বজ্জাত_স্যার,পর্ব-২১,২২,২৩
অদ্রিতা_শ্রেয়া
পর্ব-২১
তাড়াতাড়ি ওর কাছে যাই,হাটু গেড়ে বসি, কপালো হাত দিয়ে দেখি জ্বরে ফেটে যাচ্ছে আর আবোল তাবোল বলছে,অকে পাজকোলে করে নিয়ে বিছানায় শোয়ালাম,কি করবো ভেবে পাচ্ছি না এতো জ্বর আসছে কি থেকে কি করবো মাথাই আসছে না,গেট খুলে মার কাছে গেলাম,গিয়ে দেখি কিচেনে রান্না করছে,,
!
কিরে জিহাদ আমার পিছনে চুপ করে দাড়িয়ে আছিস কেনো,আর ঝিনুক কোথায় রে,,,মেয়েটা খেয়ে দেয়ে না হয় আবার ঘুমাক, এতো বেলা করে না খেয়ে ঘুমালে চলে,পরে শরীর আরো খারাপ করবে,,
!
জিহাদ:: মা, আসলে
!
মা:: বুঝতে পরছি, থাক ঘুমাক,ওর ব্রেকফাস্ট আলাদা করে রাখবো নে,আর শোন মেয়েটা কিন্তু বড্ড লক্ষি রে,,এখনো বাচ্চাই রয়ে গেছে।
!
জিহাদ:: মা ঝিনুকের আসলে,
!
মা:: কি আসলে আসলে করছিস,জলদি বল দেখছিস না কাজ করছি,
!
জিহাদ: ওর জ্বর আসছে।
!
মা:: জ্বর আসছে!! আর তুই এখনো ঠায় দাড়িয়ে আছিস!! কখন জ্বর আসছে আর কিভাবে জ্বর আসলো??
!
জিহাদ:: মা,আসলে সকালে আমি দেখি ও জ্বরে কাপছে, কখন জ্বর আসছে তা তো জানি না,তুমি একটু আমার সাথে আসো না মা,প্লিজই
!
মা:: তুই জানিস নি কখন জ্বর আসছে?তুই কোথায় ছিলি রাতে??
!
জিহাদ:: না মা কোথাও ছিলাম না, রুমে ছিলাম, এতো কথা বলো না কুইক আসো
!
মা:: চল এখুনি,,
(রুমে গিয়ে তো আম্মু বকাঝকা করতেই আছে,কেনো বললাম না জ্বর আসছে, এই সেই)
!
মা:: আল্লাহ এতো জ্বর,, আর তুই কই ছিলি!! মেয়েটা কিছুই তো চেন্জ করে নি। শাড়ি,গহনা পড়েই আছে।তুই ওকে রাতে মারছোস আর নয় বকা দিছিস তাই না,আর এই জিদে ও কিছুই খুলে নি??
!
জিহাদ:: মা আমি কেন মারতে যাবো!! আমি মারিনি।
!
মা:: এর হিসাব রাতে নিবো তোর!! তুই কি করছিস রাতে আর ঝিনুকের জ্বর কমুক।তুই ডক্টর কে কল দে আসতে বল,,
!
(আমি মোবাইলটা নিয়ে আমাদের পরিচিত ডক্টর কে কল দিলাম আসার জন্য,মাকে বললাম কিছুক্ষনের মধ্যে ডাক্টার চলে আসবে)
!
ডক্টর:: জিহাদ আসলে তুমি দিন দিন কি হচ্ছো আমি বুঝতে পারছি না!! মেয়েটার ১০৩’ জ্বর, মেবি রাতে জ্বর আসছে,জ্বরে দাতে দাত লেগে আছে আর তুমি এক রুমে থেকেও টের পাও নি কিছু!!
!
মা:: ও কি কোনোদিন মানুষ ছিলো!! মেয়েটার না জানি কত কষ্ট হচ্ছে আর ও সকাল ১০টায় আমাকে জানায়!!
!
জিহাদ:: আরে মা,আমি কি ওর সাথে ছিলাম নাকি ও তো….(বলেই থেমে গেলাম,বললে তো আমার আর বাসায় জায়গা দিবে না)আসলে আমি বেশি টায়ার্ড ছিলাম তে তাই হুস ছিলো না।
!
মা:: তোর হুস কবে হবে আর!! বড় কি হস নি!
!
ডক্টর: আমি ইনজেকশন দিছি আর ঔষুধ দিছি, জ্বর কমে যাবে,আর তোমার মতো হাসবেন্ড থাকতে ডাক্টার লাগে, বউয়ের কেয়ার নিও।এমন বেখায়ালি হলে চলে,,
!
মা:: আসলে ওরে তো বিয়ে দেওয়াই ঠিক হয় নি,পরের মেয়ে এনে যদি এর খেয়ালই রাখতে না পারে,,
(ডক্টর চলে যেতে নিয়ে আবার ঘুরে বলে)
!
ডক্টর::নতুন বউ পেয়ে মাথা ঠিক নেই,তা অবশ্য হবেই,, আপা নতুন বউ তো পেয়েছে,,
!
(এবার আমার মন চাচ্ছে ১০০০ফিট নিচে চলে যাই,লজ্জায় মাথা কাটা।। বউকে ধরলাম না,টাচও করলাম না এতো কিছু শুনতে হলো,ঠিকই আছে আমি এতো শুনারই যোগ্য। অনেক কষ্ট দিয়ে দিছি,আসলে রাগ আমি একদমই কন্ট্রোল করতে পারি না, তার মাঝে সেদিন বলেছিলো আমি নাকি ক্রেকটার লুজ,যাকে তাকে বউ বানাই,আবার বিচুটি পাতা লাগিয়ে কি না করলে!! এতো কিছু কি মানা যায়,বাট বেশি হয়ে গেলো শাস্তি তো পেতেই হবে কিন্তু এরপর থেকে অন্যরকম,)
!
মা: এতো কি ভাবছিস,খাম্বার মতো দাড়িয়ে না থেকে ঝিনুকে ড্রেস বদলিয়ে দে, আমি আসতেছি??
!
জিহাদ:: আমি??
!
মা:: না আমি,, হতচ্ছারা,বিয়ে করে কি বুদ্ধি সব গেছে,,
(বলেই চলে গেলো)
!
জিহাদ:: মা,মা, ধ্যাত।এখন আমি কি করি!! আর আমি ওর ড্রেস চেন্জ করে দিবো
!
(ধীরে ধীরে বিছানার কাছে গেলাম, যত এগুচ্ছি ততই পা কাপতেছে স্থির হতেই পারছি না,ধূর ও)
!
আবার মার কাছে গেলাম,মা আমি পারবো না ড্রেস চেন্জ করতে তুমি চলো প্লিজই..
!
মা:: তোর বউ আর আমি যাবো,যাবি আমার সামনে থেকে নয়তো এই যে এটা দেখছিস গরম করে লাগিয়ে দিবো,,যা তুই।
!
জিহাদ:: (খুন্তি দেখিয়ে বলছে)মা তুমি বুঝতে পারছো না, কি হবে।আমার গাত পা কাপে!!
!
মা:: আমার কিছু বুঝতে হবে না।কাপুক যা তুই,
!
(আবার গেলাম ঘরে বাট ত কাছে যাচ্ছি ততই বুক ধুক ধুক করছে,আর পা তো কাপছে এখন হাতও কাপছে,ওকে এতোটা কাছে কখনোই দেখা হয় নি,এতেটা নিষ্পাপ লাগছে, মনে হচ্ছে সারারাত কান্না করছপ একদিনেই চোখের নিচে কালি হয়ে গেছে, কাজল লেপটে গলছে চুল এলো মেলো, মেকআপ আধো আধো পুরোই পাগলি লাগছে,, সাহস করে ওর কাছে গেলাম,যেমনে হোক ড্রেস চেন্জ তো করাতে হবে এতো ভারি ভারি জিনিস আর কতক্ষন পরে থাকবে,ওর বিছানায় বসে হালকা করে ওর গালটা ছোয়ালাম,পাগলি একটা বলে ওর গালে একটা চুমু খেলাম।তারপর গলার হার, কানের দুল,খুললাম, একটা একটা করে চুরি খুলছি। এখন ঘুম তাই চুপ করে আছে জেগে থাকলে চিল্লিয়ে বাড়ি উঠিয়ে ফেলতো। কিছুটা ঝুকে মাথাটা হালকা উঠিয়ে ওরনাটা শরালাম,এখন শুধু
শাড়িটাই বাকি আছে,তাছাড়া এখন দেখতেও অনেকটা হালকা লাগছে এতক্ষন মনে হয়েছিল বস্তা পড়ে আছে,শাড়ির সেপটিপিন খুলছি মনে হচ্ছে নিজের ভিতর ঝড় বইছে, আচল সরিয়ে আর নিজেকে আটকিয়ে রাখতে পারলাম না, বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে গেলাম আর পিছাতে লাগলাম।এভাবে হয় না,, যাই করেছি ঝিনুক জাগ্রত অবস্থায় করেছি, এভাবে ওকে না জানিয়ে, না বলে টাচ করাটা একদমই ঠিক হবে না।একদমই ঠিক হবে না,হবে না,আমার দ্বারা এভাবে ওকে কাছে পাওয়া কখনোই সম্ভব না। যাই করবো জাগ্রত অবস্থাই করবো,যদিও ও এখন শরীয়ত মোতাবেক আমার বউ,, আমার অধিকার আছে ঠিক বাট এরপরও মতামত আছে, , প্যান্ট থেকে রুমালটা বের করে গেট লক করে, ব্যাগ থেকে ওর টি-শার্ট আর প্লাজু বের করলাম,আর চোখ বেধে নিলাম। ড্রেস চেন্জ করে দিলাম, নিজেকে যতটা সম্ভব সংযত করেছি।চোখ খুলে ওয়াস রুম থেকে পানি এনে রুমালটা ভিজিয়ে ওর হাত, গলা, মুখ মুছে দিলাম।এখন অনেকটা স্বাভাবিক লাগছে ওকে, চুল গুলো খুলো ছড়িয়ে দিলাম বালিশের মাঝে,,আর চাদরটা ওর গায়ে দিয়ে দিলাম যেনো শীত না করে, কপালে আরেকটা চুমু দিয়ে বের হয়ে গেলাম।)
!
___এবার আম্মুর কাছে গেলাম দেখি ডাইনিং টেবিলে খাবার রেডি করছে, আমাকে দেখে বললো বস।কি হলো??ঝিনুকের অবস্থা কেমন এখন??আর এভাবে লজ্জা পাওয়ার কি আছে,
!
জিহাদ:মাথা চুলকাতে থাকলাম,কি বলবো!!
!
মা:: থাক থাক মাথা চুলকাতে হবে না,
!
বাবা:: কিরে জিহাদ এতোক্ষনে উঠার নাম হলো! বউ পেয়ে কি ভুলে গেলি নাকি।তাছাড়া বউ একটা পেয়েছিস হাজারে একটা, ওকে কি আর ছাড়া যায়!!
!
জিহাদ:: বাবা কথাটা কিছু ব্যঙ্গাত্নক ভাবে বললেও কথাটা আমার নজর এড়ালো না।আসলে বাবা যার যেমন চয়েজ, তোমার চয়েজের সাথে তো আর আমারটা মিলবে না,
!
(তখনই দেখি তুসা আর ওর আম্মু ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে)
!
বাবা:: কিরে এই সাজ সকালে কোথায় যাচ্ছিস?
!
তুসাট আম্মু:: যাওয়ার জায়গা কি অভাব আছে নাকি এখানেই পড়ে থাকতে হবে!!
!
বাবা:: আমি কি সেই কথা বলছি নাকি,,তোরা তো
!
তুসা:: আমরা ব্যংকক ব্যাক করছি।
!
জিহাদ: আমি কি হেল্প করবো??
!
তুসা::কারো অনুগ্রহের প্রয়োজন নেই,মা চলো,,
(বলে চলে গেলো তুসা)
!
তুসার মা:: তোমার ভালো ছেলে আর ভালো বউ নিয়ে থাকো, আমরা নাই থাকলাম! দরকার নেই আমাদের থাকা এখানে,,
!
জিহাদ: আমরা ভালোই আছি,আপনি ভালো থাকলেই চলবে…
!
তুসার আম্মু:: বদমাইশ একটা, থাক তোরা।আর ভাইজান আপনিও ওদের সাথে তাল মিলিয়েই চললেন,আসি
!
জিহাদের বাবা:: শুন আমার কথা এভাবে ভুল বুঝিস না,
!
জিহাদ:: বেস্ট ওফ লাক।
!
জিহাদের বারা:: এবার উঠে চলে গেলো,আমার ভিসাও রেডি করো আমিও চলে যাবো
(বলে চলে গেলেন)
!
চলবে_____
#বজ্জাত_স্যার
#অদ্রিতা_শ্রেয়া_
!
!
পর্ব-২২
!
ঝিনুক এখনো ঘুমিয়ে আছে, কি করবো ভেবে পাচ্ছি না,একে তো ওর উঠার নাম নেই আবার ভয়ও হচ্ছে ঘুম থেকে উঠে কি করে বসে!!তাও রুমে গেলাম দেখি শুয়ে আছে আজ সারাদিন ও খায় নি, আমারও খাওয়া হয় নি! কি করে খাই ওকে রেখে আমার জন্য আজ ওর এই অবস্থা! ওর পাশে গিয়ে শুয়ে জড়িয়ে ধরলাম,শরীর অনেকটা ঠান্ডা হয়েছে, জ্বর কমেছে তাহলে,জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে বলছে,,
!
ঝরা তোকে কত বার বলছি আমায় ঝরিয়ে ধরবি না, বার বার এক কথা বলতে হয় কেন। আরেকবার ধরলে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিবো,বলে ও আমার দিকে ঘুরে শোয়ায় আমার এক হাত ওর পিঠের নিচে চলে যায়,যখনই হাত টান দেই ঝিনুক সজাগ হয়ে যায়, আর আমাকে দেখে ওকে জরিয়ে ধরে আছি,দেখামাত্র সজোরে ধাক্কা দেয় একটা আর তাল সামলাতে না পেরে আমি খাটের ও পাশে পড়ে যাই,
!
আমি:: ছি ছি এতো টা নিচু আপনি, অসুস্থ ছিলাম আর এই সুযোগে আপনি……. আর ভাবতে পারছি না আমি,,,
!
জিহাদ:: ঝিনুক বিলিব করো আমি কিছু করে নি, জাস্ট..
!
আমি:: আমার আপনাকে বিলিব করা অনেক হয়ে গেছে,আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে যা করেছেন আপনি ছিহ!! আপনি আমা য় বলতেন আমি নিজে সব বিলিয়ে দিতাম, বাট কেন আপনি এমন করলেন, কেন??
!
জিহাদ:: দেখো তুমি এখনো অসুস্থ,প্লিজ যা বলার পরে বইলো এখন চুপ থাকো..
!
আমি:: তুই আর একটা কথা বলবি না আমার সাথে লুফার,লুজার, ক্রেক্টারলেস,সুবিধাবাদী!! আমাকে ছোয়ার আর চেষ্টা করবি না!!
!
জিহাদ:: তুমি ভুল ভাবছো, তেমন কিছু হয় নি।প্লিজ এসব বলো না,,আমি তোমাকে কোনো টাচ করিনি,বিলিব মি..
!
আমি::তোর থেকে কুকুর ও শত গুনে ভালো, তুই যেমন চরিত্রহীন তোর মনটা ও নোংটা।
!
জিহাদ: ঝিনুক ভালো মতো কথা বলো,অসুস্থ হয়েছো তাই বলে এই না যে,যা খুশি তাই বলবে। দেখো তুমি এখন অসুস্থ, সুস্থ হও সব বলবো।
!
আমি:: সুস্থ হয়ে আর কি করবো!! আমার আর কি বাকি আছে সব শেষ! সব!সব।তুই তো চাসই সুস্থ হয়ে যেনো তোর বিছানার সঙ্গী হতে পারি তাই না আমি ডিবোর্স চাই, ডিবোর্স!!
!
ঝিনুকের এই ডিবোর্স কথাটা বার বার, জিহাদের কানে বাজছে, ডিবোর্স চাই, ডিবোর্স!!জিহাদ সজোরে একটা চড় দেয় ঝিনুকের গালে,,,
!
জিহাদ:: আর একদিন এই কথা বললে তোমার কি হাল করবো তা তুমি নিজেও ভাবতে পারবে না!!
!
আমি::চড় দেওয়ার সাথে সাথে মনে হলো আমার মাথা পুরোটা ঘুরে গেছে,তারপরও বললাম এখন তো আমাকে মারবেনই! আমার তো সব পাওয়া হয়েই গেছে আর তো কিছু বাকি নেই! আমি তো পুরান হয়ে গেছে(বলে কান্না করতে লাগলাম)
!
আর জিহাদ কি যেনো বলতে নিয়েও বললো না,ডেস্কের উপর কাচের গ্লাস ছিলো, গ্লাসটা নিয়ে ফ্লোরে ছুড়ে মেরে চলে যায়,,,
!
আমি ফ্লোরে বসে পরলাম, থাকবো না এ বাসায়, কি নিয়ে থাকবো! কে আছে আমার, দরকার নাই এমন হাসবেন্ডের,, দরকার নেই!!চোখ মুখ মুছে রুম থেকে বের হলাম, দেখি মা বসে আছে আমাকে দেখা মাত্র বললেন,
!
মা:: বস এখানে, আর তোর শরীরের অবস্থা কেমন?
!
আমি:: আছে মেটাটমুটি, আর আপনি জানলেন কিভাবে?
!
মা:: এক বাসায় পাশাপাশি ঘরে থাকি এটা কি আর বলতে হয়, জিহাদ বলছে।
!
আমি: ওহ আচ্ছা, আমি তো সারাদিন ঘুমিয়ে কাটালাম, এখন না হয় কাজ করি,,
!
মা: তোর কাজ করতে হবে না আগে সুস্থ হ, তারপর কাজ করিস,,তো এখন খেয়ে ওষুধ টা খেয়ে নে, আর রেস্ট নে।
আমি:: হুম,বলে রুটি আর কলা খেয়ে ওষুধ খেয়ে চলে আসলাম।
!
((আয়নার সামনে এসে দেখি থাপ্পরের পাচ আঙ্গুলের দাগ বসে আছে, গালে হাত দিয়ে বসে ছিলাম যেনো মা দেখতে না পায়,থাপ্পরের জসয়গায় হাত বুলালাম।আর নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগল।এক রাশ ঘৃনা আর রাগ নিয়ে সরে আসলাম,আর বলতে লাগলাম i hate jihad,i hate you..তোকে শুধু ঘৃনা করি আমি শুধু ঘৃনা।কেনো যে তোর সাথে বিয়ে হলো, চিন্তা করিস না তোর এমন অবস্থা করবো ঝিনুকের নাম বেচে থাকতেও ভুলবি না।
!
_____
এদিকে জিহাদ বন্ধুদের সাথে আজ অনেক দিন পর আড্ডা দিচ্ছে,তাকে আগে দেখা গেলেও এখন দেঝাই মেলে না, সাডেন জিহাদকে দেখে তো সবাই অবাক…
!
আকাশ:: দোস্ত তুই এতোদিন পর,,আমাদের কথা মনে পড়লো তাহলে!
!
রিয়াদ: তুই কিভাবে আমাদের ভুলতে পারলি! ইয়ার,
!
নিশান: আরে দেখ বেটায় বিয়ে টিয়ে করছে নাকি,, এই জন্য আমাদের ভুলে গেছে।
!
(আমি মনে মনে বললাম, আমার আবার বিয়ে, এটা তো অভিশাপ,না আছে শান্তি না আছে ভালোবাসা)
!
জিহাদ: এসব কথা রাখ, সাইড দে বসি,
!
আকাশ: সাইড তো দিমুই,কিন্তু এটা আগে বল তোর মোড অফ কেন?কি হয়েছে
!
নিশান:: আরে ইয়ার একটা বেনশন দে হালারে,খাইয়া একটু মোড ওন করুক।
!
জিহাদ: নিশান তোকে হাজার বার বলছি মুখের ভাষা ঠিক করতে,,
!
রিয়াদ:আচ্ছা বাবা রিলাক্স,ওর কথায় রাগ করিস না।জানিসই তো ও এমন,,এখন এটা বল তোর কি হয়েছে !
!
নিশান:: ছেকা খাইছে মনে হয়,চোখ মুখের অবস্থা দেখছোস,
!
রিয়াদ: চুপ থাক তুই,তেরে এক্সপ্লেন করতে বলে নি কেউ,,
!
(শুরু থেকে সব বললাম,কি হয়েছে না হয়েছে,ওরা শুনে তো অবাক)
!
সবাই একসাথে:: তুই বিয়ে করলি আমাদের জানালিও না??একা একা বিয়ে করে ফেললি,
!
রিয়াদ: ট্রিট কই আমাগো!! ট্রিট দে,,
!
নিশান: আমারে দু প্যাক বেনশন আর বোটকা খাওয়াবি, নইলে তোর এই বিয়া বাদ।
!
জিহাদ:: আমার চল্লিশার খাবার ট্রিটের সাথে একবারে খেয়ে নিস।
!
আকাশ:: তোরে বোটকা না দু বোতল বিষ খাওয়াবো।
!
নিশান:: আসলে তোরা আমার বন্ধুই ছিলি না, জিহাদ আমার বন্ধু।
!
রিয়াদ: তোরে যে দিতে পারবো ওই ভালা,তুই হালা মরোস না কে!!
!
জিহাদ:চুপ থাক,চল তোদের ট্রিট দিবো।যা খাবি তাই খাওয়াবো।
!
নিশান: চল তাহলে,
!
রিয়াদ:তুই তো আগে যাবিই, দিন দিন পেটের যে হাল করছিস বিয়ের পর তোর পোলাপান ফুটবল খেলবো তোর পেট নিয়া,
!
নিশান:আমার পেট নিয়া কোনো বাজে কথা বলবি না, এই পেটের জন্য আমার কোনো জি এফ নাই।
!
আকাশ: জিএফ জুটে না তুই আসছিস বউ নিয়া,ও তো কুমারত্বের পুরুষ্কার পাবে,
নিশান: তোরা এমন করোস,আগামি সপ্তাহে আমি বিয়া করমু দেখিস ,,
!
জিহাদ: তোরা এমন ঝগরাই করবি, চল না হয় আমি গেলাম।
!
(এরপর দেখি পিছন পিছন আসছে সব গুলো)
!
___
এদিকে আমি চিন্তায় পড়ে গেছি সেই সন্ধ্যায় বের হলো আর এখন ১২ টা বাজে আসার নাম গন্ধ নেই।আগে তো ১০টা বাজার আগে চলে আসতো।কি হলো, কোথায় আছে,কলও যাচ্ছে না ফোন ওফ।কেমন টা লাগে!কিছুক্ষন পর গেট খুলার আওয়াজ পাই দেখি আসছে বাট কেমন যেনো মাতাল মাতাল লাগছে,,,
!
জিহাদ: ঝি..ঝি..নু..ক তো..মা..য় অ..নে..ক অ..নে..ক সুন্দ..র লা..গ..ছে
!
আমি:: ছিহ আপনি মদ খেয়েছেন!
!
জিহাদ: ছি..হ ছি..হ ব..লা..র কি আ..ছে,।
!
(বলেই আমার দিকে এগুতো লাগলো,আর পিছাতে লাগলাম)
!
আমি: দেখুন মোটেও ভালো হবে না,আপনি ওখানে দাড়ান,, কাছে আসবেন না।
!
জিহাদ: আ..মি এ..ক..শ বা..র আ..স..বো।তো..মা..র কি!
!
(পিছুতে পিছুতে একেবারে ওয়ালের সাথে মিশে গেছি)
!
জিহাদ: তো..মা..র এই এ..ই থু..তনির তি..লটা অ..ন্নেক বে..শি কা..ছে টা.নে!! আ..র ঠো..টটা যেন..গোলাপের পা..প..ড়ি!!
!
আমি:: এটা বলেই উনি আমার থুতনিতে গভীর চুমু খায়,,আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে,পুরাই স্তব্ধ হয়ে গেছি এটা কি হলো,থুতনি ছেড়ে এবার আচমকা আমার ঠোটে উনার ঠোট মিলিয়ে দেয়, পুরো শরীরে এক প্রকার আবেশের তৈরী হয়,কাপুনি দিয়ে উঠে,,আর উনি আমার ঠোটের স্বাদ নিতেই আছে,ছাড়ার নাম নেই।এক হাত দিয়ে চুলের মুঠি ধরে আছে আছে আরেক হাত দিয়ে আমায় শক্ত করে চেপে ধরে আছে,, না পারছি ছাড়তে না পারছি কিছু করতে।এদিকে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে,এক সময় দেখি উনার শরীরে ভার আমার উপর দিচ্ছি তখনই সোজরে একটা ধাক্কা দেই আর টাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পড়ে যায়।আর আমি সেখানেই ঠায় দাড়িয়ে আছি।
!
চলবে__
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,গল্প ভালো না লাগলে ইগনর করুন)
#বজ্জাত_স্যার__
#অদ্রিতা_শ্রেয়া
!
!
পর্ব–২৩
!
পরদিন সকালে সূর্যের আলো জিহাদের চোখে পড়তেই, জিহাদ আস্তে আস্তে চোখ খোলে, উঠতে নিলে মাথায় হাত দিয়ে দেখে আলু হয়ে গেছে আর প্রচন্ড ব্যাথা করছে মাথা, রাতে কি হয়েছে আর ও নিচে কেন মরা মানুষের মতো পড়ে আছে কিছুই মনে আসছে না,,,খাট ধরে উঠে আশে পাশে তাকিয়ে দেখে ঝিনুক নেই গেটও খোলা।হয়তো আম্মুর সাথেই আছে,উঠে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে ৮টার উপরে,ও মাই গড!! এতো লেট!! মোবাইল রেখে চলে আসতে নিলে একটা চিরকুট রাখা মোবাইলের নিচে,,কাগজটা হাতে নিয়ে খুলে দেখে,
!
**আপনার সাথে যে আমার বিয়ে হয়েছে এটা মোটেও বাহিরের কেউ যেনো না জানে আই মিন ভার্সিটিতে, মনে থাকে যেনো**
!
ইসস আমার ঠেকা পড়ছে আমি সেধে সেধে বলতে যাবো।তোমার দরকার হলে তুমি বলেই কুল কিনারা পাবে না,হু
বলে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে বের হলাম বাট ঝিনুককে দেখতে পেলাম না। মাকে ডাক দিলাম,,
জিহাদ:: মাআআআআআ,ঝিনুক কোথায়?
!
মা::ও তো আরো ১ঘন্টা আগো বাসা থেকে বের হয়েছে, কেনো তুই নাকি বলছিস যেতে তুই পরে যাবি!!
জিহাদ::(ও এই জন্যই চিঠি রেখে গেছে) আমি!কখন কি বললাম!! কিছুই তো বলিনি।
!
মা:: তোর নেকামি বন্ধ কর! আজকে ও একা গেছে কিছু বললাম না আগামীকাল যেনো ও একা না যায় তাহলে তুই বাসায় থাকতে পারবি না!!
!
জিহাদ::আমি এখন পর হয়ে গেলাম,, ধ্যাত আমি তো কিছুই জানি না,আজকে ওরে আমি!!বলেই চলে গেলাম, ফাযিলটা আমাকে তো বলেই নি উল্টো আমাকে ফাসিয়ে গেছে।
!
___এদিকে আমি ভার্সিটির ক্যাম্পাসে বসে আছি কয়েকজন মিলে,
!
মু্ক্তা:: কিরে এতো দিন কোথায় হারিয়ে গেছিলি, কল দিলেও যায় না তোরও খোজ নাই! আমি গ্রামে গেছি তাই তোদের বাসায় যেতে পারি নি নয়তো বাসায় যেতাম।
!
আমি:: আমার খোজ নিয়ে কি করবি আমি এতোদিন পিপড়ার গুহায় ছিলাম তাই পাস নি।
!
মুক্তা:: পিপড়ার গুহা!!!!
!
আমি:: ভুল বলেছি নাকি!!আচ্ছা দেখতো এই ড্রেসে আমায় কেমন লাগছে??
!
পিছন থেকে কে যেনো বলে উঠে বিউটি কুইন তোমায় পুরোই হট, সুইট,কুইট,লাগছে,
!
এবার ঘুরে তাকিয়ে দেখি পিয়াস,দেখা মাত্রই মেজাজ পুরোই গরম হয়ে গেছে!! এসব বলার সাহস কে দিছে ওকে!! ভ্রু কুচকে বললাম কি বললি তুই আমাকে!! আমি সামনের দিকে যাচ্ছি আর পিয়াস পিছাচ্ছে! আমাকে হট লাগছে তাই না!!
!
পিয়াস:: আমি আসলে ফান করেছি ঝিনুক,,(তোতলিয়ে)
!
আমি:: আজ বুঝবি ফান কি!! আমার সাথে ফান করা তাই না!
এবার দেখি মাথায় হাত দিয়ে রাখছে!!মাথা হাত দিছোস কেন,হাত সড়া নয়তো চুল টেনে ছিড়ে ফেলবো হাত সড়া,,
!
পিয়াস:: এই এই এবারের মতো মাফ করো, সরি সরি!! আর বলবো না!! তবুও চুল ধরো না, সেদিনের ঝাকানির ঘাড় ব্যাথা এখনো আছে,,
!
আমি:: আজ তো তোর কোনো মাফ নেই!!বলে ওর স্টাইল করা চুল ধরে আবারও ঝাকাচ্ছি তো ঝাকাচ্ছি,
!
পিয়াস:: আরে বাবা ছাড়ো, কি এমন বলছি এমন ঝাকাচ্ছো আমায়!!
!
আমি:: আবার কথা বলছিস, ওই মুক্তা ব্যাগ থেকে কেচি টা বের কর তো ওরে বক কাটিং করে দিই!!
!
পিয়াস: এই এই এটা মোটেও ভালো হবে না,
!
আমি:: তো আমার উপর কথা বললি কেন তুই! আর বলবি?
!
মুক্তা:: কি শুরু করলি তুই,ছাড় ছাড়।
!
আমি::তুই কোনো কথা বলবি না,আমার সাথে এতো ঘেসাঘেসি করতে আসে কেন!! তোরে কেচি বের করতে বলছি নাহ!! বেশি দরদ দেখালে তোর চুল কেটে দিবো!
!
___
এদিকে জিহাদ ক্যাম্পাসের সামনে দিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ চিল্লা চিল্লির আওয়াজ শুনে তাকিয়ে দেখে ঝিনুক, সিনিয়র এক ছেলের চুল ধরে ঝাকড়াচ্ছে,এই মেয়েটা ফাযিল না ফাযিলের হাড্ডি একটা!! যেখানে যায় সেখানে অগ্নিকান্ড ঘটায়!! কেমন ভাবে ঝাকড়াচ্ছে!! দেখছো কান্ড কাহিনী!! ওদের ওখানে গেলাম,
কি হচ্ছে এখানে,, হচ্ছে টা কি!! আর এই মেয়ে তোমার কলিজায় এতো সাহস! একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা ছেলের চুল ধরে টানছো!মেয়ে হলেও চলতো।ছাড়ো ছাড়ো,বলে হাত টান দিয়ে সরালাম,
!
আমি: আজ বেচে গেলি নয়তো তর মন্ডুটা নিয়ে বাসায় যেতি,আর আপনার সমস্যা কি?বলুন তো আমি যা খুশি তাই করবো আপনার কি!
!
জিহাদ: এটা তোমার বাসা পাও নি যা খুশি তাই করবে!! এটা প্রতিষ্ঠান,আর আমি একজন টিচার তোমরা যা খুশি তাই করবে আর আমি দেখবো চেয়ে চেয়ে,
!
আমি:: আইসে ডায়ালগ মারতে, এই মুক্তা চল তো!(বলে চলে আসলাম)
!
পিয়াস: আহ স্যার আমার মাথা ঝিম ধরে গেছে,এটা মেয়ে না জল্লাত!
!
জিহাদ:আর তুমি কি পেয়েছো!! এই মেয়ের পিছ লেগেছো,এর আগেও তোমায় ইনফরম করেছি গায়ে লাগাও নি,,এর পর যেনো এমন না দেখি,তাহলে আমার থেকে খারাপ কেও হবে না!
!
পিয়াস:: (আপনি বললে কি হবে, যাকে ভালোবাসা যায় তার সব কিছুই মেনে যায়,বড্ড বেশি ভালোবাসি মাই ঝিনুক সুইটহার্ট, তুমি যত কিছুই বলো তোমাকে তো আমি ছাড়ছি না,,মনে মনে বলছি)
!
___এদিকে স্যার আসার কোনো নাম নাই ক্লাসে বোরিং লাগছে কি করি,নাহ এভাবে থাকা যায় না,বেঞ্চ থেকে উঠে সোজা সামনে এসে দাড়ালাম মানে বোর্ডের সামনে দাড়ালাম,
হেলো গাইস,এটেনশন প্লিজ,,,।।
!
এবার সবাই আমার দিকে সবার দৃষ্টি কি বলবো!!
বললাম, ক্লাসের কারা আছো একই ক্লাসে যাদের রিলেশন চলছে লাভ বার্ড গুলো কই একটু হাত তুলো তো! তোমাদের নিয়ে বিশেষ কুইজ আছে! আজ স্যার আসবে না ক্লাসে, তাই ভাবলাম এভাবে সবাই বসে থাকলে বোরিং লাগবে তার থেকে মজা-মাস্তি করি সময় পাস হবে! কি বলো তোমরা??আর তোমরাও ভাল সময় কাটাতে পারবে,,
!
সবাই একসাথে বলে উঠলো,,ওয়াও রিয়েলি!! উই আর এগ্রি,,সবাই চিল্লিয়ে বললো।
!
আমি:: ওকে ডান,তাহলে যারা লাভ কাপল আছো তারা আলাদা হয়ে যাও,
(বলার সাথে সাথে ক্লাসের অর্ধেকের মতো আলাদা হয়ে গেছে)
!
এবার সবাই বলছে কি করবো এখন,
!
আমি বললাম,(মনে মনে ওরে বাবারে এতো গুলো ভিতরে ভিতরে লাইন মারে আর দেখতে পুরাই ভেজা বেড়াল লাগে)তোমরা কাপল গুলো এক সাইডে বসো আর বাকি রা এক ওাশে বসো।যারা সিঙ্গেল আছো তারা গান গাবে আর তোমরা কাপল যারা আছো তারা লটারিতে ডান্সে এটেইন করতে হবে!! এবার বলো আমার ডিসিশন কেমন হলো!!
!
সবাই চিল্লিয়ে বললো,,ওয়াও ঝিনুকে, জাস্ট ওয়াও!! আসলে তোর বুদ্ধির তারিফ করতে হয়, ডিসিশন জাস্ট ওয়াও হয়েছে ডিয়ার!
!
আমি,,আরে বাবা আস্তে আস্তে চিল্লাইস না তোরা!! তো শুরু হয়ে যাক নাকি,,
!
_____
এদিকে জিহাদ মিটিং শেষ করে উপরে আসতেই আওয়াজ শুনতে পায় যত ক্লাসের সামনে এগোয় ততই আওয়াজ বাড়তে থাকে, ক্লাসে ডুকেই দেখে একজন ছেলে আরেকজন মেয়ে ডান্স করছে, কয়েকজন গান গাইছে আর ছেলে মেয়ে একসাথে বসে আছে,আর মনে হচ্ছে ঝিনুকই মেইনটেইন করছে এসব,,,মাথাটা গরম হয়ে গেছে, পিরিতের আলাপ চলছে ক্লাসে, পড়া তো পারেই না গর্দভ গুলো!আমি নাই কোথায় গ্রুপ স্টাডি করবে তা না!! ডান্স চলছে,,,আজকে এদের সবগুলোর পানিসমেনট হবে আর ঝিনুকের হবে ডাবল,
চলবে..