অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্ব: ১+২

অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্ব: ১+২
লেখা: আইরিন সুলতানা
পর্ব: ১

গল্পটা রায়হান আর হিয়া কে নিয়ে। গল্প শুরু করার আগে গল্পের হিরো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

রায়হান: বাবা মায়ের আদরের একমাত্র সন্তান। অনেক দুষ্টু আর রাগি স্বভাবের। সে এবার SSC পরিক্ষা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

রায়হানের বাবা মিস্টার শরিফ আহমেদ। একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক এবং সেই প্রতিষ্টানের প্রতিষ্ঠাতা রায়হানের দাদু মিস্টার সফিক আহমেদ। রায়হানের মা মিসেস সেলিনা আহমেদ। সেলিনা আহমেদ গৃহিণী।

এবার গল্পে ফিরা যাক……
In The Morning….

রায়হান পা টিপে টিপে একটা রুমের সামনে আসে। দরজা একটু ফাক করে দেখে রুমে আলো নেই তাই সে রুমে প্রবেশ করে আর পা টিপে টিপে খাটের কাছে জায় ড্রেসিংটেবিল থেকে লিপস্টিক আর কাজল নিয়ে খাটে সুয়ে থাকা মেয়েটার দিকে এগিয়ে যায়। তারপর নিজের কাজ শেষ করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

সকাল ৭:৩০ মিনিট……

মেয়েটি ঘুম থেকে উঠে আরমোড়া ভেঙে আয়নার সামনে দাঁড়ায় প্রতিদিনের মতো। আয়নায় নিজের চেহারা দেখে জোড়ে চেঁচিয়ে উঠে

…. আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া । মামনি ও মামনি দেখে যাও এদিকে তোমার বাদর ছেলে আমার মুখের কি অবস্থা করেছে। ( চেচিয়ে বলে)

মামনি: কি হয়েছে হিয়ামনির সকাল সকাল চেচাচ্ছ কেনো। একি তোমার মুখের এই হাল কে করলো। ( অবাক হয়ে তাকিয়ে )

হিয়া: কে আবার তোমার শয়তান ছেলে। আজকে তোমার ছেলের একদিন আর আমার যে কয়দিন লাগে।

মামনি: আচ্ছা শান্ত হয়ে আগে মুখ ধুয়ে আয় যা। ( হিয়া মুখ ফুলিয়ে চলে গেলো )

এই হচ্ছে গল্পের নায়িকা হিয়া। রায়হানের ফুপ্পির মেয়ে। হিয়ার বাবা মিস্টার আশফাক হোসেন । নিজের ব্যবসা সামলান। আর হিয়ার মা মিসেস রাবেয়া। হিয়া রায়হানের বাসায় থেকে পড়াশোনা করে। হিয়া এবার ক্লাস ৮ পরে।

In Breakfast Table…..

হিয়া: মামু তোমার ছেলে আজ আমার মুখে লিপস্টিক আর কাজল দিয়ে ভুত বানিয়ে দিয়েছে। তুমি কিছু বলবে নাকি আমি না খেয়ে চলে যাবো। ( টেবিলের সামনে দাড়িয়ে )

মি. শরিফ: রায়হান আমার হিয়ামনি যা বলছে তা কি ঠিক। ( গম্ভীর হয়ে )

রায়হান: আরে বাপি একটু মজা করেছি আর কি 😰😰

মি. শরিফ: আর যদি শুনি আমার হিয়ামনি কে তুমি জালিয়েছো তাহলে সবার সামনে কান ধরিয়ে উঠবস করাবো 😎😎

রায়হান: ওকে বাপি। 😒😒

মি. শরিফ: হিয়ামনি খেয়ে স্কুলে যাও। নইলে অসুস্থ হয়ে যাবে তারপর চকলেট দিবো না কিন্তু।😊

হিয়া: না মামু ৫ মিনিটে খাবার শেষ করছি আমি😒😒।

মিসেস সেলিনা: হয়েছে খাবার দিচ্ছি সবাই চুপচাপ খাবার শেষ করো।

হিয়া: মামনি আমি আর খাবো না। আমি স্কুল গেলাম বায় বায়।

রায়হান: ছোটাছোটি না করে আসতে যা পরে যাবি তো। ( হিয়া মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেলো )

চলবে……………

গল্প:অপ্রকাশিত ভালোবাসা
লেখা: আইরিন সুলতানা
পর্ব: ২

ব্রেকফাস্ট শেষ করে হিয়া রায়হান এবং মি. শফিক একসাথে স্কুল চলে গেলো।

In School…..

হিয়া ক্লাসে গিয়ে দেখে তার সব ফ্রেন্ডস অলরেডি চলে এসেছে তাই সে সবার সাথে আড্ডা দিতে বসে গেলো….
নিলা: hello জানু কেমন আছিস?

ইরা: আরে কি বলছিস আমাদের হিয়া কখনো খারাপ থাকতে পারে বলে তোর মনে হয় নাকি। 😜😜

হিয়া: কেনো আমাকে দেখে কি কোনো এলিয়েন মনে হচ্ছে যে আমি খারাপ থাকতে পারবো না। 😡😡 ( রেগে ইরার দিকে তাকিয়ে )

শান্তা: আরে না তেমন কিছু না ইরা বলতে চাইছে তুই তো সব সময় ভালোই থাকিস এটাই। তাই না ইরা। 😊😊 ( ইরা কে উদ্দেশ্য করে )

হিয়া: জানিস ই তো হিয়া সব সময় ভালো থাকে। হিয়ার ডিকশনারি তে খারাপ থাকা বলে কিছু আছে নাকি। 😎😎 ( ভাব নিয়ে )

নিলা: হু জানি । আচ্ছা ঠিক করে বস ক্লাসে স্যার আসছে।

এরা হচ্ছে হিয়ার বেষ্টু নিলা, শান্তা, ইরা, আর হিয়া এই ৪ জন ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছে সেই ক্লাস ৪ থেকে ৪ জন একসাথেই পড়াশোনা করছে। কেউ কাউকে ছাড়া কিছু বোঝেনা স্কুলে অনেক দুষ্টুমি করে। পড়াশোনা তে হিয়া সব সময় ই ভালো তাই স্কুলের সব শিক্ষক হিয়াকে খুব পছন্দ করে।

এবার একটু রায়হানের কাছে যাই দেখি সে কি করছে……..

In the Kindergarten……

মি. শরিফ আর রায়হান স্কুলে প্রবেশ করা মাত্রই একটা ছোট বাচ্চা রায়হানের কাছে দৌড়ে আসে আর বলে….

পিচ্ছি: ভাইয়া আমাল পলি আসেনি আজতে ( ভাইয়া পরি আসেনি আজকে)।

রায়হান: না সোনা তোমার পরিকে তো স্কুল যেতে হয় তাই আজ আসেনি। তুমি মন খারাপ করোনা কাল নিয়ে আসবো তোমার পরি কে। ( পিচ্ছি বাবুটাকে কোলে নিয়ে বলল )

পিচ্ছি: পমিজ তলো তাল নিয়ে আসবে । ( প্রমিস করো কাল নিয়ে আসবে )

রায়হান: পাক্কা প্রমিস নিল বাবু এবার ক্লাস রুমে যাও। পড়াশোনা করতে হবে তো তাই না।

নিল: উম্মাহ আমাল ভালো ভাইয়া। নামাও আমি পলতে যাই। ( নামাও আমি পড়তে যাই )

রায়হান: আচ্ছা যাও সোনা। ( নিল ক্লাসে চলে গেলো )

এই হচ্ছে নিল এই স্কুলেই পড়ে তবে হিয়াকে অনেক পছন্দ করে। এক কথায় হিয়া বলতে পাগল। শুধু নিল নয় এই স্কুলের সব বাচ্চারাই হিয়াকে অনেক পছন্দ করে। আর হিয়া স্কুলে এলেই বাচ্চাদের নিয়ে হেসে খেলেই দিন পার করে।

হিয়ার স্কুল ছুটির পর…………

হিয়া: কেউ কি বাসায় আছেন 😁 আমি কি ভিতরে আসতে পারি মা জননি 😂😂 । ( দরজার সামনে এসে একটু অভিনয় করে )

মামনি: নাটক কম করে ঘরে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আয়। আমি খাবার রেডি করছি।

হিয়া: আরে মামনি শোন না আজকে কি দেখেছি জানো। ( মন খারাপের ভান ধরে )

মামনি: কি দেখেছিস তুই??? 😒😒 ( ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করলো)

হিয়া: মামু না আজকে পাশের বাসার আন্টির সাথে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলছিল সেটাই আর কি 😰😰

মামনি: তুই কি সত্যি বলছিস😡😡

হিয়া: হ্যা মামনি 🙊🙊।

মামনি: আজ আসুক তুর মামু বাসায় তারপর তার ক্লাস নিবো আমি। 😡😡😡 তুই রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আয় আমি ভাত বাড়ছি যা।

হিয়া: ওকে মামনি । ( Innocent face করে )

বিকেলে মি. শরিফ আর রায়হান বাসায় আসার পর………..

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here