প্রতিশোধ নাকি ভালোবাসা??,পর্বঃ০২

প্রতিশোধ নাকি ভালোবাসা??,পর্বঃ০২
জাহান আরা

মা খাবার বেড়ে দিলো,আমি মাথা থেকে চিন্তা দূর করতে পারছি না তবু।কিন্তু আমার জন্য যে আরো অনেক চমক অপেক্ষা করছে তা তখনো আমি ভাবতেই পারি নি।

খেয়ে এসে শুয়ে পড়লাম,আজ আর জেগে থাকবো না রাতে ফেসবুকিং ও করবো না।
বালিশে মাথা রাখতেই ঘুম এসে গেলো।

হটাৎ করেই শরীর টা খুব ভারী মনে হতে লাগলো,অস্বাভাবিক একটা অনুভূতি যেনো কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।
না এ হতে পারে না,রুমে তো কেউ নেই।
আমি নড়াচড়া করতে পারছি না।
আস্তে আস্তে সে যেনো আমার উপরে উঠে এলো।
আমার পুরো শরীরে তার ছোঁয়া পাচ্ছি।

আমি কি করবো এখন???

একটু পরেই সব স্বাভাবিক হয়ে গেলো। কিছুই করে নি সে।

আমি ধড়মড়িয়ে বিছানায় উঠে বসলাম,পানির পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছে যেনো,পানি খাওয়ার জন্য ডাইনিং রুমে যেতে হবে,ফোনের ফ্লাশ লাইট অন করে বিছানা থেকে নামতে যাবো,দেখি আমার টেবিলের উপরে ১ গ্লাস পানি।

আমি জানি এই পানি কে রেখেছে,কিছু না ভেবে খেয়ে নিলাম।

তারপর ঘুমিয়ে গেলাম।

সকাল হতেই রাতের ব্যাপার টা মনে পড়ে গেলো, খুব হাসি পাচ্ছিলো সকালে।মনে হচ্ছিলো রাতে স্বপ্নে দেখেছি সেসব আমি।

অনুকে স্কুলে দিয়ে অফিসে চলে গেলাম।

আমার ডেস্কে বসে কাজ করছি,তখনি আফজাল সাহেব এলেন।
এই লোকটা কে আমার খুব ভয় হয়,এর চোখে আমি নোংরা ইচ্ছের আভাস দেখতে পাই।
তাই সবসময় দূরে থাকার চেষ্টা করি কিন্তু দিন দিন লোকটা বেয়াড়া হয়ে উঠেছে। ম্যানেজার বলে কিছু বলতে পারি না,অফিসের বস কে ও বলতে পারি না কারন বস অফিসেও আসে না, উনি বেশির ভাগ সময় দেশের বাহিরে থাকে ব্যবসায়ের কাজে,সবগুলো অফিস দেখাশোনা করার দায়িত্ব ম্যানেজার দের উপর। এখানের দায়িত্ব আফজাল সাহেবের উপর দেওয়া।বসের চাচাতো ভাই হয় আফজাল সাহেব।

এজন্য লোকটা বেশী বাড় বেড়েছে।

আফজালঃ কি করছেন মিস অনিতা?

আমিঃ জ্বী একটু কাজ করছি।ব্যস্ত আছি।

আফজালঃ হাহাহা।আমাকে ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন??
আচ্ছা আপনার কাজ রাখেন,অন্য কাউকে দিয়ে করাবো আপনি এখন আমার কাজ করেন।

আমিঃ মানে কি,কি কাজ আপনার (ভয় পেয়ে)

আফজালঃ এইযে আমি সিনিয়র অফিসার এখানের ম্যানেজার ,সবাই আমাকে খাতির করে চলে।
দেখেন না আপনার কলিগ রুপা,সুমি,আয়রা,নিশি,রুমি আমার সাথে কি সুন্দর মিষ্টি হেসে কথা বলে।আমার সঙ্গ পেলে তারা খুশি হয়,অথচ আপনি আমাকে এড়িয়ে চলেন সবসময় ।
ওনাদেরকে যখনি ডাকি আমার সাথে পার্সোনালি মিট করে ওনারা আপনি অথচ কথা ও বলতে চান না।
এজন্যই আপনার প্রতি আমার আগ্রহ বেশী।হাহাহা।

এই লোকটার সাহস দেখে আমি জাস্ট অবাক হয়ে গেলাম।কিভাবে সে আমার সামনে বসে এসব নোংরা কথা বলছে।

আমিঃ আপনি প্লিজ যান এখন,আমাকে কাজ করতে দেন।কাজের সময় এসব গল্প করা আমার পছন্দ না।

হঠাৎ করেই সেই মিষ্টি ঘ্রাণ টা পেতে লাগলাম আবার,আমি বুঝতে পারলাম আমার বিপদ বুঝতে পেরে সে এসে গেছে।
আমি কেমন যেনো সাহস পেলাম।

আফজালঃ ঠিক আছে কাজ করেন,দেখি আমি কি কাজ করছেন কম্পিউটারে।

এই কথা শুনে আমি শিউরে উঠলাম,এই লোক এখন আমার পিছনে এসে দাড়াবে,আমার ঘাড়ের পাশ দিয়ে এসে তাকাবে।ছিঃ কি জঘন্য ব্যাপার।

আমি কিছু বলার আগেই উনি উঠে এলেন।

আমি সংকুচিত হয়ে বসলাম।

তিনি আরো এগিয়ে আসলেন আমার দিকে।
আমার পিঠের উপর হাত রেখে বললেন,বি ইজি মিস অনিতা,এগুলো নরমাল ব্যাপার,নরমালি নেন,আপনার জন্যই ভালো হবে তাতে,আমি খুশি হলে আপনার প্রমোশন।

আমি চেয়ার টেনে অন্য দিকে নিয়ে গেলাম।
আমিঃ প্লিজ আপনি এখান থেকে যান,আমার এসব পছন্দ না,আমার প্রমোশন লাগবে না।

উনি আবারো আমার দিকে আসতে লাগলেন।
তখনি একটা মজার ব্যাপার ঘটে, হঠাৎ করেই উনি হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন,অথচ হোঁচট খাওয়ার মতো কিছুই ছিলো না সেখানে।

কেউ যেনো আমাকে কানে কানে বলছে,আমি আছি পাশে,ভয় পেও না।

আফজাল সাহেব উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
তারপর হনহন করে চলে গেলেন।
আমার এতো ভালো লেগেছে,কি ভেবে যেনো তাকে ধন্যবাদ দিলাম। তখনি যেনো কেউ আমাকে বলছে,এটা আমার কর্তব্য।

আমি বুঝতে পারলাম না তার কিসের কর্তব্য হতে পারে।



কিছুক্ষণ পরেই অফিসের পিওন এসে একটা চিঠি দিয়ে গেলো।

চিঠি পড়েই আমার মন খারাপ হয়ে গেলো। আজকে সন্ধ্যা ৭ টায় আমাকে আফজাল সাহেবের সাথে যেতে হবে ক্লায়েন্টের সাথে ডিল করতে।প্রতিবারই দেখি যে কেউ যায় ওনার সাথে কিন্তু এবার আমাকে কেনো ডেকেছে আমি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি।

কিন্তু ভয় পাচ্ছি না,আমি জানি সে আসবে আমার বিপদে।

বিকেলে অফিস থেকে বাসায় গেলাম।
মা কে বলতেই মা চুপ হয়ে গেলো।
মা ও জানে জবটা আমাদের কতো বেশী দরকার।

রুমে এসে ভাবতে লাগলাম কি পরে যাবো।
বিছানার দিকে তাকাতেই দেখি একটা সবুজ শাড়ী বিছানায়।
আমি কেনো যেনো এখন আর তার এসবে ভয় পাচ্ছি না।

শাড়ী টা পরে হালকা সাজগোজ করে বের হয়ে গেলাম যেই রেষ্টুরেন্টে ডিল করার কথা।

ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখি আফজাল সাহেবের সাথে আরো ৩ জন লোক।সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমার কেমন যেনো লাগছে,ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আমাকে কিসের সতর্কতা দিচ্ছে আমি জানি,কিন্তু ভয় নেই,সে আসবে আমাকে বাঁচাতে।

এগিয়ে যেতেই আফজাল সাহেবের মুখ থেকে প্রশংসা বাক্য শুনতে পেলাম।
বসার পরে খাবার অর্ডার দিয়ে কাজের কথা শুরু হলো, আমার এক পাশে আফজাল সাহেব অন্য পাশে একলোক।
লোকটা আমার কোমরে হাত দেয়ার চেষ্টা করছে বুঝতে পেরে আমি উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম।
আফজালঃ কি ব্যাপার মিস অনিতা?
আমিঃ আমি এখানে বসবো না,উনি আমার কোমরে হাত দিচ্ছে।

শুনেই ওনারা সবাই হাহা করে হেসে উঠলো।

আফজালঃ এসব ডিলে এরকমই হয় মিস অনিতা,ক্লায়েন্ট কে খুশি করানোর জন্য এসব সহ্য কিরা লাগে,আপনার সব কলিগ খুশি মনেই রাজী হয়,তারা অপেক্ষা করে এইরকম ডিলের,বসেন আপনি।
এতোবড় একটা কাজ পেতে যাচ্ছি আমরা তার বিনিময়ে আপনার এটুকু করাই লাগবে।আর ওনারা খুশি হলে মোটা অঙ্কের চেক পাবেন।

আমিঃ তাই বলে আমার ইজ্জত দিয়ে আপনাদের ডিল সম্পন্ন করতে হবে??

বলেই চেচিয়ে উঠলাম।

এবার আফজাল সাহেব উঠে দাঁড়ালেন।

আফজালঃ ডোন্ট শাউট প্লিজ,এটা সাউন্ড প্রুফ কেবিন,বাহিরে থেকে কেউ আপনার চিৎকার শুনবে না। আর শুনলে ও কেউ আসবে না এই রেষ্টুরেন্টে সবাই এসব ডিল করতে আসে,সো এখানে এসব স্বাভাবিক।
প্লিজ বি কুল।

আমার কান্না এসে গেলো এসব শুনে।

আমিঃ এই জব করবো না।

আফজালঃ এখন যেহেতু চলে আসছেন যেতে পারবেন না,আর হ্যাঁ জব আপনাকে করতে হবে কেননা একটু পর যা হবে এখানে সব কিছুর ভিডিও করা থাকবে,দেখেন না অফিসের কোনো মেয়ে জব ছেড়ে যেতে পারে না এজন্য। আর তারা আপনার মতো এরকম রিয়েক্ট করে নি কেউ,সবাই এনজয় করেছে ।

একলোক বললোঃ আফজাল সাহেব আমাদের সময়ের দাম আছে,আপনার স্টাফ কে বলুন সেটা, নয়তো আমরা চলে যাবো এই ডিল হবে না। এই কাজ টা নেয়ার জন্য অনেকেই অফার করেছে,আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আফজালঃ মিস অনিতা বসুন আপনি। টাইম ওয়েস্ট করবেন না।

আমি তখনি সেই মিষ্টি ঘ্রাণ টা আবার পেলাম।
আমার মুখে হাসি ফিরে এলো।

বসতেই এবার ২ পাশে ওদের ২ লোক এলো,১ জন আমার কোমরে হাত দিচ্ছে অন্য জন পিঠে।

আমি আফজাল সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইলাম হাসি মুখে।

আমাকে হাসতে দেখে আফজাল সাহেব দ্বিধায় পড়ে গেলো।

আফজাল সাহেবঃ তাহলে কি ডিল কনফার্ম, প্লিজ আপনারা আগে সাইন করে দেন,তারপর সবাই মিলে আনন্দ করা যাবে।

সবাই পেপারে সাইন করে দিলো,এবার আর লুকিয়ে না,ওনাদের সামনেই উঠে একজন আমার পিছনে দাঁড়ালো।
শাড়ি খোলার জন্য সেফটিপিনে হাত দিলো সেসময়ে তার ফোন বেজে উঠলো।

ফোন রিসিভ করতেই দেখি তার মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।

অন্যরা জিজ্ঞেস করতেই জানালো ড্রাইভার কল দিছে ওদের ২ টা গাড়িতেই আগুন লেগে গেছে কিভাবে যেনো।

বলেই ওরা সবাই ছুটে বের হয়ে গেলো
আমি হাসতে লাগলাম।

আফজাল সাহেব কেমন তীর্যক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।

ওয়েটার খাবার দিয়ে যেতেই আমি বসে খেতে লাগলাম। কিন্তু আফজাল সাহেব খেলেন না,আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন শুধু।

আমি খাবার খেয়ে উঠে দাঁড়াতেই আমাকে বললো,কতোদিন বাঁচতে পারো আমার হাত থেকে দেখবো আমি,আমার নজর যখন পড়েছে তো শখ মিটাবোই আমি।

আমিঃ আমার আপত্তি নেই আফজাল সাহেব, আসুন না এখনি শখ মিটিয়ে নিন,শাড়ি খুলে দিই??

আমার মুখে এই কথা শুনে উনি থতমত খেয়ে গেলেন।
আমি বের হয়ে গেলাম রেষ্টুরেন্ট থেকে।

রাত প্রায় ৯ টা বেজে গেছে,পুরো পথ আমি একা যাচ্ছি সাথে যাচ্ছে সেই মিষ্টি ঘ্রাণ টা।
সে আমার পরম বন্ধু এখন।আমার সাহস সে।

বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
আজ রাতে আর কিছু হয় নি।

পরদিন অফিসে যেতেই দেখি সাজ সাজ রব,বসের কেবিন সাজানো হচ্ছে।

পিওন কে জিজ্ঞেস করতে বললো আজকে বস আসবে অফিসে কয়েকদিনের জন্য,তাই এসব।

আমি ঠিক করলাম আফজাল সাহেবের এইসব কথা আমি বসকে জানাবো তাতে জব গেলে যাবে,নিজের ইজ্জতের দাম আগে।

দুপুরের দিকে বস এলো।

আমি ভেবেছিলাম বস হয়তো অন্যরকম হবে,মুরুব্বি কেউ কিন্তু এখন বসকে দেখে মনে হয় যেনো আমি নিজেই ডিপ্রেশনে চলে গেছি,উনি তো একেবারে ইয়াং একজন। উনি কিভাবে এতো গুলো অফিসের বস হয়?

পরে শুনতে পেলাম বিজনেস শুরু করেছে বসের বাবা,এখন ওনার বয়স হয়েছে তাই বস এখন সব দেখাশোনা করছেন।

বেশির ভাগ সময় উনি দেশের বাহিরে থাকে বস,সব অফিসের দায়িত্ব থাকে ম্যানেজার দের উপর,বস তাদের সাথেই যোগাযোগ করেন।

বস আসার উপলক্ষে অফিসে লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হলো, সবাই মিলে লাঞ্চ খেলো কিন্তু আমি খেলাম না।এই অফিসে আর না।

আমি আমার ডেস্কে বসে আছি একটু পরেই আমার ডেস্কের টেলিফোন বেজে উঠলো।
বস আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন।

আমি উঠে গেলাম।

আমিঃ মে আই কাম ইন?

বসঃ ইয়েস।

আমি ভিতরে যেতেই বস আমাকে বসতে বললো।

আমি বসলাম।

বসঃ আপনি তো নতুন জয়েন করেছেন,না?
আমিঃ জ্বী।
বসঃ আপনার কি অফিস ভালো লাগছে না অথবা কোনো সমস্যা?
আমিঃ হ্যাঁ স্যার,আমি রিজাইন দিবো।
বসঃ কারণ জানতে পারি?
আমিঃ অজানা থাকাই ভালো স্যার,আমি অফিসে নতুন এসেছি আমার চাইতে আপনার পুরনো স্টাফরা অধিক বিশ্বস্ত, আমি আমার সমস্যা জানালে এখন আপনার বিশ্বাস না ও হতে পারে।

বসঃ আপনি বলুন,তদন্ত করার দায়িত্ব আমার।

আমি বসকে সবকিছু খুলে বললাম।

বস শুনে রেগে গেলো।

বসঃ আমি ওনাকে হাতেনাতে ধরতে চাই,আপনি কি আমাকে ১ সপ্তাহ সময় দিবেন।
আমিঃ জ্বী আচ্ছা।
বসঃ ঠিক আছে, আসুন এবার।

পরেরদিন অফিসে যেতেই আফজাল সাহেবের সাথে দেখা। আজকে একটু সেজেগুজে এসেছি কেননা আমাকে এখান থেকে লাঞ্চ ব্রেকে অনুর স্কুলে যেতে হবে,অনু পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছে,ওদের স্কুলে অনুষ্ঠান আজকে।

আফজাল সাহেব আমাকে দেখেই অপলকভাবে তাকিয়ে রইলেন।
আমি আমার ডেস্কে গিয়ে বসতেই উনি কিছুক্ষণ পরে এলেন আবার।

আজকে আর কোনো বাহানা না করে উনি সোজা গিয়ে আমার পিঠে হাত রাখলেন।

আমি উঠে দাঁড়িয়ে কষে ১ থাপ্পড় দিলাম।

থাপ্পড় দিতেই উনি কেমন যেনো উগ্র হয়ে গেলো,আমার বুকের দিকে হাত বাড়ালেন,আমি ওনার হাত মুচড়ে ধরলাম।

কিন্তু পারলাম না ওনার সাথে,উনি অন্য হাত দিয়ে আমার ২ হাত ধরে ফেললেন।
আমি আর কিছু করতে পারলাম না,তখনি আফজাল সাহেবের ফোন বেজে উঠলো।
আমাকে ছেড়ে দিয়ে ফোন ধরলেন,আমি বুঝতে পারলাম বসের কল।
ফোন কানে রেখেই জ্বি বস বলে উনি বের হয়ে গেলো। একটু পর আমার ডেস্কের টেলিফোন বেজে উঠলো

বস আমাকে ও তার কেবিনে যেতে বললো।

ভিতরে গিয়েই দেখি অফিসের প্রায় সবাই সেখানে….

বসঃ আফজাল সাহেব,মিস অনিতা গতকাল আপনার সম্পর্কে অভিযোগ করেছে আমার কাছে,আপনি সেক্সুয়াল হ্যারেসমেন্ট করেন,অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য আমি এখানে সবাইকে ডেকেছি।

আফজালঃ বস আপনি অন্যদের জিজ্ঞেস করেন,কেউ বলতে পারবে না এই কথা, মিস অনিতা মিথ্যা বলছে।

বসঃ আপনারা কি বলেন??

কেউই স্বীকার করলো না আফজাল সাহেবের এসব নোংরামি।

আমি অবাক হয়ে গেলাম সবাই কিভাবে এই লোককে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।

বসঃ মিস অনিতা,আপনার কিছু বলার আছে আর?

আমিঃ জ্বী না স্যার,আমি জানি অসভ্যের দলে মানুষ বেশি থাকে,আমি মিথ্যা অভিযোগ করি নি।আমি রিজাইন লেটার জমা দিবো আজকেই।

বসঃ আচ্ছা একটু অপেক্ষা করেন সবাই,আমি আজকে একটা জিনিস দেখাবো সবাইকে।

বস সিকিউরিটি রুম থেকে কিসের যেনো ভিডিও ফুটেজ আনতে বললেন।

ভিডিও ফুটেজ আনতেই,কম্পিউটারে উনি প্লে করলেন।

আমি অবাক হয়ে গেলাম,কেননা এটা আমার রুমের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ।

শ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে রইলাম,সবাই দেখতে লাগলো একটু আগে আমার রুমে যা যা ঘটেছে।

আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।

বসঃ তো,এবার বলেন, এখনো মিস অনিতা মিথ্যা বলেছেন??
কাল মিস অনিতা আমাকে অভিযোগ জানানোর পর আমি রাতে অফিসে এলাম,সবার রুমেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হলো শুধু আমি আর সিকিউরিটি ম্যান জানে সেটা।

আমি আপনাদের সততা,সাহস দেখাতে চেয়েছিলাম,কিন্তু আপনারা দেখি সবাই অপরাধী কে সাপোর্ট দিচ্ছেন।

আফজাল সাহেব আপনাকে আমি বরখাস্ত করলাম।আপনি আমার রিলেটিভ হতে পারেন সেটা আনঅফিসিয়ালি, অফিসিয়াল কাজে সবাই সমান আমার কাছে।

আপনাদের জন্য একটা চান্স ছিলো আজকে,মিস অনিতার চাইতে ইমিডিয়েট সিনিয়র যে ছিলেন,কেউ যদি মিস অনিতা কে সাপোর্ট দিতেন,তাহলে আজকের চান্স সেই পেতেন।
আজ থেকে আফজাল সাহেবের পোস্টে মিস অনিতা কে প্রমোশন দিলাম।উনি যাতে রিজাইন না দেন সেই অনুরোধ রইলো।
আফজাল সাহেব মুখ কালো করে অফিস থেকে বের হয়ে গেলেন।আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলাম না,আমার এতো বড় প্রমোশন আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here