তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_০৭

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_০৭

.
🍁
চেয়ার ঘাপটি মেরে বসে আছি আমি, আর আমার সামনে বসে আছে উনি মানে দ্যা ভিলেন অফ রিদ খাঁন, ভিলেন বললেও কম হবে ব্যাটা যা ব্যাপাটে লোক,, উনি আমার সামনে গম্ভীর মুখে বসে আছে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমি উনার এমন দৃষ্টির মানের আপাতত বুঝে উঠে পারছি না, তবে উনাকে দেখার মনে হচ্ছে উনি আমাকে নিয়ে খুবই বিরক্ত, আর উনার এই বিরক্তিতা প্রকাশ পাচ্ছে উনার সুন্দর চেহারায়, বিরক্তি রেশ ধরে সেই কখন থেকে আমাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখেই চলছে,,,

.

তখন কাজি ও উকিল দুটোকে নিয়ে যাওয়ার পর পরই উনি এসে আমার সামনে চেয়ার টেনে বসে পরে, আর সেই তখন থেকে বসে বসে আমাকে দেখেই চলছে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে, এমন একটা ভাব যেন এই মূহুর্তে আমার একটা মূর্তি বানাবেন উনি ঠিকঠাক ভাবে না দেখলে কিছু একটা মিস হয়ে যাবে হুহহহ,

.
আর আমি,,? আমার ঠেকা পরছে উনার এমন দৃষ্টি পযবেক্ষন করতে, তাই আমি নিজের মতো করে চেয়ার ওপর দুই পা ভাজ করে চেয়ারটায় গা এলিয়ে দিয়ে একহাত গালে রেখে বেশ মনোযোগ সহকারে অন্য হাতের নক গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি, মাঝে মাঝে আরচোখে উনাকে দেখছি, ব্যাটার দিক পরিবর্তন হলো কিনা দেখার জন্য, কিন্তু বরাবরই উনার কোনো হেলদোল নেই, তাই নিজের কাজে বেশ মনোযোগ হলাম আমি এমন একটা ভাব যেন আমার চোখের সামনে আমার হাতের নক ছাড়া অন্য কিছুই দেখতে পারছি না আমি,,, আমি উনার এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে নিজের হাতের নক দেখতে দেখতে বলে উঠি…….

.
—” ইশশশ, আমার হাতে নক গুলা কি সুন্দর প্রেমে পড়ার টাইপ, আমার পঞ্চ বান্ধবীরা তো সেই ক্রাশ খেয়েছে আমার নকের ওপর, ইশশ এতো সুন্দর নক কিভাবে হয় মানুষের, আল্লাহ আমি তো ফিদা হয়ে গেলাম আমার নকের ওপর,,

.

কথা গুলো বলেই আবারও আরচোখে উনাকে উনার দিকে তাকায় উনি আমার দিকে এবার কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে, আমার ওপর বিরক্তিটা যেন উনার চোখ মুখে এবার গড়াগড়ি খাচ্ছে, আমি এবারও উনাকে এক পলক দেখের নিয়ে নিজের মতো করে বলে উঠি,,

.
—” ইশশশ, আমার দামি দামি পা দুটো কি সুন্দররর, আরেহ আমি তো দেখিনি আমার পায়ে নক গুলোও কি সুন্দররররররররর,,

.

বলেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম বেশ মনোযোগ সহকারে এমন একটা ভাব যেন পার্লার বসে আছি আমি,, এবার আমি আরও কিছু বলতে যাব তার আগেই উনি আমার সামনে থেকে দাঁতে দাঁত চেপে আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে………

.
—” জাস্ট শাট আপ, তুমি কি জন্ম থেকেই তার ছেঁড়া টাইপ, নাকি কোনো এক্সিডেন্টের ফল,,,

.
—” তার ছেঁড়া টাইপ মানে,,,?( তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে)

.
—” মানে তুমি কি জন্ম সূত্রই এমন,,,( দাঁতে দাঁত চেপে)

.
—” কেন কোনো সন্দেহ আছে নাকি আপনার,,,, (উল্টো প্রশ্ন করে)

.

—” unbelievable,,, আমার তোমাকে চার ঘন্টা সয্য করতে জান যায় যায় অবস্থা, তোমার ফ্যামেলি তোমাকে এতো বছর টলরেড করছে কিভাবে,,, (অবিশ্বাস গলায়)

.
—” এই আপনি কি আমাকে কোনো রকম ভাবে অপমান করছেন নাতো, আমাকে তার ছেঁড়া বলে হুমম,,,, (ভ্রু কুঁচকে)

.
—” কোনো সন্দেহ আছে,,,, (স্বাভাবিক ভাবেই)

—” আমি পাগল,,,

—” আমি জানি তুমি পাগল, আমাকে আর বলতে হবে না,,

.

—” আরে নাহহহহ, আমি বলতে চাচ্ছি, আপনি বলতে চাচ্ছেন আমি পাগল,,,?

.
—” কেন তুমি নও,,,
.

—” নাহ একদমই না, আমি পাগল না,
.

—” তাই, পাগলরা সবসময় এই কথাটা বলে আমি পাগল না,,
.

উনার এমন কথায় কনফিউজড হয়ে বলে উঠে,,,
.

—” সত্যি, তাহলে আমি পাগল,,
.

—” আমি তো সেটাই বলছি তুমি পাগল,,,
.
.
উনি আমাকে বারবার পাগল বলায় খানিকটা রেগে যায় আমি, তাই কপাট রাগ দেখিয়ে বলে উঠি,,,,,

.

—” এই আপনি আমাকে পাগল বানাচ্ছেন কেন, আপনার কি মনে হয় আমি পাগল,,,
.

—-” মনে হওয়ার কিছু নেই, পাগলকে পাগল বলা হচ্ছে এখানে,,,

.
উনার এমন গা জালানো কথায় শরীর আমার ফেটে যাচ্ছে রাগে, আমি রাগে কটমট করতে করতে বলে উঠি……

.
—” ভালো হয়েছে আমি পাগল, আমার থেকে দূরে থাকবেন আপনি, কে বলে আপনাকে পাগলের কাছে আসতে,,,,,

,
এতক্ষন শান্ত ভাবে বসে থাকতেও আমার এমন কথা যেন মূহুর্তেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে উনি, মূহুর্তেই চেয়ার থেকে উঠে শক্ত হাতে গাল চেপে ধরে আমার, আর অন্য হাত দিয়ে আমার চুলে মুঠো ধরে ওপর দিকে তুলে চোখ মুখে হিংস্রতা ফোটে তুলে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,

.

—” ধার্চ দেখাস আমাকে, আমার থেকে দূরে থাকেন, তোর এই একটা কথার কারণে তোর মতো মেয়েকে আমার বিয়ে করতে হয়েছে আমায়,,, তুই তো নিজেই আমার ঘৃণার পাত্রী, তারপরও তুই যে আমাকে সয্য করতে পারিস না ঘৃণা করিস এই কথাটা কারণে তোকে বিয়ে করতে হয়েছে আমায়,,,, এবার এই ঘৃণা নিয়েই বাঁচতে হবে তোকে, না তোকে মরতে দিব আর না তোকে বাঁচতে,,, সারাজীবন তুই চটপট করবি আর এতেই শান্তি হবে আমার মন,,

.

কথায় গুলো বলেই খানিকটা থেমে আবারও আমাকে টেনে ধরে আর আমি উনার এমন কাজে মূহুর্তেই ভরকে যায়, উনার ভয়ংকর চেহারা দেখে আমি সবকিছু গলিয়ে ফেলি, উনি আমাকে শক্ত করে চেপে ধরায় গালে আর চুলে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছি, মূহুর্তেই আমার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতে লাগলো, উনি আবারও আমার চোখ উনার দৃষ্টি স্থির করে আগে ন্যায় বলে উঠে,,,,,

.

—” তোকে পছন্দ নয় আমার, তারপরও তোকে বিয়ে করেছি তার একটাই কারণ তোকে নিজের হাতে শেষ করতে চাই , আমার সাথে শূত্রুতা করার আগে ভাবা উচিত ছিল, তোর ধার্চ আমি বের করবো, এবার থেকে তোর সবকিছুতেই বাঁধা হয়ে দাঁড়াবো আমি, তোকে মরণের ঘাঁটি দেখিয়ে আনবো আমি,,, তুই লাইফে সব করতে পারবি শুধু বিয়েটা ছাড়া, তোকে না আমি গ্রহণ করবো না অন্যকে গ্রহণ করতে দিব, সারাজীবন তুই এইভাবেই কাটাবি চটপট করতে করতে,, নামে স্বামী আমি তোর সারাজীবন থাকবো কিন্তুু তুই ভালো লাইফ কখনোই পাবিনা,,,

.

কথা গুলো বলেই একপ্রকার ধাক্কা মারে চেয়ারে ওপর পরে উনি সামনে দিকে ঘুরে দাড়ায় রাগে, ধাক্কাটা এতটাই জোরে ছিল যে আমি তাল সামলাতে না পেরে চেয়ার সহ উল্টে নিচে পরে যায়, সাথে সাথে আমি হাতের কব্জিতে ব্যাথা পাই, উনার এমন আচরণে রুহ কেঁপে উঠছে বারবার, কি করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না, শুধু নিঃশব্দে হিচকি তুলে কান্না করছি, উনি চেয়ার পরার শব্দ পেয়ে পেছন ফিরে আমার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে,,,,,

.

—-” ড্রামার করা যদি শেষ হয়ে থাকে তাহলে চল আসিফ তোকে বাসায় দিয়ে আসবে,,

.
কথাটা বলেই রাগে কটমট করতে করতে উনি সামনে দিকে হাঁটতে শুরু করে দেয় আর আমি কান্না করতে করতে উনার পিছন পিছনে ছুটতে লাগলাম, উনি আগে আগে আমি পিছন পিছন নিচের দিকে তাকিয়ে দু’হাতে চোখের জল মুছতে মুছতে যেতে লাগলাম ,, কিছুটা দূরে যেতেই উনি হঠাৎ দাঁড়িয়ে পরায়, সাথে সাথে আমার মাথা ভারি খায় উনার পিঠে,, ভারি খাওয়ার সাথে সাথে আমি চমকে দ্রুত দু কদম পিছিয়ে যায়, উনি পিছন ফিরে আমার দিকে তাকিয়ে অবিশ্বাস চোখে বলে উঠে,,,,,

.
—-” unbelievable…

গল্পের পেইজ লিংক
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136

.
চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here