ভালোবাসার টান
part:27,28
writer:Tanzidaa Jannat
27
মিসকা বারান্দায় দোলনায় বসে আছে,,,,,,,, আর এতোদিনের এইবাড়ির প্রতিটা মানুষের সাথে ঘটে যাওয়া সময় গুলো ভাবছে,,,,মনের মধ্যে একগাদা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে,,,,,, সবাই ওকে কত্ত ভালোবাসে,,,, আঙ্কেল নিজের বাবার মতো কেয়ার করে,,মিসকা ছোটবেলায় নিজের বাবাকে হারিয়েছে।বাবা কি জিনিস এই বুঝটা অসম্পূর্ন থেকে যেত যদি না মি. মুফতিউর রহমানের সাথে না দেখা হতো,,,,আর আন্টি উনিও তো নিজের মেয়ের মতো আমায় ভালোবাসেন,,,আমি নিজেকে এই পরিবারের একজনই ভাবছি,,,,,,,,আমিও যে সবাইকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি,,,,,কিন্তু এটা কি ঠিক,,,,,সত্যি তো আমি এখানের কেউ না কয়েকদিনের অতিথি মাত্র আমি এতো বেশি ভালোবেসে ফেলেছি এই পরিবারটাকে কখনও কি ভুলতে পারবো??😢কি করে থাকবো আমি হিয়াকে ছাড়া। আচ্ছা ওকি আমায় ভুলে যাবে? আমায় ছাড়া থাকতে পারবে?? এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে ও বলতেও পারবে না,,,,,,,
ইফতি হিয়েকে নিয়ে ওর রুমে গিয়ে গল্প করছে,,,,,
ইফতিঃ হিয়া তুমি একটু বসো আমি ওয়াশরুমে থেকে আসছি,,,,
হিয়াঃ মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়,,,,
ইফতি ওয়াশরুমে চলে গেলে হিয়া রুমটাকে ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে,,,,এটা সেটা নেরে,,,,,,আলমিরাতে হাত দিয়ে কোথায় কি রাখা দেখতে থাকে। আলমিরা খোলাই ছিলো।কারন হিয়া তেমন একটা ইফতির রুমে আসে না। এখন যেটুকু আসে তাও ইফতির সাথে,,,,
ওসব দেখছে এর মধ্যেই ও একটা ডায়রী দেখতে পেলো,,,,,,,ডায়রীটা অনেক সুন্দর ও হাত দিতে যাবে তখন ইফতির শব্দ পেয়ে আর ধরলো না,,,,,,,,
ইফতিঃ কি দেখছো হুম
হিয়াঃ কিছু না,,,,,,,
ইফতি হিয়াকে কোলে নিয়ে ওর সাথে মজা করা শুরু করে দিয়েছে,,,,,,ওকে সুরসুরি দিয়ে গাল টেনে, নাক টেনে দুজনে দৌড়িয়ে পুরা রুমটা এলোমেলো করে ফেলেছে,,,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ একি😱রুমের এই অবস্থা করলো কে”!
মিসেস নিলুফার কথা শুনে ওরা দুজনেই ফিরে তাকালো,,,,,,,আবার নিজেদের দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো
মিসেস নিলুফা ঃ ইফতি তোর রুম তো সবসময় পরিপাটি থাকে তাহলে,,,,,,একি করেছিস রুমের অবস্থা!!!
ইফতিঃ মম তুমিও না এসো আমাদের সাথে জয়েন করো,,,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ না বাবা তোরাই মজা কর,,,,
আমার আর সেই বয়স নেই,,,,
হিয়াঃ দাদিয়া তুমি বুড়ি হয়ে গেছো??
মিসেস নিলুফা ঃ হুম,,,, তা তো হবোই,,,,,,,আর কয়েক দিন পর এই তো আমার দিদিভাইয়ের বিয়ে দিবো,,,,,,
হিয়াঃ দাদিয়া😒( মুখ ভার করে অন্য দিক তাকিয়ে আছে)
ইফতিঃ কে বলেছে আমার মামনির বিয়ে এতো তাড়াতাড়ি দিবো না
হিয়াঃ বাবাই তুমি অনেক ভালো
দাদিয়াঃ অমনি না 😟এখন দাদিয়া পচা হয়ে গেলো
হিয়াঃ না দাদিয়া তুমিও ভালো তবে একটু নটি হয়ে গেছো,,,(কোলে উঠে)
মিসেস নিলুফা ঃ ওকে পাকনি বুড়িরে আমার,,,(গাল একটু টেনে দিয়ে)
ইফতিঃ মম তুমি রুমা কে বলো আমার রুমটা গুছিয়ে দিতে,,,,,,,আমরা যাচ্ছি,,
মিসেস নিলুফা ঃ হুম বলছি,,,,
ইফতি হিয়াকে নিয়ে মিসকার রুমে গেলো,,,,,কিন্তু মিসকা তো রুমে নেই তাহলে এই সন্ধ্যায় কোথায় গেলো,??
হিয়া ইফতির কোল থেকে নেমে বারান্দায় চলে যায়,,,,,,
আবার ফিরে এসে ইফতির হাত ধরে টেনে নিয়ে মিসকার সামনে দাড় করায়,,,,
ইফতিঃ মিসকা দোলনায় ঘুমিয়ে আছে। হালকা বাতাসে ওর কিছু চুল উরছে,,,,কি অপরুপ লাগছে,,,,,বারান্দা বেতের মোড়ার উপর বসে মিসকার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,
হিয়াঃ বাবাই আন্টি তো আজকে ঘুমিয়ে গেলো,,,😔এবার তুমি আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দাও,,,🙃
ইফতিঃ হিয়াকে কোলে নিয়ে গল্প বলছে হিয়াও ঘুমিয়ে পরে,,,
ইফতি হিয়াকে বিছানায় সুইয়ে দেয়।আবার বারান্দায় গিয়ে মিসকার পাশে বসে।মিসকা কিছু একটার সাপোর্ট পেয়ে জড়িয়ে ধরে মাথা ইফতির ঘারের উপর রাখে,,,,,,ইফতি ওর দিকে তাকিয়ে আছে এক ধ্যানে,,,,ওর এমন কান্ড দেখে হাসিও পাচ্ছে,,,,,,
ইফতিও বসে আছে বেশ ভালোই লাগছে। ফুলের গন্ধে চারিপাশ মোহরিত,,,মৃদু বাতাস,, আকাশটাও হালকা মেঘলা আর ইফতি চেয়ে আছে মিসকার দিকে,,,,,,ঘুমে মধ্যে একটা অপ্সরীর চেয়ে কম লাগছে না,,,,পৃথিবীর সকল মায়া যেনো ওর মুখে ভর করেছে,,,,,
এর মধ্যেই রুমার নক পরলো,,,,,
ইফতিঃ রুমা কিছু বলবি??
রুমাঃ আফা মুনি কোথায়?? খালাম্মা আপনাগো নিচে খাইতে ডাকতাছে,,,,,
ইফতি’ঃ মিসকা তো ঘুমিয়ে পরেছে। তুই যা আমি আসছি,,,,
রুমাঃ আচ্ছা,,,,( বলেই চলে গেলো)
ইফতি মিসকাকে কোলে তুলে সুয়ে দিলো,,,,,মিসকার কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে কানে গুজে দিলো,,,মিসকা একটু নরে ইফতির হাত নিজের হাতের ভাজে রাখলো,,,,ঘুমন্ত অবস্থায়ই,,,
ইফতিঃ এইরে হাতটাকে এখন ছাড়াবো কি করে😰।এতো শক্ত করে ধরে রাখছে,,,,
ইফতি অনেক কস্টে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে দরজা পর্যন্ত গিয়ে থেমে পিছনে ফিরে তাকায়,,,,মিসকা আর হিয়াকে পাশাপাশি ঘুমন্ত অবস্থায় কি যে সুন্দর লাগছে।দু’জনকেই দুইটা ডলের মতো দেখাচ্ছে। ইফতি একটু হেসে নিচে চলে যায়,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ একি তুই একা কেনো?? মিসকা কোথায়?
ইফতিঃ দেখলাম তো ঘুমুচ্ছে,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ দেখলি মানে তুই তো ঐ রুমেই ছিলি।রুমা যে বললো,,,,,,,
ইফতিঃ না মানে হ্যা,,,,,আমি তো ঐরুমেই ছিলাম। হিয়াকে ঘুম পারাতে গিয়েছিলাম
মি. মুফতিউর রহমান ঃ হ্যা,,,,,, তারপর দুজনকে ঘুম পারিয়ে দিয়ে আসলি
ইফতিঃ বাবা!!!🙁
মি. মুফতিউর রহমান ঃ আচ্ছা ঠিক আছে এবার চুপচাপ খেয়ে নে🙃🙃।
ইফতি লজ্জায় কোনো রকম খেয়ে উপরে চলে যায়,,,,,,আর এদিকে মিসেস আর মি. দুজনেই হাসছে,,,,
ইফতিঃ নিজের রুমে এসে বারান্দায় চলে যায়,,,,,,বারান্দায় দাঁড়াতেই ওর শরীরে বৃষ্টির ২,১ ফোটা পানি পরে। আজ হয়তো বৃষ্টি হবে বলার সাথে সাথে বৃষ্টি হওয়া শুরু করলো,,,,,।কেনো জানি এই বৃষ্টি টাকে আজ ইফতির ভালো লাগছে,,,,,ওর মোনকে আরো সতেজ করছে,,,,কয়েকদিন আগেও এই বৃষ্টি ওর কাছে অসহ্য লাগতো,,,,,,বৃষ্টির সাথে সাথে ওর চোখ ভিজে যেতো,,,,,পুরোনো স্মৃতি ওকে তাড়া করতো,,,,,,এই বৃষ্টিতে কতো সময় কাটিয়েছে ইফতি নিলার সাথে,,,,,,এতো সহজে কি সব ভুলে থাকা যায়,,,,,,কিন্তু আজ ওর কাছে বর্তমানটাই সামনে আসছে,,,,,,এক অদ্ভুদ ফ্লিংস কাজ করছে,,,,
ইফতিঃ আজ আমার সেই আগের মতো বৃষ্টি এতো ভালো লাগছে কেনো??( পাশেই মনে হলো কেউ কথা বলছে)
তাকিয়ে দেখে মিসকা,,,,,চুলগুলো ছাড়া বাতাছে উরছে সাদা একটা শাড়ি পরা।হাসছে আর বলছে তুমি যে প্রেমে পরেছ এজন্য 😊বৃষ্টি ভালো লাগছে,,,,,
ইফতিঃ মিসকার দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,এটা কি সত্যি ই মিসকা??🤔ইফতি চোখ ডলে তাকাতেই দেখে নেই,,,,
চারিপাশ খুজেও পেলো না,,,,,,,
ইফতিঃ আরে ওতো ঘুমাচ্ছে। আমি এসব কি কল্পনা করছি😂 আমি তো পুরাই পাগল হয়ে যাচ্ছি (মাথায় একটা থাপ্পড় মেরে) আচ্ছা আমি কি সত্যি ওকে,,,,,,,,,
(মিসকা)কোনো সন্দেহ আছে বুঝি।ফিরে তাকাতেই দেখে মিসকা হাসছে,,,,,,কি অপরুপ লাগছে,,,,,,
ইফতির পাশে দাড়িয়ে আছে,,,,,,ইফতি একটু হেসে নিচে তাকিয়ে আবার সামনে তাকাতেই দেখে মিসকা নেই,,,,
একি আবার উধাও হয়ে গেলে। নাহ এ আমি কিসের টানে টান খাচ্ছি // এটাই কি তবে #ভালোবাসার__টান,,,, 😊।মাথাটা একটু নেরে রুমের ভিতরে চলে যায়,,,,,,,টাওয়াল টা হাতে নিয়ে আয়নার সামনে দাড়ায়,,,,,,ইফতি তুই আর কতো ভাগবি তুই তো ধরা পরে গেছিস,,,,,ভালোবেসে ফেলেছিস যে,,,,,,
না কালই মিসকাকে বলবো আমি ওকে ভালোবাসি
তারপর একটু মুচকি হেসে সুয়ে পরে,,,,,,,
সকালে মিসকার ঘুম ভাংতেই দেখে ৮.৩০ বেজে গেছে,,,
মিসকাঃ সে কি আমি এতো ঘুম কখন দিলাম
আর এখানেই বা কেমনে আসলাম।হিয়া!!! পাসে ফিরতেই দেখে ঘুমিয়ে আছি।মিসকা একটা চুমু দিয়ে চাদরটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে দেয়,,,,,,,,,,, আজ আবহাওয়াটা ও আজ বেশ ঠান্ডা,,,,,,,, মিসকা ওয়াশরুমে থেকে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে বারান্দায় দাড়ায়,,,,,
বেশ ঠান্ডা বাতাস,,,,,কাল বৃষ্টি হয়েছে অথচ আমি টেরই পাই নি যাক এজন্য হয়তো ঘুমটা ভালো হয়েছল,,উফফ প্রচন্ড ক্ষধা পেয়েছে,,,,,,,, যাই নিচে গিয়ে কিছু খেয়ে আসি,,,,,
নিচে নামতেই খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজার গন্ধে ক্ষুধা আরো যেনো বেড়ে গেলো
মিসকাঃ গুড মর্নিং,,,,, আঙ্কেল
মি.মুফতিউর রহমানঃগুড মর্নিং,,,,,,,,,, কিরে কেমন ঘুম হলো??
মিসকাঃ হুম ভালো,,,,,,,
মি.মুফতিউর রহমান ঃ বোস এখানে,,,,
মিসকাঃ আন্টি কোথায়??
মি. মুফতিউর রহমানঃ আমার গিন্নি!! সে তো আজ রান্না করছে,,,,,,,,,,,,,
মিসকাঃ ও আচ্ছা এজন্য ই তো বলি আজ রান্নার ঘ্রানে সারা বাড়ি এমন ম ম করছে কেনো,,,,,,( বলেই রান্না ঘরে যায়)
মিসেস নিলুফা ঃ আরে বলিস না,,,,,,কাল রাত থেকে মাথাটা খেয়ে ফেলছে,,,,,খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ খাবে,,,,কি আর করা
মি. মুফতিউর রহমানঃ এতো সুন্দর একটা ওয়েদারে খিচুড়ি না হলে চলে না,,,,,আর তার সাথে ইলিশ মাছ। আহঃ নামেই মুখে পানি এসে পরছে,,,,,
মিসেস নিলুফাঃ হয়েছে হয়েছে এবার যাও আর একটু ওয়েট করো।
যা তো মা ইফতি আর হিয়াকে নিয়ে আয়,,,,,, আজ আমরা সবাই এক সাথে খিচুড়ি খাবো,,,,
মিসকাঃ এই রে আন্টি আমাকে কেনো ডাকতে বললো// ভাবছিলাম ঐ রাক্ষস টার সামনে যাবো না😏
এখন কি করি
এসব ভাবতে ভাবতে ইফতির রুমে গিয়ে দেখে ইফতি ঘুমুচ্ছে। কি নিস্পাপ লাগছে ইচ্ছে হচ্ছে নাকটা টেনে দিই😉।কিন্তু এ মুখটা দেখে কে বলবে এই লোকটা একটা আস্ত বজ্জাত শয়তান,সবসময় বদ জিনিস মাথায় ঘুরপাক খায়
মিসকাঃ এই যে শুনছেন,,,,,,,
ইফতিঃ হুম,,,,,,,,( ঘুমের চোখে)
মিসকাঃ এই যে আপনাকে ডাকছি। শুনতে পাচ্ছেন??
ইফতিঃ উফফ তুমি একটু শান্তিতে ঘুমোতে দাও তো,,,,,,,,, সবসময় তো জ্বালিয়ে মারো এখন স্বপ্নে এসেও শুরু করছো??(ইফতি একটু চোখ মেলে তাকিয়ে,,,,,,)
মিসকাঃ কি বললেন 😠
ইফতিঃ রাগলে তোমায় ভালো লাগে 😊( ঘুমের চোখে)
মিসকাঃ এই ব্যটা খারুজ কি পাগল হয়ে গেলো নাকি??( মনে মনে)
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
#ভালোবাসার__টান,,,,,,,😍👸😍
#part:::::::::(28)
#writer::::::Tanzidaa Jannat
মিসকাঃ কি করা যায়🤔🤔 এই বজ্জাত গোমড়ামুখো টাকে উঠাই কিভাবে।মিসকার টেবিলের উপর চোখ পরতেই পেয়েছি।
ইফতিঃ what the,,,, ( বলেই উঠে বসলো)কি করলা এইটা
পুরা ভিজিয়ে দিলা
মিসকাঃ কি কোরবো কতক্ষণ ধরে ডেকে যাচ্ছি,,,,,,, উল্টাপাল্টা কিসব বোলছেন//
ইফতিঃ তবেরে,,,,,,
মিসকাঃ আন্টি ডাকতে বলছিলো আমার কি দোষ আমি যাচ্ছি আপনি আসেন ( বলেই এক দৌড়ে চলে যায়)
ইফতিঃ পাগলি
মিসকা এক দৌড়ে নিজের রুমে এসে,,,,,
মিসকাঃ উফফ,,,,,বরো জোর বেচে গেছি। রাক্ষটা ধরতে পারলে মেরে ফেলতো
মিসকা হিয়ার কাছে গিয়ে কোলে নিয়ে,,,
মিসকাঃ কি হলো মামুনি উঠবে না,,,,,,,,,
হিয়াঃ উমম,,,,
মিসকাঃ কি উমমম চলো তাড়াতাড়ি মুখ ধুতে হতে তো,,,, দাদিয়া তোমার জন্য খিচুড়ি রান্না করছে
হিয়াঃ সত্যি
মিসকাঃ হুম,,,,,,
মিসকা ওকে কোলে নিয়েই ওয়াশরুমে গিয়ে ওকে ফ্রেস করে নিচে নামে,,,,,
মি. মুফতিউর রহমানঃ কি আমার দিদিভাইয়ের ঘুম হলো,,,,
হিয়া দৌড়ে গিয়ে ওর দাদুভাই এর কোলে বসলো,,,,,
হিয়াঃ হুম,,,,জানো দাদুভাই কাল বাবাই আমাকে ঘুম পাড়িয়েছে,,,,
মুফতিউর রহমান ঃ ও তাই,,,😳তাই তো বলি আমার দিদিভাই এতো ঘুমুচ্ছে কেনো
মিসকাঃ মিসেস নিলুফার সাথে খাবার এনে টেবিলে রাখছে,,,,
ইফতিঃ আহ,,,,,,আজকে পুরো বাড়িটা ঘ্রানে ভরে গেছে,,,,মম তোমার হাতে জাদু আছে
মিসেস নিলুফা ঃ হুম হয়েছে এবার খেতে বোস,,,,,দিদিভাই তোমার দাদুভাই কে নিয়ে খেতে এসো,,,,
সবাই একসাথে খেতে বসছে,,,,,
ইফতিঃ খিচুড়ি, ইলিশ মাছ ভাজা, আমের আচার ওফফ খাবারটা সে,,,,ই
হিয়াঃ আমি তো ইলিশ মাছের কাটা বেছে খেতে পারি না
মিসকাঃ তাতে কি হয়েছে,,,,, আমি তো আছি,,,
হিয়াঃ ওকে আন্টি😊
সবাই খাচ্ছে গল্প করছে,,,,
মিসকা হিয়াকে খাইয়ে দিচ্ছে,,,,,
হিয়াঃ আন্টি আমি আর খাবো না,,,,,,,
মিসকাঃ আচ্ছা তাহলে পানি খেয়ে নাও,,,,,
হিয়া পানি খেয়ে গিয়ে সোফায় বসে টিভিতে কার্টুন দেখছে,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ নে এবার তুই খেতে বোস,,,,রাতেও তো খাস নি,,,
মিসকাঃ হুম বলে বসলে মিসেস নিলুফা খাবার বেড়ে দিলো,,,
ইফতিঃ কমিয়ে কমিয়ে দাও 😜দিন দিন হাতির মতো হচ্ছে
মিসকাঃ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,,,
মিসেস নিলুফা ঃ তুই আমার মেয়েটার সাথে এরকম করিস কেন সবসময়?
ইফতিঃ যা,,,,আ বাবা আমি কি করলাম// ভালোর জন্য বললাম এখন দোষ হয়ে গেলো,,,,এজন্যই কারো ভালো করতে নাই,,
মিসেস নিলুফা ঃ লাগবে না তোর ভালো,,,,,তুই এখন নিজের খাওয়া শেষ কর,,,,
মিসকাঃ ইশশশশ আসছে আমার ভালো করার জন্য,,,,,,, হাহ ( মনে মনে)
মুফতিউর রহমান ঃ ভালো কথা আজ তো অফিসিয়ালি পার্টি আছে,,,,,তোমরা রেডি হয়ে নিয়ো,,,,,আমরা ২.৩০-৩.০০ টার মধ্যে বের হবো,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ আচ্ছা,,,,,
মিসকা ইফতির চোখ পরতেই,,,
ইফতিঃ একটা মুচকি হাসি দিয়ে চোখ টিপ মারলো,,,,
মিসকাঃ মুখটা একটু বাঁকা করে চোখ নামিয়ে নিলো,,,,
সবার খাওয়া শেষ হলে যার যার রুমে যায়,,,,,,মিসকা হিয়াকে নিয়ে ওর রুমে চলে যায়,,,,
হিয়াঃ দাদুভাই যে বললো আজকে পার্টি // আজকে কোন ড্রেসটা পরবো,,,,??
মিসকাঃ তুমি আর আমি এক রকম কালারের পরবো,,,,,
হিয়াঃ ওকে😊
এর মধ্যেই ইফতি রুমে ঢোকে,,,,,,
ইফতিঃ তুমি আজ কি ড্রেস পরবা?? হিয়া
হিয়াঃ আমি আর আন্টি এক রকম ড্রেস পরবো,,,,
ইফতিঃ ও আচ্ছা,,,,,,
মিসকাঃ এই নাও এই ড্রেসটা পরবে আজ,,,,,
হিয়াঃ ওয়াও,,,,,ব্লাক কালারের। এটা তো সেদিন কিনে আনলা
আমি দাদুভাই আর দাদিয়াকে দেখিয়ে আসি,,,,,,বলেই চলে গেলো,,,,
মিসকা আলমিরা থেকে কাপর বের করে দেখছে,,,ইফতি পিছন থেকে (এহম এহম)
মিসকা পিছন ফিরে মুখ বাঁকা কর😏চলে যাচ্ছে,,,,
ইফতিঃ একটা শাড়ি পরবা প্লিজ,,
মিসকাঃ শাড়ি কেনো পরবো🙄??আপনি তো দিন দিন ভদ্রতা ভুলে যাচ্ছেন,,,,,
ইফতিঃ আমি আবার কি করলাম,,,
মিসকাঃ কারো রুমে ঢোকার আগে নক করতে হয় ভুলে গেছেন
ইফতিঃ ও,,হ আমার কথা আমাকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে
মিসকাঃ ইশশশশ আবার হাসতে আসছে😏।অন্য কেউ ভুল করলে তাকে শাস্তি দেয় 🙄।আপনি এখন এখান থেকে যান আমি সাওয়ারে যাবো,,,,
ইফতিঃ কি বললা আবার বলো,,,
মিসকাঃ কি বললাম!!🙄
বললাম আপনি যান এখন থেকে৷
ইফতিঃ আ,,, আ দারাও আপনি তারপর কি বললা??
মিসকা ঃ কি আবার “”যান
ইফতিঃ জান😜হায়রে তুমি আমারে কি বললা এইটা
মিসকাঃ রাগী চোখে তাকালো,,,
ইফতিঃ একটা চোখ টিপ মেরে হেসে চলে গেলো,,,,,
মিসকাঃ রাক্ষস বানর হনুমান ইচ্ছে করছে শুকনো মরিচ মুখে ডলে দিই
হিয়া আন্টি দাদিয়া বলেছে গোসল করে নিতে,,,,
মিসকাঃ হুম বলেই ওয়াশরুমে চলে গেলো,,
হিয়াকে রেডি করে নিজেও সাওয়ার নিয়ে নেয়,,,,,
মিসেস নিলুফা কিরে আর কতক্ষণ //
মিসেস নিলুফা ঃ কিরে তুই এখনও রেডি হোস নি!!ওরা তো চলে গেলো,,,,,,,,,
মিসকাঃ ১ ঘন্টা ধরে চেষ্টা করছি পারছি না
মিসেস নিলুফা ঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,,,,,,,,, আমি আজ তোকে সাজিয়ে দিচ্ছি
মিসকাঃ আচ্ছা,,,,,,, আন্টি তুমি কত্ত ভালো,,,
মিসেস নিলুফা ওকে শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে দিলো,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ বাহ কি সুন্দর লাগছে তোকে,,,দাড়া একটু নজর টিকা লাগিয়ে দেই,,কারো নজর যেনো না লাগে,,,,😊
মিসকাঃ আন্টি তুমি একটু বেশিই বলছো,,,,
মিসেস নিলুফাঃ মোটেও না,,,,,,একদম পরীর মতো লাগছে
হিয়াঃ ওয়াও আন্টি তোমাকে কি সুন্দর লাগছে
মিসকাঃ হয়েছে এবার চলো দেরী হয়ে যাবে তো
মিসেস নিলুফা ঃ একটু দাড়া,,,,( বলেই কানের নিচে একটা নজর টিকা লাগিয়ে দিই,,,,,আমার ঘরের লক্ষী যেনো সবসময় এমন হাসি খুশি থাকে সবসময়,,, কারো নজর যেন না লাগে)
মিসকাঃ মিসেস নিলুফার কথায় একটু জিগ্যাসা দৃষ্টিতে তাকায়,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ এই চল চল দেরী হয়ে যাবে,,,,,
ওরা তিন জন গাড়িতে উঠে পরলো,,,,,প্রায় ১ ঘন্টার মধ্যে ওরা পৌছে গেলো,,,,,
ইফতি সবার সাথে কথা বলছিলো,,,,এমন সময় ওর কেমন যেন একটা অনুভুতি হচ্ছিল,,, পিছনে ফিরে তাকাতেই হা হয়ে গেলো,,,,,,,,পরনে কালো সাড়ি,,,,খয়রী চিকন পাড়, কানে ঝুমকা,কপালে টিপ,হাতে একমুঠো চুড়ি,,,চুলগুলো বাধা সবমিলিয়ে জাস্ট ওয়াও
মিসকাঃ ভিতরে ঢুকেই ইফতির দিকে চোখ গেলো,,,,পরনে ব্লাক শার্ট সাথে কালো কোর্ড,চুল হালকা স্পাইক করা, মুখে হালকা খোচা দাড়ি দেখতে হ্যান্ডসাম লাগছে,,,,এমনিতে স্যামবর্নের হাতে একটা ঘড়ি। দারুন লাগছে,,,,উফফ আমার বজ্জাত গোমড়ামুখোটাকে আজ সে,,,ই লাগছে😊,,,,,,হায় হায় কিসব বলছি আমার বজ্জাত হতে যাবে কেন??//😏
মিসেস নিলুফা ঃ কি হলো দাড়িয়ে গেলি কেনো??
মিসকাঃ না আসলে,,,,,কিছু না চলুন,,,,
মিসেস নিলুফা সবাইকে মিসকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো,,,,,,সবাই খুব প্রশংসা করছে,,,,মিসকাও সবার সাথে হেসে কথা বলছে,,,
ইফতিও সবার সাথে কথা বলছে আর কতক্ষণ পর পর আড় চোখে তাকাচ্ছে মিসকার দিকে,,,,
এর মধ্যেই আবিদ এসে মিসেস নিলুফা কে সালাম করলেন,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ আরে কি করছো বেঁচে থাকো বাবা,,
আবিদঃআমায় চিনতে পেরেছেন আন্টি?/
মিসেস নিলুফা ঃ তোমাকে কেনো চিনবো না তুমি তো রিফাদ ভাইয়ের ছেলে আবিদ,,,,
আবিদঃ জ্বি আন্টি,,,,😊
মিসেস নিলুফা ঃ তোমাকে আরো ছোট থাকতে দেখেছি,,,,কিন্তু সেদিন তোমার আঙ্কেল তোমার ছবি দেখিয়েছে,,,,,,
আবিদঃ ও আচ্ছা,,,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ রিফাদ ভাই আর ভাবী কেমন আছে??
আবিদঃ জ্বী ভালো,,,,, আসি আন্টি,,,
আবিদ গিয়ে মিসকার মাথায় টোকা সামনে গেলো,,,মিসকা পিছন ফিরে কাউকে না দেখে সামনে তাকিয়ে দেখে আবিদ হাসছে,,,,,,,
মিসকাঃ তুই আর শুধরালি না,,,,,,কিরে এতো ফিটফাট হয়ে আসছিস যে মেয়ে পটাবি নাকি
আবিদঃ যাকে পটাতে চাই সেই তো পটে না,,,
মিসকাঃ কি বললি!!!
আবিদঃ না মানে বললাম তোকে সুন্দর লাগছে,,,,, আজকে
মিসকাঃ আসলে কি বলতো তোর চোখটা আজ সুন্দর তাই আমাকে সুন্দর লাগছে,,,,
হিয়াঃ আন্টি,,,,,,
আবিদঃ ও কে??
মিসকাঃ ও হচ্ছে হিয়া,,,,,, ইফতি স্যারের মেয়ে,,,
আবিদঃ ও তাই,,,,,,একদম প্রিন্সেস এর মতো লাগছে,,,
ওদের হাসাহাসি দেখে ইফতি রাগে ফুসছে,,,,,আবিদের সাথে এতো হাসাহাসি কিসের?? মানছি ও ওর ফ্রেন্ড তাই বলে
চলবে,,,,,,,