মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 09

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 09

🍁🍁🍁

কেবিন জুড়ে পিনপন নীরবতা। আদি এক দৃষ্টিতে সিমথির দিকে তাকিয়ে আছে। আদির দৃষ্টি অনুসরণ করে সবাই সিমথির দিকে তাকায়। সিমথি ভাবলেশহীন ল্যাপটপে মুখ গুঁজে আছে। যেনো কিছুই হয়নি। বেশকিছু ক্ষণ সবাই কে চুপচাপ দেখে তিন্নি গাল ফুলিয়ে ছোট ছোট পায়ে সিমথির দিকে এগিয়ে যায়।

রোদেলা : এহেম এহেম। আদি ভাইয়া আসুন না বসুন এসে। নৌরিন

নৌরিন এসে রোদেলার দিকে তাকায়।

রোদেলা : এক কাপ কফি নিয়ে আসো উইথ সুগার।

নৌরিন যেতে নিলে আদি বাঁধা দেয়।

আদি : না রোদেলা তিন্নি ওর ডাক্তার আন্টির সাথে দেখা করতে এসেছিলো। তাই নিয়ে এসেছি। তিন্নি তুমি থাকো। কাকাই একটা ইম্পর্ট্যান্ট কল করে আসছি।

আদির কথায় তিন্নি মাথা নাড়িয়ে সায় জানায়। আদি দ্রুতপদে কেবিনে থেকে বেরিয়ে যায়। ঝুম বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে সোজা হাঁটা দেয়। আকাশে ক্ষণে ক্ষণে মেঘ গর্জে উঠছে। কেবিনে হওয়া সবগুলো কথায় আদি শুনতে পেয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গায়ে সাদা শার্ট টা ভিজে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে গেছে বাতাসের দাপটে। রাস্তায় তেমন একটা মানুষ নেই। আদি যেন ভ্রমে চলে গেছে। কিছুতেই মানতে পারছে না সিমথি আর আদির নেই। মন বলছে সিমথি এখনো আদিকে ভালোবাসে কিন্তু মস্তিষ্ক বলছে সিমথি এখন তন্ময়ের। আদি একটা জায়গায় এসে থেমে যায়। জায়গা টা অত্যন্ত নীরব। আশেপাশে কোনো লোকালয় নেই। যতদূর চোখ যায় কেবল সুনসান নীরবতা।

আদি তিন্নিকে দিয়ে বেরিয়েছে প্রায় দেড় ঘন্টা হতে চললো। কিন্তু এখনো আদির ফেরার নাম নেই। এদিকে আদির নাম্বার ও নেই কারোর কাছে। তারমধ্যে তিন্নি ও ঘুমিয়ে পড়েছে।

সিমথি : এই লোকটার সামান্য কমনসেন্স টুকুও নেই। একটা বাচ্চা মেয়েকে রেখে কোথায় গেলো।

মেঘা : আমাদের আর কফি খাওয়া হলো না।

তন্ময় : এক কাজ করি।

তুহিন : কিহ

তন্ময় : আমরা যাওয়ার পথে না হয় তিন্নিকে আদি ভাইয়া দের বাসায় ছেড়ে যাবো। আর নৌরিন কে বলে দে আমরা গেলে আদি ভাইয়া আসলে যেনো বলে দেয় আমরা তিন্নিকে নিয়ে গেছি। মনে হয় আদি ভাইয়া কোনো কাজে আটকে গেছে।

সিমথি : হবে হয়তো। কিন্তু আদি ভাইয়ার বাসা চিনিস তুই।

তন্ময় : আরে হুমম চিনি চল এখন তাড়াতাড়ি বৃষ্টি একটু কমেছে।

অগত্যা তিন্নিকে কোলে নিয়েই সবাই বেরিয়ে পড়ে।

আদিবা : রাত আট টা বাজে তিন্নি কে এখনো নিয়ে আসার নাম আছে এই ছেলেটার।

শাওন : সত্যিই তো কোথায় গেলো বলো তো।

মেহের : তোমার মেয়ে কেমন নাছোড়বান্দা জানো না নাকি। নির্ঘাত সিমথিকে ছেড়ে আসতে চাইছে না।

মেহেরের কথায় শাওন রাগী দৃষ্টিতে মেহেরের দিকে তাকায়।

শাওন : আমার মেয়ে কে নিয়ে বাজে কথা বললে বাপের বাড়ি ছেড়ে আসবো মনে রেখো।

শাওনের মা : শাওন থাপ্পড় খাবি। এক বাচ্চার বাপ হয়ে গেছিস এখনো বউয়ের সাথে ঝগড়া করিস।

শাওনের বাবা : সবই তোমার আস্কারায়।

আদিবা : নেও এদের ও ব্যান্ড বেজে গেছে। ( বিড়বিড় করে)

এদের কথার মাঝেই কলিংবেল বেজে ওঠে।

আদির মা : ওই তো এসে গেছে। দাড়াও আমি খুলে দিচ্ছি।

আদির মা গিয়ে দরজা খুলে দেয়। আদি ভেবে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নেবে তখনই সামনে একটা মেয়েকে দেখে আটকে যায়। মেয়েটা পেছন দিক করে আছে । মেয়েটার কোলে তিন্নিকে দেখে বিচলিত কন্ঠে হালকা চেঁচিয়ে বলে,,,

আদির মা : এই মেয়ে আমাদের তিন্নির কি হয়েছে।

আচমকা কোনো মহিলার চেচানোতে সিমথি চমকে যায়। কান থেকে ফোন নামিয়ে পেছন ফিরে তাকায়। বয়স্ক একজন মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সিমথি ভ্রু কুঁচকায়। পড়নে নীলরঙের একটা শাড়ি। চুলগুলো খোপা করা। নাকে ফুল কানে কানের দুল আর গলায় একটা চিকন সোনার হার। সিমথি হালকা কেশে নিজেকে সামলে শান্ত গলায় বলে উঠে,,,,

সিমথি : মেহের ম্যাম আছেন এখানে।

সিমথির ভয়েজ কানে আসতেই আদিবা, তুহা, ইশান, শাওন আর মেহেরসহ উপস্থিত সবাই চমকে দরজার দিকে তাকায়। কালো শার্ট কালো জিন্স পড়ুয়া একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোমড় অবধি চুলগুলো উপরে তুলে বাঁধা। গোলাপি ঠোঁটে হালকা পিংক লিপস্টিক। গায়ে একটা জ্যাকেট জড়ানো। বাম হাতে ঘড়ি। বৃষ্টি পানিতে মুখটা অনেক টা ভিজে ফর্সা মুখ টা অত্যন্ত মায়াবী রূপ ধারণ করেছে।

মেহের : সিমথি তুমি ( হালকা চেঁচিয়ে )

মেহেরের চেঁচানো তে সিমথির আদির মায়ের পাশ দিয়ে ড্রয়িং রুমের দিকে তাকায়। অনেক জোড়া চোখ সিমথির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সিমথি কিছুটা অপ্রতিভ হয়ে পড়ে।

আদির বাবা : কাণ্ডজ্ঞান কি সব চুলোর আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছো। মেয়েটাকে ভেতরে আসতে দাও। দরজায় দাঁড়িয়ে এভাবে পুলিশের মতো জেরা শুরু করেছো কেনো।

আদির বাবার কথায় আদির মায়ের হুশ ফিরে। নিজের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত অনুভব করে। কিছু লজ্জিত গলায় বলে,,,

আদির মা : সত্যি ই তো ভেতরে এসো মা।

আদির মায়ের কথায় সিমথি হালকা কেশে বলে,,,

সিমথি : নাহ আন্টি আজ আর ভেতরে যাবো না। তিন্নিকে পৌঁছে দিতে এসেছিলাম তাই,,

বাকিটা বলার আগেই আদিবা এসে সিমথিকে টেনে ভেতরে নিয়ে যায়। এবার সিমথি বেশ অপ্রতিভ হয়ে পড়ে। এই প্রথম সিমথি আদিদের বাড়িতে পা রেখেছে। আগে কখনোই আসা হয়নি। তাই এতোটা অস্বস্তি হচ্ছে।

আদিবা : তা বললে তো হয়না। এই প্রথম তুমি আমাদের বাড়িতে এসেছো আর দরজার বাইরে থেকেই চলে যাবে।

ইশান : কারেক্ট

শাওন : মেহের তিন্নিকে কোলে নাও। মেয়েটা আর কতক্ষণ তিন্নিকে কোলে রাখবে।

শাওনের কথায় মেহের জিভ কেটে তিন্নিকে কোলে নিয়ে সোফায় শুইয়ে দেয়।

আদিবা : মা-বাবা তোমাদের বলেছিলাম না কয়েকজন ছেলে আমাকে আর তুহাপু কে ডিস্টার্ব করছিলো তখন সায়ন ভাইয়ার বোন আমাদের বাঁচিয়েছিলো। সিমথিপুর কথায় বলেছিলাম।

মেহের : আর তিন্নিকে র/ক্ত ও দিয়েছিলো সিমথিই।

শাওন : সিমথি বোন বসো। দাঁড়িয়ে আছো কেনো।

সিমথি : না না আসলে

শাওনের বাবা : কি না। বসো রাতের খাবার না খাইয়ে কিন্তু ছাড়ছি না।

শাওনের বাবার কথায় সিমথির কাশ উঠে যায়।

ইশানের বাবা : আরে মেয়েটাকে পানি দে।

ইশানের বাবার কথায় শাওনের মা পানি এনে সিমথি কে দেয়। পানি খেয়ে নিজেকে কিছু টা সামলে বলে,,,

সিমথি : আম সরি।

শাওনের বাবা : এখানে সরির কি আছে।

আদির মা : আরে সিমথি তুমি বসো তো আগে।

আদির মায়ের কথায় সিমথি বসে পড়ে। সবাই সিমথির দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সিমথি নার্ভাস হয়ে যায়।

সিমথি : আশ্চর্য এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে।

আচমকা ফোন বাজতেই সিমথি উঠে দাঁড়ায়। জ্যাকেট থেকে ফোন টা বের করে তন্ময়ের নাম দেখে একটা তপ্ত শ্বাস ছাড়ে।

সিমথি : এক্সকিউজ মি প্লিজ

সিমথি দূরে গিয়ে ফোন রিসিভ করে।

ইশানের মা : ইশশ মেয়েটা কত কিউট। একটা মেয়ের এতো কিউট কিভাবে হয়।

মেহের : ছোটো মা চুপ করো সিমথি শুনলে লজ্জায় পড়ে যাবে।

শাওনের বাবা : মেয়েটার জন্য কিছু নিয়ে আসো। এটা ও বলে দিতে হয়।

শাওনের বাবার কথায় আদির মা, শাওনের মা আর ইশানের মা রান্নাঘরের দিকে যায়।

সিমথি : আব্বেহ কেউ একজন আয়। আমাকে তো ছাড়তেই চাইছে না।

তন্ময় : তুই ওখানেই থেকে যা। যেতে হবে না আমার সাথে।

সিমথি : কি আজব আমার সাথে রাগ করিস কেনো।

তন্ময় : রাগ করবো কেনো। আমি কে?

সিমথি : কল রাখ ফা/জি/ল একটা।

সিমথি কল কেটে পেছনে তাকায়। মেহের হেসে সিমথির কাছে এসে দাঁড়ায়।

মেহের : ভাইয়া কোথায় ?

সিমথি : কোন ভাইয়া ?

শাওন : আদি কোথায় এটাই জিজ্ঞেস করছে।

সিমথি : ওহ। আসলে আদি ভাইয়া

ইশান : ভাইয়া

ইশানের কথায় মেহের, তুহা, আদিবা আর শাওন কেশে উঠে। সিমথি বোকার মতো ওদের পাঁচজনের দিকে তাকায়।

ইশান : সরি সরি। বলো আদি ভাইয়া এটার পরে কি বলো।

সিমথি : আদি ভাইয়া তিন্নিকে আমার কাছে রেখে কিসের কল আসায় চলে গিয়েছিলো তারপর অনেক্ক্ষণ হয়ে যাওয়ায় ও আসেনি। আর আমার ফ্রেন্ড সার্কেলের মাথায় হঠাৎ করে কফি খাওয়ার ভূত চেপেছে। তাই তিন্নিকে এখানে ছেড়েই আমরা যেতাম।

শাওন : ওহ আচ্ছা। শুধু শুধু আদির জন্য তোমার কষ্ট হলো সরি বোন।

সিমথি : বোন ও বলছেন আবার সরি ও বলছেন নট গুড।

সিমথির কথায় শাওন হেসে দেয়।

সিমথি : আচ্ছা আমি আসছি। বাইরে আমার ফ্রেন্ডরা ওয়েট করছে।

মেহের : সেকি কিছু খেয়ে যাও।

সিমথি : না মেহের ম্যাম আমাকে,,

মেহের : আমার বরকে ভাইয়া বলো আর তার বউকে ম্যাম নট গুড।

কথার মাঝে বাঁধা পেয়ে মেহেরের কথা শুনে সিমথি হালকা হেসে দেয়।

সিমথি : নেক্সট টাইম না হয় ভাইয়ের সম্পর্কে যা হোন তাই ডাকলাম। বাট নাও আম অলসো লেট বাই।

আদির মা : তা বললে তো হচ্ছে না। এই নাও মিষ্টি মুখ করে তারপর যাও।

আদির মায়ের কথায় সিমথি ঘাড় ঘুরিয়ে ছোট টেবিলটার দিকে তাকায়। রকমারি মিষ্টি দেখতেই সিমথির গা গুলিয়ে উঠে। সিমথি হালকা কেশে উঠে।

সিমথি : আ আমি মিষ্টি খাই না আন্টি।

সিমথির কথায় সবাই আকাশ থেকে পড়ে। সবার মুখের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কেউ এদের মুখে জোর করে করলার রস ঢুকিয়ে গিলতে বলা হচ্ছে।

আদিবা : সিরিয়াসলি সিমথিপু।

আদিবার কথায় সিমথি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। সবাই মুখ টা লটকিয়ে সিমথির দিকে তাকায়। সবার মুখের অবস্থা দেখে সিমথি মিষ্টির পাশে থাকা জুসটা নিয়ে দু চুমুক খায়।

সিমথি : এনাফ। আজ আসি। আল্লাহ হাফেজ।

আদির বাবা : বললে ও তো থাকবে না জানি। আবার একদিন সময় করে এসো।

আদির বাবার কথায় সিমথি হালকা হেসে সম্মতি জানায়।

মেহের : আবার এসো কিন্তু।

সিমথি : ইয়াহ বাই।

সিমথি সদর দরজার দিকে এগিয়ে যায়। আচমকা পেছন থেকে হাতে টান পড়ায় থেমে যায়। পেছন ফিরে দেখে তিন্নি ফোলা ফোলা চোখ নিয়ে ঠোঁট উল্টে সিমথির দিকে তাকিয়ে আছে।

তিন্নি : তুমি আমাকে না বলে চলে যাচ্ছো কেনো? ( বাচ্চা বাচ্চা গলায়)

তিন্নির কথায় সিমথি একবার উপস্থিত সবার দিকে তাকায়। অতঃপর হাঁটু গেড়ে তিন্নির সামনে বসে তিন্নির গালে একহাত রাখে।

সিমথি : তুমি তো ঘুমিয়ে ছিলে তারজন্য ডাক দেয়নি।

তিন্নি : হুহ আমি লাগ ( রাগ) কলেছি ( করেছি)

তিন্নির কথায় সিমথি হালকা হাসে।

সিমথি : আচ্ছা যাও সরি।

তিন্নি : নাহ এভাবে না। আমাকে পাপ্পি দাও এখানে ( গাল বাড়িয়ে)

সিমথি তিন্নির গালে টপ করে একটা চুমু খায়। অতঃপর কপালে একটা চুমু খায়।

তিন্নি : ডাবল আদল ( আদর) ।

সিমথি মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়। তিন্নি সিমথিকে ঝাপটে ধরে সিমথির গালে পরপর দুইটা চুমু খায়। অতঃপর দুজনই হেসে দেয়। এই তিন্নিকে সিমথির ভীষণ ভালো লাগে। এমনিতেই বাচ্চাদের প্রতি সিমথির ঝোঁক টায় আলাদা। সিমথি আর তিন্নির কেমিস্ট্রি দেখে সবাই হেসে দেয়।

তিন্নি : তুমি কিন্তু আবাল আসবে হুহ

সিমথি : ওক্কে। তুমি ও যাবে।

তিন্নি : আচ্ছা।

সিমথি : এবার আমি যাই।

তিন্নি : ইচ্ছে কলছে সালাজীবন লেখে দেয় ( ইচ্ছে করছে সারাজীবন রেখে দেয়) ।

তিন্নির কথায় সিমথি হালকা হেসে পুনরায় কপালে একটা স্নেহের পরশ মেখে তিন্নিকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। ফোনের দিকে তাকিয়ে ১০+ মিসড কল দেখে ঘাড় চুলকায়। অতঃপর সবার দিকে তাকিয়ে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসে।

সিমথির পেছন পেছন সবাই আসে। সিমথি ফোনের দিকে তাকিয়ে দরজা খুলে বের হতে নিবে তখনই কারো সাথে ধাক্কা লাগে। তাল সামলাতে সামনের ব্যক্তির কলার খামছে ধরে। যার ফলস্বরূপ হাত থেকে ফোন নিচে পড়ে যায়। সামনে ব্যক্তিও অজান্তেই সিমথির কোমড় আঁকড়ে ধরে। বিনা পয়সায় বিনোদন দেখে সবার মুখ টা হা হয়ে যায়। বড়রা দ্রুত সেখান থেকে সরে যায়। আদিবা,তুহা,মেহের,শাওন,ইশান একে অপরের দিকে তাকায় আবার সামনের দুইজনের দিকে তাকায়। তিন্নি গালে দু হাত দিয়ে হা করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।

আদি : চোখ খুলো।

আচমকা আদির ভয়েজ কানে আসতেই সিমথি চোখ খুলে তাকায়। আদির অবস্থা দেখে সিমথি থতমত খেয়ে যায়। কি অবস্থা আদির। হসপিটাল থেকে বের হবার সময় তো সুস্থ সবলই ছিলো। কিন্তু এখন মাথার বামপাশে ব্যান্ডেজ, চোখগুলো রক্তজবার মতো লাল হয়ে ফোলা ফোলা। গায়ের শার্ট ভিজে গায়ের সাথেই লেপ্টে আছে। অন্যদিকে সিমথির চোখের দিকে তাকাতেই আদি অন্য জগতে চলে যায়। সিমথির মুখের দিকে অনিমেষ তাকিয়ে আছে। পেছনে পাচ জোড়া হুহ ছয় জোড়া চোখ ওদের কীর্তিকলাপ দেখছে। আদিবারা মিটিমিটি হাসতে শুরু করে। আচমকা সিমথির চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। আদিকে হালকা ধাক্কায় দূরে সরিয়ে দেয়। নিচ থেকে ফোন তুলে একবার পেছনে তাকায়। অতঃপর সরি বলে চলে যায়। মুহুর্তে পাঁচ জনের হাসি বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ কি হলো? সিমথি রেগে গেলো কেনো? আদি সিমথির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

আদি : আবেগের জগৎ থেকে বেরিয়ে তুমি বাস্তবতার পথে হাটছো। আর আমি বাস্তবতার জগৎ ছেড়ে তোমার অতীত পথে হাঁটছি। ( মনে মনে)

চলবে,,,

( আমি আগেই বলেছিলাম গল্পটা একদিন পরপর দেবো। আফটার অল আমি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট। পড়ার প্রচুর চাপ। সারাদিন এই ক্লাস ওই ক্লাস করে বিকালে বাড়ি ফিরে ক্লান্ত হয়ে যায়। মাথা ব্যথা হয়। আমার আবার মাইগ্রেশানের প্রবলেম আছে। আমি বেশি চাপ সহ্য করতে পারিনা। রাতে আবার পড়া লাগে। তারমধ্য ফ্যামিলির সাথে থাকিনা। আলাদা একটা গ্রুপের সাথে থাকতে হয়। রান্নাসহ অনেক কাজই আছে। গল্প লেখাটা আমার পেশা নয় নেশা। সখের বশেই লিখি। এখন শখের জন্য নিজের পেশাকে অবহেলা করতে পারবো না। তাই প্রতিদিন গল্পটা দেওয়া আমার জন্য পসিবল না। সো এগুলো এক্সকিউজ মনে হলে এক্সকিউজ। সমস্যা মনে হলে সমস্যা। সবই আপনাদের হাতে। আপনারা ও অনেকেই স্টুডেন্ট তাই আমার প্রবলেম টা বুঝবেন আশা করি। এখন থেকে একদিন পর পর গল্প পাবেন। আর আমি ফ্রী থাকলে সারপ্রাইজ পার্ট হঠাৎ কোনো দিন পেতেই পারেন। ভুলকিছু বললে দুঃখিত। ধন্যবাদ ❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here