তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_১৩

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১৩

.
অতি সুন্দর করে সেজেগুজে ড্রয়িংরুমের সোফায় পুতুল নেয় বসে আছি আমি, একা বসে আছি মোটেও কিন্তুু তা নয় আমার সাথে রয়েছে আমার ফুল পরিবার আমার ডানে-বামে মিলিয়ে আর তার সাথে রয়েছে এক্সট্রা অজানা ওভার স্মার্ট একটি পরিবার যারা আমার ঠিক সামনেই বসে আছে হাসি মুখে আরাম করে, অজানা পরিবারটির মধ্যে রয়েছে অতি সুন্দরী দাদী বয়সে টাইপ বয়স্কর মহিলা তার সাথে রয়েছে উনার সহধর্ম মানে বয়স্ক মহিলাটির স্বামী, উনারা হলো মিস্টার এন্ড মিসেস দেখতে বেশ সুন্দর একটি পরিবার,, উনাদের সাথে আপাতত অন্য কেউ নেই তারা দুজনই আছে তাদের পরিবার থেকে তবে পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য সদস্যরা আছে উনাদের সাথে দেখে মনে হচ্ছে বডিগার্ড হবে আর সাথে দুটো কাজের কাজের লোকও আছে,,

.

মিস্টার এন্ড মিসেস উনারা আমাদের বাসায় আসার সময় বেশ আমেজের সাথে এসেছে, আমাদের পুরো ড্রয়িংরুমে তার সাক্ষী হয়ে আছে,, মানে তাদের আনার জিনিস পএ গুলো আমাদের পুরো ড্রয়িংরুমে ভরপুর হয়ে আছে,, জিনিস পত্র দেখেই বুঝি যাচ্ছে তারা কতটা ধনবান সম্পূর্ণ পরিবার,, আর এই ধনবান পরিবার এই মূহুর্তে আমাদের বাসায় এসেছে আমার বিয়ের জন্য, আর এই বিয়ের বিষয়টি আজকে সকালেই জানতে পারি আম্মু থেকে আর তখন থেকেই এক প্রকার আম্মু প্যারায় মন্ত হয়ে বসে আছি আমি,,,

.

বিয়ে বিষয়টি সর্বকালেই আমার জন্য আনন্দময় বার্তা ছিল হোক সেটা অন্যের বাহ নিজের, বিয়ে বিষয়টি উল্লেখ থাকলেই হলো ব্যাস আর কি চাই আমার, অন্যের বিয়ে কথাটি শুনতেই যতটা না আনন্দ পেতাম তার ছেড়ে হাজার গুণ বেশি পাচ্ছি নিজের বিয়ের কথাটা শুনে, আমার বিয়ে নিয়ে কোনো কালেই দ্বিমত পোষণ করিনি তাই আজও করছি না, তবে হ্যাঁ আগেই আমার যে একটা বিয়ে হয়েছে সেটা নিয়ে আপাতত আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই, কারণ রিদ খাঁন একটা গুন্ডা প্রকৃতির লোক তাই নাহ আমি এই বিয়েটা মানি না রিদ খাঁন মানে এই বিয়েটা,

.

হওয়া না-হওয়া স্বামী রিদ খাঁন ও তার বিয়েটাকে ভুলে গিয়ে এ মূহুর্তে আমি বেশ মনোযোগ সহকারে নিজের বিয়ের সবকিছু শুনছি, মিস্টার এন্ড মিসেস কার কি লাগে, কোথায় থেকে এসেছে, উনার নাতি কে, আর সে দেখতে কেমন কিছুই জানি না আমি, শুধুই এতটুকুই জানি আমার বিয়েটা ঠিক হয়ে গেছে উনাদের নাতির সাথে,,, মিস্টার এন্ড মিসেস উনারা আমাকে বুকে টেনে আদুরে সাথে আমার হাতে সুন্দর একটি রিং পরানো মাধ্যমে আমাকে তাদের নাতির জন্য ঠিক করে যায়,, আমার হাতের সবুজ হীরার রিং তাদের বংশগত রিং,
আমার বিয়েটা হচ্ছে আগামী এক মাস পর,,,
.

আমার বিয়ে নিয়ে সবার আপত্তি থাকলেও আমি আর আমার আম্মু ছিলাম বিয়ে বিষয় নিয়ে অনেকটা হেপি, আমাকে বিয়ে নিয়ে উৎসাহিত হতে দেখে বাবা- ভাই আর ভাবি দমে যায় আম্মুর কাছে কিছু বলার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারেনি তারা,,, মিস্টার এন্ড মিসেস উনারা দুজন হাসি মুখে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যেতেই আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে লাফিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পরি সোফার ওপর, পরে খুশিতে গদগদ হয়ে নিজের বামহাতে রিংটা দেখতে লাগি বারবার,, আমাকে এমন করতে দেখে আম্মু আমার সাথে অনেক খুশি কারণ উনার মেয়ের বিয়ে বলে কথা,,,

.

বাকিরা সবাই মূহুর্তেই ব্যাভাচ্যাকা খেয়ে বোকার মতো তাকিয়ে থাকে আমি তাদের এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করেই আম্মু কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে ফেস হয়ে নিজের গায়ের কাপড়টা চেঞ্জ করে আমার পঞ্চ বান্ধবীর সাথে দেখা করতে বেড়িয়ে পরি পার্কের উদ্দেশ্য,,, আজকে প্রায় এক সাপ্তাহ পর বাসার থেকে বেড় হচ্ছি আমি, কারণ ঐদিন রিদ খাঁন ভার্সিটিতে তাঁর করা বাজে ব্যবহার এর পর আমি আর বাসার থেকেই বের হয়নি ভার্সিটিতে যাব তো দূর, আমি চাই না বাজে লোকটা আর কখনোই আমার সামনে পরুক,, তাই উনার থেকে দ্রুত বজায় রাখতেই আমার এমন লুকিয়ে বেড়ানো,, কিন্তুু আজ নিজের বিয়ে ঠিক হওয়ার আনন্দে বিষয়টি বিমোহিত হয়ে খুশিতে লাফাতে লাফাতে যাচ্ছি আমার পঞ্চ বান্ধবী সাথে একটা পার্কে দেখা করতে

.
আমার পঞ্চ বান্ধবীরা সাথে এই মূহুর্তে বসে আছি একটা রেস্টুরেন্টে এ, বাসার থেকে বের হয়েই ওদের সাথে দেখা করে পার্কে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করেও আমার বিয়ের কথাটা জানানো হয়নি এখনো, একদমই লাস্ট মোমেন্টে জানাবো কথা গুলো এমন সব চিন্তা ভাবনায় নিয়ে বসে আছি রেস্টুরেন্টে এ,, আমরা সবার মতো গল্প করাই মন্ত ছিলাম তখনি পাশ থেকে ভার্সিটির বড় ভাইয়া সাব্বির নামে ছেলেটি এসে হাজির হয় আমাদের সামনে, আমরা উনাকে দেখেই সবাই ভয়ে খানিকটা কাচুমাচু করতে করতে তাকায় উনার দিকে উনি আমাদের দেখে হাসি মুখে বসতে বসতে বলে উঠে,,,

.
—” কেমন আছো সবাই হুমমম,,,

.
উনার এমন কথায় শিলা দ্রুত নিজের মাথাটা ওপর নিচ নাড়িয়ে সুমতি জানায়ে বলে উঠে,,,

.
—-” আমরা ভালো আমি আপনি কেমন আছেন ভাইয়া,,
.

আমি শিলার এমন৷ কথায় আমরা সবাই চোখ তুলে তাকায় পরে ওর দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে হাসি মুখে নিজের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেতেই চোখে পড়ল রেস্টুরেন্টে একপাশে গম্ভীর মুখে পায়ের ওপর পা তুলে বসা অবস্থায় রিদ খাঁনকে, উনার এক পাশে আসিফ অন্য পাশে দুজন বডিগার্ড দাঁড়ানো, আর সামনে দুটো ব্যাক্তি কিছু ফাইল দেখাচ্ছেন সেটা উনি বেশ মনোযোগ সহকারে দেখছেন সোফায় আরাম করে বসে,,,

.

উনাকে এ মূহুর্তে এখানে দেখে মাথায় আমার রাগটা চেপে বসলো ব্যাটা যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই হাজির হচ্ছে কোনো না কোনো ভাবেই আর তার সাথে আমার জন্য নিয়ে আসে একঝুঁরি অত্যাচার,, তাই উনাকে দেখেই উনার বলা প্রতিটি কথা মনে পরছে বরাবরই মতো আমাকে সুখে থাকতে দিবে না, আমাকে অন্য কাউকে বিয়ে ও করতে দিবে না, আমাকে সারাজীবন কষ্ট দিয়ে মারতে চাই,, আহা কি স্বপ্ন রিদ খাঁনের আমাকে কষ্ট দিয়ার স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেল কারণ আমিতো বিয়ে করে নিচ্ছি আমার এখন স্বামী ঠিক করা আছে,, স্বামী বিষয়টি মাথায় আসতেই আমাকে আর পাই কে মনে একরাশ আনন্দ নিয়ে রিদ খাঁনকে উদ্দেশ্য করে আমার পাশে সাব্বির ভাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে আমার বাম হাতটা উনার মুখের সামনে ধরি আর হঠাৎ হাতটা ধরে বসায় খানিকটা চমকে উঠে ভাইয়া পরে আমি চিৎকার করে রিদ খাঁনকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলে উঠি……

.

—-” শিলা তুই কিন্তুু বেশি বেশি করছিস, তোর কি আমার পিছনে পরে থাকা ছাড়া অন্য কোনো কাজ নেই,, এতো আজাইরা পাবলিক কেন তুই…..

.
আমার এমন কাজে সবাই থমথমে খেয়ে যায় কাকে কি বলছি কেউ কিছু বুঝতে পারছে না এই মূহুর্তে কারণ উদ্দেশ্য করছি রিদ খাঁনকে, তাকিয়ে আছি সাব্বির ভাইয়ে দিকে আর কথা গুলো বলছি শিলাকে নিয়ে, আমার এমন তিন জোল কথায় সবাই আমার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে আছে, আমার এমন চিৎকার করে বলা কথায় রেস্টুরেন্টে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে, কিন্তু তখনো রিদ খাঁন আমার দিকে তাকানো প্রয়োজন বোধ করেনি আর তার দুজন কাইন্ড আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিল বলে উল্টো তাদের খানিকটা চাপা সুরে ধমক দিয়ে ঠিক করে বসান,, উনার এমন কাজে মনে হচ্ছে উনি প্রথমেই আমাকে এখানে আসতে দেখেছেন উনি, হয়তো আমিই উনাকে লক্ষ করিনি, তাই আমি চারপাশে চোখ বুলিয়ে তাদের এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে আবারও নিজে মতো করে বলে উঠি,,,,

.

—” শুন এতো ভাব নিতে হবে না ঠিক আছে, আমি তোর কাছে কখনোই যাচ্ছি নাহ, আমি আমার পথে বেচে নিয়েছি তাই তোর আজাইরা স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে যাবে হুহহহ এই দিলাম তোকে অভিশাপ……

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here