গল্প:রঙহীন জীবনের রঙ,পর্ব ১৬,১৭

গল্প:রঙহীন জীবনের রঙ,পর্ব ১৬,১৭
লেখনীতে:স্বর্ণা সাহা (রাত)
পর্ব ১৬

গাড়িতে দু’জন বসে আছে। নীলাদ্রি গাড়ি চালাচ্ছে আর দিশানী বাইরের পরিবেশ উপভোগ করছে।দুজনের নীরবতার মাঝে শুধুই গাড়ি চলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। নীরবতা ভেঙে নীলাদ্রিই বললো,
—কিছুদিনের মধ্যেই ফর্মটা জমা দিতে হবে, একদিন সকালে আমার সাথে গিয়ে ফর্মটা পূরণ করে জমা দিও।

দিশানী নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে বললো,
—আচ্ছা,জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট কবে?

—আর সাতদিন সময় আছে!

—ওহ! আপনি তো খুব বিজি মানুষ।একটা কাজ করুন, আপনার এই সাতদিনের মধ্যে যেদিন আপনি ফ্রি থাকবেন সেদিন গিয়ে ফর্ম জমা দিয়ে আসবো নাহয়।

—ঠিকাছে!আমি ফোন করে জানিয়ে দেবো কোনদিন আমি ফ্রি থাকবো!

—হুম!ক্লাস কবে থেকে শুরু হবে?

—তোমার ডিভোর্স এর পর পরই ক্লাস শুরু হয়ে যাবে!

—আচ্ছা

কিছুক্ষন চুপ থেকে নীলাদ্রি দিশানীকে জিজ্ঞেস করলো,
—ডিভোর্স এর পর কোথায় থাকবে, বাপের বাড়ি চলে যাবে নাকি?

—এসব প্রশ্নের উত্তর নেই আমার কাছে, ভার্সিটির হোস্টেলেই উঠবো হয়তো!

—এখনো হয়তোর মধ্যেই আছো তুমি?

—ওই হোস্টেলেই উঠবো!

—মেঘা আর সৌম্য তোমার ভার্সিটির ফর্মের ব্যাপারে আগে থেকেই জানতো, মেঘা আর সৌম্য তখন বলেছিলো তোমাকে ওদের বাড়িতে থাকতে বলবে, মেঘা ফোন করবে বলে দিয়েছে আমি তবুও আগে থেকেই বলে রাখলাম আগে থেকেই ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখো।

—আর কতজনের বোঝা হবো আমি? একেই আপনার ওপর আমি একটা বোঝা হয়ে গেছি আবার মেঘা আর সৌম্যর বোঝা হওয়ার কি দরকার?

—তুমি নিজেকে আমার বোঝা মনে করছো দিশানী? এইটা তোমার থেকে আশা করিনি আমি!

—বোঝাই তো!প্রথমে ছিলাম ভাইয়ের বোঝা তারপর হলাম শশুরবাড়ির বোঝা আর এখন আপনার!আমি বোঝা ছাড়া আর কি?

—এর পর থেকে এসব চিন্তা আর মাথাতেও আনবে না বুঝতে পেরেছো?তোমার মুখে এসব কথা মানায়না।

—আমার জীবন নিয়ে তো এতো চিন্তা আপনার, নিজের জীবন নিয়ে কি ভাবলেন শুনি?

—আমার জীবন নিয়ে আর কি ভাববো? ওই চলছে ভালোভাবেই!

—সেকি বিয়ে-টিয়ে করবেন না?

দিশানীর কথা শুনে নীলাদ্রি ভ্রু কুঁচকে দিশানীর দিকে তাকালো। দিশানী হেসে ফেললো আর বললো,
—সামনে তাকান!সামনে তাকান!এক্সিডেন্ট করাবেন নাকি?

নীলাদ্রি দিশানীর কথা শুনে সামনে তাকালো তারপর বললো,
—এক্সিডেন্ট করানোর মতো কথা বললে তো এক্সিডেন্ট হবেই তাইনা?

—আমি আবার এক্সিডেন্ট করানোর মতো কথা কোথায় বললাম? আমি তো আপনার বিয়ের কথা বলেছি।

—এটা এক্সিডেন্ট করানোর মতোই কথা!

—কেনো বিয়ে করার ইচ্ছা নেই নাকি?

—না!বিয়ে আমি করবোনা!

দিশানী মজা করে বললো,,
—এ বাবা তাহলে আমার ননদটির কি হবে, বেচারি তো আপনাকে পছন্দ করে!

—বিশ্বাস করো দিশানী তখন এক্সিডেন্ট না হলেও এখন কিন্তু এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি!

—সেকি কেনো?

—তোমার ননদকে বিয়ে?মানে তোমার ননদকে বিয়ে করার থেকে সারাজীবন সন্ন্যাসী থাকা ভালো। তোমার ননদিনীটিকে যে বিয়ে করবে তার কপালে দুঃখ আছে, ওই পরিবারের সংসারটাই শেষ হয়ে যাবে।

—ইশ!আপনি যদি এসব বলেন তাহলে তো বেচারী সিঙ্গেল মরবে।

—সিঙ্গেল মরাও কিন্তু একটা আর্ট!তোমার ননদিনী যদি সিঙ্গেল মরে তাহলে ওটা ওর জীবনের সবচেয়ে ভালো কাজ হবে।

দিশানী নীলাদ্রির কথা শুনে নীলাদ্রির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।তারপর বললো,
—মানে টা কি? আপনারও সিঙ্গেল মরার প্ল্যান আছে নাকি?বিয়ে-টিয়ে করবেন না?

—অন্য কাউকে বিয়ে করে তার লাইফটা আমি নষ্ট করতে পারবোনা,কারণ অন্য কাউকে বিয়ে করলে তাকে আমি কোনোদিনই মন থেকে ভালোবাসতে পারবো না।

—মানে?

নীলাদ্রি গাড়ি থামিয়ে বললো,
—তুমি যেখানে নামবে বলেছিলে সে জায়গাটা এসে গেছে।

দিশানী বাইরে তাকিয়ে দেখলো, ওর বাড়ির কাছে পৌঁছে গেছে। দিশানী গাড়ি থেকে নামলো। তারপর নীলাদ্রিকে “আসছি” বলে বাড়ির দিকে হাঁটা দিলো।দিশানীকে নীলাদ্রির গাড়ি থেকে নামতে একজন দেখলো। সেই একজনটি হলো নির্ঝর। নির্ঝরের ঘরের বেলকনি থেকে ওই রাস্তাটা পরিষ্কার দেখা যায়, ল্যাম্পপোস্টের আলোয় নির্ঝর স্পষ্ট বুঝলো মেয়েটা দিশানী। নির্ঝর দেরি না করে দ্রুত নিচতলায় নামলো।
দিশানী বাড়িতে ঢুকে ড্রয়িংরুমে আসতেই নির্ঝর দিশানীকে জিজ্ঞেস করলো,
—কোথায় গেছিলে তুমি?

দিশানী ভারী কণ্ঠে উত্তর দিলো,
—মেঘাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, বলে গেছিলাম তো তুমি শুনতে পাওনি?

নির্ঝর রেগে গিয়ে বললো,
—মেঘাদের বাড়িতে যখন গেছিলে তাহলে তোমাকে একটা অন্য ছেলে এসে বাড়িতে দিয়ে গেলো কেন? একটা পরপুরুষের গাড়ি থেকে নামলে কেন তুমি?কে হয় ওই ছেলেটা?বান্ধবীর বাড়িতে যাওয়ার নাম করে নষ্টা মেয়ের মতো নষ্টামী করে বেড়াও তুমি?

নির্ঝরের এসব কথা শুনে দিশানী রেগে গিয়ে ঠাস ঠাস করে একটার পর একটা করে চারটা থাপ্পড় বসালো নির্ঝরের দুই গালে। তারপর নির্ঝরকে উদ্দেশ্য করে বলতে শুরু করলো,
—এই শয়তান ছেলে! কাকে তুমি নষ্টা মেয়ে বলছো, আমাকে? তাহলে তুমি কি?ডিভোর্স না হতেই যে ছেলে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে যায় তাকে কি বলা চলে, নষ্টা ছেলে? আরে গাধা আমি নষ্টা মেয়ে না তুমি নষ্টা ছেলে।তুমি শুধু নষ্টা ছেলে না, তুমি একটা কাপুরুষ!

নির্ঝর এসব কথা শুনে রেগে গিয়ে বললো,
—তোমার সাহস তো কম না তুমি আমাকে কাপুরুষ বলছো!
নির্ঝর এই কথা বলে দিশানীর গায়ে হাত ওঠাতে নিতেই দিশানী চিৎকার করে উঠে বললো,
—খবরদার!গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করবে না বলে দিলাম। কোন সাহসে তুমি আমার গায়ে হাত তুলছো? কে তুমি?তোমার মতো কাপুরুষ কে কাপুরুষ বলবো নাতো কি সুপুরুষ বলবো?আরে তোমার মতো ছেলেকে সুপুরুষ বললে সুপুরুষ শব্দটাকে অপমান করা হবে!আরে কেমন পুরুষ তুমি?মানলাম আমাদের ডিভোর্স হচ্ছে কিন্তু আমি তো এখনো তোমার বিয়ে করা বউ তাইনা?তুমি জানো তোমার বউ বান্ধবীর বাড়ি থেকে রাত করে ফিরবে,যেখানে এখনকার দিনকাল এতোটা খারাপ সেখানে তুমি পারতেনা আমাকে মেঘাদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে? কিন্তু না তুমি তো সেটা পারবে না। উল্টো কেউ তোমার বউকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেছে, সেখানে তুমি তোমার বউকে নষ্টা মেয়ে বলছো।বাহ্!কত্ত সুন্দর স্বামী তুমি!আরে তোমার তো মেরুদন্ডটাই নেই। তুমি তো তোমার মা-বোনের খেলার পুতুল, তারা যা বলে তুমি তাই শোনো। তোমার তো ঠিক-ভুল বিচার করার মতো বিবেকই নেই। আসলে তুমি তো একটা মেরুদন্ডহীন লোক।যে শুধু বড় বড় লেকচারই দিতে পারে। আমাকে শাসন করতে এসেছে। কি সুপুরুষ!হাহ

দিশানী দম নিয়ে আবার বললো,,
—এবাড়ির সবাইকে বলে দিচ্ছি, কেউ আমাকে উল্টো-পাল্টা কথা বলতে আসবে না বা গায়েও হাত তুলতে আসবে না। যদি আমার কথার কেউ কোনো নড়চড় করে তাহলে আজকের নির্ঝর এর এই থাপ্পড়টা সবাই মনে রাখবে। কোনো কথা শুনবো না সরাসরি থাপ্পড় মেরে দেবো, দরকার পড়লে আরো বড় কান্ড ঘটাবো। সে যদি স্বয়ং আমার গুরুজন শাশুড়িমাও হয় তাকেও মানবো না।

দিশানী এসব বলে নিজের রুমে চলে গেলো।

চলবে

গল্প:রঙহীন জীবনের রঙ
পর্ব ১৭
লেখনীতে:স্বর্ণা সাহা (রাত)

দিশানী এসব বলে নিজের রুমে চলে গেলো।

দিশানী রুমে যাওয়ার পর পরই সুজাতা নির্ঝর কে বললো,
—দেখলি কি তেজ!কি বেয়াদব মেয়ে।ওই মেয়ে বলে কিনা আমাকে থাপ্পড় মারবে?ওর সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি। নির্ঝর তুই একটা ব্যবস্থা কর।

নিরাও সুজাতার কথার সাথে তাল মিলিয়ে নির্ঝরকে বললো,
—মা ঠিক কথা বলেছে দাদা। তুই একটা ব্যবস্থা কর। এরপর না জানি আমাদের সাথে কি করে বসবে বৌদি

নির্ঝর রাগে ফুসতে ফুসতে বললো,
—আমি ওর বাড়িতে ফোন করছি, দেখি ওনারা কি বলে।

নিরা বললো,
—ওদের বলে কি আদৌ কোনো লাভ হবে, ডিভোর্স এর কথা তো ফোন দিয়ে জানিয়েছিলি কোনো আগ্রহই তো দেখায়নি।

সুজাতা মুখ বেঁকিয়ে বললো,
—পরিবারটাই যেখানে এরকম মেয়ে আর কেমন হবে!হুঁহ!

—————-
দিশানী বিছানায় বসে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আসলে প্রতিবাদ করার পরে যেমন আনন্দ পাওয়া যায়, তেমনি খারাপও লাগে। নিঃশাস ভারী হয়ে আসে। দিশানীরও ঠিক তেমনি হচ্ছে। এই প্রতিবাদটা দরকার ছিলো। যখন কোনো নারীকে কোনো কারণ ছাড়াই “নষ্টা মেয়ে” উপাধি দেওয়া হয়, তখন যদি সে মেয়ে প্রতিবাদ না করে তাহলে সে নিজেই নিজের কাছে অপরাধী।আজকাল যে নিজে নিজের জন্য প্রতিবাদ করতে পারে না,তার কোনো মূল্যই থাকেনা।দিশানী মনে মনে নিজেই নিজেকে অভিবাদন জানাচ্ছে। কারণ সে পেরেছে, সে আজ তার প্রতি হওয়া অন্যায়ের যোগ্য জবাব দিয়েছে।আজ দিশানীর জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন, আবার সেরকমই বেদনারও দিন।নিজের স্বামীর কাছে এসব শুনে কি কোনো নারী আনন্দ পায়?

দিশানীর ফোন বেজে উঠতেই ও চোখ খুলে।ফোন হাতে নিয়ে দেখে মেঘা কল করেছে। দিশানী কল ধরতেই ওপাশ থেকে মেঘা বলে,
—কিরে বাড়িতে পৌঁছে গেছিস?

—হুম!একটু আগেই পৌঁছালাম।

—ওহ!শোন একটা কথা বলবো তোকে।

—বল!

—ডিভোর্স এর পরে তুই আমাদের বাড়িতে এসে উঠবি আর এখান থেকেই ভার্সিটিতে যাতায়াত করবি বুঝতে পেরেছিস?

—না রে!আমি হোস্টেলে উঠবো। অযথা তোদের ঝামেলা বাড়াতে চাইনা আমি!

—এক থাপ্পড়ে তোমার গাল লাল করে দেবো আমি।তুমি নিজেকে আমাদের ঝামেলা মনে করছো? তোমার খুব সাহস বেড়ে গেছে তাইনা? আমরা তো তোমার পর। তুমি তো আমাদেরকে নিজের লোক মনেই করোনা তাই তো এসব বলছো।

—তুই আমাকে ভুল বুঝছিস আমি ওভাবে বলতে চাইনি।

—তো ঠিক কিভাবে বলতে চেয়েছো তুমি? দেখ দিশু বান্ধবী হয়ে যদি বান্ধবীর কোনো উপকারেই না লাগতে পারি তাহলে কিসের বান্ধবী হলাম বলতো?আমাকে এভাবে পর করে দিস না।

—তোদের মতো বন্ধু পেতে ভাগ্য লাগে।সত্যি আর কিছু না হোক অন্তত আমি বন্ধু পাওয়ার দিক দিয়ে অনেক ভাগ্যবতী। কিন্তু তবুও তোর বাড়িতে থাকবো কেমন একটা দেখায় না?

—আচ্ছা তুই কি সৌম্যকে নিয়ে টেনশন করছিস? সৌম্য কি বলবে সেটা নিয়ে? আরে টেনশন করিস না,সৌম্যর তোর আমাদের বাড়িতে থাকা নিয়ে কোনো আপত্তি নেই।আমি আজকে আমাদের বাড়িতেই তোকে এই কথা বলতে পারতাম কিন্তু তুই সামনাসামনি আরো রাগারাগি করতিস তাই ফোন দিয়েই বললাম।শোন তুই সিদ্ধান্ত নে, তবে উত্তর যেনো হ্যাঁ হয়। এখন রাখছি আমি।

মেঘা ফোন কেটে দিলো।দিশানী ফ্রেশ হতে গেলো।

————-
সকালবেলা নির্ঝর দিশানীর বড় ভাই দিব্যকে ফোন করলো।সাথে নিরা আর সুজাতাও ছিলো।ওরা দুজন দিব্য আর নির্ঝরের কথা শোনার জন্য নির্ঝরের ফোন লাউড স্পিকারে দেয়।দিব্য ফোন ধরতেই নির্ঝর বললো,
—আপনার বোনের ব্যবহার অতি নিম্নমানের হয়ে গেছে। দিশানী আমাদের অতিষ্ট করে দিচ্ছে। কালকে আমাকে থাপ্পড়ও মেরেছে।

—কি করেছিলে দিশুর সাথে যে তোমাকে থাপ্পড় মেরেছে?

—সেটা আপনার জানার দরকার নেই। আপনি আপনার বোনকে এসে নিয়ে যান।

—শোনো বিয়ে করেছো তুমি!আর ডিভোর্স হতেও এখনো দুই মাস বাকি আছে তাই আমার বোনের সব দায়িত্ব তোমার।আমি ওকে নিয়ে আসতে পারবো না, রাখছি!

দিব্য এসব বলেই ফোন কেটে দিলো।

পেছন থেকে দিশানী বললো,
—কি আমার দাদাকে ফোন করে কোনো লাভ হলো না তো?

দিশানীর কথা শুনে নির্ঝর, সুজাতা আর নিরা পেছনে তাকালো।দিশানী এতক্ষন পেছনে দাঁড়িয়ে থেকে নির্ঝর আর দিব্যর কথা শুনছিলো। ফোন লাউড স্পিকারে দেওয়ার জন্যই দিশানী দুজনের কথোপকথন শুনতে পায়। দিশানী আবার বললো,

—দাদা কে ফোন দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমার দাদাও তোমাদের সবার মতোই স্বার্থপর। যার আমার জন্য কোনো মায়া নেই।তুমি ভাবলে কি করে দাদা আমাকে ওর বাড়ি নিয়ে যাবে? যে আমাকে নিজের বোঝা মনে করে তোমার সাথে বিয়ে দিলো সে কখনো আবার সেই বোঝাকে ঘরে তুলবে?আমাকে আবার পালতে গেলে তো ওর খরচ বাড়বে, যে আগেই আমাকে পালতে পারলো না সে এখন আমাকে পালবে তোমার মনে হয়?আমার আপনজনগুলোই কেমন যেনো আমার পর হয়ে গেছে আর পররাই আপন হচ্ছে।

নিরা বললো,
—এই আবার শুরু করলে তুমি বৌদি?

—আচ্ছা নাও বাদ দিলাম। আগে বলো কালকে মেয়ে কেমন দেখলে? পছন্দ হলো?

নিরা উত্তর দিলো,
—তোমার থেকে অনেক ভালো। শান্ত-শিষ্ট, মিষ্টি মেয়ে। তোমার মতো মুখে মুখে তর্ক করে না।

দিশানী উত্তর দিলো,,
—ভুল বললে নিরা।আমি তো তর্ক করিনা আমি তো প্রতিবাদ করি। তর্ক আর প্রতিবাদের মধ্যে যে একটা পার্থক্য আছে সেটা বুঝতে শেখো।

সুজাতা বললো,
—এলিনা অনেক ভালো মেয়ে, দেখেই বোঝা যায়। ভদ্রও বটে।আর বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে।

দিশানী জিজ্ঞেস করলো,
—বাবাহ!বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে অথচ মেয়েকে একটা ডিভোর্সি ছেলের সাথে বিয়ে দিচ্ছে?ভাবার বিষয়!

সুজাতা বললো,
—সে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।

নিরা সুজাতাকে বললো,
—আরে মা বুঝতে পারছো না কেনো!বৌদির হিংসা হচ্ছে। নতুন বৌদি যে বৌদির থেকে সব দিক দিয়ে ভালো এটা বৌদি সহ্য করতে পারছে না।

দিশানী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,
—বেশি ভালো ভালো না।আপনারা যা ডেসক্রিপশন দিলেন তাতেই বুঝে গেছি আপনাদের কপালে দুঃখ আছে, কিন্তু আপসোস এটা বোঝবার ক্ষমতা আপনাদের মধ্যে নেই। এই মেয়েই আপনাদের সোজা করে দেবে। কথায় আছে না লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here