ঘৃণার মেরিন season : 2,part : 14,15

ঘৃণার মেরিন season : 2,part : 14,15
writer : Mohona
part : 14

নীড় মেরিনকে বুকের সাথে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : কি হয়েছে কি? বলো তো…
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরে করে কাদতে লাগলো। থামার নামই নিচ্ছেনা।
নীড় : কি হয়েছে কি বলো?
মেরিন কেদেই যাচ্ছে।
মেরিন : আপনি কোথাও যাবেন না আমাকে ছেরে please ….
নীড় : ঠিকাছে। যাবোনা। কিন্তু কি হয়েছে কি বলো তো…
মেরিন : না আপনি কোথাও যাবেন না।
নীড় মেরিনকে কোলে করে ওদের রুমে নিয়ে গেলো।

.

কান্না করতে করতে মেরিনের হিচকি উঠে গেছে।
নীড় : দেখি একটু পানি খেয়ে নাও।
মেরিন: না আমি আপনাকে ছারবো না… আপনি চলে যাবেন…
নীড় : আরে আমি কোথাও যাচ্ছিনা॥ আর তোমাকেও ছারতে বলছিনা… but পানি তো খাও।
মেরিন : উহু….
নীড় : আচ্ছা তুমি শুয়ে পরো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
মেরিন : না… আপনি চলে যাবেন…
নীড় : আরে আমি কোথাও যাবোনা….
এদিকে বৃষ্টি আরো বেরে গেলো। ভেতরে পানি ছিটে আসতে লাগলো।
নীড় : একটু নামো… আমি বারান্দার দরজা জানালা লাগিয়ে আসি…
মেরিন : উহু… আপনি নীরার কাছে চলে যাবেন ।
নীড় : না আমি কোথাও যাবোনা।
মেরিন : নীরার কাছে যাবেন…
নীড় : এবার কিন্তু রাগ ওঠাচ্ছো।
বললাম তো আমি কোথাও যাবোনা। নামো।
মেরিন : না আপনি নীরার কাছে যাবেন… নীরা আপনাকে কিছু করে ফেলবে…
নীড়: কি শুরু করেছো বলো তো রাত দুপুরে? ইচ্ছা করে এমন করতেছো তাইনা?
মেরিন : …
নীড় : নামো জানালা লাগাতে দাও।
মেরিন কিছু না বলে নিজের বুকে পাথর কোল রেখে নেমে গেলো। এরপর রুম থেকে বের হতে নিলো। দেখে নীড়ের রাগ উঠে গেলো। দুম করে মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।

.

নীড় : এতো জেদ থাকা ভালোনা। মেরিন নীড়ের দিকে তাকালোও না।
নীড় : আমার বউটা বুঝি রাগ করলো?
মেরিন:…
নীড় মেরিনকে বসিয়ে মেরিনের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিলো।
নীড় : কোথাও যাবোনা তোমাকে ছেরে। আর না তোমাকে যেতে দিবোনা।
মেরিন কান্নাভরা চোখে নীড়ের দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় মেরিনের কপালে চুমু দিলো। মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : কোথাও যাবেন না বলুন….
নীড় :যাবোনা… তাহলে তোমাতে হারাতে দাও…

.

৩:৪০টা….
মেরিন নিশ্চিন্তে নীড়ের বুকে ঘুমিয়ে আছে। নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তখন নীড়ের ফোন বাজলো। নীড়ের দেখার সময় নেই। বারবার বাজতেই আছে। বিরক্তি নিয়ে নীড় ফোন হাতে নিলো। দেখলো নীরা। ধরলোনা। বেজেই যাচ্ছে। নীড় ভাবলো ফোন বন্ধ করবে। তখন ১টা voice message এলো। নীড় প্লে করলো।
নীরা: তুমি আসবে না… এটাই তো শেষ…. please এসো।
নীড়: কিভাবে যাই? মেরিন… কিন্তু যদি না যাই হয়তো নীরা নামটা কখনো আমাদের জীবন থেকে যাবেনা…. আজকে আমাকে যেতে হবে মেরিন… তোমার সাথে নতুন করে জীবন সাজানোর জন্য।
তুমি ঘুম থেকে ওঠার আগে আবার চলে আসবো।
নীড় মেরিনের চোখে মুখে অসংখ্য ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলো। মেরিন শক্ত করে নীড়কে জরিয়ে ধরে রেখেছে। নীড় কোনো রকমে নিজেকে ছারিয়ে বেরিয়ে গেলো।

.

নীড় গিয়ে দেখে চারদিকে খুব সুন্দর করে সাজানো। আর ৫ লোক। মুখ ঢাকা।
নীরা : hello baby… welcome …
নীড় : দেখো আসলে আমার তারাতারি যেতে হবে।
নীরা : হামম যাবেই তো। ওপরে…
নীড় : মানে?
নীরা: জানবে জানবে এতো তারাতারি কেন। boys …
সাথে সাথে লোক গুলো নীড়কে আটকে ফেলল। নীড় তো অবাক।
নীরা : অবাক হলে বেবি? আজকে কতো কতো অবাক হওয়ার আছে তোমার? তারিখ মনে আছে ? ২৩শে জুন। আজকের দিনেই ৩বছর আগে এই জায়গায় এ সময় তুমি আমাকে propose করেছিলে । আর আজকে আমি তোমাকে জানে মারবো… বুঝেছো… জানে মারবো।
নীড় : what?
নীরা : অবাক হলে বেবি… মনে আছে ৩বছর আগে আলমগীর হোসেন নামে কেউ ১জন তার মেয়ের সাথে তোমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলো তোমার আর তোমার বাবার কাছে? কিন্তু তোমরা accept তো করোই নি উল্টা দালাল বলে অপমান বের করে দিয়েছিলে… শুধু তাই নয়,,, তার ব্যাবসাটাও expose করেছিলে । যার জন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছিলো। ৬মাস জেল খেটেছিলো।
নীড় : ৬মাস জেল কমই ছিলো। ওই লোকটার হওয়ার দরকার ছিলো। মেয়ে বিক্রির দালালী করে।
নীরা : shut up… just shut up… business is business বুঝেছো।
নীড় : তুমি ওই বাজে লোকটার হয়ে কথা বলছো কেন?
নীরা : খবরদার বাজে বলবেনা। কারন সে আমার বাবা। তোমার আর তোমার বাবা specially তোমার জন্য আমার বাবা জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে ভীষন বাজে ভাবে সব জায়গায় অপমানিত হতে হয়। বাবার মুখে কালি পর্যন্ত দেয়া হয়। যেদিন বাবা arrest হয় সেদিনই আমি তোমাকে আমার প্রেমের জালে ফেলার plan করি আমি আর ভাইয়া। কিন্তু জেল থেকে বের হওয়া পর এতো এতো অপমান বাবা আর মেনে নিতে না পেরে আমার বাবা suicide করে। সময় থাকতে hospitalএ নিয়ে গেলেও বাবা বেচে গেলেও কোমায় চলে যায়। গত বছর ৫ই জুন মারা যায়।
নীড় অনেকটা অবাক হলো।
নীড় : ৫ই জুন…
নীরা : হ্যা হ্যা ৫ই জুন…. মেরিন ভেবেছিলো ৫ই জুন আমি তোমাকে জানে মেরে দিবো। কিন্তু ও তো জানতো না যে আমি আগে থেকেই তোমাকে মারার জন্য এই ২৩শে জুন তারিখটা ঠিক করে নিয়েছি। মেরিন
বড় বড় shooter, killer , gangstar সবাইকে hire করে রেখেছে। যেন আমি ওদেরকে তোমাকে মারার জন্য ওদেরকে ফোন করলেই যেন মেরিন খবর পেয়ে যায়। but… আমি কেন লোক ভারা করবো? তোমার ভালোমানুষির জন্য তোমার কি শত্রুর অভাব আছে?
guys put off your mask….

.

নীড় তাকালো ওদের দিকে। কাউকেই ও চেনেনা।
নীরা: কাউকেই তুমি চেনোনা। এরা নিরব ঘাতক। তোমার সকল শত্রুদের মেরিম আয়ত্তে আনলেও এদের হদিস জানেই না…. জানবে কি করে,,, ৩বছরের সম্পর্ক তো আমার সাথে তোমার । জানো আজকে তোমাকে শেষ করবো। তাহলে তো মেরিন এমনিতেই শেষ…
কারন মেরিন হলো রুপকথার রাজ্যের সেই রাক্ষসী যার প্রাণ পাখিতে থাকে। তুমি হলো সেই পাখি… এখন এরা তোমাকে মেরে দুর্বল বানাবে… আর আমি আরামসে তোমাকে shoot করবো। start boys ….
ওরা নীড়কে মারতে লাগলো। নীড় কোনো রকমে ছুটে ওদের ৫জনের সাথে মারামারি করতে লাগলো। মেরে মেরে একেকটার হাল
নাজেহাল করে দিলো নীড়। একেকটা নিচে পরে রইলো।
তখন নীরা নীড়ের মাথায় বারি মারলো।

.

নীড় মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো। নীরা দুরে পরে থাকা গান টার কাছে গেলো। হাতে নিলো।
নীরা : আহারে আমার আশিক….
এখন কি করবা? good bye my জান…
নীড় দারানোর চেষ্টা করলো। দারিয়েও গেলো।
নীরা : আহা…. তোমার পায়ের বেগের থেকে আমার গুলির বেগ অনেক বেশি। স্থির হয়ে দারাও। তোমার heart বরাবর shoot করি…
নীড় বুঝতে পারলো যে এখন ওর মৃত্যু নিশ্চিত। যদি মেরিনের কথাটা শুনতো। মৃত্যুর আফসোস নেই। আফসোস ১টাই,,,, মেরিনকে ভালোবাসি বলা হলো না। নীড় চোখ বন্ধ করে নিলো।
নীড় : i love you মেরিন…
নীরা shoot করে দিলো। নীড় শুনতে পেলো।

.

কিন্তু কিছুই realize করলো না। সাথে সাথে চোখ মেলল। দেখলো ওর সামনে ওকে রক্ষা কবজের মতো মেরিন দারিয়ে আছে।
নীড় : মেরিন…
নীড় মেরিনের দিকে এগিয়ে ছুটে গেলো।
তখনই নীরা আবার shoot করতে নিলে মেরিন ধা ধা করে নীরার গায়ে সবগুলো গুলি ঢুকিয়ে দিলো। এরপর ধপাস করে বসে পরলো।
afterall মেরিন গুলি চালানোতে expart..😎..
আর নীরা তো কিছুদিন ধরে শিখেছে।
নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব হয়ে গেলো। সবকিছু এতোটাই দ্রুত ঘটলো… ১টা মিনিটও মনে হয় সম্পুর্ন হয়নি….
নীড় দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।

.

রক্তে গা ভিজে গেছে।
নীড় : মমমেরিন…
জন: ম্যাম…
নীড় নিজের শার্ট খুলে মেরিনের গুলির জায়গায় বেধে দিলো। আর দেরি না করে মেরিনকে কোলে তুলে দৌড়াতে লাগলো।
নীড় : কি করলে মেরিন…কি করলে… কেন করলে…. আমি তোমার কিছু হতে দিবোনা।
মেরিনের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। তবুও জোর করে খুলে রেখেছে। নীড়কে দেখছে। দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে তবুও মুখে আজও হাসি।
নীড় মেরিনের দিকে তাকালো।
গাড়িতে তুলল।জন গাড়ি start দিলো।

.

নীড়: তোমার কিছু হবেনা। আমি হতে দিবোনা…
মেরিন : নীহড়… আআহমার ভভভভীষন ইচ্ছা ছিলো আআআপনার বববুহকে শেষ নননিঃশ্বাস নিবো। আআআহজকে সেটা পপপূরন হচ্ছে…. এর থেকে বববড় পপাওয়াহ আর নেই…
নীড় : চুপ, একদম চুপ।
মেরিন আর চোখ খুলে রাখতে পারছেনা।
মেরিন : এএএকবার শেষ ববাহরের মমমতো বববলুন না আআআপনি, আআআপনি আআমাকে ঘণা করেন… please ১বার…
নীড় : …
মেরিন : ভভভালোবাসি বলতে বববলিনি। ককিন্তু ১বার বলুন নাহ ঘৃণা করি… ১বার… এটা না শশুনে যে আমি মমরেও শান্তি পাবোনা…
নীড়: just stop it..
মেরিন : এতোটুকুও বববলতে পপপারবেন না…
নীড়: না পারবোনা। কারন আমি তোকে ঘৃণা করিনা । ভালোবাসি….
“ভালোবাসি” কথাটা মেরিন নিতে পারলোনা। জ্ঞান হারালো…

.

নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে দৌড়ে পাগলের মতো হসপিটালে ঢুকলো।
নীড় : ডক্টর… ডক্টর… আমার বউকে বাচান, আমার মেরিনকে বাচান…
আমার #ভালোবাসার_মেরিন কে বাচান।
ডক্টররা নীড়কে হাজার চেষ্টা করেও OT এর বাইরে রাখতে পারলো না। জেদ ধরে ও ভেতরে রইলো। ওর ১কথা যে ও বউকে ছেরে ১চুলও নরবেনা…

.

কিছুক্ষনপর…
গুলি বের করা তো শেষ।
ডক্টর : oh my god…
নীড় : কি হয়েছে ডক্টর?
ডক্টর : ওনার তো heart attackও হয়েছে। উনাকে বাচাবো কিভাবে…?
নীড়ের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেলো। ওর মনে পরলো মেরিনের বলা সেদিনের কথা। মেরিন বলেছিলো যে নীড়ের মুখে ভালোবাসি শুনলে খুশিতে heart attack করবো।
ডক্টর: এই মুহুর্তে ডক্টর তপুকে বাসা থেকে ফোন করে আনো….
তপু এলো। তপু তো মেরিনের medical history জানে। তপু তারাতারি action নিলো।

.

৩ঘন্টাপর…
অবগশেষে surgery শেষ হলো। তবে মেরিন বাচবে না মরবে সেটার গ্যারান্টি ডক্টররা দিতে পারলোনা। মেরিনকে icu তে shift করা হলো। নীড় তবুও মেরিনকে ছারেনি। নীড় মেরিনের হাত ধরে কাদছে।
নীড় : ১টা বার তোমায় ভালোবাসার সুযোগ দিবেনা? ১টা বার… এতোদিন তো কেবল তুমিই ভালোবাসলে…. আমাকে তো একটু সুযোগও দিলেনা… আমিও যে তোমার প্রেমে পরেছি…
তোমার ভালোবাসার প্রেমে পরেছি…
তোমার ভালোবাসার প্রেমে পরেছি…
ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে। তুমি যে আমার #ঘৃণার_মেরিন নও…. আমার ভালোবাসার মেরিন….
ভালোবাসি তোমাকে। ভীষন ভালোবাসি…

.

জন : কেন আমি তোর কথার অবাধ্য হলাম না… এখন আমি তাকে কি জবাব দিবো? কিভাবে বলবো তাকে? আমি তার দেয়া দায়িত্ব যে পূরন করতে পারলাম না। আর নিজের সাথেই বা কি করে নজর মিলাবো….
oh no… দাদুভাই কে তো মনে হয় জানানোই হয়নি। এখনই ফোন করি…. না আমি নিজে গিয়ে নিয়ে আসি….

চলবে…

ঘৃণার মেরিন
part : 15
season : 2
writer : Mohona

.

জন গেলো দাদুভাইকে আনতে গেলো।

.

খান বাড়িতে…
সেতু: আয় হায়রে আমার মেয়েটা আজও ফিরলোনা… নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই ওই মেয়েটাই না না মেয়ে না কালনাগিনী । ওই কালনাগিনীই কিছু করেছে… ও ভাইয়ারে…. আমার বাচ্চাটাকে এনে দেনা…
কবির: শান্ত হ… আমি মামনিকে খুজে নিয়ে আসবো।
দাদুভাই: ত…

.

তখনই জন এলো।
জন :দাদুভাই, দাদুভাই…
দাদুভাই: আরে জন…
জন: দাদুভাই.. একটু চলুন না…
দাদুভাই : কোথায়?
জন: ম্যামের একটু কাজ ছিলো…
সেতু: ওই তোরে না ওই কালনাগিনী…
জন: mind your language … আপনার জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রনে রাখুন। না হলে ওটা কাটতে আমার ২সেকেন্ডও লাগবেনা। ভুলে যাবো যে আপনার মৃত্যু কার হাতে আছে…
কবির: এই জন। সাবধান বলে দিচ্ছি।
তুমি আমার সামনে দারিয়ে আমারই বোনের সাথে এভাবে কথা বলছো?
জন: আপনার বোনের কপাল ভালো যে এখনও সে কথা বলার মতো অবস্থায় আছে। তবে সেটা আপনার জন্য না। আপনি কেন আপনার মতো ১০জন এলেও i don’t care…
কবির: তুমি বোধহয় ভলে গেছো আমি কে? আমি কবির ফয়সাল খান। আর সিংহ সিংহই হয়। গর্জন না দিলেই সিংহ কুকুর হয়ে যায়না। রাজা রাজাই থাকে…
জন: রাজা.. হ্যা রাজা রাজাই থাকে। তো রাজা মশাই…. রাজার নীতি জানেন তো? ১টা রাজ্যে ১জনই রাজা থাকে। আর এই খান সম্রাজ্ঞে রাজা বলুন সম্রাট বলুন, সুলতান বলুন ,বাদশাহ বলুন , নবাব বলুন ওই ১জনই। সে হলো the মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী।
হ্যা আপনি সিংহ। তবে জঙ্গলের না সার্কাসের। যে কি না পোষা কুুকুরের চেয়ে নিম্নস্তরের।
কবির : জন…
জন: চিল্লাবেন না। এই জন কেবল ১জনেরই চোখ রাঙানো আর চিল্লানো সহ্য করে। অন্যকারোনা। বুঝেছেন?
আর এই যে আপনি… আমার ম্যামের কথা মাথায় আনলেও মাথাটা কেটে ফেলে দিবো।
সেতু: চোরের সাক্ষী দারোগা।
কবির: তোমার ওই ম্যাম ভিক্ষা রাজা। তাকে আমার বাবা এই সম্রাজ্ঞ দান করেছে ।
জন: মোটেও না। এটা আল্লাহর দান। আল্লাহই তাকে এই অধিকার দিয়েছেন। কারন সে এই খান বাড়ির।
কবির: কোনোদিনও না। ও কারো পাপের ফসল….
জন: এই এই কবির খান মুখ সামলে। আরেকবার এটা বলার আগে DNA test করিয়ে নিয়েন। আহা… ম্যামের না। আপনার … আপনি actually এই খান বাড়ির রক্ত কিনা… আর হ্যা যাকে পাপের ফসল বলছেন তার দেয়া ভীক্ষার জোরেই বেচে আছেন। যদি সে পাপের ফসল হয় , যদি তার রক্ত খারাপ হয়, যদি সে অপবিত্র হয় তবে আপনিও ।
কবির: মানে?
জন: মানে আপনি যার জন্য বেচে আছেন সে হলো মেরিন বন্যা। তার লিভারই আপনার শরীরে।
বলেই জন দাদুভাই কে নিয়ে চলে গেলে।

.

দাদুভাই গিয়ে মেরিনের এই অবস্থা দেখে পাগল হয়ে গেলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। নিহাল-নীলিমা-নীড় অনেক কষ্টে ওনাকে সামলালো।
দাদুভাই: আমি একটু ভেতরে যেতে চাই….
দাদুভাই ভেতরে গেলো। মেরিনের কপালো চুমু দিয়ে ধীরে ধীরে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
দাদুভাই: দিদিভাই… আমি জানি আমার দিদিভাই ফাইটার…এতে সহজে কি হার মানবে? এবার তুমি ঠিক হও… সব বাদ দিয়ে সব ছেড়ে তুমি আর আমি অনেক দূরে চলে যাবো।
কথাটা শুনে নীড়ের বুকটা কেপে উঠলো…
দাদুভাই : আমি সত্যিই ব্যার্থ। না আমি তোমার দুঃখ দূর করতে পেরেছি আর না তোমাকে রক্ষা করতে পেরেছি। প্রতিনিয়ত তুমিই আমাকে রক্ষা করে এসেছো। তাই ভুলেই গিয়েছিলাম যে দিনশেষে তুমি কি…
ভুল ধারনায় বেচেছিলাম। হয়তো তুমি ছায়া পেয়েছো। শাহজাহান খান এতো বড় ভুল কখনোই করেনি। আর ভুল করবোনা। তোমার দাদুভাই হয়তো তোমার কষ্ট দূর করতে পারবেনা। কিন্তু সকল পরিচিত ছায়ার আড়ালে নিয়ে যাবো।
দাদুভাই বাইরে বের হলো।

.

দাদুভাই : জন…
জন: জী দাদুভাই… ডক্টরের কাছ থেকে সকল report নিয়ে আসো।
জন : জী দাদুভাই…
দাদুভাই : আর সব report এনে সিঙ্গাপুর যাওয়ার ব্যাবস্থা করো….
দিদিভাই কে নিয়ে সিঙ্গাপুর যাবো….
জন: ok… দাদুভাই…
জন চলে গেলো।
নীড় : দদাদুভাই.. মমমেরিনকে shift করা ঠিক হবেনা…
দাদুভাই : তোমাকে আমার নাতনিকে নিয়ে ভাবতে হবেনা। আমি জানি তোমার জন্যেই ওর এই অবস্থা।
নিহাল: দেখুন স্যার… মেরিনের condition আরো বিগরে যেতে পারে।
দাদুভাই: তোমাদের কারোই চিন্তা করতে হবেনা মেরিনকে নিয়ে। ও তো #ঘৃণার_মেরিন । ওকে নিয়ে এতো ভাবার কি আছে? আর তোমরা বাবা-ছেলে তো ওর কথা বলোইনা… তুমি ওকে প্রথম দিনেই ওকে কি বলেছো তা আমি জানি… কারো দরকার নেই আমার মেরিনের। আমি শাহজাহান খান মরে যাইনি… তোমাদের কারো ছায়া ওর ওপর পরতে দিবোনা….
বলেই দাদুভাই বেরিয়ে যেতে নিলো। সামনে পরলো কবির।

.

দাদুভাই : তুমি এখানে?
কবির মাথা নিচু করে আছে।
দাদুভাই : কি হলো বলো…
কবির : বাবা আমি একটু আমার মেয়েটাকে দেখতে চাই…
দাদুভাই ঠাস করে কবিরকে থাপ্পর মারলো।
দাদুভাই: লিভার দিয়ে জীবন বাচিয়েছে বলে আজকে পাপের ফসল থেকে মেয়ে হয়ে গেলো…?
কবির মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে।
দাদুভাই: এতোদিন যখন পাপের ফসলটাকে টিকিয়ে রেখেছি তখন যতোদিন বেচে আছি ততোদিনও পারবো। পাপের ফসলকে মেয়ে বানানোর দরকার নেই…
বলেই দাদুভাই বেরিয়ে গেলো… জন সব ব্যাবস্থা করে ফেলল।

.

একটুপর…
তপু: আরে দাদুভাই কি করছো কি? মেরিনকে shift করা ঠিক হবেনা ।
দাদুভাই: তোমাদের কারো কথা আমি শুনবো না… কেউই মেরিনের ভালো চায়না…
তপু: দাদুভাই তুমি আমাকেও এই কথা বলছো? তুমি জানোনা মেরিন আমার জন্য কি?
কথাটা শুনে নীড়ের খটকা লাগলো।
তপু: আমি কিছুতেই মেরিনকে shift করতে দিবোনা ।
দাদুভাই: অধিকার দেখাচ্ছো কোন অধিকারে?
তপু: ভালোবাসার অধিকারে, মানবতার অধিকারে। আমি মেরিনকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিবোনা। কিছুতেই আমি permission দিবোনা।
দাদুভাই : এর পরিনতি কি হতে পারে জানো?
তপু: হ্যা। জানি। তবুও আমি দিবোনা….
বলেই তপু চলে গেলো। তপুর কথা নীড়ের মোটেও ভালো লাগলোনা।

.

জন: দাদুভাই এখন?
দাদুভাই: একটু wait করতে হবে। নীরা সুস্থ আছে তো?
জন: না দাদুভাই… অবস্থা ভালোনা।
দাদুভাই: তাহলে তো হবেনা… নীরাকে সুস্থ হতে হবে… বেচে ফিরতে হবে। এতো সহজ মৃত্যু তো ওর প্রাপ্য না… যে করেই হোক নীরাকে সুস্থ করার ব্যাবস্থা করো। দরকার হলে বিদেশে পাঠাও। তবুও ওকে বাচাও….
জন: দেখি দাদুভাই কি করা যায়…

.

রাতে…
নীড় : দাদুভাই… তততুমি এখন বববাসায় চলে যাও।
দাদুভাই : কেন?
নীড়: না মানে রাতে তো যে কোনো ১জন allow …
দাদুভাই: জানি। আমি থাকবো।
নীড়: দদদাদুভাই আআআমি থাকি?
দাদুভাই: তোমার কষ্ট করতে হবেনা। তুমি আসতে পারো।
নীড় : ….
নীড় ১পাও নরলো না।
দাদুভাই : কি হলো? তুমি দারিয়ে আছো যে?
নীড়: … তততুমি বাসায় যাও। আমি থাকবো।
দাদুভাই: দেখো তোমার সাথে বেশি কথা বলার ইচ্ছা আমার নেই। তুমি যাও। ও আমার দায়িত্ব। খামোখা নিজের বোঝা বারাতে হবেনা। তুমি আসতে পারো।
নীড়: না আমি যাবোনা। ও আমার বোঝা না। ও আমার বউ। আর আমার বউর কাছে আমিই থাকবো।
দাদুভাই: বউ? হায়রে আজব দুনিয়া। ওই লোকটাকে দেখো। যেই জানতে পারলো যে মেরিন ওকে লিভার দিয়েছে ওমনি তার কাছে মেরিন পাপের ফসল থেকে মেয়ে হয়ে গেলো। তোমার দিকে ছোরা গুলি নিজে খেলো বলে তোমার কাছেও ফালতু মেয়ে থেকে বউ ভয়ে গেলো। প্রমানে যদি ভালোবাসার খোজ পাওয়া যায় তবে সেটা আর যাই হোক ভালোবাসা হয়না।
যাই হোক… তুমি এখন আসতে পারো।
নীড় : আমি যখন বলেছি আমি যাবোনা তখন যাবোনা। আমার বউয়ের কাছে আমিই থাকবো। তুমি বাসায় চলে যাও।
দাদুভাই: জোর দেখাচ্ছো কোন জোরে…
নীড় : কবুলে জোরে… চলে যাও কালকে সকালে এসো… না হলে জোর করে পাঠাবো…
দাদুভাই : তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি কে?
নীড় : আমি কিছুই ভুলিনি… তুমি যাও।
নীড়ের জেদের কাছে দাদুভাইকে হার মানতেই হলো। দাদুূভাই চলে গেলো।

.

সকালে…
নীড় সারারাত মেরিনের হাত ধরে দেগে বসেছিলো। এখনও আছে। হঠাৎ মনে হলো মেরিনের হাত নরছে। নীড় তারাতারি তপুকে ডেকে আনলো।
তপু চেক করলো। দেখলো মেরিনের জ্ঞান ফিরেছে।
তপু: out of danger …
নার্স ওকে injectionটা দিয়ে দাও।
নার্স: ok sir…
মেরিন ঘুমিয়ে পরলো।
নীড় : ও আবার ঘুমিয়ে পরলো কেন?
তপু: ভয় নেই। তোমার মতো ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করবোনা।
তপু মেরিনকে ১পলক দেখে বেরিয়ে গেলো।
নীড় বুঝতে পারলো যে তপু মেরিনকে ভালোবাসে।

.

৪ঘন্টাপর…
মেরিন চোখ মেলে তাকালো। আধো আধো চোখে দেখলো দাদুভাই , নিহাল , নীলিমা , নীড় আর জন দারিয়ে আছে।
দাদুভাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নীড় ওর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বসে আছে। মেরিন নীড়ের দিকে ১বার তাকিয়ে দাদুভাইয়ের দিকে চোখ ঘোরালো। চোখ ঘোরানোর সময় দরজার বাইরে দারিয়ে থাকা কবিরকেও দেখলো।
দাদুভাই : দিদিভাই… কেমন লাগছে এখন?
মেরিন ভাঙা ভাঙা গলায়
বলল : ভভভালো। তততোমাকে এমন লললাগছে কককেন?
দাদুভাই : কিছুনা দিদিভাই…
মেরিন : কককষ্ট দদদিয়ে ফেললাম তোমাকে…
দাদুভাই মেরিনের কপালে চুুমু দিয়ে
বলল : আমার দিদিভাই কি কখনো আমায় কষ্ট দিতে পারে?
মেরিনের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো।
নীলিমা: এমন কাজ আরেকবার করলে মারবো ধরে..
তখন তপু ভেতরে ঢুকলো।
তপু: সবাই kindly একটু বাইরে যাবেন… একটু চেকাপ করতে হবে।
নীড় ছারা সবাই বেরিয়ে গেলো।
তপু : নীড় তোমাকে কি আলাদাভাবে বলতে হবে?
নীড় বেরিয়ে যেতে নিলে হাতে থাকা ব্রেসলেটে টান অনুভব করলো। দেখলো মেরিন ১আঙ্গুল দিয়ে সেটা ধরে রেখেছে। মনে করলো ভুল করে সেটা হয়েছে। তাই আঙ্গুল টা ছারিয়ে নিলো। কিন্তু পরক্ষনেই মেরিন আবার ধরে ফেলল। যা দেখে নীড় মুচকি হাসলো।
তপু: কি হলো যা…
তখন তপু দেখলো মেরিন ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
যার অর্থ এই
যে: তোমার সাহস কিভাবে হয় আমার নীড়কে বের হতে বলার।
তপু আর নীড়কে কিছু বলল না।

.

তপু সব চেক করতে লাগলো। মেরিন চোখ বন্ধ করে রাখলো।
তপু: তোমার কিছু হলে কারো কিছুই হবেনা। কিন্তু তাই বলে বারবার নিজেকে ঝুকিতে ফেলা ঠিকনা। নিজেকে বাচিয়ে রাখতে শেখো। নার্স ওকে মেডিসিনটা দিয়ে দিও।
তপু চলে গেলো। তপু চলে গেলে মেরিন চোখ মেলল।
নার্সও মেডিসিন দিয়ে চলে গেলো।
নীড় : মেরিন…
নীড় ডাকটা দিতেই মেরিন আবার চোখ বন্ধ করলো।
নীড় : তুম..
মেরিন : i want to sleep …
নীড় : ওহ। আচ্ছা তুমি ঘুমাও।

.

৩দিনপর…
মেরিনের অবস্থা এখন অনেকটাই ভালো। কিন্তু নীড় অনেক অবাক। কারন ৩দিনে মেরিন নীড়ের সাথে কোনো কথাই বলেনি। আর না ওর দিকে তাকিয়েছে।
নীড় মনে মনে : হয়তো অনেক রেগে আছো।
নীড় ভাবছিলো তখন খেয়াল করলো বাইরে কেউ দারিয়ে আছে। কালো চাদর মুরি দিয়ে। নীড়ের খটকা লাগলো। এটা কনিকা না তো… দৌড়ে বের হলো। কিন্তু খুজে পেলোনা। হতাশ হয়ে ফিরে এলো। এসে দেখে মেরিন বসার চেষ্টা করছে। ছুটে ওর কাছে গেলো। ওকে সাহায্য করতে চাইলে মেরিন হাত দিয়ে ইশারা করে বাধা দিলো। তবুও নীড় ধরে বসিয়ে দিলো।
নীড় : তুমি আমাকে ig…
তখন জন বলল: আসতে পারি?
নীড় : come …
জন: ম্যাম ডেকেছিলেন?
মেরিন : হামম।
নীড় অবাক হলো।
জন: কোনো কাজ ছিলো?
মেরিন : হ্যা… এই মুহুর্তে অফিস যাও। ওখানে ১টা blue file আছে।ওটাতে সব মিটিং এর details আছে। এখনি গিয়ে ওটা নিয়ে আসবে।
জন: জী ম্যাম…
মেরিন : আর শোনো।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : যাওয়ার সময় জেনে যেও যে আমাকে রিলিজ কবে দেয়া হবে?
জন : কিন্তু ম্যাম…
মেরিন: প্রশ্ন আমার ভালো লাগেনা। go…
জন চলে গেলো।

.

নীড় : রিলিজ নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা।
মেরিন: আর আমাকে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা।
নীড়: সব কিছুতে তোমার জোর চলবে না। সবকিছু তোমার under এ চললেও তুমি আমার under এ চলবে… বুঝেছো?
জবাবে মেরিন রহস্যময়ী হাসি দিলো। একটুপর জন file নিয়ে এলো।

.

৪দিনপর…
মেরিনের জন্য আজই ওকে রিলিজ দেয়া হলো।
তপু: তোমাকে রিলিজ দেয়া হলো কেবল তোমার জেদের কারনে। কিন্তু এর মানে এটা না তুমি যা ইচ্ছা তাই করবে… একদম bed rest এ থাকবে।
মেরিন: জ্ঞান শোনার সময় এবং ইচ্ছা কোনোটাই আমার নেই। do it fast ….
তপু: তুমি কি কোনো কথাই শুনবে না…
মেরিন : …
তপু: নিজের খেয়াল রেখো।

.

২দিনপর…
নীড় নিচে বসে নিহালের সাথে কথা বলছে। তখন দেখলো যে মেরিন রেডি হয়ে নিচে নামছে। মেরিন যতোই নরমাল ভাবে হাটার চেষ্টা করুক ওর যে হাটতে কষ্ট হচ্ছে সেটা দেখেই নীড় বুঝতে পারলো।
নীলিমা:একি কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন: অফিসে…
নিহাল: what? পাগল নাকি তুমি?
মেরিন: পাগলের কি আছে?
নিহাল: সবটাই। এই শরীর নিয়ে …
মেরিন: কেন আমার কি হয়েছে?
নিহাল: বেশি কথা আমার ভালো লাগেনা। তুমি অফিস যাবেনা তো যাবেনা।
মেরিন মুচকি হেসে
বলল : my dear শশুড় বাবা… আমার কি বসে খাওয়ার ভাগ্য আছে? এমনিতেই চোখের বালি । তারমধ্যে যদি বসে বসে অন্ন ধংব্স করি তবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে।
কথাটা শুনে নীড় হাতে থাকা পানির glassটা ধিরিম করে রাখলো।
মেরিন care না করে বের হতে নিলো। নীড় এসে দুম করে মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here