#প্রণয়ে_প্রলয়ের_সুর
#লেখা: জবরুল ইসলাম
#পর্ব_৩
.
তরু বুকে হাত বেঁধে ক্ষীণ সময় তাকিয়ে থেকে বললো, ‘এই হাসির অর্থ কী আমি ধরে নেব আপনি ফুপুকে ভয় পান না?’
– ‘আপনার কেন মনে হচ্ছে আমি ভয় পাই?’
‘ও তাহলে যাই, গিয়ে ফুপুকে জানাই’ বলে পা বাড়িয়ে যেতে চাইলেই নির্জন ওর হাত ধরে ফেলে। তরু অবাক হয়ে হাতের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ও আচ্ছা, তাহলে শুধু মুখে অসভ্য না? হাতেও?’
নির্জন চোখবুজে শান্ত হয়ে বললো, ‘প্লিজ মিস তরু, ঝামেলাটা বাড়াবেন না। আর স্যরি আমি রাগের মাথায়..’বলে এমনভাবে থামলো, যেন ভীষণ ক্লান্ত সে। তারপর শুকনো ঢোক গিলে পুনরায় বললো, ‘রাগের মাথায় কি থেকে কি বলেছি বাদ দিন প্লিজ।’
তরুর কেমন যেন অদ্ভুত এক মায়া লাগলো মানুষটিকে। অব্যাখ্যায় ব্যাপার। কেন এমন লাগছে বুঝতে পারছে না। তবে কেন যেন মনে হলো কোনো এক ক্লান্ত পুরুষ তার কাছে খানিক প্রশান্তির জন্য আশ্রয় খুঁজছে। তরু সকল রাগ ভুলে গিয়ে বললো, ‘আপনি কি আজ কিছু খাননি?’
নির্জনের যেন হঠাৎ মনে পড়লো কিছু। সে সঙ্গে সঙ্গে বললো, ‘আপনাকে কিছু খেতে দেয়া হয়নি। আমি এখনই বাইরে গিয়ে খাবার নিয়ে আসছি।’
– ‘কেন? বাইরে থেকে কেন?’
নির্জন শুকনো মুখে হেসে বললো, ‘আসলে কাজের মেয়েটা গতকাল বিকেলে বিদায় হয়েছে। ভোরে ফুপু। আম্মুর তো বুঝতেই পারছেন মন-মেজাজ ভালো থাকে না। তাই বাসায় রান্না হয়নি। আমি এখন যাব আর আসবো।’
– ‘আমাকে আনতে যখন গেলেন বাইরে খেতে পারতেন না?’
– ‘আমাকে নিয়ে ভাববেন না। আপনি এতদূর থেকে জার্নি করে এসেছেন। আসলে আগে বৃষ্টির মধ্যে এত খেয়াল করিনি। আমি যাচ্ছি।’
– ‘না থাক, বাসায় কি সবকিছু আছে? থাকলে আমিই রাঁধবো এখন।’
‘কি যে বলেন, আপনি রেস্ট নিন আমি যাব আর আসবো’ প্রসন্নমুখে হেসে নির্জন কথাটি বলে চলে যাচ্ছিল। তরু পিছু থেকে পুনরায় বললো, ‘শুনুন, আমি মোটেও ক্লান্ত না, রেস্ট নিতে হবে না। সিরিয়াসলি বলছি, বাইরে যেতে হবে না, আমিই রাঁধবো।’
নির্জন পিছু ফিরে তাকিয়ে হেসে বললো, ‘আপনি আমার আব্বার দিক থেকে নতুন কুটুম। এসব কাজ করতে দেয়া ঠিক হবে না।’
‘এসব নিয়ম-কানুন আপনি খুব মানেন বুঝি? আমি মানি না’ বলে হেসে দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে পুনরায় বললো, ‘চলুন, কিচেন দেখান। আর ফ্রিজে মাছ মাংস কিছু কি আছে?’
‘সবই আছে কিন্তু আপনি অস্থির না হলে ভালো হয়।’
তরু বারান্দায় থেকে পিছু ফিরে তাকিয়ে বললো, ‘অস্থির হলে, বাড়াবাড়ি করলে আগের মতো রেগে যাবার সম্ভবনা আছে না-কি?’
নির্জন কোনো জবাব দিল না। তার চেহারা থেকে কোনো ভাবও প্রকাশ পাচ্ছে না। কেবল তরুর পিছু পিছু নিচে এলো।
– ‘কোথায় কিচেন?’
নিঃশব্দে ডানদিকে হাত দিয়ে দেখিয়ে দিল নির্জন। তরু কিচেনে গিয়ে চারদিকে তাকিয়ে বললো, ‘এখানে সবকিছু পেয়ে যাব তাই তো?’
– ‘হ্যাঁ।’
তরু ফ্রিজ খুলে পানির বোতল বের করে একটা গ্লাসে জল ঢেলে নির্জনের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো, ‘নিন, ঝগড়া করতে করতে আপনার গলা শুকিয়ে গেছে।’
নির্জন গ্লাস হাতে নিয়ে পানি খেয়ে বললো, ‘পানির পিপাসা পেলে তো আমিই খাব, আমার হাত আছে তাই না? এগুলো আপনাকে করতে হবে না।’
– ‘তাহলে পানি খেলেন কেন? আমি কি জোর করে খাইয়ে দিয়েছি?’
– ‘একজন গ্লাসে পানি ঢেলে দিয়েছে ভদ্রতা থেকেও তো খেতে হয়।’
– ‘আমিও ভদ্রতা থেকে দিয়েছি পানি। দেখতে পাচ্ছি একজন মানুষের ঝগড়া করতে করতে গলা শুকিয়ে গেছে। না খেয়ে মুখ শুকিয়ে গেছে। আমাকে বলছেও নানান ঝামেলার মধ্যে আছে ভোর থেকে। তো আমার করণীয় কি? তার সঙ্গে শুধু তাল মিলিয়ে ঝগড়া করা? ঝগড়া না করে একটু ভালো কাজ করলাম। এখন ভালো কাজ পছন্দ না হলে তো ঝগড়াই করতে হবে। মেয়ে মানুষের সাথে ঝগড়ায় পারবেন? করবো?’
নির্জন চোখবুজে শ্বাস ছেড়ে গ্লাস টেবিলে গ্লাস রেখে বললো, ‘ঠিক আছে আপনি রান্না-বান্না করুন, আমি বাইরে যাব।’
– ‘দাঁড়ান, বাইরে কেন যাবেন?’
– ‘আশ্চর্য! সেটাও আপনাকে বলে যেতে হবে? বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না?’
তরু ফিক করে হেসে বললো,
– ‘আপনি তো খুবই বাজে একটা লোক। আমি কি সেজন্য জিজ্ঞেস করেছি না-কি? আমি বলতে চাইছি বাইরে এখন কেন যাবেন? রান্না যেহেতু করবো খেয়েই যান।’
– ‘আমি জিমে যাব। সেখান থেকে এসে খেয়ে গানের রিহার্সেল আছে। সেখানে যাব।’
– ‘এখন দুইটা বাজে এখন কীসের জিম? সকালে যাবেন, অথবা সন্ধ্যায়। আর আপনি তো মনে হয় গোসলও করে ফেলেছেন। এখন খেয়ে-দেয়ে রেস্ট নিয়ে গানের রিহার্সেলে যান। এটাই ভালো হবে।’
– ‘না আমি যাচ্ছি।’
– ‘এভাবে একেবারে কিছু না খেয়েও জিমে যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে?’
– ‘আপনার এত ভাবতে হবে না, আমি বাইরে হালকা কিছু খেয়ে নেব।’
– ‘আচ্ছা শুনুন, এদিকে আসুন।’
নির্জন পুনরায় কিচেনে এলো। তরু চারদিকে তাকিয়ে বললো, ‘আপনি চলে গেলে যদি আমি কোনোকিছু খুঁজে না পাই তখন কি ফুপুকে গিয়ে ডাকবো?’
নির্জন চোখবুজে নিজের চুলে হাত বুলিয়ে বললো, ‘মিস তরু, একটু আগে তো দেখলেন আপনার ফুপু আপনার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘তাই উনার সঙ্গে বুঝেশুনে এখন চলতে হবে। আমার ধারণা উনি বিয়ের আগে যেরকম ছিলেন সেরকম নাই এখন। আপনি বিরক্ত করলে কিংবা সাধারণ এই রান্না নিয়েও রাগারাগি করে বাসা থেকে বের করে দিতে পারে।’
তরু অবাক হয়ে বললো, ‘তাই? বলেন কি? তাহলে কাজের লোকেরা উনার জন্য বিদায় হয়েছে?’
নির্জন ইতস্তত করে বললো, ‘এত কিছু জেনে লাভ নেই। আর আরেকটা কথা, আগেই বলেছি এগুলো বাড়িতেও আপনার বলতে হবে না।’
তরু দুঃখী চেহারা করে বললো, ‘হুম, বুঝেছি।’
– ‘এখন কি কি রান্নার জন্য লাগবে দেখুন পান কি-না। আমার যেতে হবে।’
তরু সবকিছু খুঁজে খুঁজে বের করে বললো, ‘পেয়েছি।’
‘ওকে তাহলে আমি যাই।’
– ‘শুনুন।’
– ‘আবার কি?’
– ‘আসলে আমি ভবিষ্যৎ ভাবি নিয়ে চিন্তিত৷’
নির্জন ভ্রু-কুঁচকে বললো, ‘বুঝিনি।’
– ‘মানে আপনার বউকে নিয়ে চিন্তিত। বেচারির শাশুড়ি সবাইকে ঘর থেকে বের করে দিচ্ছে। ফুপু শাশুড়ি, বাড়ির কাজের লোক সহ সবাইকে। বিয়ের পর তাকেও যদি বের করে দেয়?’
নির্জন অবাক হয়ে বললো, ‘আপনি ইয়ার্কি শুরু করছেন না-কি আমার সঙ্গে?’
– ‘এটা ইয়ার্কি না, আমার মাথায় চিন্তাটা এলো। তাই সরল মনে প্রকাশ করলাম।’
নির্জন দাঁত কটমট করে তাকিয়ে বললো, ‘একটা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে মজা করছেন। কমনসেন্স নাই আপনার?’
– ‘নাই, কারণ জাতটা তো জানেনই, ফুপুর জাত। সেম হয়েছি।’
নির্জন চরম বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে কিচেন থেকে বের হয়ে চলে গেল।
তরু মুচকি হেসে ওর প্রস্থান দেখলো। তারপর কিছু একটা ভেবে গেল কেয়ার খুঁজে। খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে কেয়ার দরজায় নক দিল সে। কেয়া সদ্য গোসল থেকে বের হয়ে এসে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকোচ্ছে। দরজা খুলে দিয়ে বললো, ‘ও তুই।’
– ‘ভেতরে আসবো? না-কি ছুঁত লাগবে?’
– ‘কি বলিস এগুলো?’
– ‘সত্যিই বলেছি। এখন তোমার সঙ্গে কথা বলতেও হিসাব করে বলতে হবে। বড়লোক মানুষ। আগে নির্জন ভাইয়ের সামনে কি অপমানটাই না করেছো। লজ্জায় আমার কাঁদতে ইচ্ছা করছে। নিজের ভাইঝিকে বলছো জড়াজড়ি করবি না…।’
তাকে থামিয়ে দিয়ে কেয়া বললো,
– ‘ভেতরে আয় তো, এগুলোর জন্য গাল ফুলাবি না।’
তরু মলিনমুখে ভেতরে গিয়ে বললো, ‘তুমি আমার সঙ্গে কত দুষ্টামি করো, বিয়ের পর ডেইলি বলতে আমার ছেলে আছে। দাঁড়া তোকে বউ করে আনতেছি। এসব কথাতেও আমি কখনও রাগ করেনি। অথচ আজ আমি প্রথম তোমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। নিজের আপন ফুপুকে কোথায় গিয়েছিলে বলে খুশি হয়ে এগিয়ে গিয়েছি। এটাই দোষ হয়ে গেল। কি লজ্জাটাই না দিলে।’
কেয়া এগিয়ে এসে ওকে কাছে টেনে নিয়ে বললো, ‘ধ্যাৎ তুই এগুলো বাদ দে তো। আমার আসলে কেন যেন আজকাল হঠাৎ মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। প্লিজ বাদ দে, আর তুই আমার কাছে আসতে ভয় পাবি মানে? পাগল না-কি। যখন ইচ্ছা আসবি, যা ইচ্ছা বলবি। কিছু খেয়েছিস?’
নির্জন সাহেব বললেন, ‘বাইরে থেকে গিয়ে খাবার আনবেন।’
– ‘ও হ্যাঁ, বাড়িতে কাজের মেয়েটা নাইরে। আচ্ছা আনুক, বস তুই।’
– ‘ও তাহলে একটা কাজ করি। আজ আমি রান্না করি। সবকিছু আছে তো বাসায় তাই না?’
– ‘আছে তাই বলে তুই রাঁধবি কেন পাগল হয়েছিস না-কি।’
– ‘ওমা, আমার ফুপুর বাসায় আমি রাঁধতে পারি না? কি বলো এগুলো। এক কাজ করো, নির্জন সাহেবকে কল দাও। দিয়ে বলো বাইরে থেকে কিছু আনতে হবে না। আর জানো আমার তোমাকে দেখে হাসি পাচ্ছে।’
কেয়া ভ্রু-কুঁচকে বললো, ‘হাসি পাচ্ছে দেখে মানে কি?’
– ‘মানুষ এত চেঞ্জ হয়? আগে জানতাম না। কি যে সুন্দর লাগছে তোমাকে। বাইরে থেকে যখন এসেছিলে বাবা আমার মনেই হচ্ছিল না এত সুন্দর একজন মেয়ে আমার আপন ফুপু।’
কেয়া লাজুক হেসে বললো, ‘তোর মা’র মতো পাম্প দিতে শিখে গেছিস।’
– ‘তোমার পাম্প মনে হলো? আয়নায় দেখো খেয়াল করে। অবশ্য তুমি তো আগেই সুন্দর ছিলে। না হলে কি আর ফুপা দেখে পাগল হয়ে যেতেন?’
– ‘তুইও অনেক সুন্দর হয়েছিস।’
– ‘আচ্ছা দাও নির্জন সাহেবকে কল দাও। দিয়ে বলো বাড়িতে রান্না হবে। সেও যেন বাইরে কিছু না খায়।’
– ‘তুই সত্যিই রাঁধবি?’
– ‘হ্যাঁ, খুব ইচ্ছা করছে তোমার জন্য রাঁধবো। আম্মুও বারবার বলে দিয়েছিল ফুপুর কথা শুনবি, ওর কাজে হেল্প করবি।’
কেয়া ফোন হাতে নিয়ে বললো, ‘আচ্ছা তাহলে কল দিলাম কিন্তু।’
– ‘বাবা আইফোন দেখছি।’
কেয়া মুচকি হেসে ফোন দিল নির্জনকে। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই কেয়া বললো, ‘নির্জন তুমি কি বাইরে চলে গেছো?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘বাইরের খাবার লাগবে না, বাসায় আসো, বাড়িতেই রান্না হবে।’
– ‘আমি জিমে যেতে চাচ্ছিলাম আম্মু।’
– ‘এখন কীসের জিম৷ সারাদিন খাওনি কিছু। অসুস্থ হয়ে যাবে। আসো একসঙ্গে খাব।’
ওপাশ থেকে ইতস্তত করে নির্জন বললো, ‘আচ্ছা আসছি।’
কেয়া ফোন রেখে দিল। তরু বললো, ‘আচ্ছা আমি তাহলে কিচেনে যাই।’
কেয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বললো, ‘আচ্ছা তরু আমি কি কিছুটা মোটাও হয়েছি?’
– ‘হ্যাঁ ফুপু এটাই আমি বলতে চাইছিলাম। মানে এজন্যই বেশি চেঞ্জ লাগছিল।’
– ‘ধ্যাৎ, তাই বলে এত মোটা হয়েছি না-কি?’
– ‘না তা বলছিল না। কিছুটা মোটা হয়েছো তাই আরও রূপটা ফুটেছে। অনেকটা উজ্জ্বলও হয়েছো।’
– ‘তুই এত সুন্দর করে কথা বলিস। এই তোর লেখালেখির কি অবস্থা রে?’
– ‘হ্যাঁ সবই বলবো। তোমাকে কত কথা বলার জন্য মন আকুপাকু করছে৷ এখন যাই আগে রাঁধি।’
– ‘আচ্ছা যা।’
তরু বাইরে এসে নিজের নাটকে নিজেই মুগ্ধ হয়ে হেসে সোজা কিচেনে গেল। ফ্রিজে সে ডিম দেখেছিল। তাড়াতাড়ি পানি বসিয়ে দুইটা ডিম সিদ্ধতে দিয়ে দরজার কাছে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। প্রচণ্ড কালো মুখে নির্জনকে ফিরে আসতে দেখে তরু বললো, ‘ভাইয়া এদিকে আসুন।’
– ‘প্লিজ এখন মেজাজটা খারাপ করবেন না।’
– ‘আস্তে কথা বলুন আপনার আম্মু শুনবে, আসুন দরকার আছে।’
নির্জন কিচেনের দিকে এগিয়ে এলো। তরু আস্তে-আস্তে বললো, ‘আমার কথা শেষ হওয়ার আগে মেয়েদের মতো চেঁচামেচি করবেন না। আপনি জিমে যেতে পারেননি৷ এখন আমি দুইটা ডিম সিদ্ধ করছি, আপনি খেয়ে বাসায় বুকডন-টুকডন দিন। এর ভেতরে রান্না হয়ে যাবে। খেয়ে গানের রিহার্সেলে যাবেন।’
‘আপনার এতকিছু করা লাগবে না’ বলে নির্জন চলে যাচ্ছিল।
– ‘দাঁড়ান, আপনার সঙ্গে কি আমার পূর্বজন্মে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল? অকারণ কেন রাগারাগি করছেন? আপনি আমার ফুপাতো ভাই হোন। বুঝতে পারছি ফুপু ভালো যন্ত্রণা দিচ্ছেন। তাই আপনার এত মেজাজ দেখানোর পরও ঝগড়া না করে ভালো কাজ করছি।’
– ‘তো করুন, ডিম সিদ্ধ দিচ্ছেন সেটা ডেকে এনে বলতে হয়?’
– ‘সেটারও কারণ আছে।’
– ‘কি?’
– ‘ডিম কি সিদ্ধ করে শুধু দিয়ে দেবো। খোসা ছাড়িয়ে দিলে দেখা গেল নাক উঁচু করছেন।’
– ‘আপনার খোসা ছাড়িয়ে দেওয়া লাগবে না। কষ্ট করে এটুকু করছেন তাতেই কৃতজ্ঞ।’
তরু নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ও আমার হাতে খোসা ছাড়ানো ডিম খেতে ঘেন্না লাগবে!’
নির্জন কোনো জবাব না দিয়ে চলে গেল।
____চলবে_____