#তরঙ্গিনী পর্ব-৩৬
#আরশিয়া_জান্নাত
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঘুরেফিরে দেখছে রেবা। রেবা মনমরা কন্ঠে বলল, আরাফ দেখুন না আমি কত মোটা হয়ে গেছি,, পেটটাও অনেক বড় হয়ে গেছে!
আরাফ ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলল, এটাই তো মাতৃত্বের সৌন্দর্য, মন খারাপ করছেন কেন বলুন তো?
ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন না, আমি কনসিভ করার পর থেকে অতিরিক্ত খাচ্ছি। আমার ভাবী বা আপারা খেতেই পারতোনা। অথচ আমি!!
এভাবে বলছেন কেন? সবার তো এক হয় না। আপনি খেতে পারছেন এটা খারাপ নয় বরং ভালো। পেট খালি থাকলে বাচ্চা বড় হয়ে যায়। ভরাপেটে থাকলে পারফেক্ট থাকে। এজন্য অল্প করে হলেও একটু পর পর খাওয়া উচিত, পেট যেন খালি না থাকে।
কিন্তু এই যে মোটু হচ্ছি আপনি তো পরে আর ভালোবাসবেন না। এমনিতেই আফটার প্রেগন্যান্সি টার্মে বৌকে পছন্দ হয় না। তখন মানুষের মন অন্যদিকে যায়।
আরাফ উঠে এসে রেবার সামনে দাঁড়ালো। ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল, রেবা! সবসময় নেগেটিভ কেন ভাবেন বলুন তো? মানছি আমাদের চারপাশে অনেক বিভৎস ঘটনা আছে, সমাজে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে, ঘটবে। তবে সেসবকে সবসময় হাইলাইট করা কি উচিত? দেখুন মানুষ এখন বিয়ে বিদ্বেষী হয়ে গেছে। মেয়েরা ভাবছে বিয়ে মানেই শাশুড়ির অত্যাচার,স্বামীর পরকীয়া। শ্বশুড়বাড়ির লোকেদের খোঁচা,অশান্তি। সব মিলিয়ে তারা এতোটাই আতঙ্কিত ভালোবাসা বলেও যে একটা সুন্দর জিনিস আছে সেটা ভুলতে বসেছে। বিয়ে মতো একটা পবিত্র বন্ধনকে অনেকেই আজকাল শেকলের মতো দেখছে। আবার ছেলেদের কথাও যদি বলতে যান, ওরাও ভয়ে থাকে। এভাবে কার লাভ হচ্ছে বলুন তো?
লাভ হচ্ছে কিভাবে? বরং লসই,,,
নাহ এখানে অবশ্যই লাভ হচ্ছে। সেটা হলো শয়তানের! বিয়ে যেখানে কঠিন ব্যভিচার সেখানে সহজ। এখন প্রেম করা সহজ বিয়ে করা না। মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারে কিন্তু সম্পর্কের নাম দিতে ভয় পায়। কেননা বিয়ে হচ্ছে একটা দায়িত্ব। সেখানে যেমন একে অপরের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হয়, তেমনি একে অপরের প্রতি যত্নশীল হতে হয়, ভালোমন্দ খেয়াল রাখতে হয়।এই দায়বদ্ধতাগুলো কিন্তু বিয়ের বাইরের সম্পর্কে থাকেনা। ঐসব সম্পর্কে চাইলেই কৈফিয়ত ছাড়াই ব্রেকাপ করা যায়। তবে বিয়ে বললে মাত্র ভাঙা যায় না। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো বিয়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করাই শ্রেয়। পজিটিভ ঘটনাগুলো হাইলাইট করা উচিত। এতে যারা ভালোবাসতে জানেনা, যত্ন করতে জানেনা তারাও শিখতে পারবে। একটা কথা কি জানেন আমাদের অবচেতন মন পারিপার্শ্বিক ঘটনা দ্বারা খুব সহজেই প্রভাবিত হয়। ধরুন একজন সবসময় দেখে বা শুনে বৌকে নির্যাতন করা হচ্ছে, স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রী পরকীয়া করছে। বা এমন অনেক অসামাজিক ঘটনা যা একটা সময় কল্পনাতীত ছিল। এতে কি হয় জানেন? ঐ মানুষটাও এরকম চিন্তাধারায় অভ্যস্ত হয় এবং পরবর্তীতে তার কর্মকান্ডে সেটা ফুটে উঠে। কিন্তু এখানে যদি বিপরীত ঘটতো কি হতো বলুন তো? এখন আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ অবক্ষয়ের আরেকটা কারণ হলো এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়া। তাই আমি মনে করি পজিটিভ গল্প ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। দেখানো উচিত ভালোবাসারা এখনো মরে যায়নি। এখনো অনেক মানুষ আছে যারা ভীষণ ভাবে ভালোবাসতে পারে, এমন অনেক পরিবার আছে যারা একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকছে। জানি সংখ্যাটা কম তবে নেই তেমন নয়। আপনি সবসময় এটা ভাবেন আপনার থেকে আমার মন উঠে যাবে, অথচ আপনি এটা ভাবেন না আপনার আশেপাশে এমনো কাপল আছে যারা বেবি হবার পর স্ত্রীকে আরো বেশি ভালোবাসতে শুরু করেছে। এর কারণ কিন্তু এটাই, মাইন্ডে নেগেটিভ গল্প গেঁথে থাকা! আমরা এমনিতেই নেগেটিভ জিনিসে বেশি এট্রাকড হই!
হুহ আপনার উচিত ছিল যুক্তিবিদ্যায় পড়া। কত দর্শনতত্ত্ব আপনার!
হাহা,, তেমন নয় রেবা। আপনি নিজের কথাই ভাবুন না। আমি আপনাকে কত ভালোবাসি, আপনি আমার সন্তানকে নিজের মাঝে ধারণ করেছেন, এজন্য আমি কত কৃতজ্ঞ আপনার প্রতি এটা জানেন। এসব জেনেও কিন্তু আপনি ইনসিকিওর ফীল করছেন। এবার ভাবুন যাদের হাজবেন্ড মনের কথা প্রকাশ করেনা, বা দেখায় না যদিও কেয়ার ঠিকই করে। তারা কতটা ইনসিকিওর ফীল করে? মেয়েদের এই সময়ে অনেক হরমোনাল তারতম্য ঘটে, ফলে মন সবসময় বিক্ষিপ্ত থাকে, ভীত থাকে। কত চিন্তা জাগে। শরীর মন ভালো থাকেনা। এসব কিন্তু অনেক ছেলেই জানেনা বুঝেনা। ফলে আরেকটা দূরত্ব তৈরি হয়। সব মিলিয়ে এই সময়টা অনেক জটিল হয়ে যায়। তবে এখন মানুষ সচেতন হচ্ছে। ওয়াইফের প্রতি কনসার্ন হচ্ছে।
সুদিনের স্বপ্ন দেখতে দোষ কি??
রেবা আরাফের গলা জড়িয়ে গালে চুমু দিয়ে বলল, আপনি ভীষণ ভালো আরাফ। আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি!
আরাফ রেবাকে বুকে টেনে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, আপনি একদম দুঃশ্চিন্তা করবেন না, আপনি যেমনই হন না কেন আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমবেনা। আপনি আমার কাছে সবসময়ই অনিন্দ্য সুন্দর। আর এখন তো কয়েকগুণ বেশি সুন্দর! আমার সন্তানের মা অসুন্দর হতেই পারেনা,
সবাই যদি আপনার মতো ভাবতো জীবন অনেক সহজ হতো,,
ভাবছেনা কে বললো? আগে না ভাবলেও এখন থেকে অনেকেই ভাববে,,, আর ভাববার জন্যই আমি দৃষ্টান্ত রেখে যাবো সবার মাঝে। রেবা আর আরাফের গল্প সবাই পড়বে, সবাই জানবে। সূর্যাস্ত কি প্রমাণ নয় শেষটা সুন্দর হয়?
জ্বি জ্বি শেষটাও ভীষণ সুন্দর হয় আমার সান লাভার বর!
আর আপনি আমার তরঙ্গিনী বৌ! আপনার প্রান্তে সূর্যাস্ত যে আরো ভীষণ মায়াময়।
তাই বুঝি?
জ্বি ম্যাডাম। এই রেবা একটা মনের কথা বলি? আপনাকে না এমন নাদুস নুদুস হওয়ায় জড়িয়ে ধরতে আরো বেশি আরাম লাগে। মনে হয় সফট টেডি ডল জড়িয়ে ধরেছি।
কি বললেন আমি টেডি ডল??
আয়হায় রাগ করছেন কেন! আমি তো আমার লাভের কথা বললাম। বাঙালী মেয়েরা একটু গলুমলু হবে, দেখতে আদর আদর লাগবে। জড়িয়ে ধরতে আরাম লাগবে, এটাই তো তাদের বিশেষত্ব!
হয়েছে আর মাখন দিতে হবে না। কথায় আপনার সঙ্গে পারার সাধ্য আমার নেই। দেখি ছাড়ুন,
এই রেবা এই!
কি?
ভালোবাসি তো সত্যি!
আমি বলেছি নাকি মিথ্যা?
তো রাগ করেন কেন হুম?
রাগ করিনি তো,
তবে ছেড়ে দিলেন যে?
ক্ষিধে পেয়েছে, কিছু খাবো,,
আমায় বললেই হতো। দাঁড়ান আমি দিচ্ছি।
রেবা টেবিলে পা ঝুলিয়ে বসলো, আর আরাফ যত্ন করে আইসক্রিম খাইয়ে দিতে লাগলো।
।
।
ইরফাজ দৌড়ে এসে হাঁপাতে লাগলো, রুহি রাগ করে অন্যদিকে ফিরে রইলো। ইরফাজের দিকে ভুলেও তাকালো না।
ইরফাজ জোরে জোরে শ্বাস ফেলে কানে ধরে বলল,আ’ম এক্সট্রেমলি স্যরি ম্যাম! আসলে শেষ মুহূর্তে একটা জরুরি কাজ পড়ে গিয়েছিল তাই বের হতে লেট হয়ে গেছে,,
একদম বাহানা দিবে না, সবসময় এরকম বলো।
মিথ্যে বলছি না সত্যি! তোমার বোঝা উচিত আমি যে জবে আছি এখানে নাওয়া খাওয়ার ফুরসত থাকে না। যখনই কল আসবে আমাদের তখনই বের হয়ে যেতে হয়।
সেজন্যই ডিফেন্সের লোক আমার এতো অপছন্দ। ছোট ফুপ্পী ঠিকই বলে নিন্দে ফুল পিন্দে বেশি। নয়তো আঠারো কোটি মানুষের মধ্যে তোমাকেই কেন মনে ধরতে গেল!
এটাকে বলে ভাগ্য বুঝলে, তুমিতো চলে যাচ্ছিলে অস্ট্রেলিয়া,,, ভাগ্য আমার সাথে ছিল বলেই দেশেই রয়ে গেলে।
ঢং আর কি!
মোটেই না ম্যাম।
আমিতো ভাবছি তুমি বিয়ের অনুষ্ঠানে বসতে পারবে কি না। নাকি কবুল বলার আগেই বলবে ওয়েট প্লিজ আমার এখুনি যেতে হবে! এমন যদি করো না বলে দিচ্ছি বিয়ে আর হবে না,,,
আরেহ না তেমন হবেনা। বিয়ের দিন সকালে সব ডিউটি শেষ করে আসবো।
মানে? তুমি বিয়ের আগেরদিনো ডিউটিতে থাকবে?
নাহ সেটা নয়,
হয়েছে থাক আর বলতে হবেনা। চলো কোথাও বসি।
মা জিজ্ঞাসা করছিল তোমার বিয়ের লেহেঙ্গা পছন্দ হয়েছে কি না,,
সুন্দর তো। পছন্দ হবেনা কেন?
তুমি শপিংএ আসোনি তো তাই এমন খচখচানি। গেলে না কেন বলোতো?
বিয়ের শাড়ি গয়না নিজে দেখেশুনে নিলে আর এক্সাইটমেন্ট কাজ করেনা। ঐটা সারপ্রাইজ হিসেবে পেতেই যাইনি।
আচ্ছা! তুমি না অনেক আলাদা আর সেজন্যই তোমাকে এতো ভালো লাগে,,
সিরিয়াসলি?
হুম।
আচ্ছা হানিমুনে কোথায় যাবে?
তোমার পছন্দের সমুদ্রতটে!
যাক বাবা মনে রেখেছ তাহলে! আমিতো ভেবেছি বলবে সময় হবেনা,,
ইরফাজ মাথা চুলকে বলল, এতোটাও বিজি আমি নই।
রুহি হেসে বলল, তাই নাকি?
হুম
🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸
পরিশিষ্ট: আরাফ চুপিচুপি পা টিপে টিপে বেডরুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো। রেবা পেছনে না ফিরেই বললো, খবরদার কাছে আসবেন না। এখন আদর দেখিয়ে বুঝ দিতে হবে না। আপনার কোনো অজুহাত শুনবো না আমি।
আরাফ মুখ ভার করে বলল, রেবা শুনুন তো, আমার সত্যিই কোনো দোষ নেই, সব দোষ ট্রাফিক পুলিশের। ওনারা ঠিকঠাক জ্যাম ক্লিয়ার করতে পারেনা বলেই তো আমার লেট হলো।
রেবা কোমড়ে হাত রেখে রাগী গলায় বলল, আপনি কি আজ নতুন ঢাকা শহরে? জানেন না পথে দেরী হয় আগে বের হননি কেন?
আহা আমার বৌটা, রেগে এমন আগুন হলে চলে? ২০মিটার দূরে থেকেও আমি পুড়ে যাচ্ছি তো সোনা, একটু ঠান্ডা হন না।
ঢং যত!
এমন সময় তাদের মেয়ে আরান্তিকা এসে গাল ফুলিয়ে বলল, বাবাই তুমি আমার ডাক শুনলে না কেন? আমাকে না নিয়ে চলে এসেছ! তোমার সাথে আমার কাট্টি।
আরাফ তাকে কোলে তুলে আদুরে গলায় বলল, আম্মাজান এখন আপনিও আপনার ছেলের উপর রাগ করবেন? আমি একলা বেচারা জান কয়জনের রাগ সামলাই বলুনতো?
আরান্তিকা ওর বাবার গালে চুমু দিয়ে চুলে হাত বুলিয়ে বলল, আমি রাগ করিনি বাবা, তুমি মন খারাপ করো না। মাম্মা বুঝি রাগ করেছে? এই মাম্মা এদিকে আসো তো। আমি তোমার মাথায় ফু দিয়ে দেই, দেখবে সব রাগ ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবে, ফুসসসস হয়ে আকাশে চলে যাবেগা।
আরান্তিকা উপরের দিকে চেয়ে হাতের ইশারায় যেভাবে বলল তার আদুরে ভাবভঙ্গি দেখে রেবা হেসে বলল ফুসস হয়ে আকাশে যাবেগা? ওরে আমার টুনটুনি ময়না পাখিটা। কোথা থেকে শিখিস এসব বলতো?
আরাফ দম ছেড়ে বলল, যাক বাবা ম্যাডামের মুখে হাসি ফুটেছে।
এসব বললে হবেনা, আমাদের মা-মেয়েকে নিয়ে এখন বেড়াতে যেতে হবে। তবেই রাগ পড়বে।
হু বাবাই আমরা অনেক মজা খাবো, আর লালু ঘোড়ায় চড়বো,,
যথা আজ্ঞা।
ইয়েএএ, আমি যাই দাদুকে বলে আসি আমরা বেড়াতে যাবো।
আরান্তিকা খুশিতে গদগদ হয়ে বেরিয়ে গেল, আরাফ রেবার হাত ধরে বলল, উহু কি গরম রে বাবা। এখনো রাগ পড়েনি?
রেবা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিকঠাক করে বলল, মেয়ের জন্য বেঁচে গেছেন আজ। নয়তো খবর ছিল আপনার।
আরাফ রেবাকে পেছন থেকে জড়িয়ে কাঁধে গভীর করে চুমু একে বলল, আপনার প্রেম উত্তাপে কি কম ভষ্মীভূত আমি? রাগের ছটা দেখাতে হবে আর?
রেবা ওর বুকে হেলান দিয়ে গাঢ় স্বরে বলল, বশীভূত করার কায়দা ভালোই জানেন, রাগের ছটা দেখানোর সুযোগ আর পেলাম কই?
আরাফ ওর মাথায় মাথা ঠেকিয়ে বলল,আমাদের ভালোবাসার দশক পূর্ণ হলো আজ তাই না?
হুম। আমাদের ভালোবাসাময়ী দশ বছর!
রেবা!
জ্বি
ভালোবাসি,,
আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি,,
আমিও তোমাদের দুজনকে এত্তোগুলা ভালোবাসি!!!
আরান্তিকার কথা শুনে দুজনেই হাসতে লাগলো।
রেবার মনে হলো, কিছু অপ্রাপ্তি ছিল বলেই জীবনটা অসম্ভব সুন্দর! ভাগ্যিস সেদিন বিরহের দহনে মরে যাইনি,,,
@সমাপ্ত
(আস্সালামু আলাইকুম, সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য ধরে গল্পটা পড়ার জন্য। এই গল্পটার ১ম পর্ব লেখার সময় ভাবিনি এটার জন্য আপনাদের এতো ভালোবাসা পাবো। গল্পটা কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। ভুলত্রুটি ক্ষমাপ্রার্থনা। আবারো দেখা হবে অন্য কোনো গল্পে। ততোদিন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আমার জন্য দোয়া রাখবেন। Happy Reading💙)