#মায়াবন_বিহারিনী 🖤
#পর্ব_৪০,৪১
#আফিয়া_আফরিন
৪০
এরপর দেখতে দেখতে আরও একটা বছর ঘুরে গেলো। এক বছরে চমকপ্রদ কিছু ঘটনাও ঘটেছে।
তার মধ্যে একটি হলো, ইমন ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে নতুন চাকরিতে জয়েন করেছে।
ইমন বারান্দায় বসে বসে চা খাচ্ছিলো। চা খাওয়া শেষ, খালি কাপে এমনি এমনি চুমুক দিচ্ছে।
মিমো পাশে বসে বলল, “ভাইয়া আপু ডাকে তোমাকে।”
“কোন আপু?”
মিমো অবাক হয়ে বলল, “কোন আপু মানে? আমার আপু কয়টা?”
“আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কত আপু তো আছে।”
“ধুর, মায়া আপু ডাকে। যাও তো। আর বসে বসে খালি কাপে চুমুক দিচ্ছো কেন? চা লাগবে আর?”
“না লাগবে না। মাথা ব্যথা করতেছে। মায়াকে এখানে পাঠিয়ে দে।”
মিমো উঠলো। কিছুক্ষণ পর মায়া এলো। এসেই বললো, “কি হইছে?”
“আমাকে দুধ চিনি ছাড়া শুধুমাত্র লিকার এর এক কাপ চা বানিয়ে দে তো; খুব কড়া করে।”
“তুমি কি আমাকে চা বানানোর জন্যই ডেকে আনছো?”
“না। এমনিতেই গল্প করার জন্য। আগে এক কাপ চা খাই। মাথা ব্যথা করছে।”
“এখন ঘুমের সময়। চা খেলে রাতে ঘুম ধরবে না।”
“না ধরুক জেগে থাকবো। সাথে তো কেও জাগিয়েই রাখবো।”
মায়া মুখ বাকিয়ে চা বানাতে গেল। ইমন আনমনেই হাসলো।
চা বানিয়ে নিয়ে এসে ইমনের পাশে বসলো। গায়ের সাথে হেলান দিয়ে বলল, “কাল আমার পরীক্ষা শেষ।
“হুম তো? তারপর?”
“তারপর কি বলবো না। কালকেই বলবো।”
“আচ্ছা!”
মায়া মুখে ফিচলে হাসি দিলো। ইমন আগামাথা কিছুই বুঝলো না।
.
.
.
সকালবেলা ইমন মায়াকে পরীক্ষার হলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরে এলো। আজ আর তার কাজকর্ম নেই।
ইমন ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভি ছাড়তেই, সুহাদা পাশে এসে বসলেন।
বেশ কয়েকদিন ধরেই ইমনকে একটা কথা বলবেন বলে ভাবছিলেন। কিন্তু ছেলেকে কথাটা বলা ঠিক হবে কিনা বুঝতে পারছিলেন না। গত এক বছরের অধিক সময় ধরেই তিনি মায়া কে দেখছেন, সে হাসি খুশি থাকলেও মনের ভিতর চাপা কষ্টের বসবাস রয়েছে। মেয়েটা ভালো নেই একদম। ওরা তো এখন পারে আরেকটা বাচ্চাকাচ্চা নিতে।
মায়ের ভাবনাগ্রস্ত মুখ দেখে ইমন জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে মা? এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন তোমাকে?”
সুহাদা এক পলক ভেবে বললেন, “সারাদিন বাসায় বসে থেকে ভালো লাগেনা। তোরা সব বড় বড় হয়ে গেলি। যে যার কাজে। বাসায় কেউ নেই, আমি একা।”
“বাবাকে চলে আসতে বলো। বাবা এখনো রাজশাহীতে পড়ে আছে কেন?”
“তোর বাবা এলেই বা কি হবে? বলি যে, তোরা একটা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে না। নাতি নাতনি আসলে আমারও সময়টা ভালো কাটবে।”
ইমন হেসে বলল, “ও আচ্ছা এই কথা।”
“এই কথা কি? বয়স হচ্ছে, কবে মারা যাব তার কোন ঠিক ঠিকানা আছে কি আদৌ? বলি যে মরার আগে কি একবারও তোদের বাচ্চাকাচ্চার মুখ দেখবো না?”
“সেটা কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের আর বাচ্চাকাচ্চার দরকার নেই মা। যেমন আছি আলহামদুলিল্লাহ। কি হবে এসবে?”
সুহাদা অবাক হয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন। ইমন কত সহজ ভাবে ভয়ংকর একটা কথা বলে ফেলতে পারলো। এটা সুহাদার ধারণার বাহিরে ছিল। বাচ্চার দরকার নেই মানে কি?
সুহাদা বিড়বিড় করে বললেন, “ইমন তুই এমন উদ্ভট কথা বললি কিভাবে? বাচ্চাকাচ্চার দরকার নেই কেন?”
“না আমার কথাটা উদ্ভট শোনালে আবার কিছুই করার নাই, সত্যি। আমি মানুষটাই এমন উদ্ভট আর কথা তো! তোমার মনে নেই মা, এর আগে কি হয়েছিল?”
“তুই এর আগের কথা কি এখনো ধরে বসে আছিস? প্রতিবার কি একই অবস্থা হবে?”
“হবে মা হবে। সে ব্যাপারটা মায়া যে মরণ যু’দ্ধ থেকে বেঁচে ফিরেছে, এটাই অনেক। এরপর জেনেশুনে আবার সেখানে পাঠানোর কোন মানেই হয় না।”
সুহাদা তীক্ষ্ণ চোখে তাকালেন। বললেন, “তুই সবজান্তা শমসের হয়ে গেছিস?”
“না মা। তবে এই ব্যাপারটা আমি জানি। আর এটা কিন্তু ডাক্তারের কথা।”
“ডাক্তারের কথা?”
“হ্যাঁ ডাক্তারের কথা।”
“কি বলেছে ডাক্তার?”
“আরেকদিন বলবো মা। আজ থাক।”
“আজকে থাকবে কেন? আজকেই বলবি এবং এক্ষুনি বলবি।”
“উহু আজ বলবো না। আজ তুমি খুবই রেগে আছো। তোমার রাগ আর বাড়াতে চাচ্ছি না। কফি খেতে ইচ্ছা করছে। কফি খাবার ব্যবস্থা কর তো মা।”
সুহাদা যেমন বসে ছিলেন তেমনি আছেন। ছেলের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। সত্যি বলতে, তার রাগ লাগছে প্রচন্ড!
ইমন আবার বলতে শুরু করলো, “মা শোনো, আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করেই নেই। বাচ্চাকাচ্চার ব্যাপারেও আমি অনেক ভেবেছি। মায়া ও আমাকে বলেছে। ওকে আমি সরাসরি না করিনি, কিন্তু এড়িয়ে গেছি। জ্ঞান বুদ্ধি তো আমারও আছে নাকি? আমি তো আর জেনে শুনে ওর জীবনের ঝুঁকি নিতে পারছি না। আচ্ছা শোনো, ডাক্তার কি বলেছে শুনবে?”
“না শুনতে চাই না। তুই জ্ঞানী হয়েছিস, মহাজ্ঞানী অতীশ দীপঙ্কর হয়েছিস এই যথেষ্ট! আমার পেট থেকে যে এত জ্ঞানী এক ছেলের জন্ম হয়েছে, এতেই আমি ধন্য!”
বলেই সুহাদা রাগে গজ গজ করতে করতে চলে গেলেন। ইমন সামান্য হেসে মাথা ঝাঁকালো।
.
.
মায়া ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়েছে অনেকক্ষণ হয়েছে। বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করছে না। মিমোকে ফোন করে ডেকে নিলো। দুজনে মিলে খানিকক্ষণ ঘুরলো। মিমো বলল, “চল আইসক্রিম খেয়ে আসি।”
“চল যাই।”
দুজন দুটো আইসক্রিম কিনে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েই খেলো। তখন ওখানে দুটো মেয়েকে দেখতে পেলো। জমজ দুই বোন। আইসক্রিম খেতে খেতে পুরো মুখ মাখিয়ে ফেলছে। আবার একজন নিজের হাত দিয়ে অন্যজনের মুখ মুছে দিচ্ছে। কি সুন্দর দৃশ্য! মায়া বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ দাঁড়িয়ে ওদের দেখলো। হাসতেছে মেয়ে দুটি। মেয়ে দুটির হাসি দেখতে ভালো লাগছে।
এমন সময় অজান্তেই বুকের ভেতরটা খালি খালি লাগা শুরু করলো। এতদিনে তারও তো একটা ছোট্ট পুতুল থাকতো। অকপটে চোখ দুটো ভিজে হয়ে এলো।
.
.
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মায়া ঘরে এসে বসলো। ইমন টিভিতে খেলা দেখছিল। অনেকক্ষণ পর্যন্ত ইমন আসছে না দেখে, মায়া ইমন এর সামনে গিয়ে বলল, “ঘরে আসো। বোঝাপড়া আছে তোমার সাথে।”
“আমার সাথে? কিসের বোঝাপড়া?”
“আগে আসো তারপর বলতেছি।”
“এখানেই বল।”
“ঘরে আসতে তোমার কি সমস্যা হচ্ছে? আমি কথাটা নিরিবিলিতে বলতে চাচ্ছি।”
মায়া নিজেই টিভি অফ করে ইমনকে হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে গেল।
ইমন বলল, “কি হয়েছে? এমন রেগে আছিস কেন?”
“আহ্লাদী টাইপের কথাবার্তা বন্ধ কর। তুমি মাকে কি বলেছ?”
“কই কি বলেছি? কিছু তো বলিনাই।”
“মনে করে দেখো কি বলেছো?”
“মাকে তো কত কথাই বলি। তুই যে কোনটার কথা বলছিস বুঝবো কি করে?”
“তুমি মাকে বলেছ, আমরা আর বাচ্চাকাচ্চা নেব না!”
মায়ের কথা শুনে ইমন নির্বিকার ভাবে বলল, “হ্যাঁ বলেছি। তাতে কি হইছে?”
“কি হয়েছে মানে? এরকম ডেম কেয়ার ভাবে কথা বলতেছ কেন তুমি? এটা কি তোমার একার সিদ্ধান্ত? কেন আমরা আর বাচ্চা নেব না?”
“এর আগের বারের কথা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি?”
“আজব ব্যাপার! তুমি এর আগের কথা এখনো ধরে বসে আছো। প্রত্যেকবার কি একই রকম হবে।”
“তুই বুঝবি না। অনেক প্রবলেম। তোকে এত কথা আমি বলতে পারব না। শুধু বলবো, আমাদের কোন বাচ্চাকাচ্চার প্রয়োজন বোধ করছি না। আর কখনোই তার প্রয়োজন নেই।”
“তোমার কি মনে হচ্ছে না তুমি স্বার্থপরের মত কথা বলছো?”
“আমার কিছু করার নাই। যদি তাই মনে হয়, তাহলে তাই ই।”
মায়া রাগে জি’দ্দে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। ইমনের দিকে তাকিয়ে বলল, “তোমার সাথে আমি আর এই এক ঘরে থাকছি না। আজ থেকে আলাদা থাকব আমরা। গেলাম আমি।”
ইমন শান্ত গলায় বলল, “ইচ্ছা!”
ইমনের ঠান্ডা ঠান্ডা কথা শুনে মায়ার রাগ আরো বেড়ে গেল। রাগে টগবগ করতে করতেই মিমোর ঘরে গেল।
জেগেই ছিল মিমো। মায়াকে আসতে দেখে বলল, “কি হয়েছে আপু? এত রাতে? কোন সমস্যা?”
“সমস্যা ছাড়া কি তোদের ঘরে আসা যাবেনা?”
“আরে না না, আমি সেটা কখন বললাম? আসলে রাত হয়ে গেছে তো এই জন্য বললাম।”
“থাকতে এসেছি তোর সাথে। আর কিছু বলবি?”
“না। ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করে আসছে বুঝি?”
“চুপ থাকবি একদম। কথা বলবি না।”
“আচ্ছা, চুপ করে গেলাম।”
.
.
পরদিন থেকে দুইদিন পর্যন্ত মায়া আর ইমনের সাথে কথাও বলে নাই। ইমন কত বার, কত রকম ভাবে যে মায়ার রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করেছে, তার হিসেব নেই।
মায়া সেদিন রান্না ঘরে চা বানাচ্ছিলো। ইমন হুট করেই পেছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরল। মায়া চমকে গিয়ে হাত থেকে চায়ের কাপ ফেলে দিলো। গরম চা ছলকে গিয়ে পড়ল পায়ের উপর।
ইমন নিজেই পা ড্রে’সি’ং করে ব্যা’ন্ডে’জ করে দিল।
মায়া কোন কথাই বলল না।
ইমন কানে ধরে বলল, “সরি!”
“কি আজব? তুমি আমাকে কেন সরি বলছো? আমি তোমার সরি বলার কে?”
“কে আবার? আমার বউ!”
“ঢং করতে আসবে না একদম আমার সাথে। দরকার নাই, তোমার বউ হওয়ার। যদি পারো তো আরেকটা বউ নিয়ে এসো বিয়ে করে।”
“সত্যি? অনুমতি দিলে আরেকটা বিয়ে করার।”
“হ্যাঁ। পুরুষ মানুষকে ধর্মে চারটা বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
“আচ্ছা আমি বিয়ে করলে তোর কষ্ট লাগবেনা?”
“কেন লাগবে? কে তুমি আমার?”
ইমন হেসে বলল, “ডিসিশন ফাইনাল জান। তোমার জন্য সতীন আনব আজকেই।”
মায়া উঠে চলে যেতে নিচ্ছিলো। ইমন হাত ধরে টেনে থামিয়ে বলল, “ও বউ দাঁড়াও না! চলে যাচ্ছো কেন?”
ইমনের কথা শুনে মায়ার হাসি পেল ও মায়া হাসলো না। নির্বিকার রইলো।
ইমন ওকে বুকের মধ্যে টেনে নিলো। কপালে গভীর চুমু খেলো, ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে বলল, “সরি বউ!”
মায়া এবার হেসে ফেলল। এরপর কি আর রাগ করে থাকা যায়? এত দিনের রাগ গলে গিয়ে নিমিষেই তরলে পরিণত হলো।
মায়া দুই হাতে ইমনের গলা জড়িয়ে ধরল। বুকে মুখ ঘষে বলল, “থাক আর সরি বলতে হবে না।”
“আরে এমন করছিস কেন? কাতুকুতু লাগছে তো।”
“ওমা তোমার কাতুকুতু আছে?”
“হ্যাঁ! এমন ভাবে বলার কি হলো?”
“এমনিতেই। কিছু হয় নাই।”
বলেই মায়া ইমনের গলা জড়িয়ে ধরে, ছোট্ট করে চোখ টিপি মেরে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
.
.
.
দুই মাস পর।
গত মাসে এবং তার আগের মাসের পি’রি’য়’ড স্কিপ করায় মায়ার সন্দেহ হলো। মিমোকে নিয়ে তৎক্ষণাৎ চলে গেল হাসপাতালে। প্রেগনেন্সি টেস্ট করালো এবং রেজাল্ট পজেটিভ এলো।
.
.
.
.
চলবে…..
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]
#মায়াবন_বিহারিনী🖤
#পর্ব_৪১
#আফিয়া_আফরিন
মায়ার প্রেগনেন্সির খবর শুনে খুশি হলো সবাই। কিন্তু খুশি হতে পারল না ইমন। বারবার ওই কথাটা কানে বাজছে, “পরবর্তীতে কনসিভ করলে আবার বাচ্চা মিস কারেজ এর ও সম্ভাবনা থাকতে পারে এবং আপনার ওয়াইফের মৃত্যু
ঝুঁকি ও থাকতে পারে।”
নিজের মনকে কোনভাবেই শান্ত করতে পারছে না। দিন দুনিয়া অশান্তি লাগছে। বাচ্চাটাকে নষ্ট করতে বললেও মায়া করবে না, দরকার পড়লে সে নিজের জান দিয়ে দেবে।
ইমনের চিন্তিত মুখ দেখে মায়া বলল, “তোমাকে এমন লাগছে কেন? ঠিক আছে? আচ্ছা তুমি কি খুশি হওনি?”
ইমন কিছুক্ষণ চুপ থাকলো। কোন কথা বলল না। ইমনের উত্তর না পেয়ে মায়া উঠে গেল। তখন ইমন বলে উঠলো, “আমি বাচ্চাটা চাই না। তুই এবরশন করে ফেল।”
ইমনের মুখে এই কথা শুনে কিছুক্ষণ হা হয়ে থাকলো মায়া। ইমন বলছে এবরশন এর কথা? এটা কি আদৌ সম্ভব? ইমনের মুখে এ কথা শোনার সাথে সাথে দুচোখ ভিজে উঠলো। ইমনের সামনে বসে ওর দুহাত ধরে বলল, “এমন কথা তুমি বললে কি করে? তোমার মুখে এমন কথা শোনার আগে আমার মরণ হলো না কেন?”
অজানা আতঙ্কে ইমনের হুশ জ্ঞান মনে হয় একেবারেই হারিয়ে গেছিল। কি থেকে কি করছে সে নিজেও জানে না? মায়াকে যে কি বলেছে, সে সম্পর্কে তার কোন ধারনাই নাই।
তাই ফের উদ্ভ্রান্তের মতো বলে উঠলো, “এই বাচ্চার জন্ম আমি হতে দিব না। এই বাচ্চা জন্ম হওয়ার আগে আমার ই মরে যাওয়া উচিত।”
বলেই ইমন উঠলো। চলে গেল বাহিরে। মায়া অবাক বিস্ময় নিয়ে চেয়ে রইলো। বোঝার চেষ্টা করল ইমন এর বলা কথাটা। এমন কেন করছি ইমন? হঠাৎ করে বাচ্চাটা না চাওয়ার মত কি হলো? এখানে তার কি দোষ?
ইমন তো কখনোই এমন ছিল না। ওকি তবে পাল্টে যাচ্ছে?
এমন সময় মিমো এসে বলল, “কি হয়েছে মায়া আপু? এমন করে বসে আছো কেন?”
মিমোকে দেখে আর কান্না সামলাতে পারলো না মায়া। এতক্ষণের যে চাপা রাগ, কষ্ট, অভিমান তা হাউমাউ করে কেঁদে ঝেড়ে ফেললো। মিমো অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল, “কি হয়েছে আপু?”
মায়া মিমো কে ইমনের বলা কথাগুলো বলল। শুনে মিমো ও প্রচুর অবাক হলো। মায়াকে শান্তনা দিয়ে বলল, “চিন্তা করোনা আপু। ভাইয়া আগের বারের কথা ভেবে হয়তো এসব তোমায় বলেছে। আগেরবার তোমার অবস্থা দেখেছিলাম, স্বচক্ষে। ভাইয়া হয়তো সেটা নিয়ে এখনো ডিস্টার্ব। ভাবছি এবার যদি এরকম কিছু হয়!”
“তাই বলে ও এবরশন এর কথা বলবে? ও বলেছে, ও বাচ্চাটাকে চায় ই না।”
“আচ্ছা চলো আপু। ভিতরে চলো। এখানে এভাবে বসে থাকা ঠিক না।”
.
.
রাত অনেক হয়েছে। কিন্তু ইমনের ফেরার কোন নাম গন্ধ নাই। সুহাদা এই ব্যাপারটা জানতেন না। মায়াকে খাইয়ে দিয়ে, ঘুমিয়ে পড়তে বললেন।
কিন্তু মায়ার তো টেনশনে ঘুম উড়ে গেছিলো। সে সুহাদাকে বলল, “ইমন কখন ফিরবে?”
সোহাদা ওকে টেনশন করতে দেখে বলল, “এত চিন্তা করিস না মা। এই অবস্থায় এত টেনশন মাথায় নেওয়া ঠিক না। শরীর খারাপ করবে। ইমনের তো দেরি করে বাড়ি ফেরা নতুন কিছু না।”
“ওতো এখন আর এমন করেনা মা।”
“জানি তো। দেখ আজকে হয়তো বন্ধু-বান্ধবের মাঝে আটকা পড়েছে। তুই শুয়ে পড়। ও চলে আসবে।”
অজান্তেই মায়ের বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠছে। কিছু বলতে পারল না। একটু আগ পর্যন্ত ইমনের মাথা যা গরম ছিল, কোথায় চলে গেল কে জানে?
মায়া কাঁদতে কাঁদতেই ঘুমিয়ে পড়েছিল।
.
.
ইমন মায়ার সাথে রাগারাগি করে ছাদে চলে এসেছিল। দিন দুনিয়ার যখন বিরক্ত লাগে, তখন কিছুই করার থাকে না। কোনখানেই শান্তি পাওয়া যায় না।
তার মনের ভিতর যে কি অবস্থা হচ্ছিলো, সেটা কাকে বোঝালে বুঝবে?
রাত তখন তিনটা বাজে। মায়া ঘুমিয়েই ছিল। ইমন দরজায় সামান্য শব্দ করতেই জেগে উঠলো।
ইমনকে দেখা মাত্রই জিজ্ঞেস করল, “কোথায় ছিলে এতক্ষণ পর্যন্ত?”
“ছাদে।”
“কেন গেছিলে?”
“এমনিতেই। এখানে থাকলে আরো কি নাকি বলে ফেলতাম তাই। সরি আমার আসলে তখন ওই ভাবে কথাগুলো বলা উচিত হয় নাই। কিনা কি বলে ফেলছি? বোধহয় সজ্ঞানেই ছিলাম না। মেজাজটা প্রচন্ড গরম ছিল।”
“কিন্তু আমি তোমার কথায় কষ্ট পেয়েছি।”
ইমন হেসে বলল, “কষ্ট? তুই কষ্ট পেয়েছিস? তাহলে তো বলা যায় তোর কষ্টটা খুব সামান্য।
কাউকে হারানোর ভয়ে সারাদিন মন আঁকুপাকু করে, এই কষ্টটা বুঝিস তুই? যাইহোক, তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করছি না বুঝে কষ্ট দিয়ে ফেলছি তাই জন্য ক্ষমা করে দে।”
মায়া বলে উঠলো, “কাউকে হারানোর কষ্টের কথা বলছো? আশা করি সেটা আমার থেকে তুমি ভালো জানো না। এর আগের বার প্রেগনেন্সির সময়, পাঁচ মাসের একটা বাচ্চাকে হারিয়েছি। এরপর এখন তুমি এটাকে এবরশন করাতে বলছো? তুমি আমার থেকে হারানোর কষ্ট কিভাবে বুঝবে? তুমি আগের ব্যাপারটা নিয়ে এখনো টেনশন করছ কেন? একটু রিলাক্স হও প্লিজ। দেখো প্রতিবার তো এক ঘটনা ঘটে না। আমরা এইবার সাবধানে থাকবো, কেমন?”
ইমন কি মনে করে যেন হাসলো। বলল, “আচ্ছা ঠিক আছে।”
ইমনের মুখে হাসি দেখে ভারমুক্ত হলো মায়া।
.
.
সকালবেলা ড্রয়ার থেকে রিপোর্ট বের করতে গিয়ে একটা চিরকুট পড়ে গেল। মায়া হাতে নিয়ে খুললো। লেখা দেখেই সামান্য হাসলো। সেই লেখাটা!
মায়া আলতো করে লেখাটার উপর হাত বুলালো। কলমের কালি গুলো লেপটে গেছে। কিছুক্ষণ হাতে রেখে আবার যথাস্থানে যত্ন করে রেখে দিলো।
.
.
.
বিকেলবেলা জাহানারা ফোন করে মায়াকে চলে আসতে বললেন। এর আগের বার যেহেতু ভুলবশত একটা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছিল, তাই তার সূক্ষ্ম ধারণা ছিল মায়া হয়তো এবার ফিরে আসবে।
কিন্তু মায়াকে এ কথা বলতেই মায়া সাথে সাথে নাকচ করে দিলো। জাহানারা একটু ক্ষি’প্ত হলেন।
এর পরের দিনগুলো এমনি করেই কাটতে লাগলো। মায়া এবার আর কোন কিছুতেই অসাবধানতা হয় নাই। ছয় মাস কেটে গেলেও কোন সমস্যা দেখা যায়নি। ইমন কিছুদিন আগ পর্যন্ত মনের মধ্যে ক্ষোভ পুষে রেখেছিল।
মায়া লক্ষ্য করেছিল ইমন এর মধ্যে আর আগের মত উচ্ছাসতা নেই। কেন যেন মন মরা টাইপের হয়ে গেছে। কোন কিছুতেই আগ বাড়ানো আগ্রহ নাই।
কিন্তু বর্তমানে সবকিছু ঠিকঠাক। মায়ার এই কদিনে কোন সমস্যা হয় নাই বিধায়, ইমন ধরেই নিয়েছে ভবিষ্যতেও কিছু হবে না।
ডাক্তারদের কথা কি সব সময় সত্যি হয়? কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের কথাও বিফলে যায়।
.
.
আগের মতই দুজনে বিকেলবেলা হাঁটতে বের হয়। বিষাদময় দিনগুলো কেটে আবার নতুন দিনের সূচনা হলো।
গোধূলি পেরিয়ে ধরনীর বুকে ফের একটি সন্ধ্যা নেমেছে। আশেপাশের বিল্ডিং গুলোতে আলো জ্বলতে শুরু করেছে। ইমন আর মায়া বাগানে ঘাসের উপর বসে আছে।
ইমন আলতো হাতে মায়ার হাতে হাত রাখল। তারপর বলল, “সময় এগিয়ে আসছে।”
“কেন? তোমার কি টেনশন হচ্ছে?”
“হবে না? আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করি, এইবার যাতে কোন অঘটন না ঘটে।”
“আচ্ছা তোমায় কিছু কথা বলতে চাই। রাগ করবে না প্লিজ।”
“বল।”
“রাগ করবে না কিন্তু। আচ্ছা শোনো, কোন মানুষই তো চিরকাল বেঁচে থাকে না। সাপোজ ধরো, বাচ্চাটা ডেলিভারির সময় আমি মারা গেলাম। তারপর? তারপর কি করবে তুমি?”
ইমন মায়ার দিকে অস্পষ্ট দৃষ্টিতে তাকালো। তারপর অনেকক্ষণ যাবত মুখপানে চেয়ে থেকে বলল, “ভালবাসি আমি তোমায়। সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ এক অকৃত্রিম অনুভুতি তুমি। সব অনিষ্ট ধ্বংস করে, বিশ্বাস রচিত করে সম্পর্কে নতুনত্ব আনার পরা শক্তি তুমি। আমার জীবনকে রংবেরঙের তুলিতে ফুটিয়ে তোলার প্রাণশক্তি তুমি। আমার অব্যক্ত, বর্ণহীন ভাষা তুমি। আমার কুঁড়েঘরের মত জীবনটাকে রাজপ্রসাদে পরিণত করার কংক্রিট তুমি।
ভোরের শিশির মাড়িয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে বেড়ানোর প্রফুল্লতা তুমি। আমার স্বাচ্ছন্দতা তুমি। আমার জীবনের সকল পাগলামি, সকল উপলক্ষ তোমাকে ঘিরে। সর্বোপরি, আমার এই এক জীবনটা তোমার নামে দলিল করে দেওয়া। এরপর তুমি নিজেকেই প্রশ্ন করো তো, তোমারই মন তোমাকে ছাড়া কিভাবে থাকবে? কেমন থাকতে পারে?”
ইমনের কথা শুনে মায়া কিছু বলার শক্তি হারিয়ে ফেলল। চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি পড়ছে। ইমনের হাত শক্ত করে ধরে বলল, “আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি তোমার অমন পাগল পাড়া ভালবাসার দাম দিতে পারব কিনা জানি না? তবে তোমায় যেমন ভালবাসি, যে আসছে তাকেও ভালোবাসি। দুজনেই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে বিসর্জন দিয়ে হলেও আমি তোমাদের দুজনকে আগলে রাখবো।
আমি যদি সত্যি মরে যাই, আমায় ক্ষমা করে দিও।”
ইমন উত্তর দিল না। নির্বিকার হয়ে অনেকক্ষণ পর্যন্ত বসে রইল দুইজন। রাত ক্রমশ বাড়ছে। মনের মধ্যে অনুভূতিগুলো রাতের অন্ধকারের মত কালো হয়ে আসছে। নীরবতা ছেদ করে ইমন বলে উঠলো, “চল নিচে নামি।”
“আমার কথায় কি রাগ করেছো?”
“না। রাগ করার প্রয়োজন মনে করি নাই।”
“তাহলে কি অভিমান?”
“কোনটাই না। তুই যে কাইন্ডনেস দেখাইলি আমার উপর, তার জন্য তোকে ধন্যবাদ। আমি নিচে যাব। ভালো লাগতেছে না এখানে। গেলে চলে আয়।”
মায়া চুপচাপ উঠে গেল। মাথা যন্ত্রণা করছে তার। কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ পড়েছে। কেমন জানি বুকের মধ্যে অদ্ভুত রকম কষ্ট হচ্ছে। চাপা কষ্ট!
.
.
অন্তিম মুহূর্ত খুব শীঘ্রই ঘনিয়ে আসছে। এরই মধ্যে আর কোন সমস্যা দেখা দিল না।
এক দুপুরে মায়ার পেইন উঠলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডাক্তারদের দেওয়া নির্দিষ্ট দিনের ২০ দিনের আগেই ব্যথা উঠেছে।
ইমন হাসপাতালে যেতে চায়নি। মিমো জোর করেছে। প্রথমে ওকে রেখে সবাই চলে গেছিলো। ইমনকে অনেক সাদা সাদি করার পরও সে আসে নাই। কোন কিছু খারাপ হলে, সে মেনে নিতে পারবে না।
পরে মিমো অনেক জোড়াজড়ি করে ওকে নিয়ে এসেছে।
ডাক্তার বলেছে, “যা করার দ্রুত করতে হবে। ওনাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। উনি ওনার হাজবেন্ডের সাথে একবার দেখা করতে চান।”
ইমন কেবিনে গেল। মায়ার পাশে বসলো। মায়া ওর হাতটা টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো। ইমনের দিকে এক পলক তাকালো। অদ্ভুতভাবে লক্ষ্য করল, ইমনের চোখে পানি টলমল করতেছে।
আবছা স্বরে উচ্চারণ করলো, “আমি না থাকলে, আমাদের বাবুর খেয়াল রেখো প্লিজ!”
ইমন কিছু বলল না। মায়া উঠে বসে একটু হেলান দিয়ে বসলো।
বড় মুহূর্তে এমন ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো, “নিজেকে বিলীন করে আমাকে বাবা হওয়ার সুখ দিতে যাস না। দরকার নেই এসবের। আমার শুধুমাত্র তোকে দরকার। দোহাই লাগে তোর, এইটুকু দয়া তুই আমার উপর কর। একেবারে শেষ হয়ে যাব আমি।”
মায়া নিজের চোখের পানি মুছে বলল, “কারো জন্য কেউ শেষ হতে পারে না। তোমাকে বাঁচতে হবে আমাদের সন্তানের জন্য।”
ইমন কিছু বলার আগে ডাক্তার এল। ইমনের দিকে তাকিয়ে বলল, “এখন একটু বাইরে গেলে ভালো হয়। উনাকে একটু স্পেস দেওয়া দরকার। এখন একটা ইনজেকশন দিব এবং রাতে অপারেশন করা হবে।”
ইমন রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে মায়ার দিকে একবার আকুতি ভরা দৃষ্টিতে তাকালো।
মায়া উপেক্ষা করলো সেই চাহনি। কিছু করার নেই। তার হাতে নেই কিছু।
.
.
সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর ডাক্তার হঠাৎ এসে বললেন, “আমরা রাতে সিজার করাতে চাইছিলাম, কিন্তু পেশেন্টের কন্ডিশন দেখে মনে হল এখন সিজার করানো টাই ভালো হবে। রিপোর্ট একটু নেগেটিভ রয়েছে। আচ্ছা যাই হোক, আপনাদের আপত্তি নাই তো!”
সুহাদা বললেন, “না আপত্তি নাই। আপত্তি কেন থাকবে? যেটা ভালো হবে সেটাই করবেন।”
“কিন্তু একটা সমস্যা?”
“কি সমস্যা আবার?”
“বলেছিলাম টেস্টের রিপোর্টের ফলাফল খুব একটা ভালো না। আবার একেবারে খারাপও না। অপারেশনের সময় যদি, মা অথবা বাচ্চা দুজনের মধ্যে একজনকে বাঁচানোর সম্ভব হয়; তাহলে আমরা কাকে বাঁচাবো?”
সুহাদা কিছুক্ষণ অবাক হয়ে রইলেন। এইবারও কি তবে মেয়েটাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে?
ইমন কোন কিছু না ভেবেই উত্তর দিল, “বাচ্চা দরকার নেই। আপনারা আমার ওয়াইফ কেই বাঁচাবেন।”
“আচ্ছা ঠিক আছে। ওটি তে নেওয়ার আগে কি ওনার সাথে একবার দেখা করতে চান?”
হাসপাতালে নীলা ওরাও ছিল। সবাই মিলে একবার মায়ার সাথে দেখা করে নিলো।
তারপর তাকে ওটিতে নেওয়া হলো। ডাক্তার একটা ইনজেকশন রেডি করতে করতে মায়াকে বলল, “আপনার অপারেশনের সময় মা অথবা বাচ্চা দুজনের মধ্যে হয়তো একজনকে বাঁচানো সম্ভব হবে! আপনি বলেন কাকে বাঁচানো উচিত হবে? আপনাকে নাকি আপনার বাচ্চাটাকে?”
মায়া হেসে জবাব দিল, “অবশ্যই আমার বাচ্চাকে।”
ডাক্তার কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কেন? আপনার বাড়ির লোক তো বলল আপনাকে বাঁচাতে।”
মায়া ফের হাসলো। বলল, “ওরা আমাকে অনেক বেশি ভালবাসে তাই আমাকে বাঁচাতে বলেছে। আর আমি আমার সন্তানকে ভালোবাসি। তাই আমার পক্ষে তাকে বাঁচানোটাই স্বাভাবিক। আমি তো অনেক বছর বেঁচে ছিলাম। পৃথিবী দেখেছি। সে তো এখনো পৃথিবীর মুখও দেখতে পারেনি। তার কি অধিকার নেই?
আমি পৃথিবীর আলো দেখেছি, আমার সন্তানেরও সেই অধিকার আছে। আমার জীবন আর কয়দিনের? সবার ভালোবাসা পেয়েছি। যে আসছে তাকে তার বারবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করব কিভাবে? আমি যতটুকু ভালোবাসা পেয়েছি, তার ও অধিকার আছে।
দুনিয়া আমার দেখা হয়ে গেছে ডাক্তার, এবার আমার সন্তানের পালা। আপনার কাছে আমার অনুরোধ থাকলো, দুজনের মধ্যে যদি একজনকে বাঁচানোর সম্ভব হয়; তাহলে আমার বাচ্চাটাই যেন বাঁচে। আমাকে বাঁচানোর দরকার নেই।”
মায়ার কথা শুনে ডাক্তার কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলেন। পরক্ষণেই ‘আচ্ছা’ সম্বোধনে মায়াকে আশ্বস্ত করলেন।
.
.
.
.
.
চলবে……
[কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ]