তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_১৯

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১৯

.
🍁
পড়ন্ত বিকেল সূর্যটাও পশ্চিম আকাশে খানিকটা ডলে পরেছে চারপাশে নিস্তব্ধতায় ছেড়ে আছে গভীর ভাবে কারণ আমাদের আশেপাশে মানুষ জন আছে বলতে আমি আর উনি মানে রিদ খাঁন আছি,, আমরা হাঁটতে হাঁটতে কাউকে কোথাও না পেরে আবারও গাড়ি দিকে ফিরে যাচ্ছি আমরা এই মূহুর্তে আপাতত গাড়িটিই আমাদের সেইফ নিবাস বলে মনে হচ্ছে উনার, যদি কেউ গাড়িটি দেখে এগিয়ে আসে আমাদের হেল্প করার জন্য সেই আশায়….

.

আমরা বর্তমানে যেখানে আঁটকে পরে আছি গাড়িটি নিয়ে সেখানের আশেপাশের পরিবেশটা শুধু জংগল টাইপ মানে অসংখ্য গাছ পালাই ভরপুর হয়ে আছে এখানটায়, আমি উনার সাথে হাঁটতে হাঁটতে কান্ত হয়ে পিছন থেকে উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠি…..

.

—” আচ্ছা এই হাঁটা হাঁটি পর্বটা কবে শেষ হবে আমাদের…..

.
উনি আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে……

.

—” তুমি কি চুপ করবে….

.
—” আমি চুপ করলে আপনার কি হবে….

.
—” তুমি চুপ করলে আপাতত আমার ভালোই হবে,, কেন তুমি চুপ করলে কি আমি ভেসে যাবো নাকি…. (সামনে দিকে হাঁটতে হাঁটতে)

.
—” আপনি ভাসবেন কেন আপনি ভাসলে আমার কি হবে বলুন…. (করুণ ভাবে)

.
—” তোমার সবটাই ভালো হবে ঝামেলা ছাড়ায় বিয়েটা করে নিতে পারবে রুদ্রকে…. ( স্বাভাবিক কন্ঠে)

.

—” সেটাই তো কথা, বিয়েটা তো আমি আপনার সামনে করতে চাই আড়ালে নয়…..

.
আমার কথায় উনি আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে……

.

—” সেচ্ছায় ফাঁসতে চাও নাকি….

.
উনার এমন কথায় আমি হালকা মুচকি হেসে উনার এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে সামনে দিকে তাকিয়ে থেকে রহস্যময় ভাব নিয়ে বলে ওঠি……..

.

—” নিজে ফাঁসতে কে এসেছে, আমি তো ফাঁসাতে এসেছি, কে জানে কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ে….

.
আমার এমন কথায় উনি হাঁটা থামিয়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে অবুঝের মতো করে বলে উঠে….

.
—” মানে….

.
উনাকে হঠাৎ থামতে দেখে আমি হালকা হেসে উনার কানের কাছে গিয়ে আস্তে করে কানেকানে ফিসফিস করে বলে ওঠি……

—” আমার বিয়ে….
.

—” তাই, খুব ইচ্ছা বিয়েটা করার….. (ভ্রুঁ কুঁচকে)

.
চোখ মুখে খুশির ভাবটা টেনে সামনের দিকে ঘুরতে ঘুরতে বলে ওঠি……

.
—” খুবই……

.
—” আচ্ছা…..

.

🍁
গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছি আমি, আমার থেকে খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে উনি, আমি শান্ত সৃষ্ট ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও উনি বেশ রেগেমেগে ফ্লাইয়ার হয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, উনার রাগের একমাত্র কারণ হলো সন্ধ্যা হয়ে আসছে কিন্তু এখনো কারও দেখা পাইনি আমরা হেল্প নেওয়া জন্য এখানে আর কতটা সময় এই ভাবে বসে থাকবো সেটা নিয়ে উনি বেশ রেগে আছে, তবে উনার এমন রাগটা নিয়ে আমার আপাতত তেমন একটা মাথা ব্যাথা নেই কারণ পরিবেশটা আমার বেশ মনে ধরেছে তাই এখানে থাকতেও ভালোই লাগছে আমার,, তাই আমি গাড়িতে হেলান দিয়ে বারবার উনার দিকে তাকাচ্ছি গোল গোল চোখে উনিও যে আমার দিকে একদমই তাকাচ্ছে না তা কিন্তু নয়, উনিও তাকাচ্ছে কিন্তু মাঝে মাঝে আমিই একটু বেশি তাকাচ্ছি, কিন্তু কোনো রকম কথা বলতে পারছি না উনার সাথে, কারণ উনি আমাকে হুমকি বার্তা শুনিয়েছেন যে আমি কোনো রকম কথা বললে আমাকে বেঁধে এই জংগলের মধ্যে কোথাও ফেলে যাবে তাই বাঁধ্য হয়ে মুখে হাত দিয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে আমাকে, কিন্তুু এতোটা কষ্ট করেও চুপ থাকতে পারছি না আমি কারণ আমার প্রচুর পেটে ক্ষুদা পেয়েছে তাই আমি বাঁধ্য হয়ে অন্য হাত দিয়ে পেট চেপে ধরে উনাকে গুমরানো শব্দে পিছন থেকে উঁম উঁম ইশারা করে ডাকছি আমার সমস্যাটি বুঝানোর জন্য, আমার এমন শব্দ উনার কানে যেতেই উনি পিছন ঘুরে আমার দিকে তাকায় পরে আমাকে এমন করতে দেখে কপাল কুচকে বলে উঠে…….

.

—” কি….

.
উনাকে আমার দিকে তাকাতে দেখে আমি এক হাতে ঠোঁট চেপে ধরে অন্য হাতে পেটে ইশারা করি, আমার ইশারায় কিছু না বুঝতে পেরে বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে…

.

—” বলবে তো কি হয়েছে….

.
উনার এমন কথায় আমি নিজের পেটে চেপে ধরায় অবস্থায় উনাকে নিজের পেটে দিকে আবারও মাথা নাড়িয়ে ভালো করে ইশারা করে বুঝায় কি হয়েছে, আমার এমন দেখেনোর সাথে সাথে উনিও আমার পেটে দিকে তাকিয়ে থেকে কিছুই বুঝতে না পেরে আমার দিকে তাকায় পরে ভ্রুঁ কুঁচকে বলে উঠে……

.
—” কি সমস্যা, আর কথা বলছো কেন তুমি…..

.
উনার এমন কথায় আমি আস্তে করে নিজের ঠোঁট থেকে আংগুল টা সরিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে গাল ফুলিয়ে অসহায় ফেস করে বলে উঠি…..

.

—” আপনি বলেছেন কথা বললে আমাকে এখানে জংগলের মধ্যে রেখে যাবেন হাত পা বেঁধে তাই তো ইশারা করে বুঝাতে চাইছি কি সমস্যা……

.
আমার এমন কথায় উনি চোখ মুখ খানিকটা টান টান ভাব করে মাথা নাড়িয়ে অবিশ্বাস গলায় বলে উঠে…

.

—” unbelievable, প্রয়োজনের সময় আপনার মুখটা চলে না, তখন আপনার নানান ইশারা অবলম্বন করতে হয় বুঝানোর জন্য, কিন্তু অকারণে ঠিকই চলে আপনার ননস্টপ বকবক….

.
—” আমি বকবক করি…

.
—” কেন কোনো সন্দেহ আছে তোমার……

.
—” দেখুন…( রেগে)

.
—” এখন কিছু দেখতে পারবো নাহ পরে দেখে নিব আমি….. (হালক বিরক্তি নিয়ে)

.
—” সেটা তো আপনাকে দিয়ে হবে নাহ….. (মুখ ফস্কে)

.
—” তাই, আসো দেখাই আমি কি পারি আর না পারি….. (দাঁতে দাঁত চেপে)

.
—” এই না না আমিতো মজা করছিলাম, আপনি এতোটা রেগে যাচ্ছেন কেন….( ভয় পেয়ে দ্রুত বলে ওঠি)

.
আমার এমন কথা উনি অপেক্ষা করে আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে উঠে….

.

—” তাই আমি কিন্তু মোটেও মজা করছি না এখন, বিয়ে করা বউ আমার আর বউকেই আদুর করবো না আমি তা কি হয় নাকি, আসো কাছে আসো…..

.
উনাকে আমার দিকে অগ্রসর হতে দেখে আমি সাথে সাথে দুই কদম পিছিয়ে গিয়ে খানিকটা সাহস নিয়ে দ্রুত তাড়া দিয়ে উনাকে ভয় দেখানোর জন্য বলে ওঠি…

.

—” এই এই দূরে থাকুন আমার থেকে, কি সাংঘাতিক বাজে লোকরে বাবা, আমার কাছে আসলে আমি একদমই মেরে দিব আপনাকে, আপনি তো জানেন না আমার কত শক্তি আছে হুহহহ…..

.
আমার এমন কাজে উনি আরও উসাহিত হওয়া ভাব নিয়ে এগোতে এগোতে বলে উঠে…..

.

—” তাহলে তো ভালো হয় তোমার এই শক্তিটা কাজে দিবে আমার জন্য এখন…..

.
—” এই কাছে আসবেন না আমি কিন্তু মেরে গুম করে দিব আপনাকে এই জংগলের মধ্যে….. (ভয় দেখিয়ে)

.
—” আচ্ছা সমস্যা নেই……( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

.
—” আমি কিন্তু আপনাকে জেলে দিব, পুলিশ কেস করবো….. (ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায়)

.
—” তাই পুলিশকে গিয়ে কি বললে যে আমার স্বামী আমাকে আদুর করছে বেশি বেশি আর তার জন্য আমি পাগল আপনাদের কাছে নালিশ করতে এসেছি স্বামীর নামে এটা বলবে, তখন পুলিশ তোমার কেসটা না নিয়ে উল্টো তোমাকেই বলবে যে তুমি পাগল…… (মজা করে)

.

উনার এমন কথায় আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে টলমলে চোখে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে চাপা সুরে বলে ওঠি……

.
—” আপনি এমন করছেন কেন আমার সাথে….

.
আমার টলমলে চোখ দেখে উনিও থেমে যায় পরে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কপাল কুঁচকে বলে উঠে…..
.

—” সমস্যা শেষ হয়ে গেছে তোমার বকবক করছো যে…

.
উনাকে স্বাভাবিক কন্ঠে কথা বলতে দেখে আমিও নিজেকে সাথে সাথে স্বাভাবিক করে দ্রুত বলে ওঠি……

.
—” না না শেষ হয়নি আছে তো…..

.
—” তাহলে বলছো না কেন…..
.

—” ইয়ে মানে আমার ইয়ে পেয়েছে…. (কাচুমাচু করতে করতে)

.
—” ইয়ে কি আবার……( ভ্রুঁ কুঁচকে)

.
উনার কথা আমি এবার নিজের দুহাত দিয়ে পেট চেপে ধরি আমাকে এমন করে ধরতে দেখে উনি সাথে সাথে কপাল কুঁচকে বলে উঠে…….

.
—” তোমার পেটে সমস্যা হচ্ছে নাকি,, তোমাকে এই পরিবেশে কোথায় নিয়ে যাবো আমি….

.
উনার কথা মানে বুঝতে পেরে আমি নাক মুখ ছিটকে দ্রুত বলে ওঠি…..

.
—” ছি ছি আপনার কি বাজে চিন্তা, বাথরুম পাইনা আমার কখনোই হুহহহ…..

.
—” মানে, সবার হয় তোমার হয় না.. তুমি যে এতো এতো খাও এই গুলো যায় কই তোমার,, সমস্যা হয় না তোমার থাকতে…..

.
—” আরে না হয় তো আমার….

.
—” কি হয় তোমার…..

.
—” আপনি যাহ বুঝাতে চাইছেন তাই…..

.
—” কি বুঝাতে চাইছি আমি…..

.
—“উফ আপনি যাহ এখন আমাকে বললেন সেটাই আরকি…..

.
—” কি বলেছি তোমাকে…..

.
উনার এমন কথা পেঁচানো দেখে আমি রেগেমেগে চোখ বন্ধ উচ্চ স্বরে চিৎকার করে বলে ওঠি…….

.
—” আমার বাথরুম হয় হয় হয়,,

গল্পের পেইজ লিংক
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136

.

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here