শুভ্র_রঙের_প্রেম পর্বঃ২৫

শুভ্র_রঙের_প্রেম পর্বঃ২৫
#রুবাইদা_হৃদি

আমার প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে৷ নিজের ভেতরকার সমস্ত কান্না গুলো উঁপচে আসছে৷ আমি অশ্রুসিক্ত চোখে উনার দিকে তাকাতেই ছোট করে হাসলেন উনি৷ শুধু বললেন,
–‘ রিলাক্স হৃদি! আ’ম ফাইন৷ ‘
কত অকপটে বলে দিলেন উনি৷ স্কাই ব্লু শার্টের জায়গায় জায়গায় হালকা রক্তের ছিটা লেগে আছে৷ ক্লান্ত মুখটা আরো ক্লান্ত লাগছে৷ আমার ইচ্ছা হলো উনাকে দুইহাতে শক্ত করে আঁকড়ে ধরি৷ নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েই আমি এগিয়ে গেলাম উনার দিকে৷ শার্টের জায়গায় জায়গায় রক্তের ছাপ গুলো স্পষ্ট৷ আমি ব্যথিত কন্ঠে বললাম,
–‘ সত্যি করে বলুন তো আপনিও ব্যথা পেয়েছেন তাই না? ‘

–‘ তিন সত্যি আমি একদম ব্যথা পাই নি বরং ওই পিচ্চিটা অনেক ব্যথা পেয়েছে৷ রাস্তা পার হতে গিয়ে উপর হয়ে পরে যাবে গাড়ির সামনে ও নিজেও ভাবে নি ৷ আর গাড়িটাও আরেকএকটুর জন্য পিষিয়ে দিতো ভাগ্যিস আমি অপজিট থেকে দেখে দৌড়ে গিয়েছিলাম৷ পিচ্চিটার মাথা ফেটে গেছে পরে যাওয়া পরেই৷ সেই রক্তের ছিটা আমার শার্টে৷ ‘

উনি হাত দিয়ে মাথার ঘাম মুছতে গেলেই হাতের পিঠে দেখতে পেলাম অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিলে গিয়ে রক্ত বের হচ্ছে৷ আমি তাড়াহুড়ো করে উনার হাত টেনে নিয়ে অস্থির কন্ঠে বললাম,
–‘ মিথ্যা বলছেন কেন? দেখুন তো কতোটা জায়গা জুড়ে ছিলে গিয়েছে৷ আর কোথায় ব্যথা পেয়েছেন দেখি৷ খুব কষ্ট হচ্ছে আপনার?? ‘
আমার নানা প্রশ্নে জর্জরিত উনি৷ তার চোখে আমার ভয় আর ব্যস্ততা দেখে এক রাজ্যের খুশি উঁপচে পরছে৷
–‘ ব্যথা আমি পেয়েছি না তুমি??’ উনি মুচকি হেসে বললেন৷ আমার চোখ দুটো থেকে টলমল করা পানির ফোঁটা গড়িয়ে পরতেই উনি ব্যস্ত হয়ে বললেন,
–‘ আরে কাঁদছো কেন বাচ্চাদের মতো?? আশেপাশের মানুষ তাকিয়ে আছে দেখো৷ কি ভাবছে তারা? আমি বোধহয় হাফ মরে গেছি আল্লাহ! এই মেয়ে এতো বাচ্চা কেন তুমি??আমি ভেবেছিলাম ম্যাচিউর কারো সাথে প্রেম করছি শেষে কিনা কথায় কথায় ফ্যাচফ্যাচ করা মেয়ে জুটলো কঁপালে৷ এই অতি কষ্টে আমার আরেকদফা কাউকে দরকার৷ ‘ উনি আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললেন৷ আমি উনার হাতে ফুঁ দিয়ে যাচ্ছি৷ তার এহেন কথা গুলো শুনে কটমট চোখে তাকিয়ে বললাম,
–‘ মুখ দিয়ে আরেকটা শব্দ উচ্চারণ করলে…! ‘

–‘ তারপর??’ আমি থেমে যেতেই উনি ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করলেন৷ এর পরের শব্দ আর আসছে না মাথায় আপাতত৷ আমি উনার দৃষ্টি উপেক্ষা করে টেনে নিয়ে এলাম ফুড কর্ণারে৷ তার সামনে হাটু গেড়ে বসতেই মৃদু চিৎকার করে বললেন, ‘ আরে আরে ওখানে কেন বসছো? চেয়ারে উঠে বস৷ ‘
আমি উনার কথায় একদম পাত্তা দিলাম না৷ আবারো দাঁড়িয়ে শাসিয়ে বললাম,
–‘ এখান থেকে এক পাঁ বাড়িয়েছন তো আপনার শান্তি আমি হারাম করে দিবো৷ ‘
উনি হতবিহ্বল ভাবে বসে আঁছেন৷ আমি দ্রুত পাঁ ফেলে ফুড জোনে গেলাম ওখানে গিয়ে গরম পানি নিয়ে আবারো হাটু গেড়ে উনার সামনে বসে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,
–‘ হাত দিন এখানে৷ ‘
–‘ পানি লাগলে জ্বলবে বুঝতে পারছো তুমি??’ উনি বাচ্চাদের মতো বললেন৷ আমার ঠোঁটের কোণে হাসিরা জড়ো হতেই ইচ্ছা করে তাড়িয়ে দিয়ে গম্ভীর ভাবে বললাম,
–‘ জ্বলবে না আরাম পাবেন৷ ‘
উনি আমার দিকে তাকিয়ে কাঁপা হাত বাড়িয়ে দিলেন৷ হাত দিতে চেয়েও ফিরিয়ে নিলেন৷ আমি হাসি আটকানোর হাজার চেষ্টায় আছি৷ উনার হাত ধরে আস্তে করে পানিতে রাখতেই চোখ-মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলেন৷ আমি সশব্দে হেসে উঠলাম৷ উনি যখম দেখলেন ব্যথা লাগছে না আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে সোজা হয়ে বসলেন৷ আমি ঠোঁট টিপে হেসে বললাম,
–‘ বাই এনি চান্স আপনি কি ইঞ্জেকশনে ও ভয় পান?? ‘
উনি আমার প্রশ্ন শুনে গলার নট টা ঢিলে করে দিয়ে বললেন,
–‘ প্রেমিকার সামনে প্রেম আদায় করার জন্য হলেও মাঝে মাঝে স্ট্রোং প্রেমিক পুরুষদের ন্যাকা হতে হয়৷ তাহলে নাকি ভালোবাসা বেশি পাওয়া যায়৷ ‘ আমি উনার কথা শুনে ‘ থ ‘ মেরে বসে রইলাম৷ আমাকে অবাক হয়ে বসে থাকতে দেখে উনি পায়ের উপর পা তুলে আয়েসি ভঙিতে বসে ব্যথাতুর কন্ঠে বললেন,
–‘ স্বামীর সেবা সারাজীবন করতে পারবে যত্ন করে কিন্তু প্রেমিকের সেবা কত জনের ভাগ্যে জুটে?? তাই সেবা করো রমণী৷ আমি দোয়া করছি, তোমার স্বামি মানে মেহেরাব হোসেন অতিরিক্ত মানে মাত্রাতিরিক্ত রোম্যান্টিক হয়৷ ‘
উনার কথা শুনে আমার মুখ হা হয়ে গেছে৷ কার জন্য কেঁদে কেটে বুক ভাসাচ্ছিলাম আমি?? এতো বদের হাড্ডি৷ এই ইনোসেন্ট তো এই লাগামছাড়া শুভ্র প্রেমিক৷ যার ভেতর শুভ্রতা আছে সেই সাথে হুট করে লজ্জায় ফেলার মহৎ গুণ৷

________________________________

বিরক্ত ভঙ্গিতে বসে থেকেও বিরক্ত লাগছে৷ মানুষের কোলাহল যেন বেড়েই চলেছে৷ ফুড কোর্ট না মনে হচ্ছে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে বসে আছি৷ নীতিকে পেলে আমি আস্ত কাঁচা চিবিয়ে খেতাম৷ দু ঘন্টা হয়েছে ও লাপাত্তা৷ ওর ভাব সাব দেখে মনে হচ্ছে,পার্মানেন্ট জামাই ছাড়া শ্বশুড় বাড়ি চলে গেছে৷ আমার বিরক্তির কারণ শুধু নীতিতে সীমাবদ্ধ না৷ সামনে থাকা মানুষটা মহা বিরক্তির কারণ সাথে আমার পাশে হুট করে উড়ে আসা মাধবী নামক মাছি টা৷ চারদিকে ভনভন করে ঘুরছে আর একটু পর পর আমাকে খোঁচা দিয়ে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করছে,
–‘ স্নিগ্ধ স্যারের সাথে তুই এখানে কেন??’ এই প্রশ্নটা টানা চৌদ্দবার করেও যখন আমার মুখ খুলাতে পারলো না তখন হাসি হাসি মুখ নিয়ে উনার সাথে গল্পে বিভোর হয়ে পরেছে৷ আর উনিও হেসে হেসে তাল মিলাচ্ছেন৷
আমি পাস্তা এক ধ্যানে খাচ্ছি আর উনার দিকে তাকিয়ে আছি৷ হঠাৎ করেই পা বাঁড়িয়ে উনার পাঁ খুজলাম আর পেয়েও গেলাম৷ মুখে বিশ্বজয়ের হাসি দিতেই উনি ভ্রুকুটি করে বললেন,
–‘ এনিথিং রং?? ‘
–‘ নো৷ ক্যারি অন ভাইয়া৷ ‘ আমার কথা শুনে মাধবী উৎসাহ পেলো৷ তার মনে হাজার ভোল্টেজের লাড্ডু ফুঁটছে৷ উনি এখনো আমার দিকে তাকিয়ে ভাবগতি বুঝার চেষ্টায় আছেন৷ আমি আবারো খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম৷ সসের বাটিটা টেবিলের উপর থেকে নিয়ে আস্তে করে টেবিলের নিচে নিয়ে ইচ্ছা করে উনার জুতোর উপর ঢেলে দিয়ে বাটিটা শব্দ করে নিচে ফেলে দিতেই দুইজন সহ বাকিরা আমার দিকে তাকাতেই আমি ইনোসেন্ট ফেস করে বললাম,
–‘ সসের বাটিটা পরে গেছে হাত পিছলে৷ ‘
স্নিগ্ধ স্যার মাথা নীচু করে দেখলেন তার জুতো সসে মাখামাখি৷ উনি আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বললেন,
–‘ ইট’স অকে৷ তোমরা বসো আমি ক্লিন করে এখুনি আস ছি৷ ‘
আমি দুদিকে মাথা দুলিয়ে ‘ আচ্ছা ‘ বলতেই উনি উঠে চলে যান৷ আমি মাধবীর দিকে তাকিয়ে দেখি ও উনার দিকেই তাকিয়ে আছে৷ ইচ্ছা হচ্ছে,কাটাচামচ ওর চোখে ঢুকিয়ে দেই৷ হাত উঠিয়ে উক্ত ভাবা কাজ করতে গিয়েও নামিয়ে আমিও ব্যাগ হাতে উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,
–‘ ইশ! আমার শাড়িও সসে মাখামাখি৷ এখন না ক্লিন করলে দাগ উঠবে না৷ দোস্ত, তুই একটু ওয়েট কর আমিও ক্লিন করেই আসছি৷ ‘

–‘ কিন্তু….’
–‘ জাস্ট ফাইভ মিনিট দোস্ত৷ যাবো আর আসবো৷ ‘ আমি বলেই দ্রুত পা ফেলে এগিয়ে গেলাম৷ ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে টিস্যু পেপার দিয়ে সস টুকু মুছে অপেক্ষা করতে থাকলাম আমার তার জন্য৷ আজ একদম শেষ করে ফেলবো৷ কত বড় সাহস! আমাকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে কথা বলছে৷
উনি পাঁ ঝারতে ঝারতে বের হয়ে আসতেই হাত টেনে এক কোণায় এসে দাঁড়িয়ে শাসিয়ে বললাম,
–‘ ফারদার আপনাকে আমি ছাড়া কোনো মেয়ের সামনে হাসতে দেখলে মেরে দিবো৷ ‘
আমার কথা শুনে এক ঝাটকায় তার জায়গায় আমাকে দাঁড় করিয়ে আর আমার জায়গায় সে দাঁড়িয়ে চোখ ছোট ছোট করে বললেন,
–‘ কি করবে?? ‘

–‘ ম..ম…ম! ‘ আমি ভড়কে গিয়ে কথা উচ্চারণ করতে পারছি না৷ উনি হাসছেন আমার অসহায়ত্ব কন্ঠের স্বরে৷ উনি আমার দিকে ঝুকে আসছেন৷ আমি মাথা একদম দেয়ালের সাথে লাগিয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছি৷ অঘটন হবে যাকে বল মস্ত বড় অঘটন৷ আর সেই অঘটনে নিজের নাম লেখানো থেকে আমাকে ভুল প্রমাণিত করে দিয়ে উনি ফিসফিস করে বললেন,
–‘ you feel jealous?? I can’t believe! ‘
আমি পিটপিট চোখে সাহস নিয়ে তাকিয়ে দেখলাম উনি মিটিমিটি হাসছে৷ লজ্জা পেলেও আমি অস্বীকার্য করতে গেলেই তীব্র আওয়াজে মোবাইল বেজে উঠতেই উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
–‘ রিসিভ করো৷ ‘
–‘ করছি তো আপনি সরে দাঁড়ান৷ ‘
আমার কথাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সে আমার দুইপাশে দেয়ালে হাত রেখে আরো আটকিয়ে দাঁড়ালেন৷ মূহুর্তে আমার মনে হলো,কেউ এসে দেখে নিলে উল্টো পাল্টা ভাববে৷ আমি মোবাইল বের করে অনুনয়ের সুরে বললাম,
–‘ সাইড দিয়ে দাঁড়ান৷ ‘
উনি ঘাড়ত্যাড়ামি করে আরো ঝুকে দাঁড়ালেন৷ মাধবী এইভাবে দেখলে পরপর দুইবার স্ট্রোক করবে৷ ভেবেই আফসোস হলো আমার৷ ইশ! বেচারি, ক্রাশ তার বাশ এইটা ভাবলে কি করবে ও??
–‘ রিসিভ করো ফোন৷ কোন দুনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছো বারেবারে?? তোমার দুনিয়া সামনে তোমার একদম কাছে আছে তাকে রেখে কই যাও বারবার?? দেট’স নট ফেয়ার৷ ‘
উনার তীব্র মেজাজ আর রসিকতা করা কথায় জবাব দেওয়ার আগেই দেখলাম নীতি ফোন করছে৷ আমি দ্রুত হাতে উঠিয়ে ঠাটিয়ে একটা ধমক দিয়ে বলা শুরু করলাম,
–‘ পার্মানেন্ট শ্বশুর বাড়ি চলে গেছিস হারামি?? মিরপুর স্টেডিয়ামে থেকে মিরপুর-৭ এ যেতে আড়াইঘন্টা লাগে বেদ্দপ? ‘

–‘ টিএসসি তে আসতে পারবি আর্জেন্ট?? ‘
ওর কথা শুনে চোখ কঁপালে আমার৷ এখান থেকে ওখানে কেন গেছে আল্লাহ মালুম৷ আমি দ্বিগুণ চিল্লিয়ে বললাম,
–‘ ওখানে কি ঘাস কাটতে গিয়েছিস?? তোকে নাম্বার আর এড্রেস আনতে পাঠিয়েছি টিএসসি তে তোর হবু জামাইয়ের সাথে প্রেম করতে না৷ ‘

–‘ আ..রি..ফ ভাইয়ার সাথে আমি৷ তুই টিএসসি তে আয়৷ আমি রাহাতকে ফোন করে দিচ্ছি তোর সাথে আসতে৷ ‘

–‘ পাঠাতে হবে না৷ আমি আসতে পারবো৷ আর উনাকে পেলি কোথয় তুই? ভাইয়া না চট্রগ্রাম?? ‘

–‘ প্লিজ জলদি আয়৷ ‘ ফোন কাটতেই দেখি সে প্রশ্নসূচক চোখে তাকিয়ে আছেন৷ আমি নীতি আর আরিফ ভাইয়ার কথা গুলো খুলে বলতেই উনার কঁপালে চিন্তার ভাজ পরলো৷ আমার থেকে সরে দাঁড়িয়ে বলল,
–‘ ভালোবাসা থাকলে পরিণতি হতে হবে এইটা কোথায় লেখা আছে! দূরে থেকেও কাছে থাকার চেয়ে বেশি ভালোবাসা যায়৷ কিন্তু দুজন মানুষ যদি একে অপরের সাথে থাকতে চায় তাহলে পরিবারের মেনে নেওয়া উচিৎ৷ তবে পরিবারের অমতে কখনো ভালো থাকা যায় না৷ আরিফ আর নীতির পরিবার মেনে নেয় তাহলে আগানো উচিৎ৷ এখানে দুজন মানুষ না দুটো ফ্যামিলি জড়িয়ে আছে সেই সাথে সবার সুখ৷ ‘
উনার কথা বাস্তবিক হলেও আমি একদম সন্তুষ্ট হতে পারলাম না৷ আমার সাথে হলে আমি কি করবো?? এইটা ভেবেই নির্লিপ্ত ভাবে বললাম,
–‘ নীতি আর আরিফ ভাইয়াদের জায়গায় আমরা থাকলে কি করতেন?? সব ছেড়ে দিতেন এইভাবেই?? ‘
উনি আমার অভিমানী কন্ঠের স্বর বুঝতে পেরে আবারো আগের পজিশনে দাঁড়িয়ে কঁপালে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বললেন,
–‘ আমাদের পরিণতি এমন টা হবে না যদি হয় তাহলে সেটা হবে শুভ্র রঙের প্রেমের পরিণতি৷ ‘

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here