ভালোবাসার টান part:31,32

ভালোবাসার টান
part:31,32
writer:Tanzidaa Jannat

31

মিসেস নিলুফাঃ নিলার কোনোদিন ও ভালো হবে না,,, ও যে লোভে এখান থেকে চলে গেছে ঐলোভই ওর কাল হয়ে দাড়াবে😭,,,,,,মাঝখান থেকে আমার ছেলেটা ভুগছে,,,,,,

মিসকাঃ আন্টি তুমি কেদো না,,,,মিসেস নিলুফার চোখের পানি মুছে দিয়ে,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ আচ্ছা ঠিকাছে,,,আমি ইফতির হয়ে তোর কাছে ক্ষমা চাইছি,,,

মিসকাঃ আন্টি আমি তো বললাম আমি কিছু মনে করি নি,,,আর এসব নিয়ে কোনো কথাও হবে না,,,,

মিসেস নিলুফাঃ আচ্ছা মেরী মা,,,,,,খুব বড় হয়ে গেছিস দেখছি😄এই নে ঔষধ টা খেয়ে নে,,,,,হিয়াকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছি,,,তুইও জামা কাপড় ছেড়ে ঘুমুতে যা,,,,

মিসকাঃ আচ্ছা,,,,

মিসকা ডায়রীটার ব্যাপারে মিসেস নিলুফার কাছে কিছু জিগ্যেস করলো না,,,,, চুপচাপ নিজের রুমে গিয়া দেখলো হিয়া ঘুমুচ্ছে,,, হিয়ার পাশে বসে ওকে একটা চুমু দিলো,,,,,,আমার প্রিন্সেসটা ঘুমুচ্ছে 😘ঠিক যেনো ঘুমন্ত পরী😍😍

মিসকা ডায়রীটা বিছানার এক কোনে রেখে ফ্রেস হতে যায়,,,,ফেস হয়ে এসে মিসকার পাসে বসে,,,,মাথাটা ব্যাথা করছে,,,, নানা এসব ভাবলে আরো ব্যথা করবে তারচেয়ে বরং আমি ডায়রীটা কিসের তা দেখি,,🙂আচ্ছা ডায়রী টা কি কারো পার্সনাল,,,, আর যদি হয়েও থাকে তাহলে অনুমতি না নিয়ে হাত দেওয়াটা কি ঠিক হবে??🤔
ধূরর এতো ভেবে কাজ নাই যদি হয় হবে,,,, হলে তো ঐ রাক্ষসটারই হবে😏এতো আরো বেশি করে পরবো,,,,,
ডায়রীটা খুলেই দেখে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা★★ MY LOVE “”””””””N ♥ I”””””””””

এমন লেখা দেখে মিসকা একটু হেসে বললো ওহহো তাহলে আমি যা খুজছিলাম মনে মনে তা আজ আমার হাতের মুঠোয়,,,, যাক আমার সব প্রশ্নের উত্তর এখানে মানে ডায়রীতেই পাবো😑

গভীর রাত কিন্তু মিসকার চোখে ঘুম নাই,,,,মিসকা ডায়রীর প্রথম পৃষ্ঠায় দেখে লেখা,,,, আজ আমার সবচেয়ে আনন্দের দিন আমি নিলাকে আজ প্রপোজ করেছি,,,,,, ও কোনো উত্তর দেয় নি তবে ওর চলে যাওয়ার সময় হাসিটাই ওর উত্তর বলে দিয়েছে☺

তারপর মিসকা পরের পৃষ্ঠা গিয়ে গভীরে তলিয়ে যায়,,,,মনে হচ্ছে ও সব চরিত্র দেখতে পাচ্ছে,,,,,,

ইফতি সবসময় গান বাজনা হৈ হুল্লোড় নিয়ে থাকতো আর কলেজে মারপিট সব কিছুতেই এগোনো ছিলো,,,,,,,কলেজের সমস্যা হলে ও আর ওর বন্ধুরা মিলে সল্ভ করতো,,,ওর কিছুতেই ভয় ছিলো না,,,, প্রায় সব মেয়েদের ক্রাশ ছিলো সব মিলে সারাদিন মাস্তি করে বেরাতো,,,,,

ইফতি ওর বন্ধুদের নিয়ে বসে ছিলো কলেজ ক্যাম্পাসে,,,বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো,,,হাসাহাসি করছিলো,,,,এমন সময় ইফতি বলে উঠলো পুরাই অস্থির,,, 😲

ইফতির এমন রিয়াকশন দেখে সবাই তাকালো,,,,দেখে একটা মেয়ে গেট দিয়ে ঢুকছে পরনে সাদা গাউন,,,,, হাই হিল,কপালে ছোট্ট একটা টিপ,,,,চোখ দুটোতে কাজল,,,,,,ঠোটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক,,,, ইমনিতেই চোখ ধাধানো ফর্সা দেখতে মনে হচ্ছে একটা সাদা পরী নেমে এসেছে,,,,,,,,,

সবাই বলে উঠলো,,,,,ভাই এতো মেয়ে না পরী😱

ইফতিঃ হ তোদের পরী ভাবী,,,,

সবাই একসাথে বলে উঠলো ভাবী😳 বলেই ইফতির দিকে তাকালো,,,,

ইফতিঃ আরে সালারা এমনে তাকিয়ে আছিস কেন?? আমার বউ হলে তোদের কি ভাবী হবে না নাকি””

সবাই ওর দিকে তাকিয়ে ই আছে,,,,,

ইফতি তোরা থাক আমি একটু তোদের ভাবীর সাথে কথা বলে আসছি,,,,,তারপর বাইকের গ্লাসে নিজের চুল ঠিক করে মিসকার সামনে যায়,,,,

সামনে গিয়ে তো আরো টাস্কি খেলো নিলার ঠোঁটের পাশে একটা তিল,,,,,এই তিলটার কারনে ওর সুন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে,,,

নিলা হাতে তুরি দিয়ে,,,, এই যে মি. এভাবে দাড়িয়ে আছেন কেনো পথের মাঝখানে???

নিলার কথায় ইফতির ঘোর কাটে,,,,

নিলাঃ এই যে আপনাকে বলছি,,,

ইফতিঃ হ্যা,,,না মানে আমি,,,,, আচ্ছা তুমি যেতে পারো,,,

নিলাঃ হুম বলেই চলে গেলো,,,

ইফতিঃ ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়েই রইলো,,,এর মধেই ওর বন্ধুরা এসে,,,,আরে একদিনেই তো দেখি দিওয়ানা হয়ে গেছিসরে😂😂

ইফতিঃ ইশশশিরে আমার মোনটা যেন চুরি করে নিয়ে গেলো,,,😍

আরে তোর কোনো চিন্তা নাই আমরা ভাবীর সব ডিটেলস সব এখনই নিয়া আসতেছি,,,,,বলেই চলে গেলো,,,,

ইফতি হালকা একটা মুচকি হাসি দিয়ে বসে পরলো প্রায় ১৫ মিনিট পর আসলো,,,,,, আরে দোস্ত পাইছি,,,,,,
ভাবীর নাম নীলাঞ্জনা আরোহী,,,,,,সবাই নিলা ডাকে,,,,
ওরা ২ ভাই এক বোন,,,,আর আমাদের সাথে একই ডিপার্টমেন্টে পরে,,,তবে ফার্স্ট ইয়ার

ইফতিঃ ব্যাস এতেই হবে,,, আমার😊,,,,,,
চল আজ ক্লাস করবো আমরা,,,,

কি বলিস তুই ক্লাস করবি??😱😱

ইফতিঃ কেনো বলতো??

ভুতের মুখে রাম নাম😂😂😂

ইফতি চোখ গরম করে ওদের দিকে তাকায়,,,, সবাই চুপচাপ হয়ে যায়,,,,

সবাই ক্লাসে গেলে স্যারও অবাক হয়ে যায়,,,,,

কিছু না বলেই ক্লাস নিতে থাকে,,,,ইফতি ভাবছে উফফ সময় কেনো শেষ হয় না কখন যে ওকে আবার দেখবো,,,,,

ক্লাস শেষে নিলাকে আবার দেখে,,,,,,ইচ্ছে করে যাওয়ার সময় নিলার সাথে ধাক্কা নিলার হাত থেকে পার্স আর মোবাইল টা পরে যায়,,,,

ইফতিঃ সড়ি,,,,,আমি দেখিনি বলেই ওর জিনিস গুলো তুলে দেয়,,,,,হায় আমি ইফতি,,,

নিলাঃ আমি নিলা,,,,,
বলেই চলে যায়,,,

এমন করে প্রায় ১ মাস চলে যায়,,,,

একদিন প্রলয়ের ফোন আসে,,,

ইফতিঃ হ্যালো প্রলয়,,,,, সালা তুই কোথায়??

প্রলয়ঃ আরে বলিস না বাবা বিজনেসের জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়েছিলো,,,,,,

ইফতিঃ হুম বুঝলাম আমার বাবাও তো চায় কিন্তু আমি ধারে চাপি না😂😂

প্রলয়ঃ হ্যা শোন যে জন্য তোকে ফোন করেছি,, আমার বোনের বিয়ে আগামী পরশু তুই কালই চলে আসবি,,,,

ইফতিঃ ও আচ্ছা কোনো চিন্তা করিস না তুই বলেছিস আমি চলে আসবো,,,,

পরেরদিন ইফতি প্রলয়ের বাসায় যায়,,,,,, ডেকরেটের সকল দায়িত্ব ইফতি নিয়ে কাজ করছে,,,,,
সন্ধ্যায় গায়ে হলুদের রিসেপ্টশন,,,,

প্রলয় ঃ আরে বাহ দোস্ত তুই তো ফাটিয়ে দিয়েছিস,,,,

ইফতিঃ😉

ইফতি ঘুরে তাকাতেই হা করে তাকিয়ে থাকে,,,,,,,নিলা একটা হলুদ শাড়ি পরা,,,,, হাতে চুড়ি চুলে ফুল গোজা,,,,পায়ে নুপুর,সব মিলিয়ে গর্জিয়াস লাগছে অসম্ভব সুন্দর লাগছে,,, সবাই হা করে ওকেই দেখছে,,,

প্রলয় ঃ এই তো ওরা এসে গেছে,,,ইফতি চল

ইফতিঃ হুম,,,

প্রলয় ঃ কি হুম হুম করছিস,,,

ইফতিঃ না মানে নিলা এখানে কেমনে,,,,

প্রলয়ঃ তুই নিলাকে চিনিস নাকি??

ইফতিঃ আরে চিনবো না ওর পিছনেই তো একমাস ঘুরছি,,,,সালা আমার পিছনে মেয়েদের লাইন থাকে আর আমি ওর পিছনে ঘুরেই যাচ্ছি

প্রলয়ঃ আরে ও আমার ফুপির মেয়ে আমার ফুফাতো বোন,,,

ইফতিঃ আরে সালা,,,,,,, তুই তো তাহলে আমার সত্যি সত্যি সালা হয়ে গেলি,,,,😂

প্রলয় আরে এখন রাখ চল ঐদিকে সবাই মজা করছে আমরাও জয়েন দিই,,,,

ইফতিঃ চল,,, তবে একটা কথা ওর সাথে কিন্তু আমাকে সেটিংটা তুই করাবি,,,,,

প্রলয় ঃ আচ্ছা এখন চল তো,,,,,

ওরা সেদিন অনেক মজা করেছিলো,,,,,ইফতির সাথে নিলার খুব ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গেছিলো,,,,,,ইফতি তো এমনিই নাচ,গান পারে নিলাও কম নয়,,,,,, দুজনে পুরো প্রোগ্রামের মানুষদেরকে মাতিয়ে রেখে ছিলো,,,,,,,,

সবাই ওদের পার্ফমেন্স দেখে তো অবাক,,,,,সবার মুখে হাসির বন্যা ছুটে গিয়েছিলো,,,,,

পরেরদিন বিয়ে বাড়িতে ইফতি ব্লাক কালারের একটা পাঞ্জাবি পরেছে,,,হাতে ঘড়ি সেদিন যা লাগছিলো,,,,আর নিলাকেও সেদিন সুন্দর লাগছিলো,,,,,,ইফতি নিলার দিকে গিয়ে নিলার কানে কানে বলে তুমি এমনিতেই অনেক সুন্দর এতো সেজে নিজের সুন্দর্যটা চাপা দিয়ে দিয়েছ,,,,,নিলা সেদিন কোনো কথা বলে নি ওর দিক তাকিয়ে এক গাল হেসেছিলো,,,,,,

বিয়ের পর্ব শেষ করে ইফতি নিলাকে খুজতে থাকে,,,,

প্রলয় ঃ এভাবে যাকে খুঁজছিস সেতো চলে গেছে

ইফতিঃ চলে গেছে,,,,,একবার বলেও গেলো না,,,,

প্রলয়ঃ ও এমনই,,,,,,,ও কখনও কাউকে কৈফিয়ত দিয়ে বা পারমিশন চেয়ে বা কারো মোন রক্ষার্থে কিছু করে না,,,,, যা ওর মনে হয় তাই করে

ইফতি কিছু না বলে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসে,,,,,

ইফতিঃ সেদিন বাসায় এসে মোনটা অনেক খারাপ ছিলো,,, সারারাত ঘুমায় নি শুধু নিলার কথা ভেবেগেছি,,,

পরেরদিন সকালে ইফতি ভার্সিটি তে যায় আর বার বার গেটের দিকে তাকায়,,,,,

হঠাৎ নিলাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে ওর কাছে গিয়ে হাটু গেরে ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে ভালোবেসে ফেলেছি বিশ্বাস করো খুব ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়,,,,,কাল সারারাত ঘুমায় নি শুধু তোমাকে মনে পরছিলো,,,,,তোমার হাসি,তোমার কথা সব সব কিছুর প্রেমে পরেছে হৃদয় তুমি কি ভালো বাসবে আমায়,,,,

নিলা ওর এই কান্ড দেখে অবাক হয়ে ছিলো,,,,ছোট্ট একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো,,,,,

ইফতি সেদিন কষ্ট পায় নি কারণ ওর মোন বলছে নিলাও ওকে ভালোসে

সেদিন ইফতি বাড়ি চলে আসে,,,২ দিন আর কলেজ যাই নি কিন্তু ওদের কাছ থেকে জেনেছি নিলা নাকি আজ আমার খুজছিলো শুনেই খুশি লাগছিলো,,,,কিন্তু আমি তাও যাইনি,,,,,,যদিও কস্ট হচ্ছিল,,,,
বিকেলের দিকে কারো স্পর্শে আমার ঘুম ভাঙে আমি ভেবেছিলাম কল্পনা করছি করান এই কয়দিন এমন কোনো মুহূর্ত নেই যে আমি নিলাকে কল্পনা না করেছি,,,,তাই একটু হেসে আবারও চোখ বন্ধ করে ফেলি,,,,,

নিলাঃ একি আবারও ঘুমাচ্ছ কেনো??

আমি না তাকিয়েই বললাম নিলা তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে তবে কল্পনার থেকে বাস্তবে তোমায় বেশি সুন্দর লাগে,,,,,

নিলাঃ আমি জানি আমি সুন্দর এবার উঠুন তো,,,,,

আমি ওর কথা শুনে ধরফর করে উঠে বসি আর বার বার চোখ ডলতে থাকি আমি কি সত্যি দেখছি কি না,,,,,

সেদিন ও আমার কান্ড দেখে হাসছিলো অনেক হাসছিলো আমি শুধু ওর হাসি দেখছিলাম ওর হাসি আমার মোন ছুয়ে গিয়েছিল,,,,,,,

এর মধ্যেই প্রলয় রুমে ঢোকে,,,,,,,

কিরে তোদের গল্প করা হলো নাকি😂

ইফতিঃ তুই!! এসে বোস,,,,,,

প্রলয়ঃ হুম আমি কি আর করবো তুই এখানে কস্ট পাচ্ছিস তাই নিলাকে নিয়ে চলে এলাম,,,,,,,

আমি নিলার দিকে তাকাতেই দেখি ও লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে আছে,,,,,
এর মধ্যেই মম এসে নিলার পাশে বসলো আর নিলাকে বললো বাহ আমার ছেলের চয়েজ আছে,,,,,,,ভারি মিষ্টি দেখতে তুমি মা,,,,,বলেই হাতে বালা পরিয়ে দিলো,,,,,,

ইফতিঃ দেখতে হবে না ছেলেটা কার,,😉😉

মিসেস নিলুফাঃ হয়েছে হয়েছে এতো দিন রুম আটকে শোক পালন করছিস,,,,,, ভাগ্যিস আমি প্রলয়কে ফোন দিয়ে ছিলাম,,,,,,

ইফতিঃ মম তুমি সত্যি ই খুব ভালো আমার মনের কথা বুঝে যাও,,,

#চলবে,,,,,,,,,

#ভালোবাসার__ টান,,,,,,😍👸😍

#part:::::::::(32)

#writer:::::::::Tanzidaa Jannat

মিসকা আর পড়তে পারছে না,,,,, ঘুমে চোখ ভার হয়ে আসছে,,,তাই ডায়রীটা আলমিরার ভিতরে রেখে দেয়,,,যাতে কারো হাতে না পরে,,,,, হিয়ার পাশে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে সুয়ে পরলো,,,,

সকালে রোদ পরতেই মিসকা চোখ মেলে তাকায়,,,, উঠে বসে মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে,,,তাকাতে পারছে না। তাই খাটের সাথে হেলান দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে,,,,,কেমন ক্লান্ত লাগছে শরীরটা। ওহ কাল অনেক রাতে ঘুমিয়েছি ঠিক রাত বললে ভুল হবে প্রায়ই সকাল,,,,মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখে ১০ টা বেজে গেছে,,,,পাশে হাত দিয়ে দেখে হিয়া নেই,,,,,,

মিসেস নিলুফাঃ কিরে মা এখন কেমন লাগছে??

মিসকাঃ ভালো আন্টি😔,,হিয়া কোথায়,??

মিসেস নিলুফা ঃ মায়ের কাছে মিথ্যে কেনো বলছিস??হিয়া নিচে বসে নাস্তা করছে,,,,( গায়ে হাত দিয়ে তোর তো গায়ে জ্বর😲)

মিসকাঃ এতো উত্তেজিত হবেন না এটা ঠিক হয়ে যাবে,,

মিসেস নিলুফা কিছু বলতে যাবে তখনই রুমা খাবার নিয়ে আসে,,,,

রুমাঃ খালাম্মা খাবার নিয়া আইছি,,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ দে আমার কাছে আমি খাইয়ে দিচ্ছি,,,,, ( রুমা মিসেস নিলুফার হাতে খাবার দিয়ে চলে যায়)

যা হাত মুখ ধুয়ে আয়,,,,,,

মিসকাঃ হুম,,, বলেই ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসলো,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ নে এবার হা কর দেখি,,,,

মিসকাঃ খাবারটা মুখে নিয়ে চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দিলো,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ একি তুই কাঁদছিস কেন!!

মিসকাঃ আন্টি আপনাকে একটু জড়িয়ে ধরি😔

মিসেস নিলুফা ঃ মিসকাকে কে জড়িয়ে ধরে,,, বলে আরে পাগলী মেয়ে আমি তো তোর মায়ের মতোই তুই আমাকে এটা কেনো জিগ্যেস করছিস,,,,,

মিসকাঃ আম্মুকে অনেক মিস করছিলাম😭😭

মিসেস নিলুফা ঃ কেনো আমি কি তোর মা না,,,,,( চোখের পানি মুছে দিয়ে)

মিসকাঃ আবারও জড়িয়ে ধরে বলে এজন্য ই তো এভাবে জড়িয়ে ধরে আছি,,, তোমার সাথে যে আমার মায়ের ঘ্রানটার খুব মিল আন্টি☺

মিসেস নিলুফা ঃ আচ্ছা হয়েছে,,,,,, নে এবার তাড়াতাড়ি খাবার টা শেষ কর তো,,,,, ঔষধ খেতে হবে তো,,,,

মিসকাঃ আন্টি আমি আর খাবো না,,,,, খেতে ইচ্ছে করছে না,,, 😑

মিসেস নিলুফা ঃ কোনো কথা হবে না,,,চুপচাপ খেয়ে নে,,,

হিয়া এসে বলছে হ্যা হ্যা চুপচাপ খেয়ে নাও নাহলে পানিসম্যান্ট দিবো,,,,, ( দুহাত মাজায় দিয়ে দাড়িয়ে বলছে)

মিসকা আর মিসেস নিলুফা হেসে দিলো ওর কথা শুনে,,,

মিসকাঃ ওরে আমার বুড়ি মারে,,,,,, তা কি পানিশম্যান্ট দেবে শুনি,,,,

হিয়াঃ দিবো দিবো যখন দিবো তখন বুঝবে,,,,,😊😇

মিসকাঃ আমি তো এখন ই শুনতে চাই😉

হিয়াঃ তোমাকে তোমার বজ্জাত রাক্ষসের সাথে বিয়ে দিবো😜

মিসকাঃ ওরে পাকনি বুড়ি😱,,,,এতোটা পেকে গেছো,,,

মিসেস নিলুফাঃকি বলিস তোরা কে রাক্ষস ??

মিসকাঃ না আন্টি কিছু না,,,,, 😔

হিয়াঃ দাদিয়া তুমি তো জানো না আন্টি বাবাইকে বজ্জাত রাক্ষস বলে 😂😂😂

হিয়ার কথায় মিসেস নিলুফা হা হয়ে মিসকার দিকে তাকিয়ে আছে,,, আর মিসকা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে,,,,কি বলবে বুঝতে পারছে না,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ হুম বুঝেছি,,,,ঠিকই তো বলেছে আমার ছেলেটা তো বজ্জাত রাক্ষস ই😂😂😂😂

মিসকা মিসেস নিলুফার এমন বিহেব দেখে হা করে তাকিয়ে হেসে দিলো,,,,,,

এর মধ্যেই মিসেস নিলুফার ফোনে রিংটোন বেজে উঠলো,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ আজকে ফোন দিতে ইচ্ছে হলো,,,, কোথায় গেলে কাল?? কাউকে কিছু না বলে,,,,,আজ আসো বাড়ি তোমার খবর আছে বলেই ফোনটা কেটে দিয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছে,,,,

মিসকাঃ আঙ্কেল ফোন দিয়েছে,,,,,

হিয়াঃ বাব বাহ এদের প্রেম আর দেখা যায় না😂

মিসেস নিলুফা ঃ ওরে পাকনি দিন দিন তোমার মুখে খই ফুটছে,,,,দাড়া তোকে,,,

হিয়াঃ আন্টি তুমি আমায় বাঁচাও,,,, বলেই মিসকার কোলে বসলো,,,,

সবাই মিলে হাসাহাসি করছে,,,,,,,

এদিকে ইফতি ঘুম থেকে উঠে বসতেই মাথায় কেমন ভার হয়ে আছে,,, ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে চলে যায়,,,,,

ইফতিঃ রুমা কফি দে তো,,৷

রুমাঃ জ্বি দিতেছি,,,

ইফতিঃ একি বাসায় কেউ নেই?? কাউকে দেখছি না কেনো??

রুমাঃ ইফতির হাতে কফির মগ টা দিয়ে বললো সবাই মিসকা আফা মুনির রুমে,,,,

ইফতিঃ কেনো? কি হয়েছে মিসকার?? ( কিছুটা ভ্রু কুচকে)

রুমাঃ কিছু না বলেই চলে যায়,,,

ইফতিঃ কফিটা খেয়ে নিয়ে উপরে মিসকার রুমের দিকে যেতে থাকে,,,,,আর ভাবতে থাকে আমি কিছু করি নি তো?? বাসায় ই বা কাল রাতে কিভাবে আসলাম,,,,নাহ মিসকার সাথে কথা বলতে হবে,,,,,

ইফতি রুমে যেতেই সবার হাসি বন্ধ হয়ে যায়,,,,, মিসেস নিলুফা মিসকাকে ঔষধ খাইয়ে হিয়াকে নিয়ে চলে যায়,,,,

ইফতিঃ মমের এমন অস্বাভাবিক আচরণ দেখে অবাক হয়,,,,,,
সামনে এগোতেই দেখে মিসকার কপালে বেন্ডেজ করা,,,

ইফতিঃ কি হয়েছে কপালে?? (মিসকার পাশে বসে)

মিসকা কোনো কথা না বলে বারান্দায় গিয়ে দাড়ায়,,,,,

ইফতি বুঝতে পারে না যে কি এমন হয়েছে,,,কিন্তু কিছু একটা হয়েছে তা বুঝতে পারছে,,,,

ইফতি মিসকার পাশে দাড়িয়ে,,,,,,,কিছু বলতে গিয়েও বারবার কেনো যানি বাধা পাচ্ছে,,, অনেকক্ষণ নিরব হয়ে দাড়িয়ে আছে দুজন,,,, মিসকা নিরবতা ভাঙল,,,,

মিসকাঃ কিছু বলবেন??

ইফতিঃ কাল কি হয়েছিল??

মিসকাঃ কিছু না বলেই চলে যাওয়া ধরেছে,,,,,

ইফতিঃ মিসকার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে,,,,

মিসকা তাল সামলাতে না পেরে ইফতির বুকে গিয়ে পরে,,,,মিসকা মাথায় ব্যথা পেয়ে মাথায় হাত দিয়ে একটু শব্দ করে ওঠে,,,,

ইফতিঃ ছড়ি ছড়ি,,,,বলেই মিসকার হাত সরিয়ে ওর কপালে একটা চুমু একে দিলো,,,,দুহাত দিয়ে ওর গাল ধরে আছে,,,,,,মিসকার চোখ দিয়ে পানি চলে এলে ইফতি তা মুছে দেয়,,,,,,

মিসকাঃ লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলো,,,,,ইফতি এমন করায় ও একটু না বেশ অবাক হলো,,,আবার রাগও হচ্ছে তাই ও দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়,,,,

ইফতি মিসকাকে পিছন থেকে বারবার ডাকলো কিন্তু মিসকা এক দৌড়ে চলে গেলো,,,,

ইফতিঃ ওর গায়ে তো জ্বর,,,,কাল যে কি হয়েছিল আমার,,,,, আর ওর মাথা কাটলো কিভাবে,,,,, এসব না জানা পর্যন্ত আমার শান্তি লাগবে না,,,,কেনো যে ড্রিংক করতে গিয়েছিলাম,,🙁

মিসকা নিচে নেমে বাগানে চলে যায়,,,,,ছোটবেলা থেকেই মিসকা ফুল ভালোবাসে,,,, তাই ফুলগুলো ছুয়েঁ দেখছিলো,,,,,,,পিছন থেকে হিয়া এসে জড়িয়ে ধরলো,,,,,,

হিয়াঃ আন্টি,,,😋

মিসকাঃ এবাবা আমাকে তো ভয় পাইয়ে দিলে,,,,😮

হিয়াঃ ওহ হো তুমি আমার কথায় ভয় পেয়ে গেলে,,,,,তার মানে তুমি কারো কথা ভাবছিলে,,,😂

মিসকাঃ কারো কথা কেনো ভাবতে যাবো,,,, আমি তো ফুল তুলতে না মানে দেখতে এসেছি,,,, আমার বয়েই গেছে বজ্জা( বলেই থেমে গেলো)

হিয়াঃ বুঝেছি তুমি বাবাইয়ের কথা ই ভাবছিলে তুমি😂😂

মিসকাঃ হিয়ার মুখ চেপে ধরে বলে প্লিজ হিয়া এসব আর বলো না,,,,, মানুষ শুনলে খারাপ ভাববে,,,আমার লক্ষী সোনা প্লিজ,,,,,

হিয়াঃ আচ্ছা,,,,,,,,, তবে মাঝে মাঝে বলবো,,,বলেই দৌড় দিলো,,,

মিসকাঃ ওরে পাজি মেয়ে,,,,, দাড়া তোকে বলেই ও পিছু পিছু দৌড়াচ্ছে,,,,,, দুজনে সারা বাগান দৌড়াচ্ছে,,,, মিসকা হিয়াকে ধরে ওকে পিছন থেকে দুহাত দিয়ে পেট ধরে ঘুরাচ্ছে,,,,,, দুজনে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে,,,,, নামিয়ে দিয়ে মিসকা হিয়াকে জড়িয়ে ধরলো,,,,

হিয়াঃ তো হাসছেই,,,,,,,,,,, 😂

মিসকাঃ ওকে কোলে নিয়ে একটা বেঞ্চে বসলো,,,,,,আচ্ছা হিয়া ধরো আমি যদি কখনও চলে যাই তাহলে কি আমায় ভুলে যাবে???

মিসকার কথা শুনে হিয়া মিসকাকে জড়িয়ে ধরলো,,,,কাঁদতে কাঁদতে বললো তোমাকে আমি কোথাও যেতে দিবো না,,,,,তুমি চলে গেলে আমি মরেই যাবো মাম্মাম,,,,

মিসকাঃ হিয়ার মুখ থেকে মাম্মাম কথাটা শুনে হিয়াকে আরো জোরে চেপে ধরলো,,,,,,,কেনো জানি ওর মুখে মাম্মাম শব্দটা শুনে মিসকার ভালো লাগছে,,,,,
না আমি কোত্থাও যাবো না,,,,,হিয়ার কপালে একটা চুমু দিয়ে আবার জড়িয়ে ধরলো,,,,,,,,

ইফতি বারান্দায় দাড়িয়ে সব দেখছে,,,,,,,কিন্তু কিছু বুঝতে পারছে না,,,,তবে হ্যা এটা বুঝেছে মিসকা আসায় তার জীবন টা পুরা চেঞ্জ হয়ে গেছে,,,,,,ওর পরিবারের প্রতিটা মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে,,,,,,,আর হিয়াকে আমি কোনো দিনও মেনে নিতে পারতাম না যদি না মিসকা আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে আমার ভুলগুলি না দেখাতো,,,,,,আজ আমি পরিপূর্ণ,,,,, হ্যা আমি পরিপূর্ণ কিন্তু সেই পূর্নতার স্থানে অনেকটা জায়গা জুরে শুধু মিসকা,,,,,, কিন্তু ও যদি চলে তাহলে,,,😑না না এসব কি ভাবছি,,,,,এর মধ্যেই ওর ফোনে রিংটোন বেজে উঠলো,,,,ইফতি ফোন রিসিভ করলো,,,,

মিসকাঃ হিয়া দেখো আজ কতো ফুল ফুটেছে চলো আমরা ফুল তুলি,,,,,

হিয়াঃ মিসকার কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো আন্টি আগে বলো তুমি এমন কথা আর বলবে না,,,,, আমায় ধরে প্রমিজ করো,,,😭😭,

মিসকাঃ আরে আমার প্রিন্সেসটা এভাবে কাদলে একটুও মানায় না,,,, এই আমি আমার প্রিন্সেসের কাছে প্রমিজ করলাম আমি আর কখনও এমন কথা বলবো না,,,,,( চোখ মুছে দিয়ে)

হিয়াঃ লাভ ইউ মাম,,,,,,ছড়ি আন্টি😊

মিসকাঃআমিও তোমাকে এত্তগুলা ভালোবাসি,,,😍

এখন চলো আমরা ফুল তুলি,,,,, বলে ওরা ফুল তুলছে,,,,,❀ ফুল তুলে বাসার ভিতরে আসে,,,,হিয়া দৌড়ে গিয়ে একটা ঝুড়ি আনে মিসকা ওড়না থে্কে ফুল ঝুড়িতে রাখে,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ তোরা ফুল তুলে এনেছিস?😀

হিয়া ঃদেখো দাদিয়া কত্তফুল 😉

মিসেস নিলুফাঃহুম দেখলাম তো,,, তা কি হবে এতো ফুল দিয়ে এই বাড়িতে কি কারো বিয়ে নাকি আজ😜

মিসকাঃ আন্টি তুমিও পারো,,,,,,এইরে মনে পরেছে তুমি তো আজ আঙ্কেলের উপর ক্ষেপেছো,,,,, আজ তোমাদের আমরা আবার বিয়ে দিবো😉😂

হিয়ার আর মিসকা হাত মিলিয়ে হাসছে আর হিয়া তো রীতি মতো নাচ করছে,,,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ ওরে সব পাজি এক জায়গায় হয়েছে,,,,,,,

রুমাঃ হ ঠিক কইছেন আফা😂😂

মিসকাঃ ওকে এখন তো নব দুলহা দুলহানির জন্য মালা বানাতে হবে চলো হিয়া,,,,,বলেই দু জন উপরে চলে গেলো,,,,

মিসেস নিলুফা ঃ পাগলি মেয়েটা আমার,,,😊
আল্লাহ এই জুটি যেনো আর না ভাঙে,,,,,,সবসময় এমনই রেখ,,,কোনো ঝড় যেনো না আসে,,,,৷ তুমি দেখে রেখো,,,

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here