‘মনসায়রী’
২.
চিনির দ্বিতীয় কিউবটা দুধ চায়ের কাপটায় ফেলে ঘূর্ণিঝড়ের গতিতে নাড়লেন মেহরুন। চা বানানোতে যে তিনি দুর্দান্ত পারদর্শী তা মুখে না বলেই বুঝিয়ে দিলেন। চায়ের দুই চারটে ফোটা এসে সাদা খাতায় লেগে গেলো। দুপুর প্লাস পয়েন্টের চোখের চশমাটা আরেকটু ঠেলে নাকে তুলে নেয়। মেহরুন দুপুরের মুখের সামনে চায়ের কাপটা তুলে বললেন,
‘দুপুর, চা খেয়ে বলো তো কেমন হয়েছে ? ‘
দুপুর তেমন একটা ভ্রুক্ষেপ করলো না। নিত্যনৈমত্যিক ঘটনার মতো চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে এক চুমুক দিলো। বিনয়ী হেঁসে বরাবরের মতো করে বলল,
‘ভালো হয়েছে আন্টি। ‘
মেহরুনের মুখ কালো হয়ে আসলো। এক খাবলা মেঘের কৃষ্ণবরণ কালি কে যেনো ফরসা চকচকে মুখে লেপে দিয়েছে। মুখ গোমড়া করে তিনি বললেন,
‘শুধু ভালো! ‘
‘বেশ অনেকটাই মজা হয়েছে। ‘
এবার তিনি সন্তুষ্ট হলেন। নিজে এক কাপ চা ঢেলে খেতে খেতে বললেন,
‘জানো,তোমার আঙ্কেলকে কতকিছু বানিয়ে দেই। সে খেয়ে নাক মুখ কুঁচকে বলে এসব ছাগলের খাদ্য তিনি খাবেন না। আচ্ছা, তুমিই বলো আমি কী এতোই খারাপ রান্না করি?’
দুপুর হেঁসে ফেললো। পরক্ষনেই সামলে কিছু বলতে যাবে, তার আগেই অমিত বলে উঠলো,
‘আম্মু, তুমি যা রান্না করো তা খাওয়ার যোগ্য না। ‘
মেহরুন ফুঁসে উঠলেন। নিজের ছেলেও তাঁকে পাত্তা দেয়না। রেগে গিয়ে বললেন,
‘এই হতচ্ছাড়া! তাহলে তোর বাপ আর তোকে কে খাবার বানিয়ে দেয়?’
‘কেনো,রহিমা কাজের বুয়া!’
মেহেরুন গজগজ করতে করতে অমিতের ঘর থেকে চলে গেলেন। দুপুর এদের কান্ড দেখে না হেঁসে পারেনা। এক বছর হলো অমিতকে পড়াচ্ছে। যথেষ্ট বুদ্ধিমান ছাত্র অমিত। ক্লাস ফোরে পড়ে। ছেলে যেমন বুদ্ধির হাড়ি। মা তেমন রণচণ্ডী। প্রতিদিন নিজের বানানো অদ্ভুত রেসিপি বানিয়ে দুপুরকে খাওয়ানো তার একটি অন্যতম শখ। তিনি যে শুধু দুপুরকে খাওয়াতে চান ব্যাপারটা তা নয়। আসলে, তার রান্নার স্বাদ এমনই হয় যে কেউই দ্বিতীয়বার আর খেতে চাইবেনা। একমাত্র এই দুপুরই সেই মেয়ে যে চুপচাপ তার অখাদ্য খেয়েও মুচকি হেঁসে প্রশংসা করার ধৈর্য রাখে। দুপুরের এখনও মনে আছে যেদিন বান্ধবীর কাছে শুনেছিলো এক আত্মীয়র ছেলেকে পড়ানোর জন্য টিচার খুঁজছে। দুপুরের তখন টাকার দরকার অনেক বেশি। খেয়ে না খেয়ে চাকরি খুঁজছিলো। সেদিনই মিসেস মেহরুনের বাড়িতে আগমন দুপুরের। মেহরুন নুডলস দিয়ে এক ধরনের ড্রিংকস বানিয়েছিলেন। সেটাই দুপুরকে খেতে দিলেন। দামী একটি গ্লাসে ভেতরে ঘন কী যেনো একটা দেখে, দুপুরের মনে হয়েছিলো বড়লোকদের বানানো কোনো মজাদার খাবার হবে। একটু আনন্দ নিয়েই মুখে দিয়েছিলো। কিন্তু, কে জানতো দুপুরের এক মাসের খাবারের স্বাদ টেনে ওই নুডলস নিয়ে চলে যাবে! দুপুর কোনোরকমে মেকি হেঁসে গলধকরণ করে নিলেও বাসায় গিয়ে তিনবার বমি করেছে। বুক জ্বলে ছারখার হয়েছিলো। আজও মনে পড়লে বমি আসে ওর। এসব মনে করতে করতে অমিতকে দু’টো অঙ্ক করতে দিলো। এমন সময় মেহরুন বাটিতে করে তার নতুন এক্সপেরিমেন্টাল রেসিপি নিয়ে হাজির হলেন। দুপুর পাকস্থলীকে প্রস্তুত করে নিলো। আগেই পেট মোচড় দিয়ে উঠছে। যেনো আগেই ধমক দিয়ে বলছে,’খবরদার! আজ যদি যদি ওসব আমার কাছে চালান করেছিস তো! ‘ দুপুর অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে। মেহরুন হাস্যজ্জ্বল মুখে বাটি এগিয়ে একটা ছুরিসহ দিয়ে বললেন,
‘কেকটা কাটো দুপুর। ‘
দুপুর একবার কেকের দিকে তাকিয়ে দেখলো উপরে চকলেট কালারের লেয়ার দেয়া। এতদিনের অভিজ্ঞতা বলে, ভেতরে নিশ্চয়ই শকিং কিছু থাকবে। মাইন্ড চিৎকার করে করে বলছে, ‘সামথিং ইজ ভেরি ফিশি!’দুপুর ঢোক গিলে ছুরি হাতে নিয়ে কেকটা কাটলো। ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো ঝাল ঝাল মাংস।
দুপুর হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছেনা। শুধু মাংস কিংবা কেক হলে অনায়াসেই খুব খুশি হতো। কিন্তু, মিষ্টির ভেতর ঝাল! এটা কী ধরনের খাবার! আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো অমিত ঠোঁট চেপে হাসছে। দুপুর এটা কীভাবে গলা দিয়ে নামাবে সেটাই চিন্তা করছে। না পেরে বোকা হেসে মেহরুনকে বলল,
‘আন্টি, আমি আজকে বাসা থেকে খেয়েই বের হয়েছি। পেট এতো ভরা। অন্য কোনো দিন খাবো। ‘
মেহরুন মন খারাপ করে বললেন,
‘সেকি! আমি তো তোমার জন্যই বিশেষ করে এখন বানালাম। এই খাবার আমি কাকে খাওয়াবো এখন? ‘
‘আন্টি, একটু আগে অমি বলছিলো ওর খুব ক্ষিদে পেয়েছে। আর আজকে তো আঙ্কেলও তাড়াতাড়ি আসবে। আপনার রেসিপি ট্রাই করে ফিদা হয়ে যাবে একেবারে! ‘
অমিত চমকে উঠলো। এইসব এখন তাকে খেতে হবে ভেবেই কান্না চলে আসলো। মায়ের উদ্ভট সব খাবারের অমিতই একমাত্র শিকার ছিলো। মেহরুন চট করে হেঁসে বললেন,
‘বাহ! তাহলে তো আজ এই দু’জনকেই খাওয়াবো। ‘
দুপুর স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। যাক বাঁচা গেল আজকের মতো। হঠাৎ করে মনে পড়লো নতুন কোনো টিউশনির কথা জিজ্ঞেস করবে মেহরুন আন্টির কাছে। যত পাগলের কর্মই সে করুক। দুপুরকে অনেক স্নেহ করেন তিনি। এই যে রোজ এটা ওটা যাই বানাক দুপুরকে ভালোবেসেই বানায়। তাই তো এই স্নেহ ছেড়ে যেতে পারেনা দুপুর। উল্টো পাল্টা খেয়েও এখানেই থাকে। মনের দিক থেকে বেশ সহজ সরল মহিলা। দুপুর মেহরুনের উদ্দেশ্যে বলল,
‘আন্টি, আপনার সাথে একটু কথা ছিলো। ‘
মেহরুন তাকিয়ে বললেন,
‘বলো দুপুর। ‘
‘আসলে, আন্টি আপনার কোনো চেনা পরিচিত কারো যদি হোম টিউটরের দরকার থাকে আমাকে একটু জানাবেন। ‘
মেহরুন একটু ভেবে বললেন,
‘তা জানাবো, কিন্তু বাসায় কী কোনো সমস্যা হয়েছে আবারও? আমাকে বললে না কেনো! এই মাসের বেতনটা আগে দিয়ে দিতাম তাহলে। বসো, আমি এখনই নিয়ে আসছি। ‘
মেহরুন ফটাফট টাকা নিয়ে আসলেন। দুপুরের হাতে গুঁজে দিয়ে বললেন,
‘গুনে নাও। ‘
দুপুর অস্বস্তিতে পড়ে গেলো। মেহরুন আন্টিকে বলার উদ্দেশ্য ছিলো নতুন টিউশনি। কিন্তু তিনি যে এতো তাড়াতাড়ি বেতনটাই দিয়ে দিবেন তা ভাবেনি। আর টাকা নিয়ে সামনেই গুনে নেয়া আরো বেশি অস্বস্তিদায়ক। দুপুরের দ্বিধা বুঝে মেহরুন সরল হাসি দিয়ে বললেন,
‘আরে গুনে নাও, টাকা ঠিকঠাক আছে কিনা। ‘
দুপুর বাধ্য হয়ে গুনলো। খেয়াল করলো বেতনের চেয়ে দেড় হাজার টাকা বেশি আছে। দুপুর জিজ্ঞেস করার আগেই তিনি বললেন,
‘বেশি না ঠিকই আছে, ওটা তোমার রোজার আগের বোনাস। রোজায় যে দাম কতো বেড়ে যায়। তা ভালোই জানা আছে আমার। ‘
‘আন্টি এতগুলো টাকা! ‘
‘এতগুলো কোথায়! তুমি এমনিতেই নিয়মিত আসো। ঝড় বৃষ্টি হলেও দৌড়ে চলে আসো। ঠিক টাইমের চেয়েও বেশি পড়াও মাঝে মাঝে। এটা তোমার পাওনা। লজ্জা পেও না তো। ‘
দুপুরের চোখে জল এসে গেলো। একদিকে পৃথিবীর অর্ধেক জুড়ে খারাপ লোকেরা বসবাস করে। তেমনি কোথাও না কোথাও ভালো মানুষও আছে। সন্তর্পণে তারা ভিড়ে লুকিয়ে থাকে। দুপুর দূরে থাকতে চায় এসব মায়া ভালোবাসার। কিন্তু, এই স্নেহময়ী মানুষগুলো দূরে যেতে দেয়না দুপুরকে। আঁকড়ে ধরে রাখে আষ্টেপৃষ্টে।
রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আনমনে কীসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে যাচ্ছে দুপুর। অমিতকে পড়িয়ে তারপর আরো দুটো টিউশনি করিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছে। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়। আকাশে কমলা রঙের রাশি রাশি মেঘ মাথার উপর দিয়ে উড়ছে। মৃদু আলোয় হঠাৎ করে বাটন মোবাইলে রিং বেজে উঠলো। আকাশ ফোন দিয়েছে। এককালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কলেজের শুরু থেকে আকাশের সাথে পরিচয়। রিসিভ করতেই আকাশ বলল,
‘দুপুর, বোন আমার ইন্টারভিউটা একবার দিয়েই দেখ না! ‘
দুপুর দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল,
‘এই নিয়ে তো আর কম ইন্টারভিউ দেইনি। কল তো একটাও আসলো না। এখন আর এই রিজেকশন পেতে বারবার ইচ্ছে করে না৷ ‘
‘এতটুকুতেই হতাশ হলে চলবে বল! চাকরির বাজার এখন এমনই। ভাগ্যে থাকলে টিকা যাওয়া সহজ। না থাকলে অনেক কষ্ট। তুই আরেকবার চেষ্টা কর। পার্টটাইম জব। মাসে বারো হাজার টাকা। তুই পাশাপাশি টিউশনিও করতে পারবি। ‘
‘ঠিক আছে, ভেবে দেখি। ‘
কল কেটে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে রইলো দুপুর। অনেক ভেবে দেখলো কাল তাহলে একটা ইন্টারভিউ দেয়া যায়। যদি হয়ে যায়! সেই একটি ‘যদির’ অপেক্ষায় শতশত ইন্টারভিউ দিয়ে যাচ্ছে দুপুর। পড়াশোনাই বা কতটুকু হয়েছে। কয়েক দিন হলো অনার্স শেষ হয়েছে। মাস্টার্সে এখনও ভর্তি হতে পারছেনা। একদিকে বাসা ভাড়া, প্যারালাইজ শিপুদার চিকিৎসা, শিপুদার স্ত্রী তনয়ার খরচ, ছোট বোন দিতিয়ার পড়াশোনা, এছাড়াও সংসারে আরো কতো খুটিনাটি লাগে। সব মিলিয়ে না চাইলেও ইন্টারভিউ দিতে হবে। ভাগ্যে থাকলে হতেও তো পারে! বাসার গলিতে ঢুকে দেখলো সাইডে দলবল নিয়ে ক্যারাম খেলছে রাদিন। অন্ধকারে পা টিপে টিপে বাসার ভেতরে ঢুকে গেলো দুপুর। রাদিন ওইদিকে তাকিয়ে বিদঘুটে হাসি হাসলো।
–
পরদিন সকালে উঠে তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হলো দুপুর। আজকে বাসে করেই যেতে হবে। আধা ঘণ্টার পথ। যদি দেরি হয়ে যায়! কালকে আলমারিতে যত্নে পড়ে থাকা থ্রি-পিসটা বের করে পড়েছে। এই কাপড়টা পড়লেই কেমন যেন আনন্দ আনন্দ লাগে দুপুরের। জামাটা বাবা দিয়েছিলো বেঁচে থাকাকালীন। এটা পড়লে নাকি দুপুরকে বসন্তের কৃষ্ণচূড়ার মতো রাঙাপরী দেখায়। কথাটা শুনে হেঁসে কুটিকুটি হয়েছিলো সে। অথচ, এখন পড়লে নিজের কাছেই অন্যরকম লাগে। অভাবের সংসারে নতুন কাপড়চোপড় খুব একটা কেনা হয়না। নতুন কাপড় যখন দেখে তখনও অদ্ভুত একটা ভালো লাগা ছুঁয়ে চলে যায়। হাতে ফাইল নিয়ে দৌড়ে বাসস্টপে আসলো। বাসে যাত্রী আর উঠাতে চাচ্ছেনা। কিন্তু, ওইদিকে যাওয়ার এই একটাই বাস। এটা চলে গেলে বিশ মিনিট পর আবার আরেকটা আসবে। তখন তো দেরি হয়ে যাবে। সাতপাঁচ না ভেবে হেলপারকে অনুরোধ করলো উঠতে দেয়ার৷ হেলপার রুক্ষ গলায় বলল,দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এতেও রাজি হয়ে গেলো দুপুর। ঠেলাঠেলি করে উঠে জানালার পাশে হাতল ধরে যেতে লাগলো।
শ্বাস নেয়াও কষ্টকর। এমন সময় পিছনে থেকে একটা লোক বাজে ভাবে দুপুরের কোমরে হাত রাখলো। দুপুর আঁতকে উঠে পেছনে তাকালো। বয়স্ক একজন। লোকটা এমন ভাব ধরে আছে যে কিছুই জানেনা। দুপুর ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো। এখন যদি চিৎকারও করে তাহলেও বলবে, ভীড়ের মধ্যে উঠেছো কেনো! কিন্তু এদের কে বোঝাবে! গরীবদের কোনো লিঙ্গ হয়না। গরীব শুধু গরীবই হয়। ছেলে আর মেয়ে চিন্তা করে কোনো আলাদা নেই এদের। ছেলেদেরও যেমন ক্ষুধা পায়। মেয়েদেরও পায়। ছেলেদের যেমন পরিবারের দায়িত্ব থাকে। একজন মেয়েরও থাকে। বাহ্যিক রূপটাই শুধু আলাদা। দুপুর বারবার হাত সরিয়ে দেয়া সত্ত্বেও লোকটা বারবার গায়ে হাত দিচ্ছে। এক পর্যায়ে মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো। আর অল্প একটু পথ। চুপচাপ সহ্য করেই যেতে হবে। হুট করেই কে যেনো এক টান দিয়ে দুপুরকে দূরে সরিয়ে নিয়ে আসলো। গেটের সাইডের দিকটায় ওকে রেখে আড়াল করে দাঁড়ালো একটা ছেলে। দুপুর মাথা উঁচু করে দেখার চেষ্টা করলো ব্যাক্তিটি কে। কিন্তু উচ্চতায় ছেলেটা এতো বেশি লম্বা কিছুতেই দেখতে পেলোনা। মনে মনে খুব খুশি হলো। বাজে স্পর্শ থেকে রেহাই পেয়ে কৃতজ্ঞতায় চোখ টলমল করলো। ছেলেটার পিঠ দুপুরের দিকে। শুধু একগোছা কোঁকড়ানো চুল আর সাদা শার্টটাই নজরে আসলো। এছাড়া কিছুই দেখলো না। বাস থেমে গেলো। ছেলেটা সামনের দিকে ফিরে খুব যত্ন করে জায়গা করে দিলো দুপুরকে। দুপুরকে যেতে যেতে কিছু বলার আগেই ছেলেটা কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,
‘নিজেকে প্রটেক্ট করতে জানতে হয়। না জানলে কখনো বাসে উঠবেন না। সবসময় কেউ এসে সাইড করবেনা ম্যাডাম। নেক্সট টাইম কেউ এমন করলে ওড়নার সেফটিপিনটাই কাজে লাগাবেন। বুঝেছেন? ‘
দুপুর বোকার মতো তাকিয়ে বলল,
‘বুঝেছি!’
কথা বলতে বলতে ঘোরের মতো তাকিয়ে রইলো ছেলেটার কাজলদিঘীর মতো আকাশীরঙা চোখদুটোতে। লেন্স লাগিয়েছে কিনা বোঝা গেলো না। দুপুর শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো। বাস থেকে নেমে যেই মনে পড়লো ধন্যবাদ দেয়া উচিত। তখনই পেছনে ফিরলো। বাস ছেড়ে দিয়েছে। সামনের দিকে চলে যাচ্ছে।
আহ! চলে গেলো! ধন্যবাদটা আর দেয়া হলো না! দুপুর মনে মনে আফসোস করে বলল,
‘আমি এতো মনভোলা কেনো!ভাল্লাগেনা ধ্যাৎ!’
খিটমিট করতে করতে অফিসের ভেতরে ঢুকলো আল্লাহর নাম নিয়ে। দিনের শুরুটাই তো খারাপ হলো। ভেতরে কী হবে কে জানে!
চলবে-
লেখায়-নাঈমা হোসেন রোদসী।
বিঃদ্রঃ রাব্বি নামটা পরিবর্তন করে রাদিন রাখা হয়েছে।সায়রী অর্থাৎ কবিতা। মনসায়রী অর্থ মনের কবিতা।