তোমার রাঙা উঠানে,part:শেষ পর্ব

তোমার রাঙা উঠানে,part:শেষ পর্ব
writer:Alo Rahman
.
.
শুভ্র ভাই একবার আমার দিকে তাকালেন।তারপর স্পষ্ট গলায় বললেন,
“আমি কাউকে অপমান করি নি।”
.
“তুমি স্বপনকে বলেছ যে,আলো ওর কথা শুনতে বাধ্য নয়।কারণ ও একজন আউটসাইডার।বলেছ না?”
.
“না,বাবা।আমি এভাবে বলি নি।”
.
আমি আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।বলে উঠলাম,
“ফুল বাবা,আসলে….”
.
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই ফুল বাবা বললেন,
“তুই চুপ করে বসে থাক,আলো।”
.
আমি চুপ করে গেলাম।ফুল বাবা শুভ্র ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“শুভ্র,স্বপন কি তাহলে মিথ্যা কথা বলছে?”
.
“বাবা,তোমার যদি মনে হয় যে তোমার নিজের ছেলে মিথ্যা বলছে তাহলে আমার কিছু করার নেই।”
.
ফুল বাবা কিছুক্ষণ গম্ভীর হয়ে বসে থাকলেন।তারপর বললেন,
“আলো,তোর এনগেজমেন্ট দুদিন পর নয়।কাল সন্ধ্যায়।”
.
আমি কিছু না বলে চুপচাপ উঠে ঘরে চলে এলাম।এনগেজমেন্টটা তো হওয়ারই ছিল।সেটা কাল হোক বা পরশু।
.
.
.
.
আজ সকাল থেকেই আমি নিজের ঘরে বসে আছি।একবারের জন্যেও নিচে যাই নি।বাইরে থেকে হৈচৈ শুনতে পাচ্ছি।বোধহয় বাড়িটাকে সাজানো হচ্ছে।
একটু পরে আমার ঘরের দরজায় টোকা পরলো।আমি দরজা খুলে দেখলাম ফুল মা এসেছে।হাতে খাবারের প্লেট।ফুল মা ঘরে ঢুকে খাটে বসে পরলেন।আমাকে বললেন,
“কিরে?দাঁড়িয়ে আছিস কেন?আয়,খাইয়ে দেই।আমার অনেক কাজ।তাড়াতাড়ি আয়।”
.
আমি গিয়ে ফুল মায়ের সামনে বসলাম।ফুল মা বললেন,
“আলো,তুই খাওয়া শেষ করে রেডি হবি।শপিং এ যেতে হবে।কেনাকাটা তো হয়নি।”
.
“আমি কোথাও যাব না,ফুল মা।”
.
“যাবি না?তোর জিনিস তুই পছন্দ করে কিনবি না?”
.
“তোমার যা পছন্দ হয় তাই নিয়ে এসো,ফুল মা।আমার বাইরে বেরোতে ইচ্ছে করছে না।”
.
ফুল মা ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ।শান্ত গলায় বললেন,
“আলো,এখনও সময় আছে।তুই বিয়েতে রাজি কিনা সেটা বল।”
.
“রাজি কেন হবো না?তুমি অযথা চিন্তা করছ।”
.
ফুল মা আর কোনো কথা বললেন না।আমাকে খাইয়ে দিয়ে চলে গেলেন।আমি দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পরলাম।আমার চোখ দুটো খুব জ্বলছে।চোখে পানি আসতে চাইছে।আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
কতক্ষণ মরার মতো ঘুমিয়েছি জানি না।দরজা ধাক্কানোর শব্দে ঘুম ভাঙলো।এখন সম্ভবত বিকাল হয়ে এসেছে।নিজের উপর নিজেই আশ্চর্য হচ্ছি।এতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি!
উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম।ফুল মা আমার হাতে কতগুলো ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলল,
“আলো,তাড়াতাড়ি রেডি হ।সন্ধ্যা তো হয়ে আসছে।স্বপনদের বাড়ির সবাই চলে আসবে।”
.
“আমার রেডি হতে বেশি সময় লাগবে না।তুমি চিন্তা করো না।”
.
“তোর যদি সাহায্য লাগে তাহলে আমাকে ডাকবি।”
.
“ঠিক আছে।”
.
ফুল মা চলে গেলেন।আমি প্যাকেটগুলো খুলে দেখলাম,তাতে একটা মেরুন রঙের লেহেঙ্গা আর কিছু গয়না।
আমি ওয়াশরুমে গেলাম।অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করার কারণে আমার মাথা ঝিমঝিম করছে।আমি লম্বা একটা শাওয়ার নিলাম।
লেহেঙ্গাটা গায়ে চড়িয়ে চুল শুকাচ্ছিলাম।চুল শুকাতে বেশ খানিকটা সময় লেগে গেল।আমি আয়নার দিকে এগিয়ে গেলাম।চোখে কাজল পরলাম,ঠোঁটে লিপস্টিক লাগালাম।কানে দুল পরছিলাম।এমন সময় বাইরে হৈচৈ শুনে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম।দেখলাম স্বপন সাহেব এসে গেছেন।উনার সাথে আরও কয়েকজন মানুষকে দেখতে পেলাম।
আমি আবার ঘরে চলে এলাম।চুল আঁচড়ে পিঠের উপর ছড়িয়ে দিলাম।নিজেকে আয়নায় দেখছিলাম।কি যেন একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।
.
নিজের সাজ নিজেই দেখছিলাম।তখন দরজায় কেউ নক করলো।আমি গিয়ে দরজা খুললাম।শুভ্র ভাই এসেছেন।আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,
“আপনি?ফুল মা কোথায়?”
.
শুভ্র ভাই জবাব দিলেন না।ঘরের ভেতরে ঢুকে বললেন,
“ফুল মা ব্যস্ত আছে।তুই তো দেখছি সেজেগুজে বসে আছিস।”
.
“তো আমার কি না সেজে বসে থাকার কথা ছিল?”
.
শুভ্র ভাই হাসলেন।হঠাৎ আমাকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলেন।আর উনি নিজে আমার সামনে হাঁটু গেরে বসলেন।তারপর খয়েরি রঙের চুড়ি বের করে আমার হাতে পরিয়ে দিতে শুরু করলেন।আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।কিন্তু উনার সেদিকে কোনো খেয়াল নেই।
চুড়ি পরানো শেষ করে শুভ্র ভাই আমার হাত নিজের হাতের মধ্যে নিলেন।আমার চোখের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে উঠলেন,
“আমি তোকে ভালোবাসি,আলো।”
.
আমি কেঁপে উঠলাম।আমার সর্বাঙ্গ শিহরিত হয়ে উঠলো।এই সেই কথা যেটা আমি সবসময় শুভ্র ভাইয়ের মুখ থেকে শুনতে চেয়েছি।আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।যখন তখন পানি গাল বেয়ে পরতে শুরু করবে।আমার বুকের ভেতর চিনচিন করছে।আমি কথা বলতে পারছি না।কেবল আমার ঠোঁট জোড়া হালকা কাঁপছে।
শুভ্র ভাই আগের মতই শান্ত গলায় বললেন,
“তুই এই বিয়েটা করিস না,আলো।প্লিজ আলো।তুই এই বিয়েটা করলে আমি মরে যাব।”
.
আমি খেয়াল করলাম,শুভ্র ভাইয়ের চোখ লাল হয়ে আসছে।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,কিন্তু সেই সাথে আরেকটা মুখও আমার চোখের সামনে ভাসছে,ফুল বাবার মুখ।না,ফুল বাবার সাথে এত বড় বেইমানি করতে পারবো না আমি।আমি শুভ্র ভাইকে সরিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।অন্য দিকে ঘুরে বললাম,
“এটা সম্ভব নয়,শুভ্র ভাই।এটা কিছুতেই সম্ভব নয়।আমি ফুল বাবাকে অসম্মান করতে পারবো না।”
.
“প্রতিশোধ নিচ্ছিস?”
.
আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকালাম।
“প্রতিশোধ!?”
.
“হ্যাঁ,প্রতিশোধ।আট বছর আগে আমি তোর সাথে নিষ্ঠুরতা করেছিলাম।আর আজ তুই করছিস।তুই আমার কথাটা একবারও ভেবে দেখবি না,আলো?”
.
“শু..শুভভ্র ভাই,এখন আর ভাবার সময় নেই।”
.
শুভ্র ভাই আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন।আমার হাত ধরে বললেন,
“আলো,মা বাবাকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার।শুধু তুই হ্যাঁ বল।আমি জানি তুই এই বিয়েটা মন থেকে মেনে নিতে পারিস নি।তুই আমাকে ভালোবাসিস।”
.
আমি শুভ্র ভাইয়ের দিকে তাকালাম।আমার চোখ থেকে পানি ঝরতে শুরু করেছে।অসহ্য ধরণের কষ্ট হচ্ছে।আমি কান্নাভেজা কন্ঠে বললাম,
“শুভ্র ভাই,সেই তো আপনি এলেন।এতো বেলা করে কেন এলেন,শুভ্র ভাই?এখন যে বড্ড বেলা হয়ে গেছে।আর যে সময় নেই।”
.
শুভ্র ভাই আমার চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বললেন,
“আলো,একটা বেলা শেষ হয়েই তো আরেক বেলা শুরু হয়।তাই না?”
.
আমি এক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।উনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার শক্তি পাচ্ছি না।
.
.
“আলো!”
হঠাৎ কারোর ডাক শুনে আমরা দুজন ছিটকে দূরে সরে গেলাম।তাকিয়ে দেখলাম দরজায় ফুল মা দাঁড়িয়ে।
আমি তাড়াতাড়ি চোখ মুছে ফেললাম।মুখে হাসি আনার চেষ্টা করে বললাম,
“ফু..ফুল মা,আমি রেডি।চলো নিচে যাই।”
.
ফুল মা ধীরে ধীরে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন।কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন।
তারপর আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সজোরে আমার গালে চড় বসিয়ে দিলেন।আমি টাল সামলাতে না পেরে পরে যাচ্ছিলাম।কিন্তু তার আগেই শুভ্র ভাই আমাকে ধরে ফেললেন।ফুল মাকে বললেন,
“ওকে মেরো না,মা।ওর কোনো দোষ নেই।সব দোষ আমার।”
.
ফুল মা আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন,
“বারবার,বারবার জিঙ্গেস করেছি এই বিয়েটা তুই মন থেকে চাস কিনা।কেন বললি না, আলো?বল কেন?আমি না তোর ফুল মা।নিজের মনের কথা তুই আমাকে বলতে পারবি না কেন?আমি কি তোকে এতটাই দূরে সরিয়ে বড় করেছি আলো?”
.
আমি খেয়াল করলাম ফুল মা কাঁদছে।আমার চোখেও পানি এসে গেছে।আমি কাঁপাকাঁপা গলায় বললাম,
“ফুল মা….আমি…আসলে….”
.
“চুপ,আলো।কোনো ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবি না।তুই আসলে আমাকে মা বলে ভাবিসই না।কেন ভাববি?আমি তো তোর নিজের মা না।”
.
আমি দৌড়ে গিয়ে ফুল মাকে জড়িয়ে ধরলাম।বলতে শুরু করলাম,
“সরি,ফুল মা।আমার ভুল হয়ে গেছে।কিন্তু আমি তোমাকে মা ভাবি না,এমন কথা বলো না।আমাকে মাফ করে দাও,ফুল মা।”
.
শুভ্র ভাই ফুল মার কাছে এসে বললেন,
“মা,আলোর কোনো দোষ নেই।আমি যে ওকে ভালোবাসি সেটা আমি ওকে এতোদিন বলি নি।আর এত বছরে কোনো আশার কথা আমি ওকে বলি নি।তাই ও এই বিয়েতে না বলার মতো ভরসা পায় নি,মা।”
.
শুভ্র ভাইয়ের কথা শেষ হতেই ফুল মা উনার গালেও চড় মারলেন।তারপর আমাদের দুজনের হাত ধরে বললেন,
“চল আমার সাথে।”
.
ফুল মা আমাকে আর শুভ্র ভাইকে নিয়ে নিচে নেমে এলেন।নিচে সবাই এনগেজমেন্টের জন্যই অপেক্ষা করছিল।ফুল মা আমাদের দুজনকে সাথে নিয়ে স্বপন সাহেবের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।স্পষ্ট গলায় বললেন,
“আমাদের ক্ষমা করো,বাবা।আমরা এই বিয়েটা দিতে পারবো না।”
.
ফুল বাবা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
“এসব কি বলছ তুমি?”
.
“ঠিকই বলেছি।আলো স্বপনকে বিয়ে করবে না।আলো আর শুভ্র দুজন দুজনকে ভালোবাসে।আমি ওদের বিয়ে দেব।”
.
“কি!শুভ্র আলো একজন আরেকজনকে ভালোবাসে!?”
.
ফুল বাবা বিস্ফারিত চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।আমি কিছুই বলতে পারছি না।মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।শুভ্র ভাই বলে উঠলেন,
“হ্যাঁ,বাবা।আমি আলোকে ভালোবাসি।ওকে আমিই বিয়ে করবো।অন্যকেউ নয়।”
.
ফুল মা স্বপন সাহেবের বাড়ির সবার উদ্দেশ্যে বললেন,
“আপনারা আমাদের মাফ করবেন।কিন্তু আপনাদের ছেলের সাথে আলোর এনগেজমেন্ট হবে না।আপনারা দয়া করে আসুন।”
.
স্বপন সাহেবের বাড়ির লোকরা চলে গেলেন।তবে চুপচাপ যান নি।অনেক ধরণের কথা বলেছেন।এটা কি ধরণের ভদ্রতা,মেয়ের প্রেম আছে সেটা আগে বললেই হতো,আমাদের ডেকে আনার কি দরকার ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।
উনারা চলে যেতেই ফুল বাবা এসে শুভ্র ভাইকে সজোরে থাপ্পড় মারলেন।রাগী গলায় বললেন,
“আগে কেন বললি না?কেন এভাবে রঙ তামাশা করলি?কি লাভ হলো?”
.
ফুল মা থামিয়ে দিয়ে বললেন,
“তুমি থামো তো এখন।পরে তুমি আর আমি দুজন একসাথে শুভ্রকে বকা দেব।তার আগে শুভ্র-আলোর এনগেজমেন্টটা হতে দাও।”
.
ফুল বাবা বললেন,
“না,এখানে কোনো এনগেজমেন্ট হবে না।”
.
শুভ্র ভাই এগিয়ে গিয়ে বললেন,
“বাবা,আমার…”
.
“চুপ একটা কথাও তুমি বলবে না।”
.
আমি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।এসব কি হচ্ছে,আর কি হতে চলেছে,কিছুই আমি বুঝতে পারছি না।মাথার ভেতরটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।
ফুল বাবা চিৎকার করে আজম চাচাকে ডাকলেন,
“আজম,এদিকে এসো।”
.
আজম চাচা এসে ভয়ে ভয়ে বলল,
“কি হইছে ভাইজান?”
.
“তাড়াতাড়ি গিয়ে কাজি ডেকে আনো।আজ শুভ্র আর আলোর বিয়ে হবে।”
.
আজম চাচা হাসিমুখে বললেন,
“এক্ষনি যাইতাছি।”
.
আমার চোখে আবার পানি আসছে।আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।সত্যিই কি শুভ্র ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে?আমি কি স্বপ্ন দেখছি?এখনই ঘুম ভেঙে যাবে না তো?
.
ফুল মা আর দাদীমনি নিজেদের সব গয়না পরিয়ে আমাকে সাজাচ্ছেন।দাদীমনি বললেন,
“যাক,আমাদের আলো তবে আমাদের বাড়িতেই থাকলো।আমাদের বাড়িটা আর অন্ধকার হলো না তবে।”
.
কিছুক্ষণ পর একজন বৃদ্ধ কাজি সাহেব এলেন।বিয়ে পড়ানো শুরু করলেন।আমি কাঁপাকাঁপা গলায় কবুল বললাম।ফুল মা আমাকে আদর করে কপালে চুমু খেলেন।হেসে বললেন,
“এখন থেকে কিন্তু আমি তোর শাশুড়ি।”
.
আমার এখনও মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।বারবার নিজেকেই নিজে চিমটি কাটছি।
.
.
.
.
আমি শুভ্র ভাইয়ের ঘরে বসে আছি।শুভ্র ভাই না,শুভ্রর ঘর।না,শুধু শুভ্রর না।এটা আমারও ঘর এখন।ঘরটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।জানালার ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো আসছে।চাঁদের আলো ঘরের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর শুভ্র এসে আমার সামনে বসলো।আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“তোকে আজ খুব সুন্দর লাগছে,আলো।”
.
আমি মুখ ঘুরিয়ে বললাম,
“যান,আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না আপনি।”
.
“এ আবার কেমন কথা?আজ কথা না বললে আর কবে বলবো?”
.
“আট বছর পর বলবেন।”
.
“কিহ!?”
.
“হ্যাঁ।আপনি আট বছর ধরে আমাকে কষ্ট দিয়েছেন।এখন আমি তার প্রতিশোধ নেব।”
.
শুভ্র হেসে বলল,
“আমি তোকে তখনও ভালোবাসতাম।কিন্তু তোকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম,কারণ তোর বয়স খুব কম ছিল।আমি চাইনি তোর পড়াশোনার কোনো ক্ষতি হোক।”
.
আমি কিছু বললাম না।চুপ করে বসে রইলাম।শুভ্র আবার বলল,
“ভুল হয়ে গেছে,বউ।সবকিছু ভুলে আমরা কি নতুন করে পাশাপাশি পথ চলতে পারি না?”
.
উনার বউ ডাকটা শুনে আমার গায়ে কাঁটা দিলো।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
“শুনেন,পাশাপাশি পথ চলতে চাইলে চলুন।মানা করেছে কে?”
.
শুভ্র এবার মুচকি হেসে আমার পাশে এসে বসলো।আমাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো।আমি লজ্জা পেয়ে উনার বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললাম।মনে হচ্ছে,আমি এই দুনিয়াতে সবচেয়ে সুখী মানুষ।ইশ!পৃথিবীটা কি ভীষণ রকম সুখের!

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here