❤#আশিকী❤
#Madness_Of_Love,Part_26
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
ফুল স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছে আমাল। এই মুহুর্তে ওর নিজের গন্তব্যে পৌঁছানো সব চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
মনের মধ্যে অজানা ভয় উকি দিচ্ছে ওর। এই ভয়টা দুই বছর আগে ওর জীবন উলট পালট করে দিয়ে গিয়েছে।
❤❤ 2 Year’s Ego ❤❤
❤❤ In Wedding Hall ❤❤
আজ সানাহ আর আমালের হলুদ। হলে সানার হলুদের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কসটিউম রুমে রেডি হচ্ছে সানাহ। হলুদ আর সাদা কম্বিনেশন এর লেহেঙ্গা আর ফুলের গয়না দিয়ে সাজানো হয়েছে ওকে। ওকে সাজিয়ে দিয়ে সবাই বাইরে গিয়েছে মাত্র। দিয়াও রেডি হওয়ার জন্য নিজের কাউন্টারে গিয়েছে।
হঠাৎ জানালার খটখট আওয়াজ শুনতে পেল সানাহ।
সানাহঃ জানালায় শব্দ কে করছে?
সানাহ গিয়ে জানালা খুলতেই আমালকে দেখতে পেলো। সাদা আর হলুদ কম্বিনেশন এর পাঞ্জাবি পরেছে ও।
সানাহঃ আমালল তুমি এখানে আর,,,,
সানাহ নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলো আবিদ নিচে মই ধরে আছে আর আমাল মই বেয়েই রুমে এসেছে।
আমালঃ সানাহ হাত ধরো,,,
সানাহঃ হ্যাঁ,,,
সানাহ আমালের হাত ধরে ওকে উপরে টেনে উঠালো।
সানাহঃ এখন বলো তুমি এখানে কেন যদি কেউ দেখে ফেলে কি হবে তুমি বুঝতে পারছো।
আমালঃ দেখলে দেখবে আই ডোন্ট কেয়ার এবাউট দ্যাম। আজ আমার বউ এর হলুদ আর আমি ওকে হলুদ লাগাবো না এটা কি হয়।
সবার প্রথম অধিকার তো আমার তোমাকে হলুদ লাগানোর।
সানাহঃ আচ্ছা তা তুমি হলুদ পাবে কোথা থেকে এখন,,,
আমাল নিজের পকেট থেকে একটা ছোট প্যাকেট বের করলো ওটাতে হলুদ রাখা।
সানাহ হা হয়ে দেখছে আমালের কান্ড। আমাল একটু হলুদ নিয়ে সানার গালে লাগিয়ে দিতে দিতে বলল,,,
আমালঃ আমাল এর কাছে সব সমস্যার সমাধান আছে লাভ ( চোখ মেরে) নাও এখন আমাকে লাগিয়ে দাও তো।
সানাহ নিজের গাল থেকে হলুদ নিয়ে আমালের গালে লাগিয়ে দিতে দিতে বলল,,,
সানাহঃ হয়েছে,,,
আমালঃ ওয়াও সানাহ তুমি তো দিন দিন অনেক রোমান্টিক হয়ে যাচ্ছো,,,
হঠাৎ দরজায় খটখট আওয়াজ শুরু হয়।
সানাহঃ আমাল তুমি যাও ফাস্ট,,,
আমালঃ যাচ্ছি তো এমন করছো কেন,,,
আমাল মই বেয়ে আবার নিচে নেমে যায়। সানাহ আমালের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দেয়।
সানাহঃ তুমি আসলেই পাগল আমাল,,,
সানাহ গিয়ে দরজা খুলে দেয়। দিয়া দাঁড়িয়ে আছে। সানার গালে হলুদ দেখে দিয়া হেসে দেয়।
দিয়াঃ তোর হলুদ তো কমপ্লিট হয়েই গেছে শুধু নিচে গিয়ে লাভ কি দি। জিজুকে বলতি আজকেই ডাইরেক্ট বিয়ে করে তোকে সাথে করে নিয়ে যেতে।
সানাহঃ তুই কি আমালের থেকে কম নাকি ।
সানাহ টিশু দিয়ে মুখ মুছে নিচে নেমে যায় দিয়ার সাথে। হলুদ এর ফাংশন সুন্দর ভাবে শেষ হয়।
আজকে বিয়ে। চারো দিকে ধুমধাম আয়োজন চলছে সানাহ আর আমালের বিয়ের।
আমালের পছন্দ করা লাল রঙের লেহেঙ্গা আর জুয়েলারী পরিয়ে রেডি করা হয়েছে সানাহকে।
রাহেলা সানার রুমে এসে দেখে ওকে সাজানো হচ্ছে। রাহেলা হাতের বক্স থেকে একটা নেকলেস বের করে সানাহকে পরিয়ে দিয়ে বলে,,,
রাহেলাঃ আজকে আমার ছোট সানু কে একদম বউ বউ লাগছে।
দিয়াঃ হুম আমাল জিজুর বউ,,, ( রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
রাহেলা সানার কানের পেছনে কাজল লাগিয়ে দিয়ে বলে,,,
রাহেলাঃ আমার সানুর যেন কারো নজর না লাগে,,,
সানাহঃ আই লাভ ইউ আম্মিইই,,,
রাহেলাঃ আই লাভ ইউ টু মাই বেবি,,, ( সানার কপালে চুমু দিয়ে)
দিয়াঃ তোমার বেবি আজকে একজনের বউ হতে চলেছে খালামনি। আর সে নিচে অপেক্ষা করছে অধীর আগ্রহে তার বউ এবং তোমার বেবির জন্য।
রাহেলাঃ হুম আসছি,,, চলো সানাহ,,,
রাহেলা আর দিয়া সানাহকে নিয়ে নিচে নেমে আসে।
আবিদ আর আদহামের সাথে বসে আছে আমাল। সামনেই কাজী সাহেব বসে আছেন।
সিঁড়ির দিকে চোখ যেতেই চোখ আটকে যায় আমালের। ফাইনালি সানাহকে নিজের বউ হিসেবে দেখতে পারছে ও।
সানাহকে এনে আমালের পাশে বসানো হয়। সানাহ মাথা নীচু করে আছে।
কাজী সাহেব বিয়ে পরানো শুরু করলেন। ফাইনালি তিন কবুল বলার পর সানাহ আর আমালের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
একটা আয়না এনে আমালের সামনে ধরলো দিয়া।
দিয়াঃ জিজু কাকে দেখা যাচ্ছে,,,?
আয়নায় সানার ফেস দেখা যাচ্ছে। আমাল মুচকি হেসে বলল,,,
আমালঃ আমার অনেক সাধনার পরে পাওয়া রাজকুমারী কে,,,
আমালের উত্তরে সবাই জোরে তালি দিতে শুরু করলো। এবার আয়না এনে সানার সামনে ধরলো দিয়া।
দিয়াঃ তুমি কাকে দেখতে পারছো দি,,,
সানাহঃ আমার ম্যাড লাভারকে,,,
আমাল হেসে দিল সানার উত্তরে। সানাহকে আমালদের আসল বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাহেলা আর দিয়ার জন্য অনেক কান্না করেছে সানাহ। আমার অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে সানাহকে গাড়িতে বসিয়েছে।
আমালঃ সানাহ ডোন্ট ক্রাই প্লিজ তুমি জানো আমি তোমার চোখে পানি সহ্য করতে পারি না।
সানাহকে জড়িয়ে ধরে। সানাহ আমালের বুকে মাথা রেখে চুপ করে আছে।
কয়েক ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যায় ওরা খান ভিলা।
আবিদ আদহাম আর বাড়ির সার্ভেন্ট রা মিলে সানাহ আর আমালকে বরন করে।
সানাহকে আমালের রুমে রেখে সার্ভেন্ট রা বেড়িয়ে যায়। পুরো রুম স্টারগেজার দিয়ে সাজানো হয়েছে।
সানাহ চোখ বন্ধ করে ফুলের ঘ্রাণ নিয়ে তা অনুভব করছে।
আমালের বেডের বরাবর সানাহ আর আমালের বড় ছবির ফ্রেম টানানো যেটা ওরা কলেজে তুলেছিল। সানাহ এগিয়ে গিয়ে ছবিটার দিকে তাকায়। ভাবতেই এক অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে ওর যে আজ থেকে ও আমালের হয়ে গেছে। ওদের #আশিকী আজ পূর্নতা পেয়েছে।
হঠাৎ পেছন থেকে আমালের জড়িয়ে ধরায় ধ্যান ভাঙে সানার। সানাহ মুচকি হেসে আমালের হাতের উপর নিজের হাত রাখে। আমাল সানার কাধে থুতনি রেখে বলতে শুরু করে,,,
আমালঃ কালকে এই ফ্রেমটা সরিয়ে ফেলবো।
সানাহ আমালের কথায় ওর দিকে ঘুরে বলে,,
সানাহঃ কিন্তু কেন আমাল,,,?
আমালঃ কারন এই ফ্রেমের বদলে আমাদের বিয়ের ফ্রেম বসাবো এখানে মাই লাভ। ( সানার গালে স্লাইড করতে করতে)
ইউ নো সানাহ আজকের এই মুহুর্তটার জন্য কতটা অপেক্ষা করেছি আমি।
সানাহঃ পাঁচ বছর!!
আমালঃ উহু পাঁচ বছর সাত মাস পনের দিন। তুমি যখন ছেড়ে চলে গিয়েছিলে ইচ্ছে করছিল নিজেকে শেষ করে দিই,,, কিন্তু পরে একটা কথা ভেবে মরার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছিলাম। জিজ্ঞেস করো কি?
সানাহঃ কি?
আমালঃ এটাই যে আমি মরে গেলে তো তোমাকে অন্য কেউ বিয়ে করে ফেলবে তুমি এখন আমার বউ হয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছো কিন্তু তখন অন্য কারো…… নোও ওয়ে তোমাকে অন্য কারো ভাবতেও পারি না আমি।
তুমিতো শুধু আমার। আল্লাহ তোমাকে এক মাত্র আমার জন্য পাঠিয়েছে এটা ভেবেই মরার প্লান ক্যানসেল করে দিয়েছি।
আমালের কথায় সানাহ হেসে দিল ওর হাসি দেখে আমালও হেসে দিল।
সানাহঃ তুমি আসলেই পাগল আমাল,,, এতো ভালোবাসো কেন আমায়,,, তুমি তো আমার থেকেও বেশি ভালো মেয়ে ডিসার্ভ করো তাহলে আমি কেন?
আমালঃ আসলে জানো কি সানাহ! তোমাকে দেখে যে অনুভূতি টা হয় সেটা কখনো কারো জন্য হয় নি। তুমি অনেক স্পেশাল সবার থেকে আলাদা। তাই তোমাকে না ভালোবাসে পারলাম না। তোমার প্রতি আমার ভালবাসা বাড়তে বাড়তে এতো বেড়েছে যে সেটা এখন #Madness_Of_Love এর সীমানায় পৌঁছে গেছে। তোমাকে ছাড়া নিঃশ্বাস নেওয়াটাও অসম্ভব আমার কাছে।
সানাহঃ আ’ম স্যরি আমাল আমার জন্য আমাদের লাইফ থেকে ভালোবাসার দেড়টা বছর
হারিয়ে গেছে। আমি চাইলেও সেই সময় টুকু তোমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবো না আই,,,,
আমাল সানার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে ওকে চুপ করিয়ে দেয় তারপর ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে বলতে শুরু করে,,,
আমালঃ অতীতে যা হয়েছে সব ভুলে আমার বর্তমান আর ভবিষ্যতে তোমাকে চাই সানাহ। আই নিড ইউ এভরি সেকেন্ড ইন মাই লাইফ আই নিড ইউ এভরি মোমেন্ট অফ মাই লিভ।
তোমাকে সারা জীবনের জন্য নিজের করে পেতে চাই। আই ওয়ান্ট ইউর লাভ সানাহ,,, উইল আই,,, ( নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
সানাহ নিজের চোখের পানি মুছে আমালের হাতে নিজের হাত রেখে মাথা নেরে হ্যাঁ বলল,,,
আমাল উঠে সানার কপালে ঠোঁট ছোয়াল। সানাহ আমালকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ গুঁজে নিল,,,,,
To be continued….