ভালোবাসা_সীমাহীন,শেষ_পর্ব

ভালোবাসা_সীমাহীন,শেষ_পর্ব
লেখনীতেঃInsia_Ahmed_Hayat

২০১৮ রানীর সাথে রাসেলের বিয়ে হয়।
কাবিন করে রাখা হয় তখন। রানী এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিলো। বিয়ে হলো পুরোপুরি ভাবে রানী রাসেলের হয়ে গেলো। এরপর শুরু হলো রানী ও রাসেলের প্রেম। আমি বিয়ের পর টানা এক বছর প্রেম করেছি রাসেলের সাথে। আমরা এক সাথে ঘুরতাম, ফুসকা খেতাম, হুটহাট করে যেখানে সেখানে চলে যেতাম। রাসেল আমার এক্সামের জন্য অনেক হেল্প করে। এক্সামের সময় সে নিয়ে যায় আবার সেই দিয়ে আসে। আস্তে আস্তে এক্সাম শেষ হলো। সে যে আমাকে ভালোবাসতো তা আমি তখনো জানি না। কিন্তু বিয়ের পর বুঝতে পারি সে আমাকে ভালোবাসে আমিও বাসি। আস্তে আস্তে আমাদের প্রেম গভীর হচ্ছে এমনও সময় গিয়েছে যে রাতের বেলা তার সাথে আমি লং ড্রাইভে চলে গিয়েছি। একদিন কথায় কথায় বলেছিলাম যে
রানীঃ রাসেল আমাকে আপনি বিয়ে করলেন কেন? আর ওই মেসেজের উত্তর কিন্তু এখনো দেননি?

রাসেলঃ যেদিন আমাদের বাড়িতে একেবারের জন্য যাবা সেদিন বলবো। আর হ্যা আমার কথা শুনে কিন্তু তুমি দৌড় দিতে পারবা না।

রানীঃ ওটা দৌড় নয় খিচ্চা দৌড় বলে হাহাহা
এরপর দুজনেই হেসে দিলাম। আমার দৌড় নিয়ে রাসেল অনেক মজা নিতো মাঝে মাঝে রেগে যেতাম কেন বারবার দৌড় নিয়ে খোটা দিবে।
এরপর আস্তে আস্তে এক বছর হয়ে গেলো। আমি অনার্সে ভর্তি হলাম।
২০১৯ এ আমার আবার বিয়ে হয় মানে বিয়ের অনুষ্ঠান। আমি তখন অনার্স প্রথম বর্ষে । আমার আর রাসেলের বাড়ি একই এলাকা ধরতে গেলে বিয়ে করে হেটে হেটে শ্বশুর বাড়ি যাবো কিন্তু আমার অনেক ইচ্ছা ছিলো একটু দূরে বিয়ে করে ফুল দিয়ে সাজানো গাড়ি করে যাবো। এই ইচ্ছার কথা আমি রাসেলকে বলেছিলাম কিন্তু ভাবতে পারিনি যে এই ইচ্ছা ওইদিন রাসেল পূরণ করবে। আমি দ্বিতীয় বারের মত বউ সাজি এইবারের অনুষ্ঠান একটু বড় করে করানো হয়। বিয়ে শেষ এবার বিদায়ের পালা বিশ্বাস করেন হায়াত আপু আমার বিয়েতে কেউ কান্না করেনি কেমন নিষ্ঠুর সবাই। হেসে হেসে আমায় বিদাই দিয়েছে। মেকাপ নষ্ট হবে সে চিন্তা না করেও আমি হালকা পাতলা কান্না করলাম কিন্তু কেউ কাদলো না সবাই বলে এক দৌড় দিয়ে বাপের বাড়ি এসে পড়তে পারবো। ভাবা যায় এগুলা শ্বশুরবাড়ি কাছে বলে কেউ কাদলো না। এরপর আমাকে বিদায় দিলো গাড়ির কাছে এসে আমি অবাক বিয়েতে রাসেল ফুলদিয়ে সাজানো গাড়ি নিয়ে আসে আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এরপর আমি ও আমার বর শুধু গাড়িতে উঠি ও আগে থেকেই ড্রাইভিং জানে। এরপর আর কি বাবার বাড়ি থেকে সন্ধ্যা ৭ টায় বিদায় নিয়ে যে গাড়িতে উঠছি ১০ বেজে গেছে শ্বশুর বাড়ি আর পৌঁছাতে পারিনি। কারন আমার বর রাসেল আমাকে পুরো এলাকা ৫০ বার গাড়ি এইপাশ থেকে ওইপাশে এই রাস্তা থেকে ওই রাস্থায় ঘুরিয়েছে। মনে হচ্ছে আমি ঢাকা টু চট্রগ্রাম যাচ্ছি। বেশ ইনজয় করেছিলাম মূহুর্তটা ভাগ্য ভালো তখন করোনা ছিলো না। বেচারা ক্যামেরা ম্যান সেই যে আমাদের পেছন পেছন বাইক নিয়ে ঘুরছে শেষ ফলে বেচারা রাগে দুঃক্ষে বাসায় চলে গেছে। আমি বিদায়ে কান্না বাদ দিয়ে অবাকের উপর অবাক হয়েছি। ভেবেছিলাম গাড়িতে মন ভরে কাদবো কিন্তু আমি এত অবাক আর খুশি যে কি বলবো। আমাদের গাড়ি এইভাবে ঘুরতে দেখে এলাকার মানুষরাও বিরক্ত সাথে অবাক। অনেকে এসে তো জিজ্ঞেসও করছে কি ভাই রাস্তা ভুলে গেছেন নাকি। আমি তো হেসে হেসে শেষ । রাত ১০ টায় বাসায় যাই বরন করা হয় এরপর খাওয়া দাওয়া। কেউ আমাদের কিছু বলেনি। আমি ভেবেছিলাম বকাঝকা হবে কিন্তু নাহ তেমন কিছু হয়নি।

বাশের ঘর থুক্কু বাসর ঘরে আসতে আসতে রাত ১১.৩০ বাজে। নামাজ আদায় করে উপহার পালটা পালটি করে বসলাম। আজ তার থেকে সব জেনেই ছাড়বো। কোনো ঘুম নেই।
আমি এইদিকে বসেছি সে ধুম করে শুয়ে পড়লো মন চাচ্ছিলো কয়েকটা কিল দিয়ে বসি কিন্তু দিলাম না। কারন চকলেট থেকে আমি বঞ্চিত হতে চাই না।

এরপর সে বলা শুরু করলো।
রাসেলঃ অনেক দিন পর বাসায় আসছিলাম। এসে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বের হই এমন সময় বৃষ্টি শুরু হলো আমরা একটা চায়ের দোকানে বসলাম। চা খাচ্ছি হঠাৎ চোখ গেলো একটা স্কুল ড্রেস পড়া পিচ্চি মেয়ের দিকে। যে কিনা নিজের জুতা খুলে দুই হাতে নিয়ে রাস্তায় জমে থাকা কাদার পানিতে বার বার লাফ দিচ্ছে। আমি অবাক হয়ে চেয়ে ছিলাম। এরপর দেখলাম যে হঠাৎ একটা, দুইটা গাড়ি গিয়ে তাকে ভিজিয়ে দিলো অথচ সে এই পানি দিয়ে ভিজে ভিজে আনন্দ পাচ্ছে আমি অবাকের উপর অবাক হয়ে আর অপেক্ষা না করে সোজা তার কাছে চলে গেলাম। তাকে হালকা ধমক দিয়ে নাম জিজ্ঞেস করলাম আর তার ভয়ার্ত চেহারা দেখে আর কিছু বলতেই পারিনি। সে আমার কথা শুনে এক দৌড় দিয়েছে আমি তো আমার হাসি আটকাতেই পারিনি। বাচ্চা মেয়ে হয়তো ভয় পেয়েছে। এরপর সজিবের কাছ থেকে জানতে পারলাম তার নাম রানী। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়িনি কিন্তু ভালো লেগেছিলো। আস্তে আস্তে তার প্রেমে পড়ে যাই। আমি এরপর থেকে সময় পেলেই আমি বাসায় আসতাম এক নজর তাকে দেখার জন্য। সে আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে স্কুলে যেতো আর আসতো আমি দূর থেকে তাকে দেখতাম। মাঝে মাঝে আমাদের চোখাচোখি হতো। তখন সে ছোট তাকে আমি আমার অনুভূতি গুলো কিভাবে বলব তাই ভাবছিলাম। এরপর এক দিন বৃষ্টির সময় তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমাদের বাড়ির সামনে এসে তার ছাতা উলটে গেলো আর সে ছাতা ফেলে চলে গেলো আমি তখন নিচ তলায় গেট থেকে বের হয়ে তার ছাতা উঠিয়ে ঠিক করে দিলাম কারন আমি জানি যে সে আসবে। এরমাঝে তার ব্যাপারে সব খোজ আমি নিয়ে নিয়েছি। এরপর তার ছাতা আমি হাতে নিয়ে তার অপেক্ষা করছিলাম। আর সে আমাকে দেখে হয়তো অবাক হয়েছে নয়তো ভয় পেয়েছে। তাকে একটা প্রশ্ন করলাম আর সে আবার দিলো দৌড়। এত দৌড়াদৌড়ি করতে পারে মেয়েটা। এরপর আমি বাইক নিয়ে তার পিছু পিছু গেলাম দেখতে যে আবার কোন কাদার পানিতে গড়াগড়ি খায় কে জানে। হাহাহাহা

তার এই কথা শুনে একটা কিল বসিয়ে দিলাম। সে হেসেহেসে কুটিকুটি।আর এইদিকে আমি লজ্জা নীল হয়ে যাচ্ছি। এখন বুঝতে পারছি আমি কি কি আজব কাহিনি করেছি। নিজেকে বলদ ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না। এরপর সে আবারও বলা শুরু করলো।

রাসেলঃ তাকে যতটা বোকা ভেবেছি ততটা সে নয়। নিজের ছাতা উল্টো করে কিভাবে ঝাটার পিটা থেকে বাচা যায় সেটা তার থেকে শিখে নেওয়া উচিত। এরপর তাকে আমি দূর থেকে দেখে চলে যেতাম কখনো ফলো করিনি শুধু খেয়াল রাখতাম যে সে ঠিক আছে কি না। তার ব্যাপারে আমি ভালো করে জানি যে সে কেমন। এরপর একদিন কাকতালীয় ভাবে সে আমাদের বাসায় বেহুস হয়ে প্রথম আসে আমি অনেক অবাক হয়ে যাই। তার এই অবস্থায় আমি অস্থির সবার সামনে কিছু বলতেও পারছিলাম না। এরপর বড় ভাবিকে সবটা জানাই। বিশ্বাস করবে না তোমার সামনেই আমি সবাইকে বলেছি যে আমি রানীকে ভালোবাসি কিন্তু তখন তুমি শুনতে পাওনি পাবা কিভাবে কুকুরের দৌড়ানি খেয়ে বেহুস হয়ে গেছো হাহাহাহা

আমি অবাক হয়ে গেলাম
রানীঃ এক মিনিট এক মিনিট তুমি কিভাবে জানলা যে আমি কুকুরের দৌড়ানি খেয়ে বেহুস হয়ে গেছি।

রাসেলঃ জানবো না তুমি তোমার পেটের কথা কখনো চাপা রেখেছো মারিয়াকে সব বলতা আর মারিয়া সজিবকে বলতো আর সজিব আমাকে।।

আমি অবাক হয়ে শোয়া থেকে উঠে ঝিম মেরে বসে ভাবছি মারিয়াকে কিভাবে পিটানো যায় আমার মান সম্মান শেষ করে দিলো। এরপর সে আমাকে টান মেরে শুয়ে পড়তে বলল আর বলা শুরু করলো।

রাসেলঃ সব শেষ এ সে ক্লাস 10 এ উঠলো এরমাঝে সবাই জানলো রানীর ব্যাপারে সবাই বলছে বিয়ের কথা কিন্তু আমি আরেকটু সময় নিলাম তাকে আরেকটু সময় দিবো সে এখনো অনেক ছোট সাথে আমিও স্টুডেন্ট। এরপর সে ফেসবুক একাউন্ট খুলে নতুন তাই ফোন নাম্বার হাইড করেনি এরপর আমি সজিবকে দিয়ে ফোন নাম্বার হাইড করাই। তাকে রোজ রোজ মেসেজ দিতাম আমি জানতাম সে এই মেসেজ দেখবে না। সে আমার রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করেনি ঝুলিয়ে রেখে আমাকে লম্বা করে দিলো এমনকি এখনো এক্সেপ্ট করেনি। আমি তার ইনবক্সকে নিজের ডাইরি বানিয়ে ফেলি। যখনই তার দেখা পেতাম সঙ্গে সঙ্গে তাকে মেসেজ দিয়ে সময়, তারিখ আর জায়গার নাম লিখে রাখতাম। এরপর সে তার বিয়ের নাটক করলো আল্লাহ কি মেয়ে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তখন আমি ভাবতেও পারিনি এটা মজা করে করেছে। মারিয়া কান্নাকাটি করে সজিবকে বলেছে আর সজিব আমাকে যখন ব্যাপারটা বলল নিজের চোখের সামনে অন্ধকার দেখতে পাচ্ছিলাম। আমি কি সত্যি তাকে হারিয়ে ফেললাম নাকি। এরপর সজিব জানালো যে মারিয়ার সাথে মজা করেছে। আমার এত রাগ উঠলো যে এটা কেমন মজা আর থাকতে না পেরে সোজা ইমুতে ফোন দিলাম। । আমি ভাবিনি যে সে কল রিসিভ করবে। একটা নতুন সিম কিনে মিস কুইন নাম দিয়ে একাউন্ট খুলেছিলাম। সেই মিস কুইন এখন মিসেস রাসেল হয়ে গিয়েছে। সব কিছুর মাঝেও কিন্তু তার দৌড় দেওয়ার অভ্যাস বদলায়নি। হাহাহাহা

রানীঃ তো আপনি আমাকে ভালোবাসেন তা বলেননি কেন হ্যা।

রাসেলঃ তোমার ব্যাপারে আমি ভালো করে জানি তুমি লাভ ম্যারেজ না এরেঞ্জ মেরেজ করবে তাই লাভের মাঝে আমি এরেঞ্জ মেরেজ করতে চেয়েছি। আর আমি জানি তোমাকে আমার থেকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তোমার এসএসসির সময় আমি প্রতিদিন তোমাদের বাসার কাছাকাছি এসে দাড়াতাম তুমি এক্সাম দিতে যাওয়ার সময় এক নজর দেখে চলে যেতাম। এরপর এক্সাম শেষ এ অনেকদিন তোমার দেখা পাইনি। তুমি নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছো। এরপর আসার পর যখন তোমার পায়ের আঙ্গুল এ ব্যাথা পাও আমি তখন খুব কষ্ট পাই। মারিয়া তোমার পায়ের ছবি সজিবকে পাঠাতো আর সজিব আমাকে। মারিয়া কিন্তু জানতো না যে আমি আর সজিব ফ্রেন্ড। সজিবকে আমার ব্যাপারে বলতে মানা করি। আমাদের অনেক ফ্রেন্ড এত ফ্রেন্ড এর হিসাব কে রাখবে। এরপর যখন তুমি তোমার বান্ধুবিদের সাথে রেস্তোরাঁতে যাও আমিও তোমাকে দেখার জন্যই যাই। কিন্তু তুমি কি করলা আবারো দিলা দৌড়। এরপর এভাবে তোমাকে দূর থেকে দেখতাম সজিব ও মারিয়ার বিয়েতে তোমাকে দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলি তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু সেই যে তুমি আমাকে দেখে পালিয়ে গেলা অনেক খুজেও পেলাম বা শেষ ফলে তুমি তোমার হিল দিয়ে আমার পায়ে ১২ টা বাজিয়ে দিলে নিজেকে অনেক কষ্টে সামলিয়ে সেখান থেকে চলে যাই।
এরপর তোমাকে আমি দেখতাম কিন্তু তুমি আমায় দেখোনি। শেষ ফলে সবাইকে বলে তোমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই। আর অবশেষে আমরা এক হয়ে যাই। সত্যি বলতে অপেক্ষার ফল কিন্তু মিষ্টি হলো। তোমাকে একেবারের জন্য পেয়ে গেলাম।

এরপর উঠে বসে আমিও বসি আমার হাত দুটো ধরে বলল
রাসেলঃ রানী আমি তোমাকে ভালোবাসি এখন থেকে না ২০১৫ সাল থেকে টানা ৫ বছর ধরে।

এরপর আমরা এক হয়ে গেলাম❤️।
এভাবেই চলছে ভালোবাসার মাঝে আমাদের জীবন।

আমার দৌড় দেওয়ার কাহিনি কিন্তু শেষ আমি আর এখন দৌড় দেইনা।
শেষ হওয়ার আগে একটা কাহিনি বলি এবারের ঈদের কথা
অর্পা আপুর গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সাথে আয়াত আপুর ফুসকা নিয়ে অনুপ্রানিত হয়ে একটা গান বানিয়েছিলাম। রাসেলকে শুনিয়ে শুনিয়ে গাচ্ছিলাম,,
“বিশ্বাস করো রাসেল
তুমি আমার ফুসকা আমি তোমার টক কিনে দিলে ফুস্কা আমি হবো রক
দেওনা কিন্না জগ
আমি তোমার মগ
একটা ফুসকা দেও আমি দিমু তোমায় টক
ওয় ফুসকা ফুসকা ফুসকা , দেও দেও দেও ফুসকায়ায়ায়ায়ায়ায়া”

এই গান শুনে আমার জামাই এর বানী
“করোনার মধ্যে নো ফুসকা নো টক। ফুসকা ফুসকা করলে ঈদের মধ্যে সালামি পাইবা না।”

তার এই কথায় আমি সালামির লোভে ফুসকাকে ত্যাগ করলাম। ভালো থেকো ফুসকা সালামি পাইলে তোমারে কিনমুনে। কিপটা রাসেল তোমাকে আর আমাকে এক হতে দিবে না।

মাঝে মাঝে আমি এইধরনের গান বানিয়ে তার কান ঝালাপালা কিরে ফেলি। বেচারা আমার অত্যাচার চুপচাপ সহ্য করে।
এইতো অনেকদিন আগের কথা হায়াত আপুর বান্ধুবি অর্পা আপুর গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জোড়ে জোড়ে গানগাচ্ছিলাম আর রাসেল মাত্র শুয়েছে।
“বেধের মেয়ে ফুসকায় আমার মরিচ নিয়েছে দিবে দিবে বলে ফুসকা আয়াত আপুর কাছে চলে গিয়েছে। ” । এখন আমি বাথরুমে আছি। কারন চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে এই গান গাচ্ছিলাম জামাই আমার লাফ দিয়ে উঠছে। তার থেকে বাচতে বাথরুমে বসে ছিলাম।
🦋
আমি একজন টমেটো সস পাগলি। অনেক পাগলি দেখছেন ফুসকা,আইসক্রিম, চকলেট, বিরিয়ানি কিন্তু আমি টমেটো সস পাগলি।আমার টমেটো সস এতো পছন্দ যে সব কিছুতে সস দিয়ে খাই নুডলস এ সস,মুড়িতে সস, বিরিয়ানির সাথে সস, চিপ্সের সাথে সস, সবজির সাথে সস, পরোটার সাথে সস,, নান রুটির সাথে সস,এমনকি ডিমের সাথেও সস মিশিয়ে খাই। তার উপর যখন ভাতের সাথে কিছু ভালো লাগে না তখন সস দিয়ে ভাত খাই। সস দেখলে খালি খেতে ইচ্ছে করে ।
আমার এই কাহিনি দেখে আমার বরের বানী আমার মাথায় ৮ টা তার ছিরা। অনেক আগেই আমাকে পাবনায় ভর্তি করাতো হলে কিন্তু পাবনায় নাকি সিট খালি নাই তাই বাসায় রাখছে। আমার সসের কাহিনি এখন আমার না ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে দাড়ান বলছি। একদিন
ভাসুরের ৪ বছরের মেয়ে দৌড়ে এসে বলল
চাচী চাচী আমি রক্ত খাবো
রানীঃ (আমি অবাক হয়ে বললাম) ছোয়া কি বলো এইগুলো রক্ত খাবা। রক্ত খায় না ছি পচা জিনিস,।
মেয়েঃ না না না না আমি খাবো অনেক মজা আরো খেয়েছি তো আরে তুমিই তো আমাকে দিয়েছো।
আমি ভাবতে লাগলাম আমি আবার কার রক্ত খাওয়ায় দিলাম মেয়েটা কি ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেলো নাকি ।
অনেক গবেষণার পর জানতে পারলাম উনি সস চাচ্ছে। টমেটো সস।
লে আমিও ভ্যাম্পায়ার সেও আমার মত ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেলো লাল সস থুক্কু টমেটোর রক্ত খেয়ে। হাহাহাহাহা
আমাদের কথপোকথন শুনে রাসেল বলে আমি নিজেও পাগল সাথে ছোয়াকেও পাগল বানাচ্ছি।

সব শেষ এ একটা জিনিস বলে যাই।কয়েকদিন আগে রাসেলকে কবিতা শোনাচ্ছি
রানীঃ তুমি আলু আমি ভাজী
করবো বিয়ে ডাকো কাজী
আমার এই গান শুনে আমার বর রাসেলে উক্তি
রাসেলঃ এই কথাটা বিয়ের আগেও বলতে পারতে তখন না হয় ভাবা যেতো এখন ৩ বছর আগেই কাজী ডেকে ভাজি হয়ে গিয়েছি
বিয়ের আগে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে দেরী দৌড় দিতে দেড়ী নেই। আর আজকে আসছ বিয়ের জন্য প্রপোজ করতে যাও তো,
রানীঃ ঠিক আছে ঠিক আছে আরেকটা কবিতা শুনাই। শোনো
আমি আলু তুমি ভাজী
দুইজন মিলে বাবুকে খাওয়াবো সুজি🥰

এই বলে দিছি আমার পুরোনো স্টাইলে খিচ্চা দৌড় । আর কিছু পারি আর না পারি জবাব না দিয়ে দৌড় ঠিকই দিতে পারি।🥰 খুব যলদি বাবুকে খাওয়াবো সুজি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। ভালো থাকবেন সবাই।

সমাপ্ত ❤️

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here