এলাকার বড় আপু #পার্ট:৯

#নাম: এলাকার বড় আপু
#পার্ট:৯
#লেখক: Osman

👉তানহা আমার হাত ধরে জোড় করে টেবিলে বসালো। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম নিলা দেখেছে নাকি। যেটা ভাবছিলাম সেটাই। নিলা দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের কাহিনী দেখছে।
তার মুখ কালো। আমি তানহাকে বললাম পানি আনতে। তানহা চলে গেলো পানি আনতে। আমি নিলার দিকে দুই হাত নত করে মাফ চাইলাম। কিন্তু নিলা মাথা নাড়িয়ে চলে যায়। আমি টেনশনে পরে গেলাম আপু বোধহয় আমার উপর রাগ করছে। আমাকে মারলে অসুবিধা নেই। কিন্তু কথা না বললে অন্তর জলে যাবে। সব দোষ তানহার সে যে কেনো আমার পিছে আসে। আমি বুঝতে পারছি তানহা আমাকে পছন্দ করে কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে তারও বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আর আমি ও বড় আপুকে পেয়ে গেছি‌ । মন চাচ্ছে তানহাকে ইচ্ছে মতো বকা দিতে। তানহা এসে বলল

তানহা: এই নেও পানি।

👉আবার ভাবলাম নাহ তার কয়েকদিন পরে বিয়ে তাকে কষ্ট দেওয়া ঠিক হবে না। আবার যদি বদদোয়া দেয়। আমি হেসে বললাম

আমি: থ্যাংকস।

👉আমি যতক্ষন খেলাম তানহা আমাকে এটা ওটা দিয়ে হেল্প করলো । আমি খাওয়া দাওয়া করে চলে আসলাম নিলাকে খুঁজতাছি । বাসায় পেলাম না। তার মানে সাদে! সাদে যাবো? গেলাম সাদে । সাদে গিয়ে দেখি নিলা আর আমার আপু চাঁদনি আপু জোৎস্না আপু আরো কয়েক জন। আমি এক কোনায় বসে রইলাম। তারা সবাই সেজেগুজে বসে আড্ডা দিচ্ছে। চাঁদনি আপু আমাকে ডাক দিয়ে বলল।

চাঁদনি: এই পিচ্চি আমাদের ছবি তুলতো।

👉কিহ আমাকে পিচ্চি বলল। কিছুই করার নেই ‌। এখানে সবাই আমার বড়। তারপরেও আমি রিয়েক্ট করে বললাম।

আমি: আপু আমি পিচ্চি না। আমার বয়স ২৪। প্রায় আপনার সমান। নিলা আপু বললে মানায়। আপনি না।

চাঁদনি: তারপরেও তুই পিচ্চি।

আমি: আপু তর বান্ধবীটাকে কিছু শিক্ষাতে পারিস না।

তাসফিয়া: এই চাঁদনি বাদ দেতো। এখন ছবি তুল।

👉আমি আপুর মোবাইল দিয়ে তাদের ছবি তুললাম এক সাথে । নিলার মুখে কোনো হাসি নাই। নিলা এখনো রাগ করে আছে। আমি ছবি তুলে চলে আসলাম। আবার এক কোনায় এসে দাঁড়ালাম আড় চোখে নিলার দিকে তাকাচ্ছি। সবাই চলে যেতো তাহলে মাফ চাইতাম। দেখলাম রিয়ান ভাই আসছে।

রিয়ান: কিরে সাদে কি করস?

আমি: হাওয়া খেতে।

রিয়ান্না: হাওয়া নাকি অন্য কিছু।

আমি: আরে না।

রিয়ান: ছোট ভাই তোমাদের এখান দিয়ে টাটকা ফুল পাওয়া যায় আমি জানতাম না।

👉একটা লাল গোলাপ ফুল বের করে দেখালো। আমি ভাবতে লাগলাম এমন সময় ফুল । ফুল দিয়ে কি করবে?কাওকে প্রোপোজ করবে নিশ্চয় নিলাকে। হায়রে আমার কপাল। এখন যদি নিলা একসেপ্ট করে ফেলে তারপর আমি কি করবো? রিয়ান ভাই বলল।

রিয়ান: ছোট ভাই অসাধ্য সাধনটা ফেলি।

আমি: জান দেখেন। (অনেক কষ্টে হাসার চেষ্টা করলাম)

👉রিয়ান ভাই তাদের সামনে গিয়ে নিলা আপু বলে ডাক দিলো। নিলা আপু রিয়ান ভাই এর কাছে আসলো। রিয়ান ভাই বসে তাকে প্রোপোজ করলো। নিলা খুশিতে মুখ ঢেকে ফেলে। রিয়ান ভাই এর হাত থেকে নিলা ফুল নেয় হাসিমুখে। আর ধন্যবাদ দেয়। আমার ভিতরটা জলে যাচ্ছে। সামান্য তানহার সাথে কথা বলাতে। আমাকে এতো বড় শাস্তি দিচ্ছে। নিলা ‌আর রিয়ান ভাই সাদের অন্য আরেক কোনায় চলে যায়। গিয়ে তারা দুজনে হাসতে হাসতে কথা বলছে। এদিকে কষ্টে আমার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো। তারমানে কি নিলা আমাকে ছেড়ে দিয়েছে?এটা অসম্ভব আমরা দুজন একিসাথে কিস করেছি এতো তাড়াতাড়ি নিলা এগুলো ভুলে গেলো । আমার মনে হচ্ছে নিলা আসলেই আমাকে ছেড়ে দিয়েছে । না হলে প্রোপোজ একসেপ্ট করতো না। যাইহোক যা হওয়ার হয়ে গেছে । কষ্টে আমার চোখ থেকে আরেক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো । চাঁদনি আপু এসে বলল।

চাঁদনি: এই তুই দেখি কাঁদছত?

আমি: কোথায়?

চাঁদনি: মিথ্যা বলিস কেনো? দেখ তর চোখে পানি।

আমি: আসলে হয়েছে আজকেতো আপু আমাদের ছেড়ে চলে যাবে অন্যের ঘরে । আমরা আর সেই ঝগড়া করতে পারবো না। সেই আগের দিন গুলো হারিয়ে যাবে।

চাঁদনি: তুর বোকা সে জন্যই তকে আমি পিচ্চি বলি।
এতে কাদার কি আছে?

আমি: হুম।

চাঁদনি: আমি ভাবছিলাম তকে পিচ্চি বলাতে তুই কাদছস। তুই না অনেক কিউট। তুই যদি আমার সমান কিংবা আমার থেকে বড় হইতি । তাহলে এতদিনে তকে আমি বিয়ে করে ফেলতাম।

আমি: হুম।

চাঁদনি: কাঁদিস না।

👉তারা সবাই চলে যাচ্ছে। তাসফিয়া নিলাকে ডাক দিয়ে বলল

তাসফিয়া: কিরে নিলা যাবি নাকি ? নাকি সারাদিন এখানেই কাটিয়ে দিবি।

নিলা: আসছি‌। দাঁড়া

👉দেখলাম নিলা আপু নাম্বার নিলো। এসব করার কি দরকার ছিলো? তারা সবাই চলে যায় আমিও চলে আসি। এসে নিজের রুমে। কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে থাকি । আর চোখ থেকে পানি পড়ছে। কিছুক্ষণ পর সবাই সেন্টারে চলে যায়। আমার যাওয়ার কোনো নাম নাই। এখন যদি নিলা আমার থাকতো তাহলে ঠিকই আমাকে ডেকে নিয়ে যেতো। আমি ওঠে রেডি হয়ে গোসল করে নতুন কাপড় পরে রেডি হলাম। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি আমার চোখ ফুলা।সেটা না বুঝার জন্য একটা সানগ্লাস নিলাম। আমিও সেন্টারে চলে গেলাম। আমি দেখলাম আমিই লাস্ট। গেলে মার কাছে বকা খাই দেরি করে যাওয়ার জন্য।দেখি নিলা আপু সবার সাথে ছবি তুলছে। নিলা আপু সে সাজ দিয়েছে। এমনিতেই নিলা আপু অনেক সুন্দরী তার উপর আবার সাজ । মোট কথা বিয়ে বাড়ির সবার থেকে উপরে। কিন্তু তার উপর আমার কোনো অধিকার নেই। নিজেকে একলা মনে হচ্ছে। আমি এক জায়গায় গিয়ে বসলাম। দেখি নিলা আপু
রিয়ান ভাই এর সাথে ছবি তুলছে। আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম। ভালো লাগছে না এগুলো। কিছুক্ষণ পর কে জানি ডাক দিলো মনে হচ্ছে নিলা আপু।

নিলা: কিরে আমার সাথে ছবি তুলবি না।

আমি: আমার কি দরকার রিয়ান ভাই এর কাছে জান।

নিলা: তাহলে সেটাই করি।

আমি: হুম।

👉আমি ওঠে আমার আপুর সাথে কতগুলো পিক নিলাম। অন্য কারো সাথে না। বিয়ের কাজ ভালোভাবে সম্পুর্ন হয়। বরের বাড়ি থেকে অনেক মেয়ে আসে তাঁরাও নিলা আপুর উপড়ে যেতে পারে নাই। আমি ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম সবার আড় চোখ নিলাম আপুর দিকে। আমি যদি নিলার থাকতাম তাহলে তাকে জীবনেও এই সাজ দিতে দিতাম না। এদিকে রিয়ান ভাইয়ের অহংকারের শেষ নাই। বিয়ে সম্পন্ন হলে আমি চলে আসি। এসে চুপচাপ রুমে বসে থাকি। একটু পর তানহা আসলো। এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো তানহা বলল।

তানহা: মুরাদ আমি তোমাকে ভালোবাসি।

👉 আমি ভাবলাম মেয়েটাকে কাঁদিয়ে লাভ নাই। শেষমেষ একটু সান্তনা দিয়া যায়।

আমি: তানহা আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে। তোমাকে যেখানে বিয়ে হোক না কেন তুমি অনেক হ্যাপি থাকবা।

তানহা: কাছে থাকতে কষ্ট হলেও আমি অনেক সুখি থাকতাম।

আমি: আমি জানি । কিন্তু তানহা অনেক দেরি হয়ে গেছে। তুমিও বিয়ে থেকে ফিরে আসতে পারবে না। আর আমার পক্ষেও সম্ভব না।

তানহা: ওকে। তুমি বলো আমার বিয়েতে যাবা।

আমি: জান চলে গেলেও আমি তোমার বিয়েতে যাবো।

তানহা: ইস তোমাকে যদি এভাবে ধরে রাখতে পারতাম। ভাইকে দেখছেন। (আমাকে ছেড়ে বলল)

আমি: সেন্টার থেকে আসে নাই?

তানহা: না।

আমি: তোমরা আজকে চলে যাবা?

তানহা: হুম।

আমি: এসে পরবে।

তানহা: ওকে আমি যাই।

👉তানহা চলে যায়। আমি শুয়ে মোবাইল টিপছি। এমন সময় রিয়ান ভাই ঘরে ঢুকলো। রিয়ান ভাই এর যে অবস্থা। আমি নিশ্চিত গনধোলায় খেয়ে এসেছে।

চলবে …….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here