#পূর্নিমার_চাঁদ_জানে_তুমি_আমার
#লেখনীতে:মাইশা চৌধুরী
Part:11
“আপনি আমাকে বাবু বললেন?”
,
“হুম। বাচ্চাদের মতো মুখ করে বসে থাকলে আর কি বলবো।”
“আমি মটেই বাচ্চা নই।”
“হুম তুমি বুড়ি।”
“আপনি বেশি বলেন।”
না কম।”
“হুহ ”
উঠে রুমে চলে এসেছি।শুধু শুধু ঝগড়া করছে আমার সাথে পচা লোক।রুমে এসে শুতেই কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়েছি।
যখন ঘুম ভাঙলো ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ২ ঘন্টা ঘুমিয়েছি।উঠে ফ্রেস হয়ে রুমের বাহিরে গিয়ে দেখি।প্রিশা আপু আর আদ্রাফ ভাইয়া টিভি দেখছে গল্প করছে।আমাকে দেখে প্রিশা আপু উঠে এলো।
“এসো সারা বস গল্প করি।”..
” হুম।”
আমি বসলাম প্রিশা আপু আমাকে কফি দিলো।আদ্রাফ ভাইয়া বলল,,
“সারা আমি তোমার বড় ভাইয়ার মতো তাই আদ্রিয়ানের মতো তুমিও আমাকে ভাইয়াই বলবে।কেমন।”
“আচ্ছা।”
প্রিশা আপু বলে,,
“সারা কাউকে কি খুজছো?”
“কই আপু না তো।”
“আহা প্রিশা আদ্রিয়ান কই এটাই বুঝার চেষ্টা করছে ও।তাই বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।”
আমি লজ্জা পেলাম কারন আমি সত্যি ওনাকে খুজছিলাম। ভাইয়া বুজলো কিভাবে?
“আদ্রাফ তুমি শুধু শুধু ওকে লজ্জায় ফেলে দিলে”
“আমি তো শুধু বললাম। আচ্ছা বাদ দাও। সারা আপু তুমি কি রাগ করলে?”
“না।”
তারপর আমরা গল্প করতে লাগলাম।
একটুপর আদ্রিয়ান ও এলো।সবাই মিলে অনেক মজা করে আড্ডা দিলাম।মন টা ভালে হয়ে গেলো।আদ্রাফ ভাইয়া অনেক ভালো।
হাসিখুশি আড্ডা, তারপর শপিং এ গিয়েছিলাম সবাই মিলে। মজা করে সময় গুলো কেটে গেলো।৭দিন পর আজ ভাইয়া আর ভাবি চলে যাবে।মন খারাপ করছে।
আমাকে মন খারাপ করে থাকতে দেখে ভাবি বলল,,
“সারা মন খারাপ করো না। খুব তারাতাড়ি একসাথে থাকবো।সেই ব্যবস্থাই করতে যাচ্ছি।”
“মানে?”
“বুঝবে পরে।এই নাও চকলেট।মন খারাপ করো না।ভালে থেকো।”
আদ্রাফ ভাইয়াও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।তারপর আদ্রিয়ানের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
আমি মন খারাপ করে বসে আছি।
“মন খারাপ করছো কেনো?”
“ভাবি ভাইয়া চলে গেলো।”
“ওদের সাথে থাকতে চাও।”
“না মানে আমি সেটা বলিনি।”
“ওদের সাথে থাকতে হলে আমাকে বিয়ে করতে হবে।”
“কি বলছেন কি?”
অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
“হুম ঠিক বলছি।নাহলে কিভাবে ওদের সাথে থাকতে পারবা বলো?”
আমি ফেলফেল করে তাকিয়ে আছি।উনি বলল,,
“মাথায় চাপ দিও না।তুমি বুঝবে না।যাও রেডি হও পরশু দিন আমরা বাংলাদেশ ব্যাক করবো।”
কথাটা শুনে মনে খুশি হয়ে গেলো।আমার অবস্থা বুঝতে পেরে আদ্রিয়ান হাসলো।
এই ২দিন আমি গেস্ট রুমে একা থেকেছি।ভয় করেছে ভুতের।কারন এখানে আসার দিন থেকে আমি প্রিশা আপুর সাথে ঘুমিয়েছি।যাই হোক দুদিন পর দেশে ব্যাক করলাম।
_____________________________________
উনি আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো।ভিতরে এলে কি হতো হুহ বেশি বেশি।
বির বির করতে করতে বেল বাজালাম।আম্মু এসে দরজা খুলে আমাকে জরিয়ে ধরলো আম্মুর সাথে কথা বললাম আব্বু বাহিরে ছিলো।আমি রুমে গেলাম।কতোদিন পর নিজের রুমে এলাম।ফ্রেস হয়ে খেয়ে আম্মুর সাথে আরও কিছুক্ষণ গল্প করলাম।আম্মুকে ওই ঘটনা সম্পর্কে কিছু বললাম না।কারন আম্মুর শরীর খারাপ হয়ে যাবে।
বিকেলে আব্বু এলো আব্বুর সাথে গল্প করলাম।সময় টা ভালোভাবেই কেটে গেলো।কিন্তু আদ্রিয়ান একবারো আমাকে ফোন দিলো না।বা আমার ফোন ধরলো না।
আসার সময় আদ্রিয়ানের নাম্বার টা নিয়ে এসে ছিলাম সেটা উনি জানেনা।কিন্তু কেনো ফোন ধরলো না বুঝলাম না।
কেটে গেলো ১৫দিন।বেশ ভালোই সময় কাটছে।কিন্তু এমন কোনো সময় কাটেনি যখন আদ্রিয়ানকে মনে পড়েনি। তবে কি আমি ওনাকে ভালোবেসে ফেললাম।ভাবতেই লজ্জা পেলাম।
বেশ অনেক ক্ষন ভেবে তারপর বুঝলাম সত্যি আমি ওনাকে ভালোবাসি।আর তাই আমি এতোটা অস্থির হয়ে গেছি এই ক’দিন কথা না বলে।
না অনেক হয়েছে আদ্রিয়ানের সাথে কথা তো বলতেই হবে কেনো উনি এমনটা করছেন।একবারো কথা পর্যন্ত বলছেন না। ঢাকায় যাবো।যদি ওখান থেকে আদ্রিয়ানের সাথে যোগাযোগ করা যায় তো ভালো।
যেই ভাবা সেই কাজ আব্বু আম্মুকে বুঝালাম যে আমি ঢাকায় যাই তা ছাড়াও কলেজের রেজাল্ট দিবে। এই বলে চলে এলাম।
আসতে হলো সেই ফুপির বাসায়।এসে দেখি আঙ্কেল, তাহিন ভাইয়া অর্পি আপু আছে।
অর্পি আপু এসে জড়িয়ে ধরলো আমাকে।
“মিথি কেমন আছিস?কতো মিস করেছি।কতো টেনশন হতো তোর জন্য। কই ছিলি তুই?”
“আগে মেয়েটাকে বসতে দে তোরা তারপর কথা বলিস।”
আঙ্কেলের কথায় অর্পি আপু আমাকে বসতে বলল,,
তারপর জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে।
আমি সব বললাম।সব শুনে আঙ্কেল বলল,,
” আদ্রিয়ান নামের ছেলেটা না থাকলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতো।যা হয় ভালোর জন্য ই হয়।”
তারপর আরও কিছু কথা বলে আঙ্কেল গেলো অফিসে।তাহিন ভাইয়াও গেলো।।
আমি অর্পি আপুকে জিজ্ঞেস করলাম,,
“ফুপি কোথায় আপু?”
“আম্মুর কথা আর বলিস না।”
“কেনো?”
“ভাইয়ার শোকে পাগল হয়ে। ভাইয়া যে এতো বড় একটা অ/প/রা/ধ করেছে সেটা কিছুই না।বরং ভাইয়ার অবস্থার জন্য তোকে দোষী করছে।”
আমার ভিষন খারাপ লাগলো কথাটা শুনে।
অর্পি আপু বলল,,
“তুই এখন আম্মুর রুমে যাস না। কেমন রিয়েক্ট করে ঠিক নেই।”
“কিন্তু…”
“আম্মু ভাইয়াকে বের করার জন্য চেষ্টা করেছিলো জানিনা সেটা কতোদূর কাজ হয়েছে জানিনা।”
“খোজ নাওনি রেহান ভাইয়ের?”
“না বাবা আমি তাহিন ভাইয়া কেউ খোজ নেইনি। ”
“ওহ। ”
“হুম আদ্রিয়ান ভাইয়ার সাথে তোর কথা হয় মিথি?”
“না আপু।আসার পর আমার সাথে আর কোনো যোগাযোগ করে নাই।”
“বলিস কি?”
“হুম।আচ্ছা আপু তুমি কি আদ্রিয়ানের বাসা চিনো? ”
“হুম।আম্মুর সাথে একবার গিয়েছিলাম”
“আমাকে নিয়ে চলো আমি ধন্যবাদ দিবো একবারে।”
“আচ্ছা দারা। কাল আমি নিয়ে যাবো তোকে।”
চলবে…!!