ঘৃণার মেরিন part : 6

ঘৃণার মেরিন
part : 6
Writer : Mohona

নীড়-মেরিন দেশে ফিরলো। সবার জন্য মেরিন এত্তো এত্তো gift এনেছে। দিন কাটতে লাগলো। মেরিনের পাগলামো ভালোবাসায় নীড় অভ্যস্ত হয়ে গেছে।

.

১দিন নীড় জানতে পারলো যে নিরার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। যেটা শুনে নীড়ের রাগ উঠলো। নীড় মেরিনকে নিয়ে বাসায় ফিরছে। নীড় চুপচাপ drive করছে। ভীষন রেগে আছে।
মেরিন: নীড়…..
নীড়:…..
মেরিন: নীড়…..
নীড়:….
মেরিন: এই যে শুনছেন আমি আপনার বাচ্চার মা হতে চলেছি……🙈🙈🙈….
কথাটা শুনে নীড় এতোই অবাক হলো যে অবাকের চোটে গাড়ি বেসামাল হয়ে গেলো।
কোনো রকমে গাড়ি থামালো।
নীড়: what???!!
মেরিন:🤣🤣।
নীড়:😠😠।
মেরিন: মনটা খুব খারাপ তাইনা??
নীড়: জানিনা……
মেরিন: নিরার বিয়ে…… তাইনা???
নীড়: জানিনা……
মেরিন: এই কারনেই তো মন খারাপ আপনার ………
নীড়: তুমি কি অন্তর্জামি??? সব কিভাবে জানো???
মেরিন: its magic ……

মনে মনে: আমি জানবোনা??? আমিই তো নাটের গুরু। আমিই তো নিরার বিয়ে টা করাচ্ছি….. লোভ দেখিয়ে। বলেছি যে ছেলেরা অসম্ভব ধনী। আমেরিকায় থাকে। ওখানেই settle ….. আর তাই লোভী নিরা ড্যাং ড্যাং করে বিয়েতে রাজী হয়ে গেলো। such a greerdy lady……

মেরিন: আচ্ছা আপনি এতো upset কেন??
নীড়: আমার ভালোবাসার বিয়ে আর আমি upset হবোনা তো ড্যাং ড্যাং করে নাচবো??
মেরিন: ভালোবাসা?? আচ্ছা আপনার কি মনে হয়না যে নিরা আপনাকে কখনো ভালোইবাসেনি….. আপনার টাকাকে ভালোবেসেছে….. তা না হলে কি এতো তারাতারি অন্য কাউকে বিয়ে করতে রাজী হতো???
কথাটা শুনতেই নীড় রেগে মেরিনের দিকে তাকালো।
মেরিন:রেগে লাভ নেই। আমার তো মনে হয় আপনিও নিরাকে তেমন ভাবে ভালোবাসেননা। যদি ওকে মনের গভীর থেকে ভালোবাসতেন তবে বিয়ের দিন ওর গলায় ছুরি ধরতেই বিয়েতে রাজী হয়ে যেতেন। তাই আমার মনে হয়না যে আপনিও নিরাকে ভালোবাসেন……

কথাটা শুনেই নীড় মেরিনকে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড়: তোমার সাহস কিভাবে হয় আমার ভালোবাসাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার?? 🤬🤬🤬।
মেরিন:🤣🤣🤣।। ভালোবাসা??
নীড়: হ্যা হ্যা ভালোবাসা। নিরা আমার ভালোবাসা। আমি নিরাকে ভালোবাসি।
মেরিন: না। কখনো না। তাও মানলাম যে আপনি নিরাকে ভালোবাসেন। কিন্তু নিরা?? নিরা কি আপনাকে সত্যি ভালোবাসে?? ভালোবাসলে কি এতো তারাতারি বিয়ের পিড়িতে বসতে পারতো???
নীড়: তো কি করবে? আমার জন্য সারা জীবন অবিবাহিত থাকবে?? তুমি কি কখনো আমাকে ছারবে???
মেরিন: আপনি কি কখনো নিরাকে ভুলে আমাকে ভালোবাসতে পারবেন?
নীড়:…..
মেরিন:জানি আমাকে কখনো ভালোবাসবেন মা। যদি আপনি নিরার জন্য আমাকে মেনে না নিতে পারেন তবে নিরা কিভাবে অন্যকাউকে মনে জায়গা দিচ্ছে?
নীড়: তো কি করবে?? তোমার মতো ভালোবাসা ছিনিয়ে নেবে??
মেরিন: আপনি কথা কাটাচ্ছেন নীড়।
নীড়: shut up….
মেরিন: সত্যি তো এটাই যে নিরা কখনো আপনাকে ভালোইবাসেনি। ভালোবেসেছে আপনার টাকা পয়সাকে।
নীড়: get out……
মেরিন: what???
নীড়: get out from my car???
মেরিন: 😒😒😒।
নীড়:নামতে বলছি কিন্তু……
মেরিন: নাহ…..
মেরিন নামছেনা বলে নীড় নিজে মেরিনকে টেনে গাড়ি থেকে বের করলো। এরপর গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।
মেরিন:যাহ বাবা। এটা কি হলো??? বুঝেছি……
আগুন লাগাইলোরে টিংকু আগুন লাগাইলো।

.

রাত১টা……
নীড় বাসায় ফিরলো।
বাসায় ফিরে রুমে ঢুকে নীড় অবাক। কারন সারা রুম মোমবাতি আর ফুল দিয়ে সাজানো। দেখতে ভীষন সুন্দর লাগছে। মেঝেতে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে sorry লেখা। তখন মেরিন এসে পেছন থেকে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: i love u…..।
নীড়: দেখি ছারো…..
মেরিন:উহু।
নীড়: সরতে বলছি না??? সবসময় ভালো লাগেনা…..
মেরিন: তাতে কি….. sorry বললাম তো।
নীড়:হ্যাহ…. sorry…. আমার জীবনটা শেষ করে দিয়ে sorry বলতে আসছো???

মেরিন নীড়কে ছেরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে
বলল: আমি ওগুলোর জন্য sorry বলিনি….. আমি sorry বলেছি কারন তখন আমার বলার কথার জন্য আপনাকে এতোক্ষন বাইরে থাকতে হয়েছে, না খেয়ে থাকতে হয়েছে তাই।
নীড়:…..
মেরিন: যান fresh হয়ে আসুন॥আমি খাবার বেরে দিচ্ছি।
নীড়: খাবোনা। ক্ষুধা নেই।
মেরিন: বললেই হলো?? রাতেরবেলা না খেয়ে শুতে নেই…..
নীড়: তোমার কি মনে হয়ে এইসব stupid decoration করে , romantic পরিবেশ তৈরি করে তুমি তোমার নোংরা উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারবে??
মেরিন:🤣🤣🤣। উদ্দ্যেশ্য??? আমার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো আপনার বউ হওয়ার। হয়েছি। আর আজকের এই decoration কেবল আপনাকে sorry বলার জন্য ছিলো। কোনো নোংরা উদ্দেশ্য না। আর তাছারাও আপনি যেটা mean করছেন সেই উদ্দেশ্য হলেও সেটাও কিন্তু নোংরা উদ্দেশ্য হতোনা….
যাই হোক। আপনি fresh হয়ে আসুন ততোক্ষনে আমি রুমটা normal করে দিচ্ছি।

.

নীড় fresh হয়ে এসে দেখলো যে রুমে ফুল মোমবাতি কিছুই নেই। নীড় না খেয়েই শুতে গেলে ।
মেরিন বলল: না খেয়ে ঘুমানোর সাহস করবেন না…..
নীড়: কি করবা কি তুমি??
মেরিন:bomb ফাটাবো।
নীড়: তুমি কি আমাকে একটুও শান্তি দিবানা??
মেরিন: না…… আসুন খেয়ে নিবেন।
নীড় জানে না খেয়ে উপায় নেই। তাই খেতে বসলো। কিন্তু আজকে মেরিন নীড়ের সাথে ওর প্লেটেই খেতে বসলো না। নীড় অবাক হলেও ১টা বার জিজ্ঞেসও করলো না মেরিন খেয়েছে কিনা?? নীড় দেখলো যে মেরিন ওর দিকে তাকিয়েই আছে।

নীড়: ওই তোমার খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই??? যখন দেখি তখনই আমার চেহারার দিকে পরে ধরে তাকায় থাকো??? কি লাভ পাও আমার চেহারা দেখে?? ভালো তো আর তুমি একা বাসোনা। আমিও তো বেসেছি। কই আমি তো জনমে কোনোদিন এমন করে পরে ধরে নিরার চেহারার দিকে তাকায় থাকিনি। কি দেখো আমার খোমাতে??!!😬😬😬।
মেরিন: আমার স্বর্গ……

.

বলেই মেরিন ১গাল হাসি দিয়ে নীড়ের কোলে গিয়ে ধাপ করে বসে
বলল: নিন আমাকে খাইয়ে দিন…..
নীড়: what!!!
মেরিন: হামম। এটা আপনার শাস্তি। কারন ১টা বারও আমাকে খেতে বলেন নি… 😠😠😠.. নিন খাইয়ে দিন……

নীড় মনে মনে: দারাও দেখাচ্ছি মজা…..

বলেই নীড় ভাতের লোকমার মধ্যে মরিচ ঢুকিয়ে দিলো। কারন এই কদিনে দেখেছে যে মেরিন ঝাল খেতে পারেনা। মেরিন মরিচ খেয়েও react করলো না। নীড় অবাক হয়ে আরো ১বার মরিচ দিলো। মেরিন তাও react করলো না। এরপর থেকে নীড় আর মরিচ দিলোনা।

নীড় মনে মনে: alien … খাওয়া just শেষ হতেই মেরিন নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।

নীড় মনে মনে:😔😔😔।
নীড়কে ভীষন জোরে ১টা কামড় দিয়ে মেরিন ছেরে দিলো।
নীড়: মা গো…. vampire ….
মেরিন:🤓🤓🤓। আপনাকে ভালোবাসি বলে কি আপনার ভুলের শাস্তি দিবোনা??😎😎।
নীড়: এখন কষ্ট করে আমার কোল থেকে ওঠো। ঘুমাবো।
মেরিন:উহু…. আগে আমাকে romantic ভাবে request করে বলুন।😍😍😍
নীড়: what!!!
মেরিন: আপনি না কোনো কথা ১বারে বোঝেন না….. না বললে কিন্তু আমি উঠবো না।
নীড়:😠😠😠।
বলছিলাম কি জা……ন একটু ওঠোনা। please ….. একটু কাজ ছিলো তো….
মেরিন: awwwee…. এতো cute করে বললে না উঠে পারি?? love you এত্তোগুলা…….

.

২ঘন্টাপর……
নীড় আরামে ঘুমাচ্ছে। মেরিন ঘুমন্ত নীড়কে দেখছে।
মেরিন: ভালোবাসার বিরহ কখনো আমাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেয়না। আর আজকে আপনি নিরার বিয়ের কথা শুনেও পরম নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। কারন আপনি নিরাকে ভালোবাসেন না….. এটা আপনার ভুল ধারনা মাত্র। ভালোলাগা কে ভালোবাসা মনে করেছেন আপনি। তাছারা কিছুই না। তবে আপনার এই ভুল ধারনা আমি ভাঙবোই….

.

মেরিন নীড়ের গিটার নিয়ে ছাদে গিয়ে গান গাইতে লাগলো।

🎶🎵🎶
ম্যা দেখু তুঝে
দিন মে স’মার তাবা
ইয়ে আগার ইশক হ্যা
তো হ্যা বে ইনতেহা….
তু মাঙ্গলে আগার
জান দে দু তুঝে
তু আগার বোলদে
তো কারদু খুদকো ফানা
আ তুঝমে খাতাম কারদু ইয়ে শ্বাসে মেরি ….

ইস ইশকে মে মারজাওয়া
তু যো কাহে বো কারজাওয়া …. (2)

ইয়ে রাজ হ্যা দিলকা মেরে
কারু কেয়া বায়া
ম্যাহফুজ হ্যা আব ইয়ে মুঝমে
সুনলে যারা
বেখোয়াব সা আব তু রেহনা ইয়াহা
বানকে রাহু ছায়া তেরা….

ইস ইশকে মে মারজাওয়া তু যো কাহে বো কারজাওয়া …(2)

🎶🎵🎶

.

গান শেষে মেরিন পিছে ঘুরে দেখে নীড় দারিয়ে আছে।
নীড়:🤨🤨🤨।
মেরিন: what???
নীড়: এতো রাতে গান গাওয়ার কারন???
মেরিন: কিছুনা।
নীড়: তুমি গানও গাইতে পারো???
মেরিন: any doubt???
নীড়: কোন জিনিসটা পারোনা??
মেরিন: কি মনে হয়???
নীড়: ভালো মানুষ হতে……

.

কিছুদিনপর…….
মেরিন আজকে বাঙালিভাবে শাড়ি পরেছে। navy blue রঙের। ভীষন সুন্দর লাগছে। নীড়ের ঘুম ভাঙলো পানির ছিটাতে। চোখ মেলে দেখলো নীলান্জনা দারিয়ে। যদিও মেরিনেপ চুল অতো বড়না। মিচমিচে কালোও না। তবুও ভেজা চুলে খুব সুন্দর লাগছে।
মেরিন: আজকে বুঝি আমাকে খুবই সুন্দর লাগছে??? 😏😏😏।

নীড় মনে মনে: হামম। আবার জিগায়🤗🤗🤗 । crush খেয়েছি। 😍😍🙈🙈।

নীড়: just জঘন্য লাগছে।
মেরিন: হুহ। শালা বুইরা ব্যাডা।
নীড়: তোমার একেক দিন একেক রুপের কারন আমি বুঝিনা। fancy dress competition ….. তো আজকে পেট বের নায়িকা সেজে মেডিকেল যাবার কারন কি???
মেরিন:আপনি ঘুষ দিয়ে ডাক্তার হয়েছেন??
নীড়: মানে?? 😒😒।
মেরিন: ডাক্তার হয়ে কি করে ভুলে গেছেন যে আজকে friday ….
নীড়:সে যাই হোক। এভাবে শাড়ি পরে রুমের বাইরে যাবেনা।
মেরিন: কেন??🤔🤔।
নীড়: না মানে না। ব্যাস।
মেরিন: আরে আজব তো। কারনটা তো বলবেন??
নীড়: এভাবে পেট-কোমড় বের করে রুম থেকে বের হওয়া আমার সহ্য হবেনা।
মেরিন:😍😍😍। সত্যি???☺️☺️ ।
নীড়: oh hello …. এতো খুশি হওয়ার কিছু নেই। বাসায় আমার বাবা আছে। সেই সাথে অনেকগুলো servant। তোমার লজ্জা না থাকতে পারে। কিন্তু আমার আছে।
মেরিন:😒😒😒।
নীড়: কোমড় ঢেকে বের হবা। বাবার সামনে এভাবে বের হয়ে বাবাকে লজ্জা দিওনা।
বলেই নীড় washroom এ চলে গেলো। মেরিন পিন মেরে কোমড় ঢেকে নিচে গেলো।

.

মেরিন মনে মনে: শালা বুইরা বেরসিক। একটু ভালোতো বাসবেই না। আবার তারিফও করবেনা…. লাগে ওর নিরা আমার থেকেও সুন্দর।যেই না বাইট্টা বাউম্বিরি…. ফকিন্নি মার্কা।

মেরিন নীড়ের ১৪ গুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে নিচে নামছে। নিহালকে খেয়ালই করেনি। নিহালের সাথে ধাক্কা লাগলো। নিহাল দুম করে পরে গেলো।
নিহাল: আল্লাহ গো…
মেরিন: oh no… বাবা। দেখি দেখি হাত দাও। উঠে আসো।
নিহাল: তুমি মেয়ে কোনদিন যে আমাকে দুনিয়া থেকে উঠায় দি…

বলেই নিহাল মেরিনের দিকে তাকালো। আর তাকিয়েই থমকে গেলো। চোখে পানি এসে পরলো মেরিনকে দেখে। কারন মেরিন যে শাড়িটা পরেছে সেটা নিহালের মায়ের।
মেরিন: কি হলো? উঠে আসো…..
নিহাল উঠে এলো।
মেরিন: কি দেখছো??? লাগছে না আমাকে তোমার মায়ের মতো???😎😎😎।
নিহাল জবাব না দিয়েই চলে যেতে নিলো।
মেরিন: আজকে কি খাবে??
নিহাল:…..
মেরিন: বলো তারাতারি। তুমিই তো জানোই মাঝে মাঝে রান্না করতে আমার দারুন লাগে। এখন বলো কি খাবে??
নিহাল:……
মেরিন: বলবেনা??? ok….
নিহাল: চিত পিঠা দিয়ে হাসের মাংসা সাথে রুটি পিঠা।
মেরিন ১গাল হেসে
বলল: আর মিষ্টিতে???
নিহাল: বুটের হালুয়া।
মেরিন: yes sir…..
বলেই মেরিন রান্নাঘরে চলে গেল। নিহাল মেরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। গাঢ়ো করে আলতা দেয়া মেরিনের পায়ে। সাথে নুপুরও আছে।
নীলিমা: কি??? মেরিনের মায়ায় পরে গেলেনা..
নিহাল: হ্যা মানে না। তুমি ওকে মায়ের শাড়ি দিলে কেন???
নীলিমা: কারন ও তোমার মা বলে… actually তোমার মার থেকে সুন্দর।
নিহাল: 😒😒😒।
মনে মনে: সত্যি মায়ের মতো লাগছে।

দুপুরে সবাই কব্জি ডুবিয়ে খেলো।

.

বিকালে….
নীড় হলরুমে বসে TV দেখছে। তখন ওর বন্ধুরা এলো।
নীড়: আরে guys তোরা?? কতোদিন পর।
সুর্য: হামম। তোর কি খবর???
আকাশ : আরে বিন্দাসই হবে…. অমন হট ১টা বউ থাকলে আর কি লাগে জীবনে???
নীড়ের রাগ লাগলেও control করলো।
নীড়: আয় বোস।
সবাই বসলো।
রাব্বি: কি রে তোর সুপার হট বউটা কোথায়রে??
ইমান: থামবি তোরা??
সুর্য: কেন থামবো রে….. ওই মামমা বললো তোমার বউটা কই???
নীড়: তোরা এতোদিন পর আমার সাথে দেখা করতে এসেছিস না কি আমার বউকে দেখতে এসেছিস??😠😠😠 ।
আকাশ : তোর বউকে দেখতে। জ্বলজন্ত পটাকাটাকে দেখতে…. সেই বিয়ের দিন দেখেছিলাম। একটু ডাক দেনারে……
নীড়: পারবোনা।
রাব্বি: এটাকি বউ এর ওপর রেগে বললি না আমাদের ওপর রেগে??🤔🤔🤔।
সূর্য: আরে বউয়ের ওপর রাগবে কেন? এতো সুন্দরী বউয়ের ওপর কি আর রাগ করা যায়???😉😉।
আকাশ : মামমা ভুলে যেয়ো না যে নিরাকে নীড় বাবু মন থেকে ভালোবাসে। যাকে বলে true love…..
ইমান: এই তোর সব চুপ করবি? নাকি আমি চলে যাবো??
সূর্য: তুই চলে যা। 🙊🙊🙈🙈🙉🙉।
ইমান: ok…
ইমান চলে যেতে নিলো।

নীড়: আরে আরে আরে… কোথায় যাচ্ছি?? বস।
নীড় ইমানকে যেতে দিলোনা। জোর করে বসিয়ে দিলো। তখনই মেরিন mobile এ কথা বলতে বলতে সিড়ি দিয়ে নামছে। ও নীড়ের বন্ধুদেরকে খেয়াল করেনি।

.

নীড় মনে মনে: এর এখনই আসার ছিলো???🤬🤬🤬।
ইমান ছারা সবগুলা চোখ ফাটিয়ে মেরিনকে দেখছে। মেরিন ওদেরকে দেখে ফোনটা কেটে ওদের সামনে গেলো।
মেরিন:hello ভাইয়ারা….
ইমান:hi… আপুনি…
বাকীরা: hay…😍😍😍….
সবগুলোর তাকানো দেখে মেরিনের ইচ্ছা করছে ওদের চোখ তুলে নিতে।
রাব্বি: তুমি অমায়িক সুন্দর….
মেরিন: thank you ভাইইইয়া… আপনারা বসুন আমি আপনাদের নাস্তার ব্যাবস্থা করছি।

বলেই মেরিন রান্নাঘরে গেলো। গিয়েই জনকে ফোন করলো।
মেরিন: hello জন…. নীড়ের বন্ধুদের চেনো তো???
জন:জী ম্যাম। এখন আপনাদের বাসায়।
মেরিন: হামম। আমাদের বাসায় থেকে বেরিয়ে যেতেই ইমান ভাইয়া ছারা বাকীদের এমন অবস্থা করবে যেন ৬মাসের আগে হাসাপাতালের বেডে থাকে।
বলেই মেরিন ফোন রেখে দিলো।

.

ওদিকে….
আকাশ : কি ফিগার রে….
রাব্বি:হামম রে।
ইমান: ভুলে যাসনা ও নীড়ের বিয়ে করা বউ।
রাব্বি: চুপ থাকতো। নীড় ওকে বউ বলে মানেনা। মানলে যে নীড় কোনো মেয়ের অপমান সহ্য করেনা তার সামনে তার বউয়ের নামে এমন কথা বললে আমরা এখনও জিন্দা থাকতাম নাকি???
সুর্য: তাইলে আবার……
আকাশ : ওই তোর বউকে তালাক দিলে আমি বিয়ে করবো।

নীড় কিছু বলতে নিবে তখনই মেরিন হাজির। সবাইকে চা-নাস্তা পরিবেশন করতে লাগলো। তখন হুট করে ওর শাড়ির পেছনের পিনটা খুলে গেলো। যার জন্য ওর পিঠ আর কোমড় দেখা যেতে লাগলো। আর বাঙালভাবে শাড়ি পরলে কোমড় আর পিঠ দেখাই যায়। মেরিন খেয়াল করলোনা। নীড়ের তো দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। মেরিন ওর দিকে তারাচ্ছেও না যে বলবে। নীড় উঠে মেরিন কাছে যেতে লাগলো। কিন্তু মেরিন তখন আকাশ চা দিয়ে ওকে just cross করে রাব্বিকে চা দিচ্ছিলো। তখন অসভ্য আকাশ মেরিনের খোলা কোমড়ে হাত দিলো। মেরিন ঘুরে থাপ্পর দেবে তার আগেই নীড় এসে আকাশকে বেরোধক পেটানো শুরু করলো। ইমান ছারা বাকি বন্ধুরা এসে আটকালো।

.

আকাশ : তুই ওই মেয়েটার জন্য তোর ১৭ বছরের বন্ধুর গায়ে হাত ওঠালি?? কে হয় ও তোর?? বল কে হয় এই বাজে মেয়েটা তোর।
নীড়: ওকে সম্মান দিয়ে কথা বল। ও আমার বউ।
এটা শুনে মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে ঘুরলো।
রাব্বি: বউ.. এই মেয়ে কারো ঘরের বউ হওয়ার উপযোগ্য না এই মেয়েতো …
আর বলতে পারলোনা। নীড় রাব্বিকেও পিটাতে লাগলো। নীড় সবগুলাকে পিটাতে লাগলো। ইমান দর্শক হয়ে দেখছে।
আর মেরিন….
ওর সময় তো তখনই থেমে গেছে যখন নীড় বলেছে
“ও আমার বউ”।

.

মারামারির শব্দ পেয়ে নিহাল-নীলিমা ছুটে এলো। ততোক্ষনে নীড় সবকটাকে সাবান ছারাই ধোলাই করে ফেলেছে। বহু কষ্টে নিহাল নীড়কে থামালো। মারাত্মকভাবে আহত বন্ধুরা চলে যাবার
আগে বলে
গেল: আজ থেকে তোর দুশমনদের নামের তালিকায় আমাদের নাম যোগ করে নিস……

.

ওরা যেতেই নীড় মেরিনকে কাধে করে রুমে নিয়ে গেলো।
নিহাল: কি হলো?
নীলিমা: তোমার বাজীতে হারার ১ম ধাপ….
নিহাল: মানে??
নীলিমা: মানে #ঘৃণারমেরিন ভালোবাসার মেরিন হয়ে ওঠার সূচনা। রুমে…..

.

নীড় মেরিনকে রুমে নিয়ে দারকরিয়ে ১টানে শাড়িটা খুলে ফেলল। এরপর আগুন দিয়ে শাড়িটা পুরিয়ে ফেলল।
নীড়: নিজের শরীর দেখানোর খুব শখ থাকলে আমাকে তালাক দিয়ে কোনো পতিতালয় গিয়ে দেখাবা। 🤬🤬🤬।

তোমার সবটা তে কেবল আমার অধিকার। বুঝছো?
আর যদি কখনো শাড়ি পরতে দেখেছি তো এই শাড়ির জায়গায় তোমারে পুরিয়ে ফেলে তারপর নিজেকেও শেষ করে দিবো….. mind it……

বলেই নীড় গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলো। আজকে নীড়ের কথায় মেরিনের চোখে পানি চলে এলো। না কষ্টের না। আনন্দের। মহা আনন্দের। নীড় ওকে বউ বলে মেনেছে। ওর জন্য নিজের ১৭বছরের বন্ধুদের মেরেছে….. এর থেকে সুখের মেরিনের জন্য কিছুই নেই। মেরিনের সুখের আজকে কোনো সীমা নেই। খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। স্থির হয়ে গেছে।

.

রাত১১টা……
নীড় ফিরে এলো। দেখতে পেলো…

মেরিন এখনো সেভাবেই দারিয়ে আছে যেভাবে ওকে রেখে গিয়েছিলো। নীড় অবাক হয়ে গেলো। ধীর পায়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড়: মেরিন…..
ব্যাস নীড়ের এই ডাক দেয়ার দেরি আছে। মেরিনের নীড়ের বুকে ঝাপিয়ে পরতে দেরি নেই। মেরিন নীড়কে জোরে জরিয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো করে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। নীড় অবাক হয়ে গেলো। নীড়ও মেরিনকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। কাদতে কাদতে মেরিন নীড়ের বুকেই অজ্ঞান হয়ে গেলো।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here