ডাকিনি বউ,২য় পর্ব
লেখক:মাসুদ রানা
আসলে এই ডাকিনী কন্যা ইয়েজেরিন আমার জীবনে আসে একটা বইয়ের মাধ্যমে। ঘটনার শুরুটা হয় আজ থেকে ২ মাস আগে। আমি এই শহরে একাই থাকতাম। এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ বেঁচে নেই। এই শহরেই একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে আমি লেখাপড়া শুরু করি। আমার বাবা-মা মারা যাওয়ার আগেই এই শহর থেকে একটু ভেতরের একটা এলাকায় আমার জন্য একটা বাড়ি করে রেখে গিয়েছিলেন। আমি যে এলাকায় থাকি সেই এলাকাটা গ্রাম এবং শহরের মাঝামাঝি। তাই প্রায় সকল সুবিধাই এখানে পাওয়া যায়। ২ মাস আগে একবার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ থেকে আমাদের শিক্ষা সফরে একটা প্রাকৃতিক বনের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। বনটা অনেক পুরোনো এবং সুন্দর। কিন্তু শুনা যায় এই বনের ভেতরে নাকি অনেক আগে কিছু মানুষ বসবাস করতো। তারা নাকি এখানে বিভিন্ন কালো যাদু, পিশাচ বিদ্যা, ডাকিনী বিদ্যা নিয়ে চর্চা করতো। এবং কোন এক কারণে তারা এই বনের ভেতরেই ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর থেকে এখানে আর কেউ আসে না। কিন্তু সেই বনে অদ্ভুত রকমের অনেক উদ্ভিদ দেখা যেতো। যেগুলো অন্য কোথাও পাওয়া যেতো না। তাই আমাদের শিক্ষা সফরে সেই বনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো ৩ দিনের জন্য। প্রথম ২টা দিন আমার ভালোভাবেই
কাটে। মোটামোটি বনটা ভালো করেই ঘুরে দেখেছিলাম। কিন্তু শেষদিন অর্থাৎ ৩য় দিনে বনের একটা নিষিদ্ধ জায়গায় গিয়েছিলাম আমি। আমরা যেদিনই সেই বনে প্রথম ঢুকেছিলাম সেদিনই আমাদের বনের সেই জায়গাটাতে যেতে নিষেধ করে গিয়েছিলো। তারা বলেছিলো বনের সেইদিকে গেলে নাকি বিপদ হতে পারে!! কিন্তু আমার অতিরিক্ত কৌতুহলতার কারণে বনের সেই জায়গাটা দেখার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারিনি। আমি একা একাই সেই বনের নিষিদ্ধ এলাকায় যাই। আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছিলাম যে সেখানেই হয়তো সকল কালো যাদু চর্চা করা হতো। তাই এলাকাটা নিষিদ্ধ। যদিও দিনের বেলায় গিয়েছিলাম কিন্তু এলাকাটা দেখতে মোটেও তেমন ভয়ংকর ছিলো না। আমার চোখে পড়লো শুধু কয়েকটা খোলা বাঁশ আর খড়ের ঘর। আর একটা ইটের ঘরও ছিলো। কিন্তু ইটের ঘরটা বাহিরে দিয়ে তালা দেওয়া ছিলো। আমি প্রথমে সেই খড়ের ঘরেই ঢুকলাম। ঘরগুলোতে বিশেষ কিছু ছিলো না। স্বাভাবিক খড়ের ঘরের মতোই ছিলো! এরপরে আমার চোখ গেলো ঘরের কোনে একটা ট্রাংকে। ট্রাংকটাতে তালা দেওয়া ছিলো না। ট্রাংকটা খুলতেই দেখলাম সেখানে শুধুমাত্র একটা বই রয়েছে। বইটার নাম ছিলো “ডাকিনী বিদ্যা।” বইটার নাম দেখে বেশ কৌতুহল জাগে যে এর ভেতর কি লেখা থাকতে পারে। এরপর বইটা নিয়ে যেই পড়তে যাবে ঠিক তখনি হঠাৎ খুব ঝড়ের সাথে বৃষ্টি পড়া শুরু করলো। আমি তাই বইটা পড়া বাদ দিয়ে বইটা হাতে নিয়েই দ্রুত আবার ক্যাম্পে
ফিরে আসলাম। এরপরের দিনই আমরা সেই বন থেকে চলে আসি। সেই বইটা আমার ব্যাগেই পরেছিলো। বইটা পড়ার কথা কেনো জানি খুব একটা মনে পড়েনি। একদিন সন্ধ্যাঁবেলা হঠাৎ কিভাবে যেনো সেই বইটার কথা মনে পড়ে গেলো। ব্যাগটা থেকে বইটা বের করে পড়তে শুরু করলাম। বইটার ১ম পৃষ্ঠাতেই বড় অক্ষরে একটা সতর্কবার্তা লেখাছিলো। সেখানে লেখাছিলো, “এই ‘ডাকিনী বিদ্যা’ বইটি কোন সাধারণ মানুষকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। কারণ বইটা পড়লেই তারা একটা মায়ায় আটকে যাবে। এছাড়া এই বইটা পড়ার আগে অবশ্যই ‘ডাকিনী বিদ্যার নিয়ম’ এবং ‘ডাকিনী বিদ্যার সমাধান’ বই দুটো ভালো করে পড়ে নিতে হবে। অন্যথায় সে অনেক বড় বিপদে পড়তে পারে।” এই লেখাটা পড়ে কিছুটা অবাক হয়ে বসে রইলাম।
এখন আমি বাকি ২টা বই পাবো কোথায়! এর জন্য আবার আমাকে সেই বনে যেতে হবে! একটা সামান্য বই পড়ার জন্য এতোটা কষ্ট করার কোন মানেই হয়না! এছাড়াও আমি এইসব কালো যাদু,ডাকিনী বিদ্যাতে তেমন একটা বিশ্বাস করতাম না। তাই ভাবলাম আর কোন বই পড়ে লাভ নেই। সরাসরি এই বইটাই পড়া শুরু করি। বইটা টানা অনেক্ষন পড়লাম। আসলে বইটাতে মূলত ডাকিনী সম্পর্কে লেখাছিলো। আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লাগে বইটাতে ‘ডাকিনীকে পৃথিবীতে নিয়ে আসার কৌশল’ এর বিষয়টা। যদিও আমি এসবে খুব একটা বিশ্বাস করতাম না। তাও ভাবলাম চেষ্টা করতে দোষ কি?! ডাকিনীরা দেখতে কেমন হয় তাতো দেখা যাবে! এরপর আমি বইয়ের নিয়ামানুসারে বাড়ির সব পবিত্র গ্রন্থ সড়িয়ে পুরো ঘরের আলো নিভিয়ে শুধু একটা মোমের আলোতে বইয়ে লেখা মন্ত্রগুলো পড়তে থাকি। টানা এক ঘন্টা মন্ত্র পড়ার পর আমি মোমের আলোতে জাপসা করে আমার সামনে একটা মেয়েকে দেখলাম। সে নীরবে আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। এরপর আমি বইটা রেখে দ্রুত ঘরের আলো জ্বালিয়ে দেই। আলো জ্বালিয়ে যা দেখলাম তাতে আমি আমার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার মনে হচ্ছিলো আমি কি ডাকিনীকে ডাকতে গিয়ে কোন স্বর্গের অপ্সরীকে ডেকে আনলাম নাকি!! এতোটা সুন্দরো কোন মেয়ে হতে পারে!!
মেয়েটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। সেও আমার মতোই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কিন্তু মেয়েটাকে দেখে আমি বেশ লজ্জা পেয়ে গেলাম। কারণ মেয়েটা সম্পূর্ন নগ্ন অবস্হায় আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। সেও লজ্জায় তার দুই হাত দিয়ে পুরো শরীর ঢাকার বৃথা চেষ্টা করছিলো। এরপর সে লাজুককন্ঠে মাথা নিচু করে আমার দিকে তাকিয়ে বললো:
-তুমি এটা কি করলে?? আমাকে এই নগ্ন অবস্থাতেই এই পৃথিবীতে নিয়ে আসলে?! আর যেই হই না কেনো মেয়ে মানুষতো ! আমারোতো লজ্জা আছে!
.
তার কথা শুনে আমি আরো বেশি লজ্জা পেয়ে গেলাম। এরপর কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না আমার কি করা উচিত! এরপর তারাহুরো করে আমার ব্যবহার করা গামছা আর একটা লুঙ্গী মেয়েটার দিকে ছুড়ে দিলাম। যদিও কাপড়গুলো গিয়ে মেয়েটার শরীরেই পড়েছিলো। কিন্তু মেয়েটার চোখে এবার লজ্জার বদলে ভয় আর বিষ্ময় দেখতে পেলাম। সে অনেকটা কেঁদে কেঁদেই আমাকে বললো:
-এটা তুমি কি করলে বালক! তুমি কি এতোটা নির্বোধ আর বোকা! তুমি কি ডাকিনী বিদ্যার নিয়ম না জেনেই আমাকে পৃথিবীতে আহ্বান করেছো?! তুমি কেনো আমাকে অভিশপ্ত করে দিলে! এবার আমি কি করে আমার ডাকিনী রাজ্যে ফিরবো?!
.
আমি মেয়েটার কথার অর্থ কিছুই বুঝতে পারলাম না।কিন্তু তার চোখের ভয় গুলো যেনো আমার মনে চলে আসলো। আমি ভাবছিলাম কি এমন করে তাকে আমি অভিশপ্ত করলাম! এরপর মেয়েটা কিছুক্ষন চুপ থেকে সেই লুঙ্গী আর ঘামছাটা নিজের শরীরে পরে নেয়। এরপর চুপচাপ আমার ঘরের বিছানায় বসে পড়ে। আমিও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম আর ভাবছিলাম এতোটা সুন্দরো বুঝি কোন মেয়ে হতে পারে! কিছুক্ষন পর সেই মেয়েটা আবার আমার দিকে তাকিয়ে বললো:
-তুমি কি জানো যে তুমি কি কাজ করেছো?! তুমি নিজেতো মরবেই আমাকেও পৃথিবীতে অভিশপ্ত করে রেখে দিলে। আমি একজন ডাকিনী কন্যা। ডাকিনী রাজ্যে থাকি। হঠাৎ পৃথিবী থেকে তোমার আহ্বান কেনো যেনো উপেক্ষা করতে পারলাম না। তাই সেই অবস্হাতেই পৃথিবীতে চলে আসি। আমাদের ডাকিনী রাজ্যে পোশাক পরা নিষিদ্ধ। আর পৃথিবীতে আসার পরে যদি কোন মানুষের ব্যবহৃত পোশাক ডাকিনীদের শরীর স্পর্শ করে তাহলে সে ডাকিনী পুরো অভিশপ্ত হয়ে যায়।সে কখনোই আর ডাকিনী রাজ্যে ফিরে যেতে পারে না। তুমি কেনো এইগুলো না জেনে আমাকে পৃথিবীতে ডাকলে? এখন আমি আর আমার আপন ডাকিনী রাজ্যে ফিরে যেতে পারবো না। হয়তো অভিশপ্ত হয়েই সারাটাজীবন এই পৃথিবীতেই কাটিয়ে দিতে হবে।”
.
আমি মেয়েটার কথা শুনে আবারো চুপ করে রইলাম।
তার কথাগুলো যেনো আমার কানে পৌছাচ্ছিলো না তখন। আমি ভাবছিলাম এতোটা মিষ্টি কন্ঠ আর সুন্দর চেহারা কি করে একটা ডাকিনী মেয়ের হতে পারে! আসলে আমি মেয়েটার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। আমি তার শরীরের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। মেয়েটা মন খারাপ করে অনেকটা কাঁদতে কাঁদতেই ভাবছিলো যে কি করে সে এই অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি পাবে!!কিন্তু নিজের অজান্তেই ডাকিনী মেয়েটাকে অভিশপ্ত করতে পেরে মনে মনে বেশ খুশী হলাম আমি। ভাবলাম এখন আমার একাকীত্ব জীবনে একটা সঙ্গী পাওয়া গেলো। হোক না সে একটা ডাকিনী! কিন্তু তারতো অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা একটা মানুষের মতোই শরীর রয়েছে। আমি আস্তে আস্তে মেয়েটার অনেক কাছে যাই। মেয়েটা শুধু বলতো যে, সে যে করেই হোক আবার তার ডাকিনী রাজ্যে ফিরে যেতে চায়। সে এর কিছু উপায়ো আমাকে বলতে চায়। কিন্তু সেগুলো আমি শুনি না। আসলে আমি তার প্রেমে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি চাইতাম না যে সে আবার তার দুনিয়ায় ফিরে যাক! আমি তাকে নানানভাবে বোঝাতে থাকি যে তার দুনিয়া থেকে এই পৃথিবীটা অনেক বেশি ভালো আর সুন্দর! এখানে সব কিছু রয়েছে। এরপর আমি তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। নিজের মনের সকল লালসা আর লোভ তার শরীরের মাধ্যমে উপভোগ করি। ডাকিনী হোক আর যেই হোক, একটা মেয়েতো সে! নিজের মনের সকল পশুত্বতাও তখন জেগে উঠে। কিন্তু তখন কে জানতো এই লালসা আর
লোভই আমার কাল হয়ে দাড়াবে! ডাকিনী রাজ্যে ডাকিনীদের কোন নাম হয়না। তাই আমি ভালোবেসেই সেই ডাকিনী মেয়েটার নাম দেই ইয়েজেরিন। এরপর নিজে নিজে একাই তাকে বিয়ে করে ফেলি। ইয়েজেরিনো ধীরে ধীরে এই পৃথিবীকে ভালোবাসতে শুরু করে। সে আর তার ডাকিনী রাজ্যে ফিরে যেতে চায় না। এটা তখন আমার জন্য ভালোই হয়েছিলো। কারণ তখন তাকে আরো ভালো করে উপভোগ করতে পারছিলাম আমি। কিন্তু ইয়েজেরিন দেখতে একটা সাধারণ মেয়ের মতো হলেও সে একজন ডাকিনীতো। আমার আর তার খাবারের মধ্যে অনেক ভিন্নতা রয়েছে! সে আমার মতো স্বাভাবিক খাবার খায় না। তার পছন্দের বা একমাত্র খাবারই হচ্ছে তাজা রক্ত আর মাংস। প্রথম প্রথম আমি এটা জান্তাম না। একদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি ইয়েজেরিন বিছানায় নেই। আমি তাকে খুজতে খুজতে রান্না ঘরে গেলাম। গিয়ে যা দেখলাম! ইয়েজেরিন একটা ইদুর মেরে ইদুরের গলা টিপেটিপে রক্ত বের করে সেগুলো খাচ্ছিলো। এরপরে আরেকদিন দেখলাম একটা জীবিত টিকটিকি পুরোটা মুখে ভরে কামড়ে কামড়ে খাচ্ছে সে। আরেকদিন রাতে পুরো বাড়ি খুজে ইয়েজেরিনকে খুজে পেলাম না। এরপর ছাদে গিয়ে দেখলাম একটা কুকুরের শরীর সে ছিড়েছিড়ে খাচ্ছে। এসব দেখে আমার বমি চলে আসতো কিন্তু আমার কিছুই করার ছিলো না। কারণ ডাকিনীরা এসব করবে এটাই স্বাভাবিক। আর আমারতো শুধুমাত্র
তার শরীরটাই চাই। তাই এসবে খুব একটা মাথা দেই না আমি। কিন্তু বিপদটা আরো বড় হয়ে এসে দাড়ালো আমার সামনে। একদিন ফল কাঁটতে গিয়ে হঠাৎ আমার আঙুলটাও কেটে গেলো। ইয়েজেরিন আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিলো। সে আমার আঙুলে রক্ত দেখে দ্রুত এসে আমার আঙুল মুখে দিয়ে আঙুল থেকে কিছুটা রক্ত চুষে খেয়ে নেয়। এরপর পাগলের মতো হাসতে থাকে। এরপর হাসি থামিয়ে আমার দিকে ভয়ংকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন করে:
-আচ্ছা মানুষের রক্ত যে এতোটা মজার এটা আগে কেনো তুমি আমাকে বলোনি ?? পুরো অমৃতের মতো লাগলো তোমার রক্তটা। মানুষের রক্ত যদি এতোটা মজার হয় তাহলে মাংস না জানি কতো মজার হবে! এখন থেকে আমি আর অন্য প্রানীর রক্ত মাংস খাবো না। শুধু মানুষের রক্ত মাংস খাবো। তুমি ভয় পেয়ো না! আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না। কারণ আমিও যে তোমায় ভালোবাসি। আমি তোমার জন্য অনেক কিছু করেছি। এবার তুমি শুধু আমার জন্য তাজা মানুষের রক্তের ব্যবস্হা করবে!
.
.
এরপর থেকে আমার অভিশপ্ত জীবনের সুচনা ঘটে। ইয়েজেরিনের জন্যই আমার এলাকার একের পর এক মানুষকে খুন করতে থাকি আমি এবং তাদের তাজা রক্ত আর মাংসই এখন ইয়েজেরিনের একমাত্র খাবার। আমি যখনি খাবার আনতে দেরি করি তখনি ইয়েজেরিনের ডাকিনী অভিশাপে আমি নেকড়েমানব হয়ে যাই।
আর আজ ঠিক একইভাবে ইয়েজেরিনের জন্য কবর খুড়ে লাশটা নিয়ে আসলাম।
.
ইয়েজেরিন আমার সামনেই লাশটার কাফনের কাপড় খুলে পাগলের মতো লাশটাকে ছিড়েছিড়ে খাচ্ছিলো। সে প্রথমে ছুরি দিয়ে লাশটার গলা কেটে ফেলে এরপর রক্ত চুসে চুসে লাশটাকে রক্তশূন্য করে দেয়। এরপর লাশটার শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিড়েছিড়ে খেতে থাকে। হাড়গুলোও কামড়ে কামড়ে খায়। তার মানুষের শরীরের সবচেয়ে প্রিয় অংশ হলো হৃদপিন্ড আর মগজ। সে তাই প্রথমেই লাশটার মাথা আর বুক ছিদ্র করে নিজের হাত ঢুকিয়ে এইগুলো বের করে চিবিয়ে খায়।
.
.
ইয়েজেরিনের এই নির্মম কর্মকান্ড দেখতে আগে অনেক খারাপ লাগতো। কিন্তু এখন আমি অভ্যস্থ হয়ে গেছি। আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ইয়েজেরিনের এই নির্মমতা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম এসব কিছুই আমার পাপের ফল। আমিই ইয়েজেরিনের শরীরের লোভ আর লালসা সামলাতে পারিনি তাই আজ আমাকে এই পরিস্হিথিতে পড়তে হয়েছে।
.
ইয়েজেরিনের এই অভিশাপ থেকে মুক্তির কি কোন উপায়ই নেই! তাকে কি আর ডাকিনী রাজ্যে পাঠানো যাবে না! হ্যাঁ। ইয়েজেরিনকে এই অভিশাপ থেকে মুক্ত করে ডাকিনী রাজ্যে আবার পাঠানোর একটাই উপায় রয়েছে। . . . .
চলবে