পূর্নিমার_চাঁদ_জানে_তুমি_আমার #লেখনীতে:মাইশা চৌধুরী Part 9

#পূর্নিমার_চাঁদ_জানে_তুমি_আমার
#লেখনীতে:মাইশা চৌধুরী
Part 9

চোখ খুলে পিটপিট করে তাকালাম।একটা রুমে সুয়ে আছি আমি।বিশাল বড় রুমটা।বেড থেকে একটু দূরে সোফা তার সামনে টেবিল।তার অপর পাশে কাবাড।পুটো রুম হোয়াইট কালার।সব জিনিসও হোয়াইট কালারের। তবে কি যার কাছে রেহান ভাই আমাকে বেচে দিছে।আমি সেখানে?তাট বাসায়?মনে হতেই বুকের মাঝে চাপা একটা যন্ত্রনা শুরু হলো।জানিনা কি আছে কপালে? কোথায় আছি আমি এখন?
আমার ভাবনার মাঝেরই মাঝ বয়সী একজন মহিলা রুমে এলো।আমাকে দেখেই বলল,,

“উঠে পরেছো মা।নাও খেয়ে নাও তো দেখি।”

“আমি কোথায়?”

“তুমি আমার স্যারের বাসায়।”

তার মানে সত্যি আমি এখন অন্য কারর অধীনে! আমি আর মহিলাটিকে জিজ্ঞেস করলাম না কে ওনার স্যার।কোনো ইচ্ছাই নেই জানার।রেহান ভাই আমার সাথে এটা কিভাবে করতে পারলো।ছি।
আমি জানিনা কেনো এমনটা করল।মিস্টার ভুতের কথা মনে পরছে খুব।উনি যদি একবার আসতো আমাকে বাচাতো।আমার ভাবনার মাঝেই মহিলাটি বলে উঠল,,

“হা করো মা।তুমি আমার মেয়ের বয়সী তাই তুমি করেই বললাম কিছু মনে করো না।”

“না আন্টি সমস্যা নেই।”

“আচ্ছা।হা করো তো।”

আমাকে খাইয়ে দিয়ে চলে গেলো।উনি যেতেই রুমে কেউ প্রবেশ করল।আমি তাকায়নি তার দিকে।
কেনোই বা তাকাবো।চিনিনা জানিনা অচেনা একজন মানুষ।আজ নিজের প্রতি নিজের ঘৃনা হচ্ছে।
রুমে আসা লোকটা কিছু বলল না আমাকে।চুপচাপ ওয়াশরুমে গেলো মনে হয়।
যাক বাবা বেচে গেছি।আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে।যে করেই হোক।
আমি আস্তে আস্তে বেড থেকে নেমে রুমের বাহিরে এলাম। এটা তো বাড়ি নয়।যেনো রাজ প্রসাদ।হবেই তো। এতো টাকা না থাকলে কেউ মেয়ে কিনে।ছিহ।আমি সোজা এখান থেকে পালিয়ে আব্বু আম্মুর কাছে চলে যাবো। যেই ভানা সেই কাজ।বাড়িট মেইন দরজা পর্যন্তু যেতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।তবুও বের হতে পেরেছি। এ কি এতো সিকিউরিটি কেনো।অনেক কষ্ট করে ওদের চোখ ফাকি দিয়ে রাস্তায় আসতেই একটা শক খেলাম।এটা কোন রাস্তা।চিনি না কেনো?

আর মানুষগুলো এমন বিদেশিদের মতো কেনো?
অদ্ভুত তো।আমি বুঝতে পারছি না আমি ঠিক কোথায় আছি।এটাই কি বাংলাদেশ! কোন দিকে যাবো। সামনে একটা ছোটো বাবু দাড়িয়ে ওর মাম্মামের সাথে।পিচ্চিটাও ইংলিশ বলছে।আমি কি তাহলে অন্য দেশে!

কথাটা ভাবতেই গায়ের মধ্যে কাটা দিয়ে উঠলো। সামনের দিক এগোতে থাকলাম।তখনই একটা গাড়ি ঝড়ের বেগে আমার সামনে আসে।আমার হাত ধরে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দরজা লক করে দেওয়া হলো । ।

গাড়িতে থাকা লোকটি আমার দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“পালিয়ে কাজটা ভালো করোনি।এটা তোমার বাংলাদেশ না।এটা সুইডেন।এখানে আমার কথাই সব।”

লোকটার গলা বেশ চেনা লাগলো।কিম্তু কোথায় শুনেছি মনে পরছেনা।

মাক্স পড়াট জন্য মুখ দেখা যাচ্ছে না।আমি চুপ করেই আছি জানিনা আবার কোন ঝামেলায় পড়তে হয়।বেশকিছুক্ষন পর যে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম।সেখানে এসে গাড়ি থামলো।

আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে টেনে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যেতে লাগলো লোকটি।তারপর একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।রুমটা এতোটাই অন্ধকার যে নিজেকেই দেখতে পারছিনা। লোকটা আমার সামনে এসে বলল,,

“এই পালানোর ভুলটা নেক্সট টাইম করো না সারা। পস্তাতে হবে তখন। ”

“কে আপনি?আমি এখানে কেনো?আমি বাসায় যাবো।”

“বাচ্চাদের মতো আবদার করে লাভ নেই সারা।আমি তোমাকে সাবধান করে ছিলাম।বলেছিলাম
নিজের ক্ষতি হতে দিওনা।তাহলে ওইদিন আমার থেকে ভয়ানক কেউ হবে না।তুমি আমার কথায় কান দাওনি।এখন এই অন্ধকার ঘরটাই তোমার ঠিকানা।”

“না না প্লিজ। আমাকে যেতে দিন।আর আপনি মিস্টার ভুত!”

“হুম আমি।”

“কে আপনি আপনাকে দেখতে চাই আমি।”

“দেখবে ওকে ফাইন তোমার একটা কথা তো রাখাই যায়।”

বলে রুমের দরজা খুলে দেয় লোকটি আর আলো এসে চোখে পড়ে আমার।তখনই ঘাড়ে কিছু ফুটার অনুভব হয়।আর কিছু মনে নেই।

লোকটি সারাকে কোলে তুলে অন্ধকার রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে নিয়ে যায়।তারপর বেডে সুইয়ে দেয় সারাকে।
“তুমি ওইদিন আমার কথা শুনোনি।তাই কাল এতোবড় বিপদ হয়ে গেলো।যদি আমি ১ মিনিট লেট করে পৌছাতাম তবে কি হবে একবারো ভাবতে পারো।?তুমি আমাকে ভালোবাসো কি না সেটা নিয়ে আমার আর মাথা ব্যাথা নেই।আমি তোমায় ভালোবাসি এটাই যথেষ্ট। তুমি আমার। আমার হয়েই থাকবে।কেউ না জানুক ওই #পূর্নিমার_চাঁদ_জানে_তুমি_আমার।কালকে তোমাকে নিয়ে আসার কয়েক সেকেন্ড পরই পুলিশ এসেছিলো ওইখানে। রেহান সহ সবাই এখন পুলিশের আওডতায় আছে।তোমার কিছু শাস্তির প্রয়োজন সারা।তাই এখানে এনেছি।ওরা তোমাকে যে মেডিসিন দিয়েছিলো তুমি ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় জ্ঞানহীন ছিলে।আমি চাই না আর কোনো ক্ষতি হোক তোমার। তাই কিছুদিন তুমি আমার কাছে থাকবে।

বলে সারার কপালে চুমু আকে লোকটি।তারপর রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

চলবে…!!
(জানি ছোট হয়েছে।নেক্সট পার্ট বড় করে দিবো প্রমিস।কেমন হয়েছে জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here