#ধূসর_শ্রাবণ💚 #লেখিকা:#তানজিল_মীম💚 #পর্ব-২৪

#ধূসর_শ্রাবণ💚
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💚
#পর্ব-২৪
________________

হা হয়ে তাকিয়ে আছে নির্মল হিয়ার দিকে। সে ভাবে নি এই মুহূর্তে বা এই সময়ে হিয়া আসবে তাঁর কাছে। নির্মল বেশ খানিকটা অবাক হয়েই বললো,

‘ তুমি এখানে?’

প্রতি উওরে তেমন কিছু না ভেবেই ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে সাথে মুচকি হেঁসে বলে উঠল হিয়া,

‘ হুম আমি কেন আসতে পারি না বুঝি।”

‘ না তা হবে কেন?’

‘ তাহলে বলছেন কেন?’

প্রতি উওরে কি জবাব দিবে বুঝতে পারছে না নির্মল। অন্যদিকে হিয়া ভিতরে ঢুকে দরজা আঁটকে চলে যায় নির্মলের সামনে। তারপর ব্যাগ থেকে টিফিনবক্সটা বের করে রাখে টেবিলের উপর। টিফিনবক্সের পাশাপাশি প্লেট আর চামচও এনেছে হিয়া। যার দরুন সেগুলো বের করেও রাখে হিয়া টেবিলের উপর। হিয়ার কান্ডে অবাক নির্মল। হিয়া কি করছে সব যেন তাঁর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে হিয়া বলে উঠল,

‘ লান্স করেছেন আপনি?’

হিয়ার কাজ দেখতে মগ্ন ছিল নির্মল তাই হিয়ার কথাটা ঠিক ভাবে শুনতে না পেয়ে বলে উঠল,

‘ কি?’

নির্মলের কথা শুনে তাকায় হিয়া নির্মলের দিকে তারপর বলে,

‘ বলেছি লান্স করেছেন আপনি?’

‘ ওহ,না এখনো করা হয় নি।’

নির্মলের কথা শুনে ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো হিয়ার খুশি হয়েই বললো সে,

‘ খুব ভালো হয়েছে আমি আপনার জন্য নিজ হাতে রান্না করে এনেছি। এই দেখুন,

বলেই বিরিয়ানি আর মুরগীর রোস্টটা দেখালো হিয়া। হিয়ার কান্ডে এবার সত্যি সত্যি যেন অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেছে নির্মল। তার জন্য রান্না করে নিয়ে এসেছে হিয়া। কথাটা ভাবতেই এক বুক ভালো লাগা এসে গ্রাস করলো নির্মলকে। নির্মল প্রচন্ড খুশি হয়ে বলে উঠল,

‘ তুমি আমার জন্য রান্না করে নিয়ে এসেছো হিয়া?’

নির্মলের কথা শুনে প্লেটে খাবার বারতে বারতেই বলে উঠল হিয়া,

‘ হুম।’

নির্মল খুশি হলো। প্রচন্ড বেগে খুশি হলো। তাঁর সাথে এটাও বুঝে গেল হিয়া তাঁকে প্রচন্ড বেগে ভালোবেসে ফেলেছে। নির্মল ভাবলো কিছু, শীতল ভেজা কন্ঠ নিয়ে কিছু বলতে মুখ খুলবে ঠিক সেই মুহূর্তেই হিয়া বলে উঠল,

‘ আপনার অদ্ভুত শিহরণ মেশানো কথা পড়ে শুনবো আগে খেয়ে নিন।’

নির্মল শুনলো হিয়ার কথা। সাথে অবাকও হলো ভীষণ। তবে বেশি ভাবলো না। হিয়া নির্মলের সামনে খাবার প্লেটটা রেখে বললো,

‘ খেয়ে দেখুন না কেমন হয়েছে ফাস্ট টাইম ট্রাই করলাম, খুব একটা ভালো হয় নি হয়তো?’

নির্মল হিয়ার কথা শুনে নিজের হাতের দিকে তাকালো কলম দিয়ে লেখার ফলে কালো দাগ পড়ে গেছে। নির্মল উঠতে চাইলো হাতটা ধুতে হবে তাঁকে। নির্মলকে নিজের হাতের দিকে তাকাতে দেখে কিছু একটা ভেবে মুচকি হেঁসে বলে উঠল হিয়া,

‘ আপনাকে নিজ হাত খেতে হবে না আমি আপনাকে খাইয়ে দিচ্ছি দাঁড়ান?’

হিয়ার কান্ডে এবার যেন সত্যি ভীষণ শকট নির্মল। হিয়া বেশি কিছু না ভেবেই চামচ দিয়ে এক চামচ বিরিয়ানি উঠিয়ে মুখের সামনে ধরলো নির্মলের। নির্মল অবাক হিয়ার কান্ডে চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম তাঁর। এটা সত্যি সত্যি হিয়া কি না এতে যেন বেশ সন্দেহ হচ্ছে নির্মলের। নির্মলকে ড্যাব ড্যাব করে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠল হিয়া,

‘ কি হলো ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?”

হিয়ার কথা শুনে ওর দিকে বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে থেকে বলে উঠল নির্মল,

‘ আমার বিশ্বাস হচ্ছে না তোমায় কি ভূতে ধরেছে হিয়া?’

নির্মলের কথায় বিস্মিত হলো হিয়া। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে মুচকি হেঁসে বললো,

‘ ভূতে না পেত্নীতে ধরেছে এবার খান,

এই বলে নির্মলের মুখে বিরিয়ানি সমেত চামচটা ঢুকিয়ে দিলো হিয়া। নির্মল খেলো, চিবুতে লাগলো সাথে অবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে রইলো হিয়ার দিকে। এরই মাঝে হিয়া খানিকটা চিন্তিত মাখা মুখ নিয়ে বলে উঠল,

‘ কেমন হয়েছে? ভালো হয়নি বোধহয়? ইউটিউব দেখে করেছি বুঝলেন? লবনটা ঠিক ঠাক হয়েছে কি, চালটা সিদ্ধ হয়েছে তো? আর মাংসটা নরম হয়েছে কি নির্মল?’

প্রতি উওরে কোনো কিছু বললো না নির্মল। শুধু ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইলো হিয়ার মুখের দিকে। যেন হিয়ার কর্মকান্ড সবই তাঁর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে?’

________

বাংলাদেশের এয়ারপোর্ট থেকে সবেমাত্র বের হলো শুভ্র। কয়েক মুহূর্ত আগেই লন্ডন থেকে তাঁর প্লেন ল্যান্ড করলো বাংলাদেশের বুকে। শুভ্র তক্ষৎনাত বেরিয়ে আসে এয়ারপোর্ট থেকে। বর্তমানে গাড়ি করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছে সে। উতলা হয়ে আছে শুভ্র কখন বর্ষার সাথে তার দেখা হবে আর সকল মান অভিমানের সমাপ্তি ঘটিয়ে মনের কথা প্রকাশ করবে সে। শুভ্র মাত্র দু’দিনেই বুঝতে পেরেছে বর্ষাকে ছাড়া তাঁর চলবে না। তাঁর বোকারানির বোকাবোকা কাজ কর্মতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে সে। ঠিক এক’দিন আগের ঘটনা। প্রায় মনমরা হয়েই অফিস থেকে বাড়ি আসে শুভ্র, সোফা পর্যন্ত যেতেই হুট করেই সামনে মগ আর বালতি দেখে মনে পড়ে তাঁর সেদিনের কথা যেদিন পা পিছলে পড়ে গিয়েছিল সে। আর তাঁর সেই পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে বর্ষাও দৌড়ে এসে পড়ে তাঁর ওপর। সেদিন সেই বিষয়টার জন্য রাগ হলেও আজ ভীষণ মিস করছিল শুভ্র। গোসল সেরে বের হয়ে আলমারি খুলতেই মনে পড়ে তাঁর বোকারানি বউয়ের এক বস্তুা জামাকাপড় এলেমেলো ভাবে রাখার ফলে তার ওপর এসে পড়ার ঘটনা। বর্ষা যেমন তাঁকে আঘাত দিয়েছিল বারে বারে পাশাপাশি সেবাও করেছিল। খেয়াল রেখেছিল তাঁর সবসময়। আর সেগুলোকেই ভীষণ ভাবে মিস করছিল শুভ্র। বর্ষার শূন্যতা যেন পদে পদে মনে করিয়ে দিচ্ছিল তাঁকে,

‘ তুমি ভালোবেসে ফেলেছো শুভ্র তোমার বোকারানিকে’।

শুভ্র বুঝতে পেরেছে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে সে বর্ষাকে। বিয়ে হলো এমন একটা জিনিস যেটা দুটো মানুষের মধ্যে ভালোবাসা শব্দটা জড়িয়ে দিতে বাধ্য। তবে সব মানুষের ক্ষেত্রে নয়, মায়া আর ভালোবাসা এক নয়। কিছু মানুষ মায়ায় পড়ে আঁটকে থাকে একসাথে আর কিছু মানুষ ভালোবেসে আঁটকে থাকে সারাজীবন।’

এই রকম নানা কিছু ভাবতে ভাবতে এগিয়ে চলছিল শুভ্র। মনটা তাঁর ব্যাকুলতার শীর্ষে।’

অতঃপর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই শুভ্র গাড়ি নিয়ে চলে আসে বাড়িতে। গাড়ির ভাড়া মিটিয়ে তক্ষৎনাত চলে যায় সে বাড়ির ভিতরে। উত্তেজিত হয়ে থাকার কারনে বাড়ির গাড়ি যাবে সেই পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই টেক্সি গাড়ি করেই বাড়ি চলে আসে শুভ্র। নিজের ব্যাগপত্র কোনো রকম নিয়েই বাড়ি দরজার সামনে দাঁড়ালো শুভ্র। কলিং বেল বাজালো উচ্চস্বরে। কিছুক্ষনের মধ্যেই শুভ্রের মা এসে দরজা খুলে দিল। শুভ্রকে দেখেই খুশি হয়ে বলে উঠলেন উনি,

‘ শুভ্র তুই এসেছিস? কেমন আছিস বাবা?’

প্রতি উওরে শুধু ‘ভালো’ বলে তক্ষৎনাত জিজ্ঞেস করলো সে,

‘ মা বর্ষা কোথায়?’

বলেই বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়লো শুভ্র। এদিক ওদিক তাকালো তক্ষৎনাত। ছেলের কথা আর কাজ দেখে কিছুটা হতভম্ব হলেন শুভ্রের মা কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন উনি,

‘ কেন কিছু কি হয়েছে?’

মায়ের কথা শুনে হাল্কা বিরক্ত প্রকাশ করলো শুভ্র। বললো,

‘ কি হবে মা আমি শুধু জানতে চাইছি বর্ষা কোথায়?’

‘ বর্ষা তো বাড়িতে নেই শুভ্র।’

মায়ের কথায় অবাক সাথে হতাশ হলো শুভ্র। খানিকটা বিষন্ন মাখা কষ্ট নিয়ে বললো,

‘ নেই মানে কোথায় গেছে ও এ বাড়ি আসে নি।’

‘ আসছে কিন্তু শুভ্রতার সাথে বেরিয়েছে একটু চলে আসবে তুই চিন্তা করিস না।’

মায়ের কথা শুনে ভীষনভাবে হতাশ হলো শুভ্র। নিজের উত্তেজনা ভাবটাকে কমাতে লাগলো নিমিষেই। শুভ্রকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবারো প্রশ্ন করে বসলো শুভ্রের মা,

‘ কিছু কি হয়েছে তোর সাথে বর্ষার।’

প্রতি উওরে নিরাশা ভরা দৃষ্টি রেখে বলে উঠল শুভ্র,

‘ কি হবে মা আমি রুমে গেলাম ভালো লাগছে না।”

বলেই নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল শুভ্র। আর শুভ্রের মা কিছুক্ষন হতাশ চোখে ছেলের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে পরক্ষণেই কিছু একটা ভেবে মুচকি হাসলেন।’

____

শুভ্রতার সাথে শপিং করতে এসেছে বর্ষা। যদিও তাঁর আসার কোনো ইচ্ছে ছিল না শুভ্রতার জোরাজোরিতে আসতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছে সে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায় কিন্তু এখনো শুভ্রতার শপিং করা হয় নি। কি কিনতে এসেছে সেটাই জানে না বর্ষা। হঠাৎই শুভ্রতা বলে উঠল,

‘ ভাবি তোমার ফোনে ব্যালেন্স আছে আসলে আমারটা মাত্র শেষ হলো একজনের আসার কথা ছিল, ওই তোমায় বলেছিলাম না। কতদূর আসলো সেটাই জানার ছিল?’

প্রতি উওরে নিজের ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করলো বর্ষা তারপর বললো,

‘ নেই বোধহয়। লন্ডন থেকে ফিরে এখন পর্যন্ত মোবাইলটা খোলাই হয় নি আমার।’

এতটুকু বলে মোবাইলটা অন করতে লাগলো বর্ষা। বর্ষার কথা শুনে শুভ্রতা খানিকটা নিরাশ হয়ে বললো,

‘ ওহ, আচ্ছা ভাবি তুমি এখানে দু’মিনিট দাঁড়াও আমি এক্ষুনি মোবাইলটায় রিচার্জ করে আসি।’

শুভ্রতার কথা শুনে কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো বর্ষা,

‘ ঠিক আছে।’

‘ থ্যাংক ইউ ভাবি তুমি এখানেই দাঁড়িও কোথাও যেও না আবার।’

‘ ঠিক আছে।’

উওরে শুভ্রতাও আর কিছু না ভেবে চলে যায় বাহিরে। বর্ষা তাঁর মোবাইলটা অন করলো ঠিকই তবে কিছু দেখার আগেই সেটাকে আবার ব্যাগে ভরে নিলো।’

মাঝপথে কেটে যায় আধ ঘন্টা। বর্ষা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে শপিং মলের একটা দোকানের সামনে। এবার বিরক্ত লাগছে তাঁর, কোথায় গেল শুভ্রতা এখনো আসছে না কেন? বর্ষা তাঁর মোবাইলটা বের করলো আবার মোবাইলটা অন করতেই অনেকগুলো মেসেজ দেখতে পেলো বর্ষা। এর বেশির ভাগই অফিস থেকে করা। আর এদের নিচেই ছিল শুভ্রের মেসেজ যেটা বর্ষা বর্তমানে খেয়াল করে নি। বর্ষা মেসেজগুলো দেখতে নিলো শেষ অবদি যাবে এরই মাঝে পাশ থেকে বলে উঠল কেউ,

‘ এক্সকিউজ মিস, আপনি কিছু মনে না করলে আমায় একটু হেল্প করবেন?’

আচমকা পাশ থেকে কোনো পুরুষালির কন্ঠ শুনে চমকে উঠলো বর্ষা। তক্ষৎনাত পাশ ফিরে তাকাতেই একটা উঁচা লম্বা চুরা ছেলেকে দেখে খানিকটা অবাক হয়ে বললো,

‘ জ্বী কি বললেন?’

খানিকটা হতাশ হলো ছেলেটি। কপালের ডান দিকটা দুইবার চুলকে বললো,

‘ বলেছি আমায় একটু হেল্প করবেন?’

ছেলেটির কথা শুনে মোবাইলটা বন্ধ করে আবারো ব্যাগে রাখলো বর্ষা তারপর বললো,

‘ জ্বী বলুন কি হেল্প লাগবে আপনার?’

বর্ষার কথা শুনে বেশ আগ্রহ নিয়ে বললো,

‘ আসলে কাল আমার গার্লফ্রেন্ডের বার্থডে ভাবছি বার্থডে উপলক্ষে তাঁকে শাড়ি গিফট করবো কিন্তু কি শাড়ি দিলে ও খুশি হবে এটা বুঝতে পারছি না। আসলে ফাস্ট টাইম কিনছি তো তাই বুঝতে পারছি না। আপনি শাড়ি পড়ে আছেন তাই মনে হলো এই বিষয়ে আপনি হয়তো আমায় হেল্প করতে পারবেন।’

ছেলেটির কথা শুনে খানিকটা অবাক হলো বর্ষা। পরক্ষণেই মুচকি হেঁসে বললো সে,

‘ ওহ! এই ব্যাপার আচ্ছা ঠিক আছে চলুন আমি আপনায় সাহায্য করছি।’

খুশি হলো ছেলেটি বললো,

‘ ধন্যবাদ।’

‘ ইট’স ওঁকে।

এতটুকু বলে চললো বর্ষা ছেলেটির সাথে। একটা সুন্দর শাড়ির দোকানের সামনে বসে আছে বর্ষা আর ছেলেটি। হঠাৎই বর্ষা বলে উঠল আপনার গার্লফ্রেন্ডের প্রিয় রং কি বলতে পারবেন?’

বর্ষার কথা শুনে দু’সেকেন্ড টাইম নিয়ে বলে উঠল ছেলেটি,

‘ জ্বী গোলাপি।’

‘ ওহ ঠিক আছে,

এই বলে দোকানদারকে উদ্দেশ্য করে বললো বর্ষা,

‘ আমাকে কিছু গোলাপির কম্বিনেশনে জামদানি বা কাতানের ভিতর শাড়ি দেখান?’

দোকানদারও শুনলো বর্ষার কথা। বের করলো নানা রকমের শাড়ি। বর্ষাও উল্টেপাল্টে দেখতে লাগলো শাড়ি। হঠাৎই বর্ষার চোখ আঁটকে যায় গোলাপি আর সাদার কম্বিনেশনে জামদানী শাড়ির দিকে। বেশ সুন্দর শাড়িটা। বর্ষা সেটাকেই হাতে নিয়ে বললো,

‘ এটা দিতে পারেন এটা খুব সুন্দর।’

ছেলেটিও শুনলো বর্ষার কথা। বর্ষার হাত থেকে শাড়িটা নিয়ে বললো,

‘ সত্যি শাড়িটা খুব সুন্দর। আপনার চয়েস আছে।’

উওরে হাসলো বর্ষা। হঠাৎই ছেলেটি বলে উঠল,

‘ আপনিও একটা দেখুন আমাকে হেল্প করলেন তাঁর বিনিময়ে একটা শাড়ি আপনাকে গিফট করাই যায়।’

ছেলেটির কথা শুনে বিস্মিত হলো বর্ষা। চোখ মুখ কুঁচকে বললো,

‘ না না তাঁর দরকার নেই কি বলছেন আপনি সামান্য একটা শাড়ি চুজ করে দেওয়ার জন্য শাড়ি নিবো মাথা গেছে আপনার।’

‘ এভাবে বলছেন কেন?’ সামান্য শাড়িই তো।’

‘ না না তাঁর দরকার নেই। আমায় এখন যেতে হবে।’

এই বলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো বর্ষা। আচমকাই শাড়ি প্যাঁচিয়ে পড়ে যেতে নিলো সে সাথে সাথে সামনের ছেলেটি ধরে বসলো বর্ষাকে তারপর বললো,

‘ আপনি ঠিক আছেন তো?’

এদিকে,

ঠিক সেই মুহূর্তেই সেই দোকানের ভেতর ঢুকলো শুভ্র। নিজের অস্থিরতাকে দমিয়ে রাখতে না পেরে শুভ্রতাকে ফোন করে তাঁরা কোন শপিং মলে আছে এটা জেনে এখানে আসে শুভ্র। কিন্তু বর্ষাকে অন্য আরেকটি ছেলের সঙ্গে দেখে মুহূর্তেই চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো তাঁর। এমনিতেই বর্ষার অভিমান কি করে ভাঙাবে এটা ভেবে ডিপ্রেসড সে। বর্ষার শূন্যতায় মাথা খারাপ তাঁর। তারওপর অন্য আরেকটা ছেলে স্পর্শ করেছে বর্ষাকে। মুহূর্তের মধ্যে মাথায় যেন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠলো শুভ্রের। রাগান্বিত কন্ঠ নিয়েই চেঁচিয়ে বলে উঠল সে,

‘ বর্ষা?’

সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের লোকজনসহ বর্ষা আর ওই ছেলেটিও তাকালো শুভ্রের দিকে। বর্ষার তো চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। সে ভাবে নি এমন একটা মুহূর্তে শুভ্র আসবে তাঁর সামনে।’

#চলবে…..

[ভুল-ক্রটি ক্ষমার সাপেক্ষ। আর গল্প কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে]

#TanjiL_Mim♥️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here