সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥
পর্ব_০৩
#লামিয়া_রহমান_মেঘাল
–মেঘ খেতে আয় মা।
আমি মায়ের কথা শুনে ডাইনিং টেবিলে এলাম,
–কি ব্যাপার মামনি তুমি রাতে ঘুমাও নি?
–কেন আব্বু হটাৎ এই প্রশ্ন করছো কেন?
–তোমার চোখ দেখে মনে হয় রাতে ঘুম হয় নি।
–না আব্বু তেমন কিছু না।
–হুম ঠিক আছে।
খাবার শেষ করে রওনা হলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে,
রাস্তা থেকে ঋতু উঠলো,
আমাকে কিছুটা উদাস দেখে ঋতু বলল,
–কিরে বেব তোর কি হইছে?
–বেব তোর সাথে না কথা আছে?
–কি কথা?
–ভার্সিটি চল বলছি।
–ওকে।
দেখতে দেখতে রাস্তা শেষ হলো আমরা ভার্সিটি পৌঁছে গেলাম
এবার ভেতরে প্রবেশ করে ঋতুকে নিয়ে একটা গাছের ছায়াতে বসলাম,
–বল কি বলবি,
আমি ওকে গত কিছু দিনের ঘটনা সব খুলে বললাম।
–কি বলিস এতো কিছু কি করে কি।
–হুম এতো কিছু কি করব বলতো বুঝতে পারছি না।
এই দেখ সেই লকেট
আমি ওকে লকেট টা দেখালাম।
ও দেখে বলল,
–আমারো না একটা কথা ছিল।
–কি কথা?
–বেব তোকে সে দিন বাসায় পৌঁছে দেবার পর কি হলো,
–কি হলো,
–স্যার ফোন দিয়েছিল।
–আমান স্যার?
–হ্যাঁ আমান স্যার।
–কি বলল,
–বলল তুই ঠিক আছিস কি না?
–কেন বলতো।
–আমার মনে হচ্ছে ওই লোকটা আমান স্যার।
–নারে ঋতু এটা হয় কেমনে আমান স্যার আর ওই লোকটা সম্পূর্ণ আলাদা দুটো মানুষ।
–তাও ঠিক আমান স্যার একটা খুব নিতির মানুষ।
–হুম।
–একটা বুদ্ধি পাইছি।
–কি বুদ্ধি?
–তুই এই লকেট টা খুলে ব্যাগে রাখ।
–তার পর?
–যদি ভার্সিটি থাকা কালিন ওই মুখোশ পরা লোকটা আসে তবে ভাব্বি ওটা আমান স্যার আর যদি না আসে তবে ওটা অন্য কেউ।
–কিভাবে কি ্
–আরে কিভাবে কিছু না তুই শুধু আমার কথা মতো কাজ কর।
–হুম।
ওর কথায় আমি লকেট টা খুললাম।
খুলে ব্যাগে রেখে আমরা ক্লাসে চলে এলাম।
ক্লাসে গিয়ে দেখি স্যার এখনো আসেন নি।
তাই দু’জন বসে গল্প করছিলাম।
প্রায় অনেকটা সময় পর ক্লাসে আসলেন স্যার আমান স্যার।
ওনার ক্লাসে আমি ভেবেছিলাম আজ অপমানিত হবো কিন্তু দেখি না লোকটা আজ খুব সুন্দর করে ক্লাস করিয়ে বেরিয়ে গেল
আমি আর ঋতু দু’জন দু’জনের দিকে তাকালম।
–মনে হচ্ছে না সেই লোকটা আমান স্যার। (ঋতু)
–হুম সেম হেয়ার বেব।
–হুম
–আচ্ছা চল আমরা গিয়ে একটু ফার্স্ট ফুড খাই।
–হুম চল।
আমি আর ঋতু চলে এলাম এক ফুচকা দোকানের সামনে।
দু’জন বেশ মজা করে ফুচকা খেলাম
আমরা টাকা দিয়ে আসতে যাবো তখন পেছন থেকে কিরন ভাইয়া ডাক দিলো,
–এই ঋতু মেঘ,
আমরা পেছনে ফিরে দেখি ভাইয়া
আমাদের দিকে এগিয়ে আসছেন,
–কি ব্যাপার তোমরা আজ জলদি জলদি,
–ভাইয়া আজ তো একটা ক্লাস ছিল
–ওহ তাই তো
–হুম তোমার কি অবস্থা এমন শুকনা লাগে কেন মুখ (ঋতু)
–হায় হায় কি প্রেম উফ(হেসে বললাম)
–মার খাবি মেঘ।
–আসলে আজ সকালে খেয়ে আসতে পারি নি খাবার পছন্দ হয় নি তাই।
–ও মা তা নিজে রান্না করতে (ঋতু)
–নাহ ভাবছি এক বারে তোমার হাতে রান্না খাবো।
–কি আজব কথা আমার হাতের রান্না কি করে।
–এই মুখে মুখে।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওদের প্রেম দেখছি আর হাসছি,
–কিরে হাসিস কেন.
–সিঙ্গেল মানুষের কাছে এগুলা হাস্যকর।
–হ্যা তা ঠিক বলেছো আপু। তা করব নাকি ব্যাবস্থা তোমার?
কিরন ভাইয়ার কথায় সবাই হেসে দিলাম।
–আচ্ছা ঋতু তুই ভাইয়ার সাথে যা ঘুরে আয় আমি বাসায় যাই।
–আচ্ছা একা পারবি।
–তোর আমাকে বাচ্চা মনে হয়?
–,না ঠিক তা না কিন্তু তোর তো শরীর ভালো না।
–আরে না সমস্যা নাই তুই যা এমন সময় আর পাবি না।
–আচ্ছা ঠিক আছে,
তুমি ওকে রিকশায় তুলে দেও।
–হ্যা আপু আসো আমার সাথে,
ভাইয়া আমাকে রিকশায় তুলে দিলো আমি বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
বাসায় এসে কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে বিছনায় শুয়ে পরলাম।
খুব টায়ার্ড লাগছে।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি, দেখি ঘুম আসে নাকি।
,
এদিকে মেঘের বাসয় এসে চুপচাপ মেঘের মাকে ফাকি দিয়ে মেঘের রুমে ঢুকেছে সেই অচেনা লোকটা।
মেঘের রুমে এসে মেঘকে এভাবে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে দেখে মুচকি হেসে আস্তে আস্তে তার কাছে গিয়ে বসে,
–আমার দেওয়া লকেট টা তুমি খুলে ফেললে মেঘ আচ্ছা থাক সমস্যা নাই এবার পরিয়ে দিবো পরের বার খুললে দেখো কি করি।
(মনে মনে,)
★★,
আলো থেকে হটাৎ ছায়া হয়ে গেছে আমার সামনে কিছুটা অস্বাভাবিক ফিল হতে চোখ খুলে সামনে থাক লোকটাকে দেখে যেই না চিৎকার দিবো তখনি আমার মুখটা চেপে ধরে লোকটা,
–ওরে আল্লাহ তুমি কি করতে যাচ্ছিলা।
–উম,
–চুপ থাকো আমার লকেট খুলছো কেন পাজি মেয়ে।
আজ আবার পরিয়ে দিয়ে গেলাম এর পর যদি খুলছো মনে করো খবর আছে তোমার।
–উম(রেগে)
–আমার আকাশের মেঘের রাগ হচ্ছে নাকি।
–রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছি আমি।
আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লোকটা আমার মুখ থেকে হাত সরিয়ে দেয়,
,–সমস্যা কি আপনার? কে আপনি? এভাবে আমার বাসায় কি করে আসছেন আমি আজি মাকে বলব।
–আমি কেন আসছি জানো?
–কেন?
–ভালোবাসি তাই।
–মানে কি!
–মানে টা সোজা, খুব বেশি ভালোবাসি।
লোকটা আমার এতোটা কাছে যে তার নিশ্বাস ঠিক আমার মুখের উপর পরছে হৃৎস্পন্দন ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
তার চোখে এক অদ্ভুত মায়া আছে যে মায়ার আলোতে তলিয়ে যাচ্ছি আমি।
এই লোকটার চোখ দুটোকে দেখে বড্ড চেনা চেনা মনে হয়।
আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লোকটা মুচকি হেসে আমাকে চেইন টা দিয়ে আমার চোখের সামনে দিয়ে চলে গেল।
বুকের ভেতর ধকধক ভুমিকম্প চলছে
ভূপৃষ্ঠ মনে হয় এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় এক দম ডুম ডুম খেল খেলাচ্ছ।
লোকটার পারফিউম টা unique। কি সমস্যা আমি ও কি তাকে না দেখে ভালোবেসে ফেলতেছি নাকি। তার কাছে আসা আমার ভেতরে ভালো লাগা সৃষ্টি করে কেন।
ধুর কি সব ভাবছি আমি।
এভাবে আর চলে না আমাকে এর একটা ব্যাবস্থা করতে হবে।
,
,
,
সন্ধ্যা বেলা,
আমান তার বাবার সাথে বসে চা খাচ্ছে,
–বুঝলি বাবা তের জন্য মেয়ে দেখেছি।
–বাবা তুমি সব সময় এই কথা কেন বলো,
–এই তুই চুপ কর তো আমার কথাটা শোন,
আজিজ রায়হান আছে না আমার অফিসের কলিক। ওর একটা মেয়ে আছে। মেয়েটা তোর ভার্সিটি তে ইংরেজি ডিপার্টমেন্ট এ পড়ে। বেশ ভালো দেখতে।
–হুম মেয়েটার নাম জান্নাতুল মেঘে।
–কিরে তুই ওকে চিনলি কি করে?
–আমার স্টুডেন্ট,
–হ্যাঁ তো আজিজ রায়হান শুধু আমার কলিক না আমার বন্ধু ও বটে আমি ওর মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে দিতে চাই।
কথাটা শুনে আমান কিছু সময় চুপ রইলো,
–কেন বাবা হাজার টা মেয়ে থাকতে ও কেন?
–কারন আমি জানি তুমি ওকে ছাড়া কারোর জন্য সৃষ্টি হও নি।
–ওর যদি পছন্দ থাকে?
–সে সব পরের কথা,
–বাবা
আমান মলিন চোখে তার বাবার দিকে তাকায় যার অর্থ তার বাবা ঠিকি বুঝতে পারে।
–চিন্তা করো না সব ঠিক হবে ইনশাআল্লাহ
–ইনশাআল্লাহ
,
এদিকে মন থেকে কি আর ব্রেন থেকে কি দুটোর কোনটা থেকেই যেন মুখোশ পরা সেই বাদামি রঙা চোখ দুটো সরতেই চাইছে না মেয়ের।
সারাটা দিন শুধু এই এক কথা ভাবতে আছে,
চলবে,
(মেঘ ভাবছে এক জনের কথা বিয়ে ঠিক হচ্ছে অন্য জনের সাথে আসলে হচ্ছে টা কি ভাবার বিষয় 🤔)
#সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥
#পর্ব_০৪
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
–আমি কাল আজিজ এর সাথে কথা বলব তোদের বিয়ের বিষয় এ আমান।
–বাবা আমার কিছু দিন সময় লাগবে লাইক ১৫-১৬ দিন।
এই কিছু দিন সময় দেও তার পর বইলো আঙ্কেল কে।
–কেন তোমার সময় কেন লাগবে
–একটা প্রোজেক্ট এ কাজ করছিলাম তোমার জন্য
–ওহ সেই লন্ডন এর সরি বাবা আমি তো ভুলেই গেছিলাম।
–হ্যা বাবা আমার মনে আছে সো তুমি একটু দেরি করো।
–ঠিক আছে,
রাতে খাবার শেষে বাবা আর ছেলে দু’জন দু’জনের ঘরে চলে যায়,
এদিকে,
খাবার শেষ করে রুমের মধ্যে বসে বোরিং ফিল করছি।
–ধুর কি করমু ঋতুরে ফোন দেই।
যেই ভাবা সেই কাজ।
ঋতুকে ফোন দিলাম,
–হ্যালো দোস্ত,
–হ্যাঁ দোস্ত কি খবর?
–দোস্ত খবর তো দুপুরে হলো
–কি খবর।
–সেই লোকটা না আবার আসছিল।
–কি বলিস।
–হ্যাঁ এবার বলল যদি আর দেখেছি লেকট টা খুলতে তাহলে খবর আছে।
–এই যাহ এটা তো সমস্যা হয়ে গেল যে লোক না বলে কয়ে ঘরে আসতে পারে সে তো অনেক কিছু করতে পারে।
–হুম সেটাই ভাবছি তার পর আবার আমার বাবাও তো।
–থাক আমি তো জানি সব।
–হুম
কি করব দোস্ত?
–আচ্ছা এখন আপাতত ঘুমা কাল ভার্সিটি তে কথা হবে।
–আচ্ছা ওকে।
–আচ্ছা রাখি।
–আল্লাহ হাফেজ।
ফোনটা কেটে শুয়ে পরলাম
ঘুম চলে এলো কিছু সময়ের মধ্যে।
,
সকালে,
ঘুম থেকে উঠে নিয়ম মতো নামাজ পড়ে বের হলাম হাঁটতে,
সকলের মিষ্টি বাতাস খুব ভালো লাগে।
আজ ঋতু আসে নি ওর নাকি ভালো লাগছে না।
ঋতু আসে নি কিরন দাদা তো আসবে না।
তাই একলা ই বের হলাম।
কিরন দাদা বারন করেছিল কিন্তু আমি বের হলাম ইচ্ছে করে।
যাক সময় টা সুন্দর
হেডফোন কানে দিয়ে হাঁটছি,
হটাৎ সামনে কোথা থেকে উড়ে এসে হাতে কিছু রজনীগন্ধা ফুল নিয়ে দাঁড়ালো সেই বাদামি চোখের অধিকারি লোকটা।
তাকে দেখে থমকে গেলাম আমি।
–কি গো মায়া পরি আজ একা কেন?
–বন্ধু অসুস্থ।
–ওহ আচ্ছা তাই বলে একা বার হলে কেন?
–আপনার সমস্যা?
— সমস্যা তো আমারি সোনা তুমি যে আমার বৌ হবে আমার সমস্যা না তো কার সমস্যা হবে।
–দেখুন আমার আপনার সাথে কথা আছে।
–বলে ফেল।
–বসতে হবে তার জন্য।
–ওকে,
লোকটাকে নিয়ে একটা বেঞ্চে বসলাম।
বেশ অনেকটা দুরত্বে।
এটাই সময় আমাকে জানতে হবে ওর সম্পর্কে,
–দেখুন আপনি কে?কেন করছেন এগুলা? কি চান?
আমি আপনাকে কখনো দেখি নি এভাবে আপনার আমার বাড়ি আসাটা কখনোই ঠিক নয়।
মানুষ দেখলে আমাকে খারাপ বলবে।
আর আপনি অদ্ভুত একটা মানুষ মাত্র দু দিনে আমার ব্রেনে আমার মনে সব স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন।
সব সময় আপনাকে নিয়ে ভাবি আমি আসলে আপনি কে? কি চান?আমি আর পারছি না এগুলা নিতে।
পড়তে গেলে, খেতে গেলে,ঘুমতো গেলে, ইত্যাদি ইত্যাদি মানে সব সময় আপনার বাদামি চোখ দুটো ভাসে।
আমার কথা গুলো শুনে দম মেরে রইলো লোকটা কিছু সময়।
–আমি কে?
আমি এক জন সাইন্টিস্ট।
কেন করছেন এগুলা?
ভালোবাসি তোমায় আজ থেকে নয় ২বছর আগে থেকে।
কি চান?
শুধু তোমাকে চাই পৃথিবীর আর কিছু চাই না।
–সাইন্টিস্ট! নাম কি আপনার?
–নাম শুনে কি হবে আমি এখনো দুনিয়ার সামনে আসি নি তবে খুব শীঘ্রহি আসবো। বড়ো একটা সারপ্রাইজ নিয়ে।
–আপনি কি পাগল কি বলছেন এগুলা।
–এক প্রকার আমাকে পাগল বলতে পারো কিন্তু সেটা তোমার পাগল আর কারোর নয়।
–কি আজব।
–আমি তোমাকে আমার মুখ দেখাতে পারব না কিন্তু তোমাকে খুব ভালোবাসি এটা চিরন্তন সত্যি।
তার কথা গুলো শুধু শুনছি।
খুব চেনা চেনা লাগছে যেন আগে কখনো শুনেছি।
অবাক নয়নে তার দিকে তাকিয়ে আছি,
–কি হলো এভাবে কি দেখছো?
–আমি কিছু জানি না আপনি সব ক্লিয়ার করুন আমার সামনে।
–করব সময় দেও সব বলব সব করব কিন্তু কথা দিতে হবে আমি ছাড়া অন্য কারোর হতে পারবে না।
–আমি কাউকে এমন কথা দিতে পারবো না কারন আমার মা বাবা আমার সব।
–সমস্যা নাই তোমার বিয়ে আমার সাথে ছাড়া হবেও না।
সো চিল।
কথাটা বলে তিনি উঠে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে ঝড়ের গতিতে চলে গেলেন।
তার স্পর্শ পেয়ে আমি ঠান্ডা ফ্রিজ হয়ে গেছি। কি করল ছেলেটা।
এটা কি ছিল?
আল্লাহ মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সব।
কিছুই ভাবতে পারছি না।
আমি কিছু সময় বসে থেকে বাসায় চলে এলাম।
বাসায় এসে গোসল করে খেয়ে ভার্সিটি তে চলে এলাম।
ঋতু আজ একটু আগে আসছে।
,
–দোস্ত।
–হ্যা বল।
আমি ওকে আজকের ঘটনা বললাম।
–কি বলিস লোকটা সাইন্টিস্ট!
–হ্যা।
–নাম?
–বলে নি তো
–কি আজব কথা বর্তা।
–আরে আমি তো গুলায় যাচ্ছি রে।
–একটা সত্যি কথা বল মেঘ।
–কি?
–সত্যি বলবি তো?
–হুম।
–তুই পছন্দ করিস ওনাকে?
–সত্যি বলব?
–হুম।
–অনেকটা।
–কি বলিস!
–হুম দেখ আমার তো কোন হাত নেই আমার ভালো লাগা না লাগার উপর বল তুই।
–হ্যা তা নেই কারোরই থাকে না কিন্তু।
–কিন্তু কি?
–এতো কম সময়ে তাকে তো দেখিও নি আমরা কেউই চিনিও না।
–আমি বুঝতে পারতেছি না কিছু।
দোস্ত কি করব আমি?
–আমি তো কিছু বুঝতেছি না কি করতে বলব।
–তুই এই কথা বলছিস?
–না না রাগ করিস না।
–ধুর।
–আচ্ছা শোন।
–কি বল,
–আজ যদি উনি তোর সামনে আসে তবে ওনাকে সব বলবি তুই দুর্বল হয়ে পরছিস ইচ এন্ড এভরিথিং সব কিছু বলবি কোথায় সমস্যা কি কি সব।
–তার পর?
–তার পর উনি ঠিক কি উত্তর দেয় তোকে সেটা তুই আমাকে বলবি।
–আচ্ছা ওকে।
–হুম চল ক্লাসে।
–হুম চল।
দু’জনে ক্লাসে চলে এলাম।
এসে এক খবর শুনতে পায় আমান স্যার আসবে না কিছু কাজের জন্য দেশের বাইরে গেছে।
তাই অন্য স্যার ক্লাস নিবে।
কথাটা শুনে ক্লাসের বেশির ভাগ মেয়ের মুখ মলিন হয়ে গেল।
কারন স্যার কথা গুলা অনেক সুন্দর যার জন্য সব মেয়েগুলা তার উপর ক্রাশ।
আমি আর ঋতু ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে এলাম
বাসায় এসে আমি খাবার খেয়ে দুপুরে ঘুম দিলাম।
,
,
,
–বুঝলে মেঘের মা দেশের ভেতর কিছু সাইন্টিস্ট একটা জীবাণুর উপর গবেষণা করছে।
–কি রকম?
–জীবাণু টা করোনা থেকে শক্তিশালী এবং জটিল যার শরীরে প্রবেশ এর সাথে সাথে মানুষের ১-২ দিনের মধ্যে মৃত্যু হবে।
–ও মা সে কি তাহলে এগুলা নিয়ে গবেষণা করে কি লাভ।
–এমন কিছু আসলে তার ঔষধ তৈরি করা খুবই কঠিন।
–তাই তো বলছি এট করে লাভ কি।
–এটা শুধু গোয়েন্দা দের ধারনা আসল প্রমান এখনো পাওয়া যায় নি।
–ওহ আচ্ছা। না সত্যি হলেই মঙ্গল।
–সব কিছুর জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।
–হুম তা ঠিক শুকরিয়া সব কিছুর জন্য।
,
,
,
দুপুরে অনেক সময় ঘুমানোর পর ঘুম ভাঙলো বিকাল ৫ টায়।
ঘুম ঘুম চোখে বিছনায় শোয়া থেকে উঠে বসলাম।
চোখ ডলতে ডলতে সামনে হাম ছাড়ছি।
–এতো সময় ধরে কেউ ঘুমায়।
হটাৎ করে কোন ছেলে মানুষ এর কন্ঠ পেয়ে চমকে উঠলাম।
পাশে তাকাতে দেখি লোকটা দিব্বি আমার পড়ার চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে,
আমার চোখ রসগোল্লার মতো বড়ো বড়ো হয়ে গেছে,
–এই সমস্যা কি আপনার আমার রুমে কি করে এলেন?
–ওই জানালা দিয়ে।
আমি তাকিয়ে দেখি জানালা টা খোলা।
–বাহ জানালা খোলা তাই বলে ঘরে চলে আসবেন?
–হুম আমি আসবো না তো কে আসবে?
–দেখুন আপনি এভাবে আর আমার রুমে আসবেন না।
–ঠিক আছে আসবো না। আমি বাইরে যাচ্ছি কিছু দিনের জন্য সময় মতো ফোন ধরবে বুঝেছো?
–কেন কই যাচ্ছেন?
–যাচ্ছি একটা কাজে দোয়া করো আল্লাহ হাফেজ।
–হ্যাঁ আল্লাহ হাফেজ।
— ও হ্যা কিছু একটা দিতে এসেছি।
–কি?
লোকটা কিছু চকলেট বের করে আমার টেবিলে রেখে তার আসার জয়গা দিয়ে চলে যায়।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম তার যাবার দিকে।
তার উপস্থিতি আমর ভালোলাগে।
সত্যি ভিশন ভালো লাগে।
চলবে,
(গঠন মূলক মন্তব্য করবেন প্লিজ)
#সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_০৫
রাতে,
পড়ালেখা শেষ করে খাবার খেয়ে এসে জানালার কাছে বসলাম।
আকাশে অর্ধেক চাঁদ উঠেছে।
মনের মাঝে বাদামী রঙা চোখ দুটোর বিস্তার অস্বীকার করা সম্ভব না।
তার কথা ভেবে অজান্তেই ঠোঁটের কনে হাসি চলে আসে।
বাইরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম কথা গুলো।
এমন সময় ফোন শব্দ করে বেজে উঠলো।
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি অচেনা কোন নাম্বার,
ফোনটা হাতে নিয়ে ফোনটা ধরলাম,
— হ্যালো আসসালামু আলাইকুম,
–আলাইকুম আসসলাম প্রিয়।
অর্ধ চাঁদ টদ হেঁসে আমাকে তোমার কথা বলছিল। তুমি কি তার খোঁজে রাখো।
তার কন্ঠ শুনে হেঁসে দিলাম আমি বুঝতে পারলাম সে কে।
–না আমি খোঁজ রাখি না যাকে চাঁদ হেঁসে হেঁসে বলে সে খোঁজ রাখলেই হবে।
–আচ্ছা তাই নাকি।
–এক দম তাই।
–পড়ালেখা শেষ?
–হুম শেষ।
–খেয়েছো?
–হুম আপনি?
–হুম খেয়েছি।
তো ম্যাম কার কথা ভাবছিলেন আপনি।
–কার কথা ভাব্বো ভাবার মতো মানুষ নাই আমার।
–আচ্ছা তাই নাকি।
–হুম।
–কিন্তু আমার তো মনে হয় আছে,
–আপনার যদি মনে হয় আছে তো আপনি বলে দিন সে কে,
–কেন যার সাথে কথা বলছো সে।
–আপনি কোন দেশে গেছেন?
–বেশি দুরে না ইন্ডিয়া আসছি।
–ওহ,
কখন পৌছায়ছেন?
–এই তো কিছু সময় আগে হোটেলে এসেই তোমায় ফোন করেছি।
–ওহ আচ্ছা বুঝেছি।
–কি বুঝেছো?
–কিছু না।
–আচ্ছা আমি রাখছি তুমি ঘুমিয়ে পরো।
–হুম আল্লাহ হাফেজ।
–আল্লাহ হাফেজ।
ফোনটা কেটে গেল।
আমি গিয়ে শুয়ে পরলাম
তার শুতেই ঘুম চলে এলো,
,
,
–মেঘ আমার মেঘ সত্যি আমার অস্তিত্ব তোমায় ছাড়া সম্ভব না খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়।
,
,
,
সকালে,
হেঁটে এসে বাসায় মাকে বললাম খেতে দিতে,
মা খেতে দিলেন,
গোসল করে খাবার খেয়ে সোজা ঋতুর সাথে ভার্সিটি তে চলে এলাম।
এসে ঋতুকে বললাম কালকের ঘটনা।
,–কি বলিস রে এতো দুর।
–অনেকটা দুর।
,–দোস্ত ছেলেটাকে কখনো দেখিস নি। ঠিক হচ্ছে এগুলা।
–আমি কিছু জানি না দোস্ত তিনি আমার অস্তিত্ব হয়ে গেছেন তাকে ভুলা সম্ভব না।
তুই একটু বোঝ।
–হুম আমি সব সময় তোর পাশে আছি।
–ধন্যবাদ সোনা।
–আমাকে ধন্যবাদ দিতেছিস (চোখ সরু করে)
–আরে না না তুই যে কি বলিস।
–হুম চল ক্লাসে।
আমরা ক্লাসে চলে এলাম।
,
,
,
আরিফ খানের অফিসে,
–আজিজ রায়হান স্যার আপনাকে বড়ো স্যার ডেকে পাঠিয়েছে।
পিয়নের কথায় আজিজ রায়হায় চেয়ার ছেড়ে উঠে বসের কেবিনের দিকে যায়।
–স্যার আসবো।
–আরে আজিজ তুই আসবি তার জন্য আবার ফর্মালিটির কি দরকার।
–আরে যতোই হোক বস তো বসি তাই না।
–আয় আয়।
আজিজ রায়হায় ভেতরে প্রবেশ করলো
–বস।
–হুম বল (বসতে বসতে বলল আজিজ রায়হান)
–দেখ তোর আমার বন্ধুত্ব অনেক দিনের।
–হ্যাঁ অনেক দিনের।
–তুই তো জানিস আমার একটা মাত্র ছেলে।
ওর হবার সময় ওর মা মারা যায়।
–হ্যাঁ তোর ছেলে তো মাসআল্লাহ আল্লাহ তাকে নিজ হাতে তৈরি করছে।
–তোর আমার ছেলেকে পছন্দ তো।
–হ্যাঁ পছন্দ তো অবশ্যই তোর ছেলে পছন্দ হবার মতো মানুষ।
–দেখ বন্ধু আমি আমাদের বন্ধুত্ব কে আরো একটা মধুর সম্পর্কে পরিনত করতে চাই ।
–তুই কি বলতে চাচ্ছিস?
–আমি তোর মিষ্টি মেয়েটাকে আমার বাড়ির বৌ করতে চাই।
–কি বলছিস তুই এ তো খুশির খবর।
–হ্যাঁ সময় এসে গেছে আমাদের বন্ধুত্ব কে বেয়াই বেয়াইয়ের সম্পর্কে পরিনত করার তোর মেয়েটাকে আমার খুব ভালো লাগে।
আমার ঘরে কোন মেয়ে মানুষ নেই ও চারিদিকে আলো করে রাখবে আমি জনি ও পারবে।
–তুই আমার মেয়ের উপর ভরসা রাখিস এটা শুনেই আমি খুশি।
–তোর মেয়েটা আসলে খুব নরম মনের একটা মানুষ। আর সত্যি বলতে আমার একটা মেয়ে চাই বৌ না।
দিবি তোর মেয়েকে আমার ঘরের মেয়ে হিসাবে।
(আজিজ রায়হান এর হাতটা ধরে কথাটা বলল)
— কি বলছিস তুই ইনোসোনাল করে দিলি। আচ্ছা তাহলে তুই কাল আমার বাসায় আয়।
–আসবো অবশ্যই আসবো কিন্তু আমার ছেলেটা দেশের বাইরে আছে ও দেশে আসলে এক বারে এসে বিয়ের দিন ফেলবো
–আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে সেটাই হোক।
–হুম।
এই খুশিতে মিষ্টি মুখ করাই চল অফিসের সবাইকে।
–চল,
আজিজ রায়হান আর আরিফ খান মিলে সবাইকে মিষ্টি বিতরন করলো।
,
,
,
ভার্সিটি থেকে বাসায় এসে কাপড় ছেড়ে শুয়ে পরলাম,
আমি শুতেই মিস্টার সাইন্টিস্ট ফোন করল,
–কি ব্যাপার এতো সময় পর মনে পরলো,
–কাজে ছিলাম কাজ করতে এসেছি তুমি জানো।
–হুম বুঝেছি,
–তুমি তো সব বুঝো পিচ্চি।
–এই আমি পিচ্চি না,
–মেঘ মা (মেঘের আম্মু)
–এই আম্মু ডাকে বাই।
–ওকে বাই।
ফোনটা কেটে মায়ের কাছে গেলাম,
–হ্যা মা বলো।
–এদিকে এসো বসো।
–বাবা তুমি কখন এলে?
–এই তো মাত্র মা।
–কি হইছে তোমরা খুব খুশি মনে হচ্ছে?
–হ্যাঁ একটা খুশির খবর আছে।
–কি খবর।
–মেঘ মা,
বাবা আমার হাত দুটো ধরলেন,
–তুমি আমাদের মেয়ে তুমি তো জানো আমরা কখনো তোমার খারাপ চাইবো না।
–হ্যাঁ বাবা জানি।
–ছোট থেকে তো সব অভাব পুরোন করেছি তাই না সব দিয়েছি যা চেয়েছো।
–হ্যাঁ বাবা
–তাহলে আমি আজ তোমার থেকে কিছু চাইবো দিবে?
–অবশ্যই বাবা কি চাও বলো?
–তোমার বিয়ে ঠিক করেছি আরিফ খানের ছেলে আমান খানের সাথে,
বাবার মুখে বিয়ে কথাটা শুনে বুকের মধ্যে ৪২০ ভোল্ট এর ঝটকা খেলাম।
অজান্তে চোখের কোনে পানি চলে এলো
–আরিফ আজ আমার কাছে তোকে তার বাড়ির মেয়ে হিসাবে চেয়েছে।
আমি তার কথা ফেলতে পারি নি আমি জানি আমি তাকে তোর কাছে না শুনে কথা দিয়েছি।
কিন্তু আমরা জানি তোর কোন পছন্দ নেই তাই রাজি হয়েছি।
মা তুই না করিস না আমান কোন অংশে খারাপ ছেলে নয়।
–বাবা কিন্তু একটা বার,
–মারে আমি আমার সব থেকে কাছের বন্ধু কে কথা দিয়েছি মা।
আমি আর কিছু বলার মতো অবস্থা তে নাই চুপচাপ ঘরে থেকে বেরিয়ে এলাম।
ঘরে এসে দেখি ১০ টা ফোন কল।
সব গুলা ব্লক করে দিয়ে ঋতুকে ফোন দিলাম,
–হ্যালো দোস্ত,
–ঋতু তুই কই বাসায় আয় জলদি। (কেঁদে)
–তুই কাঁদছিস কেন কি হইছে?
–তুই বাসায় আয় জলদি।
কথাটা বলে ফোন কেটে দিলাম।
–ও মা কি হলো হটাৎ করে,
ঋতু জলদি ওড়না পেঁচিয়ে মেঘের বাসার দিকে রওনা হয়।
মেঘের বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতে মেঘের মা দরজা খুলে,
–কিরে মা কেমন আছিস?
মেঘের মায়ের হাসি দেখে ঋতু বুঝতে পারে শুধু মেঘের কিছু হইছে,
–এই তো ভালো আন্টি মেঘ কই।
–ওর রুমে বোধ হয়। খুশির খবর আছে একটা।। —
–কি খবর।
–ওকে ঘরে না আসতে দিয়ে তুমি খবর শুনাচ্ছো।
–ওহ হ্যাঁ ঘরে আয়।
ঋতু ঘরে আসতে মেঘের মা দরজা লাগিয়ে দিলো,
আর ঋতুকে সব বলল,
এবার ঋতু বুঝতে পারলো মেঘের কি হইছে,
–আলহামদুলিল্লাহ আন্টি আমি একটু মেঘের কাছে যাই।
–হ্যাঁ যা।
ঋতু মেঘের রুমে চলে এলো,
ঋতু রুমে আসতে দরজা বন্ধ করে ওকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম,
–দোস্ত কাদিস না।
–কি করব আমি। বাবা আমার হাত ধরে কথাটা বলেছে জীবনে প্রথম আমার থেকে কিছু চেয়েছে। (হেঁচকি তুলে)
–কি করতে বলব কি বলব আল্লাহ কিছু বুঝতেছি না তুই কদিস না।
আমার ভালো লাগে না তোর কান্না
চলবে,
(আমি রিচেক দিতে পারি নি বানা ভুল হতে পারে তার জন্য অগ্রিম ক্ষমা প্রার্থী)