পরীর দেশের ডেবিল,পর্ব -৬

পরীর দেশের ডেবিল,পর্ব -৬
শাহরিয়ার আবিদ

– আবিদ তার রুমের দরজা খুলছে না সকাল থেকে। সবাই এসে আবিদের দরজার সামনে এসে জড়ো হয়েছে । এপাশ থেকে সবাই আবিদকে ডেকেই চলছে। দরজার ওপাশ রুমের ভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দ নেই । এভাবে প্রায় একঘন্টা পার হয়ে গেল। কোনো উপায়ন্তর না দেখে আন্কেল দরজাটা ভাঙ্গার স্বিদ্ধান্ত নিল।

– নিচ থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার আর আর তার সাথে আগুণ জ্বালানোর লাইটার টা নিয়ে এসো। (জ্যাক কে বলল)

-সাইমন তুইও যা জ্যাককে সাহায্য করতে। (রাফা)

-আচ্ছা ,,,, (সাইমন)

..
-হেই জ্যাক, দাড়াও। (সাইমন সিড়ি বেঁয়ে নামতে নামতে বলল)

জ্যাক অপেক্ষা করল সাইমন আসা পর্যন্ত।
-তুমি আবার আসতে গেলে কেন? আমি একাই করতে পারতাম। (জ্যাক)

– হ্যা পারতে, তবে দুজুনে করলে কাজটা আরো ভালো এবং তারাতাড়ি হবে। আচ্ছা বলো, গ্যাসের সিলিন্ডার টা কোথায় রাখা আছে? (সাইমন)

– ওটা বাইরে বাগানের কাছেই রাখা আছে। (জ্যাক)

– চলো। ।।।

দুজনেই সেদিকে এগিয়ে গেল। জ্যাক গিয়ে সিলিন্ডার টা কাঁধে তুলে নিল। আর সাইমনকে বলল, (সামনে গ্যাসের ফাইপ আর তার সাথে লাগানো লাইটারটা আছে। ওগুলো নিয়ে আস।)

সাইমন কিছু না বলে সে সেগুলো নিয়ে এল। দুজনে আবার দুতলায় চলে এসেছে আবিদের রুমের সামনে।

আন্কেল সিলিন্ডারের সাথে লাইটার লাগানো লাইনটা জুড়ে দিল। তারপর লাইটারের পাওয়া বারিয়ে দিয়ে দরজার লক এর সামনে ধরল কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি গলে পড়ে গেল তারা অনায়সে দরজা খুলে রুমে ঢুকে গেল। কিন্তু একি আবিদতো রুমে নেই।

রাফা চাপাস্বরে সাইমনকে বলল,( আমরা যা সন্দেহ করেছি। তাই হলো, চলে গেছে এখন কি হবে?? )

– বুঝতেছি না –(সাইমন)

.
.

এদিকে আবিদ নিজেকে মাঠিতে আবিষ্কার করল। এতক্ষণ তার জ্ঞান ছিল না। দ্রত ওঠে দেখল মাঠিতেই পড়ে ছিল কিন্তু এখানের মাঠিত সাদা। সে এখনো ভালো করে বুঝে উঠতে পারে নি কি হচ্ছে। সে আগের কথাগুলো ভাবার চিন্তা করল ” সবাই ঘুমিয়ে ঘড়ির কাঁঠায় ঠিক ১১ বেঝে ৫৯ মিনিট। তখন সে কাঁপা কাঁপা হাতে তার পকেট থেকে ধোঁয়া মানবের আংটিটা বের করল। আলোকিত অংশে ঘষা দিতেই ধোঁয়া মানব বেরিয়ে এল। আবিদ তাকে জানল সে পরীর দেশে যাওয়ার জন্য তৈরি। তারপর ধোঁয়া মানব যাদু করি এক ধোঁয়ার রিং তৈরি করল। আবিদকে সেটা তে ঢুকার নির্দেশ করলে আবিদ সেটাতে ঢুকার পর তার মাথা ঘুরাতে শুরু করে তার পর তার আর কিছুই মনে নেই। এরপর নিজেকে নিচে শুয়া অবস্থায় আবিষ্কার করে।)

আবিদ ভাবতে লাগল। তাহলে আবিদ এখন কোথায়? তার হিসেব ভূল না হলে সে এখন পরীর দেশে থাকার কথা। আবিদ নিশ্চিত হতে তার পকেটে হাত দেয় আংটি বের করার জন্য। কিন্তু অবাক করা আর কষ্টের বিষয় হলো আংটিটা তার পকেটে নেই। আবিদ তার সাথে আনা প্রতিটা জিনিস ভালো করে দেখল কিন্তু কোথাও নেই আংটিটা।

এতক্ষণে তার মনে পড়ল সে ধোঁয়া মানবের তৈরি যাদুর তৈরি ধোঁয়ার রিং এ ঢুকার সময় আংটিটা নিতে ভূলে যায়। এবার সে বুঝতে পারছে সে কত বড় একটা ভূল করেছে।

এখন আবিদ কোথায় আছে সেটাও বুঝতেছে না। চারদিকে শুধু সাদা আর কি মিষ্টি সুবাস। কিছু সোনালি পাখিও দেখা যাচ্ছে। আবিদ আর কি করবে একজায়গায় বসে থাকলে তো চলবে না। তাই সে সামনের হাঁটার স্বিদ্ধান্ত নিল কোনো রাস্তা পেলে সেটা ধরে হাঁটা শুরু করে লোকালয়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে। সেটা ভেবেই হাঁটা শুরু করল দোয়াদরূদ যা জানে সব পড়েই হাঁটা শুরু করল।

চারপায়ে শুধু সাদা মাঠি আর কিছুই তার চোখে পড়তেছে না। এভাবে হাঁটছে তো হাঁটছেই। কিন্তু রাস্তার কোনো দেখায় নেই। এভাবে প্রায় ঘন্টা খানেক কেটে যাই। শেষে এসে একটা নদীর দেখা পায়। আবিদ এটা দেখেই আবিদ খুশিতে লাফ দিয়ে ওঠে। আবিদ দৌঁড়ে গিয়ে নদূর কাছে যাই। এতদুর হাঁটার পর সে ক্লান্ত তাই নদীর একটা অংশ থেকে কিছু পানি পান করে নিল।

এই নদীটায় তাকে পৌঁছিয়ে দিতে পারবে লোকালয়, সভ্যতার মাঝে। আবিদ কিছুক্ষণ সেখানে ঝিরিয়ে নিল। আবার হাঁটতে শুরু করল। আবিদ একটা বিষয় লক্ষ্য করল তার এতক্ষণ ক্ষিদে লেগেছিল। কিন্তু এখন তার ক্ষিদে মিটে গেছে। ক্ষিদে মিটার কারণ কি? তাহলে কি এখানে পানি খেলেও ক্ষিদে মিটে যায়। আবিদ আবার নদী পরিষ্কার দিক থেকে আরো কিছু পানি খেল। এবার তার সম্পূর্ণ ক্ষিদে মিটে গেছে। মনে মনে বলতেছে, “কোন জায়গায় আসলামরে বাবা পানি খাইলে পেট ভরে যায়। লোকালয়ের দিকেই তো যাচ্ছি কে যানে বাপু খেতে দিবে না খেয়ে ফেলবে।”

আবিদ নদীর তীর ধরেই হাঁটতেই আছে। পথটা যেন পুরোয় না। এভাবে প্রায় অনেক্ক্ষণ হাঁটল আবিদ কমে তিন চার মাইল তো হবে। শেষ পর্যায়ে এমন অবস্থায় গিয়ে দাড়াল তার আর হাঁটার শক্তি নেই। পা দুটো কাঁপছে চোখেও ভালোমত দেখতে পারতেছে না চোখ দুটো ঝাপসা দেখছে। উপায়ন্তর না দেখে আবিদ সেখানেই বসে পড়ল তার ব্যাগ থেকো একটা এনার্জি ড্রিংক বের করে খেল৷ ওখানে মাঠিতে পুরো শরীর এলিয়ে দিল। শরীর শক্তির ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই মনে হচ্ছে আবিদের কাছে। সে যে কখন ঘুমিয়ে পড়ল সে কোনো আর টের পায়নি।

আবিদের যখন ঘুম ভাঙল তখন মনে হচ্ছে সূর্যটা সবে মাত্র উঁকি দিল। আবিদ ঘুম জড়ানো চোখে চারদিকে দেখল। নাহ আশেপাশে কেউ নেই। এ বিষয়ে সে নিশ্চিত। মাঠি থেকে উঠে বসল। পাশের নদীর পানি দিয়ে মুখহাত ধুয়ে কিছুক্ষণ চারপাশটা ভালোভাবে দেখল। বুঝার চেষ্টা করল কোন পথটা আসলে তার জন্য ঠিক৷ কোনদিকে গেলে সে লোকালয়ের দেখা পাবে। না কিছুই বুঝতে পারছে না। এখন তার শরীরের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আবিদ আর এত কিছু না ভেবেই যে পথ ধরে হাঁটছিল সেই পথ ধরেই হাঁটা শুরু করল। আবিদ হাঁটতে হাঁটতে একটা জায়গায় এসে থেমে গেল । থামার ইচ্ছা ছিল না তারপরও থামতে হলো কারণ সামনে নদীর মোড় তিনদিকে চলে গেছে এখন সে কোন দিকে যাবে । আবিদ সেখানে দাঁড়িয়ে নদীর গতিপথ বুঝার চেষ্টা করছিল তখনি তার গায়ের উপর একটা জাল এসে পড়ে বন্দী হয়ে পড়ে আবিদ। আবিদ উপরে উঠতে শুরু করল অনেক উপরে প্রায় গাছের মগড়ালে ঝুলন্ত অবস্থায়। আবিদ বন্দী হয়ে গেছে এখন সে জালে বন্দী।

চলবে

প্রশ্ন- আবিদ কার হাতে ধরা পড়েছে? এখন সে কোথায়? সে কি মুক্তি পাবে? এ ঘটনাগুলো কি রাফা আর সাইমন জানতে পারবে?
কেউ পারলে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন৷ আপনাদের কাছ থেকে ঘটনমূলক কমেন্ট আশা করব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here