অনুভূতিরা শীর্ষে 💗দ্বিতীয়ধাপ,পর্ব-১৬,১৭

অনুভূতিরা শীর্ষে 💗দ্বিতীয়ধাপ,পর্ব-১৬,১৭
লেখনিতে_সুমাইয়া ইসলাম মিম
পর্ব-১৬
.
.
.
সাদাদের ব্যবহার আজকাল সুবাহকে বেশ ভাবাচ্ছে। এমনিতেই ওই রীতিকে সুবাহর মোটেই ঠিক লাগে না। সুযোগ পেলেই কেমন যেন সাদাদের সাথে লেগে থাকে। যা মোটেই ভালো লাগে না সুবাহর। আবার রীতি সম্পর্কে তার চাচী শাশুড়ি হয়, তাই চাইলেও কিছু বলতে পারে না। ঘরে বসে সাদাদের কাপড় ভাজ করছিলো সুবাহ। তাকে বাসায় কোন কাজই করতে দেওয়া হয় না, তবুও তার সংসারের টুকটাক কাজ করতে ইচ্ছে হয় তাই করে। তাছাড়া সাদাদের সব কাজই সে করে, বলতে গেলে ভালোবাসা থেকেই করে। সাদাদও তাকে বারণ করে না। সুবাহর এখন সাড়ে আটমাস চলে। অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছে সে। ঠিক মতো ঔষধও নিচ্ছে কিন্তু তবুও সে অনেকটা নেতিয়ে গেছে। খাওয়া দাওয়াও কমে গেছে অনেকাংশে। সুবাহর ভাবনার মাঝেই সাদাদ রুমে আসলো। সুবাহ সাদাদের দিকে তাকাতেই দেখে আজও তাকে বিধ্বস্ত লাগছে। চোখমুখে রাজ্যের ক্লান্তি। কি নিয়ে এতো চিন্তা করছে সে! সুবাহ সাদাদের দিকে এগিয়ে আসতেই সাদাদ তাড়াতাড়ি সুবাহকে পাশ কাটিয়ে তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। সুবাহ বেশ অবাক হলো। সাদাদ বাহির থেকে এসে সবসময়ই সুবাহর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিতো, তবে আজ তার কি হলো? অনেক বেশিই ক্লান্ত কি সে যে, সে সুবাহকে তার এক চিলতে হাসি দিতেও কার্পণ্য করলো। সুবাহর মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সুবাহ রুম থেকে বের হয়ে কিটকেটকে খুঁজতে শুরু করলো। কে জানে কোথায় আছে বাচ্চাটা!

–কিটকেট!

সুবাহ ডাক দিতেই কোথা থেকে ভউ ভউ করতে করতে এগিয়ে এলো সে। সুবাহ মুচকি হেসে ডগফুড হাতে নিয়ে কিটকেট এর পাতে দিতে নিলো কিন্তু পেটের জন্য কিছুতেই নিচু হতে পারছে না। অনেক কষ্টেও সে সফল হতে পারলো না৷ হঠাৎ তার হাত থেকে সাদাদ ডগফুডের ডিব্বাটা নিয়ে কিটকেটকে খেতে দিলো। সুবাহ সাদাদের দিকে তাকানো৷ কিন্তু আশ্চর্যভাবে এখনো সাদাদ সুবাহর সাথে কথা বললো না। সুবাহর এবার বেশ অভিমান হয়৷ এটার কোন মানে হয়? হঠাৎ করে কথা বলা বন্ধ করে দিলো। কি দোষ তার? সুবাহ আবার রুমে গিয়ে আস্তে করে খাটে শুয়ে পড়লো৷ উদ্দেশ্য সাদাদের সাথে সেও কথা বলবে না, খাবেও না, খেতেও বলবে না শুধু ঘুমোবে। এমনিতেও তার কোমর ব্যথা করছে সেই সন্ধ্যে থেকে। যেহেতু সাদাদ তাকে জিজ্ঞাসা করে নি তাই সেও তাকে কিচ্ছুটি বলবে না। মান হয়েছে তার সাদাদের উপর।

.
সাদাদ রুমে এসে দেখে সুবাহ গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে। এক হাত তার কোমরে। সাদাদ বেশ বুঝতে পারছে যে সুবাহ ব্যথাতে নড়তেও পারছে না। সাদাদ ধীরে ধীরে সুবাহর কাছে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো সুবাহর মুখচোখ কুঁচকানো। তার মানে এখনো সে ব্যথায় ভুগছে, অথচ তাকে কিছুই জানানো হয় নি। সাদাদ খাটের পাশে বসে সুবাহকে ডাকলো,

–সুবাহ! ওঠো! তোমার কি কোমর ব্যথা বেশি করছে?

উত্তরে সাদাদ শুধু সুবাহর একরাশ নিস্তব্ধতা পেলো। তাই আবার বললো,

–দেখো সুবাহ! আমি জানি তুমি ঘুমোওনি। তাই উঠো। রাতে খেয়েছিলে?

–এই সুবাহ! দেখো এমনিতেই কথা বলতে ভালো লাগছে না। উঠে খেয়ে মেডিসিন নিয়ে আবার ঘুমাও কেউ কিছু বলবে না। ভালো লাগছে না এতো ঝামেলা।

সুবাহ এবার খুব কষ্টেই উঠে খাটে বসলো। পেটের জন্য পা মেলে দিয়েই বসলো। সাদাদকে সবচেয়ে বেশি অবাক করলো সুবাহর চোখে পানি। সুবাহ সাদাদের দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বিষন্ন গলায় বললো,

–আমি তোমাকে অনেক বেশিই জ্বালাই তাই না সাদাদ! আর কিছুদিন অপেক্ষা করো!

–কিছুদিন অপেক্ষা করবো মানে? কি বলতে চাও তুমি?

সুবাহ তাচ্ছিল্য হেসে বললো,

–তেমন কিছু না। এটাই বললাম ডেলিভারির সময়তো নাও ফিরতে পারি তোমার কাছে। তাই…..

–সুবাহ!

সাদাদের ধমকে সুবাহ চুপ করে গেলো। এদিকে সাদাদের বুকটা ভীষণ ভয়ে কেঁপে উঠলো। সুবাহর কাছে গিয়ে হুট করে জড়িয়ে ধরলো সে।

.
ড্রেসিং টেবিলে বসে হাতে পায়ে লোশন দিচ্ছিলো রীতি। ঘুমানোর আগে এই হালকা রূপচর্চা না করলে তার ঘুম আসে না। আর স্ত্রীর এই রূপচর্চা মুগ্ধ হয়ে দেখছিলেন আসলাম মানিক! প্রতিদিনই নতুন করে সে তার স্ত্রীর প্রেমে পড়ে। রীতি আয়নায় তার স্বামীকে দেখে একটা হাসি দিলো। কিন্তু সেই হাসির অর্থদ্বার আর কেউ না করলেও বুঝে গেলেন আসলাম। সে ঠায় বিছানায় বসে রইলো। রীতি তার রূপচর্চার কাজ সম্পন্ন করে বিছানার দিকে এগিয়ে গেলো। আসলামের কাছাকাছি আসতেই সে রীতির হাত চেপে ধরে। রীতি অবাক হয়ে আসলামের দিকে তাকালো৷ তার চাহনিতে ছিলো তাচ্ছিল্য। আসলাম তার স্ত্রীর দিকে চোরের মতো তাকিয়ে আমতাআমতা করে বললো,

-আজও স্পর্শ করতে দেবে না? আমি তো তোমার স্বামীই। আমার অধিকার আছে!

রীতি তাচ্ছিল্য হেসে হাত ঝাড়া মেরে সরিয়ে নিয়ে বললো,

-তোমার স্পর্শ আমার ঘেন্না লাগে আসলাম!
যখন থেকে তোমাকে সেই ন্যান্সির বিছানায় দেখেছি তখন থেকে তোমাকে জাস্ট ঘেন্না লাগে। সমাজের জন্য মুখ বুজে রয়েছি।

রীতি অন্যপাশে যেতে নিবে তার আগেই আসলাম ক্রোধ নিয়ে বলে,

-তুমিও তো নিস্পাপ নও! কি মনে করেছো আমি জানি না যে তুমি সাদাদকে সিডিউস করার চেষ্টা করো? সে তো সম্পর্কে তোমার ভাসুরের ছেলে হয়!

রীতি চোয়াল শক্ত করে বলে,

-ভাসুরের ছেলের আগে সে আমার প্রথম ভালোবাসা ছিলো, আছে আর থাকবে।

আসলাম তাচ্ছিল্য হেসে বলে,

-সেই ভালোবাসার জন্যই বুঝি আমাকে বিয়ে করেছিলে?

রীতি আসলামের কথা শুনে আর কিছু বলার সাহস পেলো না৷ সে নিজেও বুঝতে পারছে অতীতে সে কতবড় ভুল করেছে। যার মাশুল হিসেবে দেশেই এসেছে সাদাদের বিয়ের খবর শুনে। তাও সুখবর সহ। যেটা শুনেই তার গা জ্বলে উঠেছিলো। এদিকে আসলাম রাগে ফেটে পড়ার মতো অবস্থা। নাহ আর বেশি দেরি করা যাবে না। এবার প্ল্যানে একটু চেঞ্জ করতে হবে। সাদাদকে সহই সাদাদের পরিবারকে শেষ করতে হবে। কিন্তু তার আগে যে তাকে দুর্বল করে নিতে হবে! ভেবেই পৈশাচিক হাসি দিলো সে। বারান্দায় বসে একের পর এক নিকোটিনের ধোঁয়া নিজের মধ্যে গ্রাস করতে লাগলো।

.
ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো রুবায়েত। সাদিয়া বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়ে সেও তাদের সাথে বিছানায় শুয়ে গেছে। হঠাৎ ফোনের আওয়াজে রুবায়েত বেডসাইড টেবিল থেকে ফোনটা তুললো। এতো রাতে সাদাদের ফোন দেখে সে কিছুটা বিস্মিত হয়।

-আসসালামু আলাইকুম সাদাদ! ভালো আছো?

–ওয়ালাইকুমুস সালাম রুবায়েত ভাই! জ্বী ভালো আছি। আপনি কি ঘুমিয়ে পড়েছেন? কিছু বলার ছিলো৷

-হ্যাঁ অবশ্যই বলো। সুবাহমনি ঠিক আছে?

–আছে আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু বেশ ভয়ে আছে।

-হ্যাঁ এই সময় একটু আকটু ভয় তো পাবেই। তাছাড়া বয়সও তো ওর বেশি নয়।

–হুম! রুবায়েত ভাই আপনাকে বলেছিলাম একটা লোককে ট্রেস করতে, পেরেছেন?

-কাজ চলছে। কি হয়েছে বলোতো সাদাদ!

–আজও আমার উপর হামলা হয়েছে!

(চলবে)

অনুভূতিরা শীর্ষে 💗
দ্বিতীয়ধাপ
লেখনিতে_সুমাইয়া ইসলাম মিম
পর্ব-১৭
.
.
.
সাদাদের থেকে তার উপর হামলা হওয়ার কথা শুনে বেশ চিন্তায় পড়ে গেলো। রুবায়েত এর চিন্তিত মুখ দেখে সাদিয়া তাকে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে কিন্তু রুবায়েত তাকে কিছুই বললো না। এখন সাদিয়াকে সাদাদের বিষয়ে বলা মানে তাকে মেন্টাল প্রেশারে ফেলে দেওয়া আর এতে সাদিয়া ও বাচ্চাদের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, তাই তাকে না জানানোই শ্রেয় মনে হলো।

.
আজ সকাল থেকেই সুবাহর শরীরটা বেশ ভেঙে ভেঙে আসছে। সাদাদকে বলার সুযোগও পায় নি, বেরিয়ে গেছে সে। কিন্তু সুবাহর মনে হচ্ছে আজই হয়তো তাকে হাসপাতালে যেতে হবে। সুবাহ অনেক কষ্টে রুম থেকে বেরিয়ে রুবাইয়াকে ডাকলো কিন্তু সে শুনতে পায় নি। এদিকে সুবাহর জন্য ব্যথা ক্রমশঃ বৃদ্ধির পাচ্ছে। এক সময় সে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে নিচে বসে পড়লো। এতোবড় বাড়িতে আজ সুবাহর পাশে কেউ নেই! সুবাহ কান্না করছে আর সাদাদকে ডাকছে কিন্তু সাদাদ তো বাসায়ই নেই কোথা থেকে আসবে সে৷ এদিকে সুবাহর জন্য আরো ভয়ানক হয়ে উঠছে পরিবেশ!

রীতি ফল খাওয়ার জন্য রান্নাঘরের দিকে যাওয়ার পথে সুবাহকে কাতরাতে দেখে সেদিকে ছুটে যায়। সুবাহকে এভাবে বসে থাকতে দেখে সে বেশ ভয় পায়। ছুটে গিয়ে সুবাহকে ধরে। সে চিৎকার করে রুবাইয়াকে ডাকতেই কিছুক্ষণের মাথায় রুবাইয়া হাজির হয়৷ বোনকে এভাবে কাতরাতে দেখে তার বুক ধুক করে উঠলো। তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে রীতি আর সে মিলে সুবাহকে নিয়ে গাড়িতে বসলো। আরইয়াকে তাড়াতাড়ি কোলে নিয়ে তারা হাসপাতালের দিকে ছুটলো। রীতি অনেকবার সাদাদকে ফোন দিয়েছে কিন্তু সে একবারও ফোনটা তুলে নি৷ রীতি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে কেন সাদাদ তার ফোন তুলছে না। তাই তাড়াতাড়ি আরফানকে ফোন করতেই সে বললো সেও হাসপাতালে আসছে কিছুক্ষণের মাঝে। এদিকে সুবাহর বেহুশ হওয়ার উপক্রম। রুবাইয়া তাকে সান্ত্বনা দিয়েও থামাতে পারছে না।

বেশ অনেকক্ষণ পর তারা হাসপাতালে পৌঁছালো। আরফান তাদের আগে এসেই কাগজপত্রের কাজ শেষ করে। সাদাদকে সেও ফোনে পাচ্ছে না৷ বুঝতে পারছে না কেউই যেই সাদাদ সুবাহকে দশ মিনিট পর পর ফোন দিতো সে আজ একবারও সুবাহর খোঁজ নিলো না? সুবাহকে ডেলিভারিতে নিয়ে যাবে কিন্তু তাতে বাধ সাধে সুবাহ। সে বারবার সাদাদের খোঁজ করছে, কেন যেন তার মনে হচ্ছে সে সাদাদকে শেষ দেখাও দেখতে পাবে না। সে যদি আর না ফেরে ওইরুম থেকে! সাদাদের হাতে সে তার বাচ্চাটাকে তুলে দিতে চায় কিন্তু সেই সাদাদেরই কোন খোঁজ নেই! এক সময় কান্না করতে করতেই সুবাহ বেহুশ হয়ে গেলো। ডাক্তার আর অপেক্ষা না করে তাকে নিয়ে গেলো ওটিতে।

সবাই বেশ চিন্তা করছে। সুবাহর অবস্থা বেগতিক। সাদিয়া, রুবাইয়া, আরফান, রীতি এমনকি মিনা খালাও হাসপাতালে এসেছে। সবাই একটাই দোয়া করছে সুবাহ তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে ফিরে আসুক। একদিকে সাদাদের চিন্তা অন্যদিকে সুবাহ। সাদাদকে সেই সকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। রুবায়েতকে বিষয়টা জানাতেই সে ছুটে গিয়েছে সাদাদের খোঁজে। সুবাহর শ্বশুর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে ছেলে ও ছেলের বউয়ের খবর শুনে। সে দেশের বাইরে ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছে৷ এদিকে সাদিয়ার কান্না করতে করতে বেহাল অবস্থা! রীতি বারবার তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।

সুবাহকে সি-সেকশন করানো হয়েছে। তার অবস্থা বেশি ভালো নয়। তাকে আইসিইউতে রাখতে হয়েছে। একটা ফুটফুটে ছেলে বাবু হয়েছে তার। কিন্তু আফসোস এখন পর্যন্ত না তো সে তার ছেলেকে দেখতে পেয়েছে আর না সাদাদ। সবাই মোটামুটি ধারণা করেছে সাদাদের নিশ্চয়ই কোন বিপদ হয়েছে নয়তো এতোটা দায়িত্বহীন সে নয়। সুবাহর মা পাথরের ন্যায় তার নাতিকে কোলে নিয়ে বসে আছে। মেয়েটা তার বাঁচবে কিনা সন্দেহ। এদিকে মেয়ে জামাইয়ের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সে তার এই নাতিকে নিয়ে কই যাবে? এতোটুকু বাচ্চা এখন পর্যন্ত তার মা বাবা কে দেখলো না৷

.
প্রায় দুইদিন হতে চললো সাদাদের কোন খোঁজ নেই। সবাই তার চিন্তায় মশগুল। সুবাহর অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো হলেও সে এখনো বিপদমুক্ত নয়। বাচ্চাকে নার্সেরাই সুবাহর কাছে এসে ফিডিং করায়। সুবাহর জ্ঞান ফিরলেও সে এখনো ঘোরের মাঝেই আছে। ঔষধ দিয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। আসলাম মানিক কোন কাজে যেন ঢাকার বাহিরে গেছে। রীতি জানার চেষ্টাও করে নি। কিন্তু আজ হঠাৎই কি মনে করে সে আসলামকে ফোন দিলো,

-জান! তুমি আমাকে ফোন দিয়েছো আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না।

-কই তুমি আসলাম?

-তোমাকে বললাম না ঢাকার বাহিরে এসেছি কাজে।

-সেটা আমিও জানি। কোথায় আছো সেটা জানতে চাইছি। জায়গার নাম বলো। আমার কিছু চাই!

-কি চাই জান তোমার? শুধু একটাবার বলো আমাকে! আমি এখন সিরাজগঞ্জ আছি। আমি…

আসলাম কথা বলছে তার মাঝেই রীতি টের পেলো ওপাশ থেকে বেশ ধস্তাধস্তির আওয়াজ আসছে। হঠাৎ করেই সব শব্দ বন্ধ হয়ে গেলো। আসলাম বেশ রাগী স্বরে এবার বললো,

-তুমি কি আমাকে জেরা করছো রীতি? এতো সাহস?

রীতি এবার থতমত খেয়ে বললো,

-আমি চেয়ে..ছিলাম তোমার সঙ্গে সব ঠিক করে নেবো৷ সাদাদের তো ছেলে হয়েছে। ওর জীবনে আর দখল দিয়ে আমার লাভ নেই। তোমাকে নিয়েই আবার নতুন করে সবটা শুরু করবো।

আসলাম অত্যাধিক খুশি হয়ে বললো,

-সত্যি বলছো জান! সত্যি?

-হুম সত্যি।

-আমি এক্ষুনি আসছি তোমার কাছে।

-না! না! তুমি কাজ শেষ করেই আসো৷ আমি অপেক্ষা করবো ঠিক সময়ের! আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চাই।

আসলাম মানিক খুশি হয়ে ফোনটা রেখে দিলো। এদিকে রীতি ফোন রেখে মুচকি হাসলো।

.
রুবায়েত সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সাদাদকে খোঁজার। কিন্তু কোনভাবেই ক্লু পাচ্ছে না৷ ঘটনা মোতাবেক সাদাদ বাসা থেকে বের হয়েছিলো তার অফিসের উদ্দেশ্যে। কিন্তু তার গাড়ি পাওয়া গেছে অন্য হাইওয়ের মাঝখানে৷ কিন্তু সাদাদের যাওয়ার কথা যেই দিকে সে সম্পূর্ণ উল্টোদিকে কি করতে গিয়েছে। রুবায়েত সাদাদের নাম্বার ট্র‍্যাক করেও কিছু জানতে পারে নি। নাম্বার টা বন্ধ দেখাচ্ছে। রুবায়েত তার ফোর্স দিয়ে সাদাদের ফোনে কখন কার ফোন এসেছে তার লিস্ট আনিয়েছে। সেই লিস্ট অনুসারে সাদাদ শেষ কলে কথা বলেছে শিশির রায়হান এর সাথে। কিন্তু রুবায়েত এর জানা মতে সে সাদাদের বন্ধু। আচ্ছা সে কি সাদাদের বিষয়ে কিছু জানতে পারে?

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here