ভালোবাসার টান
part:7,8
writer :Tanzidaa Jannat Jannatul Ferdousy
7
মিসকা ঃ গাড়ি থেকে এক পা নামাতেই দেখি হিয়া আন্টি আন্টি বলে দৌড়ে আমার কাছে আসছে😊
তারপর গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালাম অমনি ও আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
হিয়াঃ তুমি এসেছো আন্টি। আমি সেই কখন থেকে তোমার জন্য বসে আছি
মিসকা ঃ তাই,,,,,??
মিসেস নিলুফাঃ হ্যারে কি যে বলবো তোমায় শুধু বলছে আন্টি কখন আসবে কখন আসবে,,,,,, এবার তুমি খুশি তো দিদি ভাই??
হিয়াঃ আমি অনেক অনেক খুশি,,,,,
মিসকাঃ একটু মুচকি হাসি দিলো আর হিয়ার মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো নেড়ে দিচ্ছে।
মিসেস নিলুফাঃ মিসকা তুমি দাড়িয়ে কেনো বাসায় চলো,,,, ( সিফাত ওর জিনিস পত্র ওর রুমে দিয়ে আসো।)
সিফাতঃ জ্বি খালাম্মা।
হিয়াঃ চলো আমি তোমায় তোমার রুমে নিয়ে যাই। ( এই বলে হাত ধরে টেনে বাসার ভিতরে ঢুকছে)
হিয়াঃ এই হচ্ছে তোমার রুম।
মিসকাঃ আমার রুম!!!( কিছুটা অবাক হয়ে)
হিয়াঃ হ্যা তো দেখ আমি আর রুমা খালা মিলে এসব সাজিয়েছি। সাথে দাদিয়াও ছিলো😉তোমার পছন্দ হয়েছে আন্টি😋
মিসকাঃ খু,,,,ব আমার হিয়া সোনা সাজিয়েছে এটা কি আমার পছন্দ না হয়ে পারে।
(রুমটা খুব পরিপাটি আর সুন্দর করে সাজানো।বেশ বড়ো। বারান্দ আছে। মজার ব্যপার হলো হিয়া আর মিসকার বারান্দ একটাই তবে রুমটা আলাদা।)
হিয়াঃ আন্টি তুমি রেস্ট করো আমি আসছি।
(এই বলে চলে গেলো)
মিসকাঃ রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে।একটা আলমিরা,,,,,ড্রেসিন টেবিল,,,,।
(সিফাত এসে ব্যাগ গুলো রুমে রেখে চলে গেলো।)
মিসেস নিলুফাঃ আরে হিয়া বসো দাড়িয়ে কেন? এখন থেকে এটা তোমার বাড়ি মনে করবে কেমন।যা লাগবে মুখ ফুটে বলবে তুমি তো আমার আরেকটি মেয়ের মতো।
মিসকাঃ জ্বি,,,,,,, (একটু মুচকি হেসে)
ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ৮.৩৫ বাজে।😲
মিসকাঃ আন্টি আমাকে তাড়াতাড়ি অফিস যেতে হবে।
আন্টিঃ ঠিক আছে যাও।বাসায় আসলে আড্ডা দিব
ফোনে রিংটোন বেজে উঠলো।তাকিয়ে দেখে সিভাত মানে ড্রাইভার ফোন দিয়েছে।
মিসকাঃ হ্যালো,,,,,,,
সিফাতঃ ম্যাম স্যার তো ফোন দিছিলো বললো আপনাকে অফিসে ড্রপ করে দিতে।
মিসকাঃ হ্যা আসছি,,,,,
(তারপর মিসকা গাড়িতে উঠল।এবং ৩০ মিনিটের মধ্যেই পৌছে গেলো।
সিফাতঃ ম্যাম আমরা আইসা পড়ছি।
মিসকা ঃ হুম,,,,,, বলে যেতে নিলে আবার থেমে গেলো।এই শোন সিফাত,,,,
সিফাতঃ জ্বি ম্যাম।
মিসকাঃ আমাকে ম্যাম বলবে না,,,, আমি তোমার ছোট বোনের মতো আমাকে মিসকা বলেই ডাকবে।
সিফাতঃ কিন্তু,,,,,
মিসকাঃ কোনো কিন্তু নয়,,,,,, বলেই চলে গেলো।
উফফ কি যে নার্ভাস লাগছে। তারউপর গোমড়ামুখো বজ্জাত টা হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
মিসকা অফিসে পা রাখতেই একজন মেয়ে এসে বললো আপনি মিসকা তো?( মেয়েটা মিসকার বয়সিই হবে) হায় আমি নাবিলা। চলুন ম্যাম আমার সাথে,,,,,,
মিসকাঃ হ্যালো,,,,,, জ্বি চলুন।(এখন একটু নার্ভাস টা কমলেও ভয়টা কাজ করছে। প্রথম দিন এখানের মানুষ কেমন হবে এসব আজগুবি প্রশ্ন মাথায় ঢুকছে)
নাবিলাঃম্যাম আপনি কি নার্ভাস?
মিসকাঃ আসলে একটু,,,,
নাবিলাঃ কোনো ব্যাপার না প্রথম দিন তো তাই,,,,চলুন
(মেয়েটা ভালোই মিসকার সাথে কি সুন্দর ভাবে কথা বলছে।কিন্তু এমনি তে স্মার্ট।ভাবছে মিসকা)
নাবিলা ঃ একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।আর ওর কেবিনটাও দেখিয়ে দেয়।
মিসকাঃ নিজের কেবিনে ঢুকে একটু নার্ভাস ফিল করে আবার খুশিও হয়। মনে মনে বলে রাক্ষস টাকে তো দেখলাম না। মনে হয় কাজে ব্যস্ত যাক ভালোই হয়েছে।হঠাৎ দরজায় নক করে।
মিসকাঃ কে?
নাবিলাঃ ম্যাম আমি আসবো?
মিসকাঃ আরে হ্যা এসো।
নাবিলাঃ ম্যাম আপনাকে আমার সাথে যেতে হবে।
মিসকাঃ ও আচ্ছা ঠিক আছে চলো।
(মিসকাকে নাবিলা সব কিছু দেখিয়ে দিচ্ছে আর শিখিয়ে দিচ্ছে এর মধ্যেই নাবিলার ফোনে রিংটোন বেজে ওঠে)
নাবিলাঃ নাবিলা ফোনটা রিসিভ করে বলে জ্বি স্যার একখুনি আসছি।বলে ফোনটা রেখে দেয়।
(ম্যাম চলুন স্যার আপনাকে ওনার কেবিনে ডেকেছেন)
মিসকাঃ হুম চলো,,,,,মনে মনে ভয় পাচ্ছে কাল যে রকম বিহেভ করেছে ভয় তো পাওয়ারই কথা,,,
নাবিলাঃ দরজা নক করে,,,,, মে আই কামিন স্যার??
ইফতি ঃ জ্বি আসুন। বলে আবার ল্যাপটপে কাজ করছে
(তারপর দুজন ধুকলো।নাবিলাকে কিছু ফাইল নিয়ে যেতে বললো।ও ফাইল গুলো নিয়ে চলে গেলো।আর এদিকে মিসকা দাড়িয়ে আছে)
মিসকাঃ কতক্ষণ ধরে দাড়িয়ে আছি কিছু তো বলছে না। তাহলে কি চলে যাবো🙁।ভেবেই দরজার দিকে পা বাড়াতেই
ইফতিঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন??
মিসকাঃ আসলে আমি দাড়িয়ে আছি আর আপনি কিছু বলছেন না তাই ভাবলাম,,,,, বলতে না বলতেই
ইফতিঃ তাই কি ভাবলেন!!! এটা কি আপনার বাড়ি পেয়েছেন?? যা ইচ্ছা মোন গড়া ভেবে নিবেন
মিসকাঃ আপনার অফিসে আমায় কাজ দিয়েছেন বলে এভাবে কথা বলতে পারেন না,,,,,, অন্তত ভদ্রভাবে তো কথা বলতে পারেন।
ইফতিঃ কি বললেন আপনি আমি অভদ্র?? আপনার কাছ থেকে শিখবো আমি কিভাবে বিহেব করতে হবে আমার?? আপনি কালও ঠিক একই কথা বলেছেন( দাড়িয়ে গিয়ে টেবিলে উপর জোরে হাত রেখে কথা গুলো বললো)
মিসকাঃ চমকে উঠলো,,,,,,( আরে মিসকা কেনো যে এসব বলতে গেলি এখন রাক্ষস টা তোকে কাচা গিলে খাবে,,,,,আম্মুগো তোমার মেয়ে আজকে শেষ মনে মনে বলছে)
ইফতিঃ ওকে ফাইন,,,, অভদ্র কাকে বলে এখন আমি আপনাকে দেখাবো।এই নিন এই ফাইলগুলো নিন আর আকের মধ্যে কমপ্লিট করে আনুন।
মিসকাঃ অবাক হয়ে আজকেই কাজ ধরিয়ে দিলো?😨যাক তারপরও যে আমাকে আজ ছেড়ে দিয়েছে এটাই অনেক। ফাইলটা নিয়ে এক দৌড়ে বের হয়ে গেলো।
ইফতিঃ মেয়েটার সাথে কথা বললেই মেজাজটা খারাপ হয়ে যায় বলে কফি টাতে একটু চুমুক দেয়☕
মিসকাঃ কি ফাইলরে বাবা মাথায় তো কিছুই ধুকছে না।ঐ বজ্জাত বদের হাড্ডি টা ইচ্ছে করে আমাকে এতোগুলা ফাইল দিছে।ইচ্ছে করছে গিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিই।।আচ্ছা নাবিলার কাছ থেকে হেল্প নিলেই তো হয়😉
(নাবিলাকে ফোন দিয়ে আসতে বললো।)
নাবিলাঃ আসবো ম্যাম,,,,,,,,??
মিসকাঃ হ্যা এসো,,,তারপর ফাইলগুলো দেখিয়ে বললো আমি না কিছুতেই এগুলো সল্ভ করতে পারছি না। তুমি একটু হেল্প করো না প্লিজ
নাবিলাঃ ওকে ম্যাম ( তারপর নাবিলা শিখিয়ে দিলো।আর বাকিগুলো ও নিজে নিজেই করছে)
মিসকাঃ অনেক অনেক ধন্যবাদ
নাবিলাঃ ইটস মাই প্লেজার ম্যাম,,,,, একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো।
মিসকাঃ এদিকে ক্ষুধাও পেয়েছে।কিন্তু কাজগুলো কমপ্লিট না করলে আমাকে আস্ত রাখবে না।
সবাই লাঞ্চ এ গেলো কিন্তু মিসকা কাজ করছে।
ইফতিঃ একি মেয়েটা এখনও লাঞ্চ করতে যায় নি কেনো??আজব মেয়ে একটা যাক গিয়ে আমার কি দরকার😏
মিসকা পুরো কাজ কমপ্লিট করে ইফতির কেবিনের সামনে গিয়ে দরজা নক করছে।।।আর এদিকে ইফতি কার সাথে যেনো কথা বলছে।মিসকা কিছুক্ষণ পর ঢুকে যেতেই ইফতি ফোনটা রেখে
ইফতিঃ কি ব্যাপার তুমি আমার পারমিশন ছাড়া ঢুকে পড়লে যে??
মিসকাঃ আসলে স্যার আমি অনেকবার নক করেছি কিন্তু আপনি তো,,,,,,,,
ইফতিঃ মিসকার সামনে এসে দাড়ালো। মিসকা ভয় পাচ্ছে সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে,,,,,,,,,,
ইফতিঃ কি বলতে চাচ্ছ হুম। এখন আমার দোষ সব??
মিসকাঃ তা,,,,,,তা নয় তো কি,,,,,, আমি তো নক করেছি। কিন্তু আপনি ফোনে এতোটাই ব্যস্ত যে কিছু টেরই পান নি
ইফতিঃ মিসকার হাত পিছনে মুড়ে ধরে বলে,,,,, তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলার সাহস পেলে কোথার থিকে?? হুম,,,,,,!!! আমার অফিসে দাড়িয়ে আমার সাথে বাজে বিহেব করছো
মিসকাঃ হাত টা ছুটাতে অনেক চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না, ওর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরলো।
(আর ভাবলো আমি কি এমন দোষ করেছি যে আমার জীবনে এই ডেভিল টা এসে জুটলো)
এমন সময় দরজার কারো নক পরলো। ইফতি মিসকার হাতটা ছেড়ে দিলো।মিসকা আরেক হাত দিয়ে হাত চেপে ধরে আছে
ইফতিঃ কে?? ভিতরে আসুন,,,,,
নাবিলাঃ আসলে স্যার আজকে যেই ক্লাইন্টের আসার কথা ছিলো সে আসবে না বলে দিয়েছে।
(নাবিলা আর ইফতি কথা বলছে মিসকা এই ফাকে ফাইলটা টেবিলে রেখে তাড়াতাড়ি বাহিরে বেড়িয়ে পরে।)
মিসকাঃ উফফ এভাবে চলতে থাকলে আমি ঠিক মরে যাবো ভাগ্যিস আজ নাবিলা এসে পরেছে তা না হলে
অফিস থেকে বেড়িয়ে দাড়িয়ে আছে কিন্তু একটা রিকশা বা সিএনজি কিছুই পাচ্ছে না,,,,,,,,,, এমন সময় গাড়ির হর্ন বাজতে লাগলো,,,,,,,,,,
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,
#ভালোবাসার__টান,,,,,,,,😍👸😍
#part:::::::::::(8)
#writer::::::::::Tanzidaa Jannat❤Jannatul Ferdousy
গাড়ির হর্ন বাজাতে মিসকা পিছনে তাকায় দেখে যে মি. ইফতি গাড়িতে বসে হর্ন বাজাচ্ছে তাও আবার জোরে জোরে।এবার মিসকার ভিষন রাগ হচ্ছে। গাড়ির সামনে গিয়ে বলে,,,,,,,
মিসকাঃ কি সমস্যা হ্যা,,,? এভাবে গাড়ির হর্ন বাজাচ্ছেন কেনো?
ইফতিঃ গাড়িতে উঠো,,,, ,,
মিসকাঃ না উঠবো না,,,,,,,, আপনার সাথে যাওয়ার তো কোনো প্রশ্নই আসে না,,,,,,
ইফতিঃ এবার গাড়ি থেকে নেমে বললো,,,,,দেখ ভালোভাবে বলছি গাড়িতে গিয়ে বসো।তা না হলে,,,,,,
মিসকাঃ কি তা না হলে,,,,,,, তা না হলে করছেন?আপনি কি ভাবেন আপনার দামী গাড়ি আছে বলে এভাবে গাড়ির হর্ন বাজাবেন??আর আপনি আমার উপর এমন জোড় খাটাতে পারেন না আপনি অফিসে আমার বস। অফিসের বাইরে কেউই নন।
ইফতিঃ ওয়াট দ্যা,,,কি বললাম আর তুমি কি বললে??
মিসকাঃ না মানে আমার কথা এখনও শেষ হয় নি।(একটু ভয় পেয়ে) আমি আপনার সাথে যাবো না ব্যাস,,,,
ইফতিঃ রাগে পুরা লাল হয়ে গেছে,,, মিসকাকে গাড়ির সাথে দুই হাত চেপে ধরে মিসকার খুব কাছে থেকে বলছে,,, আমার কোনো শখ নাই তোমার মতো বেয়াদব মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মম ফোন দিয়ে বললো হিয়া না খেয়ে বসে আছে।তোমাকে ফোন দিয়েছে তুমি রিসিভ করো নি। তাই তোমাকে আমার সাথে যেতে বলেছি,,,,,
মিসকাঃ ভয়ে চুপসে আছে।আর মনে মনে ভাবছে এতো বকবক করিস কেনো মিসকু এজন্য ই তোর কপালে এতোকিছু।
ইফতিঃ আর একটা কথা না বলে গাড়িতে গিয়ে বসো,,,,,,ধমক দিয়ে
মিসকা কোনো কথা না বলে গাড়িতে গিয়ে বসে।রাস্তায় কেউ কোনো কথা বলে না,,,,,,,বাসার সামনে এসে কলিং বেল টিপলো মিসকা,,,,
রুমা( কাজের মেয়ে)ঃআফামুনি আইছেন হিয়ামুনি না খাইয়া ঘুমাই রইছে,,,,,,
মিসকা কথাটা শুনে এক দৌড়ে হিয়ার রুমে চলে গেলো।গিয়ে দেখে হিয়া ঘুমিয়ে আছে ঘুমন্ত অবস্থায় মনে হচ্ছে একটা পরী। কি যে মায়াবী ওর মুখটা,,,, 😍কিন্তু মুখটা শুকিয়ে গেছে,,,,,,
মিসকাঃ হিয়া,,,,,হিয়া,,,,,মামুনি দেখ আন্টি চলে এসেছে।
হিয়াঃ চোখ খুলে দেখে মিসকা এক লাফে উঠে বসে বলে আন্টি তুমি 😊।
মিসকাঃ আমি রেগে আছি তোমার উপর,,৷৷ তুমি কেনো খাওনি এখনো??🤐
হিয়াঃ তুমি তো সকালে আমাকে না বলেই চলে গেলে।আর এতোবার ফোন দিয়েছি ফোনটাও পিক করো নাই,,,,তাই মোন খারাপ ছিলো
মিসকার মনে পড়লো সকালে সে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে মিসকার কথা মনেই ছিলো না তার😞।আর আজকে ফোনটা ধরার সুযোগ টাও পায় নি।😤সব ঐ বজ্জা গোমড়ামুখো টার জন্য,,,,,,,
মিসকাঃ হুম বুঝলাম আমার আর এমন ভুল ককখোনো হবে না। এই যে কান ধরছি এবার আমায় ক্ষমা করে দাও,,,,,,🙁
হিয়াঃ ছিঃ আন্টি এভাবে বলো না,,,,, আমি জানি তুমি ইচ্ছে করে করো নি
মিসকাঃ ওরে পাকনি বুড়ি এতো কিছু বুঝো তুমি।আচ্ছা হয়েছে এবার চলো খাবো। আমারও যে ক্ষুধা পেয়েছে😰
হিয়াকে কোলে নিয়ে নিচে নামে।আর রুমা এসে খাবার দিয়ে যায়।খাওয়া শেষ করে দুজনে রুমে যায়।
মিসকাঃ তুমি বসো আমি একটা ফোন করে আসছি।
হিয়াঃ মাথা নাড়িয়ে হ্যা সুচক জানায়।
ফোনে মিতু আর ফাহিমার সাথে কথা বলে নেয়। তারপর হিয়ার কাছে আসে।ওরা দুজনে কার্টুন দেখে আর হাসতে থাকে।
মিসেস নিলুফাঃ কি হলো এতো হাসি কেনো তোমাদের??
হিয়াঃ দেখো,,,, দাদিয়া তুমিও হাসবে
মিসেস নিলুফাঃ দাড়া আমি তোদের জন্য পপকোন নিয়ে আসছি তোরা দেখতে থাক
(ওরা দুজন মাথা নাড়াল। কিছুক্ষণ পর মিসেস নিলুফা পপকোন নিয়ে ঢুকতেই দেখে মিসকার কোলে হিয়া আর মিসকা ২ হাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে আছে আর দুজন হাসছে😀।মিসেস নিলুফা এবার বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে এগুতে লাগলো আর ভাবলো। আজ আমার হিয়া সোনা কত্ত খুশি। আল্লাহ এমনই যেনো ওর মুখে সবসময় হাসি থাকে।)
মিসেস নিলুফা ঃ এই নাও গরম গরম পপকর্ন খেয়ে নাও
তিনজন মিলে দেখছে আর হাসছে।কতোক্ষন যে পার করে দিয়েছে বলতেও পারবে না। এর মধ্যেই রুমা এসে ডাক দিলো ডিনারের জন্য।
মিসেস নিলুফাঃ ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে রাত ১০ টা বেজে গেছে।। তুই যা আমরা আসছি।আর শোন ইফতিকে ডাক দিয়েছিস?
রুমাঃ জ্বী খালাম্মা।
মিসেস নিলুফাঃ আচ্ছা ঠিক আছে যা।
(তারপর ওরা তিনজন মিলে নিচে নামলো।মিসকা হঠাৎ টের পেলো ওর হাতটা হিয়া শক্ত করে ধরে আছে।মিসকা কিছু না বুঝেই সামনে তাকাতেই দেখলো ইফতি ডায়নিং টেবিলে বসে খাচ্ছে।ওরাও গিয়ে বসে। মিসকা হিয়াকে খাইয়ে দিচ্ছে। আর গল্প করছে।আর এদিয়ে ইফতি মাঝে মাঝে আড় চোখে ওদের দিক তাকাচ্ছে। ইফতির খাওয়া শেষ হলে ও উঠে যায় আর বলে,,,,,
ইফতিঃ মম বাবা কবে আসবে তুমি কিছু জানো??
মিসেস নিলুফাঃ বললো তো এই সপ্তাহের মধ্যেই আসবে। কবে আসবে ঠিক জানায় নি।
ইফতিঃ ও আচ্ছা। এই বলে ইফতি হাত ধুয়ে উপরে চলে গেলো।
হিয়াঃ আন্টি আমি আর খাবো না।
মিসকাঃ আচ্ছা এবার পানি টা খাও। এখন মিসকা খাচ্ছে আর তার পাশে হিয়া বসে আছে।
হিয়া এক দৃস্টিতে মিসকার দিকে তাকিয়েই আছে।।
মিসেস নিলুফাঃ দুজন কি লাগছে😍ওরা যদি সারাজীবনের জন্য এমন ই থাকতো তাহলে কতো ভালো হতো। আমার হিয়াটা আবার একটা স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেত।কিন্তু যদি মিসকা চলে যায় তাহলে আমার হিয়াটা আবার একা হয়ে যাবে।কিভাবে সামলাবো আমি এটা ভাবতেই মিসেস নিলুফা বিষম খেল।
মিসকাঃ আন্টি কি হলো। এই নিন পানি খান।
মিসেস নিলুফা পানি খেয়ে জোরে জোরে হাঁপাচ্ছে ,,
মিসকাঃ ঠিক আছেন তো আন্টি?
মিসেস নিলুফা ঃ হুম,,,,,, আমি ঠিকাছি।
মিসকাঃ হাত ধুয়ে হিয়াকে কোলে নিয়ে রুমে চলে গেলো।তারপর ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।কারন হিয়া টেবিলেই ঘুমিয়ে পরেছিলো। তাই ওকে আজ গল্প করে বা জোর করে ঘুমা পারাতে হয় নি।
ওকে ঘুম পারিয়ে দিয়ে মিসকা বারান্দায় যায় আর ভাবতে থাকে আচ্ছা হিয়া তো ইফতির মেয়ে তাহলে এমন এভয়েড করে কেনো।হিয়াও ভয় পায়।কি হচ্ছে কিছুই তো বুঝতে পারছি না।হিয়ার মা কি মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে? আর বেঁচে থাকলে কোথায় সে। এমন সব প্রশ্ন মাথায় জমা হয়,,,,,,, মিসকা আকাশের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে। কিছু তো একটা রহস্য আছে আচ্ছা আন্টিকে কি জিগ্যেস,,,,, নানা এটা উনি কিভাবে না কিভাবে নিবেন। তাদের ব্যক্তিগত ব্যপারে জানতে চাইলে কিভাবে না কিভাবে নিবে? যা করার আমাকেই করতে হবে।,,,,,,তারপর রুমে এসে হিয়ার কপালে একটা চুমু দিয়ে ওর পাশেই সুয়ে পরে।,,,,,,,
সকালে মিসকা ঘুম থেকে উঠে দেখে হিয়া তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। ওকেবএকটা চুমু দিয়ে নিজেকে সাবধানে ছাড়িয়ে নেয়।তাপর বারান্দায় গিয়ে সকালে মৃদু বাসাত উপভোক করতে থাকে।আর চারদিকের প্রকৃতি দেখতে থাকে।হালকা রোদের আলোতে তার ভালোই লাগছে,,,,,,,,,হঠাৎ পিছন থেকে হিয়া এসে মিসকাকে জড়িয়ে ধরে,,,,,,,
মিসকাঃ গুড মর্নিং মাই লিটল প্রিনসেস
হিয়াঃ চোখটা কচলিয়ে,,,,,,ঠোঁটে একটা বাকা হাসি দিয়ে গুড মর্নিং বলে,,,,,,
মিসকাঃকোলে নিয়ে,,,,,, চলো প্রিনসেস আমরা জীবানুদের আগে ঢিসুম ঢিসুম দিয়ে আসি।
হিয়াঃ একথা শুনে হিয়াও হেসে দেয় বলে আন্টি তুমি কি এড দিচ্ছ নাকি
মিসকাঃ হাসতে হাসতে ওয়াশরুমে গিয়ে ওকে দাঁত মেজে দেয় আর নিজেও ফ্রেস হয়ে নেয়।
রুমাঃ আফা মুনি নাস্তা রেডি
মিসকাঃ হুম তুমি যাও আমরা আসছি,,,,,তারপর গিয়ে দেখে মিসেস নিলুফা টেবিলে বসে আছে।
মিসেস নিলুফা ঃ কি দুজনের ঘুম কেমন হয়েছে,,,,??
হিয়া দৌড়ে গিয়ে দাদিয়াকে চুমু দিয়ে পাসের চেয়ার টায় গিয়ে বসে।
মিসকাঃ একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো জ্বী ভালো।,,,,,,,,
চলবে,,,,,,