গল্পের নাম: হটাৎ এক বৃষ্টির দিনে,পর্বঃ৬ রাগী অভি,পর্বঃ৭ I Love You

গল্পের নাম: হটাৎ এক বৃষ্টির দিনে,পর্বঃ৬ রাগী অভি,পর্বঃ৭ I Love You
নবনী নীলা
পর্বঃ৬ রাগী অভি

রচনাকে শাকিলের পাশে বসিয়ে পিছে ফিরতেই দেখি অভি আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা হলুদ রঙের পাঞ্জাবির সাথে সাদা প্যান্টে সুদর্শন যুবক লাগছে তাকে। অভি হাত ভাঁজ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। খুব মনযোগ সহকারে আমাকে দেখছে। আসে পাশের সবার দৃষ্টি আমাদের দিকে। আমার অসস্তিবোধ হলো আমি রচনার পাশে গিয়ে বসলাম।

অভি এগিয়ে এসে শাকিলের সাথে হ্যান্ডশেক করলো। শাকিল দাড়িয়ে অভিকে জড়িয়ে ধরলো। রচনা আর আমি একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। এরা মনে হয় আগে থেকেই একে অপরকে চিনে।

অভি বলে,” তাহলে শাকিল শেষমেশ বিয়ে করছো। কড়া মেজাজের একটা বউ পেয়েছো।”

” আমাকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কিছু বললে তোমাদেরই বিপদ। বুঝে শুনে কথা বলো।”, রাগ করার ভান করে বললো রচনা।

” নাহ্ তোমাকে কি আমরা কিছু বলেছি?”,শাকিল বললো।

একটা প্রজেক্টের কাজে শাকিল আর অভির দেখা হয় তখন থেকেই ভালো বন্ধু তারা। হোটেলের ছাদে আমরা সবাই। যেই ফ্লোর এ হলুদের অনুষ্ঠান হবে সেখানে কিসের আয়োজন চলছে বড়রা আমাদের সেখানে যেতে দিচ্ছে না।

আমি আমাদের কিছু ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলাম। ঋতু,নীলিমা, শৌভিক ওরা সবাই এসেছে। ওদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম আমি। আমরাএকটু আছি সুইমিং পুলের কাছে।
হটাৎ আমার মোবাইল বেজে উঠলো অভীর কল। উনিমনে হয়আমাকেখুঁজছে।
এদিকে এতো গান চলছে আমি তাই দূরে আসলাম যাতে কল রিসিভ করতে পারি। উষ্ঠা খেয়ে ফোনটা হাত থেকে পড়ে সুইচ অফ হয়ে গেছে। আমি ফোনটা তুলে ঠিক করার চেষ্টা করছি।

এদিকে সবাই নিচে যাচ্ছে সেদিকে আমার খেয়াল নেই আমার ফোন কেনো অন হচ্ছে না এটাই আমার জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো সমস্যা।
সামনে তাকিয়ে দেখি রাহাত ভাই এদিকেই আসছে। উনি আমার সামনে এসে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে আছেন। ওনাকে পাত্তা দেয় কে?

” কি করছো নওরীন?”,বললেন রাহাত ভাই। একে আমার দেখতেই ইচ্ছে করে না অসহ্য।

” আমি নৌকা চালাচ্ছি,দেখতেই যখন পাচ্ছেন আবার জিজ্ঞেস করছেন কেনো?”,রেগে বললাম আমি।

” মনে হচ্ছে তুমি রেগে আছো। আজকে তোমাকে অন্যরকম সুন্দর লাগছে।”,বলেই একটু হাসলেন রাহাত ভাই।

অন্যরকম সুন্দর জিনিসটা কি? যখন থেকে সেজেছি সবাই এসে একই কথা বলছে অন্যরকম সুন্দর, আগের থেকে সুন্দর হয়ে গেছিস। রাহাত ভাই আবার বলছে, ওনার কথা শুনে মাথাটা গরম হয়ে যাচ্ছে। আমি ওনাকে পাত্তাই দিলাম না ফোনটা খুলার চেষ্টা করছি।

” তোমার থেকে চোখ সরাতে পারছি না। তোমার বরের একটা ব্যাবস্থা করতে পারলে তোমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলতাম।”, নির্ভয়ে কথাগুলো বলে যাচ্ছে রাহাত ভাই। ওনাকে আমি পড়ে দেখে নিচ্ছি আগে আমার ফোনটা ঠিক হোক।

আমি কিছু বলার আগে দেখি রাহাত ভাই ভয়ে একটা ঢোক গিলছেন। আমি পিছে ফিরতেই অভির বুকে ধাক্কা খেলাম। অভি মুখ আর হাত শক্ত করে দাড়িয়ে আছে। অভি কি সবটা শুনেছে। এমন রাগী চেহারা আমি দেখিনি অভির।

অভি আমাকে টেনে দূরে সরিয়ে রাহাত ভাইয়ের সামনে গেলো। পাঞ্জাবির হাতা গুঁজতে গুঁজতে বললো,” ভাই আপনি কি বলছিলেন যদি আরেকবার বলতেন। একটু স্পষ্ট করে আমার সামনেই বলুন।আমার নাকি আপনি ব্যাবস্থা করবেন।”, অভির কথার গাম্ভীর্য ভাবেই আমি ভয় পাচ্ছি।

আমি একটু চিন্তা করলাম আমি ভুল ভাল কিছু বলেছি কিনা কারণ শেষ বোমাটা তো আমাকেই মারবেন উনি। নাহ্ চিন্তা করে আমার কোনো দোষ খুজে পেলাম না।
রাহাত ভাই একটু বেশি কথা বলে উনি পারে না এক আনা কথা বলে দশ আনা।

রাহাত ভাই হেসে ব্যাপারটা সামলে নিতে চাইলেন কিন্তু অভির মুখের গাম্ভীর্য ভান যায় নি। পরে রাহাত ভাই বললো,” মজা করছিলাম।” আসছে মজা করেছি বলবে আর অভি বিশ্বাস করে নিবে এই বলদ লোকটা আবার এটা ভাবছে।

অভি বললো,” রাতে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কখন মার খেয়েছেন। কখনো বস্তায় ভরে কেউ মেরেছে আপনাকে?”

রাহাত ভাই আবার ঢোক গিললেন। আমি অভির কথা শুনে অবাক এইরকম গুন্ডা মার্কা কোথাও বলতে পারেন উনি।

অভি পাঞ্জাবির হাতা নামতে নামতে বললো,” আপনাকে যেনো আমি আর কোনোদিন আমার ওয়াইফের আসে পাশে না দেখি। রাস্তায় তো বের হতেই হয় কখন কি হয়ে যায় বলাতো যায় না।”

রাহাত ভাই এই প্রচন্ড বাতাসে ঘামিয়ে শেষ।
অভি আরও বললো,”যা বলেছি সেটা বুঝতে পারলে আসুন এবার।”

রাহাত ভাই ঘাম মুছতে মুছতে চলে গেলেন। অভি আমার দিকে ফিরে আমার হাত ধরে এনে নিজের সামনে দাড় করালো। আমার দুইপাশের রেলিং ধরে আমার দিকে ঝুঁকে বললো,”তুমি এতক্ষন কি করছিলে?”অভির মুখের গাম্ভীর্য ভাব এখনও কাটেনি। ধুরো আমি কেনো ভয় পাচ্ছি আমি তো কিছু করিনি।
আমি নির্ভয়ে বললাম,” আমি আমার ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলাম।”

” আচ্ছা, তা কোথায় তোমার ফ্রেন্ডরা?”

আমি আসে পাশে তাকিয়ে দেখি পুরো ছাদ ফাঁকা আমি আর অভি ছাড়া কেউ নেই। আমার মুখ হাঁ হয়ে গেলো আমি বলে উঠলাম,” কোথায় সবাই?” অভি আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,” তোমার ফোনের কি হয়েছে?”

আমি বললাম,” হাত থেকে পড়ে ফোন অজ্ঞান হয়ে গেছে।”

অভি মুখ শক্ত করে আছে। এবার আমি একটা ঢোক গিললাম।বাতাসে আমার চুল গুলো উড়ছে কয়টা চুল গিয়ে অভির মুখে পড়েছে আমি তাড়াতাড়ি চুলে একটা খোঁপা করে ফেললাম। এর মাঝে অভি কোন কথা বলল না আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে। কেমন কেমন জানি লাগছে।

অভি সোজা হয়ে দাড়িয়ে দুই হাত বুকের কাছে ভাজ করে দাঁড়ালো। আমি একটা শান্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। অভি আমাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বললো,” এতো সেজেছো কেনো?”

এটা আবার কেমন কথা? এমন কথা আমি এর আগে শুনিনি। আমি প্রশ্ন করলাম,” মানে, আমাকে কি খারাপ লাগছে দেখতে?”

অভি বললো,” হুম বাঁদরের মতন লাগছে।”

” কি বললেন আপনি! বাঁদরের মতন লাগছে? রাহাত ভাই আর সবাই যে বললো ভালো লাগছে।”, মন খারাপ করে বললাম।

” হ্যা এক বাঁদরের তো আরেক বাদরকে ভাল্লাগবে এটাই স্বাভাবিক।”, বললো অভি।

” আপনি আমাকে বাঁদর বললেন তো আমি বাঁদর হলে আপনি কি,আপনি গরিলা। আপনার সাথে আমি কথাই বলবো না।”,বলে আমি চলে যেতেই অভি আমার ওড়না ধরে ফেললো।

আমি ওড়না ছড়ানোর চেষ্টা করছি অভি ওড়না ধরে আছে। আমি বললাম,” অসভ্যতা করছেন কেনো? ছাড়ুন আমার ওড়না।”

অভি আমার কোমর ধরে ওর কাছে নিয়ে বলে,” অসভ্যতা কি দেখতে চাও? দেখবো তোমাকে।”

[ চলবে ]

গল্পের নাম: হটাৎ এক বৃষ্টির দিনে
পর্বঃ৭ I Love You
নবনী নীলা

অভি আমার কোমর ধরে ওর কাছে নিয়ে বলে,” অসভ্যতা কি দেখতে চাও? দেখবো তোমাকে।”
আমি মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকালাম। আমাকে বাঁদর বলা হয়েছে ইচ্ছে করছে বাঁদরের মতন এনার চুল ধরে টান মারি। দাড়ি থাকলে বেশি সুবিধা হতো। ইনি তো আবার ক্লিন শেভ করেন। অভি একহাত দিয়ে আমার মুখ ধরে নিজের দিকে ঘোরালো।

এমন সময়ে রচনা এসে হাজির মনে হয় আমাদেরকে খুঁজতেই এসেছে। রচনা একটু কেশে উঠে বললো,” বর বউয়ের প্রেম শেষ হলে যদি একটু নিচে এসে আমার গায়ে হলুদে মনযোগ দেওয়া হয় তাহলে বড় খুশী লাগতো।” বলেই রচনা ঠোঁট টিপে হাসছে।

এই লোকটাকে আমি অসভ্য বলেছি এবার তো দেখি নিলজ্জও বটে। একখনো আমাকে ধরে আছে। আমি ওনাকে একটা ঠেলা মেরে চলে আসি রচনার সাথে।

অনুষ্ঠান শেষ হতে প্রায় রাত 2টা বেজে গেছে সবাই বেশ tired। রচনা আর শাকিলকে কাল অনেক ধকল সামলাতে হবে এইসময় আবার জার্নি করে বাড়ি ফেরা ওদের জন্যে কষ্টের হবে তাই কয়েকজন গার্জিয়ান ওদের সাথে হোটেল এ থেকে গেলো।
আমি রচনার সাথে রুমে এলাম।
এদিকে অভি,শাকিল আর তাদের সাথে এক বড় ভাইকে দেওয়া হয়েছে রুমে।

গোসল সেরে রিলাক্স হয়ে দেখি ২টা ৪৫মিনিট। পুরো অনুষ্ঠানে আমি অভির থেকে যত সম্ভব দূরে দূরে থেকেছি। তাকে পাশ কাটিয়েও চলে গেছি। রাহাত ভাইকে আমার আসে পাশে তো দূর অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি। রচনা গোসল সেরে এসে বললো,” ওই ছাদে যাবি?”

আমি বললাম,” তোর কি মাথা খারাপ এতো রাতে ছাদে যাবো। এখন ছাদে গিয়ে করবিটা কী?”

” শাকিল আমাকে অনেকবার করে বলেছে রাতে যেনো ছাদে যাই।আমি না বলে মোবাইল সুইচ অফ করে রেখেছি।”, শান্ত গলায় বললো রচনা।

” কিন্তু আবার জামা বদলাতে হবে আমার।”, বিরক্ত নিয়ে বললাম আমি।

” কেনো ভালোই তো লাগছে জিন্স আর শার্ট পরে আছিস। এভাবেই যাবো আমরা।”

” আমি বিয়ের পর এইগুলা পরিনি। এখন যদি অভি ওখানে থাকে কেমন আজব লাগবে না?”,একটু চিন্তিত হলাম বলে।

” জামাইর সামনে এইডি পইরা যাইতে পারো না, বাচ্চা পয়দা করবা কেমনে?” রচনার কথা শুনে আমি ভ্রু কুঁচকে ফেললাম।রচনা মাঝে মাঝে বয়স্ক দাদিদের মতন কথা বলে। এই ধরনের কথা আমার একদম পছন্দ না।
রচনা আরও বললো,” ভাল্লাগে নাই কথা শুনে? তোর ভাগ্য ভালো অভির মতন জামাই পাইসস নইলে এতো দিনে…”

রচনাকে আমি আর কিছু বলতে না দিয়ে বললাম আচ্ছা চল। আমি না গেলে এই মেয়ে আমাকে আরো কথা শুনাইতো। লিফট ছাদে এসে থামলো। আমার ধারণা ঠিক অভি আর শাকিল দুজনেই আছে। রচনা স্বাভাবিক ভাবে শাকিলের সামনে গিয়ে বললো,” কি জন্যে আসতে বলেছো তাড়াতাড়ি বলো।”

অভি নিজের ফোন নিয়ে ব্যাস্ত এতো বড়ো ছাদ ফাঁকা শুধু আমরা চারজন। শাকিল আর রচনা কথা বলতে বলতে অনেকটা দূরে গেলো। অভি আমার দিকে তাকিয়েছে কিন্তু কিছু বলেনি। এবার আমার ভয় লাগছে রাত ঘড়িতে ৩টা বেজে ২০ মিনিট। উপায় না পেয়ে অভির কাছে গিয়ে দাড়ালাম। পুরো শহরটা দেখা যাচ্ছে চারিদিকে শুধু অন্ধকার মাঝে কিছু রাস্তার লাম্পগুলোর আলো।

ধুরো আর দাড়িয়ে থাকতে পারছি না।আমি ছাদে অভির পায়ের কাছে বসে পড়লাম। অভি ভ্রু কুঁচকে বললো,” কি করছো তুমি?”
” দাড়িয়ে থাকতে ভাল্লাগছে না।”,বলেই আমি পিছনের রেলিংয়ের সাথে হেলান দিয়ে অভিকে দেখতে লাগলাম।
আমার শাশুড়ি বিয়ের আমাকে যা বলেছে সেটা যদি সত্যি হতো আমি খুশি হতাম। উনি আমাকে ডেকে অভি আর অথৈর কথা বলেছে। আমি চুপ করে শুনেছি সব।

” wife হিসাবে এইগুলো জানা তোমার দরকার। আমার ছেলে তোমাকে এইগুলো হয়তো কোনদিন বলবে না। সে বিয়ের আগে প্রতিটা মেয়েকে একই কথা বলেছে যাতে কোনো মেয়ে অভিকে বিয়ে করতে রাজি না হয়। তোমার ক্ষেত্রে তুমি কেনো রাজি হয়েছো সেটা একটা বিস্ময়। হয়তো ছেলেমানুষী করে ফেলেছো। কিন্তু সত্যি কথা হলো অথৈয়ের প্রতি অভির কোনো পিছুটান নেই। বিয়ে নিয়ে সে আমাকে সোজাসুজি না করবে না কারণ তাতে আমি কষ্ট পেতাম। তাই সে প্রতিটা পাত্রীকে সত্যের সাথে কিছু মিথ্যা বলেছে।”

আমি কথা গুলা মূর্তির মতন শুনছিলাম।তিনি আরো বলেন,” অথৈয়ের বিয়ে আগে থেকেই ঠিক করা ছিলো।একদিন অথৈয়ের হবু বর অভির অফিসে গিয়ে অভিকে সবটা বলে। তারপরের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে অথৈকে অভি ভালোবাসে না মা হিসাবে আমি তোমাকে এতটুকু আশ্বাস দিতে পারি।”

আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো ভাবতে লাগলাম। আকাশে কি সুন্দর তারা, চাঁদটাকেও কি সুন্দর লাগছে। হটাৎ অভি আমার পাশে বসে পড়লো। শাকিল আর রচনার কথা শেষ হচ্ছেই না। এরা আজ সারারাত জেগে থাকার প্ল্যান করেছে নাকি। অভি হটাৎ আমার কাঁধের উপর নিজের এক হাত দিয়ে অন্য হাতে আমার আরেক হাত ধরে আমার কাছে এসে বললো,” ভয় পেয় না।”

আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই টাস টুস শব্দ হলো। হটাৎ এমন আওয়াজে আমি চিৎকার দিয়ে অভির গলা জড়িয়ে ধরি। আমি হার্ট বিট দৌড়াচ্ছে রীতিমতন। অভি আমার পিঠে হাত রেখে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,” সামনে তাকাও।”

আমি কিছু না বুঝে গলা জড়ানো অবস্থায় সামনে তাকিয়ে দেখি আকাশে রং বেরঙের আতশবাজি। আমি মুকগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি। তারমানে এই আতশবাজির কথা অভি জানত তাই আমাকে ভয় পেতে না করেছে।

সবশেষে আকাশে I Love You কথাটা লেখা উঠলো। কি যে সুন্দর লাগছিল বলে বোঝানো যায় না।আমি হা করে তাকিয়ে আছি। সামনে তাকিয়ে দেখি রচনা শাকিলকে জরিয়ে ধরলো।

আমি চমকে উঠে অভির দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করলাম আমি এখনও তার গলা জড়িয়ে ধরে আছি। আমি তাড়াতাড়ি সরে গেলাম।
অভি বলে উঠলো,” এতো রাতে এমন পাগলামির কোনো মানে আছে? শাকিলের মাথায় মাঝে মাঝে উল্টা পাল্টা চিন্তা আসে এমন।”

” কিসের পাগলামি? কত রোমান্টিক ছিলো ব্যাপারটা, কিউটও ছিলো। ” বললাম।

” Really! তোমার কাছে এতো রাতে ঘুম নষ্ট করে, মশার কামড় খেয়ে এইটা রোমান্টিক লাগছে?”, আমার দিকে তাকিয়ে বলল অভি।

” হ্যা, কত সুন্দর ব্যাপারটা। সবাই পারে না রোমান্টিক হতে।”, বলেই আমি হাসলাম।

” বাহ্ এইগুলা তো দেখি ভালোই বুঝো।”

কথাটা শুনে আমি একটু লজ্জা পেলাম। অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম।

সকালে ঘুম ভেগে দেখি ১১টা বাজে।কিন্তু আমি তো ছাদে ছিলাম রুমে এলাম কি করে? রচনা মুখ মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো। আমি উঠে বসতে বসতে বললাম,” আমি এখানে এলাম কি করে?”

” তোর জামাইয়ের কোলে করে।” বলেই রচনা শয়তান মার্কা হাসি দিচ্ছে। আমি হা হয়ে তাকিয়ে আছি।

” তুই তো অভিদার কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলি। পরে তোকে কোলে করে রুমে শুইয়ে গেছে।”

আমি বুঝি না আমি ঘুমালেই এই লোকটা আমাকে কোলে নেয় কেন?আজ পর্যন্ত আমি সেটা নিজের চোখে দেখলাম না আমাকে কোলে নিতে দুনিয়ার সবাই দেখে বসে আছে। আমি এমন কুম্রপটাসের মতন ঘুমাই কেনো? একটা মানুষ আমাকে ঘুমের মধ্যে কোলে নিলো অথচ আমি জানি না।

[ চলবে ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here