#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
10+11
#part : 10
আদির রুমজুড়ে চলছে চিরুনি তল্লাশি। মিশন আদির জিএফ। আদি অফিসে কাজের চাপ থাকায় কাল রাতে বাড়ি না ফিরে ওদের ফার্ম হাউসে চলে গিয়েছিলো। আর সেই ফাঁকেঔ আদির রুমে তুহা, আদিবা, মেহের, শাওন, ইশান, রিক, আয়াশ ইঁদুরের মতো খুটুরমুটুর করছে। তিন্নি চোখ ছোট ছোট করে ওদের কার্যকলাপ দেখছে আর চকলেট খাচ্ছে। চকলেট টা হচ্ছে শাওন দের তরফ থেকে। তিন্নি কাকাই বলতে পাগল। আর যদি সে দেখে তার ই বাপ-মা, ফুফুরা মিলে তার কাকাইয়ের রুমে খুটুরখুটুর করছে তাহলে আদির কানে পৌঁছাতে দেরী নেই।
এদিকে একেক জন একেক জায়গা খুঁজে ও কিছুই পেলো না। সবাই একে অপরের দিকে হতাশ হয়ে তাকালো। একদিন আড্ডার ফাঁকে আদি মুখ ফসকে বলেছিলো ” আমি যাকে ভালোবাসি তাকে তোমরা সবাই চিনো। এবার ওই মেয়ে টা কে সেটা খুঁজে বের করার দায়িত্ব তোমাদের। ” ব্যস সেদিন থেকেই সবাই আদির পিছনে আদা-জল খেয়ে লেগেছে জাস্ট একটা ক্লু এর জন্য। কিন্তু প্রতিবারই তারা নিরাশ হচ্ছে। তাই আজ সকাল সকালে আয়াশ আর রিক কে ডেকে আদির জিএফ এর কথা জিজ্ঞেস করলে আয়াশ রা আকাশ থেকে পড়ে। কারণ সবাই জানে দ্য গ্রেট আদিত্য চৌধুরী আদির পক্ষে কোনো মেয়ের উপর ফিল আসা অসম্ভব তারউপর ভালোবাসা তো বিলাসিতা। সেই রহস্য উন্মোচনে সবাই একজোট হয়ে আদির ঘরে হানা দেয়।
আদিবা : ধ্যত কিছুই তো পাইনি। একটা ছবি তো পাবো অন্তত। চেঁচিয়ে)
তুহা : সিরিয়াসলি। কোথায় জিএফ এর ছবি দিয়ে পুরো রুম ভরে রাখবে। সকাল বিকাল রাত চব্বিশ ঘণ্টা জিএফ কে দেখবে। তা না নিরামিষ একটা।
তুহার কথায় ইশান চোখ সরু করে তুহার দিকে তাকায়।
ইশান : সিরিয়াসলি। এসব করলে ভালোবাসা হয় নাকি ( অবাক হয়ে)
তুহা : তো সিরিয়ালে দেখো না। হাউ রোমান্টিক।
ইশান : নে এই মেয়ে আবার সিরিয়ালে চলে গেছে।
মেহের : আহ ভাইয়া তুহা থামো তোমরা। আচ্ছা আর কোনো জায়গা বাকি আছে দেখার।
রিক : হুমম আছে তো।
শাওন : কোন জায়গা তাড়াতাড়ি বল।
রিক : টয়লেট আর ছাঁদে পানির ট্যাঙ্ক।
সিরিয়াস মুহুর্তে রিকের কথায় সবাই রাগি দৃষ্টিতে রিকের দিকে তাকায়। সবার তাকানো দেখে রিক একটা শুকনো ঢোক গিলে।
রিক : এ এভাবে তা তাকানোর কি আছে। যা সত্যি তাই বললাম।
আয়াশ বিছানা থেকে একটা কুশন নিয়ে রিকের দিকে ছুঁড়ে মারে।
আয়াশ : চুপ কর শা’লা।
রিক : আমার কোনো বোন নেই তাই আমি তোর শালা না।
আয়াশ রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকালে রিক থতমত খেয়ে চুপ হয়ে যায়।
তিন্নি : কাকাইয়ের একটা সিলকেট ( সিক্রেট) জায়গা আতল সেটা শুধু আমি জানি। ( চকলেট খেতে খেতে)
তিন্নির কথায় সবাই পুলকিত হয়ে তিন্নির দিকে তাকায়। তিন্নি ভাবলেশহীন চকলেট খাওয়ায় মনোযোগী হয়। সবাই দৌড়ে তিন্নিকে ঘিরে ধরে। তিন্নি দেখে ও না দেখার ভান করে চকলেট খাচ্ছে।
মেহের : আমার সোনা মা। তোর ফেভারিট পাস্তা করবো আজ।
তিন্নি : তুমি না বলো বেশী পাস্তা খেলে শলীল ( শরীর) খালাপ কলে ( খারাপ করে) ।
তুহা : লক্ষ্মী সোনা আমাদের তিন্নি। তোর জন্য আমি আইসক্রিম নিয়ে আসবো।
তিন্নি : তুমি না বলো আইলসক্লিম ( আইসক্রিম) খেলে ঠান্ডা লাগে আমাল ( আমার) ।
আদিবা : আচ্ছা। তোকে নিয়ে আমার ভার্সিটি যাবো। তুই সেদিন যোতে চেয়েছিলি না।
তিন্নি : হুমম সেদিন তুমি বলেতিলে ( বলেছিলে) আমি চোটো মানুলস ( ছোটো মানুষ)
তিন্নির কথায় মেহের, তুহা, আদিবা হতাশ হয়। এই মেয়ে হারে হারে পাজি। যখন ওকে কিছু বারণ করা হবে তখন শুনে ঠিকই। কিন্তু পরে কোনো কাজে লাগলে কথার প্যাচ তুলে ধরে।
ইশান : আচ্ছা আমরা দুইজন গিয়ে শপিং করে আনবো চলবে তো৷
ইশানের কথায় তুহা বিজ্ঞদের ন্যায় ওর দিকে তাকায়। তিন্নির তাকানো দেখে ইশান দু পা পিছিয়ে যায়।
তিন্নি : তোমলা আমালে ঘুস দিতে চাইছো ( তোমরা আমাকে ঘুষ দিতে চাইছো) ।
তিন্নির কথায় ওরা একে অপরের দিকে তাকায়। সবাই একসঙ্গে মাথা নেড়ে না জানায়। তিন্নি ভেংচি কেটে টেবিলের উপর থেকে নেমে যায়। অতঃপর ওদের দিকে তাকায়।
তিন্নি : আমাল সাথে আতো। ( আমার সাথে আসো)
সবাই তিন্নির পেছনে যায়। তিন্নি গিয়ে আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে শাওনের হাত টেনে ধরে।
তিন্নি : আমালে কোলে নাও।
শাওন মেয়েকে কোলে নেয়।
তিন্নি : এলটু কাছে আতো
শাওন তিন্নিকে নিয়ে আরেকটু এগিয়ে যায়। তিন্নি পুরো শরীর আলমারির ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। সবাই নিঃশব্দে তিন্নির কার্যকলাপ দেখছে।
মেহের : মা একটু তাড়াতাড়ি কর। তোর কাকাই চলে আসবে।
তিন্নি : চুপ থাকো। নইলে কাকাই কে সব বলে দিবো।
তিন্নির ছোট্ট হুমকিতে সবাই ছোটোখাটো একটা ঝাঁকুনি খায়।
বেশকিছুক্ষণ পর তিন্নি একটা ড্রয়ারের সন্ধান খুজে পেয়ে প্রাপ্তির হাসি দেয়। শাওনের দিকে তাকিয়ে নিচে নামানোর জন্য ইশারা করে। শাওন ও নিজের মেয়েকে নিচে নামিয়ে দেয়।
তিন্নি : ওই ড্রলারে ( ড্রয়ারে) একটা ডায়েলি আতে দেতো ( একটা ডায়েরি আছে দেখো)
তিন্নির কথায় সবাই হুর মুড়িয়ে ড্রয়ারের সামনে আসে।
মেহের : কই খুঁজে পাচ্ছি না তো ডায়েরি টা।
তুহা : ভাবী ভালো করে খুঁজো।
ইশান : ওই পুচকি তুই সত্যি বলছিস তো।
ইশানের কথায় তিন্নি কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়ায়। তিন্নির দাঁড়ানোর স্টাইল দেখে আদিবা জোরপূর্বক হাসে।
আদিবা : হেহেহে আরে ইশান ভাইয়া কি বলছো।
বেশকিছু ক্ষণ পর মেহের সবার দিকে তাকায়। মেহেরের তাকানো দেখে সবাই হতাশ হয়। আচমকা বিস্ফোরণে সবাই কান চেপে ধরে। মেহের খিলখিলিয়ে হেসে দেয়।
শাওন : ফা/জি/ ল মেয়ে এভাবে কেউ চেঁচায়।
মেহের : এই যে ভাইয়ার গোপন প্রেমের রহস্য।
মেহেরের কথায় সবাই চকিত চোখে মেহেরের হাতে থাকা ডায়েরির দিকে তাকায়।
শাওন : ডায়েরি হাতে নিয়ে ফটোশুট করবে নাকি আজব।
মেহের : শাট আপ শাওন।
ইশান : মেহেরবানি কর ভাইজান। তোরা এখন ঝগড়া করিস না।
তুহা : হুম হুম। ডায়েরি টা খোলো। আমার আর তর সইছে না।
তুহার কথায় সবাই সায় দেয়। মেহের ডায়েরি টা নিয়ে আদির বেডে বসে। ডায়েরি টা মাঝখানে রেখে সবাই গোল হয়ে বসে। সবার মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ডায়েরির প্রথম পেজ উল্টাতেই সবাই একটা বড়সড় টাস্কি খায়।
তিন্নি : ডাক্তার আন্টি ( চেচিয়ে)
তিন্নির চেঁচানো তে সবাই কান চেপে ধরে।
আয়াশ : চুপ কর তিন্নি। দেখতে দে।
তিন্নি ঠোঁট উল্টে আসন করে বসে।
ডায়েরির প্রথম পেজে সিমথি একটা ছবি লাগানো। ছবিতে সিমথি ঘুমিয়ে আছে। ছবির নিচে লেখা,,
” আমার ঘুমন্ত পরী ”
পরের পেজ উল্টাতেই সিমথির শাড়ী পড়া একটা ছবি লাগানো। ছবিতে সিমথি একহাতে চোখের চশমা ঠিক করছে অন্যহাতে কুঁচি তে ধরা। সূর্যের আলো এসে সিমথির মুখে পড়ছে। ছবিটির নিচে লেখা,,
” আজ হঠাৎ অনুভব করলাম তোমার পাগলামি গুলোতে ভীষণ আসক্তি হয়ে পড়েছি। এই কয়েকদিনে তোমার উপেক্ষা আমার সহ্য হচ্ছে না। তোমার সেই বার বার ভালোবাসি আদি ডাক টা আজ শুনতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। ”
পরের পৃষ্ঠা উল্টাতেই সিমথির কলেজের ড্রেস পড়ুয়া একটা ছবি ভেসে ওঠে। দুপাশে দুটো ঝুটি, চোখে চশমা। ছবিটায় সিমথি অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে।
” আজ একুশ দিন তুমি আমার সাথে কথা বলো না। তোমার হঠাৎ দূরত্ব আমি মানতে পারছি না। মনে হচ্ছে প্রিয় কিছু হারিয়ে ফেলেছি। এই যে আজ তোমার মন খারাপ এটার কারণ আমি। অদ্ভুত ভাবে তোমার ভালো লাগার কারণ টা ও আমিই ছিলাম। কিন্তু নিজের অবহেলায় ভালোবাসা হারালাম। ”
পরের পৃষ্ঠা উল্টাতে সিমথির ছবিতে সবার চোখ আটকে যায়। শাওন রা একে অপরের দিকে তাকায়। ছবিটাতে সিমথি কাঁদছে। পাশে মেঘা, রোদেলা , তুহিন আর তন্ময় সবার চোখে পানি। মেঘা সিমথিকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।
” জানো আজ তোমার কথাগুলো তীরের মতো আমার বুকে বিঁধেছে। তুমি আমাকে ভুলে যাবে কথাটা মনে হলেই নিঃশ্বাস আটকে আসছে। কিন্তু আমার হঠাৎ বদলের কারণ টা আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। আমি তো তোমাকে ভালোবাসি না। তাহলে আমার এতো কষ্ট কেনো হচ্ছে। আমার এই কষ্ট থেকে মুক্তি চাই। আমি তো নিজেই তোমাকে দূরে সরালাম। তাহলে আমি কেনো পারছি না। ”
এভাবে কয়েক পৃষ্ঠায় সিমথির ছবি লাগানো। আর আদি মনে অব্যক্ত অনুভূতি সাজিয়ে লেখা আছে। বেশ কয়েক পেজ পর আরেকটা পৃষ্ঠায় সবাই থামে। সেখানে সিমথি সোফায় বসে বইয়ে মুখ গুঁজে আছে। পড়নে জিন্স আর থ্রি-পিস।
” আমার নাম না জানা অনুভূতির নাম পেয়েছি। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি সিয়াজান। হ্যাঁ হ্যাঁ তোমার পাগলামি, দুষ্টুমি, বার বার ভালোবাসি বলে জ্বালানো সব কিছু কে মিস করার কারণ পেয়েছি। ভালোবাসি তোমায়। খুব শীঘ্রই তোমাকে আমি আমার মনে কথা জানাবো। তোমার এক্সামের পরই জানাবো। ভালোবাসি তোমায় ভীষণ। ”
তারপর কয়েক পেজ খালি। মেহের একের পর এক পাতা উল্টায়। বেশ কিছুক্ষণ পর মেহের থামে।
সিমথির কোনো ছবি নেই কিন্তু লেখা আছে আদির।
” আমি তোমাকে এভাবে হারিয়ে ফেলবো ভাবিনি। এতো অভিমান তোমার। এতো রাগ আমার প্রতি। আমার থেকে দূরত্ব বাড়ানোর জন্য দেশ ছেড়ে দিলে। আমার শেষ কথাগুলো শুনার জন্য একটু অপেক্ষা করতে পারলে না। আজ যখন বাড়িতে গিয়ে সায়নের কাছে জানতে পারলাম তুমি কাল রাতের ফ্লাইটে লন্ডন চলে গেছো। আমার পুরো দুনিয়া থমকে গিয়েছিলো। নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছিলো। আমার বোকামির জন্য তোমাকে এভাবে হারালাম। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আমি আর এই ভার বইতে পারছি না। ফিরে এসো। দয়া করো আমায়। ”
তার পরে কয়েক পেজ খালি। পরে আবারো সাদা পৃষ্ঠায় কালো কালি ভেসে উঠেছে।
” আজ তিন বছর হলো তুমি আমার কাছে নেই। আজ থেকে তিন বছর আগে এই দিনই তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে। তুমি নিশ্চয়ই আমাকে ভুলে গেছো। সত্যিই কি ভুলে গেছো। কিন্তু আমি তো তোমায় ভুলিনি। আজোও তোমার সেই পুরানো স্মৃতিগুলো আমার মনে আছে। তোমার মুখের সেই মিষ্টি হাসি, মায়াবী চোখ। বার-বার ভালোবাসি আদি এই ডাকটা বড্ড মিস করছি। ফিরে আয় প্লিজ আমি আর পারছি না। ফিরে আয় সিয়াজান। ”
তারপর কয়েক পেজ খালি। পুনরায় আবারো লেখা এবং লেখার উপরে সিমথির একটা ছবি। সেখানে সিমথি রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গেটআপ সম্পূর্ণ চেঞ্জ। চোখে চশমা নেই।
” আজ প্রায় ছয় বছর পর তোকে দেখলাম। আমাকে খুব সন্তপর্ণে আড়াল করেছিস তুই। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম তুই একটা বারের জন্য ও আমার দিকে তাকালি না। আমাকে না চেনার ভান করে আমার সামনে দিয়ে চলে গেলি। তুই আগে থেকেই জেদী ছিলি। কিন্তু এই ছয় বছরে তুই আরো জেদী হয়েছিস। বাগানে যখন বলেছিলি আমার প্রতি অনুভূতি টা তোর অপরিণত বয়সের ভুল। তখন ইচ্ছে হয়েছিলো তোকে জড়িয়ে ধরে চেঁচিয়ে বলতে তোকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় তুই এখন আমার নাম টা শুনতে পারিস না। সেখানে তোকে যদি আমি ছুঁয়ে দিতাম হয়তো সেই অপরাধে আমার মৃ/ত্যু/দ/ন্ড হতো। যেই চোখে সেদিন ও ভালোবাসা দেখেছিলাম সেই চোখে আজ আমি আমার জন্য বিরক্তি, ঘৃণা দেখেছি। আমি ভাবিনি আমার একটা ভুল এভাবে তোর মন থেকে আমাকে মুছিয়ে দেবে। কিন্তু আমি এখন কি করবো বলতে পারিস। তোর কাছে যেটা অপরিণত বয়সের ভুল আমার কাছে সেটা ভালোবাসার প্রথম রং। ”
তারপরে সব পেজ খালি। আদিবারা একে অপরের দিকে তাকায়। তারমানে আদি যাকে ভালোবাসে সেই মেয়ে আর কেউ নয় সিমথি জাহান সিয়া। ডায়েরির কথা গুলো থেকে এটা স্পষ্ট সিমথি ও আদিকে ভালোবাসতো। তাহলে ওদের মাঝে হঠাৎ কি হলো। হঠাৎ এভাবে দুজন দূরে সরে গেলো কেনো? সবার মাথায় একঝাঁক প্রশ্ন এসে জোরো হয়। যার সমাধান আছে দুজন মানুষের কাছে। প্রথমত সিমথি আর দ্বিতীয়ত আদি। কিন্তু কে দেবে এতো প্রশ্নের উত্তর?
চলবে,,,,
#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 11
🍁🍁🍁🍁
মেহের : আমি এতোদিন সিউর ছিলাম না সিমথি আর ভাইয়ার সম্পর্কের ব্যাপারে। আজ ডায়েরি টা পড়ে মনে হচ্ছে আমার ধারনাই সঠিক।
মেহেরের কথায় সবাই অবাক হয়ে মেহেরের দিকে তাকায়।
শাওন : তুমি জানতে ওদের ব্যাপারে।
মেহের : কয়েক মাস আগে জেনেছি। তবে সিউর ছিলাম না।
আয়াশ : ভাবী তুমি কিভাবে জানতে। আদি বলেছিলো।
মেহের : নাহ।
আদিবা : তাহলে?
মেহের : যেদিন তিন্নিকে হসপিটাল থেকে ডিসটার্জ করা হয়ে ছিলো। সেদিনই আমি সিমথির কেবিনে যাচ্ছিলাম। তখনই কেবিনের বাইরে থেকে কাঁচের আড়ালে ওদের একসাথে দেখেছিলাম। ওদের কিছু কথা কানে এসেছিলো আবছা আবছা। তবে সিমথির কথাটা অনেকটাই শোন গিয়েছিলো। সিমথি ভাইয়াকে বলছিলো ভাইয়া ওকে কষ্ট দিয়ে, ব্যথা দিয়ে, অপমান করে অদ্ভুত রকমের তৃপ্তি পায়। তারপরই সিমথি কেবিন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলো। সেদিনই আমার খটকা লেগেছিলো। তারপর তিন্নির বাহানায় বার বার সিমথির কাছে যাওয়া এটা ও বেশ খটকা লেগেছিলো। আর এখন তো সবটা ক্লিয়ার।
আদিবা : সিমথিপু কে নিয়ে আমরা ভাইয়ার সাথে জাস্ট মজা করতাম। কিন্তু নিজেদের অজান্তেই মাঝেমধ্যে ভাইয়াকে আমরা হার্ট করতাম।
রিক : সায়নের বিয়ের সময় সেদিন ছাদে সিমথি একজনকে ভালোবাসতো শুনে আমরা অবাক হয়েছিলাম।
আয়াশ : আমি মেঘাকে অনেকবারই জিজ্ঞেস করেছি। কিন্তু মেঘা প্রতিবারই কথাটা এড়িয়ে গিয়েছিলো।
তুহা : বাট ওদের ভুল বুঝাবুঝির কারণ টা কি?
ইশান : আদি ব্রো কে জিজ্ঞেস করতে হবে।
সবার মাঝেই নীরবতা নেমে আসে। হঠাৎ বাইরে গাড়ির শব্দ হতেই ধীরে ধীরে সবাই নিচে নেমে আসে সুরসুর করে। আয়াশ আর রিক ভদ্রলোকের মতো সবার সাথে আড্ডায় যোগ হয়।
আদি ড্রয়িংরুমের সোফায় আয়াশ আর রিক কে দেখে অবাক হয়। সচরাচর আদি না থাকলে আয়াশ আর রিক ওদের বাড়িতে আসে না। আদিকে দেখে রিক আর আয়াশ এগিয়ে যায়।
আদি : কি ব্যাপার তোরা হঠাৎ না জানিয়ে।
আয়াশ : কেনো আসতে মানা আছে।
আদি : তা কখন বললাম। আচ্ছা তোরা বস। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
আদি নিজের রুমে চলে যায়। আদি যেতেই সবাই হাফ ছেড়ে বাঁচে। মেহের, শাওন, আদিবা, তুহা, ইশান, আয়াশ, রিক সাত মাথা একজোট হয়ে কিছুক্ষণ ফুসুরফাসুর করে।
আদির মা : কি রে তোরা সাতজন কি গোল মিটিং করছিস?
আদির মায়ের কথায় সাতজন সাত দিকে ছিটকে পড়ে। অতঃপর একসাথে দাঁত কেলিয়ে দেয়।
মেহের : ক কিছু না মে মেঝো মা।
ইশানের মা : হোয়াট করছিস ইউ রা?
ইশানের মায়ের বাংলিশ শুনে সবাই ফোঁস করে শ্বাস ছাড়ে। ইশানের মায়ের বাংলিশ কথায় সবাই অভ্যস্ত। বেচারীর ইংরেজি তে কথা বলার প্রচুর ইচ্ছে কিন্তু উনার দ্বারা ইংরেজি হয় না।
ইশান : মা প্লিজ যাও তো।
ইশানের মা : নাস্তা ফাস্ট করতে আয় কুইক।
মেহের : এখন আমরা কেউ খাবো না।
শাওনের মা : কেনো এখন খাবি না কেনো তোরা।
শাওন : আমাদের ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে। তোমরা খেয়ে নাও। ওই চল তোরা তাড়াতাড়ি।
মুহুর্তের মধ্যে সবাই পগারপার।
আদি নিজের রুমে এসে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে শাওনদর সবাই কে বেডে বসে থাকতে দেখে চমকায়।
আদি : এভাবে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো।
শাওন : ইচ্ছে হয়েছে তাই।
আদি : তোর অফিস নেই আজ। আদিবা আর তুহা ভার্সিটি যাবি না। ইশান তোর কাজ নেই। আর আয়াশ, রিক তোদের ডিউটি আর অফিস নেই।
মেহের : তোমাকে এতো কিছু ভাবতে হবে না।
আদি : কি আশ্চর্য। সবাই এভাবে আমার রুমে এসে গাপটি মেরে আছো কেনো।
আদিবা : আমরা আজ অনশন করবো।
আদি : ওয়াট ( চেঁচিয়ে + অবাক হয়ে)
সবাই : ইয়েসসসসস ( চেঁচিয়ে)
সবার চেঁচানো তে আদি কান চেপে ধরে।
আদি : স্টপ। ষাঁ/ড়ে/র মতো চেচাস কেনো?
আদিবা : কিছু প্রশ্ন করবো ডিরেক্ট এন্সার দিবি। ওকে!
আদি : দেখ আমি খুব ক্লান্ত এখন। যা তোরা। পরে আসিস।
তুহা : নাহ। তুমি যাকে ভালোবাসো তার নাম কি?
আদি : এটা বের করা তোদের কাজ আমার না। যা ফুট।
আদি ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুলে চুরুনি লাগায়।
আয়াশ : মেয়ে টা কি সায়নের বোন সিমথি।
আয়াশের কথা শুনে আদির হাত থেকে চিরুনি পড়ে যায়। হতবাক হয়ে সবার দিকে তাকায়। সবাই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আদির দিকে তাকিয়ে আছে। আদির গলা শুকিয়ে আসছে। হাত-পা কাঁপতে শুরু করে। হঠাৎ চোখ বুঁজে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
আদি : ডায়েরি টা পড়েছিস পুরোটা।
আয়াশ : আমাদের একটা বার জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না।
রিক : এই আমাদের বেস্টফ্রেন্ডের বন্ডিং।
আদি একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়। আদির হাসির অর্থ বুঝতে না পেরে সবাই প্রশ্নাক্ত দৃষ্টি তাক করে।
আদি : কিছু সত্যি না জানায় ভালো।
শাওন : কি হয়েছিলো তোদের মধ্যে।
আদি : কিছুই হয়নি। হঠাৎ করেই সিমথির মনে হলো ওর অনুভূতি ভুল তাই দূরে সরে গেছে।
আদিবা : তুই বলতে চাইছিস সব দোষ সিমথিপুর।
আদি : নাহ। সব দোষ আমার। সেই অন্যায়ের শাস্তিস্বরূপ পেয়েছি সিমথি অবহেলা, ঘৃণা মিশ্রিত একটা নতুন অনুভূতি। তাই দূরে সরে এসেছি। ওর অবহেলা আমি নিতে পারি না কষ্ট হয় ভীষণ। নিজের করা অবহেলা গুলোর কথা মনে পড়ে যায়।
মেহের : তুমি কি বলছো বুঝতে পারছো।
আদি : হুমম।
তুহা : ভাইয়া এমন তো হতেই পারে সিমথিপু এখনো তোকে ভালোবাসে।
তুহার কথায় আদি শব্দ করে হাসে।
আদি : সিমথি এখন আর আমাকে ভালোবাসে না। ও আমাকে সরাসরি বলেছে।
ইশান : কি হয়েছিলো বলবি ক্লিয়ারলি।
ইশানের কথায় আদি স্মিত হাসে। ডুব দেয় অতীতে।
____ফ্লাশব্যাক____
তখন সিমথি ক্লান টেনে পড়তো। আদিরা তখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট ছিলো। ছোট থেকেই সিমথি ভীষণ দুষ্টু ছিলো। তবে রাগ-জেদ এগুলো ছিলো বড়দের মতোই। সেদিন সিমথি ড্রয়িং রুমে বসে বই পড়ছিলো। হঠাৎ করেই কয়েকজন ছেলের ভয়েজে সামনে তাকায়। সায়ন সিমথির মাথায় হালকা চাটি মারে। সিমথি গাল ফুলিয়ে সায়নের দিকে তাকায়।
সায়ন : কি? এভাবে গাল ফুলালি কেনো?
সিমথি : মারলি কেনো হা/রা/মি।
সায়ন : সারাক্ষণ বইয়ে এভাবে মুখ গুঁজে থাকলে চশমার উপর চশমা পড়তে হবে। বুঝলি চাশমিশ।
সিমথি হাত দিয়ে চোখের চশমা ঠিক করে সায়নের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। সিমথির তাকানো দেখে সায়ন হালকা কেশে বলে,,
সায়ন : এরা হলো আমার বেস্টফ্রেন্ড। মিম, আয়াশ, রিক আর ও হচ্ছে আদি।
সিমথি সবার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে সালাম দেয়। প্রত্যুত্তরে সবাই সালামের জবাব দেয়।
সায়ন : তরী কোথায়?
সিমথি : আমাকে কেনো জিজ্ঞেস করছিস। আমি কি ওর বডিগার্ড নাকি। তোর দাদিকে জিজ্ঞেস কর গিয়ে।
সায়ন : রেগে যাচ্ছিস কেনো।
সিমথি : রাগার মতো কথা বলছিস তাই রেগে যাচ্ছি।
সায়ন ফুস করে একটা শ্বাস ছেড়ে আয়াশদের নিয়ে নিজের রুমে যায়। আদির ফোন আসায় আদি একটু সাইডে দাঁড়িয়ে সায়নদের যেতে বলে। সিমথি সবার দিকে একপলক তাকিয়ে পুনরায় বইয়ে মুখ গুঁজে। কথা বলার একপর্যায়ে আদি হেসে উঠে। সিমথি ভ্রু কুঁচকে আদির দিকে তাকায়। মুহুর্তের মধ্যে একরাশ মুগ্ধতা এসে সিমথিকে গ্রাস করে। কারো হাসি বুঝি এতোটা সুন্দর হয়। হঠাৎ সিমথি অনুভব করলো ওর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বেসামাল হয়ে যাচ্ছে। আদি কথার ফাঁকে ফাঁকে প্যান্টের পকেট থেকে হাত বের করে মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে নাড়ছে। কখনো হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে। সিমথি চোখ বুঁজে নেয়। বুকের বা পাশে হাত দিয়ে হাঁপাতে থাকে।
সিমথি : কন্ট্রোল ইউর স্লেফ সিমথি। ( বিড়বিড় করে)
আদি ফোন কেটে উপরের দিকে যেতে নিলে সিমথির দিকে একপলক তাকায়। সিমথি ধপ করে উঠে দাঁড়ায়। আদি ভ্রু কুঁচকে সিমথির দিকে তাকায়।
আদি : এভাবে উঠলি কেনো?
আদির মুখে প্রথমেই তুই ডাক শুনে আদির দিকে তাকায়। আদি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,,,
আদি : তুই আমার থেকে বয়সে অনেক ছোটো তাই তুই বললাম। মাইন্ড করিসনি তো আবার৷
সিমথি দ্রুত মাথা নেড়ে না জানায়। আদি মুচকি হেসে সিমথির মাথায় হাত রেখে হেসে দেয়।
আদি : পিচ্চি একটা।
আদি উপরে চলে যায়। এই ছোঁয়ায় যথেষ্ট ছিলো সিমথি মন উলোটপালোট করার জন্য। সিমথি ধপ করে আবার সোফায় বসে পড়ে। হাঁপানির রুগির মতো হাঁপাতে থাকে। অনুভব হলো কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে।
এরপর থেকে প্রায় দুইদিন পরপরই আদিদের আসা যাওয়া লেগে থাকতো। এভাবে আদিকে নিয়ে সিমথির মনে সফট কর্ণার তৈরি হয়ে যায়। সিমথির এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়। রেজাল্ট ও পাবলিশ হয়ে যায়। অতঃপর কলেজে ভর্তি হয়। সেই এখনই কলেজে সায়নরা থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট। সিমথি তখন সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট। হঠাৎ ই একদিন সিমথি আদিকে নিজের অনুভূতির কথা জানায়। সেদিন আদি সিমথি কে অনেক বকাবকি করে।
সিমথি : আদি ভাইয়া আমি সত্যি ই তোমাকে ভালোবাসি।
আদি : শাটআপ সিয়া। আমি তোকে কখনো সেই নজরে দেখিনি। আবারো এসব বলে বিরক্ত করলে সোজা সায়ন কে বলবো। কলেজে পড়ালেখা করতে আসিস নাকি এসব করতে আসিস। বয়স কতো তোর। এই বয়সেই এসব। ছিহ। তোর থেকে আমি অনেক বড়
সিমথি : ভালোবাসা বুঝি বয়স দেখে হয়। আর তুমি ততটা বড় ও নও। কেবল মাত্র পাঁচ বছরের বড়। র ভাইয়াকে বললে তো আমারই লাভ। তাই না আদিইইই।
আচমকা আদি সিমথির গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। সিমথি গালে হাত দিয়ে আদির দিকে তাকায়। চোখ পানি ভরে উঠেছে। ভালোবাসা কি অন্যায় নাকি প্রকাশ করা অন্যায়। সিমথি হাসে। এই নিয়ে দ্বিতীয় থাপ্পড় খেলো আদির হাতে।
সিমথি : তোমার থাপ্পড় গুলো ও কিন্তু অনেক কিউট। একদম তোমারই মতো। বেশী করে খাও শরীরে তো শক্তিই নেই।
আদি : তোর কি লজ্জা নেই। কতবার বলবো ভালোবাসি না তোকে। নিজেকে এমন ভাবে আমার সামনে তুলছিস মনে হচ্ছে কোনো রাস্তার মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঘৃণা হয় তোকে দেখলে। শুধু আমিই প্রথম। নাকি আগে আরো ছেলের সাথে এসব করেছিস। তোকে আমার সামান্যতম বিশ্বাস নেই। যেই মেয়ে ভাইয়ের বন্ধু কে অন্য নজরে দেখে তার কাছে সব সম্ভব
আদি বিরক্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে নিজের ক্লাসের দিকে পা বাড়ায়। মনে মনে ঠিক করলো পরের বার আবারো যদি আসে তাহলে সায়নকে বলবে তার বোনের কীর্তি।
সিমথি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। আদির কথাগুলো এখনো তীরের মতো বুকে বিধছে। তবুও ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটিয়ে বলে,,,
সিমথি : তুমি ও আমায় ভালোবাসবে। এটা আমার ভালোবাসার বিশ্বাস আদি। তবে সেটা বেশি দেরী না হয়ে যায়।
সিমথির কথায় সই হলো। আদি যতদিনে সিমথি র ভালোবাসা বুঝলো ততদিনে সিমথি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলো। তবে এই গুটিয়ে নেওয়ার পেছনে ও ছিলো একটা জঘন্য রাতের বিষাক্ত কাহিনী।
সেদিন সিমথি কোচিং থেকে বাড়ি ফিরছিলো। মেঘাদের বাড়ি উল্টো সাইডে হওয়ায় তারা ওদিকে চলে যায়। সিমথি হাঁটতে শুরু করে। আজ গাড়ি ও আসেনি। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ সামনে কয়েকজোড়া পা দেখে থেমে যায়। মাথা তুলে উপরে তাকাতেই হৃদপিণ্ড কেঁপে ওঠে। ছেলেগুলোকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে নেশাগ্রস্ত। সিমথি ভয়ে কাঁধের ব্যাগ শক্ত করে ধরে।
ছেলেগুলোর মধ্যে একজন বলে উঠে,,,
_ কি গো সুন্দরী এতো রাতে কার কাছে যাও।
সিমথি ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে নেয়।
ওদের মধ্যে একজন গান গেয়ে উঠে,,,
_ চুমকি চলেছে একলা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে
_ আরে কি যে বলিস না ওর নাম চুমকি হবে কেনো। দেখিস না কি সুন্দরী।
_ তা ঠিকই। তাহলে তো গান টা হওয়া দরকার ” সুন্দরী চলেছে একা পথে আমরা সঙ্গ হলে দোষ কি তাতে ”
ছেলেগুলো সবাই হেঁসে উঠে। সিমথি ভয়ের ছোটে কেঁদে দেয়।
সিমথি : প্ল প্লিজ আ আমার প পথ ছা ছাড়ুন।
_ কি যে বলো আজ তুমি আমাদের সাথে যাবে।
_ ঠিক বলেছিস। ছাড়ার জন্য তো পথ আটকায়নি সোনা।
বলেই ছেলেগুলো আগাতে থাকে সিমথি ভয়ে পেছনের দিকে দৌড়াতে শুরু করে। পেছন পেছন ছেলেগুলোও দৌড়ে আসতে থাকে। অনেকটা দৌড়ানোর পর আচমকা সিমথি কারোর সাথে ধাক্কা খায়। সিমথি মুখ তুলে আদিকে দেখে ভয়ে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে দেয়।
সিমথি : আ আদি প্ল প্লিজ বা বাচাও। ও ওই লো লোক গুলো আসছে।
আদি চোখ তুলে পেছনে তাকায় কয়েকজন বখাটে কে দেখে ভ্রু কুঁচকে সিমথির দিকে তাকায়। তখনই ওদের মধ্যে একজন বলে উঠে,,,
_ কি মামা আমাদের ও একটু সুযোগ দাও। তুমি একাই সুযোগ নিচ্ছো কেনো।
ছেলেটার কথায় তাল মিলিয়ে পাশের একজন ছেলে সিমথিকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,
_ ও ফুলটুসি একটু আমাদের কাছেও আসো। আমরা তোমায় একটু কষ্ট ও দেবো না
সিমথি ভয়ে আদিকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরে।
_ ও মামু এবার তো ওকে ছাড়ো। একটা রাত আমাদের সাথে ও একটু এনজয় করুক।
ছেলেটার কথায় আদি অদ্ভুত হেসে বলে,,,
আদি : তো নিয়ে যাও। আমি মানা করলাম কখন।
আদির মুখে এমন কথা শুনে সিমথি চমকায়। আদির বুক থেকে মাথা তুলে অবাক চোখে আদির দিকে তাকায়। চোখের পানি অটোমেটিক বন্ধ হয়ে গেছে। নিজের কানকে সিমথি বিশ্বাস করতে পারছে না। আদি ওকে ওই ছেলেগুলোর হাতে তুলে দিচ্ছে। সিমথি বোবা দৃষ্টিতে আদির দিকে তাকিয়ে থাকে।
চলবে,,,৷
( কিছু বলবা। ওকে বলেন। ধন্যবাদ ❤️)