তুমিই_আমার_প্রিয়_নেশা💘
পর্ব:2
Suraiya_Aayat
আয়াশ গাড়ি স্টার্ট দিলো, নূরের বুকের মধ্যে ধুকপুকানিটা ধীরে ধীরে কমছে, মানুষটা যতখন ওর কাছে ছিলো ততখন শরীরের হরমোন গুলো যেন বিপরীত পক্রিয়ায় কাজ করতে শুরু করতে শুরু করে দিয়েছিলো ৷ মানুষটাকে ক্রমশ ভয় পাচ্ছে নূর ৷ তার চোখের ভাষা সম্পূর্ণ আলাদা, হালকা বাদামী বর্নের চোখগুলো বড্ড রহস্যময়, যেই রহস্য ভেদ করতে হয়তো নূরের কয়েক যুগ সময় লেগে যাবে ৷ বাইরের দিকে তাকাচ্ছে নূর, গাড়ির ভিতরে ওর পাশে বসে থাকা মানুষটার দিকে তাকাতেই যেন ভয় লাগছে ৷ গভীর রাত বললেও বোধহয় ভুল হবে , প্রায় ভোরের আগমন ঘটেছে, গ্রামের পরিবেশে ভোর হলেই কতো সুন্দর ভাবে মোরগ গুলো তাদের বিরষ কন্ঠস্বর দিয়ে সবাইকে জাগিয়ে তোলে কিন্তু শহরে তেমনটা হওয়ার সুযোগ নেই ৷ পূর্নিমার রাতটা কেটে গেছে, কতো মায়াবী না লাগতো হলুদ মুখে নূরকে , কিন্তু পরিস্থিতির বশবর্তী হয়ে হলুদটা অবধি নিজের শরীরে ছোঁয়াতে পারলো না নূর ৷ ভোরের সময়, এই সময়ে বাইরে যান চলাচলের প্রভাবটা খানিকটা কম ৷ নূর বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, মাঝে মাঝেই নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে ৷ কিভাবে পারলো ওর পরিবার এতো সহজে সবটা মেনে নিয়ে অপরিচিত একজনের হাতে নির্দি্ধায় তুলে দিতে যাকে নূর ঠিকমতো ভালো ভাবেও চেনে না ৷
” আচ্ছা উনি যে বললেন আমি নাকি ওনার সবচেয়ে প্রিয় একটা নেশা, তা ওনার সাথে কি আমার কোন সম্পর্ক কখনো ছিলো যে আমি তার প্রিয় নেশা হয়ে উঠেছি নাকি তার কথার মাধ্যমে তিনি আমাকে কিছুর ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন কোনটা ? কথাগুলো নিজের মনে মনে ভাবছে নূর ৷” নাহ ! আয়াশের প্রতি এই কয়েক ঘন্টার মধ্যে ওর কোন অনুভূতির সৃষ্টি হয়নি যে ও আয়াশকে নিয়ে এতোকিছু ভাববে ৷ শুধুই কি তার চোখের ভাষা পড়ার জন্য কি নূর ওকে নিয়ে ভাবছে ৷
নাহ ! এর উত্তর ও নূরের কাছে নেই , নিজেকে ক্রমশ পাগল পাগল মনে হচ্ছে ৷
অকাশ পাতাল অনেক চিন্তাই নূরের মাথায় আসছে, সেগুলোকে যতই উপেক্ষা করার চেষ্টা করছে ঠিক ততই যেন তা বারবার মনের মধ্যে জেকে বসেছে ৷ ওর এত এতো ভাবনার মাঝে হঠাৎ গাড়িটা থেমে গেল ৷ তাহলে কি ওরা পৌছে গেছে ? আয়াশ গাড়ি থেকে নেমে নূরের দিকের দরজাটা খুলে দিয়ে নূরের হাতটা ধরে নূরের হাতের পাতাতে একটা চুমু দিতেই নূর কেঁপে উঠলো ৷ নূর আয়াশের দিকে নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে গাড়ি থেকে নামলো , আয়াশের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল ” এত অদ্ভুত কেন আপনি ? আপার ব্যাবহারগুলোও বড্ড অস্বাভাবিক ৷”
আয়াশ একটা হাসি দিয়ে বলল ” চমকে গেলে ? ভালোবাসা দিলাম ৷ একটু কষ্ট করে ডায়জেস্ট করে নিও আফু সোনা ৷ কিন্তু এখন হাসো কারন সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে ৷”
নূর আয়াশের কথা শুনে মুহূর্তেই ঘুরে তাকাতেই দেখলো ওদের থেকে কিছুটা দূরত্বে আছে একটা বিরাট গেট, সেখানে মানুষজন হইহই করে যেন উপচে পড়ছে নতুন বউকে দেখার জন্য ৷”
নূর আয়াশের দিকে অবাক চোখে তাকালো ৷ আয়াশ খানিকটা নরম সুরে বলল ” আমার অনেক ছেলে কাজিন আছে, ওদের সাথে বেশি কথা বলবেনা বুঝলে আফু সোনা , নাহলে কিন্তু আমার মকঝে জ্বালাপোড়েন শুরু হয়ে যাবে , এবার চলো ৷” কথাটা বলে আয়াশ নূরের হাত ধরে গেটের কাছে নিয়ে গেল ৷ নূর চুপিসারে চোখটা উচু করে সবাইকে দেখার চেষ্টা করলো ৷ সবাই কতোটা স্বাভাবিক ব্যাবহার করছে, কতো সুন্দর করে হাসছে, কথা বলছে ,নূরের রুপের তারিফ করছে, তাদের চেহারার ভাব ভঙ্গি দেখলে মনেই হবে না যে বর বদল হয়েছে , যে গেট দিয়ে আহান আর নূরের ঢোকার কথা ছিলো সেই গেট দিয়ে আয়াশ আর নূর প্রবেশ করেছে ৷ একটা মধ্যে বয়সী মহিলা নূরকে বরন করলেন,আয়াশ ওনাকে সালাম করে বললেন ” আফু সোনা এটা আমার খালামনি , ওনাকে সালাম করো ৷” নূর হাসিমুখে ওনাকে সালাম দিতেই উনি নূরের কপালে চুমু দিয়ে বললেন ” আমার আপুর অনেক ইচ্ছা ছিলো তাদের ছেলেদের বিয়ে খুব ধুমধাম করে দেবে বৌমাদের বরন করবে , আজ ও যদি বেঁচে থাকতে তাহলে কতোটা না খুশি হতো ৷ কিন্তু সে তো,,,,,” পুরো কথাটুকু বলতে যাবে তার আগেই আয়াশ বলে উঠলো ” এহেম এহেম, এই যে খালামনি আমি আমার বউকে নিয়ে কি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো, আমাদের কি ঢুকতে দিবা না বলে প্ল্যান করেছো ?” উনি আয়াশের কথায় যেন নিজেকে থামিয়ে নিলেন, তারপর বললেন ” আমার একমাত্র বউমা ওকে কেন আমি আটকে রাখবো নাকি! তাড়াতাড়ি ভিতরে এসো ৷” নূর পা বাড়াতে গেলেই আয়াশ ওর হাত ধরে নিলো ৷ নূর অবাক চোখে তাকিয়ে আছে, মনুষটার ওকে এভাবে আটকালো যে ! সবাইকে অবাক করে দিয়ে আয়াশ নূরকে কোলে তুলে নিলো, চারিপাশ থেকে আয়াশের কাজিনরা সিটি বাজাচ্ছে, কেউ কেউ আয়াশকে উৎসাহ দিতে অনেক কথায় বলছে ৷হঠাৎ এমন কিছু হওয়াতে নূর অনেক অবাক হলো সাথে লজ্জাও পাচ্ছে ৷ সবার আগে নূর আর আয়াশ যাচ্ছে, ওদের পিছন পিছন সবাই ৷ আয়াশ নূরকে ফিসফিস করে বলল ” আফু সোনা আমি কিন্তু অনেক রোমান্টিক হু ৷ তুমি তো জানোই ৷” কথাটা বলে নূরের দিকে চোখ মারলো ৷ আয়াশের বলা যেকোন কথা নূরের মাঝে ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট ৷ আয়াশ নূরকে নিয়ে গিয়ে সোফাতে বসালো ৷ নূর মাথা নীচু করে আছে , কাউকে চেনে না, ওর সাথেও কেও আসেনি যে ওকে সাহস জোগাবে ৷ আয়াশ নূরের পাশে বসলো ৷ সবাই এদিক ওদিক থেকে ছবি তুলছে , আয়াশ নূরের হাতটা ধরে নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে নিলো
” আমার থেকে কখনো পালানোর চেষ্টা করবেনা আফু সোনা ওকে ? আমি কিন্তু তোমার সাথেই থকবো তোমার ছায়ার মতো ৷” কথাটা বলে সবার দিকে মনোযোগ দিলো , নূর আয়াশের দিকে তাকিয়ে আছে অপলক ভাবে , তখন আয়াশের একটা কাজিন সেই মুহূর্তের একটা ছবি তুলে বলল ” মামা সেই ভালোবাসা ৷” আয়াশ হেসে ফেলল , নূর আয়াশের হাসির দিকে তাকিয়ে আছে ৷
_____
নূর চলে যেতেই মায়া যেন অদ্ভুত এক শান্তি অনুভব করলো ৷ আর কিছু দিন পরেই ওর আর রেদোয়ানের বিয়ে ৷ রেদোয়ান হলো নূরের একমাত্র ভাই ৷ পরিবার বলতে নূরের আছে কেবল ওর ভাইয়া আর ওর বাবা, নূরের মা নেই ৷ তিনি বহু বছর আগেই মারা গেছেন , ওনার মৃত্যুর পর মায়ার বাবা আর দ্বিতীয় বিয়ে করার কোন ইচ্ছা প্রকাশ করেননি ৷ মায়া আর রেদোয়ান দুজনের লাভ ম্যারেজ , যদিও এতে নূরের পরিবারের কারোর কোন আপতি নেই ৷ নূরের প্রতি মায়ার রাগ আছে যার সূত্রপাত ঘটে নূরের প্রতি রেদোয়ানের ভাই সুলভ অতিরিক্ত ভালোবাসা দেখে ৷ মায়া সবসময় চাই যে রেদোয়ান তাকে বেশি কেয়ার করুক তাকে বেশি ভালোবাসুক , কিন্তু নূরের প্রতি একটা বড়ো ভাই হিসাবে রেদোয়ানের যে এমন ব্যাবহারটা স্বাভাবিক সেটা মায়া বোঝেনা , নূরের প্রতি একপ্রকার হিংসা কাজ করে ওর মাঝে যেটা কেবল ওর মনের মাঝেই আছে, আর তা দিনের পর দিন যেন একপ্রকার আক্রোশে পরিনত হয়েছে ৷ তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নূরের বিয়েটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে মায়া ৷ নূর ছিলো অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের , এত তাড়াতাড়ি ওর বিয়ে দেওয়ার কোন ইচ্ছা নূরের পরিবারের ছিলো না তবুও মায়ার জোরাজুরিতে অনেকটা বাধ্য হয়েছে ৷ সব কিছুর মাজে একটা খুব বড়ো মিল আছে যা হলো নূর বা আয়াশ কারোর মা ই আর জিবীত নেই , এই জিনিসটাতে কাকতালীয় ভাবে অনেক মিল ৷
নূরের বাবা সোফাতে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে ৷ ওনার মুখে চিন্তার ছাপ দেখে নূরের ফুপি বলে উঠলেন “ভাইয়া এতো চিন্তা করতাসো ক্যান ? মাইয়া বিয়া টা না হয় একটু ঝামেলা হইসে কিন্তু ভালো ঘরেই তো মাইয়ার বিয়ে হয়েছে ৷ আর ছেলেটাও তো দেখতে মশাআল্লাহ, তার বড়ো ভাইয়ের থেকে তো অনেক সুন্দর , নূর ও সুখী হইবো দেখো ৷”
নূরের বাবা আরাফাত সাহেব ওনার বোনের এই কথাটা শুনে সেখান থেকে উঠে চলে গেলেন ৷ মনের মতো একপ্রকার দোটানা চলছে এই বিয়ে নিয়ে ৷ ওনাকে চলে যেতে দেখেই নূরের ফুপি মায়াকে বলল
” তোমার শ্বসুর আব্বা বেশি চিন্তা করতাসে , তারা খানদানী পরিবার, নূর ভালো থাকবো অনেক ৷”
মায়া মিথ্যা একটা হাসি দিলো ৷ নূরকে নিয়ে ওর বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই কথা বলার ৷
____
” শোনো ভাবি , এই যে এই ঘরটা দেখছো এটা তোমার ঘর বুঝলে তো ৷ আয়াশ ভাইয়া অনেক প্ল্যান করে এই ঘরটা বানিয়েছে শুনেছি ৷ শোনো এই কথাটা কেউ জানতো না, আমিও জানতাম না কিন্তু একবার কারোর কাছ থেকে যেন শুনেছিলাম এটা ৷”
নূর অবাক চোখে তাকিয়ে অনেক কৌতুহল নিয়ে বললো ” কি শুনেছিলে তুমি?” মেয়েটা তার চারপাশে তাকিয়ে বলল ” এই ঘরের কোথাও নাকি একটা ঘর আছে ৷” নূর না বোঝার ভান করে বলল “ঘরের মাঝেও ঘর কীভাবে থাকবে?” মেয়েটা নিজের মাথায় একটা বাড়ি মেরে বলল ” ধূর , আমিও না কোন কথা বুঝিয়ে বলতে পারি না ৷ ঘরের ভিতর ঘর আছে মানে ভাইয়ার নাকি কোন একটা গোপন ঘর আছে যার কথা কেউ জানে না ৷”
নূর যেন কেঁপে উঠলো কথাটা শুনে , সাধারনত আগেকার দিনে মানুষ নিজেদের সুরক্ষার জন্য গুপ্ত কুঠুরি বানাতো কিন্তু এই সময়ে , এমন একটা যুগে এসেও আয়াশের সেই গুপ্ত কুঠুরির প্রয়োজনীয়তা নূর বুঝলো না ৷ আয়াশরা যথেষ্ট উচ্চবিত্ত মানুষ ৷ পুরো বাড়িটা পুরো একটা ছোটখাটো ভিলার মতো , বাড়ির চারিপাশে সিসি টিভি , সিকিউরিটি গার্ড ও আছেন 3 জন ৷ তার পর ও আয়াশের এমন কার্যকলাপ শুনে নূর চমকে উঠলো ৷ মনের মাঝে কৌতুহল আর চেপে রাখতে না পেরে বলল ” তুমি কি জানো সেই ঘরটা কোথায় ৷” নূরের এমন কথা শুনে মেয়েটা হো হো করে হেসে উঠলো ৷ নূর তার হাসি অনুসরণ করে বলল
” তুমি হাসছো যে ৷” মেয়েটা হাসি থামিয়ে বলল ” আয়াশ ভাইয়ার এই গোপন রুমের কথাটা যে আমি জেনেছি যে সেটাই অনেক ৷ আর বেশি কিছু জানার ইচ্ছা নেই বাবা ৷ তবে আর যাই বলো ভাইয়া কিন্তু অনেক ভালো মনের মানুষ ৷ তোমাকে অনেক ভালোবাসবে দেখো ৷” নূর কথাটা শুনে মাথা নামিয়ে নিলো ৷ আয়াশের এই অদ্ভুত ভাবনা ওর মাথায় চিন্তা হিসাবে ঢুকে গেছে ৷ ওর ভাবনার সুতো কাটিয়ে মেয়েটা বলল ” ভাবী এখন তো প্রায় ভোর হতে চলল, ভাইয়া এক্ষুনি চলে আসবে আমি এখন যাই কেমন ! আর শোনো ভাইয়া আসলে ওই প্লেটে মিষ্টি আছে সেটা তাকে দিও আর তাকে সালাম করো কেমন ৷”
নূর মেয়েটার কথা পরিবর্তে মুচকি হাসলো ৷ মেয়েটা চলে যেতেই হঠাৎ কোন পুরুষালি কন্ঠে নূরের চমকে উঠলো ৷ সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো আহান ৷
আহানকে দেখে নূরের কলিজা কেঁপে উঠলো , মানুষটাকে নিয়ে কতো স্বপ্নই না দেখেছিলো নূর, নিমেষেই মানুষটা তাকে ফিরিয়ে দিলো অন্য কারোর কাছে , নূরের চোখের কোনে জল ৷ আহান নূরকে বলে উঠলো ” মানছি তোমার সাথে যা হয়েছে ঠিক হয়নি, আর আমি বা আয়াশ কেউ ই এমনটা চায়নি ৷ আয়াশ তোমাকে ভালোবাসে ,তোমার আমার বিয়ে ঠিক হওয়ার আগে তোমার অজান্তে আয়াশ তোমার বাবাকে তোমাকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলো কিন্তু উনি মুরব্বি মানুষ, কোন কারন বশত আয়াশকে উনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ৷তারপর আমি বিয়ের প্রস্তাব দিতেই কাকতালীয় ভাবে তোমার বাবা আমাকে মেনে নিলেন যেখানে আমার থেকে আমার ভাই অনেক বেশি গুনের অধিকারী ৷ ভালোবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণাটা অনেক , তাই আয়াশ তোমাকে হারাতে চাইনি , পরিকল্পনা মাফিক তোমাদের বিয়েটা হয় ৷ আজ হয়তো তুমি ওকে মানতে পারছো না কিন্তু একদিন না একদিন তুমি ঠিক ওকে ভালোবাসতে বাধ্য হবে ৷ আয়াশের ধারনা সে হলো তোমার জীবনের একজন ভিলেন কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করি না , কারন যে ভালোবাসতে যানে যে কখনো নেগেটিভিটি নিয়ে ঘুরতে পারে না ৷ শুধু এটুকুই বলবো যাই হোক মানিয়ে নিও, আর ওর ভালোবাসার প্রকাশটা পাথরের বুকে ফুলের মতো বিরল, তাই তোমাকেই তার ভালোবাসা খুঁজে নিতে হবে ৷”
আহান কিছুখন নূরের উত্তরের অপেক্ষা করলো, কিন্তু নূর এতোটাই হতবাক যে কি বলবে ওর মাথায় আসছে না ৷ তাই সেই নিরবতা লক্ষ করে আহান বলল ” পারলে আমাকে ক্ষমা করো ৷”
নূরের চোখ দিয়ে জল পড়ছে , অদ্ভুত ও জীবনের নিয়মকানুন ৷ চোখের জলটা বাধ মানছে না ৷ নূর আয়াশের রুমের দক্ষিন দিকে থাকা ব্যালকনিটায় গিয়ে দাঁড়ালো ,আজ কেমন এক অনুভূতি কাজ করছে যা নূরের জীবনের প্রতি তীব্র বিতৃষ্নাকে প্রকাশ করছে ৷ ভোরের দক্ষিণা বাতাস বইছে বাইরে ৷ নূর ভাবলো সেখান থেকে(ব্যালকনি) ও ঝাঁপ দেবে ৷ রেলিং ধরে দাঁড়াতেই এর সমগ্র পিঠ জুড়ে গরম বাতাস বয়ে গেল আর নেশালো কন্ঠে কেউ বলে উঠলো ” আফু সোনা ৷”
চলবে,,,,