তোর_মনের_অরণ্যে,১৮

তোর_মনের_অরণ্যে,১৮
সাবিয়া_সাবু_সুলতানা

ব্যাঙ্গালোর থেকে ফেরার পর কেটে গেছে এক মাস । সোহা এই এক মাসে নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছিলো। ব্যাঙ্গালোর থেকে ফিরেই সোহা লন্ডন পাড়ি দিয়েছিলো। ব্যাক্তিগত কাজের জন্য। সেখানে এই এক মাস সে তার ভাই সৌজন্যের সাথে কাটিয়ে দিয়েছে সারাদিন হাসি মজা করে কাটিয়ে দিয়েছে। তবে এবারে সোহা এসেছে একবারেই তার ভাই কে সাথে নিয়ে দেশে ফেরার জন্য তবে এর সাথে আরো একটা কারণ ও আছে। সোহা ইন্ডিয়া তে গিয়ে এন এস জি জয়েন করতে তার বাবা মাও ফিরে গিয়েছিলো দেশে কিন্তু শুধু সৌজন্য রয়ে গেছিলো ব্যবসার জন্য তবে আরো একটা কারণ ছিল তবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।

এই এক মাসে সোহা সারাদিনে কাজের মাঝে হাসি মজা করে কাটিয়ে দিলেও রাত টা তাকে ঘিরে ধরতো আমন স্মৃতিরা। এমন নয় যে তার সারাদিনে একবারও মনে পড়েনা একবার ও মনের কোণে আমন এসে উঁকি দিয়ে যায়না। সে সারাদিন কাজের মধ্যে আমন কে ভুলিয়ে রেখে নিজেকে আরো বেশি করে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে নেয় । কিন্তু রাত হলে সে আর কোনো ভাবেই এই আমন এর স্মৃতি গুলো কে আটকে রাখতে পারে না ঠিক তারা এসে তাকে চারদিকে থেকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে নেয়। এই একমাসে এমন একটা দিন বা রাত যায়নি যে দিন তার আমন এর কথা মনে পড়ে নি আমন এর স্মৃতি রা এসে ভীড় জমায়নি মনের কোণে এর পর ও সে নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যোগে সে কাজ করে গেছে কিন্তু রাতের এই সময় কে সোহা কখনই এড়িয়ে যেতে পারিনি। চোখ বন্ধ করলেই তার চোখের পর্দায় ভেসে ওঠে আমন এর সেই হাসি মাখা মুখ তার ঠোঁটের কোণে সেই বাঁকা হাসি। যা তাকে বারে বারে ওলোট পালোট করে দেয়। মনের মধ্যে অদ্ভূত অনুভূতি নামক জ্ঞান আমন এর স্মৃতির পসরা সাজিয়ে ডানা মেলে তাকে বলতে চায় কি এই অনুভূতির নাম। কিন্তু সোহা মনের এই দরজা টা তালা বন্ধ করে রেখেছে। কিছুতেই তাদের বাইরে বেরোতে দেয়না পাছে এই অনুভূতির নাম যেটা তার মনে আছে সেটা বাইরে তার মুখে না চলে আসে তার মাঝে না ছড়িয়ে পড়ে সেই ভয়ে। সে কিছুতেই এই অদ্ভূত অনুভূতির নাম জানতে চায়না। সে একজন সাইকোলজি এর স্টুডেন্ট একজন বিশেষজ্ঞ হয়েও সে বুঝতে চাইছে না। সে যে এই অনুভূতির নাম জানে না এমন নয় তবে সে মানতে চায়না।

তবে প্রতি রাতে সোহা আমন এর প্রতি তার মনের এই অদ্ভূত অনুভূতি মানতে না চাইলেও প্রতি রাতে আমন এর সাথে কাটানো প্রতি টা মুহূর্ত এসে ধরা দেয় আর ওই সব স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে অজান্তেই প্রতিবারই তার ঠোঁটের কোণে ফুটে মুগ্ধ করা হাসি। সারাদিন আমন কে এড়িয়ে চললেও এই রাত যে বেশি করে টানে তাকে এই রাতের বেলায় সে বেশির ভাগ বেরিয়ে ছিল আমন এর সাথে। এই রাত এর সময় তাদের একসাথে কেটে যেতো। বাইক নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়া। আমন এর তার বাইক এর পিছে বসে ভয় পাওয়ার ভান করে তাকে জড়িয়ে ধরে থাকা। কাজের মাঝে তার দিকে আমন অনিমেষ তাকিয়ে থাকা। কথার মাঝে তাদের চোখে চোখ পড়ে যাওয়া। বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাতের আকাশ দেখার সাথে সাথে কফি খাওয়ার। ইউনিভার্সিটি তে তাকে চোখে চোখে রাখা সব কিছুই এসে ধরা দেয় তার চোখের পর্দায়। আর বিশেষ করে যেটা তাকে বেশি ভাবায় শিহরন জাগায় তাদের সেই একসাথে পন্ডিচেরী প্রোমেনেড বিচে একে অপরের সম্পর্শে থেকে কাটিয়ে দেওয়া।

এত কিছুর পর ও সে এই অনুভূতির মাঝে ধরা দিতে চায়না। সে জানে এই অনুভূতির নাম কিন্তু সে নিজের সাথে জড়াতে চায়না। এই অনুভূতি তার কাছে তিক্ততার এক স্মৃতি বয়ে আনে যা তাকে কুরে কুরে খায় ছোটো থেকে এই তিক্ততা ময় স্মৃতি নিয়েই সে নিজের জ্ঞান হওয়া থেকে বড় হয়েছে তাই আর সে চায়না এই অনুভূতিতে গা ভাসিয়ে দিতে। থাক না কিছু তার নিজের মধ্যে তার মনের মধ্যে তালা বন্ধ হয়ে। তার যে এখনও অনেক পথ চলতে হবে তার যে এখনও লক্ষ পূরণ হয়নি। সে এই অনুভূতি তে গা ভাসিয়ে তিক্ততার কোনো স্মৃতি আর বাড়াতে চায়না।

আজই সকালেই ফিরে এসেছে সোহা লন্ডন থেকে তাকে আবারো আরো একটা কেস এর জন্য ডাক পড়েছে। ইমিডিয়েট তাকে হেড কোয়ার্টার উপস্থিতি জানান দিতে হবে। আর এমনিতেই তার লন্ডন সব কাজ গোছানো হয়ে গেছিলো তাই আর দেরি না করে ফিরে আসে। তবে সে সোজা হসপিটাল চলে যায়। একবারে তার মাম্মা কে সাথে নিয়ে বাড়ি ফেরে সাথে হসপিটালেও কিছু কাজ সেরে নেয় একেবারে। সোহা সৌজন্য তাদের মাম্মা কে একসাথে নিয়েই বাড়ি ফেরে। ধীরাজ বাবু মা ছেলে মেয়ে কে একসাথে ফিরতে দেখে তিনি নিজেও আর অফিসে যাননি। একসাথে চারজন মিলে সারাদিন আনন্দ করে কাটিয়ে দেয়। এমনিতেই এই চারজন কে নিয়ে পরিবার হলেও তাদের একসাথে সময় কাটানো হয়নি অনেক কাল হয়ে গেছে। তারা যখন লন্ডন থাকতো সেই সময় একসাথে কাটানো হতো প্রতি উইকেন্ডে বাবা মা ছেলে মেয়ে চারজন এর পরিবার মিলে ঘুরতে বেরিয়ে যেতো। তারা তাদের কাজের মাঝে ও পরিবার কে নিয়ে হাসি মজা করে কাটিয়ে দিত কিন্তু সোহা ইন্ডিয়া ফিরে এন.এস.জি জয়েন করার পর শ্রেতা দেবী ও ধীরাজ জৈন ইন্ডিয়া ফিরে আসেন। আর তারপর থেকে আর কারোরই বেশির ভাগ আর সময় কাটানো হয়না। সোহার তো ছুটি নেই বললে চলে সে মাঝে মাঝে কেস এর ফাঁকে ফাঁকে এক আধবার বাড়ি এসে ঘুরে যায়। আর সৌজন্য একাই লন্ডন কাটিয়ে দেয় তবে শ্রেতা দেবী ও ধীরাজ মাঝে মাঝে গিয়ে কাটিয়ে আসতেন সেখানে সোহা সময় পেলে সেও যেতো। আর শ্রেতা দেবী আর ধীরাজ জৈন নিজেদের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে একে অপরের সাথে সময়ে কাটিয়ে দিতেন। এই করেই কেটে গেছে তাদের সময়। কিন্তু এখন সৌজন্য ফিরে এসেছে ইন্ডিয়া তাই তাদের দুইজন থেকে তিনজন হয়েছে সারাদিন তারা কাজের মধ্যে থাকলে ও দিন শেষে বাড়ি ফিরে এক জায়গায় হবে। আর সোহা ও বাড়ি ফিরে তার ভাইয়া কেও পাবে তার বাবা মায়ের সাথে।

————–

সোহা মন্দির এর বাইরে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় আধা ঘন্টা হয়ে গেছে। শ্রেতা দেবী মন্দির এর ভিতরে গেছেন পুজো দেওয়ার জন্য। সে তার মাম্মা কে হসপিটাল ড্রপ করেই হেড কোয়ার্টার যাবে। সে যখনই বাড়িতে থাকে এটাই তার কাজ হয়ে দাঁড়ায়। তার মাম্মা কে ড্রপ করা পিক করা মন্দির নিয়ে যাওয়া মাঝে মাঝে দুই মা মেয়ে ঘুরতে ও বেরিয়ে যায় বাইক নিয়ে। সোহা বাড়িতে থাকলে তার মাম্মা গাড়ি বয়কট করে দেন। যেটুকু সময় সোহাকে কাছে পায় সেটুকু ও তিনি তার মেয়ের সাথে কাটিয়ে দেন সোহা কে তো সব সময় পাওয়া যায়না তাই। সোহা বাইরে দাঁড়িয়ে তাই তার মায়ের ফেরার অপেক্ষা করছে। সে তার মা কে মন্দির নিয়ে আসলেও সে কখনোই ভিতরে ঢোকে না ভুল বসত কোনো কারণ ছাড়া। তার মা ও কখনই তাকে জোর করেনি। আর সেও কখনো এই সব পুজো আচ্ছার মধ্যে দিয়ে যায়নি। তাদের বাড়িতেও একটা ছোট্ট ঠাকুর ঘর আছে সেখানে শুধু তার মায়ের যাওয়া আসা সেখানে সে তো কখনই পা ফেলেনি সাথে বাকিরা ও কেউ যায় না। এমন নয় যে সেই এই সব নিয়ে তার কোনো ছুত মার্গ আছে। সে প্রত্যেকটা ধর্ম কে শ্রদ্ধা করে তবে যে জিনিষ টা মন থেকে আসেনা সেটা সে কখনই করে না।

-“উফ কতো দেরি হয়ে গেলো চল চল। এতক্ষণে হয়তো আমার পেশেন্ট এসে ভীড় জমিয়ে ফেলেছে। উফ ভিতরে যা ভিড় কি বলব। শ্রেতা দেবী বেরিয়ে এসে সোহার কপালে একটা চুমু খেয়ে বলে ওঠে।

-” সকালে ও এত ভিড়। কিন্তু আজ তো তেমন কিছু নেই মনে হয় তাইনা? সোহা মাথায় হেলমেট পরতে পরতে বলে ওঠে তার মা কে।

-” না তেমন কিছু নেই তবে এক পরিবার মানত করেছিলো ঠাকুরের কাছে তাই সেটা পূরণ করতে এসেছে। শ্রেতা দেবী হেসে বাইকে উঠতে উঠতে বলে ওঠে।

-“ওহ আচ্ছা । তো এত ভিড় ঠেলে পুজো দেওয়ার কি ছিল বেরিয়ে আসতে আমি তোমাকে অন্য মন্দির নিয়ে যেতাম বেকার এতক্ষণ দাঁড়াতে হলো। সোহা বাইক স্টার্ট দিয়ে বলে ওঠে।

-” আরে বাবা ঠাকুর এর কাছে এসে একটু দাঁড়াল কোনো ক্ষতি নেই। বলেই মুচকি হাসে শ্রেতা দেবী।

শ্রেতা দেবীর মুখ জুড়ে এক অনাবিল হাসির রেখা ফুটে আছে । সোহা কখনই মন্দির না গেলেও সে ঠিক এই বারবেলা খেয়াল রেখেছে। তার ঠিক খেয়াল আছে আজ তেমন কোনো দিন নয় যে মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় জমিয়ে সবাই পুজো দিতে উপস্থিত হবে। শ্রেতা দেবী মাঝে মাঝে তার মেয়ে কে দেখে অবাক হয়ে যান। কিভাবে যেনো সব কিছু হিসেবে রাখে। সোহা আয়নায় তার মাম্মার মুখের হাসি দেখে বুঝতে পারে তার মায়ের মুখের হাসির কারণ সে মাঝে মাঝে এই তার জন্য এই হাসি দেখতে পায় তার মায়ের মুখে।

————–

আরহান এই একমাসে কোনো কিছুতেই মন বসাতে পারেনি সব সময়ে তার ওই একটা মুখ মনে পড়ে। কাজের মাঝে খাওয়ার মাঝে সময়ে অসময়ে ওই মুখটা তাকে তাড়া করে বেড়ায়। সে এই এক মাসে খুঁজে বেড়িয়েছে ওই কাজের উৎস। এই একটা মাস সে অস্থিরতার মাঝে কাটিয়ে দিয়েছে। কোনো কিছুর মাঝে সে শান্তি পায়না। তার মনের অগোচরে সে ওই মুখটার সাথে তার আত্মার সাথে জড়িত একটা মুখের সাথে মিল পায়। তবে আরহান সেই মুখ টা কে পরিষ্কার ভাবে দেখতে পায়না তাই তার মনের এই অস্থিরতা মেটাতে পারছে না। সে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও সেই মুখের কোনো খোঁজ পায়নি তবে সেদিন সোহার পরিচয় পেয়ে সে খোঁজ করে কোনো মতে সোহার একটা ছবি কালেক্ট করেছে। সেটা নিয়েই সে মনে করার চেষ্টা করে এই মুখের রহস্য। আজ আরহান সন্তর্পনে তাদের বাড়ির পিছনের দিকে স্টোর রুমে এসেছে যেটা আজ থেকে প্রায় কুড়ি বছর আগে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। এইখানে যে একটা স্টোর রুম আছে এই বাড়িতে সেটাও কেউ জানে না। বাড়িতে আরো একটা স্টোর রুম আছে এটা কে বন্ধ করে ফেলে রাখা হয়েছে। কেউ কখনও বাড়ির এই দিকে পা রাখে না। আজ আরহান কুড়ি বছর পর বাড়ির এইদিকে পা রেখেছে। রুমের সামনে পৌঁছে সে কিছুটা নস্টালজিক হয়ে পড়েছে। চোখের সামনে ভেসে আসে কিছু স্মৃতিরা তবে তার অর্ধেক কিছু তার আবছা হয়ে আছে। সে আস্তে আস্তে সমস্ত ময়লা সরিয়ে ভিতরে ঢোকে। তবে এই রুমের ঢোকার রহস্য টাও একমাত্র তার জানা এই রুমের বাইরে বড় করে তালা ঝোলানো আছে সাথে একটা বিশাল সেল্ফ দিয়ে ঢাকা যাতে কেউ এই দরজা দেখতে না পায় একমাত্র যারাই জানে তারা ঠিক চিনতে পারবে তাছাড়া নতুন কেউ আসলে ঘুরে চলে যাবে কিছুই ধরতে পারবে না। রুমে প্রবেশ করতেই রুমের মধ্যে একটা গুমোট বদ্ধ হয়ে থাকা ভ্যাপসা গন্ধ নাকে ধাক্কা মারে আরহান এর কিন্তু আজ সেই সব কে দূরে সরিয়ে রেখে ময়লা আবর্জনা মাকড়সার জাল সরিয়ে এগিয়ে যায় ভিতরের দিকে। চারিদিকে জিনিস পত্রের স্তূপ কাড়ি করে রাখা আছে। ঘরের এক একটা সেল্ফ রাখা আছে পাশে বড় একটা আলমারি আরো কয়েকটা বড় বড় বাক্স রাখা আছে। অন্য দিকে আরও সব বাকি জিনিস পত্র দিয়ে ভরে আছে। আরহান বাকি সব ছেড়ে ঘরের কোণে রাখা জিনিস গুলোর দিকে এগিয়ে যায়। এগুলো তার চেনা খুব কাছের এক মানুষের ব্যবহৃত জিনিস। এক এক করে তার জমে থাকা স্মৃতিরা হানা দেয়। সে ময়লা পরিষ্কার করে জিনিস গুলো তে হাত ছুয়ে ছুয়ে দেখতে থাকে। চোখের কোণে জমা হয় পানি। সেল্ফ টা থেকে ঝুল সরিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় তাকে কাঁচ সরিয়ে ভিতরে থাকা একটা পুতুল মূর্তি বের করে আনে তার মাথাটা খুলতে তার মধ্যে দেখা যায় একটা চাবির গোছা। এটা দেখেই তার মুখে মলিন হাসি ফুটে ওঠে। চাবি নিয়েই আলমারির লক খোলে। অনেক দিন পড়ে থাকার দরুন কিছুটা জ্যাম হয়ে গেছে একটু কষরত করতেই খুলে যায়। চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয় আলমারি ভর্তি সারি সারি সযত্নে গুছিয়ে রাখা কাপড় বেশির ভাগই শাড়ি। বাচ্চাদের জামা কাপড়। আরহান আলতো হাতে সব কিছু ছুয়ে দিতে থাকে। আজ কুড়ি বছর পর সে তার আত্মার স্পর্শ অনুভব করছে। হয়তো সোহা কে না দেখলে এই জীবনে এই ঘরের কথাও হয়তো তার মনে পড়তো না আর না কখনো এই সব কিছু আবারো ফিরে পাওয়া হতো। সোহা কে দেখে তার আবছা হয়ে যাওয়া স্মৃতি গুলো আবারো জীবন্ত হতে শুরু করেছে এক এক করে তার মনের পর্দায় এসে হানা দিচ্ছে। সে পুরো আলমারি ঘেঁটে খুঁজে পায় একটা অ্যালবাম হ্যাঁ সেই এইরকম কিছু একটার প্রত্যাশা করেই এই রুমে এসেছিল সে যে এখানে এসে এই গুলো সব ফিরে পাবে সেটা আসা করেনি আরহান। ওখানে অনেক গয়নাও খুঁজে পায়। তবে সব জিনিষ আবারো আগের মত করে রেখে দিয়ে শুধু অ্যালবাম টা নিয়েই আবারো আলমারি লক করে দেয়। তবে চাবি টা আর এখানে রাখে না নিজের সাথে করে নিয়ে আবারও ঠিক যে ভাবে সে এখানে এসে ছিল সেই ভাবে সতর্কতার সাথে ফিরে যায় নিজের রুমে।

দরজা আটকে দিয়ে বিছানায় বসে এক পাশে সোহার ছবি পাশে রেখে নিজের নিঃশ্বাস আটকে রেখে অ্যালবাম টা খোলে। কয়েক পাতা উল্টাতে পেয়ে যায় তার সেই কাঙ্খিত মুখ যেটা সে মনে করার চেষ্টা করছিলো। এই সেই মুখ যাকে এই কুড়ি বছর ধরে মনে করার চেষ্টা করেও পারেনি। কিন্তু আজ সে সফল হয়েছে খুঁজে পেয়েছে তার আত্মার ছবি। কিন্তু ছবিটা দেখেই সে চমকে ওঠে। তার অনুমান ঠিক বেরিয়েছে। কিন্তু এটা কি করে সম্ভব? এটা কোনো ভাবেই হওয়া সম্ভব নয়। পাশে থাকা সোহার ছবিটা হাতে তুলে নেয় মেলাতে থাকে অ্যালবামে থাকা ছবির সাথে। পাশাপাশি দুটো ছবি একসাথে রাখতে আরহান এর শিরডাড়া জুড়ে একটা শিহরন খেলে যায়। সে অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে আছে ছবি দুটোর দিকে। সে নিজের চোখ কেও বিশ্বাস করতে পারছে না। তার মস্তিষ্ক জুড়ে শুধু একটাই প্রশ্ন এটা কি করে সম্ভব হতে পারে কি ভাবে সম্ভব?

চলবে………❣️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here