আশিকী❤ #Madness_Of_Love,19,20

❤#আশিকী❤
#Madness_Of_Love,19,20
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_19

দিয়া ফোন রেখে পেছনে ফিরতেই ঘাবড়ে যায় কারন পেছনে সানাহ দাঁড়িয়ে আছে।

দিয়াঃ দি সব কি শুনে ফেলল? ( মনে মনে)

সানাহঃ তুই আমাকে দেখে এভাবে ভূত দেখার মত চমকে গেলি কেন?

দিয়াঃ বেঁচে গেছি কিছু শুনে নি ( মনে মনে স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে) তুই যেভাবে ভুতের মত আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছিস চমকানোর‌ই কথা।

বাই দ্যা রাস্তা তুই আমার রুমে কেন?

সানাহঃ নিচে যাওয়ার জন্য ডাক দিতে এসেছি স্টুপিড।

দিয়াঃ ওহহহ হ্যাঁ চল দি নিচে থেকে ঘুরে দেখে আসি ফাংশন এর আরেঞ্জমেন্ট কেমন হচ্ছে।

দিয়া আর সানাহ নিচে যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে গেল।

পুরো হোটেল স্টাফ দিয়ে ভরপুর। সবাই একটা না একটা কাজ করছেই। সানাহ আর দিয়া আশেপাশে দেখতে দেখতে এগোচ্ছে। সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় ওদের চোখ যায় নিচে। সবাই কাউকে ঘিরে কথা বলছে। মাহি আর ওর ফ্যামিলির সবাই অনেক বিনয়ী হয়ে কথা বলছে লোকটার সাথে। মাহি ওদের দেখে কাছে যাওয়ার জন্য বলে,,,

মাহিঃ আরেহ সানাহ দিয়া তোরা ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন কাম,,,

সানাহ আর দিয়া নিচে নেমে তাদের কাছে যায়। সানার দিকে লোকটি পিঠ করে আছে তাই সানাহ তার চেহারা দেখতে পারছে না।

মাহিঃ সানাহ ইনি হচ্ছেন এই হোটেল এর ওউনার। আর অনিলের বস।

আর স্যার এ হচ্ছে আমার ফ্রেন্ড সানাহ,,,

লোকটি সানার দিকে ঘুরতেই সানাহ অবাক হয়ে যায়। কারন লোকটি আর কেউ নয় বরং আমাল।

আমালকে দেখে সানাহ অবাক হ‌ওয়ার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

আমালঃ নাইস টু মিট ইউ মিস সানাহ.. ( না চেনার ভান করে)

সানাহ বুঝতে পারছে না যে কেন আমাল ওকে না চেনার ভান করছে,,,

দিয়াঃ হাই আ’ম দিয়া,,, ( হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

আমালঃ হ্যালো বিউটিফুল,,,

সানার সামনে দিয়ার হাত ধরে হাতের উল্টো পিঠে কিস করে,,,

সানাহ চোখ বড় বড় করে দেখছে ওদের কান্ড। শরীর জ্বলছে ওর আমালের কাজে।

আমালঃ তোমার নামের মত তুমিও অনেক বিউটিফুল। লাইক আ্য ডল,,,

দিয়াঃ থ্যাঙ্ক ইউউ,,,

সানাহ শুধু রাগে ফুঁসছে। আমাল এখনো দিয়ার হাত ধরে আছে। আর দিয়ার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে,,,

আমালঃ ওকেই বিউটিফুল আমার একটা কাজ আছে পার্টিতে দেখা হবে বাই,,

দিয়াঃ বাইই,,

আমাল চলে গেল,,,

দিয়াঃ লুক দি হি ইজ সো হ্যান্ডসাম আ’ম ক্রাশড্।

মাহিঃ হুম ইনি এখনো আনমেরিড তুমি চাইলে ট্রাই করে দেখতে পারো,,

দিয়াঃ রিয়েলিইই

সানাহঃ উফফ তোরা কি শুরু করলি হ্যাঁ। আর দিয়া তুই! ছেলে দেখলেই তোর শুরু হয়ে যায়,,

দিয়াঃ তুই যেমন করছিস মনে হচ্ছে আমি তোর বরকে নিয়ে টানাটানি করছি,,,

সানাহ রাগী দৃষ্টিতে তাকালো দিয়ার দিকে আর দিয়া চুপ করে গেল।

মাহিঃ আরেহ সানাহ আমরা তো মজা করছিলাম তুই সিরিয়াস হচ্ছিস কেন?

আসলে অনিলের বস হচ্ছে আমাল স্যারের বাবা। উনিই আমাদের বিয়ের গিফ্ট হিসেবে হোটেলটাকে বুকিং দিয়েছেন। হি ইজ আ্য গ্ৰেট পার্সন,,,

সানার কাছে সব স্পষ্ট হতে শুরু করে। সকাল থেকে আমালের গায়েব হয়ে যাওয়া স্টাফের কথা আর ওর জন্য স্পেশাল রুম সব।

সানাহঃ আমি আসছি,,,

সানাহ কিছু না বলেই আমালের পিছু চলে আসে।

সানাহঃ তোমার মাথায় কি চলছে আমাল। কেন এসেছো এখানে,,,

আমাল উপরে যাচ্ছিল সানার কথায় থেমে যায়।

আমালঃ আমার হোটেলে আমি আসবো না তো কে আসবে। আর তুমি কি মিন করতে চাচ্ছো একটু ক্লিয়ার করে বলবে।

সানাহঃ আমি কি মিন করছি সেটা তুমি ভালো করেই বুঝতে পারছো। এগুলো সব তোমার প্লান তাই না।

আমালঃ কিসের প্লানের কথা বলছো তুমি সানাহ?
( না জানার ভান করে)

সানাহঃ ইউউউউ,,, আমি এক সেকেন্ড ও এখানে থাকবো না এক্ষুনি চলে যাবো এখান থেকে। ( রেগে চলে যেতে নিয়ে)

সানাহ চলে যেতে নিলেই আমাল ওর হাত ধরে ওকে দেয়ালে আটকে নেয়। আমাল সানার দু কাধের উপরের দেয়ালে নিজের দু হাত দিয়ে আটকে নেয়। সানাহ ছুটাছুটি করছে কিন্তু আমালের সাথে পেরে উঠছে না।

সানাহঃ হোয়াটট দ্যা হেল আমাল।

আমালঃ আমার অনুমতি ছাড়া তুমি এক কদম‌ও বাইরে পা রাখতে পারবে না সানাহ।

সানাহঃ সিরিয়াসলি!! আটকে দেখাও আমাকে,,,

সানাহ আমালকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে হনহনিয়ে উপরে নিজের রুমে চলে যায়।

আমাল বাঁকা হেসে সানার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

আমালঃ যাও সানাহ ঝাটকা নাম্বার টু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে উপরে,,, তুমি যেই রাস্তা দিয়েই যাও কিনা তার মোর তোমাকে আমার কাছেই নিয়ে আসবে।

সানাহ রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে নিজের রুমে আসে তারপর আশেপাশে নিজের লাগেজ খুঁজতে শুরু করে,,,

লাগেজ কাবার্ড থেকে বের করে নিজের পার্স খুঁজতে শুরু করে ও। পার্সে সানার পাসপোর্ট ডেভিড কার্ড আর সব টাকাপয়সা ছিল,,,

সানাহঃ আ আমার ব্যাগ!! ( আতঙ্কিত হয়ে)

সানাহ পুরো রুম তছনছ করে খুঁজছে কিন্তু কোথাও ওর ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছে না।

হঠাৎ পেছন থেকে ওর কানের কাছে আমাল নিজের মুখ এনে বলে,,,,

আমালঃ কি হলো সান বেবি কিছু মিসিং হয়েছে?

সানাহ আমালের কন্ঠ শুনে ওর দিকে ঘুরে রাগী ভাবে বলে,,,

সানাহঃ আমার ব্যাগ তুমি চুরি করেছো তাইনা? ছিঃ ছিঃ লজ্জা করে না এতো বড় বিজনেসম্যান হয়ে সামান্য ব্যাগ চুরি করতে।

আমালঃ ভালোবাসা আর যুদ্ধে সব জায়েজ সান বেবি। তোমার ভালবাসা আবার জিতার জন্য যদি আমার চোর‌ও হতে হয় আমি খুশি খুশি হবো।

সানাহঃ ভালো ভালোয় বলছি আমাল আমার জিনিস আমাকে ফেরত দাও,,

আমালঃ উমম আমাকে ক্ষমা করে দাও আমার ভালবাসা আবার এক্সেপ্ট করে নাও আর খুশি খুশি বিয়ে করে নাও আমাকে। এই তিনটা জিনিস করতে রাজি হলে আমি নিজেকেও তোমাকে সপে দেব।

সানাহঃ তুমি আসলেই একটা BBN,,,

আমালঃ আই নো দ্যাট বেবি অ্যান্ড থ্যাংকস ফর ইউর তারিফ ( হাসি দিয়ে )

সানার অনেক রাগ লাগছে ইচ্ছে করছে আমালের চুল ধরে বিনা কেরোসিন ঢেলে চুলে আগুন লাগিয়ে দিতে,,,,

আমালঃ আচ্ছা সান বেবি রাতের ফা়ংশনে কি কালার ড্রেস পরবে তুমি?

সানাহঃ আমার যেটা পছন্দ হবে সেটা তোমাকে বলবো কেন?

আমালঃ না মানে ম্যাচিং করে পরতাম তাই আরকি,,, আচ্ছা বাদ দাও একটু পর ফাংশন শুরু হয়ে যাবে আমি নিচে গিয়ে সব ঠিক আছে কিনা দেখে আসি। আর হ্যাঁ এখান থেকে যাওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও ওকে,,,

সানাহঃ গেট আউটটটটট,,,

আমালঃ আমার হোটেল আমার রুম আর আমাকেই বলে গেট আউট ওয়াও,,,

সানাহঃ ফিলহাল এটা আমার রুম অ্যান্ড আমি তোমাকে এই মুহুর্তে এখানে সহ্য করতে পারছি না বের হ‌ও আমার রুম থেকে,,,,

সানাহ আমালকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে রুমের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে,,,

আমালঃ আরেহ ধাক্কা দিচ্ছো কেন সান বেবি যাচ্ছিতো,,,

সানাহ আমালকে বের করে ওর মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দেয়,,,,

নিজের রুমে এপাশ ওপাশ পায়চারি করছে সানাহ। কি করবে এখন বুঝতে পারছে না ও। আবার দরজায় কেউ খটখট করতে শুরু করে,,, সানাহ ভাবছে হয়তো আমাল আবার এসেছে।

সানাহঃ তোমাকে তো আমি,,,, ( দরজা খুলে)

দিয়াঃ কি করবি আমাকে দি,,,

সানাহঃ তুই!! নাহ কিছু না আমি ভাবলাম,,,

দিয়ার হাতে একটা নীল রঙের প্যাকেট দেখতে পেলো সানাহ।

সানাহঃ এটা কি তোর হাতে?

দিয়াঃ এটা? ও হ্যাঁ এটাতে ড্রেস তোর জন্য। আজকের ফাংশনের ড্রেস কোড হলো হোয়াইট তাই সবাইকে ম্যাচিং করে ড্রেস দেওয়া হয়েছে। এটা তোর। ( প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে)

সানাহঃ তোরটা কোথায়?

দিয়াঃ রুমে,,, তুই রেডি হয়ে নে তারপর একসাথে নিচে যাবো।

সানাহঃ দে,,,

দিয়া চলে যেতেই সানাহ ডোর লক করে প্যাকেটটা খুলল। প্যাকেটে একটা সাদা আর গোল্ডেন শিল্ড এর লেহেঙ্গা সাথে গোল্ডেন কালারের ক্রিস্টাল এর কাজ করা ওরনা।

ড্রেসটি দেখেই সানার পছন্দ হয়ে গেছে। যে কিনেছে তার চয়েজ আছে ভাবছে সানাহ।

After Some Time….

সানাহ লেহেঙ্গা পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে,,, কানে ক্রিস্টাল এর ঝুমকা আর হাতে ক্রিস্টাল এর চুরি পরেছে ও। চুল গুলো কার্ল করে ডান সাইডে এনে চুলে স্টার ক্লিপ লাগিয়েছে সানাহ।বাম সাইডে ওরনাটা ঘের করে পরেছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে সানাহকে।

হাতে চুরি পরার সময় সানাহ পিছনে কারো উপস্থিতি টের পেল। আয়নায় তাকাতেই দেখলো আমাল এক ধ্যানে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

সানাহঃ তুমিইইইই,,,,

সানাহ চমকে পেছনে ঘুরলো। দরজার দিকে তাকাতেই দেখলো দরজা আগের মতই বন্ধ।

সানাহঃ দরজা তো বন্ধ‌ই তাহলে তুমি ভিতরে আসলে কিভাবে?

আমালঃ ইট্স আ্য সিক্রেট সান বেবি বলা যাবে না ( বাঁকা হেসে)

সানাহঃ রাখো তোমার সিক্রেট তোমার কাছে আর বের হ‌ও এক্ষুনি,,,

আমাল আচমকাই সানার কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে নেয় তারপর নিজের পকেট থেকে কিছু বের করে সানার গলায় পরিয়ে দেয়। আচমকা এমন হ‌ওয়ার সানাহ বেকুব বনে গেল।

আমালঃ নাও পারফেক্ট,,,

এতক্ষন সানাহ রাগের মাথায় খেয়াল না করলেও এখন ঠিকই আমালকে খেয়াল করছে,,,

আমাল পুরো ওর ড্রেসের ডিসাইনের মত ড্রেস পরেছে। সাদার মধ্যে গোল্ডেন শিল্ড এর সুট পরেছে আমাল চুল গুলো স্পাইক করে স্টাইল করা। আমালের লুকটা সানার কাছে পুরোই কিলার লাগছে। আমাল আর সানাহকে কেউ একসাথে দেখলে প্রথম বারেই বলে দিবে ওরা কাপল,,,

সানাহকে এভাবে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সানার চোখের কোনা থেকে একটু কাজল তুলে নিজের কানের পেছনে দেয় আমাল।

সানাহ বেকুবের মত দেখছে আমালের কান্ড,,,

আমালঃ তুমি যেভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো যদি নজর লেগে যায় তাই আর কি,,,

আমাল এবার কাজলের আঙ্গুলটি সানার কানের পেছনে লাগিয়ে বলে,,,

আমালঃ আমি বাদে যেন কারো নজর না লাগে তাই সেফটির জন্য দিলাম সান বেবি,,,,,

সানাহঃ ইউউউউ নিজের বেলায় ষোল আনা আর আমার বেলায় চার আনাও না স্বার্থপর মানুষ।

আমালঃ ইয়েস বেবি আমি অনেক স্বার্থপর শুধু তোমারি জন্যে,,,

আমাল কথাটা বলেই সানাহকে চোখ মারলো,,,

সানাহঃ হয়েছে তোমার এবার বের হ‌ও আমার রুম থেকে।

আমালঃ আর একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ তো রয়েই গেছে,,,

সানাহঃ কি কাজ?

আমাল সানার ঘারে নিজের এক হাত নিয়ে নিজের দিকে টেনে আনছে সানাহকে। সানাহ চোখ বড় বড় করে তাকায় আমালের দিকে,,, ভয়ে শরীর কাঁপতে শুরু করেছে সানার,,,

সানাহ আমালের এতোটাই কাছে চলে এসেছে যে আমালের গরম নিশ্বাস ওর মুখে পরছে।

সানাহ চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে ভয়ে। আমাল এটা দেখে হালকা হেসে দেয়। তারপর সানার কপালে গভীর ভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে সানাহকে ছেড়ে বের হয়ে যায়।

সানাহ এখনো ফ্রিজ্ড হয়ে আছে। বেচারি ভাবলো কি আর হলো কি।

#Part_20

সানাহ স্টিল্ দাঁড়িয়ে আছে সব যেন ওর মাথার উপর দিয়ে গেল।

সানাহ নিজের গলায় হাত দিয়ে পেন্ডেন্ট এর মত কিছু একটা অনুভব করলো। আমাল তখন এটাই পরিয়েছিল ওকে।

সানাহ জিনিসটা দেখার জন্য আয়নায় তাকালো। একটা সাদা স্টোনের পেন্ডেন্ট তার মাঝ বরাবর লাভ শেপ আঁকা। দেখতে অনেক ইম্পোর্টেড লাগছে পেন্ডেন্ট টি।

হঠাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে ধ্যান ভাঙ্গলো সানার। সানাহ আমাল ভেবে চমকে পেছনে ফিরলো।

দিয়াঃ কি হলো দি এভাবে চমকে গেলি কেন?

দিয়াকে দেখে সানাহ হাফ ছেড়ে বাঁচলো। ও ভেবেছিল হয়তো আমাল আবার এসেছে।

সানাহঃ হঠাৎ স্পর্শ পেয়ে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম আর কি,,,

দিয়া একটা গোলাপী রঙের লেহেঙ্গা পরেছে সাথে ম্যাচিং জুয়েলারী আর মেক‌আপ। সানাহ দিয়ার চুল ঠিক করতে করতে বলল,,

সানাহঃ তোকে তো একদম পরীর মতো লাগছে দিয়ু,,,

দিয়াঃ আর তোকে পরীর রানী,,,

সানাহ আর দিয়া দু’জনেই হেসে দিল। দিয়া সানার গলার লকেটটা খেয়াল করে বলল,,

দিয়াঃ ওয়াওও দি দিস ইজ সো প্রিটি,,, কোথা থেকে নিয়েছিলি রে,,

সানাহঃ আব আমার এক ফ্রেন্ড গিফ্ট করেছিল। আজ ইচ্ছে হলো তাই পরলাম। ( মিথ্যা বলল)

এখন কি এখানেই থাকবি নাকি নিচেও যাবি।

দিয়াঃ নাহ যাবো তো,,, কত কষ্ট করে সাজলাম নিচে আবার না যাবো।

সানাহ আর দিয়া নিচে নেমে আসে। পুরো হোটেল খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। হোটেলের কিছুটা দূরেই ওয়েডিং রিসেপশন হল আছে। সেখানেই বিয়ের সব ফাংশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সানাহ সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় ওর চোখ চোখ যায় আমালের উপর। নিচেই কিছু ফ্রেন্ডস দের সাথে কথা বলছে ও। আমাল সানাহ দেখে দূর থেকেই সবার আড়ালে চোখ মারে সানাহ হচকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়।

মাহিঃ আরেহ সানাহ দিয়া তোরা এতো লেট কেন আমরা সবাই হলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম তোদের।

সানাহঃ স্যরি রে লেট হয়ে গেছে একটু।

মাহিঃ ইট্স ওকে বেবি তাছাড়া আজকে শুধু গেট টুগেদার হবে ফাংশন তো কাল থেকে শুরু।

চল আমি তোদের অনিকের সাথে দেখা করিয়ে দেই।

মাহি সানাহ আর দিয়াকে নিয়ে অনিকের কাছে গেল।

মাহিঃ সানাহ ইনি হচ্ছেন আমার উডবি অনিক আর অনিক এ হচ্ছে আমার ফ্রেন্ড সানাহ আর দিয়া।

সানাহঃ হাই জিজু,,,

অনিকঃ ফাইনালি তোমার দেখা পেলাম। মাহি তো তোমার কথা বলতে বলতে আমার মাথাই নষ্ট করে ফেলেছে। নাইস টু মিট ইউ শালিকা।

সানাহ আর অনিক ফাইজলামি করছে আর হাসাহাসি করছে দূর থেকে এগুলো দেখে আমাল রাগে ফুঁসছে। সানাহ ব্যাপারটা খেয়াল করে আরো বেশি রাগাচ্ছে আমালকে।

অনিক বারবার নিজের ফোন চেক করছে হয়তো কারো কলের অপেক্ষায় আছে।

দিয়াঃ কি ব্যাপার জিজু কার কলের অপেক্ষা করছেন এতো আগ্ৰহের সাথে?? গার্লফ্রেন্ড??

মাহি চোখ গরম করে তাকায় অনিকের দিকে আর বেচারা হচকিয়ে বলতে শুরু করল,,,

অনিকঃ কি বলছো শালিকা ফাসিয়ো না। আসলে আমার একজন ইম্পর্টেন্ট ক্লাইন্টকে ইনভাইট করেছিলাম তার অপেক্ষাই করছি,,,

সানাহঃ তা ইম্পর্টেন্ট ক্লাইন্ট টা কি ছেলে নাকি মেয়ে ( মজা করে)

অনিকঃ অবভিয়সলি ছেলে,,,

মাহির আম্মুঃ তোমরা এখনো বেরোও নি দেরি হয়ে যাবে চলো।

মাহিঃ হ্যাঁ আম্মু,, কাম গাইজ।

সবাই হোটেল থেকে বেরিয়ে রিসেপশন হলে চলে আসে।

❤❤ In Reception Hall ❤❤

সবাই সবার মত ব্যস্ত। মাহি সানাহ আর দিয়া এক সাইডে কথা বলছে আর অনিক ওর ক্লাইন্টকে আনতে বাইরে গিয়েছে।

দিয়ার ফোনে কারো কল আসতেই ও সাইডে সরে যায় তারপর রিসিভ করার জন্য কিছুটা নীরব জায়গায় চলে যায়।

হঠাৎ করেই কেউ দিয়ার হাত হেঁচকা টান দিয়ে একটা খালি জায়গায় নিয়ে আসে। দিয়া চিৎকার দিতে গিয়েও লোকটির চেহারা দেখে চুপ করে যায়।

লোকটি দিয়াকে দেয়ালে লাগিয়ে ওর অনেক কাছ এসে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দেখে দিয়া ভূত দেখার মত চমকে গিয়েছে।

দিয়াঃ আ আবিদদদদ আপনি এখানে?? ( অবাক হয়ে)

আবিদঃ কেন অন্য কাউকে এক্সপেক্ট করেছিলে? ( দিয়ার দিকে ঝুঁকে)

দিয়াঃ নাহ কিন্তু আপনাকে একদম এক্সপেক্ট করিনি এখানে! আপনি এখানে কিভাবে?

আবিদঃ একচুয়ালি যার বিয়ে সে আমার ক্লাইন্ট তাই আমাকে অনেক ইনসিস্ট করে ইনভাইট করেছে না এসে পারলাম না,,,,

দিয়াঃ তার মানে জিজু আপনার কথাই বলছিলো। ওয়াও আমি এতো বলেও আপনাকে বিডি তে আনতে পারিনি কিন্তু নিজের ক্লাইন্টের বিয়ে খাওয়ার জন্য বিদেশ থেকে দৌঁড়ে চলে এসেছেন,, ( অভিমান করে)

আবিদঃ নাহ দিয়া আমার এখানে আশার পেছনে অন্য একটা কারন লুকিয়ে আছে। ( কিছু একটা ভেবে) একটা অসম্পূর্ণ কাহিনী কে সম্পুর্ন করতে হবে যে আমার।

দিয়াঃ আমি কিছু বুঝতে পারছি না আপনি কি বলছেন আবিদ?

আবিদঃ পরে সব ডিটেইলস এ বলবো। এখন বলো তুমি এখানে কেন? তুমি তো সামহাও তোমার আন্টির বাসায় গিয়েছিলে।

দিয়াঃ হুম আমিও এখানে একটা কারনেই এসেছি।

দিয়া আবিদকে সানার বিষয়ে সব বলল। সানার আম্মু ওকে আমালের হেল্প করার জন্য আসতে বলেছে যা সানাহ জানে না। আবিদ সব শুনে শক্ড কিন্তু ও বুঝে নি যে দিয়া আসলে সানাহ আর আমালের কথা বলছে।

আবিদঃ ওয়াও তুমি দেখি লাভ গুরু হয়ে গেলে। বাই দ্যা ওয়ে তোমার দির সাথে আমাকে দেখা করাবে না।

দিয়াঃ অফকর্স আসেন আমার সাথে।

দিয়া আবিদের হাত ধরে সানার কাছে নিয়ে আসলো।

দিয়াঃ সানাহ দিইইই,,,,

দিয়ার ডাকে পেছনে ফিরলো সানাহ। দিয়ার সাথে আবিদকে দেখে শক্ড সানাহ আর আবিদ‌ও শক্ড হয়ে গেছে এখানে সানাহকে দেখে।

দিয়া আবিদকে সানার সামনে এনে দাড় করালো।

সানাহঃ আবিদদদদ,,,

দিয়াঃ তুই ওকে চিনিস ( অবাক হয়ে)

আবিদঃ অফকর্স কেমন আছো সানাহ,,,

আবিদ সানাহকে জড়িয়ে ধরলো সাথে সানাও।

সানাহঃ আমি তোমাকে এখানে একদম এক্সপেক্ট করিনি আবিদ। লুক একদম বদলাও নি তুমি দেড় বছরে।

আবিদঃ তুমিও তো বদলাও নি একদম আগের মতই আছো।

দিয়া কিছুই বুঝতে পারছে না। বেচারি কনফিউজড লুক নিয়ে শুধু দেখছে।

দিয়াঃ কেউ আমাকে এক্সপ্লেইন করবে প্লিজ?

সানাহঃ আমি বলছি দিয়ু,,,

সানাহ দিয়াকে সব বুঝিয়ে বলল যে ও আর আবিদ এক সাথে পড়েছে।

আবিদঃ তাহলে দিয়া আমাল আর সানার কথা বলছিল,, সানাহ এখানে দ্যাট মিন্স আমাল‌ও এখানেই আছে কিন্তু কোথায়? ( মনে মনে)

সানাহঃ এখন বলো তোমাদের কানেকশন হলো কিভাবে হুম?

আবিদঃ ফেসবুক!

সানাহঃ ফেসবুক?

আবিদঃ হুম ফেসবুকে পরিচয় বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা সব,,,

সানাহঃ বাহ আমি ভাবিনি তোমরা এতো এগিয়ে মডার্ন লাভ বার্ডস্ ( হেসে দিয়ে)

দিয়াঃ হেসে নে আমারো দিন আসবে,,, ( রাগী লুক নিয়ে)

আবিদের চোখ আশেপাশে আমালকেই খুঁজছে। সানাহ ব্যাপারটা ঠিক‌ই বুঝতে পারছে। আর যাই হোক আবিদ আমালের প্রতি কতটা উইক সেটা সানাহ অনেক ভালো করেই জানে।

সানাহঃ তুমি যাকে খুজছো সে হয়তো ট্যারেসে।

আবিদ কিছু না বলে কতক্ষণ চুপ থেকে দ্রুত পায়ে চলে যায়।

দিয়াঃ তুই কার কথা বললি ওকে দি?

সানাহঃ আছে কেউ তুই বুঝবি না।

❤❤ In Upstair ❤❤

আমালঃ আবিদ যেন কিছু না জানতে পারে অনিল। হয়তো জানলে আবার আমাকে ভূল বুঝবে।

অনিলঃ ডোন্ট ওয়ারি স্যার উনি জানবে না।

আমালঃ হুম তুমি এবার নিচে যাও সবাই তোমাকে খুঁজছে হয়তো।

অনিলঃ জ্বী,,,

খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে আমাল। অনেক কিছু ছুটে গিয়েছে যে গুলো হয়তো এখন আর ফিরে পাওয়া সম্ভব না কিন্তু চেষ্টা কখনোই বৃথা যায় না। আমাল‌ও হারানো জিনিস গুলো পাবার জন্য চেষ্টা করছে। আল্লাহ যদি চান তাহলে ওও ব্যার্থ হবে না।

To be Continued……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here