ভালোবাসা_এমনও_হয় Part_02,3

ভালোবাসা_এমনও_হয়
Part_02,3
Writer_Eshetaq_Nora
Part_02

ইশান রেগে বাড়িতে ঢুকলো।।আর সাথে সাথেই ইশানের মা তার গালে থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো।

ইশানঃ মামনি???

মিনাঃ একদম চুপ।।মামনি বলবি নাহ আমায়।।নেশার সাথে কিসব করেছিস তুই হ্যাঁ। কি ভেবেছিস।এতো টা নিচে নামতে পারলি তুই
[ইশানের মায়ের নাহ মিনা।।আর নেশার মায়ের নাহ রিনা আর বাবার নাম নিলয়]

ইশানঃ সব বলেদিয়েছে ওই মেয়ে তোমায় তাই নাহ।।।বস্তির মেয়ে একটা।।আর ওই মেয়ে জানো কি করেছে।।ও আমাকে আমার সব বন্ধুদের সামনে গায়ে হাত তুলেছে।।

মিনাঃ বেশ করেছে মেরেছে।।আমি হলে পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে দিলাম।।আর কি বলছিস ও বস্তির মেয়ে।।ভুলে যাস নাহ ও তোর খালাতো বোন হয় সম্পর্কে।। নিজের চাচাতো বোন নাই মানতে পারিস।।কিন্তি নিজের খালাতো বোন ভেবে তো একটু সম্মান দিতে পারিস।

ইশানঃ ওই মেয়েকে আবার কিসের সম্মান।আর কি বললে ও আমার চাচাতো বোন।।মামনি তুমি ভুলে যেও নাহ ওর সাথে আমার রক্তের কোন সম্পর্ক নেই।।না খালামনির দিক দিয়ে আর নাহ চাচুর দিক দিয়ে।।ওকে খালামনি বস্তি থেকে তুলে নিয়ে এসেছে তা কি তুমি ভুলে গেছো।

মিনাঃ ইশান😡😡😡।।ছি ইশান।।যতোই হোক ও তোমার বোন।।তোমার খালামনি আর চাচু যদি এই কথা গুলো শুনতো তাহলে কতো টা কষ্ট পেত।।আর তুমি কিনা।।ছি।।।তোমার মুখ আমি দেখতে চাই নাহ।।এখনি বের হয়ে যায় আমার বাড়ি থেকে।

ইশানঃ তুমি ওই রাস্তার মেয়ের জন্য আমায় বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছো।

মিনাঃ ও কোন রাস্তার মেয়ে নাহ।।ও এইবাড়ির মেয়ে ছিলো আর থাকবে।।

ইশানঃ ঠিকাছে যাচ্ছি চলে।।কিন্তু এই অপমানের দাম নেশাকে দিতে হবে।। আই সোয়ার।

ইশান রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল।

( এখন আসুন আপনাদের প্যাচ গুলা বুঝিয়ে দেই।।হ্যাঁ নেশা রিনা ও নিলয়ের আপন মেয়ে নাহ।।নেশাকে তারে কুড়িয়ে পায় তখন নেশা খুব ছোট ছিলো।কিন্তু ইশান একটু একটু বুঝতো তখন।।নেশাকে তার ছোট থেকেই সহ্য হতো নাহ।।কারন নেশা অনাথ।।তার মনে হয় নেশা এই বাড়িতে থাকে বলে ইশানের আদর কমে গেছে এই বাড়িতে।।সে ক্ষোভ তার মনে এখনো রয়ে গেছে।।সে সব সময় নেশাকে বস্তির মেয়ে বলে পরিচয় দিতো।একদিন ইশানের বাবার রাগারাগির ফলে নেশাকে নিজের খালাতো বোন বলতে বাধ্য হয়।।কিন্তু সে নেশাকে কখনো নিজের চাচাতো বোন বলে পরিচয় দিতো নাহ।।কারন তার মনে হয় চাচাতো বোন বলতে বেশি আপন বুঝায়।।আর নেশাকে সে কখনো আপন ভাবেনি।।কিন্তু নেশার বাবা মা অর্থাৎ নিলয় আর রিনাকে খুব ভালোবাসে।।কিন্তু সে রিনাকে কখনো চাচি বলে নাহ।।সবসময় খালামনিই বলে।।)

মিনা পিছনে ঘুরে দেখলো নেশা তাকিয়ে আছে তারদিকে।

নেশাঃ খালামনি আমায় ইশান ভাইয়া সত্যিই খুব অপছন্দ করে তাই নাহ🥺🥺

মিনাঃ আরে পাগলি তেমন কিছু নাহ।।ও এখন অনেক রেগে আছে তো তাই এইসব বলে ফেলেছে।।তুই তো জানিস ইশান রাগলে তার মাথা ঠিক থাকে নাহ।

নেশাঃ কিন্তু খালামনি তুমি ইশান ভাইয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে কেন।।ও এখন কোথায় থাকবে?

মিনাঃ আরে থাকবে হয়তো কোন বন্ধুর বাড়ি।।আবার চলে আসবে তুই দেখিস।


এইদিকে

ইশানঃ খুব বড় ভুল করলি তুই নেশা।।একে তো সবার সামনে আমায় চড় মারলি এখন আবার আমায় বাড়ি থেকে বের করলি।। এর শাস্তি কি তুই নাহ পাবি।।অবশ্যই পাবি।।

চলবে
#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#writer_Eshetaq_Nora
#Part_03

এক সপ্তাহ পর-

ইশানের কোন খবর নেই কোথায় আছে কি করছে।

রিনাঃ মিনা আপু।।এখন তো ইশানকে ফিরে নিয়ে আয়।

মিনাঃ আরে কোথায় আছে তাই তো জানি নাহ।ফোন ও দিয়েছিলাম।।মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে।এমন তো করে না কোন সময়। প্রতিবারই তো রাগারাগি করলে পরেরদিনই ফিরে আসে।।

নেশাঃ খালামনি আয়ান ভাইয়াকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করবো?

রিনাঃ আয়ান কে?

মিনাঃ আয়ান ইশানের কলেজ ফ্রেন্ড।। তোর কাছে ওর নাম্বার আছে?

নেশাঃ হ্যাঁ আছে।।

মিনাঃ আচ্ছা তাহলে ফোন দে।।

মিনা ফোন দিয়ে জানতে পারলো ইশান তাদের বাড়িতেই গেছে।।মিনা আয়ান কে বুঝিয়ে ইশানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে বললো।

এইদিকে

আয়ানঃ ইশান শুনছিস

ইশানঃ হোয়াট😕

আয়ানঃ আসলে তোর বাড়ি থেকে ফোন দিয়েছিলো।

ইশানঃ সো?🤨

আয়ানঃ তোকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেছে।।বলেছে এমন রাগারাগি আর করবে নাহ।

ইশানঃ হাসালি আয়ান😂।ওই বস্তির মেয়ে যতোদিন এই বাড়িতে থাকবে ততোদিন আমার সাথে এই রকমই হবে।।

আয়ানঃ দেখ ইশান হয়তো বা ও তোর আপন খালাতো বা চাচাতো বোন নাহ।।কিন্তু তোর খালামনি আর চাচু যখন নেশাকে মেনে নিয়েছে তাহলে তোর সমস্যা কি।।আর ও বস্তির মেয়ে তাই বা তোকে কে বললো।।ও তো এখন তোদের বাড়ির মেয়ে তাই নাহ।

ইশানঃ উফফ আয়ান তুই চুপ করবি।। ও আমার বোন নাহ।।ও হলো একটা বস্তির মেয়ে।।😡😡😡🤬

আয়ানঃ আচ্ছা আচ্ছা বস্তির মেয়েই।।😶ঠিক আছে নেশা বস্তির মেয়েই।। কিন্তু বস্তির মেয়ে হলে তো মেয়ে নাকি।।তুই ওকে যে ভাবে সবার সামনে অপমান করিস তা কি ঠিক। ও তো একটা মেয়ে।

ইশানঃ ও মেয়ে না কি আই ডোন্ট কেয়ার।।ওকে আমি কখনোই রিস্পেক্ট করতে পারবো নাহ মানে পারবো নাহ😏

আয়ানঃ বাট কেন😟

ইশানঃ তা তোর নাহ জানলেও হবে।।

আয়ানঃ দেখ ইশানে কি হয়েছে আমায় বল।আমি যতো দুর জানি তুই আর যাই করিস মেয়েদের অসম্মান করিস নাহ তাহলে আজ কেন?

ইশানঃ উফফ তুই এতো প্রশ্ন কেন করছিস আয়ান😡😡।তোর বাড়িতে থাকচ্ছি বলে কি তোর প্রবলেম হচ্ছে।।তাহলে বল।আমি চলে যাই।

আয়ানঃ আরে প্রবলেম হবে কেন।।আমি তো যাস্ট তোকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম।😐
ঠিক আছে তোর যতোদিন ইচ্ছা থাক।

আয়ান ইশানের মা কে ফোন দিলো।

আয়ানঃ আন্টি ইশান কিছুতেই রাজি হচ্ছে নাহ।😞

মিনাঃ ওহহ আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়।

নেশাঃ কি হলো আন্টি?

মিনাঃ ইশান নাকি আসবে নাহ বলে দিয়েছে।🙁

নেশাঃ আমি যাবো নিয়ে আসতে

মিনাঃ দেখ ও তোর উপরই রেগে আছে।।তুই গেলে আরো রাগ উঠবে।

নেশাঃ কিন্তু আমি গিয়ে ক্ষমা চাইতে তো পারি।।হয়তো রাগ কমবে

মিনাঃ তুই কেন ক্ষমা চাইবি।।তোর তো কোন দোষ নেই।।একে তো নিজে ভুল করবে আবার রাগ করে চলে যাবে।।তুই কোন ক্ষমা চাইবি নাহ

নেশাঃ কিন্তু খালামনি উনি তো আমার ভাইয়াই।ভাইয়ের কাছে একটু ক্ষমা চাইলে কি হবে।।কতোদিন ধরে ও এই বাড়ি থেকে দুরে আছে।।বাড়ির ছেলে বাইরে থাকলে কি ভালো দেখায়।😊

মিনাঃ তোর যা ইচ্ছা তুই কর।।আমি কিছু জানি নাহ।😒

মিনা চলে গেল।

নেশাঃ আমি জানি খালামনি তুমি ও চাও ইশানকে ফিরিয়ে আনি।।কিন্তু আমাকে নিচুও দেখতে চাও নাহ।।কিন্তু কি করবো বলো।🙂

নেশা আয়ানদের বাড়ি গেল।

আয়ানঃ ইশান দেখ কে এসেছে।

ইশানঃ কে।।তুই এখানে কেন এসেছিস।🤬

নেশাঃ ভাইয়া আসলে আমি…

ইশানঃ তুই কি চাস আমি এখানে ও নাহ থাকি।😡

নেশাঃ নাহ ভাইয়া আসলে আমি ক্ষ…

ইশানঃ তুই ক্ষমা চাইলেই আমি ক্ষমা করে দেবো তা তুই ভাবলি কিভাবে।😤😤

নেশাঃ ভাইয়া যা হয়ে গেছে তা ভুলে যাই।।আমি ক্ষমা চাইছি।।আসলে ওই সময় এতো বাজে কথা বলছিলো সবাই তাই রাগ টা কন্ট্রোল করতে পারি নি।😔

ইশানঃ বলা শেষ।।এখন আসতে পারিস।

নেশাঃ ভাইয়া প্লিজ ফিরে চলো নাহ।।খালামনি তোমায় খুব মিস করছে।।

ইশানঃ তুই যাবি এখান থেকে( চিৎকার করে)🤬🤬

নেশা ভয় পেয়ে যায়।।তাই চলে যায়।।

আয়ানঃ এখন বেশি হয়ে যাচ্ছে নাহ ইশান।।মেয়েটা তোকে সরি বলেছে তবুও তুই রাগ করে থাকবি।

ইশানঃ আই ডোন্ট কেয়ার। 😒

আয়ানঃ ইশান প্লিজ।।দেখ এতে তো ওর দোষ ছিলো নাহ।।ওর জায়গায় অন্য যে কোন মেয়ে থাকলে আরো বেশি রিয়েক্ট করতো ইশান।।সেই তুলনায় ও খুব কম রিয়েক্ট করেছে।।।ইশান তুই জানিস নেশা অন্যরকম।। ও তোর উপর বিশ্বাস করেছিলো। বাট তুই ও ওকে নিয়ে বাজে কথা বললি তাই হয়তো ও রাগটা…

ইশানঃ তোর ওই বস্তির মেয়ে নিয়ে এতো দরদ উঠলো কেন।।মনে ধরেছে নাকি।( তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়ে)

আয়ানঃ তুই… আচ্ছা তোর যা ইচ্ছা কর।।ক্ষমা চাইতে এসেছে তাই বললাম।।একটা চান্স ওর পাওনা।

ইশানঃ ক্ষমা আর ওকে।।জীবনে ও নাহ।।।ওকে আমি জীবনেও ক্ষমা করবো নাহ।।শুধু বস্তির হলে কথা ছিলো।কিন্তু একজন খুনিকে আমি এতো সহজে ক্ষমা করিবো নাহ।কিছুতেই নাহ

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here