ভাবী যখন বউ
সূচনা_পর্ব
Syed Redwan
“খবরদার! আমার ভাইয়ের খুনী যেন আমাকে ভুল করেও স্পর্শ না করে!” বাসরঘরে প্রবেশ করামাত্রই কথাগুলো আমি প্রচন্ড ক্রোধে বজ্রকন্ঠে নিজের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী রাইফার উদ্দেশ্যে বললাম।
যেকোন মেয়েই আজকের মতো একটা রাতে নিজের বরের মুখ থেকে এমন একটা কথা শুনলে হতভম্ব হয়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। হোক সেটা ওই মেয়ের জীবনের দ্বিতীয় বাসররাত। এমনটা রাইফার ক্ষেত্রেও হলো। আমি ঘরে প্রবেশ করামাত্রই যখন ও বেশ উৎফুল্ল মনে আমার পা ছুঁয়ে সালাম করার জন্য এগিয়ে এসে আমার পা ছুঁতে যাবে, তখনই তড়িৎগতিতে আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়ে এই কথাটা বললাম। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ও অন্তত আজকের এই রাতে আমার কাছ থেকে এমনটা আশা করেনি।
“বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, ঠিক যেমনটা আগেও বাসতাম এবং ভবিষ্যতেও বাসবো।” আমার গলা জড়িয়ে ধরে কথাগুলো বলল রাইফা।
সাথে সাথেই আমি ওকে নিজের থেকে আলাদা করে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম,”ভালোবাসা! তাও আবার তোর দ্বারা? হা হা হা! তোর মতো একটা নষ্টা, চরিত্রহীন, লম্পট আর খুনী মেয়ে কোনদিনও কাউকে ভালোবাসতে পারে না। কোনদিনও না!”
রাইফা পুনরায় আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,”বিশ্বাস করো, আমি তোমার ভাইকে খুন করিনি! আমি কি কখনো এমন কাজ করতে পারি তুমিই বলো?”
এবার আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেল। আমি রাইফাকে দেয়ালের সাথে খুব শক্ত করে চেপে ধরলাম। ওর চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল ব্যথায়, যেটা আমি স্পষ্ট রুমের স্বল্প আলোতেও দেখতে এবং অনুভব করতে পারছি। ওর হাতের কয়েকটা চুড়িও বোধহয় আমার হাতের চাপে ভেঙে গিয়ে ওকে আরো বেশি করে আঘাত দিচ্ছে যেটাও আমি বুঝতে পারছি। তবুও ও মুখ বুজে সবকিছু সহ্য করছে। আমার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ন্যূনতম চেষ্টাও করছে না। তবুও ওর প্রতি কেন জানি আমার সামান্যতম দয়াও হচ্ছে না। আমি বললাম,”তোর মতো খুনী কোনদিনও কাউকে ভালোবাসতে পারে না। আমি আগে ভাবতাম যে তুই শুধুমাত্র আমার জীবনের অভিশাপ। কিন্তু এখন আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে তুই শুধু আমার না, বরং আমার পুরো পরিবারের জন্যও একটা ভয়ংকর অভিশাপ। প্রথমে তো আমার ভাইকে খেয়েছিস, তারপর এসেছিস এবার আমাকে খেতে তাই না? এভাবে আমাদের পুরো পরিবারকে খেয়ে একেবারেই শেষ করে দেওয়ার নিয়ত তোর আমি বুঝি। আর কী বললি, তুই আমার ভাইকে খুন করিসনি? তুই কি মনে করেছিস যে তোকে আমি চিনি না? গত তিনটা বছর ধরে আমাকে তুই জ্বালিয়ে মেরেছিস। তবুও তেমন কিছু বলতাম না। আশা রাখতাম, একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই ঠিক হয়নি। তুই এই বাড়িতে আসার পরও প্রতিটা মুহূর্তে নিজের নষ্ট চরিত্রের প্রমাণ দিয়েছিস আমার কাছে। তোকে দেখে মনে হতো যেন তুই আমার স্ত্রী, ভাইয়ের না। হয়তো আমাকে পাওয়ার জন্যই তুই আমার কলিজার টুকরো ভাইটাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছিস।” বলেই আমি হু হু করে কেঁদে দিলাম।
আমাকে এমন অবস্থায় কাঁদতে দেখে রাইফা বিশেষ কিছু বলল না আমাকে। ও নিজেও নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পেরেছে যে আমার বর্তমান মানসিক অবস্থায় আমি কিছুতেই তার কথা না শুনবো আর না তো বিশ্বাস করবো। তার সাথে তার নিজের করা পূর্বের কুকীর্তি তো রয়েছেই। তাই সে নিজে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিল হয়তো।
এই মুহূর্তে আমার বুকটা দুঃখ এবং রাগে যেন ফেটে যাচ্ছে। রাইফা নামক কালনাগিনীর চোখের অশ্রু এখন আমার কাছে কুমিরের কান্না মনে হচ্ছে। আরো কিছুক্ষণ ওর সামনে থাকলে আমি নিজের রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারি বলে নিজেকে শান্ত করার জন্য আমি আমার ওয়ারড্রব থেকে নিজের জামাকাপড় বের করে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।
ঝর্ণার ঠান্ডা পানির নিচে বসে আমি নিজের শরীরকে পরিস্কার করছি, সাথে নিজের মনের রাগ এবং দুঃখকেও প্রশমিত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছুতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছি না। নিজের কলিজার টুকরো ভাইকে হারানোর কষ্টটাই আমি সহ্য করতে পারছি না, তার উপর আমার জীবনের অন্যতম বিরক্তিকর মানুষ এবং বর্তমানে ঘৃণার মানুষ এখন আমার বউ; আমি আর কোনমতেই নিতে পারছি না এটা। প্রতিটা মুহূর্ত আমার মনে হচ্ছে যেন আমি মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে আছি। রাইফা আমার ভাইয়ের খুনী না হলে হয়তো একটা সময় মেনে নিতে পারতাম সবকিছু অনেক কষ্ট হলেও। কিন্তু আমি তো বিশ্বাস করি যে রাইফাই আমার ভাইয়ের খুনী। আমার ভাইয়ের খুনীকে যেখানে আমার সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার কথা সেখানে তার সাথে আমার সংসার করতে হবে? নাহ! আমি আর ভাবতে পারছি না!
ঝর্ণার কল ঘুরিয়ে পানি নিঃসরণের গতি বাড়িয়ে দিলাম। এখন মনে হচ্ছে যেন আমার মাথার উপর প্রচন্ড বেগে বৃষ্টি হচ্ছে। এখন এমনিতেই গ্রীষ্মকাল, তার উপর রাগে, দুঃখে এবং শোকে আমার মাথার পাশাপাশি শরীর পুরোটাই গরম হয়ে আছে। তাছাড়া আমি কয়েকদিনের জার্নিতে শারীরিকভাবে অনেকটা ক্লান্তও। তাই ঠান্ডা পানিতে বেশ কিছুক্ষণ থাকলে নিজেকে ঠান্ডা এবং শান্ত করতে পারব এই আশায় আমি পুনরায় আগের জায়গায় বসে পানিতে ভিজতে লাগলাম। ঝর্ণার পানির সাথে আমার চোখের নোনতা পানি মিশ্রিত হয়ে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগল। আমি ভাবতে লাগলাম কী থেকে কী হয়ে গেল জীবনে। ডুব দিলাম অতীতে।
আমার জীবন বড়ই বৈচিত্র্যময়। আমার পরিবার বলতে ছিলাম আমি, আমার বড় ভাই রিফাত, ছোট বোন মেঘা, বাবা আর মা। আমার দাদা-দাদী এবং নানা-নানিও বেঁচে আছেন এই পর্যন্ত। বাবারা দুই ভাই এক বোন। সাথে আমার একজন খালা ও দুই মামা আছে। এই গেল পরিবার বৃত্তান্ত।
আমার ভাই রিফাত ছিল আমার চেয়ে তিন বছরের বড়। আর ছোট বোন মেঘা চার বছরের ছোট। আমার ভাই ছিল অ্যাকাউন্টিংয়ের ছাত্র। পেশায় ছিল একজন ব্যাংকার। আর ছোট বোন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আমিও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বছর ইংরেজিতে অনার্স শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের কনিষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে জয়েন করেছি। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। যে কোন ডিপার্টমেন্টের প্রতি বর্ষের সেরা ৩-৪ জনই কেবলমাত্র সুযোগ পায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক হিসেবে জয়েনের। আমি সবসময়ই একজন নিবেদিত মনের শিক্ষার্থী ছিলাম, বিশেষ করে ভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে জয়েন করার তুমুল আগ্রহ ছিল আমার ছোট থেকেই। আমি নিজ ইচ্ছাতেই ইংরেজি বিভাগেই ভর্তি হই সাথে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েই একাডেমিক সাধনা চালিয়ে যাই। ইংরেজি বিভাগে সিজিপিএ তুলা অনেক কষ্টের, তবুও যেহেতু আমার ছোটবেলা থেকেই ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছিল তাই আমি বেশ ভালো ফলাফল নিয়েই অনার্স পাশ করি; সারা ডিপার্টমেন্টে তৃতীয় স্থান অধিকার করি সিজিপিএ ৩.৭০ নিয়ে। এরপর জুনিয়র প্রভাষক হিসেবে জয়েন করি সাথে মাস্টার্সও চালিয়ে যাচ্ছি। এই তো, বেশি না মাত্র দু’মাস হবে আমি বিএ পাশ করে জয়েন করলাম সেই ভার্সিটিতেই প্রভাষক হিসেবে।
আমার জীবনের কালো অধ্যায়ের কথা এখনো বর্ণনা করা হয়নি। হ্যাঁ, রাইফাই হলো সেই ব্যক্তি, যাকে আমি অপয়া বলে মানি আমার জীবনে। ও আমার ব্যাচেরই তবে ভিন্ন ডিপার্টমেন্টের। ফিন্যান্সের ছাত্রী ও। ভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই আমার পিছনে লেগে আছে সে আমাকে ‘ভালোবাসি’ ‘ভালোবাসি’ বলে। কিন্তু ওর প্রতি আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ কখনো কাজ করেনি। বারবার প্রত্যাখ্যান করার পরও পিছে লেগেই থাকতো। কিন্তু তেমন কিছু কড়া ভাষায় ওকে বলতে পারতাম না ওর বাবা পুলিশ কমিশনার বলে। সাথে ওর পরিবারের আর্মি এবং রাজনীতির সাথে যোগাযোগ আছে। দেখতে শুনতে মেয়েটা খারাপ না, উজ্জ্বল ফর্সা রঙের ছিমছাম গড়নের মেয়ে ও। কিন্তু তবুও কেন জানি ওকে আমার ভালো লাগত না। শুধু ও কেন, কোন মেয়েকেই আমার ভালো লাগত না সেই দৃষ্টিতে। হয়তো আমার ক্যারিয়ার গড়ার পিছনে আমার মনপ্রাণ সব একনিষ্ঠভাবে নিবেদিত ছিল বলেই কোন মেয়েকে নিয়ে আলাদাভাবে ভাবার ফুরসতই পায়নি কিংবা চায়নি আমার মস্তিষ্ক।
ভদ্রতার খাতিরে নাকি ভয়ে আমি জানি না, আমি ওর সাথে সবসময় হাসিখুশিভাবেই কথাবার্তা বলার চেষ্টা করতাম। তিন বছরে প্রায় দশবার ওকে রিজেক্ট করার পরও কখনো ওর সাথে দুর্ব্যবহার করিনি। ও-ও কখনো আমি রিজেক্ট করার কারণে আলাদাভাবে আমার উপর রাগ দেখায়নি। অনার্সের রেজাল্ট প্রকাশ করার দিনও রিজেক্ট করার পর ও আমাকে বলেছিল,”তোমাকে অনেকবার ভালোভাবে বুঝিয়েছি কিন্তু তুমি বুঝলে না। আমি কখনো তোমার উপর জোরজবরদস্তি করিনি, ভেবেছিলাম যে তুমি আমার ভালোবাসাটা একসময় উপলব্ধি করে নিজ থেকেই আমার ডাকে সাড়া দিবে। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। আজও যখন তুমি মানলে না, তার মানে তোমার আশায় বসে থাকা একেবারেই বেকার। এমনটাও তো না যে তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো, তাহলে? যাই হোক, এবার আমি এমন কিছু করব যেটা হয়তো তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। তোমাকে আমি নিজের করেই ছাড়ব।”
এই কথাগুলো বলেই রাইফা চলে গিয়েছিল সেদিন। আমি সেদিন বুঝতে পারিনি ওর কথাগুলোর অর্থ। ঠিক এর একসপ্তাহের মাথায়ই কাউকে না জানিয়ে ও আর ভাইয়া বিয়ে করে বাসায় আসে। বাসার সকলেই এটা দেখে হতভম্ব হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি অবাক আমি। প্রথমত ভাইয়া কোনমতেই এভাবে কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করার মতো ছেলে নয়। তার উপর রাইফা? ও না বলেছিল যে ও আমাকে ভালোবাসে? তাহলে আমি বাদে অন্য কাউকে সেটাও আবার আমার আপন ভাইকে কীভাবে বিয়ে করল সে? সেদিন থেকেই মনের মধ্যে মেয়েদের নিয়ে একটা জঘন্য ধারণা জন্মেছিল আমার। আমি আগে শুনতাম যে মেয়েরা ছলনাময়ী, কিন্তু সেদিন এটার চাক্ষুষ প্রমাণও পেয়ে গিয়েছিলাম।
ভাইয়া আর রাইফা স্যরি, রাইফা ভাবী বলেছিল যে ওরা একে অপরকে ভালোবাসে আর পালিয়ে বিয়ে করেছে। রাইফা ভাবীর পরিবার নাকি অন্য এক ছেলেকে ঠিক করেছিল ভাবীর সাথে বিয়ের জন্য, তাই ভাইয়া রাইফা ভাবীকে পালিয়ে বিয়ে করেছে। আমি সেদিন শুধুমাত্র অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম রাইফা ভাবীর দিকে আর সে আমার দিকে আড়চোখে কীরকম যেন অসহ্যকর দুষ্টুমিমিশ্রিত চাহনি নিক্ষেপ করছিল। আমি বেশিক্ষণ তাদের সামনে থাকতে পারিনি, নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।
এমনটা না যে আমি ভাইয়া আর রাইফা ভাবীর বিয়েতে খুশি হইনি, বরং আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম। আমার নিজের ভাবীকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, তার সাথে দুষ্টুমি করব, আমি আর মেঘা আরেকটা বোন পাবো আরো কত কী! কিন্তু এ যে রাইফা! ওর সাথে কি এসব সম্ভব? হয়তো। হয়তো ও বদলে গিয়েছে। তবে মাত্র একসপ্তাহে কীভাবে একজন মানুষ এতটা বদলে যায় যে একজনকে ভালোবেসে কোন বাধ্যবাধকতা ছাড়াই আরেকজনকে বিয়ে করে ফেলে? এর উত্তরটা আমার জানা ছিল না।
যেহেতু আমরা তিন ভাই-বোনই আমাদের বাবা-মায়ের কলিজার একেকটা টু্করো ছিলাম তার উপর ভাইয়া ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শান্তশিষ্ট ও ভদ্র স্বভাবের, তাই আব্বু-আম্মু কেউ ভাইয়াকে বকা দেননি। তার উপর রাইফা ভাবীকে তাদের খুব পছন্দ হয়েছিল বৌমা হিসেবে। শুধুমাত্র ওর বাবা পুলিশ কমিশনার দেখে ভয় পেয়েছিলাম আমরা সবাই। কিন্তু ভাবী আমাদের আশ্বস্ত করেছিল, বলেছিল যে সে সবকিছু সামলে নিবে।
এরপরের দিন রাইফা ভাবীর বাবা পুলিশ নিয়ে আসেন আমাদের বাড়িতে। এটা সকলেরই কাম্য ছিল। কিন্তু ভাবী গিয়ে কীসব যেন বুঝান তার বাবাকে। তারপর উনি আমাদের পরিবারের সকলের সাথে পরিচিত হন, সবকিছু শুনেন কে কী করে। সবকিছু শুনে তিনিও মেনে নেন এই বিয়েটা, আমাদের পরিবারকে পছন্দ করে ফেলেন তিনি। তবে কথা ঠিক হয়, এই বিয়ের অনুষ্ঠানটা আরো একমাস পর বেশ ধুমধাম করেই উদযাপন করা হবে। তার আগ পর্যন্ত আমরা দুই পরিবারের লোকজন বাদে আর কেউই জানবে না এই বিয়ের ব্যাপারে, এমনকি আমাদের দুই পরিবারের কারো আত্মীয়স্বজনরাও না। আত্মীয়স্বজন বলতে বোঝানো হয়েছে আমাদের বা রাইফা ভাবীর বাবা কিংবা মায়ের দিকের লোকদের এমনকি বন্ধুবান্ধবদেরও। সকলেই একেবারে বিয়ের দিনই জানবে সবকিছু। তার আগ পর্যন্ত রাইফা ভাবী আমাদের বাসায়ই থাকবে। কেউ জানতে চাইলে বলা হবে যে সে আমাদের দূর সম্পর্কের এক কাজিন।
ভেবেছিলাম যে সবকিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে। এই রাইফা নামক মানুষটার ‘প্যারা’ও শেষ। আমি এবার তার যন্ত্রণা থেকে মুক্ত। কিন্তু কে জানতো যে আমার ভাগ্যে কতবড় অত্যাচার লিখা ছিল যেটা আমাকে প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন ভোগ করতে হবে?
চলবে