সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️পর্ব_১৬/১৭/১৮

সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️পর্ব_১৬/১৭/১৮
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

ঋতুর ইশারায় মালি আমানকে দেখলো।
তার মুখে অবাকের দৃশ্য স্পষ্ট।
আমি কিছু মালি দাদার কাছে প্রশ্ন করব তার আগেই আমান চলে এলেন আমার আর প্রশ্ন করা হলো না।
–মেঘ বাসায় যাবে না।
–না।
–মানে (ভ্রু কুচকে)
–মানে আজ ঋতুকে দেখতে আসবে আমি ওর বাসায় যাবো।
–ওহ সালিকা আপনাকে দেখতে আসবে আপনি আগে বলবেন না।
–জি আসলে হুট করেই ঠিক হলো।
–তো পাত্র কে আমাদের করিন মহাশয়।
–জি। (কিছুটা লজ্জা পেয়ে)
–আচ্ছা তাহলে তোমাদের আমি পৌঁছে দেয়।
–আচ্ছা (ঋতু)
গাড়িতে আমান আর ঋতু বেশ গল্প করল কিন্তু আমি কেন জানি না আর সে দিকে মন দিতে পারলাম না আমার মন টা মালি দাদার কথায় আটকে গেল।
কোথাও একটা খটকা রয়েছে খুব বেশি।
মনের মাঝে হাজার প্রশ্ন আমি জানি ওনাকে প্রশ্ন করলে কোন উত্তর পাবো না তাই নিজের মতো করেই খুঁজতে হবে।
ঋতুদের বাসায় পৌছে আমান আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
–ফেন করো নিতে আসব।
আমিও হাসি দিয়ে তাকে বিদায় জানালাম।
লোকটা কিছু ঘন্টা আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
মুখটা চুপসে আছে।
আমি ঋতুর সাথে ভেতরে গেলাম
আন্টি অনেক কাজ করছে।
ঋতুর ভাই অভিজিৎ দাদা আমাকে দেখে বললেন,
–কেমন আছো আপু?
–এই তো ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ আপনি?
–এই তো ভালো করেছো এসে।
–হ্যাঁ বান্ধবীর এতো বড়ো একটা দিন আসবো না।
আন্টিও আমাকে দেখে খুশি হলেন।
যাজ আন্টিকে সাহায্য করতে বসব এমন সময় ঋতুর চিৎকার।
–কিরে পাঠার মতো চিল্লাস কেন?
–তুই ওখানে কি করছিস আমি শাড়ি পড়বো আমাকে হেল্প কর।
–তাই বলে চিল্লাবি?
–দেখ মা সামলে নিবে তুই আমাকে হেল্প কর।
–আচ্ছা ওকে দাড়া্ বাবা।
ঋতুর মার অবস্থা হলো আমার মায়ের মতো কেউই নেই দাদা, ঋতু, আঙ্কেল আর আন্টি থাকেন।
আন্টিকে হেল্প করার মত কেউ নেই।
আমার মাকে ঋতু হেল্প করেছিল।
আমি ও করতে গেলাম কিন্তু ছ্যেমড়ি করতে দিলো না।
যাক ওর সাজা শাড়ি পড়াতে হেল্প করলাম।
আর আমার হাতে চুড়ি পরে নিলাম
আমাকে চুড়ি পরতে দেখে ঋতু বলল,
–কিরে হটাৎ চুড়ি?
–চমি বিবাহিত তা তে বুঝাই যাচ্ছে না চুড়িটা পড়লে হয় তো যাবে।
–ও বাবা মেয়ের আবার বুড়ি সাজার ইচ্ছে জাগে?
–হয় রে।
দু জনে হেসে দিলাম ।
কিছু সময় পর কিরন ভাইয়া তার মা বাবা আর কিরন ভাইয়ার ভাই এলেন,
ওরা আসার পর ঋতুর সাথে কিরন ভাইয়ার মা কথা বললেন,
আন্টি ভালো মানুষ খুব।
সব কথা বার্তা শেষে বিয়ের দিন ফেলা হলো।
আগামি সপ্তাহের শুক্রবারে।
তার আগে বাকি অনুষ্ঠান।
আমি খুবি খুশি ছিলাম।
কিন্তু মনের মাঝে কোথাও মালি দাদার কথা গিলো বেশ নাড়া দিচ্ছে।
আমি ঠিক করলাম এখান থেকে বেরিয়ে সোজা ভার্সিটি যাবো চজ ৪ টা পর্যন্ত মালি দাদা ভার্সিটি তে থাকবেন ওনার থেকে জানতে হবে সব।
–ঋতু আমি এখান আসি।
–ভাইয়াকে ফোন করবি না?
–আব না আমি চলে যাবো সমস্যা নেই।
–সিওর?
কিরন কে বলি?
–আরে না যবো তুই থাক আর কি কি করবি ঠিক আর।
–হুম তুইও।
–হুম আসি আন্টি আসি,
–আসিস মা আবার।
–জি আন্টি বিয়ের আগে হলে তো আজকেই থেকে যেতাম।
–পুতুল মেয়ে একটা যা। অভিজিৎ এগিয়ে দিবে।?
–না আন্টি চলে যেতে পারব।
–আচ্ছা।
সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে,
জলদি করে ভার্সিটি তে পৌঁছে সোজা মালি দাদার কাছে গেলাম,
এদিকে,
আমান বিকাল ৪ টা বেজে গেছে দেখে মেঘকে ফোন করে।
কিন্তু ফোনে পাচ্ছে না।
মেঘ ফোন তুলছে না।
তাই ঋতুকে ফোন করে,
–হ্যালো ভাইয়া।
–হ্যাঁ মেঘ কই ঋতু?
–ভাইয়া ও তো বেরিয়ে গেছে এতো সময় তো চলে যাবার কথা।
–বেরিয়ে গেছে মানে আমি তো ওকে বেরোনোর সময় ফোন দিতে বলেছিলাম

–ও বলল চলে যেতে পারবে দাদা বলেছিল এগিয়ে দিবে তার পর কিরন বলল কিন্তু ও বলল ও যেতে পারবে।
–ওহ কতো সময় আগে বের হইছে?
–প্রায় ৩০ মিনিট এতো সময় চলে যাবার কথা বোধহয় জ্যামে ফেঁসেছে।
–তাও হতে পারে আচ্ছা রাখছি।
–জি ভাইয়া।
আমানের চিন্তা হতে শুরু করলো।
ফোন কেন ধরছে না মেয়েটা।
বলেছিল ফোন করতে মাতুব্বরি করেছে।
আমানের মনে হলো কিছু সময় দেখা যায়,
এদিকে,
–দাদা থ্যাংক গড তুমি আছো,
–কি হইয়াছে মা তুমি এমন হাঁপাচ্ছো কেন?
–তুমি আমাকে সকালে যা বললে না যে কোন ৪০-৪৫ বছরের কোন প্রোফেসর আসতে চাইছিল?
–হ্যাঁ।
–তুমি তাকে দেখেছিলে?
–হ্যাঁ আমাকে স্যার একটা ফাইল দিতে কইছিল সেই ফাইলে ছবি ছিল।
–তুমি দেখো তো এই লোকটা নাকি (আমি বাবার ছবি দেখিয়ে বললাম)
–না গো মা তুমি কি করবা আমার হয়ত ভুল হইছে।
–না আমার লাগবে মালি দাদা তুমি দেখাতে পারো আমাকে তার ছবিটা?
–হ্যাঁ কিন্তু ৬ মাস নেই তো কোথায় ঠিক ব
কইতে পারুম না।
ভালো কইরা দেখতে হইবো।
–আচ্ছা তুমি যাও দেখো খোঁজ।
–আইচ্ছা তুমি বসো।
মালি দাদা লাইব্রেরির দিকে চলে গেল। আমি বসে রইলাম।
কেন জানি না শান্তি পাচ্ছি না কোন এক অজানা ভয় ভেতরে গ্রাস করেছে।
সব কিছু ধুয়াসা লাগছে।
বেশ কিছুটা সময় কেটে গেল আমান বার বার ফোন দিতে আছে ৫০ বারের উপরে ফোন দিছে আমি পিক করছি না।
কোন মতে মালি দাদার থেকে লোকটাকে দেখতে পারলে হয়।
আমি যখন অস্থির হয়ে আছি তখন দেখলাম লাইব্রেরি থেকে মালি দাদা বের হইছে হাতে একটা কাগজ নিয়ে
দেখে শস্তি পেলাম।
দাদার আমার প্রায় অনেকটা কাছে চলে এসেছে।
আমি উঠে দাঁড়াতে হটাৎ আমাকে কেউ পেছন থেকে হেঁচকা টান দিলো।
পেছনে ফেরার আগে গালে খুব তিব্র আকারে সামনে থাকা মানুষ টার ৫ টা আঙুল পড়লো।
ঘটনা এতো দ্রুত হয়ে গেছে যে কিছুই বুঝে সামনে তাকানোর আগে সামনে থাকা মানুষ টা আমার দুই বাহু ধরে তার দিকে ফেরালো।
সামনে তাকিয়ে আমান কে দেখে অবাক ভিশন রাগ হচ্ছে তার হলুদ ফর্সা মুখ খানা রাগে লাল হয়ে আছে।
আমি গালের ব্যাথা ভুলে ভয়ার্তক দৃষ্টিতে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
ও আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কিছু একটা চেক করে একটা আছাড়ে ফেনটা ফেলে দিলো মাটিয়ে।
সেটা টুকরো হয়ে গেছে,
–ফোন হাতের মধ্যে কি সো অফ করার জন্য থাকে নাকি একটা মানুষ ফোন দিলে সেটা তুলতে হয় এই জন্য থাকে (চিৎকার করে বলল)
ওর চিৎকার শুনে ভয়ে আরেক দফা পিছিয়ে গেলাম
আমাকে পেছোতে দেখে ও এগিয়ে এলো,
–বাসায় আসার আগে ফোন দিতে বলেছিলাম ফোন দেওয়া তো দুরে থাক ১০০ বার ফোন দিয়েছি সেটাও তোল নি হাতের মধ্য ফোন রেখে।
সব বাদ দিলাম বাসায় যাবার কথা ৪ টার দিকে সেখানে এখন বাজে ৬ঃ৪০ সন্ধ্যার আজান দিয়ে দিছে।
ঋতুর বাসা থেকে বের হয়ে গেছ।
তাহলে কোথায় আছো?
নিজের বাসায় ও নেই।
তাহলে কোথায় আছো?
পাগলের মতো বিকাল ৪ঃ৩০ থেকে কোথায় কোথায় খুঁজে বেড়াচ্ছি ।
কোথাও নেই আমি তো ভেবেছি ফোন মনে হয় হারিয়ে গেছে কিন্তু এখানে এসে দেখি তো না আমার স্ত্রী দিব্বি তার হাতের মাঝে ফোনটা রেখে আমার ফোন ইগনোর করছে।
সমস্যা কি মেঘ তোমার কেন করেছো এমন।
কেন আমাকে এতো চিন্তার মাঝে রেখেছো।
বলো! (চিৎকার করে)
কি বলব দিশা পাচ্ছি না এখন সে সন্ধ্যা হয়ে গেছে এটা খেয়াল ই করি নি।
ও যে এতো রেগে যাবে ভাবি নি দোষ টা আমারি বলা উচিৎ ছিল এখন কি করব।
–তুমি এখানে আসবে ওকে ঠিক আছে আমাকে এক বার বলবে না?
তুমি বোঝ নি আমি চিন্তায় থাকবো।
কি বলব বুঝে পারতেছি না আমি,
চলবে,

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_১৭
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
আমি হতভাগ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি ওর কথার কোন উত্তর পশ্চিম আমার কাছে নেই।
আমি চুপচাপ গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি চোখ ভরা আমার পানি।
আমাকে এভাবে দেখে একটা নিশ্বাস ছেড়ে আমার হাত ধরে নিয়ে গাড়িতে বসালেন।
সত্যি বলতে ভয়ে আমি এটাও ভুলে গেছি ঠিক কি জন্য এসেছিলাম আমি।
কিছু সময় পর আমরা বাসায় পৌছালাম।
বাসায় যেতে ভেতরে যেয়ে দেখি বাবা বসে আছেন।
তার মুখেরও চিন্তার ছাপ এই নিশ্চিত আমার জন্য।
আমাকে দেখে বাবা উঠে এলেন,
–মা তুই ঠিক আছিস কই গিয়েছিলি বল তো চিন্তায় চিন্তায় আমাদের তো অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।
বাবার কথায় আমি কোন উত্তর দিতে পারছি না শুধু কান্না পাচ্ছে।
বাবা আবার বললেন,
–তোর গাল এমন লাল হয়ে আছে কেন কি হইছে।
আমি এখনো চুপ।
আমান বলল,
–মেরেছি।
বাবার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল।
–মেরেছিস মানে তুই আমার মেয়ের গায়ে হাত তুলার সাহস কই পাইলি (রেগে)
–তোমার মেয়ে হাতের মধ্যে ফোন গুঁজে আমার ফোন এবোয়েট করে।
ভার্সিটির বাগানে গিয়ে বসে ছিল।
কেন তোমার মেয়ের কাছে প্রশ্ন করো ত আমার ফোন কেন তুলে নি ওখানে বসে ছিল ভালো কথা বলে কেন যায় নি।
(প্রচন্ড রেগে)
–বুঝলাম ও ভুল করেছে হ্যাঁ মানছি তাই বলে তুই ওকে মারবি এটা কোন ধরনের কথা।
–ইচ্ছে তো ছিল সুন্দর করে আরো দুইটা দেয়।
–এই তুই ঘরে যা তো এখনে তোর কাজ নেই
বাবার কথায় আমান হন হন করে উপরে চলে গেলেন
আর আমি ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,
–এদিকে আয় মা।
বাবার আমাকে নিয়ে বসালেন।
নিজে আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন,
,–ওর আচরণের জন্য আমি ক্ষমা চাইছি আসলে কি বল ত ছেলেটা তোকে বড্ড ভালোবাসে রে।
তোকে না পেয়ে এই ২ ঘন্টা ওর কি অবস্থা ছিল তা আমি দেখেছি।
মুখটা ওর দেখার মতো ছিল না।
বড্ড ভয় পায় হারানোর।
মা মরা ছেলেটা আমার তার মায়ের চলে যাবার পর থেকে আমি ওর দুনিয়া তার পর আমাদের বাপ ছেলেট ছোট্ট দুনিয়ায় সামিল হলি তুই।
তোকে ও ঠিক কতোটা ভালোবাসে তা তুই কল্পন করতে পারবি না।
আমি মাথা নিচু করে বললাম,
–সরি বাবা আর এমন হবে না।
বাবা মলিন হেসে বললেন,
–ঠিক আছে মা যা উপরে যা ফ্রেশ হয়ে নে
আমি উঠে উপরে এলাম।
রুমের মধ্যে উকি দিলাম কেউ নেই।
চুপচাপ কাপড় নিয়ে ওয়াসরুমে গেলাম।
আয়নাতে মুখ দেখে অবাক।
কি জোরে না মেরেছে গাল খানা পুরো লাল হয়ে আছে।
কিন্তু আসল কাজটাই হলো না
নাহ আর এটার কথা ভাব্বো না আবার চড় খাবার ইচ্ছে নাই
গোসল করে বের হলাম
তখনও তিনি নেই।
কি জানি কই গেছেন
বসে রইলাম কিছু সময়
তার পর ঘুম
এ অবেলাতে নাকি ঘুমোতে নেই ব্রেন আলু হয়ে যায়, (বিঃদ্রঃ আমার টিচার বলে কথাটা)
কিন্তু আমাকে আর শোনে কে ঘুম আসলে যেখানে কাত শেখানে রাখ।
শুতেই মিষ্টি ঘুম টা চোখের দু পাতায় ছেয়ে গেল।
রাত ৯ঃ০০ টা,
নড়ে চড়ো শুতে গিয়ে ঘুম টা ভাঙলো।
চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি বারান্দায় এক জন সুন্দর মানুষ হাত দুটো সামনে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি তো জানি এই মানুষ টা শুধু আমার।
কিন্তু এখনো রেগে আছে না।
কি করে রাগ ভাঙাবো।
উঠতে তো ইচ্ছে ই হচ্ছে না কি বিপদ।
উঠতেই মন চায় না এমন সময় ঘুম টা যেন বেশ গাড়ো হয় যদিও রাত ভর চোখের পাতা বুঝে না তাও।
বেশ কষ্ট বিছনা ছেড়ে নামলাম।
বিছানা যেন আমাকে আরো কাছে ডাকছে আর আমি বলছি দুরে থাক না চাইতেও।
ওই যে চাইলেও পারবো না তোর কাছে যেতে।
ধুর কি আবল তাবল বকছি।
বিছনা ছেড়ে উঠে ওর কাছে যাবার জন্য পা বাড়াতে দেখে মহাশয় আমার সামনে।
ও মা এ কি এলিয়ান নাকি এতো জলদি চলে এলো কি করে।
তার হাত দুটো পেছনে বাঁধা।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম
আমাকে এভাবে দাঁড়াতে দেখে বললেন,
–বসো।
আমি চোখ তুলে তাকিয়ে বসে পরলাম।
উনি আমার সামনে একটা ঝুড়ি দিলেন,
আমি অবাক হলাম,
–এটা কি?
–দেখো।
আমি ঝুড়িটা খুলে দেখলাম মিষ্টি একটা বিড়াল ছানা।
দেখেই খুশি হয়ে গেলাম।
–আল্লাহ অনেক সুন্দর।
আমি ওটাকে বের করলাম।
কি সুন্দর ছোট্ট ছোট্ট পায়ে আমার কোলে বসে পরল।
আমি ওনার দিকে তাকলাম
উনি আমার সামনে বসে আমাকে যে গালে চড় দিয়েছে সে গালে চুমু খেলেন,
–সরি মাথা ঠিক ছিল না তাই অন্যায় করে ফেলেছি।
আমি নিরত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
–আসলে তোমায় যখন পাচ্ছিলাম না তখন পাগলের মতো হয়ে গেছিলাম কোন কিছুরই হুস ছিল না।
আমি হেসে দিলাম।
আমার হাসি দেখে সে আমাকে জড়িয়ে ধরতে গেলে বিড়াল ছানা টা মিউ করে উঠলো।
উনি ধরলেন।
আমি ওনার অবস্থা দেখে আবার হেসে দিলাম
আর বিড়াল ছানা টাকে হাতে নিলাম,
–কি নাম রাখা যায় বাচ্চা টার?
— তুমি ঠিক করো।
–ও না খুব মিষ্টি ওর নাম মিষ্টি রাখলে হয়।
–আচ্ছা মিষ্টি ই রাখা হলো।
আমান হাসলেন আমিও।
বিড়াল ছানা টা মানে মিষ্টি সত্যি কিউট।
রাতে খাবার শেষ করে মিষ্টির জন্য খাবার প্লেট। খাবার, আর শোবার যায়গা তৈরি করলাম।
বেশ মিষ্টি ও খেয়ে তার সোবার যায়গায় গিয়ে শুয়ে পরল।
আমার খুব আনন্দ হচ্ছে এটা দেখে মিষ্টি এক দম আমাদের সাথে মিসে গেছে।
পরের দিন সকালে,
বুঝতে পারলাম সকাল হয়েছে।
নামাজ পড়ে মিষ্টি কে নিয়ে বসলাম।
এটা যে কি কিউট। আমার সময় কাটানোর অন্য একটা উপায়।
আমান বাবা মসজিদ থেকে বাসায় আসে আমাকে বসার রুমের মেঝেতে মিষ্টির সাথে দেখে বললেন,
–বাহ মেয়েটা আমার নতুন বন্ধু পেয়ে দেখি বেশ খুশি।
–হ্যাঁ বাবা মিষ্টি ভিশন কিউট।
–হুম তাই তো দেখছি তোমার মেয়ে মিষ্টি কে পেয়ে আমাকেই ভুলে যাচ্ছে।।
আমি সরু চোখে আমানের দিকে তাকালাম।
ও বলল,
–মিষ্টির জন্য কিছু খেলনা নিয়ে আসব দু জন এক সাথে খেলো।
–আমার আপত্তি নেই খেলনার সাথে খেলতে।
–হ্যাঁ তা বোঝাই যাচ্ছে।
আমি হাসলাম।
কিছু সময় পর।
আমান ঘরে কাজ করছে।
–কি করছেন?
–কাজ।
–ওহ করতে থাকুন আমি একটু আসছি।
–কই যাও।
–নিচে।
–আচ্ছা।
আমি বেরিয়ে এলাম।
সোজা স্টোর রুমে ঢুকলাম।
আর সেই ছবিটা খুঁজতে লাগলাম
যেটা দেখেছিলাম আমি সে দিন।
কিন্তু মুসকিল হলো এখানে অন্ধকার আর অনেক ধুলো ময়লা।
আমার কাছে তো ফোন টাও নেই কাল ভেঙে দিয়েছে।
পাশের একটা জানালা খুলে খুঁজতে থাকলাম বেশ অনেকটা সময় খুঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে বেরিয়ে আসব এমন সময় দেখি পায়ের কাছে ছবিটা।
সঙ্গে সঙ্গে ওটাকে উঠিয়ে নি।
শাড়ির ভাজে লুকিয়ে বাইরে চলে আসি।
রুমে এসে দেখি আমান কাজ করছে।
মিষ্টির সোবার যায়গায় যায়।
গিয়ে ওকে তুলবার নাম করে ছবিটা লুকিয়ে ফেলি।।
আমান হটাৎ আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়,
–পানি খেতে গিয়ে মাথায় মাখরোসার জ্বাল বাঁধিয়ে নিয়ে এলে কেন।
আমি কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম,
–আব নিচে যাবার সময় লেগেছে।
–মেঘ পানি কিন্তু ঘরেই ছিল।
–তো কি হইছে।
–কিছু না।
উনি আমার দিকে এগিয়ে আমার মাথার ময়লা টা ফেলে দিলেন,
আর আমার দিকে একটা নতুন ফোন ধরে দিলেন,
–মেও নতুন ফোন। তোমার সিম কার্ড আছে দেওয়া।
আমি এটা দেখে খুশি হলাম।
কিন্তু সত্যি বলতে ওকে দেখে অবাক না হয়ে পারি না।।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম এমন সময় মিষ্টি মিউ করে উঠলো।
আমার ধ্যান আসলো।
আমি সরে গেলাম,
চলবে,

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_১৮(রহস্য সমাধানের দিকে)
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
দিন পেরিয়ে বিকাল হলো।
রুমের মাঝে বসে বসে মিষ্টি কে নিয়ে খুটিনাটি টুকটাক করছি।
এর মাঝে হটাৎ আমান এলো,
–মেঘ বাইরে যাচ্ছি ২ ঘন্টার মধ্যে ফিরে আসবো তুমি থাকো বাবা ও নেই অফিসে গেছে কাজে আমি জলদি ফিরে আসবো।
কথটা বলে আমার কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
আমি ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম
তার পর মিষ্টির দিকে তাকালাম,
–আমার সাথে আজ তুই যাবি মিষ্টি আজ আমরা হয় তো কোন বড়ো সত্যির মুখোমুখি হবো।
জানিস মিষ্টি ওকে না খুব ভালোবেসে ফেলেছি আমি চাইনা এমন কিছুর মুখোমুখি হতে যাতে আমার ভালোবাসার মধ্যে কোন বড়ো বাঁধা আসুক।
মিষ্টি আমার দিকে তার মায়াবি চোখ দুটো নিয়ে তাকিয়ে আছে।
পশুপাখি হয় তো কথা বলতে পারে না কিন্তু চোখের ভাষা বুঝে।
আমি মিষ্টিকে একটা ব্যাগে নিলাম
সাধারণত এ ব্যাগ গুলো বিড়ালের ই।
এ বাড়িতে আগে একটা বিড়াল ছিল আমান ওর জন্য এই ব্যাগটা কিনেছিল।
আজ আমি মিষ্টি কে ওটার মধ্যে নিয়ে শাড়ি পাল্টে থ্রি পিচ পরে নিলাম।
আর মিষ্টির বাসায় লুকানো সেই ছবিটা আমার পার্সে নিয়ে নিলাম।
তার পর বাসা থেকে সোজা ভার্সিটির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।
রিকশা করে সোজা ভার্সিটি তে পৌঁছে গেলাম।
সেখানে গিয়ে সোজা লাইব্রেরি তে।
যা ভেবেছিলাম তাই মালি দাদা ওখানেই আছে।
আমাকে দেখে উনি কিছুটা অবাক হলো।
–মা তুমি এখন এখানে
–হ্যাঁ দাদা আমি এখানে ।
–সে দিন হলো কি পেছন থেকে কেউ ডাক দিলো সেই ডাক শুনতে গিয়ে দেখি তুমি নেই মা কই গেছিলে।
–সেদিনের কথা বাদ দেও এটা দেখো তো।
আমি পার্স থেকে ছবিটা বের করলাম,
–কি এটা?
–দেখো ত এটাই কি সেই স্যার।
দাদা হাত থেকে ছবিটা নিলেন।
ভালো করে কিছু সময় তাকিয়ে রইলেন,
–দাদা বলো।
মনে মনে আসা করছিলাম যেন দাদা বলেন না।
কিন্তু আমার সমস্ত আসায় পানি দিয়ে দাদা বলল,
–হ্যা।
এই মুহূর্ত টা সব থেকে খারাপ বলে মনে হচ্ছে আমার।
পুরো পৃথিবী টাই উল্টো মনে হচ্ছে।
যা সন্দেহ করছি তার ৫০% ঠিক হলো।
বাকি ৫০% ঠিক হলে।
ভাবতেই মাথা ঘুরছে।
–মা তুমি ঠিক আছো?
–দাদা বাসায় যেতে হবে ভালো থেকো

–কিন্তু কি হয়েছে সেটা তো বললে না। আর এই ছবিটা বা তুমি কই পেলে।
–তেমন কিছু না গো ভালো থেকো দাদি কে সালাম দিও।
কথাটা বলে বেরিয়ে গেলাম

হাঁটার শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে।
কি করব কি না করব কিছু বুঝতে পারছি না।
আমান নয় এটা ।
মানে এই ভার্সিটির প্রোফেসর নয় আমান ।
আমান তার নামের সাথে মিল এমন কোন প্রোফেসর এর যায়গায় নিজেকে বসিয়েছে।
কিন্তু কেন।
সব কিছু প্রশ্ন হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে।
কে আমান?
কি ওর পরিচয়?
কিছুটা সময় একটা যায়গায় বসে থাকলাম
মাথাটা ঘুরাচ্ছে।
তার পর উঠে রওনা হলাম ।
বাসায় পৌঁছাতে হবে জলদি আমানের আসার আগে।
দৌড়ে রিকশায় উঠলাম
যতো দ্রুত সম্ভব বাসায় পৌছালাম
সোজা রুমে গিয়ে ব্যাগ থেকে মিষ্টি কে বের করে শাড়ি নিয়ে বাধরুমে ঢুকলাম।
শাড়ি পরে বাইরে বের হতে ৪২০ ভোল্ট এর ঝটকা খেলাম
আমান সামনে দাঁড়িয়ে।
আমার দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে,
আমিও মারাত্মক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
–কি হলো মেঘ তুমি এমন করে তাকিয়ে আছো কেন?
আমি সাভাবিক ভাবে বললাম,
–কি ভাবে তাকাবো আমার বরের দিকে আমি তাকাবো না।
আমান ভ্রু কুঁচকে বলল,
–আমি কি বলেছি তাকিও না।
–প্রশ্ন করছেন কেন?
–এমনি।
কথাটা বলে সে বাথরুম গেল।
আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
ও মা মিষ্টি কে ব্যাগ থেকে বের করে ব্যাগ উঠায় নি জলদি করে সেটা উঠালাম
আমান বের হয়ে আমার কাছে এসে আমার হাতটা ধরলেন,
আমি চুপচাপ আছি,
–বাইরে গেছিলে?
–না (সাবাভিক ভাবে)
–ওহ তবে মিষ্টি ব্যাগ বাইরে ছিল যে।
–দেখছিলাম ওর যায়গা হয় নাকি ওর মধ্যে।
–হাহা ও পিচ্চি একটা বিড়াল এতো বড়ো ব্যাগে ওকে ধরবে না।
–আমি তে শুধু দেখছিলাম
–হ্যাঁ তুমি তো তাই পারো।
উফ বাবা বাঁচলাম কিছু সময়ের জন্য দম গেছিল মনে হচ্ছিল

কিন্তু আমার ভেতর যে সমস্যার সৃষ্টি হলো তা তো নিরমল হচ্ছে না।
হবেও না।
রাতে খাবার খেয়ে আমি রুমে এসে মিষ্টি কে খাবার দিয়ে বাবার রুমে দিকে গেলাম
বাবা আর আমান বাবার রুমে আছে,
আমি বাবার রুমে যাবো এমন সময় শুনতে পেলাম,
–তোমার মা যে ভ্যাক্সিন এর জন্য প্রাণ দিয়েছে তুমি সেই ভ্যাক্সিন এর ভাইরাস কি ভাবে তৈরি করতে পারো আমান।
–আমি চাই ওই লোকটা ঠিক ওভাবে মরুক যেভাবে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
–তুমি কি পাগল আমান
তুমি বুঝতে পারছো এই সমস্যা টা তুমি করলে এটা সব যায়গায় ছাড়িয়ে যেতে পারে।
–জানি বাবা সব ভেবেই ঝুঁকি নিচ্ছি।
কি বলছে এনারা কিছুই বুঝতে পারলাম না।
রুমে প্রবেশ করলাম,
–বাবা কি হয়েছে।
আমাকে দেখে আমান আর বাবা ভুত দেখার মতো চমকে উঠলেন।
–মেঘ মা তুই।
–বাবা তুমি খাবার শেষ করে ঔষধ নিয়েছো?
আমার কথায় বাবা যেন শান্তির নিশ্বাস নিলো
–নারে মা।
–ঔষধ নেও অনেক কাজ করেছো এখনো কাজ করছো ঘুমাও।
–হ্যাঁ রে মা ঘুমাতে হবে
বাবা ঔষধ খেয়ে নিলেন,
–আমি এখনি ঘুমিয়ে পরবো।
–আচ্ছা।
আমান আমাকে নিয়ে বাইরে চলে এলেন,
–মেঘ,
–জি?
–তুমি কি করছিলে,
–আরে আর বলো না মিষ্টি কে খাবার দিয়ে তোমাদের রুমপ আসতে যাবো তখনি শুমতে পেলাম। মিষ্টির ডাক বাবা কি জোরে জোরে ডাকছিল।
দৌড়ে আবার ঘরে চলে গেলাম
–ওহ। কেন ডাকছিল।
–ওর লেজের উপর বই পরেছিল।
–ইস কি বলো এখন কি করে।
–খাওয়া শেষ ঘুম।
–ওহ
–হ্যাঁ।
আমান আমাকে নিয়ে ঘরে এলো।
আমি সোজা বেলকনিতে গেলাম
কিছু সময় পর অনুভব হলো কেউ পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি নড়ালাম না।
এক জোড়া হাত কোমড়ে পরলো আর তার মুখ আমার চুলের মধ্যে।
মিষ্টি বাতাস পাশে প্রিয় মানুষ টা।
সত্যি অদ্ভুত শান্তি।
,
এভাবে কাটলো ৫ দিন,
মেঘ এর মধ্যে অনেক চেষ্টা করেছে আমানের সত্যি পরিচয় জানার কিন্তু আমানকে বুঝতে দেয় নি কিছু৷
সব সাভাবিক ই রেখেছে।
আজ ঋতুর গায়ে হলুদ কাল বিয়ে
মেঘ একটা হলুদ শাড়ি পরে সেজে নিলো যাবার জন্য।
আমান ও যাবে। তাই ওকেও রেডি হতে পাঠিয়েছি।
ঋতুর বিয়ে বলে কথা।
বাহিরের সব চিন্তা বাদ দিয়ে দিলাম।
শুধু বান্ধবীর বিয়েতে ফোকাস করবো,
চলবে,
(১০০ শব্দ কম হয়েছে জানি আসলে সকাল থেকে হুট করে অসুস্থ হয়ে পরেছি তাই গল্প ধির গতিতে লিখলাম।
রিচেক দিতে পারি নি ভুল হলে ক্ষমা করবেন সাজিয়েও লিখতে পারি নি।
ইনশাআল্লাহ পরের পর্ব গুলো ভালো করে দেবার চেষ্টা করব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here