#প্রাণেশ্বরী #Writer_Asfiya_Islam_Jannat #পর্ব-২৫+২৬

#প্রাণেশ্বরী
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-২৫+২৬

“চুপ করে আছিস কেন? প্রশ্ন করেছি আমি।”

ছন্দ তবুও মৌন। উত্তর কি দিবে তাই খুঁজে পাচ্ছে না সে। ছন্দকে এভাবে নীরব থাকতে দেখে জিহান ভ্রু কুঁচকে তাকায়, “বল! নয়ন ও প্রাণের বিষয় নিয়ে তোর এত মাথাব্যথা কেন? আমার খেয়াল আছে, ওদের ব্রেকাপের নিউজ বের হওয়ার পর তোকে খুশি খুশি লাগচ্ছিল৷ আবার এখন রাগ দেখাচ্ছিস। মাঝে দেখলাম প্রাণ ও তোকে নিয়ে কন্ট্রোভার্সিও হচ্ছে। মানে ব্যাপারটা কি বলতো?”

ছন্দ মাথার পিছনে হাত গলিয়ে অপ্রস্তুত হেসে বলে, “তেমন কিছুই না।”

জিহান তী’র্য’ক দৃষ্টিতে তাকে একবার পর্যবেক্ষণ করে নিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে, “বাই এনি চান্স, তুই কি প্রাণকে পছন্দ করিস? ডু ইউ হ্যাভ ফিলিংস ফর হার?”

কথাটা কর্ণগোচর হওয়া মাত্রা ছন্দ পূর্ণচোখে তাকায় একবার। দৃষ্টি-দেহ ভঙ্গি একদম স্বাভাবিক। অথচ এই কথা শুনে তার ভড়কে উঠার কথা ছিল। তৎক্ষনাৎ নাকচ করার কথা ছিল। জিহান খেয়াল করে বিষয়টা, উত্তর সে পেয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে৷ সে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “তুই ভালো করেই জানিস, প্রাণ এবং তোর মাঝে কিছু হওয়া সম্ভব না। তবুও এই ভুলটা কিভাবে করলি?”

ছন্দ এক হাতের মুঠোয় আরেক হাত নিয়ে ঘেঁষতে থাকে। নিজেকে কোনরকম ধাতস্থ করে বলে, “ইচ্ছে করে তো মানুষ আর ভুল করে না, তাই না?”

ছন্দের এমন উত্তরে জিহান শতভাগ নিশ্চিত হয়ে যায়, ছন্দ আসলেই প্রাণকে পছন্দ করে অথবা এর উর্ধ্বেও হতে পারে। সে অসন্তোষজনক কন্ঠে বলে, “তুই বাচ্চা না ছন্দ। ভালো-মন্দ সবই বুঝিস৷ এখানে কমপ্লিকেশন অনেক, সে-টা জানিস তুই। একটা ফ্যাক্ট নাহয় অদেখা করলাম আমি, কিন্তু বাকিগুলা?”

ছন্দ সোফার পিছনে মাথা হেলিয়ে আঁখিপল্লব এক করে বলে, “জানি না।”

“পাথরের বুকে ফুল ফুটে না ছন্দ। অযথা চেষ্টা করিস না। আর নয়ন যা যা করেছে, এরপর প্রাণকে পাওয়া একেবারে দুঃসাধ্য ব্যাপার।”

“দুঃসাধ্য ব্যাপার কিন্তু অসাধ্য তো নয়।”

জিহান বলে, “তা নাহয় মানলাম। তবে আঙ্কেল-আন্টি মানবে বলে তোর মনে হয়? প্রাণ কিন্তু তোর…”

জিহানকে আর বলতে না দিয়ে ছন্দ চোখ খুলে বলে উঠে, “বাবা-মায়ের কথা চিন্তা করলে আজ আমি এই পর্যায়ে থাকতাম না। তারা কিন্তু কখনো আমার ক্রিকেট খেলা সাপোর্ট করেনি অথচ এখন আমাকে নিয়ে তাদের গর্বের শেষ নেই। তাই তাদের কথা টানবি না।”

“আমাকে বুঝ দিলেই হবে না ছন্দ। সবটা তুই যতটা সহজ ভাবছিস ততটাও না।”

“প্যারা নেই। ভাগ্যে যা আছে তাই হবে। বাদ বাকি চেষ্টা করতে সমস্যা কই?”

“ফল ব্যর্থতা ব্যতীত কিছু হবে না জেনেও, চেষ্টা করা কি বো’কা’মি না?”

ছন্দ সরু দৃষ্টিতে তাকায়, “বো’কা’মি’ই যদি হতো তাহলে ফল ব্যর্থতা জেনেও রবার্ট ব্রুস এতবার চেষ্টা করতেন না।”

জিহান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “আমি জানি না তোর পরিনতি কি হবে। তবে এতটুকু দোয়া করি, মন যাতে না ভা’ঙ্গে তোর।”

ছন্দ দূর্লভ হাসে। সে নিজেও জানে এসব এত সহজ না। প্রাণ ও সে দুটো ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ। জীবনাদর্শ, স্বভাব, চালচলন, আচার-আচরণ সবই ভিন্ন। এমনকি কল্পনায় তার যেরকম মেয়ে পছন্দ, প্রাণ তার সম্পূর্ণ বিপরীত একজন। অথচ এই রমনীতেই তার মন,কৌতূহল, ধ্যাণ আটকে রয়েছে। এসব কখন,কেন, কিভাবে হলো জানা নেই তার। শুধু এতটুকু জানে প্রাণহীন রমণীটাকেই তার চাই। খুব করে চাই।

_____

সময়ের অবধারিত স্রোতের সাথেই কেটে গেল সপ্তাহ। ঋতু বদল হলো, আনকোরা ফুল প্রস্ফুটিত হলো বৃক্ষের আঁকেবাঁকে। পাখিরা ধরলো অন্য সুর। দিবাবসানের সময় তখন। নীলাভ আকাশে হরিদ্রাভ,র’ক্তি’মার পাতলা আস্তরণ, ধূমকেতুর ন্যায় ছুটে গিয়েছে দূর-দূরান্তেে। প্রাণ অলিন্দে দাঁড়িয়ে দেখছে সায়াহ্নের অরূপ-রতন দৃশ্য। বাতাস নেই কোন, ভ্যাপসা গরম পড়ায় কপালে ও নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। অতি উজ্জ্বল গাল দুটো ঈষৎ লাল। বুঝাই যাচ্ছে, এই মাত্রাতিরিক্ত গরম তার সহ্য হচ্ছে না। কিন্তু তবুও সে স্থির দাঁড়িয়ে, যাচ্ছে না ভিতরে ঠান্ডা হাওয়ার নিচে৷ অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছে এখানে। সেবার ছন্দ তাকে প্রকৃতির ঐশ্বরিক সৌন্দর্যের সাথে পরিচয় করাতেই, আলাদা এক মায়ায় জড়িয়ে গিয়েছে সে৷ প্রকৃতির মাঝেই প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছে৷ যার জন্য এখন সময় পেলেই সৃষ্টির অপূর্ব,অদ্ভুত উপভোগ করতে পিছপা হয় না। প্রাণ যখন আপন ভাবনায় মগ্ন ঠিক তখন আগমন ঘটলো আশা বেগমের। তিনি প্রাণের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললেন, “কি করছিস?”

প্রাণের ধ্যাণ ভাঙ্গলো। সে পাশ ফিরে তাকিয়ে বলল, “তেমন কিছু না। বল তুমি!”

আশা বেগম আদুরে হাতে প্রাণের মাথা বুলিয়ে দিয়ে বললেন, “এবারও কি বড়সাহেবের অনুষ্ঠানে যাবে না?”

প্রাণ নিশ্চল কন্ঠে বলল, “যাবো তো। এবার যে আমার যাওয়াই লাগবে।”

প্রাণের উত্তরে আশা বেগম বিস্মিত হলেন। প্রাণ প্রত্যেকবার নিহাল শিকদারের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ঠিকই, কিন্তু কখনো সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় না। এটাই রীতি হয়ে গিয়েছিল যেন। উল্লেখ্য যে, তার কর্তব্য আছে বিধায় প্রাণকে প্রতিবার যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। কিন্তু আজ প্রাণকে রাজি হতে দেখে আশ্চর্যান্বিত না হয়ে পারলেন না। কিয়ৎক্ষণ লাগলো তার বুঝতে প্রাণের যাওয়ার পিছনে ঠিক কোন উদ্দেশ্য আছে। কিছু তো চলছে তার মাথায়। আশা বেগম কন্ঠস্বর নামিয়ে বলেন, “তুই কি সত্যি যাচ্ছিস?”

“হ্যাঁ আশামা।”

আশা বেগম গোপনে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে প্রাণের গালে হাত রেখে বললেন, “যাই করিস না কেন সাবধানে। নিজের ক্ষতি যাতে না-হয়। এখন যা, রেডি হয়ে নে। সময় চলে যাচ্ছে।”

প্রাণ হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিয়ে মাথা দুলালো৷ শব্দহীন পায়ে এগিয়ে গেল রুমের দিকে।

_____

বহুদিন পর ‘শিকদার ভিলা’ আজ তার নিজস্ব রূপে সেজেছে। জৌলুস, আভিজাত্যপূর্ণ। নিহাল এবং মেহরিমা শিকদারের পঁচিশ তম বিবাহ বার্ষিকী বলে কথা। সাধারণ হলে কি হয়? দোতলা বাড়ির পিছনে, খোলা আকাশের নিচে বাগানে বেশ আয়োজন করেই সাজানো হয়েছে সব। আমন্ত্রণের সংখ্যা খুব কম, তাই বাসার ভিতর আয়োজন করা। কিন্তু যারা আমন্ত্রিত সকলেই প্রখ্যাত ব্যক্তি, শিল্পী, পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী। যার ফলে তাদের আগমন ঘটতেই পরিবেশ হয়ে উঠে রমরমা। গেটের বাহিরেই রিপোর্টারদের ভিড়, ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না তাদের। যার কারণে শোরগোল শোনা যাচ্ছে।

প্রাণ এসে পৌঁছায় সাড়ে আটটার পরে। আসতেই সর্বপ্রথম তার চোখে পড়ে নিহাল ও মেহরিমা শিকদারকে। ঠোঁটের কোণে দুইজনের চওড়া হাসি, একদম সুখী দম্পতি যেন। পাশেই তাদের দুই ছেলে-মেয়ে পিউ ও প্রিয়ম দাঁড়ানো। দুইজনই প্রাণের ছোট। তবে তাদের চারজনকে একত্রে এক ফ্রেমে বন্দী করলে যে কেউ বলে উঠবে, “এ হ্যাপি ফ্যামিলি।” কিন্তু এর মধ্যে প্রাণ কোথায়? আদৌ কি কোন স্থান আছে তার এই পরিবারে? কথাটা ভেবে প্রাণ তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো৷ অতঃপর মন্থর পায়ে এগিয়ে গেল নিহাল শিকদারের দিকে। তার সন্নিকটে গিয়ে অ’ভি’ন’ন্দ’ন জানালো। নিহাল শিকদার যদিও বা প্রাণকে দেখে খুশিই হলেন তবে মেহরিমা শিকদার, পিউ বা প্রিয়ম কেউ তেমন একটা খুশি হলো না বোধহয়৷ তাকে দেখামাত্র তারা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল। তাদের ব্যবহারই প্রকাশ করে দিচ্ছে, ঠিক কতটা অপ্রিয় সে তাদের নিকট।
প্রাণ তাদের সম্মুখে বেশিক্ষণ দাঁড়ালো না, দ্রুত চেপে আসলো। সে এক কিনারে গিয়ে দাঁড়াতেই লোকজন এসে তার খোঁজ নিতে থাকে। যেহেতু আগে সে কখনো এই আয়োজনে উপস্থিত হয়নি সেহেতু মানুষের কৌতূহল অনেক। নানা রকম প্রশ্ন করেই যাচ্ছে তারা। সময় যত গড়াচ্ছে প্রাণ তত অস্বস্তিবোধ করছে। অসহ্য লাগছে সব।
এন্টারটেইমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে ডেবিউ করার পর নিহাল শিকদার যখন প্রাণকে নিজের মেয়ে বলে পরিচয় করান তখন সর্বপ্রথম এই প্রশ্নটাই উঠে, “প্রাণ এতদিন কোথায় ছিল? আর তাকে কেন কখনোই কোন অনুষ্ঠান ও নিজের বাবা-মায়ের বিবাহ বার্ষিকীতে দেখা যায় না? এর কারণ কি?” নিহাল শিকদার যদিও বা নিজের জীবন সম্পর্কে সব গোপন রাখতেন তবুও পাপাজিরা ঠিক তার বিবাহ আর সন্তানের খোঁজ পেয়ে যায়। কিন্তু প্রাণের তথ্য কারো কাছেই ছিল না বিধায় প্রশ্নটা তখন হট টপিক হয়ে যায়। সেসময় নিহাল শিকদার খুব চালাকির সাথে প্রাণের অন্তর্মুখী হওয়ার বিষয়টা ব্যবহার করেন এবং একটি কাহিনী বানিয়ে দেন। এ নিয়ে প্রথম প্রথম গুঞ্জন উঠলেও পরবর্তী যখন প্রাণকে আসলেই কোন পার্টি বা গ্যাদারিং-এ দেখা যেত না তখন সবাই শান্ত হয়ে যায়৷ তবে আজ প্রাণকে দেখে সকলের কৌতূহল পুনরায় সৃষ্টি হয়। ফলে, আজ তাকে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে৷
প্রাণ সুযোগ খুঁজছিল নিহাল শিকদারের সাথে আলাদা কথা বলার। অতঃপর তাকে একা পেতেই প্রাণ এগিয়ে যায় এবং তার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে জানায়। নিহাল শিকদার প্রাণকে স্টাডিরুমে গিয়ে অপেক্ষা করতেন বলেন। প্রাণ তাই করে। কিঞ্চিৎ সময় পেরুতেই নিহাল শিকদার হাজির হন স্টাডিরুমে। প্রাণের দিকে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করেন, “হঠাৎ আমার সাথে কিসের কথা তোমার?”

প্রাণ কয়েকটা ডকুমেন্টস এগিয়ে দিয়ে অতি শান্ত কন্ঠে বলে, “কারো কু’কী’র্তি দেখানোর ছিল আপনাকে।”

কথাটা শুনে নিহাল শিকদারের কপালের ভাঁজ গভীর হয়। সে ডকুমেন্টসগুলো হাতে নিয়ে দেখতে থাকে সব। হঠাৎ এক জায়গায় দৃষ্টি গিয়ে আটকে যায় তার। মুখমণ্ডল হয়ে উঠে র’ক্ত’শূ’ণ্য। অবিশ্বাস্য নয়নে তাকায় প্রাণের দিকে। প্রাণ তা দেখে শ্লেষের হাসি হেসে বলে, “প্রিয়ম শিকদার! আপনার কনিষ্ঠ পূত্র উরফে জেসিকার রে’পি’স্ট ও মা’র্ডা’রা’র। কি সুন্দর উপাধি, তাই না?”

কথাটা শুনে নিহাল শিকদারের কপাল বেয়ে ঘাম ঝরতে শুরু করে। তিনি প্রস্ফুরণ কন্ঠে বলে, “এসব মিথ্যে! প্রিয়ম এমন ছেলে না। ও এমন করতে পারে না।”

“মানলাম মিথ্যে। কিন্তু মিথ্যে বলে আমার লাভ কি? তাও আবার তার পক্ষ নিয়ে যে কি-না আমার শত্রু ছিল?”

নিহাল শিকদার কথা বলার মত কিছু খুঁজে পেলেন না। আপাতত তার মাথা কাজ করছে না। সারা শরীর অস্বাভাবিকভাবেই কাঁপছে তার। সে ধপ করে পাশে রাখা চেয়ারে বসে পড়েন। প্রাণ তা দেখে বলে, “এখানের কোন কিছুই মিথ্যে না। আমি চেক করিয়েছি। প্রিয়ম অনেক আগে থেকেই এসব কাজে যুক্ত। আর এর মধ্যে ওকে সাহায্য করছে আপনারই বন্ধু রবিন কর্মকার।”

নিহাল অসহায়ত্বপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকান। প্রাণ তা দেখে বলে, “কি অবাক হচ্ছেন? আপনার আদর্শে বড় হওয়ার সন্তান এভাবে ব’খে গেল কিভাবে? তার তো এমন হওয়ার কথা ছিল না। ব’খে যাওয়ার কথা না আমার ছিল? আত্মসম্মানহীন এক নারীর সংস্পর্শে ছিলাম বলে?”

নিহাল নিশ্চুপ। আজ তার গর্ব, অ’হং’কা’র সব চু’র’মা’র হয়ে গিয়েছে যেন। তিনি মাথা নত করে ফেললেন। প্রাণ পুনরায় বলে, “মনে আছে, একবার আমার মায়ের শিক্ষা-দীক্ষা ও আদর্শ নিয়ে আঙ্গুল তুলেছিলেন আপনি? অপমান করেছিলেন আমায়, তার মেয়ে হওয়ার জন্য? আমাকে নিজের মেয়ে বলতেও নাকি আপনার লজ্জা করে? তাই তো সরিয়ে দিয়েছিলেন নিজের জীবন থেকে। তবে আজ আমি প্রশ্ন করছি আপনার আদর্শ নিয়ে, আপনার ছেলের এমন অধঃপতন কিভাবে হলো? বলুন?”

নিহাল পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকান একবার৷ অতঃপর বলেন, “এখন কি তার প্র’তি’শোঃধ নিতে চাও তুমি? সকলের সামনে আমায় অ’প’দ’স্ত করে?”

“চাইলে তো কতকিছুর এই প্র’তি’শো’ধ নেওয়া যায়। আপনার আমার হিসাব যে শেষ হওয়ার না।”

“তো চাও কি তুমি?”

“আপনাকে দিয়ে এই তথ্যগুলোকে পাবলিশ করতে। তবে নিজের ছেলের নাম এই তালিকায় রাখবেন কি-না সে-টা আপনার ইচ্ছা।”

নিহাল শিকদার ভ্রু কুঞ্চিত করে বলেন, “চাইলে তো তুমিই সব পাবলিশ করাতে পারতে তাই না? আমাকে এই সুযোগ দিচ্ছ কেন?”

প্রাণ অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে, “আমার এত ইচ্ছে নেই এসব ঝামেলায় জড়ানোর।”

নিহাল শিকদার কিয়ৎকাল তাকিয়ে থাকেন প্রাণের মুখপাণে। তার কথা একবারে অযৌক্তিক না। এই তালিকায় যাদের যাদের নাম আছে, তারা বেশ প্রভাবশালী। একবার তাদের নাম বাহিরে আসলে, পরমুহূর্তেই তারা খুঁজে বের কে করেছে কাজটি। কস্মিনকালেও যদি তারা প্রাণের নাম জানতে পারে, তাহলে হয়তো কু’কু’রে’র আচরণ করবে তার সাথে। শেষ পরিনতি মৃ’ত্যু হলেও মাঝ দিয়ে ভ’য়ং’ক’র কিছু ঘটে যাবে। যা হবে অসহ্যনীয়, মৃ’ত্যু’দ’ন্ডের চেয়ে জঘন্য। নিহাল শিকদার তাই ভেবে, থেমে বলেন, “যা চাইছো তাই হবে। কিন্তু প্রিয়মের কথা কেউ জানবে না।”

প্রাণ শ্লেষাত্মক চাহনিতে তাকায় শুধু৷ সে ভালো করেই জানতো নিহাল শিকদার কখনোই নিজের ছেলের নাম প্রকাশ্যে আসতে দিবেন না। তার সো কল্ড সম্মান আছে না? সে-টা কিভাবে মিইয়ে যেতে দিবেন তিনি? তবে পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে সে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। নয়ন যে এবারও তাকে ফাঁসাতে চাইছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই তার। সত্য সকলের সামনে আনতে চাইছে ঠিকই কিন্তু তাকে ফাঁ’সি’য়ে। তাই তো, এই ব্যবস্থা নেওয়া তার। হয়তো প্রস্ফুটনে একজন অপরাধী শা’স্তি পাবে না কিন্তু দিনশেষে কোন না কোনভাবে তার শা’স্তি সে পেয়েই যাবে। প্রাণ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “প্রিয়মের কথা কেউ না জানলেও ওকে আপনি নিজ হাতে শাস্তি দিবেন। পর্যাপ্ত শাস্তি যাতে ও পায় এটা নিশ্চিত করবেন। অন্যথায় আমি বাধ্য হবো ওর নাম প্রকাশ করতে। মনে থাকে যেন।”

কথাটা বলেই প্রাণ বেরিয়ে গেল সেখান থেকে৷ হঠাৎ করেই সব বি’ষা’ক্ত লাগছে তার। এই পৃথিবী এমন কেন? দেখতে রঙ্গিন কিন্তু ভিতর দিয়ে পুরোয় বেরঙ্গিন, দুর্গন্ধযুক্ত?

#চলবে
[কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ।]

[আজকের পর্বটা একটু বেশি সিনেমেটিক লাগতে পারে। তবে গল্পটা পরিপূর্ণ করতে এই পর্বের দরকার ছিল। তাই একটু মানিয়ে নিয়েন।]

#প্রাণেশ্বরী
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-২৬

সপ্তাহ খানেক যেতেই জেসিকার মৃ’ত্যু’র প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসে। অপরাধী সব ধরা পড়ে প্রকাশ্যে। যেহেতু সম্পূর্ণ বিষয় প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ায় সেহেতু জনসাধারণ খুব দ্রুত অবগত হয়ে যায়। যার দরুণ, ক্যাসটা চলে উচ্চ পর্যায়ে এবং কঠোর পদক্ষেপে। টাকার জোরে আর ছাড় পায় না অপরাধীরা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সকল দোষীকে আটক করে নেয় পুলিশ। বর্তমানে জেসিকার কু’ক’র্ম,মৃ’ত্যু,প্রকৃত ঘটনা এসব নিয়ে নতুন গুঞ্জন তৈরি হয় চারদিকে। তবে কে এই তথ্য ফাঁস করেছে তা জানা যায় নেই। কিন্তু যেই বা করেছে, আড়ালে থেকে খুব সুক্ষ্মভাবে কাজটা করেছে।

প্রাণ এসবের খবরাখবর রাখলো ঠিকই। যথারীতি, প্রিয়মের নাম আসেনি কোথাও। যদিও এটা নিয়ে প্রাণের মধ্যে তেমন একটা ভাবান্তর সৃষ্টি হয়নি, তবে ভাবনা তার আঁটকে আছে অন্য এক জায়গায়। একটা হিসাব সে কোনভাবেই মিলাতে পারছে না। প্রশ্ন তার এখানে, “প্রিয়ম এসবে জড়ালো কিভাবে? ও কখন?” তার জানা মতে, প্রিয়ম বাংলাদেশ এসেছেই গত বছর। এতদিন দেশের বাহিরে থেকেই নিজের পড়াশোনা শেষ করেছে। সেহেতু দেশেই এই সার্কেলে ঢুকে পড়া মুখের কথা না। সে খোঁজ নিয়েছিল ঠিক, প্রিয়ম এসবে জড়িত কি-না। পেয়েছিলও জড়িত। কিন্তু এখন সেদিক তাকালে তা পাকাপোক্ত প্রমাণ লাগছে না। কারণ সেই রাতে প্রিয়ম উপস্থিত ছিল কি-না এটা নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনি সে। উপরন্তু, কোথাও একটা ফাঁক আছে লাগছে৷ তখন সামান্য প্রমাণ পেয়েই নিহাল শিকদারের করা অতীতের কার্যক্রমের জন্য তার মাথা চাড়া দিয়ে উঠে, তাই কথা শোনানোর সুযোগ পেয়ে হাত ছাড়া করতে চায়নি। সবকিছু গভীরভাবে না ঘেটেই চলে যায় নিহাল শিকদারের নিকট। কিন্তু এখন লাগছে, আরেকটু যাচাই-বাছাই করা উচিৎ ছিল।
প্রাণ যখন এসব ভাবনায় মগ্ন তখনই আগমন ঘটে নিহাল শিকদারের। তিনি কোনরূপ শব্দ না করে সোজা ঢুকে পড়েন প্রাণের রুমে। অকস্মাৎ তাকে প্রাণ চমকায়। ক্ষণেই ইজি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়, শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “এই অবেলায় আপনি?”

নিহাল বিছানায় গিয়ে বসে বলেন, “কথা আছে তোমার সাথে। দরজা লাগাও।”

মুহূর্তেই প্রাণের ভ্রু দুটির মধ্যকার দূরত্ব ঘুচে আসে। প্রশ্ন করতে গিয়েও নিহালের গাম্ভীর্যপূর্ণ চেহেরা দেখে আর করলো না। নিঃশব্দ পায়ে চলে যায় দরজা লাগাতে। দ্বারের কাছে যেতেই কয়েক হাত দূরে আশা বেগমকে লক্ষ্য করে সে,ভীতিগ্রস্ত নয়নে তাকিয়ে আছেন তিনি। প্রাণ ক্ষীণ হেসে চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করে তাকে, অতঃপর ভিড়িয়ে দেয় দরজা। এগিয়ে যায় নিহালের দিকে। জিজ্ঞেস করে, “বলুন।”

নিহাল শিকদার প্রাণের দিকে একটা ফাইল এগিয়ে দিয়ে বলেন, “প্রিয়ম ওয়াস নট গিল্টি।”

কথাটা কর্ণগোচর হওয়ার পরও প্রাণ কোনরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায় না। নীরবে ফাইলটা হাতে নিয়ে দেখতে থাকে। নিহাল বলেন, “যেদিন জেসিকার খু’ন হয় সেদিন প্রিয়ম ঢাকায় ছিল না। বন্ধুদের সাথে খাগড়াছড়ি গিয়েছিল, ঘুরতে। ওর হাত ছিল না এসবে।”

প্রাণ পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়, “তাহলে ওর রবিন কর্মকারের সাথে এত উঠাবসা কেন? যেসব অনৈতিক কাজে রবিন কর্মকার জড়িত সেসবে প্রিয়মের নাম উঠেছে কেন? আমি খোঁজ নেওয়ার সময় ওর নাম কেন সামনে এসেছে?”

নিহাল বলেন, “প্রিয়ম মা’দ’কা’স’ক্তে’র সাথে জড়িয়ে গিয়েছিল। কবে কিভাবে আমার জানা নেই, খুব সম্ভবত বিদেশ থাকাকালীন এই নে’শা’য় জড়িয়ে পড়েছিল ও। আর এই বিষয়টা রবিন জানতো। ওই প্রিয়মকে প্রয়োজনীয় সব এনে দিত এবং নিজের সাথে সাথেই রাখতো তাই ওর নাম সব জায়গায় উঠেছে। আর এসবের পিছনে রবিনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রিয়মকে হাত করে আমার থেকে সব কেড়ে নেওয়ার। কিন্তু প্রিয়ম রবিনের আসলরূপ জানতো না, ওর মতলব শুধু নে’শা’দ্র’ব্য পাওয়া থেকে ছিল। ওকে এতদিন জেরা করা পর ও সব স্বীকার করে। তার উপর জেসিকার ক্যাসটাও সামনেই ছিল, সব খুঁজে বের করতে সময় লাগেনি আমার।”

এবার পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হয় প্রাণের নিকট। যে অংশটা শূন্য ছিল তা এখন পরিপূর্ণ হলো যেন৷ সে আলগোছে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “আমাকে এসব জানানোর কারণ? আমি যাতে আমার কথাগুলো ফেরত নিয়ে নেই তার জন্য? না-কি আপনার আদর্শে যে প্রশ্ন তুলেছিলাম, তা তুলে নেওয়া জন্য?”

নিহাল উঠে দাঁড়ান। ধীর গতিতে প্রাণের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলেন, “কোনটাই না। কারণ তোমার কোন কথা ফেলনা ছিল না। আমার আদর্শ তো হেরেই গিয়েছে। মানুষ হয়নি আমার ছেলে। কিন্তু তবুও কেন জানি এবার আমার আফসোস হচ্ছে না। তোমার থেকে জিতার আগ্রহ পাচ্ছি না।”

“কিন্তু তবুও, ছেলের নির্দোষিতা প্রমাণ করার জন্য উঠে-পড়ে লাগেন?”

নিহাল স্মিত হেসে বলে, “এর পিছে অন্যসব কারণও ছিল। ও তুমি বুঝবে না। হয়তো চাইবেও না। তাই বাদ দাও। কিন্তু একটা কথা, তোমায় এসব ডকুমেন্টস কে দিয়েছিল? আমার জানা মতে তোমার এত ভালো কানেকশন নেই যে এসব তথ্য তুমি নিজ থেকে করতে পারবে।”

প্রাণের সহজ স্বীকারোক্তি, “নয়ন দিয়েছিল এসব আমায়।”

নিহাল শিকদার ভ্রু কুঁচকে বলেন, “ভিতরে অনেক তথ্যই ভুল দেওয়া ছিল। এক্সট্রা ছিল বলতে। এসব আমি চেক না করালে বা তুমি আমাকে এসব না জানিয়ে পাবলিশ করালে খুব বাজেভাবে ফাঁসতে।”

নিহালের শিকদারের কথায় হঠাৎ নয়নের একটি কথা এখন টনক নাড়লো তার, সে বলেছিল তার পজিশন, পাওয়ার কিছুই নেই। তাই এই নিউজ পাবলিশ করা তার পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু কথা হচ্ছে, তার কিছু না থাকলেও তার বাবার তো ছিলই। নিহালের সমান নাহলেও একবারে কম যান না তিনি। কিন্তু তাও সে কিছু করেনি। কারণ এখানে আবার গভীর কোন ষড়যন্ত্র ছিল, সে সাথে আলাদা ফাঁদও। সুন্দর সাজানো প্র’তি’শো’ধ। মূলত, তাকে নিয়ে কাজ করানোর ছিল তা বেশ বুঝতে পারছে প্রাণ। যার জন্য এখানে প্রিয়মের নাম আসে। সে সাথে ভুল তথ্যও৷ যাতে সে নয়নের কথায় এসে সব করে ও জ্বালে ফেঁসে যায়। যার ফলে নিহাল শিকদারও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো, প্রিয়মকে ভুয়া ক্যাসে ফাঁ’সা’নো’র জন্য। এটা নয়নের ভালো করেই জানা, সে ইন্ডাস্ট্রিতে সেফলি টিকে আছে একমাত্র নিহালের পাওয়ারের কারণ। তো নিহাল মুখ ফিরিয়ে নিলে তখন তার কাছে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আর কোন পথ খোলা থাকতো না। উফফ! আগে এসব ঠান্ডা মাথায় কেন ভাবলো না সে। কেন নয়নকে এতটা হালকায় নিয়ে ফেলেছিল? ভুলে গিয়েছিল, “কু’কু’রে’র লেজ কখনো সোজা হয় না।”

প্রাণের এবার ক্ষোভে চোখ দুটো র’ক্তি’ম হয়ে আসে। সে দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করে উঠে, “দ্যাট বা’স্টা’র্ড!”

নিহাল রো’ষা’গ্নি কন্ঠে বলেন, “নয়নের ব্যবস্থা এবার আমি নিচ্ছি। ওর সাহস একটু বেশি বেড়ে গিয়েছে, আ’গু’ন নিয়ে খেলতে চাচ্ছে তো? বেশ! ওর অবস্থা এবার কি হবে আমি নিজেও জানি না।”

প্রাণ কথাটা শুনে তাকায় একবার। সে জানে, এবার তার পরিবারের উপর কথা এসেছে বলেই এতটা হিং’স্র হয়ে উঠেছেন নিহাল। অন্যথায় তিনি প্রত্যেকবারের মতই শান্ত থাকতেন৷ তার সো কলড সম্মান রক্ষার জন্য লোকদেখানো পদক্ষেপ বাদে কিছুই করতেন না। প্রাণ দৃষ্টি নত করে রাখে। এর মাঝে নিহাল ধাতস্থ কন্ঠে বলে উঠেন, “তুমি এখন আর বো’কা না প্রাণ। যে কারো কথায় গলে গেলে বা বিশ্বাস করলেই হবে না। আর না এত দরদী হওয়া উচিৎ তোমার। একা থাকো, একাই জীবনযাপন কর৷ তাই ভবিষ্যতে কিছু হলে এর দায় কেউ নিবেও না।”

প্রাণ শ্লেষের হাসি হেসে বলে, “আমার দায় কারো নিতেও হবে না। এট লিস্ট আপনাকে তো নাই-ই। তাই চিন্তামুক্ত থাকুন।”

নিহাল বলেন না কিছু। তিনি জানেন, প্রাণ প্রচন্ড বুদ্ধিমতি ও কঠোর। একাই সব সামলে উঠতে পারে সে। কিন্তু তবুও ভয় হয় তার, শুরু থেকেই প্রাণ ন্যায় বিচার করতে গিয়ে অনেক শত্রু তৈরি করে নিয়েছে নিজের বিরুদ্ধে। অনেকে আবার ওর সফলতার পিছনেও আছে। এখন এর মাঝে কে কোনদিক দিয়ে পিঠে ছুঁ’ড়ি চালিয়ে দেয় কে জানে? লম্বা নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি৷

প্রাণ এবার নিজ ভাবনা থেকে জিজ্ঞেস করে, “প্রিয়ম কোথায় এখন?”

নিহাল নত দৃষ্টিতে শুধু বলেন, “রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়েছে ওকে। অবস্থা খারাপ ওর।”

“অহ!”

নিহাল বলার মত কিছু খুঁজে পেলেন না আর। তাই মিনিট দুই-এক যেতেই বেরিয়ে গেলেন সেখান থেকে। প্রাণ তার যাওয়ার পাণে তাকিয়ে দূর্লভ হাসে। বাবারা বুঝি এমনই হয়? নিজের সন্তানের উপর আঁচ আসলে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়? তবে তার বেলায় বাবার সংজ্ঞাটা এভাবে বদলে গেল কেন?

________

অপরাহ্ণের শেষভাগ তখন। অন্তরিক্ষ জুড়ে হলুদ, কমলা মেঘের হাতছানি। দমকা হাওয়ায় শ্বেত কাঞ্চন দুলছে মৃদু মৃদু। তা দেখে গাছের পাতার ফাঁকে স্নিগ্ধ হাসছে কামিনী। আড়ালে থাকতে চাইলেও মধুময় সৌরভ তার জানিয়ে দেয় উপস্থিতি। পরিবেশ যখন নিজেতে মত্ত তখন প্রাণের দুয়ারে কড়া নাড়ে আগন্তুক কেউ। পার্সেল নিয়ে এসেছে সে। পার্সেল বললে ভুল হবে, বৃহৎ আকৃতির বক্স এটি। প্রাণ বক্সটা হাতে নিয়ে নাম দেখে প্রথমে। উপরে ছন্দের নাম দেখতেই গ্রহণ করে নেয় সে। ভিতরে এসে বক্সটা খুলতেই খাঁচায় বন্দী একটি টিয়াপাখি দেখতে পায়। পাখিটি জীবন্ত। প্রাণ খাঁচাটি বের করতেই পাখিটি পাখা ঝাঁপটা দিয়ে উঠে৷ অতঃপর স্থির ভঙ্গিতে কতক্ষণ বসে প্রাণকে দেখতে থাকে৷ প্রাণ ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই সে বলে উঠে, “প্রাণপাখি! প্রাণপাখি! লেভিউ।”

#চলবে
[কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here