শুভ্র_রঙের_প্রেম পর্বঃ২০
#রুবাইদা_হৃদি
মোবাইলের বাজখাঁই আওয়াজে ঘুমের মাঝে বিরক্ত হয়ে উঠলাম৷ সারারাত ঘুম আসে নি এতো মানুষের মাঝে৷ ঘুম চোখে মোবাইলের উপর নাম দেখে একলাফে উঠে বসলাম৷ ” তোমার একান্ত আপনজন ” নামটা জ্বলজ্বল করছে৷ কাল ম্যাসেজ আসার একটু বাদেই কল ব্যাক করলে অফ পাই৷ মেজাজ বিগড়ে গেলেও নামটা দেখেই একরাশ প্রজাপতি ডানা মেলে গেলো৷ আমি দ্রুত ফোন রিসিভ করতেই ওইপাশে থেকে ভেসে আসে,
–‘ ইমিডিয়েটলি বাইরে আসো৷ জাস্ট পাঁচ মিনিট সময় দিলাম তোমায়৷ ‘
–‘ শুনে….. ‘ বলার আগেই লাইন কেটে যায়৷ মোবাইল সামনে ধরে দেখি ভোর ০৫ঃ১৪ বাজে৷ এতো সকালে?? কোনো মানে হয়৷ কি দরকার তার আমার সাথে?? কাল তো খুব ইগ্নর করছিলো আর আজ সকাল সকাল ডেকে পাঠাচ্ছে৷ রাগ মাথায় দপদপ করে উঠছে৷ মোবাইল ছুঁড়ে ফেলতে গিয়েও উঠে দাঁড়ালাম৷ আমিও যে চাইছি যেতে৷ তাহলে কেন এতো বাহানা??
_________________________
সামনেই সুবিস্তৃত সমুদ্র সৈকতের বিশাল নীল পানি আবছা অন্ধকারেও বুঝা যাচ্ছে৷ একপাশে পাহাড় আরেক পাশে নীলাভ পানির উচ্ছ্বাস৷ আমি ভয়ে ভয়ে এগিয়ে যাচ্ছি৷ এই লোকটার কোনো ধারণা আছে আমার কত পরিমাণে ভয় করছে? বুকের মাঝে দুরুদুরু করছে৷ সম্পূর্ণ অচেনা জায়গায় এইভাবে কেন ডেকেছেন উনি?
ফোন করে আদেশ দিয়েই শেষ৷ সেদিন বাসে মোবাইল কেড়ে নিয়ে উক্ত নাম সেট করেছেন সেটা বুঝতে একদম বাকি নেই আমার৷ অদ্ভুত!
–‘ পাঁচ মিনিট পার হয়ে পনেরো মিনিটের কোঠায় পৌছেছে! সেই খেয়াল কারো আছে? ‘
–‘ ডেকেছেন কেন?’ আমি থমথমে মুখে জবাব দিতেই অন্ধকার থেকে আবছা আলোতে এসে দাঁড়ালেন৷ তারপর হেয়ালি করে বললেন,
–‘ মেরে ফেলতে৷ ‘
উনার কথা শুনে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলাম৷ সত্যি মেরে টেরে দেয় যদি৷ সরু চোখে তাকিয়ে বললাম,
–‘ দ..দেখুন আপনার দরকার থাকলে বলুন আর না হলে আমি চলে যাচ্ছি৷ ‘
–‘ লাইক সিরিয়াসলি তুমি আমাকে ভয় পাচ্ছো?? ‘
গম্ভীর কন্ঠে বলা কথা শুনে নিজেই নিজের প্রতি বিরক্ত হলাম৷ নিজেকে সংযত করে আবার প্রশ্ন করলাম,
–‘ ডেকেছেন কেন? আমার জানামতে কোনো দরকার তো নেই আমার সাথে৷ ‘
–‘ চলো৷ ‘ বলেই আমার হাত মুঠোয় নিয়ে পাঁ বাড়ালেন৷ আমি স্তব্ধ, নির্বাক৷ উলটো প্রশ্ন করার জন্য কথা খুজে পেলাম না৷ সমুদ্র আর বিস্তর গাছ-গাছালি গুলো অজান্তেই সাক্ষী হচ্ছে আমার হৃৎপিন্ডের কম্পন৷ কারেন্টের মতো স্পর্শ আমার গলার স্বর আটকে দিয়েছে৷ আমি হাতের টানে এগিয়ে চলেছি তার সাথে৷ হঠাৎ করেই বিরক্তিকর কন্ঠে বললেন, ‘ হৃদি তুমি বুঝতে পারছো,চূড়ায় উঠতে উঠতে সুন্দর মূহুর্তের সাক্ষী আর হতে পারবো না! সব দোষ তোমার৷ ‘
উনার কথা গুলো আমার কর্ণপাত করলো না ৷ আমি আবছা আলোয় একজন কে দেখতে পাচ্ছি আর সে,সাদা শার্ট জড়ানো শুভ্র প্রেমিক৷ শুভ্রতে রাঙা৷
শুধু নিজের দিকে তাকিয়ে আফসোসের সুরে বলে উঠলাম,’ আজ কেন সাদা পরি নি?? আজ যে সব স্পেশাল আর স্পেশাল মোমেন্টে সাদা মানায়৷ যা শুভ্রতায় ঘেরা থাকে আর সাথে থাকে একরাশ প্রেমের হাতছানি৷ ‘
পাহাড়ের ঢালু বেয়ে হাজার গাছ-গাছালির ভীড় ঠেলে উপরে যাওয়ার সরু সিড়ি উঠে গেছে৷ ভোরের পাখি ডানা ঝাপটানোর শব্দে নির্জন পাহাড় জুড়ে আওয়াজ ছড়াচ্ছে৷ আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি বারেবারে৷ এতো দ্রুত কেউ উঠে?? আমি পাহাড়ের ঢালু বেয়ে হেলে থাকা জংলী গাছ ধরে দাঁড়িয়ে পরতেই আমার হাতের টানে থেমে গেলেন উনিও৷ পেছনে ঘুরে ভ্রু কুঁচলে বললেন,
–‘ হোয়াট হ্যাপেন?? দাঁড়িয়ে পরলে কেন? ‘
–‘ এ..তো দ্রুত কেন হাটছেন? আপনার মতো এতো লম্বা পাঁ নাকি আমার? নিজে তো ধুপধাপ পা ফেলে আমাকে লাগেজের মতো টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন সে খেয়াল আছে! ‘
আমার কথা শুনে হাত ছেড়ে দিয়ে কুঁচকানো ভ্রু জোড়া আরো কুঁচকে বললেন,
–‘ তোমার বয়স কি ষাট পার হয়ে গেছে? ‘
হঠাৎ এমন উদ্ভট প্রশ্নে থম মেরে গেলাম আমি৷ আড়চোখে তাকিয়ে বললাম,
–‘ আমাকে দেখে কি আপনার ষাট বছরের বুড়ি লাগে? ‘
–‘ তা না হলে কি?একটু হাটতেই হাঁপিয়ে যাচ্ছো৷ এই সত্যিই তুমি বুড়ি নও তো? না পাহাড়ের বুড়ির আত্মা ভর করেছে তোমার উপর! ‘
পাহাড়ের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন উনি৷ আবছা অন্ধকার কেটে যাচ্ছে এখন৷ এমন উদ্ভট কথায় কি রিয়্যাকশন দেওয়া উচিৎ খুজে পাওয়ার আগেই আমার হাত ধরে বললেন,
–‘ কাম ফার্স্ট! ‘
–‘ ওয়েট ৷ প্লিজ আরেকটু দাঁড়াই৷ ‘
–‘ আই সোয়্যার তোমার সকল ক্লান্তি এক নিমিষেই উধাও হয়ে যাবে৷ ডোন্ট ওয়েস্ট টাইম প্লিজ৷ রিকুয়েষ্ট করছি৷ ‘
উনার মিনতির সুরে বলা কথায় কেমন উচ্ছ্বাস ফিরে পেলাম৷ লোকটার কথার টোনে আবেগ মিশ্রিত৷ স্নিগ্ধময় আবেগ৷
দিগন্ত বিস্তৃত সেই সাথে নীলাভ পানির উপচে পড়া ঢেউয়ের গর্জন৷ সামনে শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণা অদ্ভুত সুন্দর লাগছে৷ বর্ষার সময় পানি ভরপুর থাকলেও বসন্তের শেষে শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণা টা যেন জীবন্ত৷ আমি জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছি৷ উঠে দাঁড়িয়ে থমকে গেলাম৷ শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণার পাথরের ফাঁক দিয়ে লাল আভা একটু একটু ফুঁটতে শুরু করছে৷
আমি নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে আছি৷ ধীরে ধীরে সূর্যের আলো তীর্যক ভাবে গাছের পাতা গলে অন্ধকার ছাপিয়ে দেখা দিতেই আমি আনন্দে বাক্যহারা হয়ে যাই৷ মিষ্টি আলো গুলো চোখেমুখে আছড়ে পড়ছে৷ মনে হচ্ছে, এইতো হাত বাড়ালেই ধরতে পারবো৷ আমি এগিয়ে যাচ্ছি! শক্ত হাতের টানে ঘুরে যেতেই রাগী চোখ দুটো আর কেঁপে উঠা ঠোঁট গুলো রাগ মিশ্রিত গলায় কিছু একটা বললো৷ মনে হচ্ছে,পাহাড়ের আর সূর্যের নিজস্ব শব্দ গুলো আমার কানে এটে আছে ৷ তাই তার বলা কথা কানে এলো না।
হালকা মোলায়েম আলো উনার কালো চুল গুলোর উপর পরতেই সোনালি বর্ণ ধারণ করলো৷ কল্পনায় আঁকা শুভ্র প্রেমিক আমার! ভেবে রাখা কাল্পনিক চরিত্র যাকে নিয়ে পাহাড়ের বুকে দাঁড়িয়ে নতুন ভোর দেখার প্রয়াসে ছিলো কিশোরী মন থেকে আজ অবদি সমস্ত দিন গুলো। আমি হাত উঁচিয়ে চুল গুলো এলোমেলো করেই খিলখিল হাসিতে মেতে উঠলাম৷ চারদিকে বারি খেয়ে হাসি প্রতিধ্বনি ফিরে আসতেই উনার ঠোঁটের কোণেও হাসির রেখা দেখতে পেলাম৷
শিরশির বাতাসে আমার অগোছালো চুল গুলো বাধ্যতা ছাড়াই উড়ে যাচ্ছে উনার মুখে৷ সে যত্নসহকারে কানের পিঠে গুজে দিয়ে ফিসফিস করে বলল,
–‘ নতুন সূচনার জন্য অপেক্ষার অবসানের অপেক্ষা করছিলাম৷ জানি না প্রকাশ করতে হয় কি করে, তবে আমি বলবো আমার ভালোবাসা অপ্রকাশিত থাক যা তুমি তোমার ভালোবাসা দিয়ে প্রকাশিত করবে৷ ‘
‘ একটা নতুন ভোর সাক্ষী হোক নতুন সূচনায়..
পাহাড়ের বাঁক গুলো সাক্ষী হোক হৃদয়ের কল্পনার..
অপ্রকাশিত সব প্রকাশ পাক তোমার মোহনায়! ‘
গাল বেয়ে পানি বেয়ে পরছে৷ আমি নির্বাক! সবার প্রকাশ বুঝি এমন হয়? না শুধু এই প্রকাশ আমার জন্যই তুলে রাখা ছিলো৷ আমাকে কাঁদতে দেখে উনি হাসছেন৷ আজ রাগ লাগছে না৷ সেই হাসি জানান দিচ্ছে,,’ আমি তোমার! ওই বেয়ে পড়া পানিটুকু আমার৷ ‘
গিটারের টুংটাং আওয়াজে আমি কেঁপে উঠলাম৷ আমাকে চমকে উঠতে দেখে সে বলল,’ ক্লান্তি শেষ? এখন সব ক্লান্তি শেষ হবে হৃদয়ের৷ ‘
উনি বলতেই গিটারের আওয়াজ আমাদের কাছাকাছি আসতে শুরু করে সেই সাথে সুর!
আমি অবাক হয়ে উনার পাশে দিয়ে তাকাতেই দেখি, দুইটা ছেলে আর একজন মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাসিমুখে৷ আমাকে দেখেই গিটার হাতে দাঁড়ানো ছেলেটা সুর টেনে বলে উঠলো
–‘ ওওও ভাবিইইইইইই, এতো দিন পরে দেখা পেয়েছি ওও ভাবিইই! ‘
–‘ বেসুরে গান৷ তোর গান শুনে পাহাড়ে অজ্ঞান হয়ে যাবে৷ ‘ নাক ছিটকে পাশে দাঁড়ানো উজ্জ্বল রঙের ছেলেটা বলে উঠলো৷ গিটার হাতে দাঁড়ানো শ্যামবর্ণের ছেলেটা হুংকার ছেড়ে বলল,
–‘ চুপ শালা, আমার বেসুরে গান শুনেই তোমার জন্য সিলড করা সুন্দরী রমণী পটেছিলো৷ তাহলে তোর মতো চোরা চেহারার বউ আমার ভাবি হয় নাকি,ওও ভাবিইই! ‘
উনার কথা শুনে রাহাতের কথা মনে পরলো৷ সেম এক ধাঁচের তবে একটু অন্য ধরণের৷ আমি অবাক চোখে তাকিয়ে দেখি উনি হাসছেন৷
ঢোলা টপস সেই সাথে বেণুনী করা হালকা পাতলা গড়নের মেয়েটা আমার দিকে এগিয়ে এসে হাত ধরে বলল,
–‘ ইনিই তোর উনি নাকি?? ‘
স্নিগ্ধ চুলে হাত বুলিয়ে ঠোঁট বাকিয়ে হেসে দুদিকে মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিতেই মেয়েটা ঠেসে জড়িয়ে ধরে আমাকে৷ আবার ছেড়ে দিয়ে উৎফুল্ল ভাবে বলল,
–‘ কোথায় ছিলে এতোদিন বলো তো?? আমার ওয়ান এন্ড অনলি দুই নাম্বার দেবর অবশেষে খুজে পেয়েছে তাহলে তোমাকে৷ কিন্তু চিনলো কি… ‘
–‘ ওইটা আমার ব্যাপার৷ ইট’স সিক্রেট৷ ‘
আমি উনাদের কথাবার্তা শুনে ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে আছি৷ উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
–‘ ও হচ্ছে মিম,আর সাদা চামড়ার ফরেনার টা নোমান এই সিলড করা রমণীর ওয়ান এন্ড অনলি বেঁধে রাখা হাসবেন্ড৷ আর ওইটা আদি৷ আমার ভাই দুইটা৷ ‘
উনার কথা শুনে দুইজনেই এগিয়ে এসে স্নিগ্ধ স্যারকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে একসাথে বললেন,
–‘ আবেগে কাইন্দা দিলাম৷ এতো আবেগ কই রাখুম? ‘
–‘ কেন শুকনো ঝর্ণায় তো পানি নাই তোদের আবেগের পানি ওইখানে ঢাইলা দে ন্যাকার দল৷ শুভ্র পরী, তুমি আর আমি এক দলের আর ওই তিনটা অন্য৷ একদম পাত্তা দিবা না অসভ্য গুলাকে৷ বুঝেছ??’
আমি ছোট করে অস্ফুটস্বরে ‘ জি ‘ বললাম৷ মাথার উপর দিয়ে উড়ে উড়ে সব যাচ্ছে৷ আমাকে থম মেরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আদি ভাইয়া বললেন,
–‘ স্নিগ্ধ তোমাকে বলে নি আমরা আসবো?? ‘
–‘ ন..না তো৷ ‘
–‘ ওই শালা বলিস নাই কেন? পরশু রাতে না বললি মনের কথা খুইলা বলবি৷ এতো প্যাচ কেন তোর মনে?? বুঝলা, আমাদের সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যত্ন আনছে পরশু দিন৷ আর ও সারারাত আমাদের সাথেই ছিলো৷ এতো প্যারা দেয় এই পোলা৷ আজ তোমার দায়িত্বে দিয়া দিলাম তুমি তোমার সাদা শাড়ির আঁচলে বেধে রাখবা যাতে আগামী পাঁচ বছরে আমার আর নোমানের বাচ্চা-কাচ্চা দুনিয়ায় আগমণ হয় বিনা প্যারায়৷ ‘
এক নিঃশ্বাসে বলে থামলেন আদি ভাইয়া৷ সবাই এক নজরে তাকিয়ে আছি৷ আমার লজ্জা লাগলেও তারা সবাই বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছেন৷ আদি ভাইয়া অপ্রস্তুত হয়ে বললেন,
–‘ লজ্জা লাগে তো ওইভাবে তাকাও কেন সব৷ ‘
উনার কথা শুনে দমফাঁটা হাসিতে মেতে উঠলো সবাই৷ আমি হাসবো না কাঁদবো??
এই লোকের মধ্যেই হাজার ঘটনা তুলে রাখা যা আমার অজানা ৷ তবে সেই অজানা কথা শুলো খুব জলদি বলবেন আমায়৷ পাহাড়ের ঢালু বেয়ে নামার ফাঁকে ফিসফিস করে বললেন,
–‘ একেকটা মূহুর্তে সাক্ষী হবে একেকটা দিন৷ তাই আরেকটু অপেক্ষা করো৷ তবে আমি তোমার সামনে খুলে রাখা পৃষ্ঠার মতো যার ভাজে কোনো কলমের দাগ পড়েনি শুধু ছোঁয়া পড়েছে আর সেই ছোঁয়ার ভাগীদার তুমি আমার শুভ্র রাঙা পরী৷ ‘
আমি হাসলাম! মনের মধ্যে জমে থাকা একটু কথা উনার ন্যায় ফিসফিস করে বললাম,
–‘ সেই পৃষ্ঠা আবার নতুন করে ছুঁয়ে দেখার বাকি৷ সেই পৃষ্ঠার রঙে নিজেকে আঁকা বাকি৷ তাই অপেক্ষা করবো৷ ‘
আমার কথা শুনে সবার মাঝেই হাত টেনে নিলেন অতি যত্নে ধরে বললেন,
–‘ দেখা যাক৷ ‘
________________________
সকল ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট নিজেদের মতো উপভোগ করছে হিমছড়ির প্রত্যেকটা জায়গা৷ আদি ভাইয়ারা আমাদের সাথেই রয়েছে৷ তাদের মধ্যকার সম্পর্ক সবাই উপভোগ করছে৷ আমি দূরে বসে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি উনাদের দিকে৷ মিম আপু কোথায় জানি না৷ একটু পর পর তিনজন উচ্চস্বরে হেসে উঠছে আবার কখনো সিরিয়াস আলোচনা করছে৷ স্নিগ্ধ গত পরশু রাতে উনাদের সাথে ছিলেন ভেবেই ভালোলাগছে সেই সাথে রাগ৷ বলে গেলে কি হতো??
–‘ আপু ওই গিটার হাতে ছেলেকে কিছু বলবা তুমি? না আমিই স্নিগ্ধ স্যারের কাছে বিচার দিবো? সে স্যারের ফ্রেন্ড বলে ছেড়ে কথা বলবো না কিন্তু আমি৷ ‘
জান্নাত গাল ফুলিয়ে আমার পাশে এসে বসে বললো৷ আমি কঁপাল কুঁচকে বললাম,’ কি করেছেন আদি ভাইয়া??’
–‘ ভাই বলবা না একদম৷ ফাজিল ছেলে আমাকে বলে,পিচ্চি তোমার গাল গোলাপি আসো আরেকটু গোলাপি রঙ মেখে দিই৷ কেমন অসভ্য ভাবো??অন্য স্টুডেন্টরা ছিলো জানো! ‘
আমি ওর কথা শুনে মুখে টিপে হাসলাম৷ তারপর ওর কানের কাছে গিয়ে বললাম,
–‘ আমার জা হওয়ার প্রস্তুতি নে জান্নাত বেইব, উনিই তোর সে হতে চলেছে৷ ‘
আমার কথা শুনে জান্নাত চোখ বড় বড় করে বলল,
–‘ মানে স্নিগ্ধ স্যার সর্যি ভাইয়ার ভাই উনি?? আর তুমি ভাইয়ার সে?? আই কান্ট বিলিভ আপু৷ তুমি যদি থাকো সেখানে আমি এক দৌড়ে যাবো৷ ‘
আমি ওর কথা শুনে সশব্দে হেসে উঠলাম৷ আমার হাসির শব্দে সবাই ঘুরে তাকিয়ে দেখছে সেই দিকে আমার পাত্তা নেই৷ আমার সে আমার সামনেই অপলক চোখে তাকিয়ে আছে যে..!
তার সূক্ষ্ম মন মাতানো দৃষ্টিতে দূর থেকেই জানান দিচ্ছে,’ হেসো না । আমার তোমার কাছে এসে সেই হাসিকে নিজের করতে ইচ্ছা হয়৷ ‘
চলবে….
~” অত্যাধিক আবেগপ্রবণ সাথে ভয়ে লেখেছি আল্লাহ মালুম কেমন হয়েছে। ভালো হয়েছে কিনা জানাবেন৷ আর আরেকটা পার্ট লেখছি৷ ইন শা আল্লাহ লেখা হলেই আপলোড করবো একটু টাইম লাগবে প্লিজ কিছু মনে করবেন না৷~♥