#অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার
#পর্ব_১০,১১
#মেহরাজ_হোসেন_রনি
পর্ব_১০
আমি ভয় পেয়ে মনে মনে শুধু আল্লাহকে ডাকছি।।কারন আজ আমার কি হবে আমি নিজেও জানি না।।
জারা এসে দরজা লাগিয়ে দিল।।আমার ভয়টা আরো বেশি বেড়ে গেল।।
-রাজ এইবার তুই কোথায় পালাবি??
আমি ভয় পেয়ে বললাম আমি কেন পালাতে যাব।।
তোকে আমি বলেছিলাম না মেয়েদের থেকে দূরে থাকবি।তাহলে তুই মিমদের বাসায় কেন গিয়েছিস??
আমি মিমের বাসায় যায় নি।তুহিনের কাছে গিয়েছিলাম।।
জারা আমার দিকে চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে।।
কিছু না বলে লাঠি দিয়ে আমাকে মারতে লাগলো।।প্রায় অনেকক্ষণ মারার পর জারা মারা থামিয়ে দিল।।মনে হয় ক্লান্ত হয়ে গেছে।।।
কিন্তু আমি একদম ঠিক আছি।।জারা বেশি জোরেশোরে আমাকে মারে নি।।
আমার মাথায় দুষ্টুমি করার প্লান আসলো।।
আমি জারা পাশে বসে বললাম
-কিরে তোর সাথে নাকি আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।।
-হুম তো।।
-তো আবার কি।আয় তাহলে আমরা রোমান্স করি।।
– না এখন না বিয়ের পরে।।
এইবলে জারা চলে যাচ্ছিল।।
তুই যদি এখন এইখান থেকে চলে যাস তাহলে আমি মিমের কাছে যাব।কিরে দারিয়ে গেলি কেন।যা তুই।।আমার কাছে লামিয়ার নাম্বারও আছে।।
জারা এসে আমার পাশে বসলো।।
– কিরে গেলি না যে। তুই যা সমস্যা নাই।।
-না আমি যাব না।আর তোকেও কারো কাছে যেত দিব না।।
-না তুই চলে যা জারা।।
-না আমি যাব না।তুই বলেছিস রোমান্স করবি তাহলে কর আমি কিছু বলব না।।
আমি হেসে জারা কপালে চুমু দিয়ে বললাম আরে পাগলী আমি কারো কাছে যাব না।আমি তো শুধু তোর তাই না।।
জারা আমাকে জরিয়ে ধরে বলল হ্যা তুই শুধু আমার আর কারোর না।।
আচ্ছা রাজ তুই না বললি রোমান্স করবি।।
আমি হেসে বললাম আরে না।।আমি তো মজা করে বলেছিলাম।।।
আমি কিন্তু মজা করছি না রাজ।আমি সিরিয়াসলি বলছি আয় আজ আমি আর তুই রোমান্স করি।।
জারার মতিগতি দেখে বুজলাম জারা সত্যি বলছে।।ওর মুখে দুষ্ট হাসি রেখা।।
আমি যদি এখন জারাকে না থামাই তাহলে বিয়ে আগেই আমি জারার সন্তানের আব্বু হয়ে যাব।।
তাই আমি জারাকে বললাম তুই এখনো বাচ্চা মেয়ে আগে বড় হয়ে নে তারপর না হয় রোমান্স করা যাবে।।
জারা আমাকে খাটে ফেলে দিয়ে বুকের উপরে বসে বলল
-আমি তোর থেকে মাত্র চার মাসের ছোট বুঝছিস ।।আর আমি যদি বাচ্চা মেয়ে হই তাহলে তুই কি??
-আচ্ছা তুই ছোট মেয়ে না।এইবার ঠিক আছে।।এখন আমার বুকে থেকে উঠে যা।।
-না।আগে তোকে আদর করে নেই তারপর।।
-আমার কোনো আদরের দরকার নাই।।
কিন্তু কে শুনে কার কথা।।জারা প্রায় চার মিনিট আমার ঠোঁটে কিস করে ছেড়ে দিল।।
-জারা এইভাবে কেউ কিস করে।।দেখতো ঠোঁটের কি হাল করেছিস।।
-আরে এইটাতো কিছু না রাজ।।বিয়ের পরে আরো বেশি করে হবে।।
-হুম দেখা যাবে।।জারা আরেকটা কথা শুন।।
-বল কি বলবি।।
-তুই বিয়ের আগে তোর ওজনটা কমিয়ে নিস।।আগের থেকে তোর ওজন অনকটা বেশি।।
-এখন থেকে অভ্যাস করে নে।।তোর জন্য ভাল হবে।।
ভাইয়া দরজা খুলো।। আর কতক্ষণ লাগবে তোমাদের।।
জেরিনের কথায় আমি আর জারা নিজেদের ঠিক করে নিলাম।
জারা গিয়ে দরজা খুলে দিল।।আমি চুপ করে বসে ছিলাম।
জেরিন আমার পাশে এসে বলল দুলাভাই কেমন আছেন??
এই কথা শুনে আমি একবার জারার দিকে একবার জেরিনের দিকে তাকাচ্ছি।।দুইজনই আমার দিকে তাকিয়ে হাসতেছে।।
জেরিনকে বললাম কিরে তুই আমাকে দুলাভাই বলছিস কেনো??
-তোমার সাথে আপুর বিয়ে হবে তাই বললাম।।
-তাহলে কিন্তু আগের মত আর তোকে বোন মনে করবো না।। শালী হয়ে থাকতে হবে।।পারবি তো।।
-না ভাইয়া।।আমি তোমার বোন হয়ে থাকবো।।আপু আমাকে বলেছিল তোমাকে দুলাভাই ডাকতে।।
জারার দিকে তাকিয়ে বললাম
-জারা কথাটা কি ঠিক।।
-রাজ আমি তো জেরিনকে মজা করে কথাটা বলেছিলাম।।
-তোর কাছে এইটা মজা বলে মনে হয়।।জেরিকে আমি ছোটকাল থেকে নিজের বোন মনে করি।।
-রাজ আমার ভুল হয়ে গেছে।।
জেরিনও বলল ভাইয়া আমারও ভুল হয়েছে।।
আমি বললাম জারাকে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে।।
কি শাস্তি বল রাজ।আমি তোর সব শাস্তি মানতে রাজি।।
To be continue…..
#অনুভূতিটা_ছিল_ভালোবাসার
#পর্ব_১১
#মেহরাজ_হোসেন_রনি
আমি বললাম জারাকে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে।।
-কি শাস্তি বল রাজ।আমি তোর সব শাস্তি মানতে রাজি।।
-তেমন কিছু করতে হবে না।।শুধু আজকে দুপুরের খাবার তুই রান্না করবি।এটাই তোর শাস্তি।।
জেরিন বলল ভাইয়া আজকে কিন্তু না খেয়ে থাকতে হবে।।।
জারা বলল আচ্ছা দেখা যাবে।।
এইবলে জারা চলে গেল।।।
-ভাইয়া একটা কথা বলি।।
-হুম বল।।
-আচ্ছা তোমার আর আপুর যখন বেবি হবে তারা আমাকে কি বলে ডাকবে।।
-তোর কথার মানে টা বুঝলাম না।।
-আমি বলতে চাচ্ছি তোমাদের যখন বেবি হবে তারা আমাকে খালা মনি ডাকবে নাকি ফুপু ডাকবে।।
জেরিনের কথা শুনে আসলেই চিন্তায় পরে গেলাম।।না ভেবে ঠিক করতে পারছি না।।
তাই বললাম যখন বেবি হবে তখন দেখা যাবে।।এখন এই গুলো তোকে ভাবতে হবে না।।এখন চল সবার সাথে আড্ডা দেই।।
আমরা বসার রুমে চলে গেলাম।।আম্মু আব্বু মামা মামি একসাথে আড্ডা দিচ্ছিল।।আমরাও গিয়ে বসলাম তাদের সাথে।।।
মামা বলল জামাই তোমার দিনকাল কেমন চলছে।।
আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম এই জামাই টা আবার কে??
না কাউকে তো দেখছি না।।।
আমার এদিক সেদিক তাকানো দেখে সবাই হাসতেছে।।
আম্মুকে বললাম সবাই হাসতেছে কেন??আর জামাই কোথায়??এখানে তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।।
আব্বু বলল আরে বোকা ছেলে তোর মামা জামাই তোকেই বলেছে।।
আব্বুর কথা শুনে আমি নিজেই হাসতে লাগলাম।।
আমার পাশে মামি বসেছিল।।
মামি আমার কানেকানে বলল এতক্ষণ রুমে তোরা কি করছিলি।।
বুঝতে পারলাম মামি কি জানতে চাচ্ছে।।আমি কি কম নাকি।।
মামিকে বললাম তুমি আর আম্মু তো ফ্রেন্ড ছিলা।।মামা আর তুমি বিয়ের আগে কি কি করেছো তা আমি অনেকটাই জানি।।জারা কিন্তু কিছুই জানে না।।জারাকে গিয়ে বলে দেই।।।
-জারাকে কেন ওই কথা বলতে যাবি।।
-তাহলে তুমি কেনো জানতে চাও আমি আর জারা কি করেছিলাম।।
আম্মু বলল কিরে রাজ তুই আর তোর মামি কি কথা বলছিস।।আমাদেরও বল।।
মামির দিকে তাকিয়ে বললাম বল মামি আমরা কি কথা বলছিলাম।।
-তেমিন কিছু না।এমনেই কথা বলছিলাম।।
তারপর সবাই আড্ডা দিলাম শুধু জারা ছাড়া।।জারা এখনো রান্না করতেছিল।।
দুপুরে সবাই একসাথে খাবার খেলাম।।।
খাবার শেষে আব্বু বলল জারা তুই মাঝেমধ্যে আমার জন্য রান্না করিস।।তোর রান্নাটা অনেকটাই ভাল।।
আব্বুর এই কথা শুনে আম্মু তো সেই পরিমানে রেগে গেল।।
-তাহলে তুমি বলতে চাচ্ছো আমি ভাল করে রান্না করতে পারি না।ঠিক আছে আজ থেকে তোমায় আমার হাতের রান্না খেতে হবে না।।।
-আমি কি সেই কথা বলেছি নাকি।।
-তুমি তো তাই বুঝালে।।আজ থেকে তুমি বাসায় খাবার খাবে না।।বাহিরে থেকে খাবার খাবে।।।
এই বলে আম্মু রুমে চলে গেল।।আম্মুর পিছনে আব্বুও রুমে গেল।।
তাদের কাহিনী দেখে আমরা সবাই হাসতেছি।।
বিকালে জারারা সবাই চলে গেল।।
তাই আমিও বাহিরে গেলাম।।কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে আসি।।।গিয়ে দেখলাম রাফি আর তুহিন এসেছে কিন্তু রাকিব আসে নাই।।
তুহিন বলল রাজ রাকিবকে কল দিয়েছিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ।।
তাহলে চল ওর বাসায় গিয়ে দেখে আসি।।কি হয়েছে ওর।।
আমরা তিনজন মিলে রাকিবের বাসায় গেলাম।।রাকিবের আম্মু বলল ও নাকি সকাল থেকে রুম বন্ধ করে আছে।।
আমরা রাকিবের দরজায় গিয়ে ওকে ডাক দিলাম।
রাকিব দরজার ভিতর থেকে বলল ওর আম্মু আশেপাশে আছে কিনা।।
বললাম না নাই।।
রাকিব দরজা খুলে আমাদের ভেতরে নিয়ে আবার দরজা বন্ধ করে দিল।।।রাকিবের রুমে গিয়ে আমাদের অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থা।।।সারা রুমে সিগারেটের ধোয়া।। আর কি বাজে গন্ধ।।
রাফি বলল রাকিব তোর রুমের এই অবস্থা কেন??
রাকিব বলল রিয়াকে আমি অনেক ভালবাসি।।আজকে রিয়ার বিয়ে।।আমি রিয়াকে ছাড়া কিভাবে থাকব।।
এই বলে রাকিব কান্না করে দিল।।।
ছেলেরা কান্না করে এইটা খুব কম দেখা যায়।।
রাকিবের কান্না দেখে বললাম তুই আগে কিছু করলি না।।।
-আমি মনে করেছিলাম রিয়া বিয়েটা করবে না।।কিন্তু আমার চিন্তাটা ভুল হয়ে গেল।।
রাফি বলল এখন এই সব বলে কি লাভ।।রিয়ার তো বিয়ে হয়ে গেছে।।তাহলে এখন আর মনে রেখে কি করবি।।
রাকিব কিছুই বলল না।।চুপ করে বসে কান্না করছে।।
To be continue…..