তুমি আমার অধিকার ( সিজন 2),পার্টঃ1
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
বিয়ে বাড়ির সবার সামনে অন্তীর গালে ঠাস করে চড় মেরে বসলো নিলয় ।
নিলয়ঃ- তুমাকে না বলছিলাম বৃষ্টিতে না ভিজতে, তারপরও কেনো ভিজলে আর ভিজে ঠান্ডা বাধিয়ে ফেলছো । অন্তী আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেলো । আবির নিলয়ের কাছে এসে বললো
– সবার সামনে অন্তীর সাথে এমন রিয়েক্ট না করলোও পারতি তুই । শুধু শুধু তর কথা না শুনার জন্য মেয়েটাকে সবার সামনে চড় দিলি । আবির নিলয়ের দিকে রাগী চেহারা তাকিয়ে বললো তুইইই এখান থেকে যাবি নাকি ??
আবির আর উপায় না দেখে সেখান থেকে চলে গেলো । বিয়ে বাড়ির সব ঝামেলা শেষ করে নিলয় ছাদে আসলো । মেহমান যারা আছে সবাই যার যার মতো করে চলে গেছে । নিরার বাবা মাকে দাওয়াত দিয়েছে তারা এসে খেয়ে চলে গেছে, কারো সাথে দেখা করে নি, দেখা করবে কি করে তার মেয়ে নিরা যা করছে তাতে তারা অনুতপ্ত ।
নিলয় এইদিকের সব কাজ শেষে রুমে এসে দেখে অন্তী রুমে নেই, ছাদে গিয়ে দেখে অন্তী সেখানে আছে । নিলয় তার কাজে খুবই অনুতপ্ত, তার এমন রিয়েক্ট করাটা তখন উচিত হয় নি সে বুজতে পারছে এখন, নিলয় অন্তীর কাছে গিয়ে ।
নিলয়ঃ- হুমমমমমম ( গলা কিছুটা জ্বালিয়ে নিলো সে ) আজকে সূর্যটা কত সুন্দর তাই না ( এটা বলে নিলয় জিহ্বা কামড় দিলো কি বলতে কি বলে ফেললো রাতে কি কখনো সূর্য থাকে নাকি )
অন্তী তো আরো রাগী লুকে নিলয়ের দিকে তাকালো, অন্তীর এমন চাহনিতে নিলয় বত্রিশটা দাত বের করে বৃথা হাসার চেষ্টা করলো । অনেকক্ষণ ধরে যখন নিলয় অন্তীর রাগ ভাঙ্গাতে না পারছে, আর উপায় না পেয়ে সে সেখান থেকে চলে আসতে লাগলো কারণ তার খুব ঘুম পেয়েছে ।
জিবনের প্রথম বাসর রাতেও ঠিক মতো ঘুমাতে পারি নি সে, আজকে আবার জেগে থাকবে এটার কেনো মানে হয় না ।
দু পা এগুতেই অন্তী চিৎকার দিয়ে বলে উঠে আরেক পা আগালে তুমার খবর আছে, আমার রাগ না ভাঙ্গিয়ে তুমি কোথায় যাচ্ছো !!
নিলয় পিছন ফিরে অন্তীর দিকে তাকিয়ে ভিলেন মার্কা একটা হাসি দিয়ে কেনো কথা না বলে অন্তীকে কোলে তুলে নিলো,
অন্তী তো নিলয়ের এমন কান্ড দেখে অবাক,,
এইইইই কি করছো আমায় নামাও কোলে নিলা কেনো হুম আমি কি তোমাকে কোলে নিতে বলছি ।
নিলয়ঃ- আর একটা কথা বললে, সোজা কোল থেকে ফেলে দিবো, তাই চুপচাপ থাকো ।
_অন্তী নিলয়ের এমন কথা শুনে আর কিছু বললো না । সে চুপ করে নিলয়ের কোলে নিলয়ের শেরওয়ানি খামচে ধরলো, নিলয়ের পারফিউম ঘ্রাণটা তাকে মাতাল করে দিচ্ছে । ইসসসস মন চাচ্ছে নিলয়ের সাথে লেপ্টে যেতে ।
এইদিকে বাসর ঘর সাজানো শেষ আবির আর অথৈ মিলে বাসর ঘরটা সাজিয়ে ফেলছে । আজ দুই দিন তাদের দুজনের ওপর অনেক ধকল গেছে নিলয়ের বিয়ের সকল দায়িত্ব তাদের ওপর অপর্ণ হয়েছে ।
আবিরঃ- ওইইইইইই পন্ডিতগুলো আজকে আসুক, সব শুধে আসলে তুলে নিবো । আমি যেমনটা বলবো তুমি তেমন তেমনটা করবে ওকে ।
অথৈঃ- হুম ওকে ঠিক আছে, কিন্তু ওরা আসছে না কেনো ??
_সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই নিলয় দেখে দুই মূর্তিমান দাড়িয়ে আছে!!
নিলয়ঃ- কিরে তোদের এইখানে কি কাজ আমার রুমের সামনে দাড়িয়ে আছিস কেনো এমন ভাবে !!
আবিরঃ- আমাদের সকল কাজ শেষ ভাই আর স্পেশাল ভাবে তর রুমটা সাজিয়ে দিয়েছি আমাদের পাওনা ঘন্টা মিটিয়ে দেয় আমরা চলে যাই ।
নিলয়ঃ- কিসের কাজ আর কিসের পাওনা ঘন্টার কথা বলছিস রে আমি তো কিছুই বুজতাছি না ।
অথৈঃ- দেখ নিলয় নতুন বউয়ের সাথে এমন চিল্লা চিল্লি করিস না, আর এমনিতে বেচারি অন্তী শরমে কুকড়ে যাচ্ছে, আমাদের হিসাব মিটিয়ে দেয় আমরা চলে যাই !!
নিলয় অন্তীকে আরো শক্ত করে ধরে বলে এইইই নতুন হলো কিভাবে, এটাতো আমাদের তাল গাছের শাকচুন্নি মেয়ে কপাল ভালো যে আমার মতো ছেলেকে বর হিসাবে পেয়েছে । আর শুন তরা এখানে ঝামেলা করিস না । আমার ঘুমে ধরছে আর হাত ব্যাথা হয়ে গিয়েছে সর সামনের থেকে ।
আবির আর কিছু না বলে, অথৈ কে বললো
অথৈ যাও তো এই পন্ডিতের পকেটে যা আছে সব নিয়ে নেও আজকে । আর অন্তী তো কোলে আছে, সুতরাং সে কিছুই করতে পারবে না ।
নিলয়ঃ- এইইইই অথৈ সামনে এগুবি না ভালো হবে না কিন্তু!!
কে শুনে কার কথা অথৈ নিলয়ের পকেট থেকে যত টাকা পেয়েছে সব নিয়ে সে আর আবির সেখান থেকে চম্পট দিলো
নিলয় ঘরে এসে অন্তীকে কোল থেকে খাটে ধপাস করে ফেলে দিয়ে বলে, সালারা সুযোগ পেয়ে আমার সর্বনাশটা করেছিস । ওয়েট আমারও সময় আসবে ।
অন্তী খাটে পড়ে চিৎকার দিলো, ওমাগো আমার কোমড়টা বোধ হয় ভেঙ্গে গেলো,
অন্তীঃ- এইইইই তুমি আমাকে এইভাবে ফেলে দিলা কেনো??
নিলয়ঃ- কি করবো মস্ত বড় আটার বস্তা আর কতক্ষণ রাখা যায়….
অন্তীঃ- কি আমি আটার বাস্তা, আর তুমি কি সামন্য টাকার জন্য এমন অফসোস করছো কিপ্টা একটা
নিলয়ঃ- কি আমি কিপ্টা,
অন্তীঃ- হুম কিপ্টা, তুমি বিশ্বের সেরা কিপ্টা ।
নিলয় বলললো, আমি কিপ্টা হলে তুমি কি, তুমি তো বস্তা, মনে হয় আস্ত একটা খড়ের গুদাম হা হা হা
অন্তীঃ- ও তাই বুজি দাড়াও
অন্তী এইবার রাগে নিলয়কে বালিশ দিয়ে মারতে শুরু করলো, নিলয় অনেকক্ষণ মার খেয়ে এইবার অন্তীর ঠোটে তার ঠোট বসিয়ে দিলো অন্তী চোখ বড় বড় করে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো । কিছুক্ষণ পর সেও নিলয়ের স্পর্শে সাড়া দিলো ।
কিছুক্ষণ পর তারা দুজন হারিয়ে গেলো তাদের বাধাহীন অধিকারে যেখানে কেনো বাধা নেই, আছে শুধু অপরিসীম ভালোবাসা ।
.
.
.
এই দিকে কেটে গেলো অনেকটা সময় নিরা আর হ্দয় তাদের সাজা ভোগ করছে । দুজনেই তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ।
প্রতিদিনের রুটিন মতো আজও নিরা কাজ করছে, কারাগারের একজন রক্ষী এসে নিরাকে বললো,
কারারক্ষী:- আপনার নাম কি নিরা ।
নিরা জবাব দিলো, জি কেনো ??
কারা রক্ষীঃ- আপনি আমার সাথে আসুন ।
নিরা কারাগারের অফিসারের সামনে এখন দাড়িয়ে..
অফিসারঃ- তুমার জন্য একটা সুসংবাদ আছে শুনলে তুমি খুশি হবে!!
নিরাঃ- কি স্যার সেটা ।
অফিসার হাসি মুখে বললো আগামি কালকে তুমি মুক্তি পেতে যাচ্ছো .
– নিরা কিছুটা অবাক হয়ে বললো, কি বলেন স্যার সত্যি, আমার সাজা কিভাবে মওকুফ হলো স্যার.!!
অফিসারঃ- এতো কিছু জানতে হবে না তোমার, এখন যাও নিজের জিনিসপত্র ঘুছিয়ে নেও ।
– নিরা খুশিতে এক দৌড়ে তার কক্ষে চলে আসলো,
নিরার এই খুশিতে হ্দয় কিছুটা অবাক হলো, সে নিরাকে জিজ্ঞাসা করতেই নিরা বললো,,
আগামি কালকে সে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ,
হ্দয়ঃ- কিন্তু কিভাবে কে তুমার জন্য সুপারিশ করছে তুমি জানো.
নিরাঃ- এতো কিছু এখন জেনে লাভ নেই, আগে এখান থেকে বের হয়ে নিইইইইই তারপর জানা যাবে ।
এখন বেশি বক বক না করে নিজের চরকায় গিয়ে তেল দেও যাও ।
পরের দিন ,,
নিরার মুক্তির দিন,
চলবে
( কেমন হলো জানাবেন, আর এই গল্পের সিজন 1 কেউ না পড়ে থাকলে পড়ে নিবেন। কারণ সিজন 1 ছাড়া এই গল্প পড়ে আপনি মজা পাবেন না বা কিছুই বুজবেন ।)