তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_১০

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১০

.
🍁
রিদ খাঁনকে থেকে বাঁচার জন্য তখন পালিয়ে এসে ভার্সিটির হল রুমের টেবিলের ওপর পা ঝুলিয়ে বসে পরি আমি, আপতত কিছু করার না থাকলেও চুপচাপ বসে থাকতে পারছি না আমি, তাই আমার ভাঙ্গা গলায় সতেজতা সাথে দুইপা দুলাতে দুলাতে একহাত কানে রেখে অন্য হাত সোজা সামনে দিকে বাড়িয়ে উচ্চ স্বরে গান ধরে বসি,,,,

.
—” অহহহ সবুরররর কনে গেল তোর গরুর বাছুর,,,
অহহহ সবুর কই গেল তোর বাছুর বাছুর,,,, অহহহহ সবুর অহ সবুররররর

.
চোখ বন্ধ রেখে নিজের মতো করে আমার ফেবারিট গানটা গাই ছিলাম আমি, তখনি বেশ কিছু পায়ের আর গুনগুনের শব্দ কানে আসতেই ঝটপট করে একটা চোখ খুলে তাকায় আমি,,,

এক চোখ খোলার সাথে সাথে চোখের সামনে যা দেখলাম তাতে আশ্চর্য হয়ে আমি দ্বিতীয় চোখ খুলে ফেললাম সাথে সাথেই, দুই চোখ বড় বড় করে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলাম আবাক হয়ে,, কারণ আমার সামনে একঝাঁক ভার্সিটির স্টুডেন্টরা দাঁড়িয়ে আছে, সবাই বোকা ফেস করে গোল গোল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমার গান শুনছে বেশ মনোযোগ সহকারে, কিন্তু আমার ওদের সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে বেশ জোর চালাচ্ছে মনোযোগী হওয়ার আমার গানে কিন্তুু সফলতা অর্জন করতে পারছে না কেউ, বারবার মনোযোগ হারিয়ে হেঁসে ফেলছে থেমে থেমে,

.

আমি সবাইকে আমার গান শুনতে দেখে খুশিতে মনটা নেচে উঠলো মূহুর্তেই আল্লাহ সবাই আমার গান এতো পছন্দ করছে যে হল রুমে ভির লেগে গেছে মূহুর্তেই, ইশশশ আমি তো ফেমাস পারসোন, আহা সাথে আমি এখন বিশিষ্ট শিল্পী হয়ে গেছি, সবাই আমাকে এখন দেখলেই বলবে ঐ দেখ আমাদের সেরা শিল্পী মায়া রানী যাচ্ছে,, আহা আমার কি আনন্দ। এই আনন্দের রেশ ধরেই মনে মনে আওরাতে থাকি “এখন আমি বিশিষ্ট বড় মাপের শিল্পী হয়ে গেছি তাই আমার উচিত আরও বেশি বেশি করে গান গাওয়া আর সবার মন বেশি বেশি করে জয় করা ঠিক আজকের মতোই,,, গান গাওয়া বিষয়টি মাথায় আসতেই খুশিতে চকচক করে উঠলো আমার চোখ মুখ, আমি খানিকটা নড়েচড়ে ওঠে আবারও আগের নেয় বসে গান গাওয়ার প্রস্তুুতি নিচ্ছি,,

.
নিজেকে বড় মাপের শিল্পী ভাবতেই চোখে সামনে কত শত দৃশ্য ভেসে আসছে আহা আমি সবাইকে অটোগ্রাফ দিচ্ছে, আমাকে সবাই ম্যাম ম্যাম বলে পিছন পিছন ঘুরছে, সাথে রিদ খাঁনও আমার একটা অটোগ্রাফের জন্য পিছন পিছন ঘুরে বেড়াচ্ছি আর আমি তাকে পাত্তাই দিচ্ছে না, রিদ খাঁন এনিয়ে বিনেয়ে কান্না করতে করতে আমাকে বলছে

.
—” প্লিজ ম্যাম আমাকে একটা অটোগ্রাফ দিন শুধু একটা,, (হাত জোর করে)

.
রিদ খানের এমন অবনতি দেখে সাথে সাথে ফিক করে হেঁসে উঠি আমি, সাথে নিজেকে মহারানী আর রিদ খাঁনকে অসহায় ব্যাচারা টাইপ প্রজা মনে হচ্ছে আমার, নিজের এমন ভাবনা চিন্তা মাঝেই হঠাৎ করেই কিছু একটা শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠে ঝটপট চোখ খুলে সামনে তাকায় আমি,

.
সামনে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ নামক আমার প্রজাবাসিকে, উনাকে নিজের সামনে চেয়ার টেনে বসে থাকতে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে আসে আমার, রিদ নামক ভয়ানক প্যারাবাসিকে ভালো করে পযবেক্ষন করার পর চমকে উঠলাম আমি, আহা এই বুঝি আমার সাজানো গোছানো স্বপ্নটা ঝনঝন শব্দ করে ভেঙ্গে গুলিয়ে গেলে মূহুর্তেই, এতক্ষণ স্বপ্নে নিজেকে মহারানী আর রিদ খাঁনকে আমার প্রজাবাসি ভেবে যে আনন্দে বিমোহিত হচ্ছিলাম আমি আর সেটা মূহুর্তেই শেষ হয়ে গেল এই প্যারাবাসির জন্য, কারণ এখন নিজেকে রিদ খাঁনের প্রজাবাসি আর উনাকে আমার রাজাবাসি মনে হচ্ছে 😭,,

.

নিজের অবস্থান বুঝতে পেরে আমার এখন উনার সামনে ফ্লোরে গরিয়ে গরিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে করছে আমার, অনেক স্বাদের স্বপ্নটা এইভাবে ভাঙ্গে দিল কেমনটা লাগে বলুন তো, একদিন আমার স্বপ্নে প্রজাবাসি হয়ে থাকতে পারলো না এই লোকটা, কি আর উন্নতি করবে এই লোকটা, দিনে দুপুরে মানুষের স্বপ্ন ভেঙ্গে বেড়ায় স্বপ্ন চোর কোথাকার একটা , জীবনও উন্নতি করতে পারবে না লোকটার বলে দিলাম হুহহহহ,,,

.

আমার এমন চিন্তা ভাবনার মাঝেই সামনের থেকে উনি ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠেন,,,,

.
—” কি ভাবনার রানী, চিন্তা ভাবনার করা শেষ নাকি আরও বাকি আছে,

.

উনার এমন কথা মনোযোগ ভস্ম হলো আমার, আমি কপাল কুঁচকে উনার দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল চেয়ারে ওপর পায়ে ওপর পা তুলে আরাম করে বসে আছে আর শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমাকে এই কথা গুলো বলেছেন, উনাকে আমার সামনে এমন করে বসে থাকতে দেখে, আমি চোখ ছোট ছোট করে কপাল কুচকে ওনাকে ভালো করে দেখার পরে কি হচ্ছে এখানে বুঝার জন্য উনাকে এক পলক দেখে চারপাশে চোখ বুলায় আমি,

.
সাথে সাথে চোখ পড়ল জনশূন্য হীন পরিবেশ এতক্ষন মানুষের ভির ছিল এই স্থানে আমার গান শুনার জন্য, কিন্তুু এখন পরিবেশটি মানবহীন শূন্যতে অবস্থান করছে, চোখে সামনে কাউকে দেখতে না পেয়ে এক ঝুলি কষ্ট ভর করলো মূহুর্তেই আমার মধ্যে, আমি সেই কষ্টের ঝুঁলি বয়ে নিয়ে কাদু কাদু হয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় ভয়ানক ভিলেন রিদ খাঁনের দিকে, আমি জানি এই কাজটা এই প্যারাবাসি করেছে, উনি সবাইকে তাড়িয়ে দিয়েছেন যাতে আমার গান কেউ শুনতে না পারে, আসলে আমি শিল্পী হয়ে যাচ্ছিলাম তো তাই সেটা উনার সয্য হয়নি তাই উনি সবাইকে তাড়িয়ে দিয়েছেন,

.
এই লোক আমাকে কখনোই উন্নতি করতে দিবে না, আসলে এই লোকের জ্বলে আমাকে ফেমাস পারসোন হতে দেখে,, আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝেই আবারও উনি (রিদ) বলে উঠেন,,,

.
—” কি, ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছিলে কেন,, (দাঁতে দাঁত চেপে)

.
উনার এমন কথা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি রাগে দুঃখের ভেসে যাচ্ছি আমি, আর সেই ভাসা অবস্থায় খানিকটা রেগে উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠি,,,,,

.
—” জ্বলে

—” জ্বলে মানে..?ভ্রুঁ কুঁচকে

.
কত বড় মাপের গুন্ডা উনি ভাবা যায় একতো আমাকে শিল্পী হওয়ার থেকে আটকাচ্ছেন তার ওপর আবার এমন একটা ভাব করছেন যেন কিছুই বুঝতে পারছে না উনি, আমি ওনাকে এমন ভাব ধরে বসে থাকতে দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলাম আমি, আর সেই রাগের রেশ ধরেই কপাট রাগ নিয়ে বলে ওঠি,,,

.
—” আসলে আপনার জ্বলে আপনি আমার উন্নতিটা দেখতে পারেন না,,

.
আমার এমন কথায় কপাল কুচকে এলো উনার আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে,,,

.
—” সেই তোমার উন্নতিটা বাছুর বাছুর বলেই হবে,,

.
—” ঐটা বাছুর ছিল না আমার ফেবারিট গান ছিল
.

—” ওহ তোমার ফেবারিট গান তো তোমার মতোই হবে, বাছুর সাথে বাছুরের আম্মু গান থাকলে সেটাও গাইতে তাহলে পুরো ভার্সিটির পাবলিক ভির জমাতো দরজায় তোমার ইউনিক শুনার জন্য,,, (টল করে)

.
—” ষাঁড়ের গান নেই তো থাকলে গাইতাম, আর আপনি আমার স্রোতাদেও বেড় করে দিয়েছেন কেন হুমমম,,,

.
—” তাই তোমার মনে হচ্ছে ওরা তোমার গান শুনার জন্য ভির জমিয়ে ছিল, ওরা তোমাকে দিয়ে মজা করছিল, আর আমি এখানে এসেছি কিছু হিসাব নিকাশ করতে তোমার সাথে, তোমার কিছু পাওনা বাকি আছে সেটা পোষাতে আসলাম, তোমাকে তোহ আর এমনি এমনি ছেড়ে দিতে পারছি না আমি বেশ কিছু অংক মিলাতে হবে তোমার সাথে, আমি কিন্তুু অংকে বেশ ভালো ছিলাম তাই তোমার অংকটা কষতে চলে আসছি,,,, (তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে)

.
কথা গুলো বলেই উনি আমার দিকে নিজে দৃষ্টি স্থির রেখে নিজের একহাত বাড়িয়ে দিতেই পাশ থেকে আসিফ একটা বন্দুক তুলে দেয় উনার হাতে,,,,,

.

(দ্বিতীয় পার্টটা লিখছি আমি ঘন্টাখানিকে মধ্যে পেয়ে যাবে আপিরা)

.

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here