তোর_মনের_অরণ্যে,১৪,১৫

তোর_মনের_অরণ্যে,১৪,১৫
সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
১৪.
-” ইন্সপেক্টর । এই ইন্সপেক্টর কোথায় মরে পড়ে আছিস শালা। থানায় ঢুকতে ঢুকতে চিৎকার করে ডেকে ওঠে।

ছেলে টি কে দেখে কয়েকজন পুলিশ অফিসার সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায়। তাদের মুখে ভয়ের চাপ স্পষ্ট হয়ে আছে। ছেলে টি পুলিশ অফিসার দের দেখে তাদের দিকে এগিয়ে যায় সাথে তার পিছনে ও আছে কয়েকজন ছেলে।

-“কিরে খুব সাহস বেড়ে গেছে বল? আমাদের কাজে বাধা দিস। এতবড় বুকের পাটা কি করে হলো রে তোর?

-” আসলে স্যার স্যার।

আমতা আমতা করে কিছু বলার চেষ্টা করতে ছেলে টি অফিসার এর মুখ চেপে ধরে। হিংস্র হয়ে বলে ওঠে।

-“মরার নিমন্ত্রণ জানাচ্ছিস হ্যাঁ? প্রতি মাসে যে মোটা মোটা টাকা নিয়ে পকেট মোটা হয় সেটা বুঝি ভালো লাগছে না তাইনা?

-“আমার লোকেদের তুলে নিয়ে এসেছিস আবার ট্রাক ও আটক করে রেখেছিস সাহস বলিহারি তোর তাইনা?

-“এই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কথা কি শুনছিস আমার লোকদের ছেড়ে দে। সাথে আমার ট্রাক দুটো কেও ছাড়ার ব্যবস্থা কর এখুনি নাহলে সব কটা কে এখানে মেরে রেখে যাব। অন্য বাকি অফিসারদের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” স সস্যার আসলে মানে চাবি আমাদের কাছে নেই। অন্য এক অফিসার ভয়ে তুতলিয়ে বলে ওঠে।

-” তোর কাছে নেই মানে কার কাছে আছে। মজা হচ্ছে নাকি যে তোর কাছে চাবি নেই। চিৎকার করে বলে ওঠে।

-“ম ম ম্যাম এর কাছে আছে স্যার।

-” কে এই ম্যাম হ্যাঁ এটা আবার কোথায় থেকে উদয় হলো। কোথায় তোদের ম্যাম দেখি একবার তাকে।

-” স্যার ওদিকে ম্যাম কেবিনে আছে।

কেবিন টা একবার দেখে নিয়েই অফিসার টা কে ছেড়ে দেয় তারপরেই এগিয়ে যায় সেদিকেই। কোনোরকম নক পারমিশন ছাড়াই দুম করে রুমে ঢুকে যায়। ভিতরে ঢুকেই দেখতে পায় একজন মেয়ে বসে বসে কিছু ফাইল চেক করছে। হটাৎ কেউ ঢুকে পড়তে মাথা উঁচু করে তাকায় অ্যাস। তার চোখ মুখে পুরো কঠোর এক্সপ্রেশন। পেন টা তুলে নিয়ে হাতে রেখে খেলতে খেলতে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে।

-“এই অফিসার সাহস কি করে হলো আমার লোক আর আমার ট্রাক বাজেয়াপ্ত করার। এই রনির কাজে ব্যাঘাত ঘটানোর সাহস কি করে হয় এখানে কেউ বলেনি রাঠোরদের কোনো কাজে ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। চিৎকার করে বলে ওঠে রনি।

অ্যাস একদম নির্লিপ্ত ভাবে তাকিয়ে থাকে রনির দিকে রনির কথা শেষ হতেই অ্যাস একদম শান্ত ও ভারী ভাবে বলে ওঠে।

-“গেট আউট।

-” হোয়াট? এই আমাকে তুই বাইরে যেতে বলিস তুই জানিস আমি কে? এতক্ষণ তোর সাথে ভালো করে কথা বলছিলাম কিন্তু না।

-“আই সে গেট আউট অফ দিস রুম নাও। হাউ ডেয়ার ইউ এন্টার এ রুম উইথআউট পারমিশন? গো আউটসাইড অ্যান্ড কাম টু দ্য রুম অনলি উইথ পারমিশন। গো। অ্যাস উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে টেবিল উপরের আঘাত করে বলে ওঠে।

রুমের বাইরে থাকা অফিসার ও রনির লোকেরা ও অ্যাস এর আওয়াজ শুনে চমকে ওঠে। রনি চোখ বড় বড় অ্যাস এর দিকে তাকিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় অ্যাস এর উপরে কোনো কথা বলতে পারে না। অ্যাস এক পলক তাকিয়ে নিয়ে আবারও বসে পড়ে। রনি বাইরে বেরিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই কে দেখে নিয়ে রাগে ফোসফোস করে দরজায় নক করে। অ্যাস পারমিশন দিতেই জোরে আওয়াজ করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে যায়।

-“এই অফিসার কে তুই হ্যাঁ আমার কাজে ব্যাঘাত করিস? তোর সাহস হলো কি করে হ্যাঁ? তুই আজ অনেক বড় সাহস দেখিয়েছিস এর পরিণাম যে কতটা ভয়াবহ হবে তুই ভাবতেও পারবি না। রনি অ্যাস এর দিকে কিছুটা এগিয়ে বলে ওঠে।

-” আয়েশা চৌধুরী। আর আমার সাহস টা বরাবরই বেশি। আর আমি যখন আমার ডিউটিতে প্রথম দিন জয়েন করেছিলাম সেদিনই থেকেই কাজের পরিণাম কি হবে সেটা না ভেবেই আমার ডিউটি পালন করে গেছি তাই আজও চিন্তা করিনা আমার কাজের পরিণাম কি হবে। আর আমার চিন্তা না করে নিজের চিন্তা করো। অ্যাস বলে ওঠে।

-” এই তুই জানিস আমি কে? তুই এতদিন চিন্তা করিস নি কিন্তু এখন তুই বুঝতে পারবি আমি কে? এই পুরো থানা আমার ইশারায় আমাদের টাকায় চলে এখানকার সব আইন আমাদের তৈরী প্রত্যেক মাসে মাসে মোটা মোটা করে টাকা পায় এবার থেকে তোকে ও দিতাম কিন্তু তুই। রনি টেবিলে চাপড়ে বলে ওঠে।

-” ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন আমার এই চাকরির জন্য সরকার আমাকে বেতন দেয় তাই আমার কোনো কালো টাকার প্রয়োজন পড়ে না আর যদি একান্তই আমার প্রয়োজন পড়ে তো সেখানে আমার ফ্যামিলি আছে সেটা নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। আর রইলো আইন রুলস তো বলি আমি সরকার এর আইন মেনে চলি ইনফ্যাক্ট আমি চাইলেই তোমাকে এখানে শুট করে দিতে পারি কেউ আমার কাছে থেকে কৈফিয়ত ও চাইবে না। অ্যাস আয়েসি ভঙ্গিতে বসে বলে ওঠে।

-“এই তুই কি বললি আমাকে মারবি এত বড় সাহস তোর? সামান্য পুলিশ অফিসার হয়ে মন্ত্রীর ছেলের গায়ে হাত তুলবি? তোর মত মেয়েদের রোজ আমি বিছানায় ব্যবহার করি আর তুই তাদের জাতের হয়ে আমাকে শুট করবি? আজ তোর কি হাল করি দেখ। আর তোর ফ্যামিলি সেটা কে ও দেখে নেবো। রনি এগিয়ে গিয়ে অ্যাস এর বাহু টেনে ধরে বলে ওঠে।

অ্যাস এক ঝটকায় নিজের বাহু থেকে রনির হাত ছাড়িয়ে ঠাস করে গালে এক থাপ্পড় মেরে দেয়। উঠে দাঁড়িয়ে পর পর কয়েকটা ঘুষি মেরে দেয় রনির মুখে রনি কোনো প্রতিক্রিয়া করতে পারে না। অ্যাস রনি কে টেনে রুমের বাইরে নিয়ে গিয়ে ছুড়ে ফেলে।

-” মেয়েদের তুই বিছানায় ব্যবহার করিস বলে নিজকে নিয়ে খুব অহংকার না খুব তোর। কিন্তু তুই যাদের ব্যবহার করিস আমি সেই মেয়েদের মত নয়। আমি তোদের মত ক্রিমিনাল দের ব্যবহার করি। আর আমার ফ্যামিলি কে দেখে নিবি বলছিলি না যা তোর কোন বাপ আমার ফ্যামিলি কে কি করতে পারে দেখি। চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিস এর কর্নধার সম্রাট চৌধুরী আমার বাবা যা এবার দেখি কি করিস। অ্যাস পর পর কয়েকবার আঘাত করে বলে ওঠে।

এদিকে অ্যাস এর কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সম্রাট চৌধুরীর মেয়ে। ব্যাঙ্গালোরে চৌধুরী পরিবার হল রয়্যাল ফ্যামিলি এর মধ্যে এক নম্বর। এত সবাই জানে। রনি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে অ্যাস এর দিকে।

-“একজন অন ডিউটি পুলিশ অফিসারের এর গায়ে হাত তোলার জন্য আমি তোকে গ্রেপ্তার করলাম। অ্যাস বলে ওঠে।

রনি মার খেয়ে আর অ্যাস এর কথা গুলো শুনে অবাক হয়ে গেছে সে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই তার হাতে হাতকড়ি পরিয়ে দেয়। এর মধ্যেই থানায় এসে উপস্থিত হয় আকাশ সানি আর নীহার। ওরা রনি কে তুলে নিয়ে চলে যায় হেড কোয়ার্টার।

————

ইউনিভার্সিটি ক্যান্টিনে বসে আছে সোহা আর আকেশ। সোহা মুখে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে রেখে কফির কাপে চুমুক দিতে থাকে আর তীক্ষ্ণ চোখে আকেশ কে দেখতে থাকে। তবে আকেশ এর এদিকে কোনো ধ্যান নেই সে তো তার মত কথা বলে যাচ্ছে আর নিজের ফোনের দিকে মাঝে মাঝে দেখছে। আর তাদের পাশের টেবিলে বসে সবটা পরিলক্ষন করে যাচ্ছে। রাগ হলেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখছে। কিছুক্ষণ পর সোহার ফোনে এসএমএস আসতে সোহা কোনা চোখে একবার আকেশ কে দেখে নিয়েই ফোন চেক করে আকেশ এর দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে থাকে ঠোঁটে রয়েছে সেই বাঁকা হাসি।

কিছুক্ষণ পর আকেশ এর ফোন বেজে ওঠে। আকেশ একবার সোহার দিকে তাকিয়ে নেয় সোহা ইশারায় রিসিভ করতে বলে। আকেশ একটু আমতা আমতা করে ফোন রিসিভ করে কিন্তু ফোন রিসিভ হতেই তার মুখের হাভ ভাব বদলে যায় কেমন একটা হিংস্র ভাব হয়ে যায়। সোহা শুধু তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছে। আকেশ বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। তবে মুখে কিছু না বললেও তার চোখ মুখ পালটে গেছে ।

-“কি হয়েছে মিস্টার রাঠোর? কোনো প্রবলেম? সোহা ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

-” না না সব ঠিক আছে। সোহা আমাকে এখন একটু যেতে হবে। প্লিজ কিছু মনে করবেন না। আকেশ বলেই বেরিয়ে যায়।

আকেশ যেতেই আমন উঠে এসে সোহার পাশে বসে যায়। তার চোখ মুখ এখনও রাগী হয়ে আছে।

-“যতো খুশি দৌড়ে নাও মিস্টার আকেশ রাঠোর ওরফে এস.আর মাত্র আর কিছু ঘন্টা তারপরেই তোমার সব জারি জুড়ি শেষ হবে। সোহা বাঁকা হেসে বলে ওঠে ।

চলবে…. ❣️

#তোর_মনের_অরণ্যে
#সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
১৫.
রুমের মধ্যে রবিন এর ঠিক পাশে এনে রনি কে ছুড়ে ফেলে আকাশ সানি। ওরা থানায় থেকে এখানেই নিয়ে চলে আসে রনি কে। রনি মেঝেতে পড়ে কাতরাতে কাতরাতে একবার রুমে চোখ বুলিয়ে নেয়। থানায় অ্যাস এর থেকে যে কয়েকটা মার খেয়েছে একদম সলিড ছিল তাই শরীরে ঠিক মতো বল পাচ্ছে না রনি। তবে রুমের মধ্যে হাত পা বাঁধা অবস্থায় রবিন কে পড়ে থাকতে দেখে তার চোখ কপালে উঠে যায় সে জুল জুল চোখে রবিন কে দেখতে থাকে তার শরীরের আঘাত এর চিহ্ন আঁকা আছে। এটা দেখেই সে এবার চোখ তুলে রুমের মধ্যে থাকা আকাশ সানি নীহার এর দিকে তাকায়। তারপর আবারো তার সেই আগের রূপে ফিরে আসে চিৎকার করে ওঠে।

-“আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছিস তোরা? তোরা জানিস না তোরা কার সাথে লাগতে এসেছিস। আমাকে এখানে তোরা কোনো ভাবেই আটকে রাখতে পারবি না। আর তোরা অফিসার না? তোদের চাকরি ও কি করে থাকে আমি দেখব। আমার গায়ে যে কটা আঘাত করেছিস না সব সুদে আসলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখন যতো ইচ্ছা আমাকে আঘাত করতে পারিস পরে এর জন্য তোরা পস্তাবি আমার ড্যাড আর ভাই তোদের ছাড়বে না। রনি একভাবে চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” ওহ তাই নাকি? তা তোমার ওই মন্ত্রী ড্যাড আর তোমার ওই ভাই কি করে সেটা তো আমাদের কেও একটু দেখতে হয় তাইনা গাইজ? রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে ওঠে সোহা।

হঠাৎ করে এই কথা গুলো শুনে রনি রুমে থাকা তিন জনের মুখের দিকে তাকায়। কিন্তু তাকিয়ে দেখে তারা তিনজন মুখ টিপে হাসছে। এটা দেখেই রনি খানিকটা বিরক্তি নিয়ে দরজার দিকে তাকাতে দেখে ভিতরের দিকে কেউ আসছে। চোখের সামনের ব্যাক্তির মুখ পরিষ্কার হতেই রনির চোখ দাঁড়িয়ে যায় বিস্মিত হয়ে সে তাকিয়ে আছে। দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকে আসে সোহা আর আমন।

-“কি বাবু সোনা চমকে গেলে নাকি? আহারে। বলেই সোহা মুখে আওয়াজ করতে থাকে।

-” তুমি? তুমি এখানে কি করে? এক মিনিট তার মানে তুমিও এদের সাথে যুক্ত আছো? রনি বিস্ময় নিয়ে বলে ওঠে।

-“আমাকে তো এখানে থাকতে হবে তাইনা নাহলে তোমার সাথে পরিচয় করব কি করে? তুমি ও তো অমর সাথে একান্তে সময়ে কাটাতে চেয়ে ছিলে তাই না? আহারে ভুলে গেলে? সোহা বলে ওঠে।

সোহার কথা শুনে রনি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে আর বাকিরা মুখ চেপে হাসছে সোহা রনির মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে সে ভ্রু কুঁচকে ক্ষুব্ধ চোখে তাকিয়ে আছে।

-” আরে আরে তোরা চুপ কর বাবু দেখি রেগে যাচ্ছে আহারে বাবু রাগ করে না। সোহা বলেই জোরে জোরে হেসে ওঠে।

আর সোহার এই হাসি দেখে বাকি চারজন চুপ করে যায় কারণ এই হাসির পরে যে ঠিক হতে চলেছে সেটা তারা জানে তাই চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আর আমন চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখছে। সোহা হাসতে হাসতে আচমকা রনির কাছে গিয়ে রনির গাল টিপে ধরে। সাথে সাথেই রনির মুখ থেকে আর্তনাদ বেরিয়ে আসে তার মনে হচ্ছে গালের মাংস দাঁত ভেদ করে ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে।

-“তোর ড্যাড আর ভাই চাইলেও কিছু করতে পারবে না আমাদের। কিন্তু আমরা চাইলেই তোর ড্যাড আর ভাই কে একদম উপরে পাঠিয়ে দিতে পারি। এর জন্য কারোর কাছে জবাব দিহি ও করতে হবে না আমাদের। তাহলে ভাবে এখন তোর সাথে কি হতে চলেছে । সোহা রনির গাল চেপে রেখেই হিংস্র ভাবে বলে ওঠে।

-” এখন তোকে খানিকটা জামাই আদর করে নেই তারপর তোর ভাই বাপ কে দেখা যাবে ঠিক কী ভাবে খাতির করা যায়। কেমন? বলেই সোহা রনি কে ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে যায়।

সোহা উঠে দাঁড়িয়ে আকাশ সানি কে ইশারা করতে তারা কাজে লেগে পড়ে। রনি এর গায়ে থেকে শার্ট খুলে নেয় শুধু একটা শর্ট প্যান্ট ছাড়া আর কোনো সুতো রাখে না। কিছুক্ষণ পরই আকাশ বাইরের থেকে একটা ট্রলি টেবিল রুমে নিয়ে আসে তাতে বড় বরফ চাঁই রাখা আছে। রনি এক পাশে পড়ে আছে তার হত দুটো বাধা আছে আর তার পাশেই সানি দাঁড়িয়ে আছে। এতক্ষণ রুমের এত হট্টগোল এর আওয়াজ পেয়ে রবিন ও হুসে ফিরে আসে। সে অবাক হয়ে মধ্যে হতে থাকা দৃশ্য দেখতে থাকে। তার চোখ ইতি মধ্যে বড় বড় হয়ে গেছে রনি কে দেখে। আকাশ এগিয়ে এসে রনি এর পাশে দাঁড়িয়ে সানি আর আকাশ মিলে রনি কে ধরে বরফে আবৃত্ত টেবিলের উপর উল্টো করে শুইয়ে দেয়। সাথে পা দুটো টেবিলের দুই পায়ের সাথে বেঁধে দেয় ফলে আর নাড়াচাড়া করতে পারে না। রবিন ভয় ভয় চোখ নিয়ে তাকিয়ে দেখছে তার মুখ থেকে অস্ফুটে বেরিয়ে আসে।

-“সেকেন্ড বস।

এদিকে রনি কে নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকতে কেউ খেয়াল করেনি রবিন এর কখন জ্ঞান ফিরেছে। তাকে বাধা আছে বলে তারা নিশ্চিন্তে তাদের কাজ করছিলো। তবে রবিন এর কথার আওয়াজ পেতেই সবাই ওর দিকে ঘুরে তাকায়। সোহা রবিন এর মুখের দিকে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণ করে। রবিন এর ভীতু দৃষ্টি অনুসরন করে দেখে সে রনি কে দেখছে। আর একটু আগের রবিন এর মুখ থেকে অস্ফুটে বের শব্দ কিছুটা কানে এসেছে তবে ঠিক ভাবে বুঝতে পারেনি। তাই সোহা রবিন এর দিকে এগিয়ে যায়। রবিন এর সামনে দাঁড়িয়ে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকায় ।রবিন তার সামনে সোহা কে দেখে আরো গুটিয়ে যায় ভয়ে।

-“কি বললি এক্ষুনি? সোহা গম্ভীর ভাবে বলে ওঠে।

-“সস সে সে সেকেন্ড বস। ভয়ে ভয়ে বলে ওঠে রবিন।

এটা শুনতেই সোহার মুখে বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে তার চোখ গুলো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। বাকিরা ও তাকিয়ে আছে তাদের ছোড়া তীর যে একদম নিশানায় লেগেছে এটা বুঝেই মুখে হাসি ফোটে তাদের ধারণা ছিল। সকালে থানায় যে আসবে তার কাছে থেকে সব ডিটেইলস তারা পাবে তবে এটা যে একবার খাপে খাপে লেগে যাবে ভেবেই বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে সবার মুখে।

-“আরে ভাই আমাদের এখানে সেকেন্ড বস এসে পড়েছে তাকে একটু খাতির তো কর, এখনও দাঁড়িয়ে কেনো আছিস ।সোহা বাঁকা হেসে বলে ওঠে ।

সোহার কথা শুনে অ্যাস এগিয়ে যায় রনি এর দিকে সকালে তাকে অনেক কথা বলেছে এই ছেলে এবার সে দেখাবে মেয়েরা চাইলেই কি করতে পারে। মেয়েরা যেমন মায়ের জাত তেমনি মেয়েরা সময়ে সময়ে অস্ত্র হাতে নিয়ে ঝাঁসির রূপ ও ধরতে পারে। শুধু তাদের বিছানা ব্যবহার করা বাড়ির হেসেলে ব্যবহার করার যন্ত্র নয়। তারা যেমন হেসেলে খুন্তি ধরতে পারে আবার তেমনি হতে অস্ত্র ও তুলে নিতে পারে।

অ্যাস এগিয়ে গিয়ে রুল বাড়ি তুলে নিয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়েই রনি কে পেটাতে থাকে সাথে নীহার ও গিয়ে যোগ হয়। এদের হাতের একটা থাপ্পড় খেলে গাল এর অবস্থা এক সপ্তাহ খারাপ থাকে আর সেখানে শরীরের শক্তি দিয়ে পেটাতে যে আধা ঘণ্টার মধ্যে রনি কে আর আস্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা মাসের পর মাস কঠিন ও ভয়ঙ্কর ট্রেনিং দিয়ে নিজেদের তৈরী করেছে। রুমের মধ্যে রনি এর চিৎকারে ভরে যায়। তার কান ফাটানো যন্ত্রণাময় চিৎকার শুনেই রবিন বারংবার কেঁপে কেঁপে উঠছে।

-“উল্টো গোনা শুরু হয়ে গেছে মিস্টার বিগ বস ও এস.আর। মাত্র হাতে গোনা কিছু টাইম তোমাদের হাতে আছে এর মধ্যে পালিয়ে বাঁচতে শুরু করো। তারপরেই দেখা হবে আমাদের সামনাসামনি। টিক টক টিক টক। সোহা মুখে রহস্যময় হাসি নিয়ে বলে ওঠে।

চলবে…… ❣️

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন…। নিজেদের মতামত জানাবেন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here