#আমার_একাকীত্বের_শহরে__আপনি,২৪,২৫
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_২৪
প্রিয়তি, রোহা,মাহবিন আর মিনা বেগম ছাড়া সবাই বিয়ের শপিং করতে গিয়েছে।
প্রিয়তি আর রোহা কিচেনে রান্না করছে সবার জন্য।
— আপু দাদুর খিচুড়িটা দিয়ে আসো আমি মুরগী ভুনাটা করে পেলি।
— আচ্ছা ঠিক আছে।
আর এদিকে মাহবিন চিন্তা করছে কিভাবে প্রিয়তিকে বিপদে ফেলবে।
মাহবিন কিচেনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রিয়তি সামনে তাকাতেই দেখে মাহবিন চিন্তিত মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রিয়তি মাহবিনকে চিন্তিত দেখে বলে — তোমার কিছু লাগবে……..
মাহবিনঃ কিছু লাগবে না আসলে আমার একটু সমস্যা হয়েছে।
— কি সমস্যা……
— আমার জামাকাপড় গুলো কিভাবে ধৌত করতে হবে আমি জানি না।এই বাড়িতে একজন কাজের মেয়ে নেই যে জামাকাপড় ধুয়ে দিবে।
— আমার রান্না হলে ধুয়ে দিব তোমার জামাকাপড় গুলো।
— ধন্যবাদ ভাবি। খাওয়ার মতো কিছু আছে।
— তুমি না একটু আগে খাবার খেলে।
— আবার খেতে ইচ্ছে করছে।
— কি পেটুক মেয়ে রে বাবা। একটু আগে এতগুলো খাবার খেলো এখন বলে আবার খাবে
— কি ভাবছো ভাবি আমার…….
— তুমি টেবিলে গিয়ে বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
মাহবিন শয়তানি হাসি দিয়ে টেবিলে গিয়ে বসলো।
কিছুক্ষণ পর প্রিয়তি মাহবিনের জন্য খাবার নিয়ে আসলো।
— খেয়ে নেও। আশা করি ভালো লাগবে😊।
প্রিয়তি কিচেনে চলে গেল।
আর মাহবিনের কেমন সন্দেহ হচ্ছে। খাবারের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে খাওয়া শুরু করলো।
খাবার মুখে দিতেই চিৎকার করে উঠে।
মাহবিনের চিৎকার শুনে প্রিয়তি কিচেন থেকে উঁকি মেরে মাহবিনের দিকে তাকালো।
— চুন্নির ঘরের চুন্নি আমি ভালো করেই জানি তুই আমাকে জ্বালাতে এইসব করিস।তাই তো আমি ও তোর খাবারে বেশি করে লবন আর মরিচের গুঁড়া দিয়ে দিয়েছি।বুঝ এবার ঠেলা।তুই দু’দিনে এসে যা করেছিস সব কিছুর হিসাব নিব আমি।আমার জামাইকে জড়িয়ে ধরার জন্য আরো শাস্তি বাকি রইলো। হি হি।
— ওয়াটার কেউ আমায় ওয়াটার দেও প্লিজ।
মাহবিনের চিৎকারে রোহা ছুটে আসলো।
— কি হয়েছে তোমার আপু এইভাবে চিৎকার করছো কেন।
— ওই শয়তান মেয়ে আমার খাবারে মরিচ,,, লবন দিয়ে আমার অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে।
রোহার আর বুঝতে বাকি রইলো না মাহবিন কার কথা বলছে।
রোহার অনেজ হাসি পাচ্ছে কিন্তু হাসলে মাহবিন আরো রেগে যাবে তাই অনেক কষ্টে হাসি চেপে রেখেছে।
রোহা ভালো করেই জানে প্রিয়তি সবকিছুর ছাড় দিলেও নিজের স্বামীকে নিয়ে কেউ কিছু করলে তার বারোটা বাজিয়ে দেয়।
— একবার আমার যা অবস্থা করেছে।
— ওয়াটার,,,,,, ওয়াটার।আহ্ জ্বলে যাচ্ছে।
প্রিয়তি কিচেন থেকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি এনে মাহবিনের সামনে ধরলো।
মাহবিন ঠান্ডা পানির গ্লাস হাতে নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো।
খাওয়া শেষে প্রিয়তির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালো।
— কেমন লেগেছে খাবারটা 😊।।
মাহবিন কিছু না বলে ঘরে চলে গেল।
মাহবিন যেতেই রোহা হাসা শুরু করলো।
হাসতে হাসতে মরে যাবে এমন অবস্থা।
— আপু তুমি এইভাবে হাসাহাসি করছো কেন😒..
— বেচারি মাহবিনের যা হাল করলি তুই বেচারি সারাজীবনেও ভুলতে পারবে না।
— দেখো আপু সব সহ্য হয় আমার বরের দিকে কেউ চোখ দিলে আমি তাকে কিছুতেই ছাড় দিব না।
— রান্না শেষ তোর…
— রান্না শেষ এখন ডাইনীর জামাকাপড় ধুতে হবে……
— আচ্ছা যা।আমি দাদুর কাছে যাচ্ছি।
|||
শপিং করতে করতে রাত হয়ে গিয়েছে। রাত আটটার দিকে সবাই বাড়িতে আসলো।
জিহান ঘরে এসেই প্রিয়তিকে খুঁজা শুরু করলো।
— এই মেয়েটা কই গেল।
— এসেছি এমন ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছেন কেন।
— এত দেরি হলো কেন আসতে।
— কাজ ছিল তাই আসতে পারিনি।
জিহান প্রিয়তির সামনে দুটো বক্স রাখলো।
— এতে কি আছে….
— নিজেই দেখে নেও..
প্রিয়তি বক্স খুলতেই চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেছে।
— এগুলো কি😦……
— আমের আর তেঁতুলের আচার…..
— তো আমি কি করবো এগুলো দিয়ে…
জিহান বিরক্তি নিয়ে প্রিয়তির দিকে তাকালো।
— তুমি কি কিছুই বুঝতে পারছো না কেন আচার নিয়ে এসেছি তোমার জন্য।
— না বুঝিয়ে বলুন….
জিহান প্রিয়তির কথায় হালকা রাগ দেখিয়ে বলে
— না বুঝলে নাই…
সারাদিন শপিং করতে করতে অবস্থা খারাপ তার ওপরে ও আমার কথাটা বুঝতে পারছে না নাকি না বুঝার ভান করছে।
জিহান আবার প্রিয়তির সামনে বাচ্চাদের কিছু ছবি রাখলো।
প্রিয়তি ব্রু কুঁচকে জিহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
— এবার তো বুঝ আমি কি বলতে চাইছি।
— আমার মাথায় কিছুই ডুকছে না।
জিহান কিছু না বলে সোজা ওঠে বেলকনিতে চলে গেল।
— হঠাৎ এমন অদ্ভুত ব্যাবহার করছে কেন জিহান বাবু।
|||
রোহা সোফায় বসে বসে মোবাইল স্ক্রোল করছে।
আর আদনান ঘরে পায়চারী করছে আর একটু পর পর রোহার দিকে তাকাচ্ছে।
আর রোহা আড় চোখে আদনানের কার্যকলাপ দেখছে।
হঠাৎ করেই আদনান রোহার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিলো।
— আমার মোবাইল নিলে কেন ভাইয়া মোবাইল দেও।
রোহার মুখে ভাইয়া শব্দটা শুনে কেন জানি আদনানের রাগ হলো ।
— ভাই ছাড়া কথা বল।
রোহা অবাক হলো আদনানের কথায়।
— কেন তুমি তো আমার ভাই হবে।
— স্টপ রোহা।যদি আর একবার ভাই বলিস তোর গলা টিপে দিব।
— রেগে যাচ্ছো কেন ভাইয়া।
— তোকে না বলেছি ভাই না বলতে। তোর মুখ থেকে ভাই শুনলে আমার মাথা গরম হয়ে যায়।
— তাই কেন ভাইয়া…….
রোহা বার বার ভাই বলাতে আদনান এবার বেশি রেগে গেল।
রোহাকে দেয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে।
— এইরে সাইকোটা ক্ষেপেছে ভালো করেই। কেন যে রাগাতে গেলাম।নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম।আর ভাই বলাতে এত রেগে যাচ্ছে কেন।
— কি ভাবছিস তুই। তোকে কতবার বলেছি ভাই না বলতে তারপর ও তুই বললি।এখন তোকে কি শাস্তি দেওয়া যায় বলতো😏।
শাস্তির কথা শুনে রোহা ভয় পেয়ে গেল।
— ক….কি করেছি আমি।
— আমি মানা করা সত্বেও তুই ভাই বললি কেন।
— ভাইকে তো ভাই বলবো তাই না।কিছুদিন পর তো প্রিয়তিকে তুমি বিয়ে করে নিবে।তাহলে আমি ভাই বলাতে তুমি রেগে যাচ্ছো কেন।
রোহার কথা শুনে আদনান রেগে গিয়ে রোহার ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দিল।
আর রোহার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল আদনানের কাজে।
আদনান যে এমন কিছু করবে রোহার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।।
আদনান রোহার ঠোঁট গুলো কামড়ে কামড়ে অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে। ব্যাথায় রোহার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরলো।
রোহাকে কাঁদতে দেখে আদনান রোহার ঠোঁট ছেড়ে দিলো। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে রোহাকে কোলে তুলে খাটের ওপর ঠাস করে ফেললো।
— আ…….আহ্। রাক্ষস, অসভ্য মার্কা লোক আমার কোমরটা গেল রে।আমি এখন সবার সামনে যাব কি করে আমার ঠোঁটের অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে সাইকোটা।আমার কোমরটা ও ভেঙে দিয়ে গেল।ছিঃ কি বাজে ফিলিংস হচ্ছে আমার এই সাইকোর জন্য।
প্রিয়তি রোহার ঘরের সামনে দিয়ে ছাঁদে যাচ্ছিল ঘর থেকে রোহার চিৎকার শুনে রোহার ঘরে চলে আসল।
— কি হলো আপু এইভাবে কোমরে হাত দিয়ে বসে আছো কেন।
— আর বলিসনা প্রিয়তি এই সাইকো আমার অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে। কেন যে রাক্ষসটাকে রাগাতে গেলাম।
— মানে সাইকো..রাক্ষস এইসব কাকে বলছো।
— না কাউকে না এমনি বললাম।
— তাহলে এত জোরে চিৎকার দিলে কেন। সত্যি করে বলো আদনান ভাই আবার মেরেছে তোমায়।
— না মারেনি।আমিই পরে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছি।
— আচ্ছা তা বুঝলাম কিন্তু তোমার ঠোঁটের এই অবস্থা কেন🙃……
রোহা প্রিয়তির কথায় থতমত খেয়ে গেল।
— আ…আসলে কি প্রিয়তি হয়েছেটা কি…….
— কি হয়েছে গো আপুমনি 🙃……কেউ মনে হয় তোমায় মারাত্মক ভাবে চুমু খেয়েছে।
— না না তুই ভুল বুঝেছিস….আ….আমাকে তো মৌমাছি কামড়ে ঠোঁটের অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে।
— সেই মৌমাছি টা কি জলজ্যান্ত কোনো মানুষ।
চলবে……..
#আমার_একাকীত্বের_শহরে__আপনি
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_২৫
প্রিয়তির কথা শুনে লজ্জায় রোহার ইচ্ছে করছে মাটির সাথে মিশে যেতে।
রোহাকে লজ্জা পেতে দেখে প্রিয়তি হেসে দিলো।
— আদনান ভাইয়ের সাথে চলছে নাকি হুম…….
— তুই ভুল ভাবছিস…..
— হয়েছে আর ঢং করতে হবে না চালিয়ে যাও……
প্রিয়তির কথা শুনে লজ্জায় রোহার মুখ লাল হয়ে গেছে।
💛
দেখতে দেখতে হলুদের দিন এসে পরলো।সবাই কাজে ব্যস্ত।প্রিয়তি রোহাকে হলুদ কাপড় পরিয়ে দিয়ে নিজে ও পরে নিল।
দুজনকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে একজোড়া হলুদপাখি।তেমন সাজেনি হালকা সাজুগুজু করেছে দুজন।
জাইমা হা করে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।
জাইমাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রিয়তি বলে,,,,
— এইভাবে কি দেখছো ননদী।
জাইমাঃ তোমাদের দুজনকে এত সুন্দর লাগছে চোখ সরানো যাচ্ছে না তোমাদের দুজনের থেকে।
জাইমার কথায় দু’জন হেসে দিলো।
রোহাঃ হয়েছে আর পাম দিতে হবে না আমার থেকে প্রিয়তিকে বেশি সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে আকাশ থেকে হলুদপরী নেমে এসেছে।
প্রিয়তিঃ মোটেও না আমার থেকে তোমায় অনেক বেশি সুন্দর লাগছে।
জাইমা দুজনকে তর্ক করতে দেখে — আরে বাবা দুজনকে সুন্দর লাগছে এখন তর্কাতর্কি বন্ধ করো সবাই অপেক্ষা করছে তোমাদের দুজনের জন্য চলো।
🥀
তিনজন ঘর থেকে বের হওয়া মাএই জিহান প্রিয়তির পথ আটকে দাঁড়ালো।
জিহান প্রিয়তির হাত ধরে বলে — তোমার সাথে আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
জাইমাঃ একদম না ভাইয়া বিয়ে শেষ না হওয়া পর্যন্ত বউ এর সাথে দেখা করা নিষেধ দাদু বলেছিল ভুলে গেছ নাকি।
জিহান বিরক্ত হলো জাইমার কথায়।
জিহানঃ আমাদের বিয়ে একবার হয়ে গেছে জাইমা এখন আমার বউ দরকার আমি আমার বউকে নিয়ে গেলাম।বলেই প্রিয়তিকে সবার সামনে থেকে কোলে তুলে নিয়ে গেলো। আর সবাই জিহানের কান্ড দেখে হাসাহাসি শুরু করলো।
প্রিয়তি লজ্জায় জিহানের বুকে মুখ লুকালো।
আর রোহা মন খারাপ করে দুজনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
আদনান হা করে রোহার দিকে তাকিয়ে আছে। আর রোহা সামনে তাকাতেই দেখে আদনান হা করে তাকিয়ে আছে। আদনানকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রোহা মুচকি হাসল☺️।
রোহাকে মুচকি হাসতে দেখে আদনানের হাত নিজে নিজে বুকের বা পাশে চলে গেল।
— হায় আল্লাহ এই মেয়েটা এইভাবে না হাসলেও পারতো আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি । এমনিতেই ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পরছি তার ওপর এর একেক রূপ দেখে আমার হার্ট এটাক করার মতো অবস্থা।
জাইমার পিছনে পিছনে রোহা হাঁটছে।
— দেখলে ছোট ভাইয়া ভাবিকে কোলে তুলে নিয়ে গেলো কিছুই করতে পারলাম না আমি। না জানি তুমি কখ……..
পিছনে তাকিয়ে দেখে রোহাও উধাও।
— আরে এ ও উধাও হয়ে গেল।
💛
— আরে কি করছো কি ভাইয়া ছাড়ো।এভাবে মুখ চেপে আমায় টেনে নিয়ে আসলে কেন সবাই কি ভাববে।
— যা ভাবার ভাববে রোহা। সবাই কি ভাবলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
— তুমি তো প্রিয়তিকে ভালোবাসো।এখন আমার সাথে এমন অদ্ভুত আচরণ করছো কেন।তোমার মতিগতি আমার ভালো ঠেকছে না।
— প্রিয়তিকে ভালোবাসতাম।এখন ওর জন্য আমার মনে কোনো ফিলিংস নেই।আর ভাই বলা বন্ধ কর। আগামীকাল থেকে তুই আমার ভবিষ্যত বউ হবি।
— মানে তু……
রোহাকে আর একটাও কথা বলতে না দিয়ে রোহার গালে নিজের গাল স্পর্শ করলো।আদনানের স্পর্শে রোহা কেঁপে উঠল।
— ভ…….ভাই…..
— হুঁ….শ কোনো কথা নয়।আমার স্পর্শ গুলো অনুভব কর।
রোহা চোখ বন্ধ করে ফেললো।
— কেমন জানি ভালো লাগছে আদনানের স্পর্শে। ভাবতেই শরীরে কেমন অদ্ভুত শিহরন বয়ে যাচ্ছে..
°এই সাইকোটা কাল থেকে সম্পূর্ণ আমার হয়ে যাবে°।
°আমার শহর জুড়ে এই সাইকোর বসবাস হবে°।
ঘাড়ে স্পর্শ পেতেই রোহার ধ্যান ভাঙলো। আদনানের হলুদ দেওয়া গাল রোহার ঘাড়ে স্পর্শ করলো।রোহার গালে, ঘাড়ে নিজের গাল দিয়ে হলুদ দিয়ে দিল আদনান। রোহা চোখ বন্ধ করে আছে আর হালকা কাঁপছে। গাল দুটি আদনানের স্পর্শে লজ্জায় লাল বর্ন হয়ে গেছে।
— এইবার যেতে পারিস আমার কাজ শেষ ☺️।
রোহা লজ্জামিশ্রিত মুখ নিয়ে সেখান থেকে দৌঁড়ে চলে আসল।
রোহাকে লজ্জা পেয়ে দৌঁড়ে যেতে দেখে আদনান হেসে দিলো।
— আস্তে দৌঁড়া পরে যাবি তো।পাগলি একটা মেয়ে।
রোহা লজ্জিত মুখ নিয়ে স্টেজে গিয়ে বসলো।
— বাহ্ ভাবি রোমাঞ্চ শেষ করে এসেছে তো নাকি আরো রোমাঞ্চ করা বাকি আছে বলো। বাকি থাকলে রোমাঞ্চ শেষ করে আসো ।এদিকে তোমাদের দুজনকে খুঁজতে খুঁজতে আমাদের সবার অবস্থা খারাপ ।
জাইমার কথায় রোহা লজ্জা পেলো।
— হায় আল্লাহ এইভাবে লজ্জা পেতে হলো আমকে সাইকোটা জন্য। মাটি তুই ফাঁক হয়ে যা আমি ডুকে পরি যদি কিছুটা লজ্জা থেকে বাঁচা যায়।
রোহা মাথা নিচু করে বসে আছে স্টেজে।রোহাকে লজ্জা পেতে দেখে সবাই মিটমিটিয়ে হাসছে। জাইমার কথায় প্রচুর লজ্জা পেয়েছে এখন সবার সামনে মুখ তুলে তাকাতে পারছে না তাই মাথা নিচু করে বসে আছে।
— আরে আমার কিউট ভাবি আমি তো মজা করে বলেছি এইভাবে লজ্জা পেতে হবে না মুখ তুলে তাকাও হলুদ দিবে সবাই।
রোহা মুখ ওপরে তুললো।একে একে সবাই হলুদ দিয়ে যাচ্ছে।
রোহাকে হলুদ দেওয়ার মাঝেই প্রিয়তি লজ্জামিশ্রিত মুখ নিয়ে সবার সামনে উপস্থিত হলো।
— ওই যে ওনি ও চলে এসেছে। তো রোমাঞ্চ শেষ হলো।
জাইমার কথা শুনে প্রিয়তির চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
— কি হলো চোখ বড় হয়ে গেল কেনো।রোমাঞ্চ শেষ করে এসেছে নাকি বাকি আছে হুম।
প্রিয়তিঃ আ…..আসলে তুমি ভুল ভাবছো।
— হয়েছে আর মিথ্যে বলতে হবে না। বড় ভাবির পাশে গিয়ে বসে পর।
লজ্জায় প্রিয়তির অবস্থা খারাপ।
— বজ্জাত লোক একটা। কতবড় লজ্জায় পরতে হলো আমায় এই লুচু লোকটার জন্য।এত লজ্জায় আমাকে জীবনেও পরতে হয় নাই।
(ফ্ল্যাশবেক………
— করছেন টা কি জিহান বাবু সবাই হাসছে নিচে নামিয়ে দেন বলছি।
— এমন করো কেন বউ একটু অপেক্ষা করো তারপর তোমার ছুটি।
— ছুটি মানে……
জিহান কিছু না বলে প্রিয়তিকে ছাঁদে নিয়ে গিয়ে ছাঁদের দরজা বন্ধ করে দিলো।
— দরজা বন্ধ করলেন কেন।
— চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকো বেশি কথা বললে ছাঁদ থেকে পেলে দিব।
জিহানের ধমক খেয়ে প্রিয়তি চুপ হয়ে গেল।
— যদি সত্যি সত্যি পেলে দেয় ছাঁদ থেকে। না না বাবা এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না😕।
জিহান হাতে হলুদের বাটি দেখে প্রিয়তি ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
— এই ব্যাটা করতে চাইছে টা কি…..
— এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন…. বলেই জিহান প্রিয়তিকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।
আর প্রিয়তির চোখ দুটো বড় হয়ে গেল জিহানের কান্ডে।
— ক……কি করছেন ছাড়ুন।
জিহান বাটি থেকে হলুদ নিয়ে প্রিয়তির কোমর স্পর্শ করলো।
কোমরে জিহানের স্পর্শ পেয়ে প্রিয়তি ঠোঁটে ঠোঁট চেপে কাপড়ের আঁচল খামচে ধরলো।
আর চোখ বন্ধ করে নিলো। জিহান প্রিয়তির দু গালে হলুদ দিয়ে একদম পেত্নীর মতো অবস্থা করে ফেলেছে। জিহানের প্রতিটি স্পর্শে প্রিয়তি কেঁপে কেঁপে উঠছে।
— চোখ খুলো এইবার নিচে যাবে নাকি আমার কাছে থেকে আরো হলুদ লাগানোর ইচ্ছে আছে।
জিহানের কথা শুনে প্রিয়তি চোখ খুললো। জিহানের চোখে চোখ পরতেই লজ্জায় প্রিয়তির অবস্থা খারাপ। প্রিয়তি ছাঁদ থেকে চলে এসে ভালো করে মুখ ধুয়ে তারপর স্টেজে গেল।)
এইভাবে দুজনের গায়ে হলুদ সম্পূর্ণ হলো।
চলবে………