তোর_মনের_অরণ্যে,২৩

তোর_মনের_অরণ্যে,২৩
সাবিয়া_সাবু_সুলতানা

-“আপনি কি এর পর ও বলবেন আমাকে ভালোবাসেন মিস্টার চৌধুরী? সোহা আমন কে জিজ্ঞেস করে ওঠে।

-” কেনো ? এমন কি হলো যার জন্য আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না? আমার কি বারণ আছে নাকি? আমন ফিচেল হেসে বলে ওঠে।

সোহা আমন এর কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে সামনের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমন এর দিকে তাকায়। দেখে আমন তার দিকে তাকিয়ে আছে মুখে ঝুলে আছে মন মুগ্ধ করা সেই হাসি।

-” আমাদের ধর্ম আলাদা। এরপরে ও ভালোবাসবেন? সোহা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” ভালোবাসা কখনো ধর্ম ব্যাংক ব্যালেন্স দেখে হয় না মিস লেডি ডন। আমন বলে ওঠে।

আমন সোহার চোখে চোখ সোহার দিকে এক পা এক পা করে এগিয়ে যায়। সোহার একদম কাছে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে হ্যাচকা টানে নিজের বুকের উপর ফেলে সোহা কে। এক হাত দিতে সোহার কোমরে জড়িয়ে রেখেই অন্য হাত দিয়ে মুখের উপর আছড়ে পড়া চুল গুলো কানের পিছে গুছিয়ে দেয়।

-“আমার ভালোবাসা কোনো মেঘ বৃষ্টির মত নয় যে হঠাৎ করেই আছড়ে পড়ে আবার কিছুক্ষণ পরেই ভ্যানিশ হয়ে যাবে। আর সবার মত আমার ভালোবাসা কে ব্যাংক ব্যালেন্স এর কাতারে ফেলবেন না ম্যাডাম। আমি তোমাকে ভালোবেসেছি । তোমার ওই রাগী মুখের প্রেমে পড়েছি। তোমার অ্যাটিটিউড এর ফ্যান হয়ে গেছি। তুমি যেমন কাউকে ছেড়ে কথা বলো না কাউকে বড় ছোটো হিসেবে বিচার করো না আমি সেই মেয়ের প্রেমে পড়েছি। তোমার সম্পর্কে কিছু না জেনেই তোমার প্রেমে পড়েছি। তোমাকে না চিনে আমি তোমার প্রেমে পড়েছি। তোমার কথার ধার তোমার রাগী মুখ আর রাগী চোখ সব কিছুই আমাকে প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছে। আর এত এত প্রেমে পড়তে পড়তেই সেটা একদমই ভালোবাসায় পরিনত হয়েছে আর এখন তো আমি সেই ভালোবাসার সাগরে হাবু ডুবু খাচ্ছি। আমন এক দৃষ্টিতে আমন এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

সোহা এখনও আমন এর চোখে তাকিয়ে আছে । সে কোনো ভাবেই আমন এর চোখ থেকে নিজের চোখ সরাতে পারছে না। তার মনে হচ্ছে আমন এর এই চোখ জোড়া তাকে মায়া তে আটকে ফেলেছে। আর আমন এর বলা প্রত্যেক টা কথা তার মনে গেঁথে গেছে। আমন বলা প্রত্যেকটা কথা শুনে তার মনের তালা বন্ধ অনুভূতি গুলো ছোটাছুটি লাগিয়ে দিয়েছে বাইরে বেরিয়ে আসার জন্য। আমন এক ভাবে সোহার দিকে তাকিয়ে নিয়ে আবারও বলে ওঠে।

-” আমি তোমাকে ভালোবেসেছি তোমার ব্যাংক ব্যালেন্স কে তোমার ধর্ম কে নয়। আমি যখন প্রথম তোমার প্রেমে পড়েছিলাম তখন কিন্তু আমি জানতাম ও না তুমি কে কি তোমার পরিচয়। আচ্ছা একটা কথা বলো তো ভালোবাসতে গেলে কি তার ফুল বায়োডেটা জেনেই ভালোবাসতে হবে সে কি করে তার কত টাকা পয়সা আছে সে কোন পরিবার থেকে এসেছে এগুলো কি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। একদমই না। ভালোবাসা বলে কয়ে সময় নির্ধারণ করে হয় না হুট করেই হয়ে যায়। আর আমি যখন তোমার নাম জেনেছিলাম তখন থেকে আমি এটাও জানতাম তোমার ধর্ম কি। কিন্তু সেটা আমার কাছে বড় হয়ে দাড়ায় নি, কারণ আমি শুধু আর শুধু মাত্র তোমাকেই ভালোবেসেছি। আর সব থেকে বড় কথা তোমার নাম জানার আগেই কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলছি তাই এটাও বলবে না যে তোমার পরিচয় বা এই তোমার ব্যাক গ্রাউন্ড দেখেই আমি তোমার প্রেমে পড়েছি তোমাকে ভালোবেসেছি। তুমি জানতে চেয়ে ছিলে যে আমি তোমার ধর্ম জানার পরও তোমাকে ভালোবাসতে পারবো কি না। দেখো আমি মুসলিম হলেও আমি অন্য সব ধর্ম কে সম্মান করি। মানুষ বিপদে পড়লে আগে আমি এটা দেখিনা যে সে কোন পরিবার থেকে এসেছে কোন ধর্ম তার। সব কিছুর আগেই কিন্তু সে একজন মানুষ। আর বিপদগ্রস্থ একজন মানুষ কে সাহায্য করাই আমার প্রধান কাজ হয়ে দাড়ায়। আমরা এই যে ধর্ম নিয়েই টানাটানি করি সবার আগে কি আমরা এটা দেখি যে আমরা ঠিক কতটা সচেতন এই ব্যাপারে। আমরা কি নিজের নিজের কাছে ঠিক আছি। সব সময়ে এটা মনে রাখা উচিত কারোর দিকে আঙুল তোলার আগে নিজের দিকে একবার দেখা উচিত কারণ বাকি চারটে আঙুল কিন্তু উল্টে আমার দিকেই ফিরে আসতেই পারে। তাই এই ব্যাপারে কথা না বলায় ভালো।

-“আর হ্যাঁ তোমার আবার যেনো এটা কখনো ও না মনে হয় যে আমি তোমার রূপ দেখে প্রেমে পড়েছি। না মানে বলছি না মনে হবে হতেও তো পারে তাই আগেই সব কিছু পরিষ্কার করে দিচ্ছি। আমি তোমার রূপ পর্যবেক্ষন করিনি। আমি তোমার রাগী মুখটা দেখেছি শুধু। তুমি যখন রেগে যাও তখন তোমার পুরো মুখ লাল হয়ে যায় সাথে তোমার এই কান দুটো ও। নাক হালকা ফুলে ওঠে কপালের এই রগ গুলো ফুলে যায়। চোখ গুলো থেকে আগুন এর ফুলকি ঝরে, আমি কিন্তু ফার্স্ট এই মুখের প্রেমে পড়েছি। রেগে থাকার পর ও কত টা স্বাভাবিক থাকে তোমার এই মুখ টা আমি সেটার প্রেমে পড়েছি। আর তোমার হাসি সেটাতো খুব দুর্লভ জিনিষ যাকে সহজে দেখা যায় না। আমি সেই হাসির প্রেমে পড়েছি। তোমার ওই ডোন্ট কেয়ার অ্যাটিটিউড এর প্রেমে পড়েছি। আর সব শেষে বলতে হয় আমি তোমার সাহসিকতার প্রেমে পড়েছি। তুমি যে জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রত্যেক টা মিশন কমপ্লিট কারো। একজন মেয়ে হয়েও বাহ্যিক সুখ আনন্দ ছেড়ে এমন একটা কঠিন জীবন যাপন করা নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে সমাজের রক্ষা এই মেয়ে কে ভালোবেসেছি আমি এই মেয়ের প্রেমে পড়েছি। আর একটা কথা কি জানো সত্যি করের ভালোবাসা কখনো রূপ শরীর দেখে হয় না। ভালোবাসায় কখনও এটা জানার প্রয়োজন হয়না তুমি ভার্জিন তো তুমি ফর্সা কি কালো সেটা বড় বিষয় হয়ে ওঠে না। এমন অনেক কাপল আছে উদাহরন হিসেবে তারা কিন্তু বাহ্যিক রূপ দেখে একে অপরের ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়নি। তারা মুগ্ধ হয়েছে এই সব বাহ্যিক রূপের আড়ালে থাকা মায়া ভরা সেই চোখ সেই স্নিগ্ধ মায়া ভরা মুখ দেখে। রূপ তো একদিন না একদিন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে তার ভিতরে সেই সুন্দর মন টা তার সেই মুগ্ধতায় ভরা চোখ জোড়া। রূপ নয় বরং গুণ বেশি আকৃষ্ট করবে। শরীরের খিদে তো একদিন সবার মরে যাবে কিন্তু মনের খিদে সেটা কখনই শেষ হবে না। শেষ কাল পর্যন্ত সে তোমার সাথে পাড়ি দেবেন। তাই রূপ টাই কিন্তু আসল না।বাহ্যিক চাকচিক্ক্যের আড়ালে মনটাই আসল গুণ টা আসল। তাই এই সব কথা কখনও মনে আনবে না। আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমার কাছে তোমার ব্যাক গ্রাউন্ড তোমার পরিবার তোমার ক্লাস সব টা আমার কাছে ফিকে। আমন এক দৃষ্টিতে সোহার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

সোহা এখনও তাকিয়ে আছে আমন এর চোখের দিকে । না তার সিদ্ধান্ত ভুল নয়। সে কোনো ভুল করেনি এই ছেলেটার প্রতি দুর্বল হয়ে। আমন প্রত্যেক টা কথা তার হৃদয় ছুয়ে গেছে। তার ভিতরে এক আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি করেছে। তার মন টা ভালো লাগায় ভরে উঠেছে, তার সাথে জড়িয়ে থাকা এই ছেলে যে তাকে কি পরিমান ভালোবাসে সেটা সোহার বোঝা হয়ে গেছে। তার একটা কথায় যে এই ভাবে ইতিহাস ভূগোল সব কিছু একসাথে তাকে বুঝিয়ে দেবে সে বুঝতে পারিনি। সে শুধু আমন এর মনোভাব জানতে চেয়েছিলো কিন্তু আমন তো পুরো বই টা তাকে পড়িয়ে দিলো। ভেবেই মনে মনে হেসে ওঠে সোহা। যেখানে তার পুরো ডিপার্টমেন্ট তার এই রাগ দেখে ভয় পায় তার এই হিংস্র মুখ দেখে কাপে সেখানে এই ছেলে নাকি তার এই রাগী মুখের প্রেমে পড়েছে ভাবা যায় কি কান্ড। ভাগ্যিস সে আজকে কথা টা বলে ছিল তাই তো জানতে পারলো তার উপর প্রেমে পড়ার প্রত্যেকটা সংজ্ঞা।

সোহা আমন এর কাছে থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে একটু দূরে সরে দাঁড়ায়। এতক্ষণ সে আমন এর বাহু ডোরে ছিল এই প্রথম এত কাছাকাছি এসেছিল। আমন চলমান হার্ট বিট এর ধুকধুক করা আওয়াজ ও তার কানে এসেছে। আমন সোহার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে সোহার মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছে সে এত গুলো কথা বললো আর এই মেয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না তার কথার। সোহা আমন এর ভ্রু কুঁচকে থাকা লক্ষ করে সামনের দিকে দৃষ্টি হানে। তারা দুজনই ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। বাইরের মৃদু হাওয়া তাদের ছুয়ে যাচ্ছে সামনের গার্ডেন থেকে আসা আলোর ছটা আলো আধারি পরিবেশ হয়ে আছে। দূর আকাশে বড় থালার মত চাঁদ তার আলো চারিদিকে জ্যোৎস্নার আলোয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কয়েকটা তাঁরা ও লক্ষ করা যাচ্ছে। এই মোহনীয় পরিবেশ সাথে তার পাশে আছে তার ভালোবাসার মানুষ যদি ও সে এখনও মুখ ফুটে বলেনি ভালোবাসার কথা কিন্তু সে তো নিজেই জানে। আমন এক ভাবে সোহা কে দেখে যাচ্ছে।সোহা সেটা বুঝতে পেরে বলে ওঠে।

-” আমি কোনো স্ক্যান্ডেলে জড়িত কারোর সাথে সম্পর্কে জড়ানো পছন্দ করব না। সোহা কঠিন ভাবে বলে ওঠে।

-” মানে? আমন অবাক হয়ে বলে ওঠে।

সোহার কথা শুনেই আমন এর কুঁচকে যাওয়া ভ্রু আরো বেশি কুঁচকে যায়। সোহার কথায় অবাক হওয়ার সাথে সাথে কিছুটা বিরক্ত ও হয়েছে তার ঘোর কাটিয়ে দিয়েছে সে মুগ্ধ হয়ে সোহা কে দেখ যাচ্ছিলো কিন্তু সোহা এটা কি বললো স্ক্যান্ডেলে জড়ানো কারোর সাথে? ও আমার কথা বললো কিন্তু আমি কার সাথে জড়িয়ে গেলাম যেটা আমি জানিনা। আমন নিজের মনে ভেবে ওঠে। সোহা আমন এর আতকে ওঠা কে উপভোগ করে।

-“মানে আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। আর সেখানে আপনি আবার আমাকে ভালোবাসেন বলছেন। তো সেখানে যদি আমি কোনো সম্পর্কে আসতে চাই তো আমি নিশ্চয়ই এমন কোনো ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়াতে চাইবো না যেখানে তার পিছনে আরো একজন ঝুলে আছে। সোহা কোনা চোখে আমন কে দেখে বলে ওঠে।

আমন এতক্ষণে বোঝে সোহা কি বোঝাতে চাইছে। তার মাথায় এবার স্পষ্ট হয়ে গেছে। তার এবার বিকালের দৃশ্য টা মনে পড়ে যখন সোহা মণিকা এর কথা শুনে তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে ছিল। সে তো এই কথাটা ভুলেই গেছিলো কিন্তু এই মেয়ে সেই কথা ঠিক মনে করে রেখেছে। আর এখন সেই কথা তুলেছে উফ কিছু মিস করার জো নেই এই মেয়ের কাছে সাধে কি আর নাম রেখেছে ধানী লঙ্কা।

-“আরে কোনো বিয়ের কথা হয়ে নেই। ওরা বিয়ের কথা বলেছিলো কিন্তু আমি সোজা না করে দিয়েছি আমার বাড়িতেও এই বিষয়ে কেউ কথা বলে না। আর ওই মেয়ের কথা তো একদমই বলবে না ওকে দেখলেই আমার মনে হয় গান এর সব বুলেট ওর মাথায় দিয়ে দেই। আমন কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।

আমন নিজেকে শান্ত করে সোহার দিকে তাকায় দেখে তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে । আমন মণিকা এর কথা উঠতে একটু বেশি রেগে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলো। এখন নিজেকে শান্ত করে নেয়।

-“আচ্ছা নিচে চলো অনেক রাত হয়ে গেছে। আমন বলে ওঠে।

-” আপনি চলুন আমি আসছি। সোহা বলে ওঠে।

আমন সোহার কথা শুনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই সোহা কে একা ছেড়ে নিচের দিকে পা বাড়ায়। কিছু কিছু সময়ে একা ছেড়ে দেওয়া প্রয়োজন।

সোহা আমনদের বাড়িতেই আছে। তাকে যেতে দেইনি আভা চৌধুরী। শুধু তাকেই নয় বাকি তিনজন সানি আকাশ অ্যাস কাউকেই যেতে দেইনি তিনি। এমনিতেও সোহাদের পরিবার আর আমন এর পরিবার এর ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক তাদের সাথে চেনা পরিচয় আছে। তাই আভা চৌধুরী সোহার মা কে ফোন করে তাদের বাড়িতে থাকার কথা বলেন। এতে তিনিও কিছুটা নিশ্চিন্ত হয় সোহার কাজের জন্য তিনি চিন্তায় থাকেন এখন যদি জানা শোনার মধ্যে থাকে সেখানে তিনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। আর দিল্লী তে থাকতে অ্যাস সব সময়ে এর জন্য সোহাদের বাড়ি থেকেছেন আর সেখানে ব্যাঙ্গালোর তাদের এখানে এসে এই মেয়ে কিনা বাইরে থাকবে এটা হতে পারে না তাই তিনি জোর করে রেখে দিয়েছেন। সোহা তার মা আর অ্যাস মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারিনি তাই বাধ্য হয়ে থেকে যায়। তাদের কাজের ব্যাপার তাদের প্রফেশন এর ব্যাপারে অ্যাস এর মা বাবা আর আমন ছাড়া আর কেউ জানে না অ্যাস কি করে কোথায় থাকে। তাই তাদের কাজের মধ্যে কোনো সমস্যা হবে না তাই আর দ্বিমত করেনি থেকে গেছে।

তবে এই সব কিছুর মাঝে রেগে ফায়ার হয়েছে মণিকা। যখন সোহার থাকার কথা চলছিল সেও তখন ওখানেই ছিল। আর সোহা কে নিয়ে এত আদিক্ষেতা করতে দেখে রাগে ভোম হয়ে যাচ্ছিলো সে সারা টা সময়ে সোহার দিকে অগ্নি বর্ষণ করে গেছে। আমন এর সোহার হয়ে কথা বলা আর এখন এই মেয়ের এই বাড়িতে থাকা সব কিছুই যেনো তার রাগের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছিলো। সে পুরোটা সময়ে ওদের সোহা নিয়ে মাতামাতি করা টা দেখে গেছে। মাঝে সে একবার প্রতিবাদ করতে গেছিলো যাতে সোহা কেউ থাকার জন্য জোর না করে সে চলে যেতে চাইছে যখন তাকে যেনো যেতে দেয়। কিন্তু অ্যাস এর জন্য করে উঠতে পারিনি। সেই জন্য অ্যাস এর উপরে তার বিরক্তি আর রাগ একসাথে ফুটে উঠছে। এই মেয়ের সাথে সে ভালো ব্যবহার করতে চেয়েছিলো এই মেয়ের সাথে সে ভাব জমাতে চেয়েছিলো আমন এর কাছে আসার জন্য কিন্তু এই মেয়ে তাকে পাত্তা তো দিচ্ছে না তার উপর অপমান করতে ও ছাড়ছে না তাই রাগ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ওখানে থাকা কেউ মণিকা কে পাত্তা দেইনি। শেষে রাগে ফায়ার হয়ে উঠে চলে গেছিলো।

আমন চলে যেতেই সোহা আকাশের দিকে তাকায়। তার মুখ একেবারে হঠাৎ করে পরিবর্তন হয়ে গেছে হিংস্রতায় ছেয়ে গেছে।

-“আমি কোনো ভুল করিনি। আমার অনুভূতি কে মুক্ত করে আমি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেই নি দেখো তুমি। আমি আর কোনো ভুল রিপিট করতে চাইনি তাই আমি এতদিন এই সব ভালোবাসার থেকে দূরে ছিলাম কিন্তু আজ আমি আমার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। যে ভালোবাসার জন্য আমার জীবন টা বিষাদে ভরে আছে ।আমি সেই ভালোবাসা থেকে দূরে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু আজ আমি সেই ভালোবাসার সাথে জড়িয়ে পড়েছি। কিন্তু কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেই তুমি বুঝতে পারছ? আর আমি তোমার সাথে হওয়া সব অন্যায়ের এক এক করে গুনে গুনে শোধ তুলব কাউকে ছেড়ে দেবো না কাউকে না। তোমার প্রত্যেকটা যন্ত্রণার হিসেব আমি নেবো সেই দিন হবে আমার জয় ।আমার আসল লক্ষ পূরণ।

চলবে….. ❣️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here