললো আমি দেখছি।
ফিরোজা চলে যেতেই ইমন দরজা টা লক করে দিলো। মুসকানের কোন প্রতিক্রিয়া দেখতে পেলো না।
ধীর পায়ে এগিয়ে মুসকানের সামনে বসলো।
মুসকান নিচের দিকে মাথা রেখে কেঁদেই চলেছে।
ইমন ডাকলো মুসকান,,,
……….
মুসকান,,,
………..
কোন সারা পেলো না এবার ইমন জোরে এক ধমক দিয়ে ডাকলো মুসকান,,,
মুসকান কেঁপে ওঠলো ইমনের দিকে অশ্রু মিশ্রিত চোখে চেয়ে হাঁটু ছেড়ে ইমনকে জাবটে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
ইমন চোখ দুটো বন্ধ করে গভীর এক শ্বাস ছাড়লো।
কিছুক্ষন পর মুসকানের কান্না টা থেমে এলো।
হাত দুটো আলগা করে দিলো,কিন্তু নিজে সরতে পারলো না। ইমনের বুকের মাঝে আবদ্ধ সে,,,
ইমনের হুকুম ছাড়া সেই বুক থেকে ওঠার সাধ্য কি আর তাঁর আছে,,,
কান্না থেমে একরাশ লজ্জা এসে ভড় করলো,,,
ইমন মুসকানের হালকা নড়চড় অনুভব করতেই ছেড়ে দিলো।
মুসকান একটু সরে মাথা নিচু করে বললো আপনি খেয়েছেন,,,
ইমন গম্ভীর মুখেই মুসকানের দিকে চেয়ে ভাবলো এমন মানসিক অবস্থায়ও আমাকে নিয়ে ভাবছো, সত্যি মুসকান তুমি কি দিয়ে তৈরী,,,আল্লাহ তোমাকে কোন মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছে,তোমার আত্মায় কিসের সবুর দিয়ে সৃষ্টি করেছে খুব জানতে ইচ্ছে হয়। এইটুকুন মেয়ের এতো ক্ষমতা,এতো ধৈর্য, সহনশীলতা কোথায় থেকে আসে???
মুসকান ওঠতে নিতে নিতে বললো আমি খাবাড় রেডি করি গিয়ে,,,
ইমনের ভাবনায় ছেদ পড়লো মুসকানের ঘারের দিকে চোখ যেতেই,,,
একটানে মুসকান কে একদম নিজের কাছে নিয়ে এলো। মুসকান খানিকটা ভয় পেয়ে ইমনের মুখের দিকে তাকালো।
ইমন একহাতে মুসকানের কোমড় জরিয়ে আরেকহাতে ওড়নাটা সরিয়ে চুল সরালো,বিস্ময় চোখে চেয়ে আছে,রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তাঁর। চোখ দুটো রক্ত বর্ন ধারন করেছে।
কামড়ের দাগ স্পষ্ট,,,
মুসকান ভয়ে চুপসে যাচ্ছে, শ্বাস প্রচন্ড ভাবে ওঠানামা করছে তাঁর, ইমন রাগে কয়েকদফা শ্বাস নিয়ে মুসকানের ঘাড়ের আঁচে আঙুল ছুঁয়ালো,,,
মুসকান আহ করতেই ইমন হাত সরিয়ে নিলো।
ইমন বললো আর কোথাও এমন ব্যাথা রয়েছে,,,
মুসকান লজ্জায় কুঁকড়িয়ে গেলো।
ইমনের প্রচন্ড রাগ হলো কড়া গলায় জিগ্যেস করলো আছে কিনা বলো,,,
মুসকান মাথা নিচু করে ফেললো ইমন সেভাবেই মুসকানকে শক্ত করে ধরে রইলো আর বললো কোথায়,,,
মুসকান একহাত পেটের দিকে দেখিয়ে এখানে,,,
ইমন আর কিছু না ভেবে কামিজের পার্টটা ওঠিয়ে দেখলো নখের বেশ বড় একটা আঁচ,,,
মুসকান ভয়ে কাঁপতে শুরু করেছে আবারো,,,
ইমন বুড়ো আঙুল দিয়ে পেটের সাইটে দাগটার ওপর বুলালো মুসকানের পুরো শরীরে কেমন অদ্ভুত শিহরন বয়ে গেলো, যা তাঁর ব্যাথা অনুভূত হওয়াটা কমিয়ে দিলো,মনের ভিতর অজানা অনুভূতি রা ওঁকি দিতে লাগলো, সেই অনুভূতির কাছে এই সামান্য ব্যাথাটা তাঁর তুচ্ছ মনে হলো।
চোখ বন্ধ করে ভারী শ্বাস ফেলতে শুরু করলো।
ইমন হাত সরিয়ে পেট টা ঢেকে ঘাড়ে তাকালো।
খুব বিশ্রি লাগছে তাঁর দাগটা ইচ্ছে হলো দাগপড়া জায়গাটা ব্লেট দিয়ে কেটে ফেলে দিতে।
মুসকান যদি ব্যাথা না পেতো,মুসকানের ক্ষতি না হতো তবে সে তাই করতো।
ধীরে ধীরে হাত আলগা করে দিলো।
কি যেনো ভেবে বললো মুসকান আর কোন ক্ষতি হয়নি তো,,,
মুসকানের মুখটা মলিন হয়ে গেলো,,,ছোট হলেও সে ঠিক বুঝতে পারলো ইমন কি বুঝাচ্ছে।
মাথা নাড়িয়ে না করলো,,,
ইমন স্বস্তির এক শ্বাস ছেড়ে বললো –
দুজন একসাথে এ রুমেই খাবো,,,
মুসকান বিছানা থেকে নামতে যেতেই ইমন বললো তুমি এখানেই থাকো ফিরোজা খাবাড় আনবে,,,
,
চলবে……
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটা কেমন হচ্ছে জানাবেন।