অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্বঃ ২৫+২৬

অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্বঃ ২৫+২৬
আইরিন সুলতানা
পর্বঃ ২৫

ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে দেখি মিঃ ঘাড় তেরা (রায়হান) পায়ের উপর পা তুলে আমার বিছানায় বসে আছে। মনে হইতেসে উনি কোনো রাষ্ট্রের প্রধান মন্ত্রি।

ঐ আমার বিছানায় বসে আছো কেনো তুমি হুম ( কোমরে হাত দিয়ে) আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া – আমি।

ঠিক আছে একদম। বেশি পাকনামি করো তাই না,,, এখনি তো পড়তি,, পায়ে যে ব্যাথা সেই হুস নেই আপনার হা ( মাথায় টোকা দিয়ে) পা ভেঙে বিছানায় বসিয়ে রাখবো বলে দিলাম – রায়হান।

আপনারা বুঝেন নি তো কি হইছে আসলে হইছে কি কোমরে হাত দিয়েছিলাম তাই দেয়াল থেকে হাত আলগা হয়ে গিয়েছিল এক পায়ে ভর না নিতে পেরে পরে যাচ্ছিলাম আর তখনি আমার হিরো এসে আমাকে ধরে নেয়। এবার বুঝতে পারছেন তো।

তোমার সাহস তো কম না আমার পা ভেঙে দিবে বলতেছ। তুমি জানো আমি চাইলে এই বাসায় তোমার থাকা বাতিল করতে পারি – আমি।

হ্যা জানি তো আপনি একটা শাঁকচুন্নি চাই আপনি যা চান সেটাই করতে পারেন,,,, স্টুপিড মেয়ে নিজের খেয়াল রাখতে জানে না আবার আসছে বড় বড় কথা বলতে – রায়হান।

শাকচুন্না কোথাকার আমাকে একদম বকবে না বলে দিলাম – আমি।

হইছে মহারাণী এবার ক্রিপা করে ড্রয়িংরুমে চলেন,,সবাই আপনার জন্য অপেক্ষা করছে – রায়হান।

আচ্ছা বৎস,,, তবে আমাকে ধরে ধরে নিয়ে যাও,,, একদম কোলে নেয়ার চেষ্টা করবেনা বলে দিলাম – আমি।

আচ্ছা আচ্ছা চল। ( আনরোমান্টিক মাইয়া একটা – মনে মনে) – রায়হান।

তারপর আমরা নিচে গিয়ে সবার সাথে গল্প করি কিছুক্ষণ।

এভাবেই কেটে গেলো কিছুদিন,,,
এখন আমি কিছুটা সুস্থ হাটা চলা করতে পারি তবে পায়ে প্রেশার দিলে ব্যাথা করে একটু। এখন আমি সুস্থ তাই ভেবেছি আজ কলেজে গিয়ে ক্লাস করবো। তাই নাস্তা করে এসে কলেজ ইউনিফর্ম পড়ে,, হালকা সেজে,,, নিচে আসলাম,,আমাকে ইউনিফর্মে দেখে মামনি বলল,,,

সুস্থ হতে না হতেই শুরু হয়ে গেছিস তো,,, আর কটা দিন বিশ্রাম নিলে কি হতো – মামনি।

প্লিজ মামনি আর ঘরবন্দি করে রাখবেনা আমাকে,, একা একা ঘরে বসে থেকে হাপিয়ে উঠেছি আমি এবার তো আমি সুস্থ হয়ে গেছি তাই আমি আজকে কলেজে যাবো – আমি।

আমি কিছু বললে শুনবি নাকি,,, যখন যা ইচ্ছে তাই তো করবি কখনো আমার কোনো কথা শুনেছিস যে আজ শুনবি,,, ওকে নিজের খেয়াল রাখিস – মামনি।

মামনি তুমি এভাবে বলছো কেনো,, আমি কি তোমার কথা শুনিনা বলো,, আমি তোমার লক্ষি মেয়ে তো,, আমি নিজের খেয়াল রাখবো তুমি আমাকে নিয়ে এতো চিন্তা করোনা – আমি।

হুম তুমি তো আমার লক্ষি মা (কপালে চুমু দিয়ে) স্যার রা বকলে মাথায় নিবে না কেমন,, স্যার তো গুরুজন তারা একটু শাসন করতেই পারে,, আমি কি বলেছি তুমি বুঝেছ তো – মামনি।

হুম হুম সব বুঝে গিয়েছি এখন আসি,,, নিজের খেয়াল রেখো,, আল্লাহ হাফেজ – আমি।

আল্লাহ হাফেজ – মামনি

আমি কলেজের জন্য হাটা দিলাম রাস্তায় রাতুল ভাইয়ার সাথে দেখা হলো ওনার সাথে কিছুক্ষণ দুষ্টুমি করে কলেজে চলে আসি। তারপর ক্লাসে গিয়ে সবার সাথে গল্পে মেতে উঠি। তার কিছুক্ষণ পরেই প্রথম পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়,, আর প্রথম পিরিয়ডে সোহাগ স্যারের ক্লাস,,, যথা সময়ে স্যার ক্লাসে আসে,,

Good morning,,, dear students,,, – স্যার।

Good morning,,,, sir – সবাই।

বাড়ির কাজ দেখাও সবাই – স্যার।

ইয়েস স্যার,,,,, (সবাই খাতা দেখায় আমি বাদে)

হিয়া তুমি বাড়ির কাজ করোনি – স্যার।

না স্যার,, সরি স্যার,, কাল থেকে করে নিয়ে আসবো (নিচের দিকে তাকিয়ে) -আমি।

ওকে বসো। সবাই গতকালের পড়াটা দেখো আমি পড়া ধরবো কিন্তু – স্যার।

ইয়েস স্যার – সবাই।

খুব ভালো ভাবে সব গুলো ক্লাস করে মাঠে বকুল তলায় গিয়ে বসলাম আমরা,,, ওখানে কিছুক্ষণ গল্প করে বাসায় যাওয়ার জন্য উঠে দারালাম।

দোস্ত এখন আমি যাই মামনি আমার জন্য চিন্তা করছে অনেক,,আর এখন হেটে যেতে অনেক সময় লাগবে আমার – আমি।

আচ্ছা ঠিক আছে। সাবধানে যাবি আর কোনো গণ্ডগোল করিস না আজকে আবার – শরিফা।

বেহেন লোক হিয়া যেখানে আছে সেখানে বিপদ মামা না আসলেও এসে পড়ে সেটা তোরা জানিস না নাকি (সবাই হেসে উঠে) – তিথি।

তোরা কিন্তু আমারে পচাইতেছিস,, তাহলে শুনে রাখ আমাকে কেউ উলটা পালটা কথা বললে আমি তাকে কখনোই ছেড়ে দিবো না হুহ – আমি।

হা মেরি চুরেল আমরা সবাই জানি আপনি কখনো কাউকে ছেড়ে দেন না – নিলা।

বুঝলে তো ভালো,, তাহলে আমি যাই রে,,, ভালো থাকিস। কাল দেখা হবে আল্লাহ হাফেজ – আমি।

আল্লাহ হাফেজ – সবাই।

আমি ধীরেধীরে বাড়ির দিকে হাটা ধরলাম। তার মধ্যেই পাড়ার একটা বখাটে ছেলে এসে আমাকে ডেকে বলল সে আমাকে ভালোবাসে,,, তাই আমিও বললাম,,,

কি বললে আবার বলবে প্লিজ (ঢং করে) – আমি।

বললাম। তোমাকে ভালোবাসি – ছেলেটি।

পকেটে কতো টাকা আছে গো – আমি।

কেনো টাকা দিয়ে কি হবে – ছেলেটি।

ওমা কি বলে,,,তুমি আমাকে ভালোবাসো তাই আজ থেকে আমি তোমার প্রেমিকা,, টাকা তো লাগবেই চলো শপিং করে আসি আমরা,,,তারপর দুপুরে একসাথেই লাঞ্চ করবো কেমন দেখি মানি ব্যাগ এ কতো টাকা আছে দেখাও না আমাকে – আমি।

আরে পাগলি আমি তো মজা করেছিলাম তোমার সাথে তুমি তো আমার ছোট বোনের মতো,, তোমাকে বোনের মতোই ভালোবাসি – ছেলেটি।

কিন্তু আমি তো তোমাকে অন্য ভাবেই ভালোবাসি,,, এই চলোনা শপিং যাই ( হাত ধরে) – আমি

এই হাত ছাড়ো,, এমন গার্লফ্রেন্ড আমার লাগবেনা বোন,,, আর জীবনেও কাউকে প্রপোজ করবো না তাও হাত ছাড়ো – ছেলেটি।

এভাবে বলছো কেনো,,, আসো আমার সাথে তোমাকে নিয়ে ঘুরে আসি – আমি।

আম্মা আপনি আমার আম্মা লাগেন তাও ছাড়েন আপনার সাথে শপিং মানে আমার বাপের ভিটামাটি বেচতে হবে আম্মা আমি আর কাউরে এসব কথা কমুনা তাও হাতটা ছাইড়া দেন আম্মা – ছেলেটি।

যাহ ছেড়ে দিলাম এর পর আমার আশে পাশে দেখলে বাপের নাম ভুলায় দিবো,,, আর তুর সেই করল্লার মতো তিতা বস রে বলিস,, হিয়া কোনো কিছুকে ভয় পায় না,,, সে ভয় দেখাতে জানে – আমি

ছেলেটা দৌড়,,, আর আমি বাসার দিকে হাটা দেই,,, কিছুক্ষণ এর মধ্যেই বাসায় চলে আসি,, মামনির সাথে দেখা করে রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে বিছানায় কিছুক্ষণ শুয়ে থাকি। তারপর উঠে গিয়ে গোসল সেরে দৌড়ে মামনির কাছে গিয়ে দুপুরের খাবার খাই আর আসার সময়ের কাহিনী বলি,,,সব শুনে মামনি শুধু হাসে।
______________

রাতে আমাদের বাসায় আবির,সিহাব,নিলয় আর আয়ান ভাইয়া আসে। তাদের দেখে বুঝতে পারছি আজকে আমার ১২ টা বাজবে,,, এই খচ্চর গুলা আমারে খাটিয়ে মারবে আজকে। আমাকে দেখে আবির ভাইয়া বলল,,,

কিরে পুচকি কি খবর তুর পড়ালেখা কেমন চলে – আবির।

কচু,,,,,তুমি আমাকে পুচকি বলো কেনো,,, আমি কিন্তু বড় হয়েছি আমার স্যার রাও বলে আমি বড় হয়েছি,, আমি কলেজে পড়ি হুম – আমি।

স্যার বলছে তার মানে স্যার যা বলবে তাই মেনে নিবি তাই তো – আবির।

ঐ পেচ ধরবা না তুমি সব সময় আমার কথার পেচ ধরো হুহ,,,,,পচা ভাই তুমি আমার – আমি।

ওল্লে আমার বোন টা,,লাগ কলে না তেমন,,, লাগ কললে ততলেত দিবো না (বাচ্চাদের মতো) – আবির

আবার আমাকে নকল করছো তুমি – আমি।

তুই বলতে পারলে তুর ভাই এভাবে বলতে পারবে বা কেনো বল তো,,,,, নে ধর তুর জন্য এতোদিনে যা চকলেট জমা করেছি সব এই বক্সের মধ্যে আছে,,, এবার খুশি তো আমার পুচকি বোনটা – আবির।

খুব খুশি তোমার বোনটা,,,, ঐ ৩ জনকে দেখো গিলে খাচ্ছে কিভাবে আমাদের,,, এরা এতোদিন আমাকে অনেক মেরেছে ভাইয়া ওদের তুমি এখন মারো – আমি।

তাই আমার বোনকে মেরেছে এরা সব গুলারে আজকে শাস্তি দিবো কেমন,, এখন চকলেট বক্সটা লুকিয়ে রাখ নইলে এরা চুরি করে নিয়ে যাবে তো – আবির।

বাহ ভালোই তো হিয়া আবিরকে পেয়ে আমাদের ভুলে গেলি,, আবার আমাদের নামে বিচার দিলি,, এতোদিন তুরে আমরা কই মেরেছি বল আমাকে – নিলয়।

তুমি তো কথাই বলবেনা,, এতদিন কোথায় ছিল এই ভালোবাসা হুম আজ যখন আমার আবির ভাইয়া ফিরে এসেছে তখন সবাই এসেছে আমার সাথে দেখা করতে। তোমাদের কাউকে লাগবেনা আমার (গাল ফুলিয়ে) – আমি।

গাল ফুলাচ্ছে দেখো,,,, এমন করেনা আমরা একটু ব্যস্ত ছিলাম বাবুই। এখন তো এসেছি তাই না আর দেখ তুর জন্য কি নিয়ে এসেছি – সিহাব।

পিছনে তাকিয়ে দেখি সিহাব ভাইয়া আইসক্রিম হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তাই বললাম,,, যাও মাফ করলাম শুধু মাত্র আইসক্রিমের জন্য তোমাদের মাফ করা হলো।

এখন সবাই ডিনার টেবিলে আয়,,,, মামনি।

এবার আবিরের ব্যাপারে জানা যাক,,,,,আবির হলো…….

To be continue….

অপ্রকাশিত ভালোবাসা
আইরিন সুলতানা
পর্বঃ ২৬

আবির হচ্ছে হিয়ার বড় মামার ছেলে। আবির বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। সে বাবার সাথে বাবার বিজনেস সামলায়। ছোট থেকেই হিয়াকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসে। হিয়ার যতো আবদার বায়না সব পূরণ করে আবির। কিছুদিন ব্যবসার কাজে বাহিরে ছিল। হিয়ার সাথে ভালো করে কথাও বলেনি তাই হিয়া রেগে ছিল আবিরের উপর।

আহমেদ মেনসনে আড্ডার আসর বসেছে। আবির এসেছে অনেক দিন পর সাথে নিলয় আর সিহাব তো আছেই। মিসেসঃ সেলিনা আহমেদ রান্নাঘর থেকে আজকে বেরোচ্ছেনি না। আবিরের পছন্দের সব রকম খাবার সে রান্না করছে।

মিঃ শরিফ আহমেদ, আবির,রায়হান,হিয়া,নিলয় এবং সিহাব বসে আছে ড্রয়িংরুমে। তারা তাদের মতো গল্প করায় মত্ত। এর মধ্যে নিলয় বলে,,,
অনেক তো রাত হলো আমরা এখন আসি চাচ্চু – আবির।

যাবি কিরে তুর চাচিমা তো তুর পছন্দের সব রান্না করছে আর তুই বলছিস চলে যাবি আজকে থেকে যা,, কাল সকালে না হয় বাসায় যাস – মিঃ শরিফ।

চাচিমা তো আমাকে ভুলেই গেছে। তোমরা সবাই গল্প করো আমি চাচিমার সাথে একটু কথা বলে আসি – আবির।

হা যাও যাও,, তোমার চাচিমাকে গিয়ে তেল মাথাও গিয়ে,,, তোমাদের ভাইয়েদের তো এটাই কাজ তাই না (রায়হানের দিকে তাকিয়ে) – হিয়া।

অনেকদিন হয়েছে কান মলা খাস না তাই না,, ডোজ টা একটু বাড়িয়ে তারপর তুরে দিতে হবে বুঝেছি,,, (মাথায় টোকা মেরে) – আবির।

না আমি তো ভালো মেয়ে,, লক্ষি মেয়ে,, আমাকে মারলে আল্লাহ তোমাকে পাপ দিবে পাপ,, মনে রেখো – আমি।

তোরে তো পরে দেখবো আমি আগে মামনির সাথে দেখা করে আসি,,, এই বলে রান্নাঘরের দিকে গেলো আবির। গিয়েই তার চাচিমার গলা জরিয়ে ধরলো,,,

এতক্ষণে চাচিমার কথা মনে পড়লো তাহলে – মিসেসঃ সেলিনা।

তোমাকে কি ভুলা যায় বলো,, তোমাকে মনে আছে বলেই তো ছুটে চলে এলাম তোমার কাছে। তুমি তো আমাকে ভুলেই গিয়েছিলে আমার সাথে কথা বলোনি তুমি এতদিন – আবির।

কেনো কথা বলবো যাওয়ার সময় আমাকে বলে গিয়েছিলি তুই – মিসেসঃ সেলিনা।

আব্বে আবির তুই তো বড্ড পাজি হয়ে গিয়েছিস, এতো কিউট চাচিমাকে তুই না বলে কিভাবে যেতে পারলি,, তুকে তো এবার শাস্তি পেতে হবে,, কি শাস্তি দেয়া যায় তোকে উম্মম্ম (কিছু একটা ভেবে) তুমি বলো চাচিমা কি শাস্তি দেয়া যায় এই আবির কে – আবির নিজেই নিজেকে বলছে।

ওরে দুষ্টু,, এতো বড় হয়েছিস তবুও তোদের দুষ্টুমি কমতে দেখলাম না,, সবগুলা এখনো বাঁদরামো করে বেরাস – মিসেসঃ সেলিনা।

বড় হয়েছি বলছো অথচ এখনো বিয়ে শাদি করাচ্ছো না,, আমি বুড়ো হয়ে গেলে কেউ কি আমাকে বিয়ে করবে নাকি বলো – আবির।

মিসেসঃ সেলিনা রান্না বন্ধ করে হা করে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে যে ছেলেকে শত বলেও বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারেনি সে আজ নিজেই বিয়ের কথা বলছে। তারপরেও নিজেকে স্বাভাবিক করে আবিরকে বলল,,

এখন বিয়ে নিয়ে ভাবতে হবে না মন দিয়ে ব্যবসা সামলা।

যা বাবা এতদিন তোমরা বিয়ে করতে বলেছ আমি রাজি হই নি আজ যখন আমি বিয়ে করবো বলছি তখন তুমি এটা বলতে পারলে চাচিমা ( করুণ চেহারায় ) ধুর চলে যাবো কিন্তু আমি – আবির।

আরে শুনে তো যা,,, চলেই গেলো। মিসেসঃ সেলিনা কাউকে ফোন করে বাসায় আসতে বলে আবার রান্নায় মনোযোগ দিলো।

এদিকে সবাই বসে গল্পে পেতে আছে তখনি বেল বেজে উঠে,, আমি গিয়ে দরজা খুলে অবাক,, দরজায় বড়মামা মামি আর নানু দাঁড়িয়ে আছে,, আমাকে হা করে দারিয়ে থাকতে দেখে নানু বলল,,

গিন্নি ভিতরে যেতে দিবে না নাকি পা’য়ে ব্যাথা হচ্ছে তো নাকি এই বুরো জামাই টার একটুও খেয়াল রাখোনা তুমি – নানু

বুড়ো বড্ড বার বেড়েছে তোমার তাই না,, দাড়াও নানিকে বলে তোমার ব্যবস্থা করতে হবে,, খালি অন্য মেয়ের পিছনে পড়ার ধান্ধা তাই না – আমি।

আচ্ছা সব পরে হবে এখন আমাকে ধরে নিয়ে বসা,,

তারপর সবাইকে নিয়ে আমি ড্রয়িংরুমে আসলাম,, বড়মামাদের দেখে সবাই অবাক হয়ে আছে। কেউ আশা করেনি এ সময় তারা এ বাসায় আসবে কারন আমি খুব কম দেখেছি তাদের এবাড়িতে আসতে। তখনি মামনি এসে বলল,,

এতো অবাক হয়ার কিছু নেই, ভাই ভাবিদের আমি ফোন করে আসতে বলেছি। এখন সবাই ডিনার করতে আসেন। ডিনারের পর সবার সাথে আমার অনেক জরুরী কথা আছে।

মামনি সিরিয়াস মুডে কথা গুলো বলল,, তাই সবাই তার কথা অনুসারে ডিনার করতে চলে গেলাম,, ডিনার শেষে আবার সবাই একসাথে বসে গল্প করছি তখন মামনি বলল,,,

আচ্ছা সবাই শুনো,, আবিরের তো বিয়ের বয়স পেড়িয়ে যাচ্ছে তাই আমি চাইছি যে আবিবের বিয়ে দিতে ভাই (আবিরের বাবা) আপনার এতে কি মত – মামনি।

তুমি তো জানোই আমরা আজকে ২ বছর ধরে চাইছি আবির যাতে বিয়ে করে কিন্তু আবির তো বিয়ে করবেনা বলে দিয়েছে,, আবিরের মত ছাড়া তো আর আমরা কিছু করতে পারিনা তাই না – আবিরের বাবা।

আমাদের আবির মত দিয়েছে বিয়ের জন্য,, ইনফ্যাক্ট সে নিজে এসে আমাকে বলেছে,, চাচিমা আমি তো বুড়ো হয়ে যাচ্ছি আমাকে বিয়ে দিবেনা এখন”,,,, কি আবির আমি ঠিক বলছি তো – মামনি।

আমরা সবাই একবার মামনির দিকে তাকাচ্ছি একবার আবির ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি। যে ছেলে বিয়ের কথা শুনলেই পালাই পালাই করতো সে নাকি মামনি কে এসব বলবে এটা মানতে কষ্ট হচ্ছে।

দিলে তো সবার সামনে আমার মান ইজ্জত শেষ করে,, তোমাকে বলাই ভুল হয়েছে আমার ধুর – আবির।

তার মানে আম্মু যা বলছে তা সত্যি,,, ভাইয়া আমাদের ট্রিট কবে পাবো বল,, আর ভাবিকে কবে দেখাবি আমাদের,, দেখ আমি কিন্তু সবার আগে ভাবিকে দেখবো – রায়হান

এহহ আসছে ভাবিকে দেখতে,, আবির ভাইয়া তুমি সবার আগে আমাকে দেখাবে বলো,, আমি তোমার বোন তাই না আমাকে আগে দেখাতে হবেই হবে – আমি।

ঐ তুর আগে ভাই টা আমার,, তাই আমি আগে ভাবিকে দেখবো,, তুই দূরে যাহ সুহ সুহ – রায়হান।

বিল্লিকি নাতি তুমি চুপ থাকো ভাই আমার,, ভাই আমাকে বেশি আদর করে তাই আমাকেই আগে দেখাবে তুমি তোমরা সবাই বাদ,, যাও ভাগো সামনে থেকে (আবিরকে জরিয়ে ধরে) আমার ভাই আমি ভাইয়ের পাশে থাকবো অন্য কেউ না – আমি।

তুই সর ভাইয়ের পাশ থেকে সর বলছি লজ্জা করেনা অন্যের ভাইকে এভাবে ধরে আছিস,, ভাইটা আমার তুই ছাড় ভাইয়ের হাত – রায়হান।

ঐ তোরা থাম হিয়া আমাকে কি বিল্লি মনে হিয় তুর কাছে,, আর রায়হান তুই কি এখনো ছোট বাচ্চা যে এভাবে বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করছিস – নানু।

দাদু এদের কে থামাও নইলে আমাকে এখানেই ২ ভাগ করে দুজনে নিয়ে যাবে,, এদের জন্য আমার আর বিয়ে করা হবেনা – আবির।

এ বাবা এই ছেলে দেখি বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে,, আবিরের বাপ তারাতারি ছেলের জন্য মেয়ে দেখা শুরু করো – আবিরের মা।

নায়ায়ায়ায়ায়া মা এভাবে বলো কেনো আমার পছন্দের মেয়ে আছে তোমাদের আর কষ্ট করে আমার জন্য মেয়ে খুজতে হবেনা – আবির।

জানতাম,, মামি আমার কথা ফলেছে তো,,তোমার ছেলে এতদিন ডুবে ডুবে জল খেয়েছে আর আমাদের কাউকে জানায় ও নি – আমি।

আচ্ছা এখন সবাই চুপ করো আর আবির তুমি আমাদের একদিন সময় করে আমাদের নিয়ে যাবি,, আর ভাই- ভাবি আপনারা আজ এখানেই থেকে যান,, আর কোনো কথা না সবাই ঘুমাতে যাও – মামনি।

বড়রা সবাই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো আর আমরা ছাদে চলে আসি আড্ডা দেয়ার জন্য…..

To be continue……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here