#সুখ_পাখি #Ayrah_Rahman #part:–26

#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:–26

কি ব্যপার তরু হঠাৎ ডেকে পাঠালে যে,

কোন সমস্যা?

প্রায় খানিকক্ষণ নিরব পরিবেশ বিরাজ থাকার পর শুভ্রের প্রশ্নে তরু শুভ্রের দিকে তাকায়..

— কোথা থেকে যে শুরু করব বুঝতে পারছি না।

— কেন কি হয়েছে বলো?

— আসলে ব্যপার টা আমার কিংবা তোমাকে নিয়ে না,,এটা আসলে অনিল হায়দার কে নিয়ে…

— অনিল হায়দার? নাম টা চেনা চেনা লাগছে..

শুভ্রর এহেন কথায় তরু খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলে…

— কেন শুভ্র ভাই? আপনি অনিল হায়দার কে চেনেন না?

— না আসলে তেমন চিনি না,তবে নাম শুনছি…
কেন তুমি চেনো নাকি? কে সে?

শুভ্রের প্রশ্নের জবাবে তরু পাল্টা প্রশ্ন করে,,

– আচ্ছা শুভ্র ভাই,, অভ্রের বাবা কে চেনেন?

— হুম চিনব না কেন? খুব ভালো করে ই তো চিনি,,আঙ্কেল তো খুব ভালো মানুষ,,

— ওনার নাম কি?

— ওনার নাম তো মিনহাজ হায়দার,, কেন বলো তো?

তুমি কি আমাকে অভ্রের বাবার নাম জানতে এখানে ডেকে ছো নাকি তরু?

— না না,,
আসলে আমি এত দিনে খোঁজ নিয়ে যা জানতে পারলাম তার মুল ভাব টা এই দাড়ায় যে অনিল হায়দার আর মিনহাজ হায়দার একই মানুষ,,,

তরুর কথায় শুভ্র খানিকটা ভ্রু কুচকে তরুর দিকে তাকিয়ে থাকে,,

— তুমি কি শিউর? যে অভ্রের বাবার দুই নাম এন্ড আমার জানা মতে অনিল হায়দার লোকটা বেশি সুবিধা জনক নয়,,

— হ্যা,,আমার তথ্য তো তাই বলে,,,

— তরু যা করবে ভেবে করবে কারণ এটা অভ্রের বাবার বিষয় আর অভ্র তার বাবাকে ভীষণ ভালোবাসে এন্ড সে এ বিষয়ে ভীষণ পসেসিভ,,তাই বি কেয়ার ফুল…

আর হে তোমাকে আমি অন্ধ বিশ্বাস করতে পারি না,,তাই বিষয় টা আমি নিজেই দেখব,,

বলেই শুভ্র চলে যায়,,, আর তরু বসে ভাবতে থাকে সে কি করবে…

— আমার কি অভ্র কে বলে দেওয়া ঠিক হবে? অভ্র কি আমার কথা বিশ্বাস করবে?এমন হাজারো প্রশ্ন তরুর মনে উকি দিতে লাগলো,,,

কিছুক্ষন চিন্তা করে ও কোন উপায় বের করতে পারলো না,,

শেষ মেষ সে সিদ্ধান্ত নিলো যা হবার হবে সে অভ্রকে সত্যি টা বলেই দিবে,,কিন্তু কে জানত এটা ই হবে তরু আর অভ্রের জন্য কাল হয়ে দাড়াবে…..

_____________________________
ঠিক এমনই সময়ে,,

আরুর মনেও বসন্তের হাওয়া বিরাজ করছিলো,,তখন তার বয়স আর কত হবে ১৬ কি ১৭,,, সবে মাত্র এসএসসি দিয়েছে,,,

আমাদের বয়স টা যখন ১৪ থেকে ১৮ এর মাঝে থাকে তখনকার আবেগ টা বরাবরই বেশি থাকে,,আমাদের আবেগ.. অনুভূতি,, ভালো লাগা,,ভালোবাসা,, অভিমান সব কিছু ই বেশি বেশি হয়,,তখন কোমল মনে অল্প আঘাতের আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়,,

​আরুর বয়স টা ও ঠিক এমন ই ছিলো,,শুভ্রের প্রতি
তার ভালো লাগা দিন কে দিন বাড়তেই আছে…
শুভ্র যদিও আরুকে ইগনোর করে,,তবুও আরু ও ছিলো নাছোরবান্দা…

তেমনি একদিন…

আরু আর আরুর স্কুল ফ্রেন্ড ঘুরতে বের হয়েছিলো,,, তখন ও আরুর বন্ধুত্ব দিশার সাথে হয় নি,,

— কিরে মুন তোর মন খারাপ নাকি?

আরুর এহেন কথায় মুন আরুর দিকে তাকালো,,

— না তো মন খারাপ না তো,,তো হঠাৎ বের হলি,কারণ টারন আছে নাকি?

— আরে না কি কারন থাকবে…এমনি..

— ওকে চল তাহলে,,ওই পার্কের ওই দিকে যাই,,,

— হুম চল…

আরু আর মুন পার্কের ভিতরে ঢুকে পরে,,

এদিন সেদিন হাটার পর ক্লান্ত হয়ে দুই বান্ধবী ই বেঞ্চে বসে পরে,,হঠাৎ ই আরুর নজর জায় দুরে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ছেলে আর একটা মেয়ের দিকে,,

হুম,,সেখানে শুভ্র ই ছিলো…

আরু শুভ্র কে দেখে যতটা না খুশি হয়েছে ঠিক তারচেয়ে ও বেশি মন খারাপ হয়েছে যখন দেখে তার পাশে আরেকটি মেয়ে,,

ভালোবাসা র মানুষের পাশে কোন মেয়ে কেন মেয়ের ছায়াও আমরা সহ্য করতে পারি না। আরুর ক্ষেত্রে ও ঠিক সেম..

আরু তাদের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল…

শুভ্র আর তার পাশের মেয়েটা হেসে হেসে কথা বলছিলো,,এটা দেখে তো আরু পারে না মেয়েটাকে কাচা গিলে খাই,,

আরু তাদের সামনে গিয়ে দাড়ালো,,
হঠাৎ এই সময়ে আরুকে সামনে দেখতে পেয়ে বিরক্তিতে শুভ্রের কপাল কুঁচকে যায়।

শুভ্র ঃ– কি চাই?

আরুর সে দিকে কোন খেয়াল নেই সে তো মেয়েটি কে দেখতে ব্যস্ত। দেখা শেষে আরু বলে…

— উনি কে আপনার?
— কেন?
— আপনি আমাকে রেখে আরেকটা মেয়ে নিয়ে প্রেম করছেন?
— তোমাকে রেখে মানে,,এই মেয়ে তুমি এমন নির্লজ্জ কেন? তোমাকে এত অপমান করি তাও তোমার শিক্ষা হয় না?
— ভালোবাসলে নির্লজ্জ হতে হয় জানেন না আপনি?

আরুর এই অকপটে উত্তরে শুভ্রের বিরক্তি রাগে পরিনত হয়,,,

–সেই চট্টগ্রাম থেকে তুমি আমাকে জালাচ্ছো,,কোথায় গিয়ে শান্তি পাই না,,বসে শান্তি পাই না,, আমি তোমাকে ভালোবাসি না,,তুমি কি এই সিম্পল কথাটা বুঝতে পারছো না,,আমাকে শান্তি দাও,,আমি আমার মতো করে বাচতে চাই,,এত নির্লজ্জ মানুষ কিভাবে হয়,,ছেলেদের গা য়ে পরতে আসো লজ্জা করে না,, তোমাদের মতো মেয়েদের লজ্জা থেকেই বা কি হবে,,

— আমাদের মতো মেয়ে?( আরু খানিকটা চমকে বলে)
— কেন বুঝতে পারছো না,,রাস্তা…..

— এনাফ… এনাফ এন্ড এনাফ ( শুভ্র কে আর বলতে না দিয়ে আরু বলে উঠলো)

— মিস্টার শুভ্র অনেক বলেছেন আর না,,ভালোবাসি বলে এভাবে অপমান করবেন সে টা হতে পারে না,,আমাকে রাস্তার মেয়ে মনে হয় তো? ঠিক আছে,, এই রাস্তার মেয়ের মুখ আপনার আর কখনো দেখতে হবে না,,আপনার সামনে আর কখনো আসবো না,,এটা আমি বলে গেলাম,,, বলেই আরু কাদতে কাদতে পার্ক থেকে বের হয়ে যায়,,

—মেয়েটাকে এভাবে না বললেও পারতে শুভ্র,, টিনার কথায় শুভ্র তার দিকে তাকাই,,( টিনা শুভ্রের ফুফাতো বোন)

— তুমি জানো টিনা কতটা নির্লজ্জ এই মেয়ে…

— এটা নির্লজ্জ নয়,,এটা ভালোবাসা,, যা তুমি এখন বুঝবে না তবে একদিন বুঝবে যখন সময় থাকবে না,,

— এই বিষয়ে আমি আর কথা শুনতে চাচ্ছি না টিনা,, চল বাসায় চলো,,,,

_________________

এদিকে আরু কাঁদতে কাঁদতে রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছে,
আরুর পিছনে মুন তাকে থামার জন্য বলছে কিন্তু আরু কারো কথাই শুনছে না,,,,

আরু দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে,, মুন এই যে বলছে সরে যেতে কিন্তু আরু সরছেই না,,হঠাৎ আরু দেখতে পেলো একটা বাস তার দিকেই আসছে,,

আরুর মাথায় তখন শুভ্রের কথা গুলোই ঘুরছে,,সে সেখানে ঠাই দাঁড়িয়ে,, একটুও নড়ার শক্তি বা ইচ্ছে কিছু ই নেই,,,

বাস একটু ডানে যাওয়ায় বাসের ধাক্কা টা একটু কম হলেও শেষ রক্ষা হয়নি,,,

বাসের ধাক্কায় আরু রাস্তার সাইডে গিয়ে পুনরায় মাথায় ধাক্কা খাই,,যার ফলে আরুর রক্তে রাস্তার এক পাশ ভরে যায়,

—- আরররররররররররুওওওওও

চলবে…..

[ আজকের পার্ট টা কেমন জানি এলোমেলো লাগছে প্লিজ সবাই বাজে কমেন্ট করবেন না🥺🥺]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here