নীলাম্বরীর_প্রেমে,পর্ব : ৯,১০

নীলাম্বরীর_প্রেমে,পর্ব : ৯,১০
Tuhina pakira
পর্ব : ৯

সকাল ১০ টা ।।

মা কে প্রণাম করে উঠে দাঁড়ালো স্পর্শ। স্পর্শের মা চোখের জল মুছে বললো,
-” সাবধানে যাবি। পৌঁছে ফোন করবি। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করবি। হ্যাঁ মনে করে প্রতিদিন আমাকে ভিডিও কল করতে ভুলবিনা। মনে থাকবে? ”

মায়ের প্রতিটা প্রশ্নে স্পর্শ হেসে মাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

– ” সব মনে থাকবে। কিন্তু তুমি কাঁদছো কেনো? কাঁদার কী আছে। এইতো টুক করে যাবো, থাকবো, তারপর টুক করে চলে আসবো।”

স্পর্শের কাঁধে হালকা বাড়ি মেরে ওর মা বলে উঠলো,

-” দেখবো তুমি কতো টুক করে চলে আসো। দেখো ওখানে গিয়ে যেনো আবার ওখানেই থাকার মতলব করো না। যদি ওইসব শুনি তবে তোর কান আমি লাল করে দেবো। ”

-” তার জন্যও তো আমাকে এখানেই আসতে হবে। তাছাড়া এখানে না এসে যে আমি থাকতেই পারবো না। হয়তো সময় অতিবাহিত হবে কিছুটা কিন্তু ফিরে যে আসতেই হবে। সারাদিনের পর পাখিরা যেমন তার নীড়ে ফেরে। তেমনি, দিন শেষে এটাই যে আমার নীড়। আমার শান্তির জায়গা। ”

-” সাবধানে যাবি স্পর্শ। আর কেবল মাকে ফোন করলে হবে না তোমার আরেক মা কেউ ফোন করতে হবে।”

স্পর্শ এগিয়ে গিয়ে আয়ুর মায়ের পা ছুঁয়ে বললো ,

-” অবশ্যই , অ্যান্টি। তোমরাও ভালো থাকবে। আর তোমার বাড়ির ওই বুড়িটাকে দেখে রেখো। কারোর কথাই যে সে শোনে না। ”

আয়ুর মা ছলছল চোখে তাকিয়ে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো। ছেলেটাকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করেন। স্পর্শ হবার পর প্রায়ই সে স্পর্শকে তার কাছে নিয়ে এসে রাখতো। সংসার সামলে বন্ধুর বাড়ি গিয়ে স্পর্শ কে কোলে নিয়ে থাকতো।

-” আর এই যে দ্রুতি মন দিয়ে পড়াশোনা করিস। আর এই যে দিহান পড়াশোনায় মন দে। বায়না কম কর।”

দ্রুতি , দিহান হেসে হ্যাঁ বললো। ওদের ও খারাপ লাগছে খুব। আর আয়ান এক কোণে দাঁড়িয়ে রয়েছে। স্পর্শ ওর কাছে এগিয়ে যেতেই আয়ান ওর দিকে তাকিয়ে বললো,

-” তুমি যাওনি স্পর্শ দা। দিদি খুব কষ্ট পাবে। আমারও কিন্তু কান্না পাচ্ছে। যাওনি প্লিজ। ”

-” আরে ছোটু তুই না স্ট্রং বয়। স্ট্রং মানুষেরা কাঁদে না। আমি তোকে রোজ ফোন করবো ঠিক আছে।”

আয়ান ওর হাফ পেন্টের পকেট থেকে একটা লেসার লাইট বের করে স্পর্শকে দিল। স্পর্শের হেসে আয়ানের চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে বললো,

-” এটা আর এখন লাগবে না। এর কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে কিছু সময়। তোর কাছে রেখে দে। ফিরে এসে নেবো। দিবি তো?”

আয়ান মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ বোঝালো। স্পর্শ হেসে ওর মায়ের কাছে আবারো এগিয়ে গেলো। অপর দিকে আয়ান, দ্রুতি, দিহান স্কুলের জন্যে বেরিয়ে পড়লো। ওরা তিন জনে একই স্কুলে পড়ে।


এক ঘন্টা পর বাড়ি থেকে বেরোলো স্পর্শ। সাদ , অরূপ ও মিথিলার সঙ্গে স্টেশনের বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্পর্শ।

-” এতটা পথ একা যাবি, আমরা দিয়ে আসি না।”

-” টেনশন করিস না অরূপ। আমি চলে যাবো।”

সাদ স্পর্শের কাঁধে হাত রেখে বলল,
-” আঙ্কেল তোর সাথে কোথায় মিট করবে?”

-” বাবা এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাবে। আর তাছাড়া জয় আঙ্কেল আর শুভ কাকাই ঐখানে আমার সাথে দেখা করে নেবে।”

মিথিলা তো স্পর্শের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। স্পর্শ হেসে মিথিলাকে বললো
-” ওই শাকচুন্নি তোকে বলেছিনা প্রেম প্রেম নজরে আমার দিকে তাকাবিনা। ”

মিথিলা স্পর্শের হাতে মেরে বললো,
– ” তুই এমন কেনো স্পর্শ। আমাকে তুই এতো টুকু বুঝিস না।”

সাদ মিথিলার মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
-” ও তোকে বুঝে কী করবে? বুজবুজি কাটবে? চল যা একটা ট্রেনের টিকিট কাট। ও কী হেঁটে হেঁটে ওর গন্তব্যে যাবে নাকি। ”

মিথিলা মাথায় হাত বুলিয়ে টিকিট কাউন্টারে চলে গেলো। সাদ বেশ জোরেই মেরেছে। অবশ্য ও লাগার জন্যেই মেরেছিল।

-” আয়ু কান্নাকাটি করে নি?”

অরূপের প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে স্পর্শ কিছু বললো না। প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে গেলো।


-” দেখলি তোর গিফট কেনার চক্করে কতো দেরী হয়ে গেছে। খিদেয় পেটে ইঁদুরে ডন দিচ্ছে। ”

-” আরে রূপা বুঝিস না কেনো পরশু স্পর্শ দার জন্মদিন। তাই তো গিফট টা কিনলাম। এবার তো সামনের সপ্তাহে এই দিকে আসবো। মাঝে তো আর পড়া নেই। ”

আয়ু আর রূপা বাড়ি আসছিল। সামনে আসতেই দেখলো ট্রেন পাশ হচ্ছে। তাই দুজনে নেমে হেঁটে গেটের পাশের ছোটো জায়গা দিয়ে বেরিয়ে আসতেই রূপা 2 নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে আঙুল দেখিয়ে বললো,
-” আয়ু দেখ ওটা তোর স্পর্শ দা না? ”

রূপার দেখানো হাতের দিকে তাকিয়ে আয়ু বললো ,

-” হ্যাঁ তাইতো। কিন্তু কোথায় যাচ্ছে? আচ্ছা তুই বরং বাড়ি যা। গিয়ে দেখ তোর পেটের ইঁদুরের জিম শেষ হলো কিনা। হলে কিছু খেয়ে নিস। আমি আসছি একটু পর।”

আয়ু কে থামিয়ে রূপা বললো,
-” ওতোই যখন ভালবাসিস বলে দিলেই তো পারিস।”

-” তোকে বলেছে? ”

-” তাহলে আমাকে বল , ঐ টা কে তোর, দাদা ? সব সময় একে অপরের পিছে লেগে থাকিস টম অ্যান্ড জেরির মতো। আবার পর দিকে একে অপরকে চোখে হারাস। তোদের কান্ড কারখানা আমি কিছুই বুঝি না বাপু। ”

– ” দাদা হবে তোর। আর তাছাড়া কানের কাছে ফ্যাচফ্যাচ না করে বাড়ি যা। আমি সাইকেল টা গ্যারেজ করি গিয়ে।”

আয়ু সাইকেলটা নিয়ে গ্যারেজে রাখতে গেলো। আয়ুর গা ছাড়া ভাব দেখে রূপা ফোরন কেটে বললো ,

-” যেই দেখলি ওমনি ছুট তাইনা। আবার বলে ভালোবাসে না। ধুর চলে গেলো। আমি বাড়ি যাই এবার মনে হয় মাথা ঘুরে পড়ে যাবো। ”

সেইদিনের কথা আয়ু কাউকেই বলেনি। যেহেতু কথাটা স্পর্শকে নিয়ে ছিল কেবল তা স্পর্শই জানে।

একদম শেষের দিকে গাছ তলার সিটে গিয়ে বসলো স্পর্শ। উলটো দিকে বসায় ওর সামনে কেউ না এলে ওকে দেখা সম্ভব না। স্পর্শ পকেট থেকে ফোনটা বের করে একটু নিউজফিড ঘাটছিল। হঠাৎই পিছনে আয়ুর গলা পেয়ে ও যেনো চমকে উঠলো।

-” তুমি কোথায় যাচ্ছো স্পর্শ দা?”

-” কোথায়, কোথাও না । ওই একটু ঘুরতে এসেছিলাম। তুই কী করছিস এখানে? এখনও বাড়ি যাসনি কেনো?”

আয়ু স্পর্শের পাশে থাকা ল্যাগেজের দিকে তাকিয়ে বললো ,
-” ওটা নিয়ে কোথায় যাচ্ছো? ”

স্পর্শ চমকে পাশে থাকা ব্যাগটার দিকে তাকিয়ে বললো ,
-” আমি আসলে ওই …”

-” স্পর্শ দা আমতা আমতা না করে প্লিজ বলো না কোথায় যাচ্ছো?”

-” আসলে আমি ব্যাঙ্গালোর চলে যাচ্ছি। ওখানেই নিজের বাকি স্টাডি কমপ্লিট করবো।”

আয়ু অবাক নয়নে স্পর্শের দিকে তাকিয়ে বললো ,

-” তুমি কাল বিকেলের কথা ভেবে ….”

আয়ুর চোখ ছলছল করে উঠলো। স্পর্শ ওর কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল,
-” ওই একদম কাঁদবিনা বলে দিচ্ছি। আর কালকের জন্যে না বাবা অনেকদিন আগেই টিকিট করিয়েছে।”

-” তুমি যাওনি স্পর্শ দা। আমি থাকতে পারবো না। ”

আয়ুর কী আবেশিত উক্তি যা ফেলার ক্ষমতা স্পর্শের কোনো কালেই ছিল না। কিন্তু আজ ও অপারগ, বাবার কথা যে ও ফেলতে পারবে না। ওকে তো যেতেই হবে।

স্পর্শ কাটকাট গলায় বললো ,
-” দেখেছিস তুই কতো ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছিস। এই জন্যেই তোকে কেউ বলিনি।”

-” আমাকে কেনো বলবে তুমি তো আমাকে পর ভাবো তাইনা।”

স্পর্শ আয়ুর মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বললো,
-” আরে আমাদের আয়ু বুড়ি দেখি রাগ করছে। রাগ করলে হবে না এখন। বাড়িতে তোর মিমি , পাপা একা তোকেই তো ওদের খেয়াল রাখতে হবে।”

-” প্লিজ যাওনি। ”

-” আয়ু এবার কিন্তু তুই বাচ্ছামো করছিস। যা বাড়ি যা। তুই পড়তে গিয়েছিলি না ; তো বাড়ি না গিয়ে এখানে কী করছিস?”

আয়ু ঘাড় নেড়ে বোঝালো যে ও বলবে না। স্পর্শ হেসে বলল,
-” বলবিনা , আচ্ছা বলতে হবে না। যা বাড়ি যা। ”

-” তোমাকে আমি যেতে দেবো না।”

-” আচ্ছা তোর এতো ক্ষমতা। পারবি আমাকে আটকাতে?”

আয়ু স্পর্শের জামা টেনে ধরে বললো, ” এবার কী করে যাবে?”

স্পর্শ দূরে তাকিয়ে দেখলো ট্রেন আসছে।কিন্তু আয়ু ওকে যেভাবে টানছে তাতে বিপদ ঘটে যেতে পারে। -” কোন অধিকারে আটকাবি আয়ু? আমি তোর কে? কী রে বল কে? ”

স্পর্শের হাতটা আয়ু ছেড়ে দিল। সত্যিই তো স্পর্শ ওর কে ? কেউ না। ছোটো থেকে একসঙ্গে বড়ো হওয়া, সারাদিন টম অ্যান্ড জেরির মতো একে অপরের পিছনে লেগে থাকা, একে অপরকে চোখে হারানো এই সবের পরেও স্পর্শ কিনা বললো , ‘আয়ু ওর কে হয়?’ আয়ু তৎক্ষণাৎ পিছন ফিরে গেলো। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু ও কাঁদবে না কিছুতেই কাঁদবে না।

যথা সম্ভব নিজেকে শান্ত করে আবার স্পর্শের দিকে তাকিয়ে বললো,
-” আমার জন্যে না অন্তত নীলাম্বরীর জন্যে থেকে যাও।”

স্পর্শ বুঝতে পারছে এই কথাটায় আয়ুর মনের অভিমান ফুটে উঠেছে। কিন্তু অভিমানের পারদ না কমিয়ে স্পর্শ বলল,

-” ধুর বোকা , নীলাম্বরীকে তো নিয়েই যাচ্ছি আমার সঙ্গে এই যে এই খানে।”

স্পর্শ ওর বুকের পাম পাশটা দেখিয়ে কথাটা বললো। আয়ু অবাক হয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। স্পর্শ খানিকটা আয়ুর দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বললো,

-” ভালোবাসি, খুব খুব ভালোবাসি।”

আয়ুর কান দিয়ে যেনো কোনো হিম শীতল বাতাস বয়ে গেল। যা ওর দেহের প্রতিটা শিরায় উপশিরায় কয়েক মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ল। ও মাথা ঘুরিয়ে স্পর্শের দিকে তাকাতেই স্পর্শ বলে উঠলো, ” আই লাভ ইউ নীলাম্বরী।”

আয়ুর মুখ মলিন হয়ে গেল। স্পর্শের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। সেইসময় পিছন থেকে ট্রেন আসার শব্দ শোনা গেলো। বর্ধমান টু হাওড়া কর্ড লাইনের ট্রেন 2 নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে গেছে। যাত্রীরা একে একে ট্রেন থেকে নামছে। সাদ আর অরূপ ছুটতে ছুটতে এসে স্পর্শের হাতে ট্রেনের টিকিটা ধরিয়ে দিল। আয়ু আর কিছু বললো না। একটা মলিন হাসি দিয়ে এগিয়ে চললো তার গন্তব্যে। স্পর্শ ওর যাবার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ট্রেনে উঠে পড়লো। ট্রেন চলতে আরম্ভ করেছে এখনও ঠিক মতো রানিং নেইনি। আয়ুর কাছে যেতেই স্পর্শ বলে উঠলো ,

-” সাবধানে থাকবি। দুষ্টুমি করবিনা। টাটা। ”

কিন্তু আয়ু কিছু বললো না। যে যাবার সে যাবে তাকে আটকাবার সাধ্য ওর নেই। আয়ু স্পর্শের দিক থেকে চোখ সরিয়ে পিছন দিকে ফিরে কারোর সাথে ধাক্কা লাগলেও নিজেকে সামলে নিলো। আজ থেকে তাকে নিজেকে নিজেকে সামলাতে হবে। বাবা মাকে না বলতে পারা ভুল কাজগুলো কেউ আর মিষ্টি বকা দিয়ে শুধরে দেবে না ।

স্পর্শ যত দূর পারলো আয়ুর দিকে তাকিয়ে ছিল। মনে মনে একটা কথাই আউরালো ,

-” তোর মনে জমা অভিমান সে নাহয় ফিরে এসেই কমাবো। ততদিন দুই প্রান্তে দুজনেই না হয় জ্বললাম। এই কষ্ট না হয় দুইজনে ভোগ করলাম। এই কষ্ট যে মৃত্যু যন্ত্রণা সম। কিন্তু একদিন এই যন্ত্রণার উপসম ঠিক হবে। হতেই হবে। শুধু আফসোস , তোর মলিন হাসি আমি দেখতে পাবো না। তবে ফিরে এসে তোর মুখের মলিন হাসি ঠিকই দেখে নেবো। ওই হাসিতেই যে আমি পাগল। ”

(চলবে )

#নীলাম্বরীর_প্রেমে
#Tuhina pakira
পর্ব : ১০

বাড়িতে ঢুকতেই আয়ু ওর মায়ের দিকে তাকালো।তিনি তখন রান্নাঘরে কিছু টুকটাক কাজ করছিল।আয়ুর মা আয়ু কে দেখে বেশ অবাক হলো।

-” কী রে তুই এই বাড়ি আসছিস? আমি ভাবলাম তুই হয়তো অনেকক্ষণ এসে গেছিস। আমি তো ও বাড়ি ছিলাম তাই খেয়াল ছিল না। ”

আয়ু কিছুই বললো না। আদৌ ও কিছু শুনছে কিনা কে জানে। আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে সোফার উপরে নিজের ব্যাগটা রেখে দিয়ে আয়ু নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো।

-” আমি ভাবলাম তুই হয়তো এসে গেছিস। দেখ তিশা তোর কাছেই গেলো এই। এতক্ষণ আমার সঙ্গে গল্প করছিল। মেয়েটা তার মানে একা বসে আছে দেখ।”

তিনি আবারও কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। অপরদিকে আয়ুর মা যে আয়ুকে কতো কী বলে গেলো সে তো কিছুই শোনেনি। নিজের রুমের দরজাটা বন্ধ করে ও একছুটে বারান্দার মেঝেতে গিয়ে বসে পড়লো। হাঁটু দুটির মাঝে নিজের মাথা রেখে নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো আয়ু। পিছনে দেওয়ালে মাঝে মাঝে মাথার পিছন দিকটা ঠুকতে লাগলো। চুলের ব্ল্যাক ক্লিপটা ভেঙে গিয়ে বাঁধা চুলগুলো এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে পড়ল। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। এতো কষ্ট ও আগে কখনো পাইনি। হঠাৎই ছোটো ছোটো দুটো হাত ওর দিকে কেউ বাড়িয়ে দিলো। আয়ু মাথা তুলে তাকালো না পর্যন্ত হাত দুটো ধরেই কাঁদতে লাগলো।

-” আয়ু দি কানছো (কাঁদছো) কেনো ? তোমার হাতে আউ হয়েছে?”

আয়ুর কাঁদতে কাঁদতে গলা বসে এসেছে কথা আসছে না মুখে। তখনই ওর পাশের বারান্দা থেকে কেউ বলে উঠলো,
-” কী হচ্ছে দুজনের?”

নিশিতার গলার আওয়াজ পেতেই আয়ু তৎক্ষণাৎ নিজের চোখ মুছে উঠে দাঁড়ালো। কাউকে বুঝতে দিলে হবে না ও কাঁদছিল।

-” কী হয়েছে আয়ু? ”

-” কী..কী হবে? কি….ছু না।”

-” না মানে তুমি হড়বড় করে উঠে দাঁড়ালে তাই বললাম। ”

-” ও আচ্ছা। কিছু বলবে কাকিমনি?”

নিশিতা হেসে বলল,
-” আসলে আমি তিশাকে ডাকতে এসেছিলাম। ”

কথা টা বলে তিনি আয়ুর পাশে থাকা তিশার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেল। ও বেচারি বুঝতে পারছে না কাঁদবে না হাসবে।

-” এ কী মামনি কী করেছো? ”

আয়ু এতক্ষণ অন্যকিছু ভাবছিল। নিশিতার কথায় তিশার দিকে তাকাতেই অমাবস্যায় ঘিরে যাওয়া মুখে এক চিলতে পূর্ণিমার ঝিলিক খেলে গেলো।

তিশা কিছুক্ষণ আগে আয়ুর রুমে আসতেই ওর নজর যায়, পেন দানিতে থাকা লাল আর কালো রঙের মার্কার পেনের দিকে। এই পেন দুটো তিশার বেশ ভালো লাগে। এই পেন দিয়ে একটু খাতায় আঁচড় কাটতেই কী সুন্দর লেখা যায়। দেখতে কী ভালো লাগে। লেখাগুলোও বেশ বড়ো বড়ো হয়। এই পেন ও আয়ু কে প্রায়ই ব্যবহার করতে দেখে। তিশা লাফিয়ে লাফিয়ে মার্কার পেন দুটো নেবার চেষ্টা করলো; কিন্তু পারলো না। টেবিলের উপরে হাত পাওয়া একটা বই নিয়ে পেন দানিটা একটু জোরে ঠেলা মারতেই ওটা পড়ে গেলো। পেন দানিতে থাকা সব কিছুই টেবিলে পড়ে তা গড়িয়ে মেঝেতে চলে যায়। তিশা ওখান থেকে লাল আর কালো মার্কার পেন দুটো তুলে নিলো। ও দেখেছে ওর আয়ু দিদি ওই পেন দিয়ে হাতে স্টার আঁকে। মাঝে মাঝে ওর হাতেও এঁকে দেয়। হঠাৎই তিশার মনে এলো সিনচানের কথা। ও টিভি তে দেখেছে ওর সিনচান খুব ভালো মেকআপ করে। তিশা টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে নিলো একবার। তারপর চারিদিকে মেকআপ বক্স খুঁজতে শুরু করলো কিন্তু পেলো না। তিশা হাতের দিকে তাকিয়ে মার্কার পেন দুটো খুব ভালো করে দেখলো; লাল রঙের দেখতে মার্কার টা লাল আর কালো রঙের মার্কার টা হলো কালো। তিশা সিনচানের মতো গুনগুন করতে করতে লাল মার্কার টা দিয়ে ওর মায়ের মতো কপালে গোল লাল টিপ আঁকলো, মাথায় মায়ের মতো সিঁদুর পড়লো, গাল দুটোতে গোল করলো। আর কালো মার্কার দিয়ে বাবার মতো দাঁড়ি আঁকতে লাগলো। তারপর নিজেকে ভালো করে একবার দেখে নিলো।

-” আমাকে মা আর বাবার মত লাগচে( লাগছে )। ধুর এখানে সাদা পেন নেই কেনো?তাহলে ঠাম্মির মতো লাকতো ( লাগতো) ।”

তারপর গালে হাত দিয়ে কিছু ভাবতে ভাবতে নজর গেলো আয়ুর সাদা ওরনাটার দিকে। ওরনাটা নিয়ে ভালো করে মাথায় পেঁচিয়ে লম্বা চুল করে নিলো।

-” বাহ্ আমাকে কি তুন্দর ( সুন্দর ) লাগছে। যাই জেম্মাকে দেখিয়ে আচি।”

তিশা কথাটা বলে পিছন ফিরতেই দেখতে পেলো আয়ু কে। কিন্তু কিছু বলার আগেই ও বারান্দায় চলে যায়।

-” এই সব কি করেছিস তিশু?”

-” আমাকে কী তুন্দর ( সুন্দর ) লাগছে না!”

-” মামনি তুমি এসব কি করেছো? এই মেয়েটা আমাকে পাগল করে দেবে। বাড়ি আয় আগে। মুখ পরিষ্কার করে দিই আগে। ”

তিশা মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে রইলো। আয়ু নীচু হয়ে তিশার সামনে বসে বললো ,
-” আমার তিশু বুড়িকে খুব সুন্দর লাগছে। পুরো রসগোল্লা। ”

তিশা আনন্দে লাফিয়ে আয়ুর গলা জড়িয়ে ধরলো।

-” ইয়ে আমাকে লচোগল্লা লাকছে( রসগোল্লা লাগছে)।”

আয়ু উঠে দাঁড়ালো। তিশা বাড়ি যাবে। ও আসার সময় দরজা বন্ধ করে এসেছে দরজাটা খুলে দিতে হবে।আয়ু চলে যাবার মুহূর্তে নিশিতা বলে উঠলো,

-” আয়ু তোমার বাম গালে কী হয়েছে?”

আয়ু চমকে নিজের গালে হাত দিয়ে দিল।
-” কী হবে কিছুই না। ”

-” না গালটা কেমন লাল হয়ে আছে।”

– ” আসলে কী বলোতো এই রোদ্দুরে বাড়ি এলাম হয়তো অ্যালার্জি ফুটেছে। ”

নিশিতা আর কথা বাড়ালো না। আয়ু ঘরে গিয়ে তিশাকে দরজাটা খুলে দিল। তিশা চলে যেতেই আয়ু দরজাটা বন্ধ করে দিল। তবে লক করেনি। প্রচুর ক্লান্ত লাগছে ওর। বিছানায় বসতেই বারান্দার দিকের পর্দা গুলো হাওয়ায় নড়ে উঠলো। আয়ুর মনে পড়ে গেলো স্পর্শের কথা। ছুটে গিয়ে বারান্দার দিকের দরজা , জানলাটা বন্ধ করে দিয়ে আস্তে আস্তে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।

দুপুর পৌনে ১ টা,

চোখে দুপুর রোদের আলো পড়তে আয়ুর ঘুম ভাঙলো। আয়ুর মা বারান্দার দিকের দরজা খুলতে খুলতে বললো,
– ” যা স্নান করে আয়। সেই এসে ঘুমিয়েছে। খিদে পায়নি নাকি? এসে দেখি উনি ঘুমাতে ব্যস্ত। যা তাড়াতাড়ি।”

আয়ু আলেসি ভেঙে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। আয়ুর মা আয়ুর ঘর গোছাতে গোছাতে বললো,

-” স্পর্শ চলে গেছে জানিস আয়ু?”

আয়ু সবই শুনতে পেলো কিন্তু কিছু বললো না। ও এই বিষয়ে কিছু বলতেই চায় না ।

-” কী রে সাড়া দিচ্ছিস না যে ? স্নান করতে গিয়ে ঘুমিয়ে গেলি নাকি? ”

-” না ঘুমাইনি। মা খিদে পেয়েছে খাবার দাও তাড়াতাড়ি।”

-” খেতে দেবো তো , সারাদিন ঘুরে এখন তার খিদে পেয়েছে। তাড়াতাড়ি নীচে আয় আমি খেতে দিচ্ছি। ”

আয়ু শাওয়ারের তলায় চুপ চাপ ভিজতে লাগলো। হাত দুটো শক্ত করে মুঠো করে ধরলো, পায়ের আঙ্গুল গুলো দিয়ে মেঝেতে চেপে ধরলো। অপরদিকে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে কী ঠিক বুঝতে পারলো না সে নিজেই। জলের ধারায় হয়তো চোখের জল লুকিয়ে পড়েছে।

সেই ঘটনার পর কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। এখন রাত ১১:৫০ টা। সবাই যে যার ঘরে চলে গিয়েছে ঘুমাতে। আয়ুও গিয়েছিল কিন্তু চুপি চুপি আবার নীচে ফিরে এসেছে। ও আজ স্পর্শকে ফোন করবে। আর কিছুক্ষণ পর ওর জন্মদিন। ওকেই উইশ করবে। সেইদিনের পর স্পর্শের সঙ্গে ওর আর কথা হয়নি। যাবার পরের দিন সব অভিমান ভুলে আয়ু স্পর্শের সাথে কথা বলতে গিয়েছিল কিন্তু,

সেইদিন স্পর্শ যখন ওর মাকে ভিডিও কল দিয়েছিল তখন সবে আয়ু মিমির সাথে কথা বলতে গিয়েছিল। স্পর্শের মা আয়ুকে দেখে বললো,

-” এইতো আয়ু , আয় দেখ স্পর্শ ফোন করেছে। ”

আয়ুও সব অভিমান ভুলে এগিয়ে গিয়েছিল ফোনের দিকে। ও স্পর্শকে ছেড়ে কিছুতেই থাকতে পারছে না। ফোনটা হাতে নেবার সময় স্পর্শ বলে উঠলো,

-” মা আমি ওর সাথে পড়ে কথা বলবো , বাবা ডাকছে মিথিলা ফোন দিয়েছে। টাটা। ”

সেইদিন আয়ুর মনটা আবার ভেঙে গিয়েছিল। পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতে 12 টা বাজার কয়েক মুহূর্ত আগেই ও ফোন করলো স্পর্শের নাম্বারে। কিন্তু বারবার ফোনে একটা মিষ্টি গলা বলে চলেছে নম্বরটি ব্যস্ত। আয়ু ফোনটা রেখে দিল। কিছুক্ষণ বসে রইল যদি ওর স্পর্শ দা ঘুরিয়ে ফোন করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেও যখন ফোন এলো না ও নিজেই আবার ফোন করলো। কিন্তু আবারও সে ব্যস্ত। আয়ু আর দাঁড়ালো না নিজের ঘরে চলে গেল। এক গ্লাস জল খেয়ে শুয়ে পড়লো। চোখ বন্ধ করতেই ভেসে উঠলো সেইদিন স্পর্শ দার থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে কারোর সাথে ধাক্কা খাওয়ার মুহূর্ত,

সেইদিন।।
~~~~~~~

ট্রেন এসে দাঁড়াতেই সেইদিন মিথিলা ছুটে আসছিল স্পর্শের কাছে। ততক্ষনে অবশ্য ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। ওর হাতে ছিল স্পর্শের জন্যে একটা গিফট। কিন্তু তখনই ওর ধাক্কা লাগে আয়ুর সাথে। দুজনেই নিজেদের সামলে নিলেও মিথিলার হাতের গিফট টা ছিটকে লাইনে পরে যায়। মিথিলার মাথা গরম হয়ে যায়। যার জন্যে এই কাজটা হলো তার দিকে তাকাতে মিথিলার রাগ যেনো চড়চড় করে বাড়তে থাকলো। ও আয়ু কে একদম পছন্দ না। এই যে ও স্পর্শ কে ভালোবাসে কিন্তু স্পর্শ সবসময় চিপকে থাকে এই আয়ুর সাথে। এতে ওর রাগে গা জ্বলে ওঠে। কিন্তু এই রাগ কার উপর স্পর্শ না আয়ু? তা ও জানে না। কিন্তু তাও ও সব দোষ আয়ু কেই দেয়। ফলস্বরূপ, আজকে তার সুযোগ। আজ স্পর্শ নেই আয়ুকে বাঁচাতে। ঠাস করে সপাটে চড় বসিয়ে দিলো আয়ুর গালে। আয়ু হতভম্ব হয়ে মিথিলার দিকে তাকালো। ট্রেন চলে যাওয়ায় স্টেশন ফাঁকাই ছিল। কিছু দূরে ছিল সাদ আর অরূপ। তবে দুজনেই বিষয়টা দেখে ওদের দিকে এগিয়ে গেলো।মিথিলা আয়ুর হাত চেপে ধরলো।

-” তুই স্পর্শকে প্রপোজ করেছিস কেনো? তোকে কে বলেছিল ওকে প্রপোজ করতে। বেশি এক্সটা পাকামো সবেতে তাইনা। আর আজ তুই আমার গিফটটা ফেলে দিলি। জানিস ওটা আমি কতো কষ্ট করে স্পর্শের জন্যে এনেছিলাম। তোর সবেতেই নজর কেনো এতো। কান খুলে শুনে রাখ, স্পর্শ আমার আর ও আমাকেই ভালোবাসে। ”

আয়ু কিছু বললো না, হাঁ করে তাকিয়ে রইল খালি মিথিলার দিকে। তখনই অরূপ এসে ধমক দিয়ে বলল,
-” ওই তুই ওকে মারলি কেনো? ও কী করেছে? আর তুই কি চৈত্র সেলে এসে জিনিস টানাটানি করছিস নাকি? স্পর্শ ওর না , তোর হেনাতেনা বকছিস কেনো? ”

-” ওই সব করেছে। ওর জন্যে স্পর্শ আমার হয়নি। শুধু ওর জন্যে।”

সাদের মাথা গরম হয়ে গেলো। এতে আয়ুর কী দোষ ও খুঁজে পেলো না। তাই মিথিলাকে ধমক দিয়ে পাঠিয়ে দিল। আয়ুও কিছু বললো না এগিয়ে গেলো বাড়ির দিকে। মনের মধ্যে আরও একটা অভিমান সঞ্চয় হলো। মানুষটা ওকে সবার সামনে হাসির পাত্র করে গেছে। কই ও তো কাউকে বলেনি তবে ও কেনো বললো?

সাদ আর অরূপের সঙ্গে কথা বলছিল স্পর্শ। কথা শেষে ল্যাপটপটা বন্ধ করে ব্যালকনি থেকে পুরো শহরটা একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। ও রয়েছে দশ তলায়। এখন রাত হলেও এই শহরে এখনও গাড়ি চলছে। এই শহর বোধহয় ঘুমায় না। ওর আগের গণ্ডির ছোট্ট শহরটা ১০ টা বাজতেই নিরব হয়ে যেত। স্পর্শের খুব মনে পড়ছে আয়ুর কথা। এখানে তো আর ওখানের মত সামনে কোনো ব্যালকনিতে আয়ুর আসার চান্স নেই। এখানে সবই তো বড়ো বড়ো বিল্ডিং। ওদের শহরের মতো সবুজ প্রকৃতির অনেক অভাব এখানে। ওর শহরটা ছিল গ্রাম , শহরের মাঝামাঝি , ওটাই ছিল ওর পছন্দের। আর এখানে ও তো এই কদিনেই হাঁফিয়ে গেছে। না জানে কদিন থাকতে হবে।

স্পর্শ ঘরে চলে গেলো। ওর একবার আয়ু কে ফোন করতে ইচ্ছে হচ্ছে। সেই দিনের পর ওদের আর কথা হয়নি। নানা ব্যস্ততায় সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তার উপর ফোনটা ওর ভীষণ ডিস্টার্ব করছে। বিছানা থেকে ফোনটা হাতে নিতেই দেখে আয়ুর বাড়ির ল্যান্ডলাইন এর ফোন। ওর বাবা কখন যে ওর মায়ের সঙ্গে ফোন রেখে চলে গেছে ও দেখেনি। কল ব্যাক করলো নিশ্চয় ওকে উইশ করতে ফোন করে ছিল। ভাবতেই মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।

বসার ঘরের টেলিফোনটা অনেকক্ষণ ধরে বাজছে। হাই তুলতে তুলতে আয়ুর বাবা গিয়ে ফোনটা ধরলো।

-” হ্যালো, কে?”

-” আমি স্পর্শ আঙ্কেল।”

-” ও বল, এতরাতে কিছু অসুবিধা হয়েছে?”

-” না আসলে মিসডকল দেখে ফোন করলাম।”

– ” রাতে কথা হবার পর তো কেউ আর কল দেয়নি। ”

-” ও তাহলে হয়তো আমি ভুল দেখেছি। আচ্ছা আমি রাখছি কাল কথা হবে ।

ফোনটা রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো স্পর্শ। নিজের মনেই বিড়বিড় করলো ,

-” অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছিলি না আমার ফোনের। সরি রে , কেনো যে বাবাকে ফোনটা দিতে গেলাম। ”

স্পর্শ উঠে দাঁড়ালো । আজকের রাতটা হয়তো ওর আক্ষেপ করেই কেটে যাবে।


স্পর্শ ফোন ডিসকানেক্ট করে দিয়েছে অনেকক্ষণ কিন্তু সাদ ফোন কাটেনি। কিছু বলতে চাইছে হয়তো।

– ” অরূপ তোর কি হয়েছে? তুই ঠিক মতো কথা বলছিস না কেনো আমার সাথে? ”

-” তুই জানিস না কি হয়েছে? তুই কেনো ওই শাকচুন্নি কে আয়ুর প্রপোজ এর কথা বলেছিস? স্পর্শ বারণ করে ছিল না।”

সাদ এতক্ষণে বুঝলো অরূপের রাগার কারণ। ওর একটা ছোট্ট ভুলের জন্যে আয়ু কে মিথিলার থেকে কত কি শুনতে হলো।

-” আমি তো বন্ধু ভেবে ইয়ার্কি করে বলেছিলাম। কীকরে জানবো ও এই কান্ড ঘটাবে। তুই ভাই প্লিজ স্পর্শকে এই সব কিছু বলিস না। তাহলে ও খুব রেগে যাবে। ”

-” এবারের মতো বাঁচলি। পেট পাতলা কোথাকার। ফোন রাখ ঘুম পেয়েছে। ”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here